বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সক্রিয় হতে হবে: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ টেকসই করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে তৎপর হতে বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় হতে হবে।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে দোহায় তার বাসভবনে অনুষ্ঠিত একটি আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে এই নির্দেশনা দেন।
এসময় তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে চলেছে, তাই যেসব দেশে বাংলাদেশ তার ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারে সেদিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সব দেশের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতা করতে হবে। যাতে আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে টিকে থাকতে পারি, এগিয়ে যেতে পারি এবং ভবিষ্যতে উন্নত দেশে পরিণত হতে পারি।’
তিনি বলেন, একসময় কূটনীতি ছিল রাজনৈতিক ইস্যু, আর এখন এটা অর্থনৈতিক বিষয়। ‘সুতরাং, আমরা যে যেখানে (বিভিন্ন দেশে) কাজ করছি, তাদের সেখানে বাণিজ্য ও ব্যবসার সুযোগ খুঁজে বের করতে হবে, যাতে আমরা প্রতিযোগিতামূলক দামে আমাদের রপ্তানি এবং পণ্য আমদানি বাড়াতে পারি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পণ্যের চাহিদা আছে, তাই যেখানে আমাদের পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ আছে সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করুন।’
আরও পড়ুন: উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫টি মূল সহায়তা প্রয়োজন: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হল 'সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়'।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। কিন্তু যখন অন্যায় হবে, তখন বাংলাদেশ অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কথা বলবে, যেমনটি মিয়ানমারের সঙ্গে করেছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘...আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, কিন্তু আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াইনি। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এখন স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) বিষয়ক জাতিসংঘের পঞ্চম সম্মেলনে (এলডিসি-৫) যোগ দিতে কাতারে অবস্থান করছেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে তিনি গত শনিবার কাতারে পৌঁছেছেন। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: এলডিসি-৫ সম্মেলন: দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫ সম্মেলনে যোগ দিতে দোহার উদ্দেশে রওনা হবেন শনিবার
আর্থিক খাত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছে আইএমএফ দল
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচিত ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে, আর্থিক খাত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি দল চলতি সপ্তাহে ঢাকা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসময় আইএমএফ দল বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তাদের সঙ্গে এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। কেননা প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ রেজিলেন্স এন্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) –এর অধীনে বিতরণ করা হবে।
আরএসএফ বাংলাদেশের জলবায়ু বিনিয়োগের বিষয়টিকে সমর্থন করতে, জলবায়ু অর্থায়নকে প্রভাবিত করতে এবং আমদানি-নির্ভর জলবায়ু বিনিয়োগ থেকে অর্থপ্রদানের ভারসাম্যের চাপ কমাতে সাশ্রয়ী ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের ঋণ অনুমোদন বিবেচনা করতে পারে
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, এখানে অবস্থানকালে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের জন্য ঋণের পরবর্তী কিস্তি দেয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকের হালনাগাদ তথ্য জানতে চাইবে।
ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ, বৈদেশিক মুদ্রার হার, মুদ্রানীতি, ঋণ পুনরুদ্ধার, সুদের হার, জিডিপি এবং মুদ্রাস্ফীতির বিষয়সহ বিভিন্ন নীতি সংস্কার বাস্তবায়ন করছে।
প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে- বেসরকারি খাতকে জ্বালানি আমদানির অনুমতি দেয়া এবং খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো।
এছাড়া, জ্বালানি পণ্যসহ আমদানি পণ্যের দাম ব্যবহারভিত্তিক করা এবং কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হবে।
এই ব্যবস্থাগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও সূত্র জানায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জন্য ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দিল আইএমএফ
বাংলাদেশ ব্যাংকের আশা আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি আগামী মাসের মধ্যে আসবে: মুখপাত্র
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোজা বিনতে নাসেরের সাক্ষাৎ
কাতার ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপার্সন শেখা মোজা বিনতে নাসের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সোমবার দোহায় ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে শেখা মোজা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের উন্নয়নে শেখ হাসিনার অসামান্য নেতৃত্বের প্রশংসা করেন বলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান।
মোজাকে উদ্ধৃত করে মোমেন বলেছেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) অবিশ্বাস্য সাফল্য অর্জন করেছেন।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি জনগণের জন্য কাজ করেন।
তিনি বলেন, ‘এটা আমার বাবার স্বপ্ন ছিল। তার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছি। আমি অসাধারণ কিছু করিনি।’
নাসের জানতে চেয়েছিলেন নারী ও শিশুদের জন্য বাংলাদেশ কী করছে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫টি মূল সহায়তা প্রয়োজন: দোহায় প্রধানমন্ত্রী
এরপর প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ; বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা বিস্তারের জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, উপবৃত্তি এবং বিনামূল্যে বই বিতরণের বিষয়ে আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
বৈঠকে কাতার ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়।
কাতার ফাউন্ডেশন ফর এডুকেশন, সায়েন্স অ্যান্ড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট হল কাতারের একটি রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বাধীন অলাভজনক সংস্থা। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন আমির হামাদ বিন খলিফা আল থানি এবং তার স্ত্রী মোজা বিনতে নাসের এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: এলডিসি-৫ সম্মেলন: দোহার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ মঙ্গলবার
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় মঙ্গলবার দেশজুড়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হবে।
২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেসকো) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
আরও পড়ুন: সোমবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ
১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল জনসমুদ্রের সামনে যে যুগান্তকারী ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন।
লক্ষাধিক স্বাধীনতাকামী জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু তার ১৯ মিনিটের অসামান্য ভাষণে শোষক পাকিস্তান সরকারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বিশাল জনসভা থেকে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা’।
তার এই ভাষণকে প্রায়ই মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ঐতিহাসিক গেটিসবার্গের ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন, যেহেতু আমরা রক্ত দিতে শিখেছি, আমরা আরও রক্ত দেব। ইনশাআল্লাহ, এদেশের মানুষকে মুক্ত করেই ছাড়ব…ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলব। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে (শত্রু) মোকাবিলা কর।
সেদিন বঙ্গবন্ধুর দেয়া সেই ভাষণ জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করেছিল, যা সমগ্র জাতিকে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তার স্বৈরাচারী ও দমনমূলক শাসন থেকে স্বাধীনতার সংগ্রামে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
আরও পড়ুন: সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা ৭ মার্চের ভাষণে শতাধিক ভুল: তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও স্টেশন ও জাতীয় দৈনিকগুলোতে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালনের লক্ষ্যে মন্ত্রিসভা ২০২০ সালের ৭ই অক্টোবর ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’-এর পরিবর্তে ‘ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুধু আমাদের জন্য নয়, সারা বিশ্বের স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে। একটি ভাষণ কীভাবে সমগ্র জাতিকে জাগিয়ে তুলতে পারে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের বিশ্ব স্বীকৃতি আজ বাঙালি জাতির জন্য সম্মান ও গৌরবের স্মারক। আমি বিশ্বাস করি 'জয় বাংলা' স্লোগান এবং জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে অনুপ্রাণিত করবে।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
সিরাজগঞ্জে বৃত্তিপ্রাপ্ত ৮০ শিক্ষার্থীকে হেলিকপ্টারে ঘুরিয়ে সংবর্ধনা!
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রাথমিকে বৃত্তিপ্রাপ্ত রংধনু মডেল স্কুলের ৮০ জন শিক্ষার্থীকে হেলিকপ্টারে ঘুরিয়ে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।
রংধনু মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, চার লাখ টাকা দিয়ে হেলিকপ্টারটি ভাড়া করা হয়। প্রতিবারে চারজন করে শিক্ষার্থীকে ১০ মিনিট করে হেলিকপ্টারটি শাহজাদপুর উপজেলার আকাশে ঘুরিয়ে আনা হয়। এমন আয়োজনে শিক্ষার্থীরা খুব খুশি।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত এমপি বাদশাকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় স্থানান্তর
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. শাহ আজম।
তিনি বলেন, এ আয়োজন শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আরও উৎসাহী করে তুলবে। আমি শিক্ষার্থীদের মঙ্গল কামনা করেছি।
এ সময় শিক্ষার্থীরা নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করে।
ওই স্কুলের অধ্যক্ষের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আজাদ রহমান, পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মা-বাবার স্বপ্ন পূরণে হেলিকপ্টারে কনের বাড়িতে বর!
মালয়েশিয়ান স্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টারে বাড়ি ফিরলেন প্রবাসী ব্যবসায়ী
ফরিদপুরে আঞ্চলিক পার্সপোর্ট অফিস থেকে ৬ ‘দালাল’ আটক
ফরিদপুরের আঞ্চলিক পার্সপোর্ট অফিস থেকে ছয় জন দালালকে আটকের দাবি করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। রবিবার (৫ মার্চ) বিকালে ফরিদপুর শহরের কুঠিবাড়ি কমলাপুরে অবস্থিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটকেরা হলেন-আল-আমিন শেখ (২৮), মো. আবু রাসেল (৪২), মো. ইমরান শেখ (২২), মো. ফয়সাল ভূইয়া (২৬), মো. রাজিব মোল্যা (২৮) ও মো. রাব্বি মোল্যা (২৮)। তাদের সবার বাড়ি জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায়।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে অবৈধ ভিসা ব্যবসার অভিযোগে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আটক
আটকদের সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের আদালতে পাঠানো করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে ও পুলিশ সুপারের নির্দেশে ফরিদপুরের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে ছয় দালালকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ফরিদপুরে দুদকের গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয় সেখানে পাসপোর্ট অফিসে মানুষের হয়রানির বিষয়টি উপস্থাপিত হলে বিষয়টি জেলা পুলিশকে দেখার অনুরোধ জানায় দুদক কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া আটকদের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের শেষে দুপুরে আদালতে পাঠানো করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে যাত্রীর পেট থেকে ৫টি স্বর্ণের বার জব্দ, আটক ১
নাটোরে বিপুল পরিমাণ দেশীয় মদ জব্দ, আটক ৩
বাংলাদেশকে দূষণমুক্ত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ জনবহুল হওয়ায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ কষ্টসাধ্য। তবুও দেশকে দূষণমুক্ত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশ পারলে আমরা কেন দেশকে পরিবেশ দূষণমুক্ত করতে পারব না। দেশকে দূষণমুক্ত করতে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি সব শ্রেণির জনগণকে সম্পৃক্ত হতে হবে।
আরও পড়ুন: পরিবেশ সংরক্ষণে টিলাকাটা ও পুকুর ভরাট বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
সোমবার বিকালে ‘এটিএন বাংলা উন্নয়নে বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ২০২২’- এ ভূষিত হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিবেশমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, যেকোনো স্বীকৃতি পেলে দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের নিরলসভাবে কাজ করে পরিবেশের উন্নতি দৃশ্যমান করতে হবে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের আন্তরিকভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, দায়িত্বশীলতার সঙ্গে মনোবল সহকারে দেশের পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে হবে।
এছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে পরিবেশ রক্ষায় স্মার্টভাবে কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনকে ‘বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উন্নয়ন’- ক্যাটাগরিতে ‘এটিএন বাংলা উন্নয়নে বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ২০২২’- দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: দুর্যোগ মোকাবিলায় ন্যাপ এ চিহ্নিত ১১৩ টি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
ক্ষতিকর প্লাস্টিকের ব্যবহার ৯০ শতাংশ কমানো হবে: পরিবেশমন্ত্রী
রাজশাহীতে বিষপানে স্বামী-স্ত্রীর 'আত্মহত্যা'
রাজশাহীতে বিষপানে এক দম্পতির আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে স্ত্রীর এবং সোমবার সকালে স্বামীর মৃত্যু হয়।
নিহত রোজিনা খাতুন (২০) ও মো. সজল (২২) দম্পতির বাড়ি মহানগরীর শাহ মখদুম থানার বড় বাড়িয়া মিয়াপাড়া এলাকায়।
আরও পড়ুন: মতলবে পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা!
রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, রবিবার রাতে একসঙ্গে ঘরে থাকা কীটনাশক পান করেন ওই দম্পতি। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন রাতেই তাদের রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে ভর্তির পর রবিবার রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোজিনার মৃত্যু হয়। আর সোমবার সকালে মারা যান সজলও।
তিনি বলেন, ওই দম্পতির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কি কারণে তারা আত্মহত্যা করছে তা পরিস্কার জানা যায়নি। তদন্তে রহস্য বের হবে।
আরও পড়ুন: নাসিক প্যানেল মেয়রের ‘প্রাক্তন’ স্ত্রীর আত্মহত্যা
সৌদিতে কাজ না পেয়ে হতাশায় ফেসবুক লাইভে এসে যুবকের আত্মহত্যা!
ফেনীতে মাদক মামলায় পুলিশ-আইনজীবীসহ ১৩ জনের কারাদণ্ড
ফেনীতে ছয় লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় তিন পুলিশ সদস্য ও এক আইনজীবীসহ ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে ফেনীর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) দ্বিজেন্দ্র কুমার কংস বণিক।
আরও পড়ুন: ফতুল্লায় শিশু হত্যায় মায়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড, প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট ফয়েজুল হক মিলকী, আনোয়ারুল ইসলাম ফারুক, জাহিদ হোসেন কমল, মীর মোশাররফ হোসেন মানিক ও তাজুল ইসলাম ভূঁঞা।
১৩ আসামির মধ্যে ছয়জনকে ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, ছয়জনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং একজনকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এসময় মামলায় জেলহাজতে থাকা প্রধান আসামি উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজসহ পাঁচজন, জামিনে থাকা তিনজন মিলে মোট আটজনকে আদালতে এ হাজির করা হয়।
সাজাপ্রাপ্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ অপর পাঁচ আসামি পলাতক। এদিকে মামলা দায়ের হওয়ার পর পাঁচ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়।
এর আগে গত বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত। মামলার ১৫ আসামির মধ্যে পাঁচজন গ্রেপ্তার ও চারজন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন এবং বাকি পাঁচজন আসামি পলাতক ও একজন মারা গেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা করা এপিপি দ্বিজেন্দ্র কুমার কংশ বণিক জানান, রায়ে পুলিশের এএসআই মো. মাহফুজুর রহমান, এসআই মো. বিল্লাল হোসেন বেলাল, এসআই মো. আশিকুর রহমান আশিক, সালেহ আহমদ, ফরিদুল আলম ফরিদ ও মো. জাফরকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এছাড়া অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, কনস্টেবল মো. শাহীন, মো. আব্দুল মোতালেব মুহুরি, কনস্টেবল কাশেম আলী কাশেম, গিয়াস উদ্দিন গেসুকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: নারায়ণগঞ্জে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
এ মামলায় মো. জাবেদ আলীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও জানান, গত সাত বছরে ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এছাড়া গত ১ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফের আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আটজন আসামি উপস্থিত ছিলেন। পাঁচজন পলাতক রয়েছেন।
পলাতক আসামিরা হলেন- আবুল কাশেম (পুলিশ), আব্দুল মোতালেব (মুহুরী), বিল্লাল হোসেন বেলাল, আশিকুর রহমান আশিক ও জাফর।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ জানান, গত বছরের ৬ মার্চ তৃতীয় মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় তিন ম্যাজিস্ট্রেট, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মামলার বাদীসহ ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলার ১৩ আসামির মধ্যে আট জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পাঁচ আসামি পলাতক।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ ত্রিশালের ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য আইসিটি আইন করা হয়নি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমি একটা কথা আগেই বলে রাখি যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট কিন্তু কারও বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয় নাই। পেনাল কোডে আমাদের অপরাধগুলো লিপিবদ্ধ করা আছে। চুরি করলে কি শাস্তি হয়, তা সেখানে লেখা আছে। এছাড়া প্রযুক্তির বিস্তার এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এখন চুরি আর ফিজিক্যালি করতে হয় না, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সবোর্চ্চ উদাহরণ।
সোমবার (৬ মার্চ) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও-এ ‘শেপিং অব থার্ড সেক্টর-ল অ্যান্ড পলিসিস’- শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আবেদন পেলে খালেদার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, ডিজিটাইজেশন এবং অ্যাডভান্স কম্পিউটারাইজেশনের ফলে যেসব অপরাধ নতুন মাধ্যম করা যাচ্ছিল সেগুলোকে অপরাধ স্বীকৃতি দিয়ে একটা আইনের প্রয়োজন ছিল। এছাড়া আমার সঙ্গে সারা বিশ্বে নানা অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে যত আলাপ-আলোচনা হয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের প্রয়োজনীয়তা নাই, এই কথা কিন্তু কেউ বলে নাই।
আইনমন্ত্রী বলেন যে দুঃখজনক হলেও সত্য, এই আইনটা করার পরে অনেক মিস ইউজ এবং অ্যাবিউজ দেখেছি। সত্যকে অস্বীকার করবো না এবং সত্যকে স্বীকার করতেও আমার দ্বিধা নেই। যখন আমি দেখলাম এই আইনটা অপব্যবহার হওয়ার যথেষ্ট প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তখন ইমিডিয়েটলি এটা নিয়ে কি করা যায়, তা নিয়ে নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে বসেছিলাম।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে হিউম্যান রাইটস হাই কমিশনের অফিস থেকে আমরা একটা সাজেশন পেয়েছি এবং এই সাজেশনটা আমরা দেখছি। আরেকটি প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) মামলাটা অনেকেই করেন। যাকে আসামি করা হয় তাকে কিছুদিনের জন্য যেন জেল খাটানো যায়। এইরকম একটা প্রবণতার কারণেই মামলা করা হয় এবং মামলাটা গ্রহণও করা হয়। তখন আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে প্রথমেই যেটা করলাম- সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যদি ডিএসএ আইনে মামলা করা হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মামলাটা যেন গ্রহণ করা না হয়। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য যেন অন্য সেলে পাঠানো হয়।
আনিসুল হক বলেন, অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করবেন সাংবাদিক কেন সবাইকে না কেন? সাংবাদিক প্রথমে ছিল এই কারণে যে এই আইনের উদ্দেশ্য যে বাক স্বাধীনতা হরণ করার জন্য নয়, সেটাকে এস্টাবলিস্ট করা। সেই মেসেজটা পুলিশের কাছে পৌঁছে দেয়া। সেটা আমি মনে করি সাকসেসফুল হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের লাইন মিনিস্ট্রি কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় নয়। যখন এই আইনের ড্রাফট করা হয়েছিল, তখন কিন্তু এর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা কতটুকু হয়েছিল তা আমি কিন্তু খুব একটা জানি না। এই আইনটা ব্যাটিংয়ের জন্য যখন আমার মন্ত্রণালয়ে আসে যখন আমি জানি, তখন এর স্টেকহোল্ডার তাদের যত বক্তব্য আছে, তাদের সঙ্গে বসেছিলাম।
ডিএসএ আইন করার উদ্দেশ্য নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা যেরকম এদেশের নাগরিক। আমরাও এদেশের নাগরিক। আপনাদের যেরকম সংবিধানের প্রতি আনুগত্য আছে, আমাদেরও সেরকম আনুগত্য আছে। এছাড়া আমরা চাই না সংবিধান বিরোধী কোনও আইন হোক।
আরও পড়ুন: সরকার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রথমত কারও বিরুদ্ধে এই মামলা গ্রহণ করা হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত এই মামলার জন্য গঠিত সেল সত্যি সত্যিই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই মামলা বিবেচনার জন্য গ্রহণ না করা হবে।
দ্বিতীয়ত, বিচার বিভাগ স্বাধীন তাদের আমি কিছু বলতে পারি না। তবে আমি প্রসিকিউশনকে এই ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও পুলিশকে এই নির্দেশ দেয়া আছে যে, এই ব্যাপারে মামলার রুজু করলেই গ্রেপ্তার করা হবে না, আগে সমন দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সব আইনে কিছু কিছু সিস্টেমিক প্রবলেম আছে, কিছু কিছু আইনে ইমপ্লিমেন্টশনে প্রবলেম আছে। তখন ইম্পিমেন্টেশনে প্রবলেম হয় তখন আইনটা টেবিলে আসে। তখন ইম্পিমেন্টেশন প্রবলেমগুলো কীভাবে রিজলব করা যায় তা দেখা হয়।
ঠিক সেই কারণে আজকেও আমি বলি যে এই আইনটা নিয়ে বসব, যদি রুলসের পরিবর্তন করে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারি, অবশ্যই আমরা সে দিকে যাব। যদি তারপরও আমরা দেখি রুলস না আইনটার কিছু সংশোধন করার প্রয়োজন আছে, আমরা সেটাও করবো।
তিনি বলেন, মনে হয় না যদি ঢালাওভাবে আমরা বলি আইনটা বাতিল করে দেয়া হোক, তাহলে সেটা যুক্তিসঙ্গত কারণ হবে না। আসুন আজকে এখানে এ বিষয়ে আজকে যা বললেন সে বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে বসব। সেটা আপনারা চাইলে রোজার আগেও হতে পারে বা রোজার পরেও হতে পারে।
আমার মনে হয় রোজার আগে বসলেই ভালো হবে, কারণ এ বিষয়টি যাতে সামনের বাজেট অধিবেশনেই তুলা যায়।
এর আগে অনুষ্ঠানে আইন সংশোধনের জন্য নাগরিক সমাজ কর্তৃক প্রস্তাব তুলে ধরা হয়, এতে বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন ২০১৬ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
আইন সংশোধনের জন্য নাগরিক সমাজ কর্তৃক প্রস্তাব উপস্থাপন উপলক্ষে ইউএসএইড, ইন্টারন্যাশনাল-সেন্টার-ফর-নট-ফর-প্রফিট ল (আইসিএনএল) ও কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ইউএসএইড এর প্রমোটিং অ্যাডভোকেসি এন্ড রাইটস (পিএআর) এর মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খালেদাকে রাজনীতি করতে দিতে বাইরের কোনো চাপ নেই: আইনমন্ত্রী