%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6
ওআইসি মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ওআইসি মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।
এশিয়ার অন্য দেশগুলো হলো তুরস্ক ও ইরান।
বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর বৃহত্তম সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। অন্য সহ-সভাপতি দেশ হলো ফিলিস্তিন ও নাইজেরিয়া।
আয়োজক দেশ মৌরিতানিয়া ৫৭ সদস্যের ওআইসির সভাপতি নির্বাচিত হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আগামী ১৬-১৭ মার্চ মৌরিতানিয়ার রাজধানী নোয়াকচটে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলের ৪৯ তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার পরিচালনায় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ওআইসি মহাসচিবের
বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের প্রতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম লন্ডনে প্রথবারের মতো বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত রেমিট্যান্স মেলায় মঙ্গলবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রবাসিদের পাঠানো অর্থ সুরক্ষিত থাকবে এবং এই অর্থ থেকে সরকারি প্রণোদনাসহ সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মাধ্যমের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি মুনাফা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে অর্থ পাঠানো ঝুঁকিপূর্ণ বলে কোনো কোনো মহল বিভিন্ন মাধ্যমে ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে কোনো ঝুঁকির মধ্যে নেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা উল্লেখ করে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩১ তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এখনও বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে তার অবস্থান বজায় রেখেছে।’
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা কারোই কাম্য নয়: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
কোনো ধরনের অপ্রপচারে বিভ্রান্ত না হয়ে বৈধ পথে বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি প্রবাসিদের আহ্বান জানান এবং চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন করে বৈধ পথে যুক্তরাজ্য থেকে অর্থ পাঠানোর পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ। ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা বৈধ উপায়ে আরও বেশি অর্থ দেশে পাঠালে এই অবস্থান ভবিষ্যতে উন্নীত হতে পারে।’
অনুষ্ঠানে রেমিটেন্স প্রেরণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনাসহ উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ গ্রহণের বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করলে প্রতিমন্ত্রী এসব বিবেচনার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে যুক্তরাজ্যে সোনালী ব্যাংক চালু করেছিলেন। তারই ভিত্তিতে পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য থেকে বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা ও সিআইপি মর্যাদাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।’
হাইকমিশনার আশা করেন রেমিট্যান্স মেলা প্রবাসিদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আরও উৎসাহিত করবে। তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ায় যে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছেন তার প্রশংসা করে বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে তাদের এই গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করতে কাজ করছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর নির্দেশ সরকারের
চলতি বছর প্রত্যেক হজযাত্রীর বিপরীতে প্রায় দুই লাখ টাকা ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর বিমান ভাড়া যৌক্তিকভাবে কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
মন্ত্রণালয় প্রতি হজযাত্রীর জন্য বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা নির্ধারণ করার পর অনলাইনে ও অফলাইনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।
ভাড়া বেশি থাকায় হজযাত্রীদের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়নি।
আরও পড়ুন: হজের খরচ কমানোর বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি: ধর্ম মন্ত্রণালয়
মঙ্গলবার ও বুধবার এ বিষয়ে শুনানি শেষে ভাড়া কমানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ভাড়া কমানোর সুপারিশ করা হয়।
অন্যদিকে হজ নিবন্ধনের সময়সীমা ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়েছে মন্ত্রণালয়।
গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৫৬৯ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ২৪৬ জন হজে নিবন্ধন করেন। নিবন্ধনের জন্য এখনও ২৫ হাজার ৪৮০টি কোটা খালি রয়েছে।
আরও পড়ুন: এত টাকা লাগলে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজে যাবে: প্রশ্ন হাইকোর্টের
চমেকে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় ৭ ছাত্র বহিস্কার
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে(চমেক) ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সাতজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে চমেকের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন-সাধারণ ছাত্রদের হলরুমে অবৈধ অনুপ্রবেশ, নির্যাতন, ছাত্রাবাসে সংঘাত সৃষ্টি এবং আগের মুচলেকার শর্ত ভঙ্গের দায়সহ তাদের বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চমেকের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: চমেকে জোনায়েদ সাকির ওপর ছাত্রলীগের হামলা
বহিষ্কৃতরা হলেন- ৫৯তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী অভিজিৎ দাশ, একই ব্যাচের মো. রিয়াজুল ইসলাম চৌধুরী, ৬২তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী সাজু দাশ, একই ব্যাচের সৌরভ দেবনাথ, মাহিন আহমেদ, জাকির হোসেন সায়েল, মো. ইব্রাহিম খলিল সাকিব।
বহিস্কৃতদের মধ্যে একজনকে তিন বছরের জন্য, তিনজনকে দুই বছরের জন্য এবং বাকি তিনজনকে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে
বহিষ্কারাদেশ ছাড়াও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও হোস্টেলগুলোতে একজন হোস্টেল সুপারের পরিবর্তে একাধিক হোস্টেল সুপার নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয় সভায়।
জানা গেছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্র শিবিরের কর্মী আখ্যা দিয়ে চমেকের ছাত্রাবাস থেকে তুলে নিয়ে চার শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। পরে হল থেকে উদ্ধার করে তাদের দুজনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে চমেক কর্তৃপক্ষ।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের পরিবার থেকে জানানো হয়, এ শিক্ষার্থীরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন। তারা পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন।
আরও পড়ুন: চমেকে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ: গ্রেপ্তার মোস্তাকিম জামিন পেলেন
কুড়িগ্রামে ভিজিডি কার্ডের টাকা না দেয়ায় মাথা ফাটালেন ইউপি সদস্য
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে দাবিকৃত পাঁচ হাজার টাকা না দেয়ায় পিটিয়ে এক ব্যক্তির মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের (মেম্বার)বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকালে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বেড়াকুটি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তির নাম গোলজার হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর হাজিটারী গ্রামের মৃত গোলাপ হোসেনের ছেলে।
হামলাকারী ইউপি সদস্যের মাহফুজার রহমান বাদল (৪২) কাশিপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ।
আহত গোলজার হোসেন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্প্রতি গোলজারের পুত্রবধূ ববিতা বেগম ভিজিডি কার্ডের তালিকাভুক্ত হন। ইউপি সদস্য বাদল কৌশলে ববিতা বেগমের কার্ডটি তুলে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন। বৃহস্পতিবার বিকালে গোলজার বেড়াকুটি বাজারে গিয়ে ইউপি সদস্য বাদলের কাছে কার্ডটি চাইলে বাদল তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন।
টাকা না দিলে কার্ডটি অন্যকে দেয়া হবে বলেও জানান ওই ইউপি সদস্য। গোলজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে উভয়ের মধ্যে তর্কের এক পর্যায়ে বাদল হোসেন উত্তেজিত হয়ে দোকানের ঝাপের লাঠি দিয়ে গোলজারের মাথায় সজোরে আঘাত করে। লাঠির আঘাতে গোলজার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। জখম গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
এ প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য মাহফুজার রহমান বাদল গোলজারের মাথায় আঘাত করার কথা স্বীকার করে বলেন, ভিজিডির টাকার জন্য নয়, ১৩ বছর আগের পাওনা টাকার জন্য তাকে পিটিয়েছি।
কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক জানান, ভিজিডি কার্ড নিয়ে মেম্বারের লাঠির আঘাতে গোলজার হোসেন নামে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফজলুর রহমান জানান, এ ঘটনায় গোলজার হোসেনের স্ত্রী নছিরন বেগম বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১২ বছরে কারিগরি শিক্ষা ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু বার বার বলেছেন ও এশিক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাই করছেন। ২০০৯ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল এক শতাংশেরও কম।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী মেধা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের স্মার্ট ক্লাস রুম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃতে আমরা ১২ বছরে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৭ শতাংশ উন্নীত করেছি। এটি সম্ভব হয়েছে সঠিক নেতৃত্বের কারণে।
আরও পড়ুন: আগামী বছর জাতীয় মেধাক্রম তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: দীপু মনি
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আজকে যারা টেকনিক্যাল এবং ভোকেশনালে শিক্ষায় পড়ছে, অনেক সময় সমাজের আশপাশে দেখবেন অনেকে বলে ‘তুমি ভোকেশনালে পড়ছ? ’ তার মানে ভোকেশনালে যারা পড়ে তাদের মেধা কম বলে মনে করে। আবার মনে করে তাদের আর্থিক অবস্থা ভাল না।কথাটা একেবারে সঠিক নয়। সারা পৃথিবীতে যে দেশ যত বেশি উন্নত হয়েছে, সে দেশ কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় পারদর্শী হয়েছেন। আমাদের পিছিয়ে থাকার কোন উপায় নেই। তাই আমাদের কারিগরি বিদ্যায় আরও জোর দিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। সারাবিশ্ব এখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্ব। এখন শিখতে হবে। তাই আমরা এই শিক্ষা কারিকুলাম চালু করেছি। আমাদের আরও অনেক সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতে দেশের সব স্কুলগুলো ডিজিটাল করতে হবে।
দীপু মনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের উন্নত প্রযুক্তির শিক্ষা দিতে চাই। যেন তারা উন্নত বিশ্বে সমান তালে চলতে পারে। বর্তমান সরকার প্রধান শিক্ষায় বিনিয়োগ করছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, চাঁদপুর পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান ও চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান।
হুয়াওয়েই টেকনোলজিস্ট বাংলাদেশের ম্যানেজার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা নাজিয়া শামান্তা ইসলাম এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন হুয়াওয়েই টেকনোলজিস্ট বাংলাদেশের সিইও পেন জুনপেং।
পরে মন্ত্রী অতিথিদেরকে নিয়ে ফিতা কেটে ক্লাস রুমের উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: করোনাকালে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের ভয়াবহ প্রভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে জরিপে: ইউনিসেফ
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর ক্যাম্পে ছুরিকাঘাতে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ক্যাম্প -৯ এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম মাহাবুবুর রহমান(৩৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
নিহত মাহবুব বালুখালী ক্যাম্প-৮ এর আবু শামার ছেলে।
ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, বালুখালী ক্যাম্প-৮ এর বাসিন্দা মাহবুব ক্যাম্প-৫ এ তার শশুর বাড়ি থেকে অপহৃত হয়। নিখোঁজ থাকার ২৪ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার ক্যাম্প-৯ এ তার লাশ পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান- তার শরীরে কয়েকটি স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে কোনো একটি গোষ্ঠী হত্যা করে থাকতে পারে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: মা, ভাই-বোনেকে ছুড়িকাঘাত করে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট
নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪০% বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৬.৫ বিলিয়ন ডলার
নতুন একটি সমীক্ষা বলছে ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ২৬ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের বহুমুখী হলরুমে ‘রিনিউয়েবল এনার্জি ফাইন্যান্সিং, প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য তুলে ধরেন গবেষণা সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান গবেষক জাকির হোসেন খান মূল উপস্থাপনায় বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে প্রায় ৩৮ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ছয় দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন পেয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিবেশ সুবিধা, গ্লোবাল ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যালায়েন্স, জিসিএফ-পিপিএফ, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, গ্লোবাল এনার্জি এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে ক্লিন টেকনোলজি ফান্ডসহ বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থায়ন এসেছে।
তিনি বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার একর অকৃষি বিশেষ জমি রয়েছে।
এসব অকৃষি জমির পাঁচ শতাংশ ব্যবহার করা গেলে সৌরবিদ্যুৎ বা নবায়নযোগ্য খাত থেকে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব।
এমনকি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের খাস জমিতেই ২২ হাজার ৩১৯ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াসেকা আয়শো খান।
আরও পড়ুন: সিলেটে জ্বালানি সংকট, অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা
এছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সাবেক সচিব ও সাবেক রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম আজাদ,পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, পলিসি রিসার্চার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোলার যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক কমানো এখন সময়ের দাবি।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ বছরের জন্য এই শুল্ক কমানো উচিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। ভবিষ্যতে কোনো ছাদ খালি রাখা যাবে না।
মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ২০০৯ সালের শেষ দিকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রায় ৩ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি পরিবর্তন করছি। প্রধানমন্ত্রী চান মোট বিদ্যুতের ৪০ শতাংশ আসবে ক্লিন এনার্জি থেকে। টাকা কোনো সমস্যা নয়।’
আরও পড়ুন: জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিনাজপুরে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগীরা এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে চাইছে। সৌরবিদ্যুৎ প্রযুক্তির দামও কমেছে। ‘সুতরাং সৌর আমাদের পরবর্তী অগ্রাধিকার।’
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে গত এক দশকের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ক্লিন এনার্জি এখন তিন শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘এটা মোটেও সুখকর নয়। ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে পুরো ইউরোপ এখন বায়ু বিদ্যুতে ঝুঁকেছে।’ বাংলাদেশে তা সম্ভব নয়, তাই আমাদেরকে দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হতে হবে।
বর্তমানে চার ধরনের সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রাংশ আমদানিতে ১১ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক রয়েছে এবং এসব শুল্ক কমানো বা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি উঠেছে সেমিনারের একাধিক বক্তার কাছ থেকে।
সুপারিশের মধ্যে রয়েছে আগামী ১০ বছরের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগকারীদের কর ছাড়সহ বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান।
