বাংলাদেশ
রংপুর মেডিকেলের ৬০০ যন্ত্রপাতির সাড়ে চারশ'ই অকেজো, এটা মেনে নেয়া যায় না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৬০০ যন্ত্রপাতির মধ্যে সাড়ে চারশ'ই অকেজো বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, ‘দেশের চিকিৎসা সেবা নিয়ে নানা সমালোচনা ছিল এবং এখনও আছে। চিকিৎসা খাতের ঠিক কোন জায়গাটায় সমস্যা সেটি খুঁজে বের করতে আমরা এখন মাঠে নেমে গেছি। দেশের প্রান্তিক হাসপাতালগুলোতে সরেজমিন পরিদর্শন শুরু করেছি, রোগীদের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান কথা বলছি। মেশিন কয়টি আছে, কয়টি নষ্ট, কী কারণে নষ্ট, কোন চিকিৎসকরা ডিউটি ঠিকভাবে করেন, কারা করেন না এগুলো নিজে উপস্থিত থেকে তালিকা করে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার বিকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, ‘দেশের ছয়টি বিভাগ পরিদর্শন শেষ করেছি। আর মাত্র দুটি বিভাগ বাকি আছে। এরপর দেশের সব হাসপাতালের ছোট-বড় খুঁটিনাটি সব বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন রকম কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে, যত যাকিছুই করা হোক, চিকিৎসা দিতে হবে চিকিৎসকদেরই। চিকিৎসা দিতে অবহেলা করা যাবে না। নিজ নিজ হাসপাতালকে নিজ উদ্যোগে সংশোধিত করতে হবে, উন্নত করতে হবে। আর চিকিৎসা দিতে হবে দরদ দিয়ে। মানুষকে চিকিৎসা সেবা এমনভাবে দিবেন যেনো বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা নিতে দেশের আর কোন মানুষকে বিদেশে যেতে না হয়, বরং বিদেশ থেকেই বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে বিদেশিদের আসতে হয়।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে বেড সংখ্যা এক হাজার হলেও চিকিৎসা নেয় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালের কিছু বিভাগে ভালো চিকিৎসা সেবা দেয়া হলেও বেশ কিছু বিভাগের গুরুতর ত্রুটি লক্ষ্য করেছি। এসব চলবে না। আরেকটি অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এই হাসপাতালে প্রায় ছয় শত যন্ত্রপাতি থাকলেও এগুলোর মধ্যে সাড়ে চারশ'ই অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এটা তো মেনে নেয়া যায় না। হয় পুরাতন যন্ত্রপাতি দ্রুত মেরামত করতে হবে, নইলে নতুন মেশিন কিনতে হবে। কিন্তু সাড়ে চারশ মেশিন নষ্ট পড়ে থাকলে আপনারা (চিকিৎসক, নার্স) মানুষকে কী চিকিৎসা দেবেন? আমরা হাসপাতালে কী কী ওষুধ দেই আর রোগীদের কী কী ওষুধ আপনারা বাইরে থেকে কেনান এটা আমরা খুঁজে বের করছি। এরপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে ৫০ হাজার টাকার স্বাস্থ্যসেবা পাবে ১৫ লাখ পরিবার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখাসহ রোগীদের সেবায় আরও করণীয় নানারকম পরামর্শ দেন।
এর আগে সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রংপুরের নির্মাণাধীন ১৫ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার হাসপাতালের চলমান নির্মাণ কাজের পরিদর্শন করেন। নির্মাণ কাজ দ্রুততার সঙ্গে করতে স্থানীয় প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এরপর মন্ত্রী ১০০ বেডের শিশু হাসপাতালে এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত বিভিন্ন ইউনিটের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার মান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন ও সেখানকার চিকিৎসক, নার্সদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
সভার সভাপতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশিদ আলম জানান, করোনায় বাংলাদেশ যদি এত ভালো করতে পারে, চিকিৎসকরা প্রশংসা পেতে পারে তাহলে দেশের মানুষের চিকিৎসায় চিকিৎসকরা কেন ভালো করতে পারবে না। দেশের মানুষের উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা দিতে চিকিৎসকদের অবশ্যই আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে নার্স, স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও বক্তব্য রাখা হয়।
সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) নাজমুল হক, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর শামিউল ইসলাম, রংপুর বিভাগের বিএমএ সভাপতি ও রংপুর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ বিমল চন্দ্র রায়, এইচইডি’র চিফ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডিয়ার বশির, রংপুর মেডিকেলের পরিচালক ইউনুছ আলী, রংপুর বিভাগীয় হাসপাতাল পরিচালকসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও নার্সরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ওষুধ আইন নিয়ে সরকার গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
