বাংলাদেশ
ফের নির্ধারিত সময়ে অফিসে আসা ও ত্যাগের বিষয়ে নির্দেশনা
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সরকার ঘোষিত নতুন সময়সূচি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে আসা ও ত্যাগের বিষয়ে আবারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুলের মেয়াদ বাড়ল আরও ২ বছর
তিনি বলেন, ‘নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সকাল ৮টার মধ্যে অফিসে আসতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে অফিস ত্যাগ করা যাবে না।’
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা অলরেডি আবার ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিয়েছি, অফিস টাইমে সবাইকে অফিসে আসতে হবে।’
আরও পড়ুন: জুনের শেষ সপ্তাহে পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হবে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া কালকেও আমরা এগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং অফিস টাইমের আগে কেউ যেতে পারবে না। ইন্ডিভিজুয়ালি কোন দরকার হল, সে তার বসের কাছে জিজ্ঞেস করে পার্মিশান নিয়ে যাবে। কিন্তু ৮টার মধ্যে অফিসে আসতে হবে, আর পরিষ্কার (কথা) ৩টার আগে কেউ যেতে পারবে না। এটা আমরা এনসিউর করতেছি।’
এ নিয়ম কতদিন পর্যন্ত চলবে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী নির্দশনা দেয়া পর্যন্ত এই সময়সূচি থাকবে।’
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে গত ২২ আগস্ট মন্ত্রিসভা বৈঠকে অফিসের নতুন সময়সূচির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যা ২৪ আগস্ট থেকে কার্যকর করা হয়।
আরও পড়ুন: ২২ ফেব্রুয়ারির পর বিধিনিষেধ বাড়বে না: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
চীনের পুনর্জাগরণের স্বপ্ন ও সোনার বাংলার স্বপ্ন সম্পর্কিত: রাষ্ট্রদূত
চীনা জাতির মহান জাতীয় পুনর্জাগরণের স্বপ্ন ও সোনার বাংলা স্বপ্ন পরস্পর সম্পর্কিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি বলেন, ‘আসুন, একসঙ্গে আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাত মেলাই।’
লি জিমিং বলেন, পিরোজপুরের বেকুটিয়ায় কঁচা নদীর ওপর বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নকে শক্তিশালী করবে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে তার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি এক হাজার ৪৯৩ মিটার দীর্ঘ সেতুটির উদ্বোধন করেন। এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেতুটি বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ পরিকল্পনার মেলবেন্ধনের প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের দ্বারা বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবে।
আরও পড়ুন: কঁচা নদীর ওপর বঙ্গমাতা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত লি বলেন, সেতুটি কঁচা নদীর উভয় পাড় তথা খুলনা ও বরিশালকে সরাসরি সংযুক্ত করেছে এবং নির্মাণাধীন মোংলা ও পায়রা বন্দরের মধ্যে স্থল পরিবহনের পথ খুলে দিবে।
রাষ্ট্রদূত লি বলেন, বন্ধুত্বের এমন মূল্যবান ঐতিহ্যকে অব্যাহত রাখতে চীন নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের দৃঢ় সংকল্প নিয়েছে। দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যেই প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ তার দ্রুত এবং অবিচলিত প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে এবং স্বল্পোন্নত দেশের বিভাগ থেকে উতরে যাচ্ছে।
চীনা এই রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য স্থিতিস্থাপকতা অর্জন করছে এবং শক্ত হাতে পুনরুদ্ধার করছে। উপমহাদেশ থেকে বাংলাদেশের উত্থান প্রত্যক্ষ করছে বিশ্ব।’
আরও পড়ুন: অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন ৪ সেপ্টেম্বর
বাংলাদেশ কখনও ঋণের ফাঁদে পড়বে না: চীনা রাষ্ট্রদূত
রাজনীতিতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত জয় ও দেশের জনগণের ওপর নির্ভর করছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার সরকারের অনেক ডিজিটাল উদ্যোগের পিছনে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ছিলেন, তবে রাজনীতিতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত তার (জয়ের) এবং দেশের জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ছেলে সম্পর্কে এসব কথা বলেন। বর্তমানে জয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন... সে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ। এটা তার ব্যাপার, তবে সে দেশের জন্য কাজ করছে… আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ (উদ্যোগ) বাস্তবায়ন করেছি, এসব স্যাটেলাইট বা সাবমেরিন ক্যাবল বা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ-এই সবই তার আইডিয়া এবং সে আমাকে সহায়তা করছে…কিন্তু দলে বা মন্ত্রিসভায় কখনই সে কোনো পদ নেয়ার কথা ভাবেনি।’
শেখ হাসিনা বলেন, দলীয় একটি অনুষ্ঠানে জয়ের পদ নেয়ার জন্য নেতাকর্মীদের কাছ থেকে জোরালো দাবি ছিল।
তিনি বলেন, ‘এমনকি আমাদের দলীয় সম্মেলনেও তাকে একটি পদ দেয়ার জোরালো দাবি উঠেছিল। তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি চাও মাইক্রোফোনে তা বলো, এবং সে তা করেছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ একটি আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সেসময় জয় বলল, ‘আমি এই মুহূর্তে দলে কোনো পদ চাই না। বরং যারা এখানে কাজ করছেন, তারা যেন এই পদটি পান। আমি কেন একটি পদ দখল করে থাকবো? আমি আমার মায়ের সঙ্গে আছি, আমি দেশের জন্য কাজ করছি এবং আমি তাকে সহায়তা করছি... আমি এটি করে যাব।’
সাক্ষাৎকারে তিনি তার জাতির পররাষ্ট্রনীতি গঠনে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’- যা আমার পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে তার ভাষণে বলেছিলেন। এবং আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করি। আমার বক্তব্য হল আমাদের জনগণের ওপর ফোকাস করা উচিত... কিভাবে তাদের একটি ভালো জীবন দেয়া যায়... আমাদের একটি শত্রু আছে। সেটা হলো দারিদ্র্য। সুতরাং, আসুন আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’
হাসিনা বলেন, তিনি সবসময় মনে করেন নেতৃস্থানীয় দেশগুলোর উচিত আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ ও মতভেদ দূর করা। ‘...চীন ও ভারতের মধ্যে যদি কোনো সমস্যা হয়, আমি তাতে নাক গলাতে চাই না। আমি আমার দেশের উন্নয়ন চাই এবং ভারত যেহেতু আমাদের পাশের প্রতিবেশি, তাই আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো। আমাদের অনেক দ্বিপক্ষীয় সমস্যা ছিল, এটা সত্য, কিন্তু আমরা অনেক সমস্যার সমাধানও করেছি।’
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই) এর সঙ্গে তার সাক্ষাত্কারের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকার ছিল উন্নয়ন এবং তার জনগণের জন্য উন্নতি করতে পারে এমন যে কোনও দেশের সাহায্য নিতে তারা ইচ্ছুক।
আরও পড়ুন: ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতেও সংখ্যালঘুরা অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’
‘আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করা যায়, বাংলাদেশ-ভারত সেটাই করছে’: এএনআইকে প্রধানমন্ত্রী
গাজীপুরে অস্ত্র-মাদকসহ ৪ চোরাকারবারি আটক
গাজীপুরে অস্ত্র, মাদক ও জাল নোটসহ চার চোরাকারবারিকে আটকের দাবি করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ।
তারা হলেন-মোমেনা বেগম (৩৮), নুরুল ইসলাম (৩৪), সুজন মোল্লা (২৯) ও সোহরাব (৩৩)।
মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু সায়েব নয়ন জানান, রবিবার ভোরে টঙ্গী পশ্চিম থানা হাজীর মাজার বস্তি এলাকায় মাদক কেনাবেচার খবর পেয়ে অভিযান চালায়। এ সময় নুরুল ইসলামকে এক হাজার ৫০০ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হয়। নুরুলের দেয়া তথ্য মতে তার ঘরের খাটের তোষকের নিচ থেকে একটি পুরাতন লোহার তৈরি কালো রঙের রিভলবার উদ্ধার করা হয়। নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, টঙ্গী পূর্ব থানার ব্যাংক মাঠ বস্তি এলাকায় মাদক কেনাবেচার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক চোরাকারবারি মোমেনা বেগমকে এক হাজার পুরিয়া হেরোইন ও ৫০ হাজার টাকার জাল নোটসহ আটক করা হয়। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে। ব্যাংক মাঠ বস্তি থেকে একই সময়ে সোহরাব হোসেনকে ১০০টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামি জাকির খান গ্রেপ্তার, বিদেশি পিস্তল জব্দ
শনিবার নগরের পূবাইল থানায় অভিযান চালিয়ে ১০০টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক সুজন মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আটকদের নামে মামলা দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জকিগঞ্জে ৮০০ পিস ইয়াবা জব্দ, গ্রেপ্তার ২
টেকনাফে সাড়ে ৫ কোটি টাকার অস্ত্র-মাদক জব্দ, আটক ২
বাংলাদেশ একটি আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বলেছেন, তার সরকার দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলছে।
খুলনা ও বরিশাল বিভাগের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপনকারী পিরোজপুরের বেকুটিয়ায় কঁচা নদীর ওপর এক হাজার ৪৯৩ মিটার দীর্ঘ ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘আমরা আধুনিক এক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলছি।’
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীতে তার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
তিনি বলেন, তার সরকার দেশের মোট মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২২ হাজার কিলোমিটার এবং ৭১৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার বা তার অধিক লেনে উন্নীত করা হয়েছে। এদিকে ৬০০ কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের মহাসড়ককে চার বা তার অধিক লেনে উন্নীত করার কাজ চলমান আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার এখন ঢাকায় মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, গাজীপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার র্যাপিড বাস ট্রানজিট প্রকল্প, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল এবং ১০ লেনের টঙ্গী সেতু নির্মাণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা বিশ্বব্যাংকের
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে আমাদের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।’
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৮৯৪ দশমিক আট কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করেছে।
চীন সরকার সেতু প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ৬৫৪ দশমিক ৮০ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকার বাকি ২৩৯ দশমিক ৮০ কোটি টাকা দিয়েছে।
