বাংলাদেশ
চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ফসল কাটার মৌসুমে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে সোমবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বৈঠকে দেশের ভোজ্যতেল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে চালানো সাম্প্রতিক অভিযানের মতো অবৈধ চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ অননুমোদিতভাবে ব্যবসা এবং চাল মজুদ করে থাকে তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আনোয়ারুল বলেন, ভরা মৌসুমে কেন চালের দাম বেড়েছে এবং চাল মজুদ করা হচ্ছে কি না এবং কেউ অবৈধভাবে চালের ব্যবসায় জড়িত কি না তা জানতে বাজার সার্ভে করার পর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এমন তথ্য রয়েছে যে কিছু (ব্যবসায়ী বা কোম্পানি) সমিতির স্মারকলিপি ভেঙে চালের ব্যবসায় জড়িত হতে পারে। তাই, বৈঠকে চালের বাজার জোরালোভাবে পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করতে বলা হয়েছে।
চালের দাম বাড়ার পেছনে কারণ জানতে বাণিজ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, বাণিজ্য সচিব, খাদ্য সচিব এবং কৃষি সচিবকে শিগগিরিই মার্কেট সার্ভে পরিচালনার জন্য বৈঠকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
রেলওয়ে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান: প্রধানমন্ত্রী
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার তেল কেনার বিষয়ে নয়াদিল্লির পরামর্শ চায় ঢাকা
ভারত কীভাবে রাশিয়া থেকে তাদের তেল কেনার বিষয়টি পরিচালনা করছেন সে বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়ার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জ্বালানি সমস্যা বাংলাদেশের জন্যও একটি সত্যিকার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এনার্জির (আমদানি) ওপর নির্ভরশীল। রাশিয়া আমাদের এনার্জি ও গম অফার করেছে। এটি একটি বাস্তব সমস্যা হয়ে উঠেছে। আমরা এতে (শক্তি সংকট) ভীত। আমরা তাদের (ভারত) পরামর্শ চেয়েছি, কীভাবে তারা এটা করছে। এটি একটি বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ২৮-২৯ মে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনের নদী সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়টির স্বপক্ষে বলেছে (ভারত) এক মাসে রাশিয়া থেকে যা কিনেছে, একদিন বিকালেই ইউরোপ রাশিয়া থেকে থেকে তার চেয়ে অনেক বেশি কিনেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতকে মস্কো থেকে দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান অব্যাহত থাকার পরও রাশিয়ার কাছ থেকে (ভারতের) তেল কেনা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা চুক্তি ১১ বছর ধরে ঝুলে থাকা ‘লজ্জাজনক’: মোমেন
ভারত এমন এক সময়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়ানোর জন্য মূল্য ছাড়ের সুযোগ নিয়েছে, যখন বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়ছে।
কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে মোমেন বলেন, ‘আপনারা দেখছেন যে তারা আমাদের ওপর বসগিরি করছে এবং আপনারা (সাংবাদিকরাও) তাদের উৎসাহ দিচ্ছেন। প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন সমস্যা নিয়ে হাজির হয়। তাদেরকে আমরা উন্নয়ন সহযোগী বলতাম। তারা উন্নয়নের জন্য অর্থ দেয় না কিন্তু পরামর্শ দিতে থাকে।’
মোমেন আরও বলেন,‘উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা অনেক কিছু সামনে রেখে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য নানা শর্ত যোগ করে। ‘এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ হওয়ায় বিশ্বের স্থিতিশীলতাকে সব সময় স্বাগত জানায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই আন্তঃনির্ভরশীল।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানির দুই বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে অস্থিতিশীলতা থাকলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা থাকলে বাংলাদেশের রেমিটেন্স অর্জন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও জানান তিনি।
মোমেন বলেন, ‘তাই আমরা কোনো সমস্যায় পড়তে চাই না। আমরা বিশ্বে শান্তি চাই।’
তিনি বলেন, ‘ধনী দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ শেষ করা সবার জন্য মঙ্গলজনক।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যে কীভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করা যায়।
তিনি অবশ্য বলেন, বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতার দুর্বল হয়ে পড়া দেখতে চায় না। ‘আমরা বহুপাক্ষিকতার একটি বড় সমর্থক।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
গুয়াহাটিতে শনিবার নদী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন মোমেন ও জয়শঙ্কর
ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৮ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন আক্রান্ত সবাই ঢাকা বিভাগের।
কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ৫১ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪৭টি সরকরি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৫০ জন ভর্তি আছেন। ঢাকার বাইরে একজন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩৮ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২৮৭ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি।
পড়ুন: দেশে করোনায় আরও ৩৪ শনাক্ত, মৃত্যু এক
তিস্তা চুক্তি ১১ বছর ধরে ঝুলে থাকা ‘লজ্জাজনক’: মোমেন
ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং ‘লজ্জাজনক’ যে চুক্তিটি ১১ বছর ধরে ঝুলে আছে।
সোমবার আসামের গুয়াহাটিতে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা ১১ বছর ধরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে পারিনি। এটা লজ্জারও, আমরা প্রস্তুত ছিলাম, তারাও প্রস্তুত ছিল, তবুও চুক্তিটি হয়নি। ভবিষ্যতে পানির জন্য একটি বড় হাহাকার তৈরি হবে এবং আমাদের এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
২৮-২৯ মে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত নদী সম্মেলনের ফাঁকে এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় মোমেন বলেন, দুটি দেশের ভারতের সঙ্গে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে। এই দুই পক্ষই অভিন্ন নদী সমূহের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ভারতের অংশীদার হতে এবং একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। ‘অববাহিকা এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্য দুই পক্ষের মানুষেরই যৌথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তিস্তা নদী তিস্তা কংশ হিমবাহে উৎপন্ন হয়েছে এবং বাংলাদেশে প্রবেশের আগে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ১৯৪৭ সাল থেকে তিস্তার ক্যাচমেন্ট এলাকাগুলো ভারতকে বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে এটি নিয়ে সংঘাত তৈরি হয়। ২০১১ সালে ভারত তিস্তার পানির ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ার করতে সম্মত হয়েছিল এবং ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে শুষ্ক মৌসুমে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ পানি ধরে রেখেছিল। তবে,পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কঠোর বিরোধিতার কারণে চুক্তিটি হয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খুব আশাবাদী যে ভারত চুক্তির ব্যাপারে এগিয়ে আসতে রাজি হবে, এমনকি পশ্চিমবঙ্গও সম্মত হবে। এবং আমরা এটি অর্জন করতে পারব।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি বছর আসাম ও বাংলাদেশে একই সময়ে বন্যা হয়। আমাদের পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে, যৌথভাবে বন্যার আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং নদীগুলোর যৌথ ব্যবস্থাপনা উভয় দেশের জন্যই উইন-উইন।’
বেশকিছু গণমাধ্যমের গুঞ্জন উঠেছে, তিস্তা নদীর ওপর ব্যবস্থাপনা বৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে আলোচনা করছে। প্রকল্পটির লক্ষ্য নদী অববাহিকা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং গ্রীষ্মকালে পানি সংকট মোকাবিলা করা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও তিস্তা নিয়ে চীনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি। চীন প্রাথমিকভাবে যেটি প্রস্তাব করছিল সেটি ছিল একটি ফরাসি প্রকল্প। ১৯৮৯ সালে ফরাসি প্রকৌশলীরা এটি ডিজাইন করেছিলেন। এটি ব্যয়বহুল ছিল, তাই তখন আমরা তহবিল সংগ্রহ করতে পারিনি। এখন চীনারা এর একটি অংশ হিসেবে তিস্তা প্রকল্পকে বাছাই করেছে। কিন্তু আমি মিডিয়া রিপোর্ট থেকে এটি জানতে পেরেছি। তারা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠায়নি। আমাদের এখন এটি কেমন হবে তা দেখতেই হবে। কারণ ভারত এখনও তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে আসলে তেমন কিছু করছে না। তাই তারা (চীন) একটি প্রস্তাব নিয়ে এসেছে, এটি (আমাদের জন্য) একটি লাভজনক প্রস্তাবও।’
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের সুবিধার জন্য তিস্তাকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করার জন্য একটি প্রযুক্তিগত সমীক্ষা চালানোর জন্য পাওয়ারচিনা বা চায়না পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, তিস্তা একটি অমীমাংসিত ইস্যু। তাই আমাদের জনগণ স্বাভাবিকভাবেই সরকারকে নতুন কোনো প্রস্তাব (সমাধান) ভেবে দেখার জন্য চাপ দেবে। এই কারণেই হতে পারে তিস্তার ওপর চীনা প্রকল্প নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে এত আলোচনা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: গুয়াহাটিতে শনিবার নদী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন মোমেন ও জয়শঙ্কর
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
দেশে করোনায় আরও ৩৪ শনাক্ত, মৃত্যু এক
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় একজন মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসময় নতুন শনাক্ত হয়েছে ৩৪ জন। দেশে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১৩১ জন এবং মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮১ জনে পৌঁছেছে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ হাজার ৩৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এইদিন শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ।
দেশে মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৬৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ দুই হাজার ৫২১ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে আরও ২৩ জনের করোনা শনাক্ত
দেশে করোনায় শনাক্ত আরও ২৮
পদ্মা সেতু সাহসী জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বলেছেন, দেশের নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণে তার সরকারের পদক্ষেপ একটি সাহসী জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
ঢাকা সেনানিবাসের সেনা সদর দপ্তরে মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আয়োজিত আর্মি সিলেকশন বোর্ড ২০২২ এ বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সাহসী সিদ্ধান্ত জাতির আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক শক্তিকেও শক্তিশালী করেছে।’
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বোর্ড সভা না করে এবং দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে হঠাৎ করে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়, যা পরবর্তীতে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে এবং গত এক দশকে অর্জিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হবে।
তিনি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে সেনা সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দক্ষ, যোগ্য এবং দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে যাতে বাহিনী একটি আধুনিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তিনি নির্বাচকদের মনে রাখতে বলেছেন যে নিরপেক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রথম রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের কথা স্মরণ করেন যেখানে তিনি সেনা কর্মকর্তাদের সৎ, সাহসী ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং আপনাকে সর্বদা নিশ্চিত করতে হবে যে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে জাতির পিতার আদর্শ প্রতিফলিত হয় এবং সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশপ্রেমিকদের হাতে তুলে দিতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, দৃঢ় নৈতিক সাহস ও নেতৃত্বের অন্যান্য গুণসম্পন্ন সৎ ও অনুগত কর্মকর্তারাই পদোন্নতির দাবিদার।
‘সুতরাং, যে অফিসাররা তাদের সেনাবাহিনীর কর্মজীবনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সফল হয়েছেন তাদের পদোন্নতি দেয়ার সময় বিবেচনা করতে হবে’, তিনি পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী শুধু দেশ রক্ষায় জড়িত নয়, এটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশীদার।
তিনি করোনা মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন ও অন্যান্যদের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, সবাই মিলে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি তার বক্তৃতায় পাকিস্তানি শাসনামলে সশস্ত্র বাহিনীতে বাঙালিদের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে বলেন, একজন বাঙালি কর্নেল পাকিস্তানের সামরিক চাকরিতে ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তবে এখন অনেক জেনারেল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন এবং এটা সম্ভব হয়েছে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কারণে।’
জলবায়ু অভিবাসী এবং অন্যান্য দরিদ্র গৃহহীন লোকদের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার তাদের ঘর দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি তার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। কারণ সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে সমস্ত গৃহহীন মানুষকে বাড়ি দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী, সময়ের উপযোগী এবং সক্ষম বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে আধুনিক অস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জাম অপরিহার্য।
এ কথা মাথায় রেখেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জনগণের শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্বাধীনতার পরপরই বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতির আলোকে সেনাবাহিনীকে ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নকারী সর্বাধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে তার সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেনাবাহিনীতে অত্যাধুনিক আধুনিক ও যুগোপযোগী যুদ্ধ সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত করেছে।
‘সেনাবাহিনীর ক্রমাগত উন্নয়নের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন ফর্মেশনে তিনটি ব্রিগেড গঠন করেছে, ৫৮টি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং নয়টি সংস্থা পুনর্গঠিত হয়েছে’, বলেন তিনি ।
পদ্মা সেতুর মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে শেখ রাসেল সেনানিবাস নির্মাণ করা হয়েছে এবং মিঠামইন, রাজবাড়ী ও ত্রিশালে নতুন সেনানিবাস নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।
তিনি পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল ও মেট্রোরেলসহ মেগা প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে যা জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উন্নত ভবিষ্যতের জন্য এশিয়াকে শক্তি একত্রিত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরানো উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
বাতাসের মান: দূষিত শহরের তালিকায় ফের শীর্ষে ঢাকা
বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় ফের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী।
সোমবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানী ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৬২ রেকর্ড করা হয়েছে।
ভারতের দিল্লি ও নেপালের কাঠমান্ডু যথাক্রমে একিউআই ১৫৬ ও ১৫৫ স্কোর নিয়ে পরের দুটি স্থানে রয়েছে।
বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে 'অস্বাস্থ্যকর' বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান আবারও ‘অস্বাস্থ্যকর’
একইভাবে, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর 'খারাপ' বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মানের উন্নতি
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযানে সারাদেশে ১১৬ অনিবন্ধিত হাসপাতাল সিলগালার
ফরিদপুর, বাগেরহাট, মাগুরা, কেরানীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও ও কুড়িগ্রামের স্থানীয় প্রশাসন রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) নির্দেশনা অনুযায়ী কমপক্ষে ১১৬ অনিবন্ধিত ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করেছে।
এগুলোর মধ্যে শেরপুরে ৪২টি, ফরিদপুরে ২৬টি, বাগেরহাটে ২৫টি, মাগুরায় ১৫টি, কেরানীগঞ্জে পাঁচটি ও কুড়িগ্রামে তিনটি সিলগালা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশের সব অনিবন্ধিত ক্লিনিক, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত কোনো ক্লিনিক, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানায় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের একটি দল সদর, মধুখালী, বোয়ালমারী, সালথা, নগরকান্দা, ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলায় ২৬টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক বন্ধ করে এবং আরও ১৫টি হাসপাতালকে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসন জেলার ৯টি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২৫টি অবৈধ হাসপাতাল সিলগালা ও মোট ৩৫টি হাসপাতালকে পাঁচ লাখ ২২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. মো. শহীদুল্লাহ ইউএনবিকে জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৫টি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে এবং একজন ভুয়া চিকিৎসককে আটক করা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান জানান, অভিযানের দ্বিতীয় দিনে পাঁচটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে এবং চারটিকে দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া একজন ভুয়া চিকিৎসককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন মঞ্জুর মুর্শেদ জানান, অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার তিনটি হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সারা দেশে ৩৭টি অনিবন্ধিত হাসপাতাল সিলগালা
ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা, আটক ১
মেঘনায় বালু তুলতে পারবেন না সেলিম চেয়ারম্যান
চাঁদপুর সদর থানার লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানকে মেঘনার ডুবোচর থেকে বালু তোলার অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রবিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। এর ফলে চাঁদপুরের মেঘনা তীরবর্তী ২১ মৌজায় সেলিম খান আর বালু উত্তোলন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। অন্যদিকে সেলিম খানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি।
নথিপত্র অনুযায়ী, মেঘনা নদীর চাঁদপুর ও হাইমচর উপজেলায় অবস্থিত ২১টি মৌজায় নিজ খরচে সেলিম খান হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ পরিচালনা করে বালু উত্তোলনের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৫ সালে রিট করেন। নৌপথ সচল করার কথা বলে রিটটি করা হয়েছিল। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৯ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। এরপর রুল নিষ্পত্তি করে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারির চিঠি উল্লেখ করে বলা হয়, এতে প্রতীয়মান হয় যে, ওই মৌজাগুলোতে পর্যাপ্ত বালু-মাটি রয়েছে এবং তা তুলতে কোনো বাধা নেই। আপত্তি জানিয়ে বিবাদীদের (ভূমি সচিব, নৌ-পরিবহন সচিব, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের পরিচালক) পক্ষ থেকে কোনো জবাব (হলফনামা) দায়ের করা হয়নি, যাতে বিষয়টি (বালু থাকা) বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। রায়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, ২১টি মৌজায় অবস্থিত মেঘনার ডুবোচর থেকে ৮৬ দশমিক ৩০ কিউবিক মিটার (৩০ কোটি ৪৮ লাখ ঘনফুট) বালু সেলিম খানকে উত্তোলনে অনুমতি দিতে।
এই রায়ের চার বছর পর গত মার্চে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলে বলা হয়, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুসারে কোনো নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ প্রতিবেদনই যে একক ভিত্তি নয়, তা হাইকোর্ট উপলব্ধি করতে পারেননি। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুসারে, পরিবেশ, পাহাড়ধস, ভূমিধস অথবা নদী বা খালের পানির স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন, সরকারি স্থাপনার (যথা ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তাঘাট, ফেরিঘাট, হাটবাজার, চা বাগান, নদীর বাঁধ ইত্যাদি) এবং আবাসিক এলাকার কোনো ক্ষতি হবে কি না, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত গ্রহণ করবেন জেলা প্রশাসক।
এছাড়া বালু বা মাটি উত্তোলন করার ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ নষ্ট বা সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত ও জনস্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে ওই বালুমহাল বিলুপ্তির প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন জেলা প্রশাসক। লিভ টু আপিলে আরও বলা হয়, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে ডুবোচরের বালু উত্তোলনের বিষয়ে কোনো ধরনের মূল্যায়ন হয়নি। এমনকি রিটে উল্লিখিত মৌজাগুলো বিভাগীয় কমিশনার বালুমহাল হিসেবেও ঘোষণা করেননি। তাই হাইকোর্ট বিভাগ বিবাদীকে (সেলিম খান) বালু উত্তোলনের অনুমতি দিতে যে নির্দেশ দিয়েছেন তা বাতিলযোগ্য। হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের মাধ্যমে নদীর তলদেশে কোথায় কত দূরত্বে মাটি রয়েছে, তা আধুনিক পদ্ধতিতে চিহ্নিত করা বা এর মানচিত্র তৈরি করা হয়। ডুবোচর কাটতে হলে প্রথমে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ করতে হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের এই লিভ টু আপিল গত ৪ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হয়। সেদিন শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ওই সিদ্ধান্ত দিলেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সহিংসতা: প্রধান বিচারপতি বিবৃতি না দেয়ায় ফখরুলের ক্ষোভ
হাইকোর্টে অনলাইনে বিচার শুরু, হালদা নদীর ডলফিন রক্ষার নির্দেশ
রাজধানীতে প্রাচীর থেকে পড়ে লেগুনা চালকের মৃত্যু
রাজধানীর কদমতলীতে নিজ বাড়ির সীমানা প্রাচীর থেকে পড়ে এক লেগুনা চালকের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত মো. নয়ন (২০) নগরীর ধুলাইপাড়ের নুরবাগের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
রবিবার দুপুর ১টার দিকে পাশের বাসা থেকে গোসল করে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নয়নের দুলাভাই হিরন মিয়া জানান, রবিবার দুপুরে কদমতলীর ধোলাইপাড় নুরবাগ বাগিচা দীপ্তি গলিতে নিজ বাসার পাশে হাজি সাহেবের বাড়ির মেসে গোসল করতে যায় নয়ন।
আরও পড়ুন: বোনের জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে ভাইয়ের মৃত্যু
তিনি বলেন, গোসল সেরে সীমানা প্রাচীর বেয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করলে হঠাৎ দেয়ালের কিছু ইট ধসে পড়ে সে নিচে পড়ে যায় এবং গুরুতর আহত হয়।
পরে তাকে উদ্ধার করে দুপুর ২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।