বাংলাদেশ
কুমিল্লায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২, আহত ১
কুমিল্লার মুরাদনগরে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত আরও একজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার পালাসুতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, পালাসুতা, কাজিয়াতল, শুশুন্ডা, বাখরাবাদ, কেওট গ্রামসহ আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে একসপ্তাহ যাবত ডাকাতের উৎপাত বেড়ে গেছে। তাই গ্রামের লোকজন রাতভর বাড়ি পাহারা দেয়।
আরও পড়ুন: নাটোরে গণপিটুনিতে সন্দেহভাজন ডাকাত নিহত
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কেওট গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে ধাওয়া খেয়ে পালাসুতা গ্রামের এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় ডাকাতরা। বিষয়টি পাহারারত গ্রামবাসী দেখে ফেলেন এবং ওই ঘর থেকে তিনজন ডাকাতকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে গণপিটুনি দেয়।
১৯ নং দারো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ডাকাতদের কারণে মানুষ রাতে বাড়ি পাহারা দেয়। এছাড়া শুক্রবার জনতার হাতে তিনজন আটক ও গণপিটুনি খেয়েছে। পরে পুলিশ এসে তাদের চিকিৎসার জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার গণপিটুনিতে দুজনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ডাকাতদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি। লাশ কুমেক হাসপাতালে আছে। আহত একজন চিকিৎসাধীন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন: যশোরে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা, গণপিটুনি
নোয়াখালীতে গণপিটুনিতে সন্দেহভাজন চোর নিহত
কক্সবাজারে ৫০০ বেডের হাসপাতাল করা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কক্সবাজারে ৫০০ বেডের হাসপাতাল করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, ‘কক্সবাজারে দেশ বিদেশ থেকে প্রতি বছরই লাখ লাখ পর্যটক আসেন। এর সঙ্গে কক্সবাজারে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাস করছে। এখানে প্রায় ২৮ লাখ স্থানীয় বাসিন্দা আছেন। প্রতিদিনই এখানকার সরকারি হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে অনেক রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এসব কারণে, কক্সবাজারে চিকিৎসা সেবা আরও বৃদ্ধি করা জরুরি।
আরও পড়ুন: ষাটোর্ধ্বদের করোনা টিকার ৪র্থ ডোজ দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের বর্তমানে আড়াইশ’ বেডের জেলা সদর সরকারি হাসপাতাল থাকলেও সেখানে ছয় থেকে সাতশ’ রোগী প্রতিদিনই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। এত রোগীর চাপে হাসপাতালের ফ্লোরেও রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এজন্য এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা জরুরি। তাই, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কক্সবাজারের হাসপাতালে অচিরেই আড়াইশ’ বেড থেকে বাড়িয়ে পাঁচশ’ বেডের হাসপাতাল করা হবে। এর পাশাপাশি এই হাস্পাতালে ডায়ালাইসিস সেবা দেয়ারও ব্যবস্থা করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআর-এর যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজার জেলা সদর ২৫০ বেড হাসপাতালে নবনির্মিত ‘ডা. আব্দুর নূর বুলবুল ভবন’ এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
কক্সবাজারের বর্তমানের আড়াইশ’ বেড হাসপাতালটি এখন তিন তলা বিল্ডিং হিসেবে এখানকার প্রায় ২৮ লাখ স্থানীয় বাসিন্দাসহ অন্যদেরও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে নতুন করে পরিত্যক্ত জায়গা পাওয়া অনেক কঠিন। তাই এই তিন তলা বিশিষ্ট হাসপাতালটিকে ১০ তলা বিশিষ্ট হাসপাতালে পরিণত করতে পারলে এখানকার পর্যটকসহ স্থানীয় ২৮ লাখ মানুষের সেবার মান বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে সভায় জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এক্ষেত্রে বিদেশি সাহায্য না পাওয়া গেলে সরকারিভাবেই এই উন্নয়ন কাজটি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ঢাকা শহরে কোনো অননুমোদিত ক্লিনিক নেই: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের নানারকম সমস্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ, এখন সেটি আরও কয়েক লাখ বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের কারণে এদেশের মুল্যবান বন বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আরও বেড়ে গেলে তা দেশের জন্য স্বস্তির হবে না বলে জানান মন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবেই বলে সভায় উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা সদর ২৫০ বেড সরকারি হাসপাতালের ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও কক্সবাজারের উখিয়া, রামু অঞ্চলের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি'র সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারের হেড অব অপারেশন ইউকো আকাসাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হাসান, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা সদর ২৫০ বেড সরকারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোমিনুর রহমান, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ড. মাহাবুবুর রহমানসহ অন্যান্য উধ্বর্তন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: সবাইকে স্বাস্থ্যকার্ড দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন লক্ষ্যণীয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই রূপান্তরের গর্বিত অংশীদার।