টোকেনে ৩২০ ডিজিট, বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার রিচার্জে ভোগান্তি
ফেনীতে প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) গ্রাহকরা। আগে ২০টি ডিজিট প্রবেশ করালেই হয়ে যেত রিচার্জ। কিন্তু নতুন সিস্টেমে এখন ১০০ থেকে ৩২০টি ডিজিট দিতে হচ্ছে।
দীর্ঘ এই ডিজিট দিতে বারবার ভুলের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিটার। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
অভিযোগ কেন্দ্রে এই সমস্যা জানিয়েও সহসা সমাধান পাওয়া যায় না। নতুন মিটার স্থাপন করে কিছু কিছু সমস্যার সমাধান করছেন বিপিডিবি। এতে ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি ও ভোগান্তির মুখোমুখি হচ্ছেন।
ফেনীর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছানা উল্লাহ বলেন, মিটার রিচার্জের ক্ষেত্রে টোকেনের এ সমস্যার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এক গ্রাহক মিটারের জন্য ৩২০টি ডিজিট পেয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। এটা একজন গ্রাহককে একবারেই করতে হবে। তা না হলে হবে না। বিদ্যুতে বিল বৃদ্ধির ফলে এত বেশি ডিজিটের সংখ্যা আসছে। শিগগিরই বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার রিচার্জ সিস্টেমের এ ভোগান্তির নিরসন করা হবে বলেও জানান তিনি।
ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহকের সংখ্যা ৭৫ হাজার। এর মধ্যে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে ১১ হাজার গ্রাহককে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালের মধ্যে সবাইকে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার সরবরাহ করবে ডেসকো
রিচার্জ করার সময় তাদের স্বাভাবিকের চেয়ে ১২ গুণ দীর্ঘ ডিজিট চাপতে হচ্ছে। আর তা করতে গিয়ে ভুল হচ্ছে। তিনবার ভুল হলেই মিটার লক হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুতের নতুন মূল্য নির্ধারণের পর এই সমস্যা বেড়েছে।
বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ফেনীর কর্মকর্তা রিয়াদ প্রিপেইড গ্রাহকদের ভোগান্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যুতের নতুন দাম নির্ধারণ হওয়ার পর থেকে এই সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। মিটার লক বা অন্য কোনো সমস্যা হলে এবং আমাদের জানালে ঠিক করে দেয়া হবে।
ফেনী বড় মসজিদ রোডে পপুলার অফসেট প্রেসের পরিচালক তারেকুল ইসলাম বলেন, আগে বিদ্যুতের রিচার্জ করতে গেলে ২০টি সংখ্যা আসতো। ওই সংখ্যা সহজে রিচার্জ করা যেত। এখন ১২০টি সংখ্যা আসছে। সবকটি লিখে রিচার্জ করতে হচ্ছে। এতে ভুল হচ্ছে, মিটারও লক হয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, বিদ্যুৎ খাতের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নে সরকার ২০১৫ সালে প্রি-পেইড মিটার সিস্টেম চালু করে। ফলে গ্রাহকরা ঘরে বসেই অনলাইনে বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারছেন। এতে যেমন শতভাগ বিল আদায় নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে গ্রাহকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না।
বর্তমানে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে নতুন ভোগান্তি দেখা গেছে টোকেন সিস্টেমে। বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার রিচার্জের ক্ষেত্রে সাধারণত ২০ ডিজিটের একটি টোকেন মোবাইল ফোনে বার্তা আকারে আসে। সেই টোকেন নম্বরটি মিটারে প্রবেশ করালে রিচার্জ শেষ হয়।
আরও পড়ুন: এবার ‘স্মার্ট প্রিপেইড’ মিটার বসাতে যাচ্ছে ডেসকো
জাপানি মায়ের জিম্মায় দুই সন্তান, রায়ের বিরুদ্ধে বাবার আপিল
দুই সন্তানকে জাপানি মায়ের জিম্মায় দেয়ার পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি বাবার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ হাবিবুর রহমান ভুইয়া এ আপিল গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে জাপানি মা ও বাংলাদেশি বাবার মধ্যে একসঙ্গে সংসার করার বিষয়ে সমঝোতার জন্য একটি তারিখ ধার্য করে দেন আদালত।
আদালতে ওই দুই শিশুর বাবা আপিলকারী ইমরান শরীফ ও শিশুদের মা নাকানো এরিকো হাজির ছিলেন।
এ মাসের ১ তারিখ দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে ঢাকার জেলা জজ আদালতে আপিল আবেদন করা হয়।
আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। ধার্য দিনে গ্রহণ করা হয় আপিল আবেদন।
এর আগে দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে বাবার করা মামলা খারিজ করে রায় দেন আদালত।
গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত বলেন, মায়ের জিম্মায় থাকবে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। একই সঙ্গে মেয়েদের নিয়ে জাপান যেতে পারবেন তাদের মা নাকানো এরিকো।
২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুল পড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। আর ছোট মেয়ে থেকে যায় জাপানে মা এরিকোর সঙ্গে।
তবে ওই দুই মেয়েকে জিম্মায় পেতে মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। তবে ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরে ২ মেয়েসহ জাপানি নারীকে দেশত্যাগে বাধা
এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দু’টিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দু’টিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেয়ার আদেশ দেন।
এরপর দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে তার নিষ্পত্তি পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ।
গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ দেয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে যায়।
এসব ঘটনার মধ্যে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাতে দুই সন্তান নিয়ে জাপানে যাওয়ার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান এরিকো নাকানো। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ ফিরিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় ২৯ ডিসেম্বর দুই সন্তানের বাবা ইমরান শরিফ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বাবার মামলা খারিজ, দুই সন্তান থাকবে জাপানি মায়ের কাছে
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডলার সংকটের প্রভাব
১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তার আংশিক উৎপাদন পুনরায় শুরু করেছে। তবে কর্মকর্তারা এখনও ডলার সংকটের কারণে এটির নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ প্ল্যান্টের প্রধান জ্বালানি ‘কয়লা’ আমদানি আবার ব্যাহত হতে পারে।
কয়লা ঘাটতির কারণে এক মাস বন্ধ থাকার পর বুধবার থেকে কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্টের ইউনিট-১ পুনরায় উৎপাদন শুরু করেছে।
গত মাসে বন্ধ হওয়ার আগে আগস্টে শুরু হওয়া প্ল্যান্টটি এখনও পরীক্ষামূলকভাবে চলছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) কর্মকর্তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার একটি ব্রিফিংয়ে রামপাল প্লান্টের বিআইএফপিসিএলের প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডে বলেন, প্লান্টটি চালু রাখতে হলে কয়লা আমদানির বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: কয়লার অভাবে ৮ দিন ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ
তিনি প্ল্যান্ট পরিদর্শনকারী একদল জ্বালানি বিষয়ক সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্ল্যান্টে ব্যবহৃত কয়লা উচ্চমানের এবং উপমহাদেশে পাওয়া যায় না।’
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কয়লা সরবরাহের ঘাটতির কারণে ১৪ জানুয়ারি ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ইউনিট-১ বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানির কোনো লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতে পারছে না বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
সরকারের নীতিগত পর্যায়ে অনেক বোঝানোর পর কয়লা আমদানির জন্য এলসি খোলার অনুমতি দেয়া হয় এবং সরবরাহকারী ৩০ হাজার মেট্রিক টনের একটি চালান পাঠায়।
বিআইএফপিসিএল কর্মকর্তারা জানান, প্ল্যান্টের জন্য কয়লা আমদানির পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
বিআইএফপিসিএল ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এনটিপিসি এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিক ও পরিচালক।
ওই কর্মকর্তা জানান, ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লার আরেকটি চালানও শিগগিরই দেশে আসছে।
আরও পড়ুন: রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের দৃঢ় বহিঃপ্রকাশ: প্রণয় ভার্মা
কয়লার বর্তমান মজুদ থাকায় প্ল্যান্টটি চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চলতে পারে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ইউনিট-১ পূর্ণ ক্ষমতার সঙ্গে চালু রাখতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন।
প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউনিট-২ চলতি বছরের জুন মাসে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং সেই সময়ে প্রতিদিন প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হবে।’
তিনি বলেন, ইউনিট-১ এখন পরীক্ষাধীন রয়েছে। কারণ বিআইএফপিসিএলের সঙ্গে বিপিডিবি’র বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) রয়েছে, তারা এখনও প্ল্যান্টের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দেয়নি।
আরও পড়ুন: রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ চুক্তি জিতল বসুন্ধরা গ্রুপ
দেশে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি, আক্রান্ত ৪
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি একজন ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ১৬ জন ঢাকার মধ্যে এবং ২০ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১০ জন
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৬৮৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩২৭ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৬৪২ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ৩০৬ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ৩৩৬ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৯ জন
দেশে ১৪ জনের করোনা শনাক্ত
দেশে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এসময় নতুন করে ১৪ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩০ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ১১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৮১ লাখ ছাড়াল
এ সময়ে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩০৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪৮ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ০৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে মৃত্যু নেই, শনাক্ত ১৩
নতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তাহে ৫দিন ক্লাস হবে: শিক্ষামন্ত্রী
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে পাঁচদিন ক্লাস হবে এবং দুইদিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কয়দিন বন্ধ থাকবে তা একটি নীতিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তাহে পাঁচদিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হবে। বাকি দুইদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে চাঁদপুর সার্কিট হাউজে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত শিক্ষাক্রম। গতবছর আমাদের শিক্ষাক্রমে ছিল ছয়দিন শ্রেণীকক্ষে পাঠদান। যখন বিদ্যুৎ নিয়ে সঙ্কট ছিলো তখন সেটাকে আমরা পাঁচদিন করেছি। তখনই বলা হয়েছিলো যে এখন বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে করা হচ্ছে, কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমেও পাঁচদিনই শ্রেণীকক্ষে পাঠদান হবে।
আরও পড়ুন: স্কুল-কলেজে উপবৃত্তির ৭৫১ কোটি টাকা বিতরণ শুরু
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে যে নিয়ম, আমাদের দেশেও তা। আর তাছাড়া শিক্ষকদেরও ১-২ দিন সময়ের দরকার। তাদেরও একটু বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। আবার শিক্ষার্থীদেরও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কারিগরি বিভাগে তার আগের ১০বছর কোন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। গত চার বছরে সমস্ত শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে।
তিনি বলেন, সবসময়ই কোনো না কোনো শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন, কাজেই কিছু কিছু পদ শূন্য হয়।আবার সেই চাহিদা অনুযায়ী আমরা সেগুলোতে নিয়োগ দেই। এ নিয়োগ প্রক্রিয়া যে খুব সহজ তাও নয়।
তিনি আরও বলেন, এমুহূর্তে আমাদের কোনো শিক্ষক সঙ্কট নেই। কোথাও শূন্য থাকলে তা পূরণ হয়ে যাচ্ছে।এসময় জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারীসহ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার ফল ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে
জুন থেকে স্কুল ফিডিং চালু হবে: প্রতিমন্ত্রী
রমজানে ১ কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
আসন্ন রমজানে মানুষ চাল নিয়ে বিব্রত কর অবস্থায় পড়বে না বলে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
তিনি বলেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, আমা করছি বোরোতে বাম্পার ফলন হবে। ফলে দেশে চাল আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে রমজান মাস, খাদ্য মন্ত্রণালয় মুলত রেশনিং, কাবিখা, টিআর, ওএমএস কর্মসূচির চাল বিতরণ করে থাকি। বিতরণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্ববৃহৎ বিতরণ ব্যবস্থা চলছে। ২৫০০ ডিলারের মাধ্যমে চাল ও আটা প্রতিনিয়তই বিতরণ চলছে। হিসেব অনুযায়ী এ সময় ওএমএস বন্ধ থাকে। শুধু সিটিতে কিছু থাকে। বর্তমানে আমাদের সিটি, জেলা উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে চলছে। ওএমএস'র আওতায় যারা নিম্ন আয়ের লোক তারা ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল ও ২৪ টাকা কেজি দরে ৩ কেজি আটা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী ১ মার্চ থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া শুরু হবে। এটা বছরে ৫ মাস চলে, মার্চ, এপ্রিল, মে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেয়া হয়। আমাদের ওএমএস এ এক কোটির ওপরে পরিবার বছর জুড়েই ৫ কেজি চাল ও ৩ কেজি আটা পাবে।
এছাড়া, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সেখানে মিয়নমার থেকে আমদানি করা আতপ চাল দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: চালের দাম বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই: খাদ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমাদের বেসরকারি আমদানি খোলা রয়েছে। তবে কম আসছে। কারণ দেশে এখন প্রচুর চাল আছে। সরকারি মজুতও প্রচুর রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের বিতরণ যেমন অনেক বেশি পাশাপাশি মজুদও সবচেয়ে বেশি রয়েছে। বর্তমানে আমাদের ২০ লাখ ৩৩ হাজার ৯২৮ মেট্রিক টন মজুদ রয়েছে। আমাদের যেমন বিতরণ হচ্ছে তেমনি সংগ্রহও হচ্ছে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টন চাল সংগ্রহ হচ্ছে। যদিও আমাদের ৫ লাখ মেট্রিকটন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সেখানে আমাদের ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩০ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। চুক্তি হয়েছিলো ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৩ মেট্রিকটন। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো। আমাদের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও মজুদ ভালো।
তাহলে ধান সংগ্রহ হয়নি কেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ধান সংগ্রহের জন্য সরকার যে রেট নির্ধারণ করে দেয়। কারণ কৃষকরা যাতে মিলার, মজুদদার বা খরিদদারের কাছে প্রতারিত না হয়। বাজারে যদি দাম কম থাকে তাহলে কৃষকরা সরকারের কাছে বিক্রি করে লাভবান হতে পারে। এবছর সরকারি মূল্য থেকে বাজারে মূল্য বেশি থাকায় কৃষকদের সরকারের কাছে ধান দেয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত মূল্য বাজারেই পাচ্ছে। অতএব প্রসার দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান নিতে চাই না। আমি মনে করি কৃষকরা খুব ভালো আছে, সুখে আছে।
বৈশ্বিক সংকটের চ্যালেঞ্জগুলো কোথায় জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দেশনার কারণে আমাদের দেশে বৈশ্বিক সংকটের তেমন কোন প্রভাব ফেলেনি এবং ফেলতে পারবে না। আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে, কোন দুর্বিপাক না হলে রোবোতেও বাম্পার ফলন হবে। ফলে আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি।
চালের দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে সব কিছু যদি বিচার বিশ্লেষণ করেন যেমন,-ডলারের দাম, উৎপাদন খরচ সব কিছু বিবেচনা করলে আমি মনে করি বৈশ্বিক এই সংকটে চালে দাম স্থিতিশীল আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে যে হাহাকার নেই, এটাই আমাদের জন্য অনেক বড় পাওনা।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য তো ওএমএস, কাবিখা আছে। আর অসাধারণের জন্য এরোমেটিক, প্যাকেট, সিলকি আছে। তাহলে মধ্যবিত্তরা কোথায় যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওএমএস কি শুধু সাধারণ মানুষ যায়, সেখানে অনেক মধ্যবিত্তও যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: খাদ্যশস্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
চকচকে চাল বর্জন করে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন চাল খাওয়ার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক চায়: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘তারা (মার্কিন) বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। তারা আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়।’
বৃহস্পতিবার মোমেন সিলেটে সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) ছিল ‘বাংলাদেশের জন্য একটি দারুণ দিন’।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তারা সকলেই বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন এবং গভীর সম্পর্কের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের আগমনের আগে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ধারাবাহিক বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে: ডেরেক শোলে
মোমেন বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। তারা সম্পর্ক জোরদার করতে এসেছে।’
ডেরেক শোলে বুধবার বলেছেন, ৫১ বছর ধরে গড়ে ওঠা শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ব্যাপারে ‘আশাবাদী’।
শোলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী। আমাদের মধ্যে খুব দৃঢ় অংশীদারিত্বের ৫১ বছর পার হয়েছে। আমরা পরবর্তী ৫১ বছর এবং তার পরের সম্পর্কের জন্যও অপেক্ষা করছি। আমাদের উভয়ের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে আমাদের অনেকগুলো সম্ভানাময় ক্ষেত্রও রয়েছে; যেগুলো নিয়ে আমরা আজ কথা বলেছি।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাল প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী: মার্কিন কাউন্সেলর চোলেট
ফ্রান্সের ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সুবিথধার কথা তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। ফ্রান্সের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। ফ্রান্সের বিনিয়োগকারীরা এসব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশকিছু সুযোগ- সুবিধা দিচ্ছে।
ফ্রান্সে ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারি ওইসিডি আয়োজিত ‘প্রমোটিং এন্ড ইনাব্লিং রিসপনসিবল বিজনেস কনডাক্টর ইন দ্য গ্লোবাল ইকনোমিক’- শীর্ষক মিনিস্টারিয়াল মিটিং এ যোগদান করে এমইডিইএফ ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ফ্রান্সের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে টিপু মুনশী এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক, লেদার, মেডিকেল পণ্য, সিরামিক, এনার্জি এবং অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ডিসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একশতটি স্পেশাল ইকনোমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে, এর অনেকগুলোতে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এগুলোতেও বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
ফ্রান্সে অবস্থিত বিজনেজ কমিউনিটি আয়োজিত অপর এক মতবিনিময় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করতে হবে এবং ফ্রান্সে অবস্থিত সকল প্রবাসীকে রেমিটেন্স প্রোপার চ্যানেলে বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। এতে দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। ফ্রান্সের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে যেকোন জটিলতা সরকার গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করবে। এসময় ইউরো-বাংলা বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন এবং ফ্রান্স বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম এর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সফরকালে বাণিজ্যমন্ত্রী হাঙ্গেরির ফরেন অ্যান্ড ট্রেড মিনিস্টার পিটার এসজিজার্টো এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী হাঙ্গেরিতে পড়া লেখার জন্য বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের ভিসা সহজ করার আহ্বান জানান। দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ডাবল ট্যাক্সেশন পরিহারে চুক্তি সইয়ের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন।
ফ্রান্সে ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মিটিং এ বাংলাদেশের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। অন্য দু'জন হলেন এফবিসিসিআই এর সাবেক প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম, এমপি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার।
সভায় মার্কেট বেজ ইকনোমিক প্রিন্সিপাল, ওপেন, ফ্রি, ফেয়ার, রুলবেজ, মাল্টিলেটারেল ট্রেডিং সিস্টেম এবং সরকারের দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণ এবং মানবাধিকার সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়ে।
উল্লেখ্য, দু'দিনব্যাপী এ মিটিং এ ২৫টি দেশের মন্ত্রী, ইউএন বডি, ইইউ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধি এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ভ্যাটের পরিধি বাড়ান: বাণিজ্যমন্ত্রী