সেতুটির কারণে পিরোজপুর ও ঢাকার মধ্যে সড়ক সংযোগ হয়েছে। এটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, মোংলা সমুদ্র বন্দর এবং দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের মধ্যে সরাসরি সড়ক সংযোগ স্থাপনে ভূমিকা রেখেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সারা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা তার সরকারের দায়িত্ব। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন যাত্রায় অনেক দূর এগিয়েছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমি মনে করি আমরা আরও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত ছিল। এ অঞ্চলের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেশ কয়েকটি খরস্রোতা নদী পাড়ি দিয়ে জীবিকার জন্য ঢাকায় আসত।
শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু এখন তার সরকার পদ্মা বহুমুখী সেতু, শিকারপুর-দোয়ারিকা সেতু ও গাবখান সেতুসহ অনেক সেতু নির্মাণ করায় ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ সহজতর হয়েছে।
আরও পড়ুন: কঁচা নদীর ওপর বঙ্গমাতা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এ অঞ্চলে আরও অনেক সেতু নির্মাণ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আর অবহেলিত হবে না।
নতুন উদ্বোধন করা সেতু সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি পিরোজপুরের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে সহায়ক হবে। পিরোজপুর ও ঢাকার মধ্যে যোগাযোগ এখন অনেক সহজ হয়ে যাবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সঙ্কটের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী সবার প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি এক ইঞ্চি পরিমাণ জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।’
প্রধানমন্ত্রী আবারও এই কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংও বক্তব্য দেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী সেতুর দুই পাশের সেতুর সুবিধাভোগীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
সেতুর পশ্চিম পাড়ে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এস এম রেজাউল করিম। পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পূর্ব পাড়ে অন্য এক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী নবনির্মিত সেতুর একটি ডিজিটাল উপস্থাপনা পেশ করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দরের সুবিধা নিতে পারে নেপাল: প্রধানমন্ত্রী
যুবদল কর্মী হত্যা: পুলিশ সুপারকে আসামি করে বিএনপির মামলার আবেদন
নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী রাজা প্রধান শাওনকে হত্যার ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারসহ ৪২ জন ও আজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করে বিএনপির পক্ষ থেকে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
রবিবার সকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইমরান হোসেনের আদালতে এই মামলার আবেদনটি করেন। এসময় বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রিজভীর সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার আবেদনটিতে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক অঞ্চল) নাজমুল আলম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান সহ বিয়াল্লিশ জন কর্মকর্তা ও সদস্যের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করা হয়েছে। এক নম্বর আসামি করা হয়েছে জেলা ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের এস আই মাহফুজুর রহমান কনককে। এছাড়া আজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে এই মামলার আবেদনে।
মামালার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, এক নম্বর আসামি জেলা ডিবি পুলিশের এসআই মাহফুজুর রহমান কনকের অস্ত্রের গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন নিহত হয়েছে এবং এ ঘটনায় অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা সহযোগিতা করায় তাদেরও আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, নিহত ১
আদালতে আবেদন করার পর মামলার বাদী রুহুল কবির রিজভীর আইনজীবী (সুপ্রীম কোর্ট) অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেছে এবং তা যাচাই বাছাই করে পরবর্তীতে আইনসম্মত আদেশ প্রদান করবে বলে তাদের নির্দেশ দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, আমি তীব্র নিন্দা জানাই। সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করে বিএনপির গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর ঘটনা তাই প্রমাণ করেছে।
এর মাধ্যমে দেশে একদলীয় সরকারের নমুনার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী।
আরও পড়ুন:পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ: নারায়ণগঞ্জে ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা
নারায়ণগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামি জাকির খান গ্রেপ্তার, বিদেশি পিস্তল জব্দ
‘শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতেও সংখ্যালঘুরা অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার বিষয়ে বলেছেন, তার সরকার ধর্মনিরপেক্ষতার মূল্যবোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যাহত করার যে কোনো প্রচেষ্টা দ্রুত মোকাবিলা করা হবে।