প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, দ্রুত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ (বিশেষ) আইন বাতিল করা এবং বিনিয়োগকারীদের একটি নির্দিষ্ট হারে অকৃষি খাস জমি পাওয়ার অনুমতি দেয়াও সুপারিশের অন্তর্ভুক্ত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি ও বন্দর খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী সৌদি আরব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৩ বছর পর সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট তিন বছর বন্ধ থাকার পর থেকে আবারও চালু করা হয়েছে এর কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার সোনামসজিদ জিরোপয়েন্টে ফিতা কেটে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এসময় সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান, সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, মহদিপুর স্থলবন্দরের কাস্টমসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়, সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইসমাইল হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এখন থেকে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা সোনামসজিদ-মহদিপুর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে যাতায়াত করতে পারবেন।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বন্ধ হয়ে যায়।
তবে, দীর্ঘ তিন বছর পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল বন্ধ থাকলেও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিলো।
আরও পড়ুন: ৩ বছর পর সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন খুলছে ১২ মার্চ
ওমিক্রনের নতুন সংক্রমণরোধে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে বাড়তি সতর্কতা
পূজার ছুটি শেষে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কার্যক্রম শুরু
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ শেষ
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে দু’দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে।
সমিতির আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতাদের পক্ষ থেকে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্বাচন পরিচালনা করেন।
পুলিশি পাহারায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের ভোট দিতে দেখা যায়।
এবারের নির্বাচনে ৮ হাজার ৬০২ জন ভোটারের মধ্যে দুইদিনে ৪ হাজার ১৩৭ ভোট পড়েছে বলে দাবি এই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির।
অন্যদিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সবার সম্মতিতে বৈধভাবে গঠিত না হওয়ার অভিযোগ তুলে, এই ভোটে অংশ নেননি বিএনপি সমর্থক ও সমমনা আইনজীবীরা।
তবে আজও সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে দফায় দফায় মিছিল-পাল্টা মিছিল, ধস্তাধস্তি, হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবছর এই ভোট উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হলেও এবারের চিত্র ছিল কিছুটা ভিন্ন।
আরও পড়ুন: সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
সমিতির এই ভোটের প্রথম দিনে ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের বের করে দেয়া, পুলিশি নির্যাতন, অবৈধ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ভোটগ্রহণ, বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের রুমে তালা লাগিয়ে দেয়া ও আদালত চত্বরে বিপুল সংখ্যাক পুলিশের উপস্থিতির বিষয়গুলো বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতির আদালতে তুলে ধরেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
পরে খাসকামরায় নিয়ে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতাদের বক্তব্য শোনেন। এরপর সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যও শোনেন প্রধান বিচারপতি।
এরপর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিল-শ্লোগান, ভোটের প্যান্ডেলের সামনে দু’পক্ষের ধাক্কাধাক্কি, পৃথক মামলায় বিএনপিপন্থী ২২ আইনজীবীর আগাম জামিন এবং বিকেলে দুপক্ষের ধাক্কাধাক্কির মধ্য দিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই সমিতির দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দিনভরই আদালত চত্বরে ছিল উত্তেজনা।
আইনজীবীর ভাষ্যমতে, সমিতির এবাবের ভোটকে ঘিরে উৎসবের পরিবর্তে উত্তেজনার আমেজ ছিল। তবে আজ রাতেই এই ভোট গণণা ও ফল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান মো. মনিরুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
সকালে আপিল বিভাগে শুনানির শুরুতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নজীরবিহীন ঘটনা গতকাল (বুধবার) ঘটেছে, যা চলমান। আজও রুমে তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কিনা তা দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাচ্ছি।’
সমিতির নির্বাচনে বিএনপি প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘সমিতির নির্বাচন হয় সব সময় উৎসবমুখর। তবে এবার কি হলো? আজও আমি রুমে ঢুকতে পারিনি। রুমের বাইরে থেকে তালা লাগানো। কক্ষের সামনে পুলিশ রয়েছে। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘মি. রুহুল কুদ্দুস আপনাদের সবাইকে সম্মান করি। আপনারা ২ জন ১১টার সময় (বিরতি) আসেন। কোনো করণীয় থাকলে করবো। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেবো।’
এ সময় সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘নজিরবিহীন ঘটনা। ভোটকেন্দ্রে তিন চারশ পুলিশ ঢুকে ধাক্কা দিতে থাকে। সবাই পড়ে যাচ্ছিল আর পুলিশ পা দিয়ে পাড়িয়েছে। আমার পায়ে ব্যাথা আমি ঠিকমতো দাড়াতে পারছি না।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘এ কথাগুলো ভেতরে বসে শুনি। ১১ টায় আসেন। এখন কোর্টের কাজ করি।’
