%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF
৫ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচদিন পরীক্ষা ও চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার গুলশানের বাসভবন 'ফিরোজা'তে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডামকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা পর্যালোচনা করে বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন তাকে বাড়িতেই চিকিৎসা দেওয়া হবে।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, খালেদা জিয়া বিকাল সাড়ে ৪টায় হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে বাসায় পৌঁছান।
হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি।
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘তার কিছু অসুখ ও কিছু উপসর্গ ছিল। এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ভর্তির পর চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে দেওয়া চিকিৎসায় তিনি মোটামুটি ভালো সাড়া দিয়েছেন।’
কিছু মেডিকেল টেস্ট ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য গত শনিবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনকে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে একটি কেবিনে রাখা হয়েছিল এবং তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ায় তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকেই বিএনপি চেয়ারপার্সন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি একই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে খালেদা ছয়বার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন।
গত ১০ জুন তার বাম ধমনীতে ৯৫ শতাংশ ব্লক থাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং পরদিন একই হাসপাতালে ওই ব্লক অপসারণ করে সেখানে স্টেন্ট বসানো হয়।
ডাক্তাররা তার রক্তনালীতে আরও দুটি ব্লক খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু তার স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে তারা সেগুরো অপসারণ করতে পারেনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের 8 ফেব্রুয়ারি একটি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ২০২০ সালের ২৫মার্চ সরকার তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়, এই শর্তে যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।
সংবিধান উপেক্ষা করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা সফল হবে না: রওশন
বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বৃহস্পতিবার বলেছেন, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ছাড়া অন্য কোনোভাবে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা সফল হবে না।
তিনি বলেন, ‘জনগণ একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনেই দেশের পরবর্তী নেতৃত্ব বেছে নেবে। তাই সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে অন্যভাবে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা সফল হবে না।’
আরও পড়ুন: জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে: রওশন এরশাদ
রাজধানীর গুলশান এলাকায় তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সমর্থকদের সমাবেশে বিরোধীদলীয় নেত্রী এ মন্তব্য করেন।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ অনুষ্ঠানে কিছু নতুন সমর্থক তার দলে যোগ দেয়।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে কেউ যদি পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে, তা প্রতিহত করা হবে।’
রওশন জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে বিশৃঙ্খলাকারীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
নতুন ও পুরাতন সমর্থকদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করবে।
রাহগির আল মাহি এরশাদ এমপি (ওরফে সাদ এরশাদ) ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: সংবিধান উপেক্ষা করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা সফল হবে না: রওশন
সুদানে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার আহ্বান রওশন এরশাদের
অগ্নিসন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচার হবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন যে যারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে, তাদের বিচার হলেই হবে না, যারা এর হুকুমদাতা-অর্থদাতা-তাদেরও বিচার হতে হবে।
তিনি বলেন, এই অপরাধের যদি বিচার না হয় তাহলে এ ধরনের অপরাধ আরও ঘটবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখানো হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ সংগঠন আয়োজিত ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচারের দাবিতে প্রতীকী অনশন’- শীর্ষক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামাতের নেতাদের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে অবরোধের সময় যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে-তা শুধু দেশের ইতিহাসেই নয়, পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে সমসাময়িককালে কোথাও ঘটেনি।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অসহায় মানুষের ওপর, স্কুলগামী বালক-বালিকার ওপর, বিশ্ব ইজতেমা থেকে ফেরত মানুষের ওপর, বাসযাত্রীদের ওপর, অবরোধের কারণে থেমে থাকা ট্রাকে ঘুমন্ত চালকের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে তাদের শরীর অঙ্গার করে দিয়েছে, মানবতাকে ভুলুন্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, শুধু পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারীরাই অপরাধী নয়, এর নির্দেশ সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে লন্ডন থেকে এসেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব, গয়েশ্বর রায় বাবু, মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির নেতারাই এই হামলার নির্দেশদাতা।
তাদের নির্দেশে, তাদের অর্থায়নেই এই পেট্রোল বোমা হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। আজকে সেই পেট্রোল বোমা হামলার শিকার যারা, তারা বিচারের দাবি নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে উদাহরণ: তথ্যমন্ত্রী