ভারত সফরের আগে এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘যতদিন আমরা ক্ষমতায় থাকব, এটিকে আমরা অগ্রাধিকার দিব এবং আমি সবসময় তাদের (সংখ্যালঘু সম্প্রদায়) বলি যে আপনারা আমাদের নাগরিক… এটি আপনার দেশ।’
শেখ হাসিনা বলেছেন, উগ্রবাদ শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়, ভারতসহ অনেক দেশেই এটি ঘটে থাকে।
তিনি বলেন, চলমান চরমপন্থা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু ঘটনা ঘটে, তবে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিই... এগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি। কিন্তু আপনি ভালো করেই জানেন, এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের সংখ্যালঘুরাও অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ এবং আমাদের এখানে অনেক ধর্ম আছে… এখানে ধর্মীয় সম্প্রীতি রয়েছে। সুতরাং, একটি বা দুটি ঘটন যখন ঘটে, দ্রুত... বিশেষ করে আমার দল... আমার দলের কর্মীরা এবং আমার সরকারও এটি সম্পর্কে খুব সচেতন। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিই।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্লগার এবং অন্য সম্প্রদায়ের ভূমিকা সম্পর্কে হাসিনা বলেন, লোকজন একে অপরকে আঘাত করার জন্য জিনিস লিখবে তা কাম্য নয় এবং সরকার এই জাতীয় ঘটনা রোধ করার চেষ্টা করছে।
হাসিনা বলেন, ‘দেখুন, চরমপন্থা সর্বত্র রয়েছে... এমনকি ভারত ও অন্যান্য দেশেও... সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে এটা আজকাল... খুব খারাপ হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশকে শক্তিশালী করার জন্য বঙ্গবন্ধু সবকিছু করেছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
হাসিনা এএনআইকে বলেন, কিছু ঘটনা ঘটেছে, বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্য রয়েছে, যেখানে সমস্ত ধর্মের মানুষ সমস্ত উদযাপনে অংশ নেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা একসঙ্গে উদযাপন করি..., দুর্গাপূজার সময় লোকজন একসঙ্গে উদযাপন করে। সুতরাং, ধর্মীয় সম্প্রীতি আছে তবে এখন এখানে এবং সেখানে কিছু ঘটনা ঘটছে... আমাদের সরকার দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।’
ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু চোরাচালানের ব্যাপকতা সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং সমস্যার তীব্রতাও অনেক কমে গেছে।
আরও পড়ুন:‘আলোচনার মাধ্যমে মতপ্রার্থক্য দূর করা যায়, বাংলাদেশ-ভারত সেটাই করছে’: এএনআইকে প্রধানমন্ত্রী
‘সেপা বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য লাভজনক’
‘আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করা যায়, বাংলাদেশ-ভারত সেটাই করছে’: এএনআইকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবে আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো সমাধান করা উচিত, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং ভারত ঠিক সেটাই করছে।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশকে ‘পরীক্ষিত বন্ধু’ হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারত প্রয়োজনের সময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, প্রথমে ১৯৭১ সালে এবং তারপরে পরবর্তী সময়েও।
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান আমরা সবসময় স্মরণ করি। ১৯৭৫ সালে যখন আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছিলাম, তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন... আমরা প্রতিবেশী, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং আমি সবসময় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্বকে অগ্রাধিকার দেই।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ঢাকা-দিল্লির বহুমাত্রিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রত্যাশা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় পূর্ব ইউরোপে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগের প্রশংসা করেন হাসিনা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এএনআইকে দেয়া সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’ এর অধীনে প্রতিবেশী দেশগুলোতে কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের মোদি সরকারের প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর জোর দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে (মোদি) ধন্যবাদ জানাতে চাই… রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে এই যুদ্ধের সময় আমাদের অনেক ছাত্র আটকা পড়েছিল এবং তারা আশ্রয়ের জন্য পোল্যান্ডে গিয়েছিল। যখন তারা ভারতীয় ছাত্রদের সরিয়ে নিয়েছিল, তখন তারা আমাদের ছাত্রদেরও দেশে ফিরিয়ে আনে... আপনি স্পষ্টভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন। এই উদ্যোগের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
আরও পড়ুন: তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি ভারতের ওপর নির্ভর করছে: প্রধানমন্ত্রী