তিনি বলেন, আমরা আগামী ৫০ বছর এবং তারপরেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরাম ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্যানেলে ‘মবিলাইজিং ইনফ্রাস্টাক্চার ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ এন্ড দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
হাস বলেন, গত পঞ্চাশ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং এ ধরনের আরও অনেক সমস্যা মোকাবিলায় আট বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ প্রদান করে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা আরও দক্ষ লজিস্টিক সিস্টেম তৈরি করতে এবং ক্লিন এনার্জি, বন্দর এবং রেলওয়ের মতো ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ আনতে প্রযুক্তিগত সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে কাজ করছি।’
সমগ্র অঞ্চলের অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের মতো বাংলাদেশেও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য অবকাঠামো গুরুত্বপূর্ণ।
অবকাঠামো শ্রমিকদের ভালো কাজের সঙ্গে সংযুক্ত করে; ব্যবসা বৃদ্ধি ও উন্নতি লাভের সুযোগ দেয় এবং সমাজের সকল অংশের জন্য সুযোগ তৈরি করে। যার মধ্যে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়গুলোও রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কিন্তু উচ্চ-মানের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কেবলমাত্র আর্থিক বিনিয়োগই না, এর চেয়েও বেশি কিছু লাগে। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতি কাঠামো, নিয়ন্ত্রক পরিবেশ এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য প্রকল্প গঠনের জন্য মানব ক্ষমতা সমর্থন করার জন্য কাজ করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চিত করতে এর জন্য শক্তিশালী প্রকৌশল, পরিবেশগত, সামাজিক, শাসন ও শ্রমের মান প্রয়োজন।
হাস বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক জুড়ে অবকাঠামোর চাহিদা পূরণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নের বিকল্প প্রয়োজন।
মার্কিন দূত বলেন, ‘কোনও দেশ একা চলতে পারে না। সে কারণেই ২০২২ সালের জুনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঘোষণা করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্টের অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সংগ্রহ করার লক্ষ্য নিয়েছেন।’
হাস বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নয়ন অর্থায়নের শক্তিশালী সমর্থক।
আরও পড়ুন: জিয়ার আমলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পরিবার বিচার নিশ্চিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হস্তক্ষেপ চান
তিনি বলেন, শেভরন, জিই ও এক্সেলরেটের মতো কোম্পানির বিনিয়োগ বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য ভালো চাকরি তৈরি করে এবং বাংলাদেশি জনগণকে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহে সহায়তা করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন মানুষের কাছে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণের জন্যও কাজ করছে।
উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, মার্কিন কোম্পানি সাবকম বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির কাছ থেকে পরবর্তী সমুদ্রের তলদেশে যোগাযোগের তার নির্মাণ করবে।
তিনি বলেন, ‘স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্কের মতো উদ্ভাবনী পণ্যগুলো বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক জুড়ে নির্ভরযোগ্য উচ্চ-গতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সরবরাহ করতে সহায়তা করতে পারে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এই প্রযুক্তিগুলো বাংলাদেশের বিশাল ডিজিটাল ব্যবহারকারীর ভিত্তিকে সমর্থন করতে এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি সম্প্রসারণে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: র্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে ডিক্যাব সদস্যদের সংবর্ধনা
সরকার সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য ‘আইএলআইএস’ চালু করবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সরকার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো পর্যবেক্ষণ এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী ও সরকারবিরোধী কার্যকলাপকে নস্যাৎ করার জন্য একটি ‘ইন্টিগ্রেটেড লফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম (আইএলআইএস)’ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা-১০ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. শফিউল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি জাতীয় সংসদে জানান।
দেশের অভ্যন্তরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে সরকার নজরদারি বাড়াবে কি না জানতে চান শফিউল।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া ইন্টারনেটে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী ও সরকারবিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধ করার জন্য ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজি (ওএসআইএনটি) এর মতো আধুনিক প্রযুক্তি জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারে (এনটিএমসি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এ বিষয়ে আইএলআইএস চালুরও চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচিতে জনদুর্ভোগ সহ্য করা হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কার্যক্রমকে তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাখার পেছনে যুক্তি ব্যাখ্যা করে খান বলেন, ভোটের উদ্দেশ্য ছাড়া এনআইডি ব্যবহারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই নির্বাহী বিভাগের অধীনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন প্রক্রিয়া হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, বাস্তবতা বিবেচনায় অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এটি নির্বাহী বিভাগের অধীনে থাকা উচিত।