মির্জা ফখরুল সাহেব বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু তার দলের নেতৃত্বে যে অপরাধ হয়েছে-তার দায় তিনি এড়াতে পারেন না। সব অপরাধীরই বিচার হতে হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো এ দেশের নাগরিক ও মালিক। তারা রাজনীতি করে না, রাজনীতি বোঝে না এবং তারা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও যায়নি, তারা প্রাত্যহিক কাজে জীবিকার তাগিদে বেরিয়েছিল। এই ধরনের ন্যাক্কারজনক মানবতাবিরোধী ঘটনা বিশ্বের কোথাও ঘটেনি।
পেট্রোল বোমা হামলার শিকার ও তাদের পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন। তাই আমি মনে করি এই মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে হওয়া প্রয়োজন এবং অগ্নিসন্ত্রাসের হুকুমদাতা ও অর্থদাতাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত। এই অপরাধের উপযুক্ত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির সাথে আমি একাত্মতা প্রকাশ করছি।’
এ সময় বিদেশি সংস্থা ও কূটনীতিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা মানবাধিকারের কথা বলেন, তাদের উচিত এই অধিকার ক্ষুন্ন হওয়া মানুষগুলোর সাথে সংহতি জানানো। তাহলে এই ধরনের অপরাধ চিরতরে বন্ধ হওয়ার পথ সুগম হবে।
কর্মসূচিতে আগত পেট্রোলবোমায় আহত ও নিহতদের স্বজনদের পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভঙ্গ করান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
আরও পড়ুন: দেশের বিষয়ে বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দেওয়া ‘দেশবিরোধী’ কাজ: তথ্যমন্ত্রী
স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না: ফখরুল
বর্তমান সরকার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেরকে কোনোমতেই ক্ষমতায় আর আসতে দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে ও অত্যন্ত লজ্জাজনকভাবে আওয়ামী লীগ আজকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে লক্ষ্য ছিলো-আশা ছিলো, আকাঙ্খা ছিলো-একটা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, একটা বহুদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা; সেটাকে সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিয়ে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেই পুরনো কায়দায়।’
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে ফখরুল বলেন, এখন তাদের অবস্থান স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং দেশের মানুষের বিরুদ্ধে।
প্রাক্তন মন্ত্রী সুনীল কুমার গুপ্তের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী ওনুসারী পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্নিসংযোগকারী সন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়াত জোট, খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও যুদ্ধাপরাধীরা এ দেশে (বাংলাদেশ) আর ক্ষমতায় আসবে না বলে মন্তব্য করার একদিন পর ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
বুধবার ওয়াশিংটনে রিজ কার্লটন হোটেলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল না করার জন্য সরকারের অবস্থানেরও সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘যখন সবাই আইনটি বাতিলের দাবি করছে, তখন আপনি দাম্ভিকতা করছেন যে এটি বাতিল হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেন এটা বাতিল করা উচিত নয়? আপনি এটি (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন, তাই আপনি এই অস্ত্র হারাতে চান না।’
ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু আপনাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, দেশের মানুষ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেও স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করেছিল। এখন দেশের মানুষ আন্দোলন শুরু করেছে এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের জয় হবে। ’
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি আবার ক্ষমতায় এলে তাদের দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
ফখরুল বলেন, ‘এ কারণে আমরা দেশকে ভালোবাসে এমন সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একযোগে আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা সারা দেশের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছি। এই আশা নিয়েই আমাদের দেশকে মুক্ত করতে হবে, স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে এবং জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাষানী ওনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা থাকলেও পরে অনুমতি বাতিল করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি সরকার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন (কেসিসি) অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ জুন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য মনোনয়নপত্রসংগ্রহ করছেন প্রার্থীরা।
বুধবার (৩ মে) বিকাল পর্যন্ত কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জনসহ ১৫৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এদিন দুপুরে আগুয়ান-৭১ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর আগে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাওলানা আবদুল আওয়াল, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফফার বিশ্বাস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন জানান, বুধবার বিকাল পর্যন্ত মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৫ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের প্রচার-প্রচারণা সামগ্রী অপসারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৮ জন।
আরও পড়ুন: ৫ সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ইসির
গাজীপুর সিটি নির্বাচন: জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল, মায়েরটি বৈধ ঘোষণা
হাসপাতাল থেকে ৫ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পাঁচ দিনের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে নিজ বাসভবনে ফিরবেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে বলেন, ‘আজ বিকাল ৩টার পর গুলশানের বাসভবনের উদ্দেশে হাসপাতাল ছাড়বেন খালেদা জিয়া।’
কিছু মেডিকেল পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য শনিবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
তার মেডিকেল টিমের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কেবিনে রাখা হয়েছে এবং মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ায় তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার: খসরু
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
এর আগে ৬ এপ্রিল তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একই হাসপাতালে যান।
সর্বশেষ গত বছরের ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি, যেখানে তার লিভার সিরোসিস রোগ ধরা পড়ে।
লিভার সিরোসিসের কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণে ৮১ দিন হাসপাতালে থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা চায় না খালেদা জিয়া মুক্তি পাক: তথ্যমন্ত্রী
সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
যেহেতু তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই, তাই এ ধরনের মিথ্যা গোয়েবলসি প্রচার করে প্রচার করতে চায় তারা সফল।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরের অনুষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শীর্ষ প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সফরে অর্জন শূন্য’।
বুধবার দুপুরে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অলি আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফকে তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে কাগজপত্র দেখেছি। তারা ইতোমধ্যে একটা স্টেটমেন্ট পর্যন্ত দিয়েছে যে আমরা (আইএমএফ) এই কথা বলিনি, কেবল তার সঙ্গে মিটিংয়ের কথা বলেছি। এককভাবেই বিশ্বব্যাংকের ঋণ পূর্বনির্ধারিত। আগেই কথা হয়েছে যে তারা এই ঋণ দেবে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে এচিভমেন্ট ইজ জিরো।
ফখরুল বলেন, মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বেশি দিন বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। আওয়ামী লীগ সেই কাজটাই করে যাচ্ছে। কিন্তু এবার তারা ব্যর্থ হবে। কারণ জনগণ তাদের মিথ্যাচার বুঝে গেছে। জনগণ তাদের সরিয়ে জনগণের একটা শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তিন দেশ সফরকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো বা পুরো বিষয়টা হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সমস্ত সফর। এসব করে কোনো লাভ হবে না। জনগণের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আইনের শাসনকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এছাড়া জনগণ যেন সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক সমাজে বাস করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়েস অব আমেরিকা’য় এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করতে চান না বলে যে মন্তব্য করেছে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তো তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইনি।
তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার যুক্তি থাকতে পারে না এ জন্য যে, তারা পুরোপুরিভাবে মিথ্যা কথা বলে এবং তারা জাতির সঙ্গে বিট্রে করে, বিশ্বাসঘাতকতা করে। সেই কারণে জনগনের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জনগন রাজপথে ফয়সালা করে নেবে।
বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করে-যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ রকম বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের ধারক-বাহক আওয়ামী লীগই। তারাই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে, তারাই এটা কন্টিনিউ করে, নিজেরা করে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপায়।
এখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে জন্ম এবং সন্ত্রাস করেই তারা টিকে থাকে। তাদের বডি কেমেস্ট্রিতে দুই জিনিস আছে। একটা সন্ত্রাস আরেকটা দুর্নীতি। এই দুইটা ছেড়ে তারা থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত: মির্জা ফখরুল
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্পাদকসহ ৬ নেতা কারাগারে
সিরাজগঞ্জ জেলা বিনএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ মে) সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিন আবেদন করলে বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তারেরা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বরাত, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াদ আহমেদ নির্লোভ, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সোহেল ও নোমান।
সিরাজগঞ্জ জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে মোটরসাইকেল পোড়ানোসহ নাশকতার মামলায় ৪৬ আসামি মঙ্গলবার আদালতে জামিন আবেদন করেন। এর মধ্যে বিচারক ৬ জনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ও বাকিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় নাশকতা মামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মী কারাগারে
তিনি আরও বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পোড়ানো হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে একটি ও পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। প্রতিটি মামলায় বিএনপির ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩’শ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
দায়ের করা ওই মামলায় মঙ্গলবার বিএনপি নেতাদের কারাগারে পাঠানো হলো। এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৬ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ খান হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিএনপি ও এলডিপির ২৬ নেতাকর্মী কারাগারে
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী কারাগারে
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্ত্রীদের ‘অপপ্রচার’ ফের কারাগারে নেওয়ার ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
এসময়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন অসুস্থ… আজকে না বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। আপনারা জানেন একবার তাকে চার মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছে এবং তখনও আপনাদেরকে বার বার করে বলেছি যে, তিনি খুব জটিল কিছু রোগে ভুগছেন। তার মধ্যে আছে লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগের সংক্রান্ত জটিলতা, তার ডায়বেটিক জটিলতা আছে… এই বিষয়গুলো সবাই জানেন।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘এরপরেও যদি তারা এই সমস্ত কথাবার্তা বলে, অপপ্রচার করে…. এই কথা বলার অর্থই হচ্ছে তারা আবারও কোনো গভীর চক্রান্ত করছে। যে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে তারা আবার কারাগারে নিতে পারে কিনা, পরিকল্পনা-চক্রান্ত করছে কিনা সেটা আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বার বার করে বলেছি যে, তার চিকিৎসা পাওয়া একটা মৌলিক অধিকার। এজন্য ডাক্তারা বলেছেন, তার মেডিকেল বোর্ড বলেছেন যে, তাকে উন্নত চিকিতসার জন্য বাইরে বিদেশে পাঠানো দরকার। বাংলাদেশে তার সেই উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘ কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার সে বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি। উপরন্তু এই ধরনের (অপপ্রচার) কথাবার্তা বলে অমানবিক আচরণ করছেন তারা আমাদের দেশনেত্রীর সঙ্গে এবং জনগণের সঙ্গে একটা তামাশা করছেন।’
৭৭ বছর বয়েসী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভারসহ নানা রোগে ভুগছেন। অসুস্থতার মধ্যে গুলশানে ‘ফিরোজা‘য় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছিল। গত ২০ এপ্রিল তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে এভারকেয়ারে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে ডিএসএ বাতিল ও এই আইনের সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি
গতকাল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ এই সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএনপি মহাসচিব।
‘অত্যবশ্যকীয় পরিষেবা বিল: জনগণের স্বার্থবিরোধী’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে গতকাল স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি নানা কারণে বিতর্কিত, অগণতান্ত্রিক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের স্বার্থবিরোধী, একতরফা, নির্যাতনমূলক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বরখেলাপ। এই আইনটি প্রণয়নে কোনো পর্যায়ই অংশীজনের মতামত নেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত বিলটি শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকারকেই ক্ষুন্ন করবে না, এটি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের সংবিধান সম্মত প্রতিবাদের অধিকারের পরিপন্থি। বিএনপি প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনের পরিধি শুধু বিস্তৃত নয়, অসীম। সরকার ইচ্ছা করলেই যেকোনো শিল্প, প্রতিষ্ঠা, পেশা ও সেবাকে এই আইনের আওতায় এনে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করে তা অমান্য করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানাতে পারবে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই প্রস্তাবিত আইনকে প্রচলিত শ্রম আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে যুগ যুগ ধরে আন্দোলন করে শ্রমজীবী জনগণ যা কিছু অধিকার অর্জন করেছিলো তা এই আইন দিয়ে নাকচ করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও কনভেনশন নং ৮৭ ও ৯৮ অনুসমর্থন করেছে। যেখানে ধর্মঘটের অধিকারকে সংগঠিত হওয়ার অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত বিলে দেশের বিপুল সংখ্যক শিল্প, প্রতিষ্ঠান ও সেবা খাতকে ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা’ চিহ্নিত করে শ্রমজীবী মানুষের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অর্থ হলো তাদের সংগঠিত হওয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহুমদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠক করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ
‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
অবিলম্বে ডিএসএ বাতিল ও এই আইনের সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে (ডিএসএ) ‘কুখ্যাত আইন’ উল্লেখ করে এটিকে বাংলাদেশের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় প্রধান বাধা বলে মনে করে অবিলম্বে তা বাতিল এবং এর অধীনে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
সোমবার রাতে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার এই আইনের সুযোগ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে এবং এই পশ্চাদপসরণমূলক আইনকে 'ফ্যাসিবাদী' শাসনকে দীর্ঘায়িত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে কিডনী রোগে আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খাদিজাতুল কুবরার মুক্তি দাবি করা হয়। যিনি ডিএসএ মামলায় গত আট মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন।
এতে বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ বাংলাদেশের (ইউএনবি) বিশেষ প্রতিবেদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিএসএ মামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে দমনমূলক আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে থাকা সকলের মুক্তি দাবি করা হয়।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যা সম্প্রতি সংসদে পেশ করা হয়েছে যাতে এটি শিগগিরিই আইনে পরিণত হয়।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার আইনের বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়নি এবং বিল অনুযায়ী সরকার চাইলে যে কোনো শিল্প-প্রতিষ্ঠান, পেশা ও সেবাকে এ আইনের আওতায় এনে এই সংস্থাগুলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে তা বন্ধ করতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
'অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা' বিলে ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়া যৌথ দর কষাকষির অধিকারও কেড়ে নেয়, তারা যোগ করে যে এটি সরকারের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারেরও একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং মালিকপক্ষের নিপীড়ন, বঞ্চনা ও শোষণ থেকে রক্ষার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন এবং আন্দোলনকে অবৈধ করার একটি হাতিয়ার।
বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত আইন শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না, এটা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের প্রতিবাদ করার সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা বিল ২০২৩’ প্রত্যাহারের জোরালো দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ডক্টর আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠক করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