হাসিনা তার দেশের টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কেও বিস্তারিত জানান। বাংলাদেশ তার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাধারণত আমাদের দেশের লোকেরা, বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ে, এমনকি কিছু শহরেও, আমি অনেক লোককে ভ্যাকসিন নিতে খুব অনিচ্ছুক দেখেছি। তারা নিতে চায় না... আপনি জানেন... সুচের ছিদ্র, তাই... আমাদের বুঝাতে দিতে হবে। আমরা তাদের বলেছিলাম যে এটি কিছুই নয়, এটি আপনার জীবন বাঁচাবে… এই ভ্যাকসিন মৈত্রী... খুব ভালো উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তাদের নাগরিকদের উন্নতির জন্য হওয়া উচিত।
হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ এর সময়কালেও ভারতীয় নেতৃত্ব তাদের ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উভয়েই স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় বাংলাদেশ সফর করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং আপনার রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে তারা দুজনই বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে বেশ কিছু চুক্তির সম্ভাবনা
কঁচা নদীর ওপর বঙ্গমাতা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
পিরোজপুরের বেকুটিয়ায় কঁচা নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক হাজার ৪৯৩ মিটার দীর্ঘ সেতুটি খুলনা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী রাজধানীতে তার কার্যালয় থেকে একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেতুটির উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে বেশ কিছু চুক্তির সম্ভাবনা
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৮৯৪ দশমিক আট কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করেছে।
চীন সরকার সেতু প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ৬৫৪ দশমিক ৮০ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকার বাকি ২৩৯ দশমিক ৮০ কোটি টাকা দিয়েছে।
সেতুটির কারণে পিরোজপুর ও ঢাকার মধ্যে সড়ক সংযোগ হয়েছে। এটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, মোংলা সমুদ্র বন্দর এবং দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের মধ্যে সরাসরি সড়ক সংযোগ স্থাপনে ভূমিকা রেখেছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি ভারতের ওপর নির্ভর করছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংও বক্তব্য দেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী সেতুর দুই পাশের সেতুর সুবিধাভোগীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
সেতুর পশ্চিম পাড়ে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এস এম রেজাউল করিম। পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পূর্ব পাড়ে অন্য এক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী নবনির্মিত সেতুর একটি ডিজিটাল উপস্থাপনা পেশ করেন।
আরও পড়ুন: সহযোগিতার নতুন দ্বার খুলবে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে বেশ কিছু চুক্তির সম্ভাবনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে দুই দেশের পানি ব্যবস্থাপনা, প্রতিরক্ষা, রেলপথ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচারসহ বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী সোমবার রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েল একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে হায়দরাবাদ হাউসে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় মিলিত হবেন। সেখানে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচাররোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন সংকট, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে এই সফরকে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে । কেননা দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশ চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য বর্ধিত সহযোগিতা চায়।
এর আগে কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালে ভারত সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই এই সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং বোঝাপড়াসহ বহুমুখী সম্পর্ক স্থাপিত হবে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সফরে প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন, যেখানে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহেদ ফারুক রয়েছেন।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও হাসিনার সঙ্গী হবেন। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
পড়ুন: সহযোগিতার নতুন দ্বার খুলবে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। সফরে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। হায়দরাবাদ হাউসে তিনি মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় মিলিত হবেন। পরে সেখানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা যোগ দেবেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এছাড়াও শেখ হাসিনা আজমীর শরীফ পরিদর্শনেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
সফরে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে উভয় পক্ষই উচ্চ পর্যায়ের এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্পৃক্ততা বজায় রেখেছে।
পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ঢাকা-দিল্লির বহুমাত্রিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রত্যাশা
হামলা হলে পুলিশের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী