বাংলাদেশ
সারাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালন
সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হচ্ছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকদের হাতে প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ অনেক নিকট আত্মীয়। সেসময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা-বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
ইউএনবি জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন জেলায় জাতীয় শোক দিবস পালনের খবর:
ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে সকাল ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধুর অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। এছাড়ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধের বিষয়ে শতাধিক ছবি প্রদশর্নী এবং রক্ত দান কর্মসূচি পালন করে।
আরও পড়ুন: জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন আয়োজনে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রথমে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এরপর গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, গোয়ালন্দ পৌরসভা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পন করে। পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে শোক র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
দুপুর ১২টায় ধানমন্ডি-৩২ এ তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন। তিনি পুরো জাদুঘর ঘুরে দেখেন এবং প্রতিমন্ত্রী তাকে ব্রিফ করেন।
ব্যাচেলেট দুই দফায় (২০০৬-২০১০ এবং ২০১৪-২০১৮) চিলির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাত করার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর বুধবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে তরুণদের সঙ্গে ‘নিউ ফ্রন্টিয়ার্স অব হিউম্যান রাইটস: ক্লাইমেট জাস্টিস ইন পারস্পেকটিভ’ বিষয়ক একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনে যোগ দেবেন ব্যাচেলেট।
রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনসহ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
ব্যাচেলেট তার সফর শেষে বুধবার একটি বিবৃতি দেবেন বলে কার্যালয় জানিয়েছে।
ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, যুব প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদদের সাথে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে।
চার দিনের সফরে রবিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেন ব্যাচেলেট।
পড়ুন: ব্যাচেলেটে সঙ্গে সাক্ষাতের পর ‘গুম’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে গুম নেই, স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ নেই: ব্যাচলেটকে বললেন মোমেন
মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি: জয়
বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা একের পর এক চক্রান্তের ফাঁদ পেতেছে।
সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী উচ্চাভিলাষী কয়েকজন সদস্যকে ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যবহার করেছে ওই চক্রান্তেরই বাস্তব রূপ দিতে। এরাই স্বাধীনতার সূতিকাগার বলে পরিচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে হামলা চালায় গভীর রাতে।
জয় বলেন, হত্যা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে। বিশ্ব ও মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সেদিন তারা কেবল বঙ্গবন্ধুকেই নয়, তার সঙ্গে বাঙালির হাজার বছরের প্রত্যাশার অর্জন স্বাধীনতার আদর্শগুলোকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। মুছে ফেলতে অপপ্রয়াস চালিয়েছিল বাঙালির বীরত্বগাথার ইতিহাসও। বঙ্গবন্ধুর নৃশংসতম হত্যাকান্ড বাঙালি জাতির জন্য করুণ বিয়োগগাথা হলেও ভয়ঙ্কর ওই হত্যাকাণ্ডে খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত না করে বরং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের আড়াল করার অপচেষ্টা হয়েছে। এমনকি খুনিরা পুরস্কৃতও হয়েছে নানাভাবে। হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক সরকার।
তিনি বলেন, ‘আজ এই শোকের দিনে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের।’
পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
পুরান ঢাকার প্লাস্টিক কারখানায় আগুন
পুরান ঢাকার চকবাজারের কামালবাগ এলাকায় সোমবার একটি প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
দুপুর ১২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে এর উৎপত্তি জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদপ্তরের ওয়ারহাউস ইন্সপেক্টর (মিডিয়া সেল) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে এবং আরও দুটি ইউনিট পথে রয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।
পড়ুন: কায়রোতে গির্জায় আগুন: নিহত ৪১, আহত ১৪
কুষ্টিয়ায় ফিলিং স্টেশনে আগুন, নিহত ২
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী সমাধিতে দুইবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে এবং পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্যদের গুলিতে বঙ্গবন্ধু তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা ও মোনাজাত করেন।
এছাড়াও জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
পরে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দও সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মন্ত্রিসভার সদস্য, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সমাধি প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেবেন।
এর আগে শেখ হাসিনা দিবসটির জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক নিবাস টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সকালে বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্য শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়ে দেন। সেই সাথে তিনি শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন।
পড়ুন: শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধুর প্রতি মার্কিন দূতাবাসের শ্রদ্ধা
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।
দূতাবাস জানিয়েছে, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকীতে তাঁর অনন্য-সাধারণ জীবনের কথা স্মরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।’
তিনি ছিলেন সম্মানজনক ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া প্রথম বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারীদের অন্যতম।
দূতাবাস জানিয়েছে, ‘এই অপূরণীয় ক্ষতিতে আমরা শোকাহত।’
পড়ুন: শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
ঢাকায় ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
যথাযথ মর্যাদায় ঢাকায় ভারতের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সকালে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের চ্যান্সেরি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