এজন্য এটিকে (এনআইডি কার্ড প্রদান) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত থাকবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অচিরেই সীমান্তে হত্যা বন্ধ হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চলতি অর্থবছরে বাজেটের প্রথম ত্রৈমাসিক কর্মক্ষমতা সন্তোষজনক: অর্থমন্ত্রী
চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব সংগ্রহ, রেমিট্যান্স, রপ্তানি বৃদ্ধি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ব্যয় এবং অর্থ সরবরাহসহ মৌলিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলোর অবস্থান সন্তোষজনক ছিল।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ২০২২-২৩ বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে সংসদে পেশ করা এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হয়েছে, আমদানি-রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে এবং এর ফলে বর্তমান বাজেটে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব বলে আশা করছি।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ যা গত অর্থবছরে ছিল ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ।
২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে সরকারি ব্যয় ছিল ১১ দশমিক ৯০ শতাংশের বিপরীতে ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ, যেখানে এডিপির বাস্তবায়নের হার ছিল আট দশমিক ২৬ শতাংশের বিপরীতে আট দশমিক ৫৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আইএমএফের ৪৫০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে পাওয়া যাবে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে চলতি হিসাবের স্থিতি ঘাটতি ছিল যা ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর-এ রিজার্ভে ৩৬ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে আসে যা ২০২১ সালের একই সময়ে ছিল ৪৬ দশমিক ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ছিল চার দশমিক ৮৯ শতাংশ যা আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশের বিপরীতে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রবণতা আমাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনশীল ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, আমদানি ব্যয় (সিঅ্যান্ডএফ) বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সময়কালের পর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বাভাবিককরণ এবং মধ্যস্থতাকারী ও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির ফলে আমদানি ব্যয় ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিলাসবহুল আইটেম এড়িয়ে চলা এবং সরকারের কঠোরতা প্রয়োগের কারণে আমদানি ব্যয় হ্রাস পেয়েছে।’
২০২২ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চার দশমিক ৫৭ শতাংশ কম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচ দশমিক ৫০ শতাংশ ছিল যেখানে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এটি ছয় দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মুদ্রাস্ফীতি ছিল পাঁচ দশমিক ৫৯ শতাংশ, যেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিকে অসামান্য বলেছে আইএমএফ: অর্থমন্ত্রী
বাজেট ঘাটতি প্রসঙ্গে মোস্তফা কামাল বলেন, প্রাক্কলিত ঘাটতি জিডিপির পাঁচ দশমিক ৫১ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নের জন্য দুই দশমিক ২২ শতাংশ সিল আসে বাহ্যিক উৎস থেকে এবং তিন দশমিক ২৯ শতাংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে প্রশমিত হবে।
তিনি বলেন, মুদ্রাস্ফীতির চাপ সামলাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের দাম ও খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাচারকৃত অর্থ দেশে আনার আইনি প্রক্রিয়া চলছে: অর্থমন্ত্রী
চলতি মাসেই খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়াবে সরকার
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সুপারিশ উপেক্ষা করে চলতি মাসেই খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গড়ে ৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, শিগগিরই বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে গেজেট জারি করা হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, খুচরা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ০.১৯ টাকা বাড়ানো হবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হবে।
ডিসেম্বরের শুরুতে, নসরুল বলেছিলেন যে বিইআরসি খুচরা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করলে, বিদ্যুৎ বিভাগ তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে।
বিইআরসি ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর থেকে প্রায় ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক বাড়িয়েছে যা ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
পরবর্তীকালে, ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা গ্রাহক পর্যায়ে খুচরা বিদ্যুতের শুল্কের অনুরূপ ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য বিইআরসি-তে তাদের নিজ নিজ প্রস্তাবনা জমা দেয়।
কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে, কমিশনের গণশুনানি এবং সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা না করে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজস্বভাবে জ্বালানি শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারকে ক্ষমতায়নের জন্য ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভা বিইআরসি অধ্যাদেশ -২০২২ এর একটি সংশোধনী অনুমোদন করে।
এর আগে, বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) বিদ্যুতের নির্ধারিত গড় শুল্ক প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ানোর জন্য বিতরণ সংস্থাগুলোর চাহিদার বিপরীতে খুচরা পর্যায়ে ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল।
কমিটি প্রতি ইউনিট (প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টা) সাত দশমিক ১৩ টাকার বিপরীতে প্রতি ইউনিট এক দশমিক ১০ টাকা বৃদ্ধির সঙ্গে নির্ধারিত গড় খুচরা শুল্ক আট দশমিক ২৩ টাকা নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছে।
‘আইডিএফ গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস’ পদক পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডায়াবেটিস বিষয়ক আইডিএফ গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর পদক ও সম্মাননা গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সরকারি বাসভবন গণভবনে তার হাতে এই পদক তুলে দেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বাণী লেখক মো. নজরুল ইসলাম।
পর্তুগালের লিসবনে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আইডিএফ ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য তার ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ হাসিনাকে প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিসের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর-এর সম্মানসূচক খেতাব দেয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের জন্য কমলাপুর স্টেশন ভাঙার প্রস্তাব আমি মেনে নেইনি: প্রধানমন্ত্রী
এর আগে প্রধানমন্ত্রী একই বছরের আগস্ট মাসে ঢাকায় গণভবনে আইডিএফ সভাপতি অধ্যাপক আখতার হুসেনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এই উপাধি গ্রহণ করেন।
লিসবনে আইডিএফ ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পর্তুগালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তার পক্ষে এই খেতাব গ্রহণ করেন।
গণভবনে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেয়ার সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন এবং সিনিয়র পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনে আ.লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য মন্দা ঝুঁকিতে আছে, যথাযথ পদক্ষেপ প্রয়োজন: আইসিসিবি
বাংলাদেশ মন্দার মধ্যে নাও যেতে পারে, তবে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে এবং আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হলে দেশটি উল্লেখযোগ্যভাবে মন্দার ঝুঁকিতে পড়বে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স-বাংলাদেশ (আইসিসিবি)।
বৃহস্পতিবার আইসিসিবি তার সর্বশেষ সম্পাদকীয়তে পাবলিক সেক্টরের ব্যয়কে প্রবাহিত করতে, মেগা অবকাঠামো এবং অন্যান্য প্রকল্পের যৌক্তিককরণ এবং কার্যকর আর্থিক খাত সংস্কারের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেছে।
বিশ্ব অর্থনীতি ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, কিন্তু গত বছরের বহুমুখী চাপ ও চ্যালেঞ্জের কারণে ২০২৩ সালে তা থমকে যেতে পারে।
সম্পাদকীয় অনুসারে, তিনটি প্রধান বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি চালিকাশক্তি-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও চীনের প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালে ধীর গতিতে বৃদ্ধি পাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে ম্যাক্রো-প্রুডেন্সিয়াল রেগুলেশন জোরদার করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তোলার ব্যাপারে বড় ধরনের প্রচেষ্টা চালানো উচিত।
আর্থিক নীতির উদ্দেশ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যতা নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে সাবধানে আর্থিক সহায়তা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও প্রত্যাহার করা উচিত।
এছাড়া তুলনামূলক দরিদ্র পরিবারগুলোকে ত্রাণ প্রদানের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য মধ্যমেয়াদী আর্থিক পরিকল্পনা থাকা উচিত।
সরবরাহ সংক্রান্ত ব্যবস্থাগুলোর লক্ষ্য হওয়া উচিত শ্রম-বাজারের সীমাবদ্ধতাগুলো সহজ করা, শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা, বাস্তুচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বন্টন এবং মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমানো।
খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধিতে কার্যকর নীতি সমন্বয় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
জ্বালানি খাতের জন্য কম-কার্বন নিঃসরণকারী জ্বালানির উৎস রূপান্তর এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জ্বালানি খরচ কমানোর ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করতে হবে।
আইসিসিবি-এর সম্পাদকীয় অনুসারে, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি এবং অব্যাহত মুদ্রাস্ফীতি, কঠোর আর্থিক অবস্থা, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ, দীর্ঘস্থায়ী করোনা মহামারি এবং চাহিদা-সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা বৈশ্বিক অর্থনীতির চাকাকে আরও মন্থর করেছে।
আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা সতর্ক করেছেন যে ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতির এক-তৃতীয়াংশ মন্দার মধ্যে পড়তে পারে। এমনকি যে দেশগুলোতে মন্দা থাকবে না, তাদেরও লাখ লাখ মানুষের ওপর মন্দার প্রভাব পড়বে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুধু কয়েক লাখ ইউক্রেনীয়দের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেনি বরং খাদ্য, জ্বালানি ও শক্তির ক্ষেত্রে ক্রমাগত ক্যাসকেডিং এবং আন্তঃসংযুক্ত বৈশ্বিক সংকটকে ত্বরান্বিত করেছে। যার ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে এবং অনেক দেশে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বেড়েছে।
আইসিসিবি বলেছে, এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়া বৈশ্বিক অর্থনীতির নিম্নমুখী প্রবণতার ঝুঁকি তৈরি করে এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সবুজ রূপান্তরের পথকেও বাধাগ্রস্ত করে।
ক্রমাগত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর কারণে ক্রমবর্ধমান ঋণ বাড়ছে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। যা দুর্বল জনগোষ্ঠীগুলোকে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও প্রভাবিত করেছে।
শতকের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক মন্দা, এফডিআইতে উল্লেখযোগ্য হ্রাস, ব্যক্তিগত মূলধন প্রবাহ এবং রেমিটেন্সও বিশ্ব মন্দায় ভূমিকা রাখছে।
উন্নত বিশ্বের সম্ভাব্য মন্দা, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করতে বাধ্য করবে। যার ফলে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং ফলস্বরূপ সুদের হারও বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী মন্দার ঝুঁকি তীব্রভাবে বেড়েছে। কারণ বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মুদ্রাস্ফীতির প্রতিক্রিয়ায় সুদের হার বাড়িয়েছে।
তবুও এখনও পর্যন্ত পূর্বাভাসগুলোতে দেখা যায় যে এই নীতিমূলক পদক্ষেপগুলো বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট নাও হতে পারে।
পূর্বাভাসগুলোতে জানা যায় যে বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের আস্থা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে। এটা আশংকা করা হচ্ছে যে যদি সরবরাহ ব্যাহত না হয় এবং শ্রমবাজারের চাপ না কমে, তাহলে বিশ্বব্যাপী মূল মুদ্রাস্ফীতির হার উচ্চ হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহের বাধা দূর করার জন্য বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করা হবে মূল বিষয়।
আইসিসিবি বলেছে, এখনই সময় একটি নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রচার করার, যা সুরক্ষাবাদ ও বিচ্ছিন্নকরণের হুমকিকে প্রতিরোধ করে, যা বাণিজ্য নেটওয়ার্ককে আরও ব্যাহত করবে।
বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, জি২০ সদস্যরা টেকসই পুনরুদ্ধার এবং শক্তিশালী, টেকসই, ভারসাম্যপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করার জন্য ক্ষতিকারক প্রভাবগুলো প্রশমিত করার জন্য ভাল-ক্যালিব্রেটেড, সুপরিকল্পিত এবং সু-যোগাযোগপূর্ণ নীতিগুলোর প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এই বিষয়ে, জি২০ আর্থিক স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক স্থায়িত্ব রক্ষা করতে এবং নেতিবাচক ঝুঁকি ও নেতিবাচক স্পিলওভারের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য ম্যাক্রো-পলিসি সহযোগিতার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে।
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস সম্প্রতি সিএনএন-এর সঙ্গে কথা বলে গ্রাহকদের ও ব্যবসায়িকদের সতর্ক করেছেন, তাদের নগদ অর্থ নিরাপদ রাখতে ছুটির মরসুমে বড় কেনাকাটা স্থগিত করা উচিত, কেননা অর্থনৈতিক মন্দা আসতে পারে।
যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত, যাতে মুদ্রাস্ফীতির লাগাম ধরা যায় এবং আর্থিক কড়াকড়ি কমানো যায়। এজন্য অন্যান্য নীতিনির্ধারকদেরও সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।
ইউএনবি/টিএস/টিএইচ
দেশে করোনায় মৃত্যুশূন্য, শনাক্ত ৪
দেশে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এসময় নতুন করে চারজনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩১ জনে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু নেই, শনাক্ত ২১
এ সময়ে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৫৪ জন।
এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৮৯ হাজার ১৩৯ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু নেই, শনাক্ত ১৭
ডেঙ্গু: দেশে আক্রান্ত ১৮
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি।
একই সময়ে নতুন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৮ জন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে ৭ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ১১ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৪৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এরমধ্যে ৫৭ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৯২ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৩৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকায় ১৭৩ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ১৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৩১ জন
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২১০ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এদের মধ্যে ১১৬ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ৯৪ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চলতি বছরে ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৮ জন