পরে বেলা ১১টার পরে বিএনপি ফোরামের ৫জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার খাস কামরায় সাক্ষাত করেন। এ সময় সেখানে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিরা ছিলেন। সেখানে তারা তাদের সব অভিযোগ তুলে ধরেন। সবকিছু শুনে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে প্রধান বিচারপতি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের জানায়।
এরপর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত করে এসে অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এটা আমাদের বিষয় না। সমিতি একটি প্রাইভেট বডি। এটা বারের (আইনজীবী সমিতির) বিষয়। এখানে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই। আপনারা বারের সিনিয়র আইনজীবীদের নিয়ে বসে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করেন। সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন।
পরিবেশ সুষ্ঠু আছে কিনা জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে হলে দু’পক্ষকেই সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। একপক্ষ ব্যালট ছিড়ে নিয়ে যাবে অপরপক্ষ বাধা দেবে তাহলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি করে? কাকে দোষ দেবেন? বিএনপি তো প্রথম থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি সমর্থকরা পুনরায় নির্বাচন দাবি করতেই পারে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং শত শত আইনজীবী লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জানা যায়, সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন তা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান দু’পক্ষের আইনজীবী নেতারা। পরে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করা হয় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা, সাবেক বিচারপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুরুল হক চৌধুরীকে। কিন্তু ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বরে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ সাংবাদিক ও আইনজীবী আহত
একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ভোট গণনার মেশিন ব্যবহার করতে চাইলে সমিতির বর্তমান সম্পাদক ও আওয়ামী ফোরামের সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর দুলাল তাতে বাধা দেন। তিনি আলাদা ব্যালট পেপার তৈরি করে আনেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৩ মার্চ বিকালে প্রার্থী পরিচিতি সভার পর সন্ধ্যায় মনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা ফের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
সমিতির আওয়ামী ফোরামের নেতারা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করে নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি ঘোষণা করেন। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকরা সমিতির সাবেক সহসভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান করে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেন। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর উদ্যোগ নিলে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির সঙ্গে বিবাদে জড়ান। এক পর্যায়ে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও ভোটে আওয়ামী লীগ ফোরামের সভাপতি প্রার্থী মমতাজ উদ্দিন ফকির পুলিশ ডাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেলা ১১টার ৪০ মিনিটের দিকে সমিতির মিলনায়তনে কয়েকশ পুলিশ প্রবেশ করে। তারা বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করতে লাঠিচার্জ শুরু করলে প্রায় ১৫ জন আইনজীবী আহত হন।
এসময় পুলিশের সঙ্গে ঢোকা সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি, ভিডিও নিতে থাকেন। ফলে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। সাংবাদিকদেরকেও বেধড়ক লাঠিপেটা করতে থাকলে এনটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাভেদ আক্তারসহ ১০-১২জন গণমাধ্যম কর্মী আহত হন।
পুলিশ দুঃখিত
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন চলাকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।
সুপ্রিম কোর্টের বার ভবনে আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএএফ) কার্যালয়ে এসে এ দুঃখ প্রকাশ করে হারুন অর রশিদ বলেন, হঠাৎ করে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশকে একটু হ্যান্ডেল করতে হয়েছে। হ্যান্ডেল করতে গিয়ে আমাদের কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পাশাপাশি আমার প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এজন্য আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমাদের কমিশনার মহোদয়ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন, আসলে এটা উচিত হয়নি।
হারুন অর রশিদ বলেন, ভবিষ্যতে এই পবিত্র জায়গায় হ্যান্ডলিং করতে আমরা একটু সাবধান হব।
নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট
এদিকে সমিতির নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নির্বাচনের সভাপতি প্রার্থী ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট করেন। রিটে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কমিটির সম্পাদক, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও চলমান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মনসুরুল হক চৌধুরীকে বিবাদী করা হয়েছে।
পাশাপাশি অনুষ্ঠিত ২০২৩-২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে নির্বাচন পরিচালনার জন্য একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগের আর্জি জানানো হয়েছে।