এসময় তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের কিছু অংশ পড়ে শোনান।
ভারতীয় হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর অবদান, ত্যাগের কথা স্মরণ করলেন ভারতের হাইকমিশনার
এতে বলা হয়, এই বছরের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছরকে চিহ্নিত করে এবং আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের উদযাপনের অংশ হিসেবে এই আয়োজন অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয়েছে।
আইজিসিসি শিক্ষকদের নেতৃত্বে ভারতীয় সম্প্রদায়ের একদল সদস্য জাতীয় সঙ্গীত এবং দেশাত্মবোধক গান করেন। ভারতীয় সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক সদস্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
পাইকগাছায় ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
বৈরী আবহাওয়ায় খুলনার পাইকগাছায় শিবসার নদীতে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াপদার ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রবিবার বিকালে প্রবল জোয়ারে উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৩নং পোল্ডারের বয়ারঝাঁপা এলাকার ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে প্রায় ৩০ ফুট ওয়াপদার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। এতে কয়েকশত ছোটবড় মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে।
শিগগিরই বাঁধ নির্মাণ না হলে এই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ গ্রাম লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন প্লাবিত
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, তার ইউনিয়নে শিবসা নদীর তীরবর্তী ওয়াপদার দুর্বল ভেড়িবাঁধটি ভেঙে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাই ভাটার সময় উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে তিনিসহ স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্ত ভেড়িবাঁধটির মেরামতের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাজু হাওলাদার জানান, বাঁধ ভাঙার খবরে পেয়ে তিনি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সর্বশেষ উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সরবরাহকৃত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি প্রাথমিকভাবে মেরামতের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।
আরও পড়ুন: উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটির সংস্কারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে। ভাটার সময় স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধটির সংস্কারে কাজ শুরু করা হবে।
শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে শ্রদ্ধাভরে দিবসটি পালন করছে দেশবাসী।
১৯৭৫ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেসময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা-বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তার তিন ছেলে-ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল এবং দশ বছর বয়সী শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল, ভাই শেখ নাসের, কৃষক নেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, যুব নেতা শেখ ফজলুল হক মনি এবং তার স্ত্রী আরজু মনি, শিশু সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ ও আবদুল নাঈম খান রিন্টুসহ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের আঠারজন সদস্য সেদিন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
সেই সাথে বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল উদ্দিন আহমেদ (বীর উত্তম) নিহত হন। একই দিনে খুনিদের কামানের গোলায় মারা যান রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একই পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যও।
সরকার, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন দিবসটি পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।
এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়। তখন বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এ সময় মোনাজাত করা হয়।
ধানমন্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। এখানে শায়িত আছেন তার মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্য শহীদরা।
প্রধানমন্ত্রী তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়ে দেন। সেই সাথে তিনি শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন।
পড়ুন: জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
দিবসটি উপলক্ষে জোহরের নামাজের পর সারাদেশের মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, ‘মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। তৎকালীন পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু অসীম সাহসিকতার সাথে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন।’
তিনি বলেন, `বঙ্গবন্ধু আজীবন সাম্য, মৈত্রী, গণতন্ত্রসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তাঁর নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালিরই শুধু নয়, বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্যও প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবেন।
এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী চক্র তাঁকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বাঙালি জাতির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রগতি নষ্ট করার অপচেষ্টা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে।
জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁর আত্মত্যাগের মহিমা এবং দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মের মাধ্যমে প্রতিফলিত করে সকলে মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি-জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।
পড়ুন: ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও আমার সরকার উৎখাতে কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর সেখানে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতির স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়। তখন বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এ সময় মোনাজাত করা হয়।
ধানমন্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। এখানে শায়িত আছেন তার মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্য শহীদরা।
প্রধানমন্ত্রী তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়ে দেন। সেই সাথে তিনি শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেসময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা-বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
পড়ুন: শোক দিবসে নিশ্ছিদ্র ও নির্ভুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ আইজিপির
১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও আমার সরকার উৎখাতে কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী