%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF
সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
যেহেতু তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই, তাই এ ধরনের মিথ্যা গোয়েবলসি প্রচার করে প্রচার করতে চায় তারা সফল।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরের অনুষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শীর্ষ প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সফরে অর্জন শূন্য’।
বুধবার দুপুরে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অলি আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফকে তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে কাগজপত্র দেখেছি। তারা ইতোমধ্যে একটা স্টেটমেন্ট পর্যন্ত দিয়েছে যে আমরা (আইএমএফ) এই কথা বলিনি, কেবল তার সঙ্গে মিটিংয়ের কথা বলেছি। এককভাবেই বিশ্বব্যাংকের ঋণ পূর্বনির্ধারিত। আগেই কথা হয়েছে যে তারা এই ঋণ দেবে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে এচিভমেন্ট ইজ জিরো।
ফখরুল বলেন, মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বেশি দিন বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। আওয়ামী লীগ সেই কাজটাই করে যাচ্ছে। কিন্তু এবার তারা ব্যর্থ হবে। কারণ জনগণ তাদের মিথ্যাচার বুঝে গেছে। জনগণ তাদের সরিয়ে জনগণের একটা শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তিন দেশ সফরকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো বা পুরো বিষয়টা হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সমস্ত সফর। এসব করে কোনো লাভ হবে না। জনগণের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আইনের শাসনকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এছাড়া জনগণ যেন সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক সমাজে বাস করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়েস অব আমেরিকা’য় এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করতে চান না বলে যে মন্তব্য করেছে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তো তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইনি।
তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার যুক্তি থাকতে পারে না এ জন্য যে, তারা পুরোপুরিভাবে মিথ্যা কথা বলে এবং তারা জাতির সঙ্গে বিট্রে করে, বিশ্বাসঘাতকতা করে। সেই কারণে জনগনের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জনগন রাজপথে ফয়সালা করে নেবে।
বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করে-যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ রকম বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের ধারক-বাহক আওয়ামী লীগই। তারাই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে, তারাই এটা কন্টিনিউ করে, নিজেরা করে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপায়।
এখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে জন্ম এবং সন্ত্রাস করেই তারা টিকে থাকে। তাদের বডি কেমেস্ট্রিতে দুই জিনিস আছে। একটা সন্ত্রাস আরেকটা দুর্নীতি। এই দুইটা ছেড়ে তারা থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত: মির্জা ফখরুল
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্পাদকসহ ৬ নেতা কারাগারে
সিরাজগঞ্জ জেলা বিনএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ মে) সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিন আবেদন করলে বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তারেরা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বরাত, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াদ আহমেদ নির্লোভ, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সোহেল ও নোমান।
সিরাজগঞ্জ জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে মোটরসাইকেল পোড়ানোসহ নাশকতার মামলায় ৪৬ আসামি মঙ্গলবার আদালতে জামিন আবেদন করেন। এর মধ্যে বিচারক ৬ জনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ও বাকিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় নাশকতা মামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মী কারাগারে
তিনি আরও বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পোড়ানো হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে একটি ও পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। প্রতিটি মামলায় বিএনপির ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩’শ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
দায়ের করা ওই মামলায় মঙ্গলবার বিএনপি নেতাদের কারাগারে পাঠানো হলো। এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৬ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ খান হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিএনপি ও এলডিপির ২৬ নেতাকর্মী কারাগারে
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী কারাগারে
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্ত্রীদের ‘অপপ্রচার’ ফের কারাগারে নেওয়ার ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
এসময়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন অসুস্থ… আজকে না বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। আপনারা জানেন একবার তাকে চার মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছে এবং তখনও আপনাদেরকে বার বার করে বলেছি যে, তিনি খুব জটিল কিছু রোগে ভুগছেন। তার মধ্যে আছে লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগের সংক্রান্ত জটিলতা, তার ডায়বেটিক জটিলতা আছে… এই বিষয়গুলো সবাই জানেন।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘এরপরেও যদি তারা এই সমস্ত কথাবার্তা বলে, অপপ্রচার করে…. এই কথা বলার অর্থই হচ্ছে তারা আবারও কোনো গভীর চক্রান্ত করছে। যে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে তারা আবার কারাগারে নিতে পারে কিনা, পরিকল্পনা-চক্রান্ত করছে কিনা সেটা আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বার বার করে বলেছি যে, তার চিকিৎসা পাওয়া একটা মৌলিক অধিকার। এজন্য ডাক্তারা বলেছেন, তার মেডিকেল বোর্ড বলেছেন যে, তাকে উন্নত চিকিতসার জন্য বাইরে বিদেশে পাঠানো দরকার। বাংলাদেশে তার সেই উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘ কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার সে বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি। উপরন্তু এই ধরনের (অপপ্রচার) কথাবার্তা বলে অমানবিক আচরণ করছেন তারা আমাদের দেশনেত্রীর সঙ্গে এবং জনগণের সঙ্গে একটা তামাশা করছেন।’
৭৭ বছর বয়েসী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভারসহ নানা রোগে ভুগছেন। অসুস্থতার মধ্যে গুলশানে ‘ফিরোজা‘য় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছিল। গত ২০ এপ্রিল তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে এভারকেয়ারে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে ডিএসএ বাতিল ও এই আইনের সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি
গতকাল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ এই সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএনপি মহাসচিব।
‘অত্যবশ্যকীয় পরিষেবা বিল: জনগণের স্বার্থবিরোধী’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে গতকাল স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি নানা কারণে বিতর্কিত, অগণতান্ত্রিক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের স্বার্থবিরোধী, একতরফা, নির্যাতনমূলক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বরখেলাপ। এই আইনটি প্রণয়নে কোনো পর্যায়ই অংশীজনের মতামত নেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত বিলটি শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকারকেই ক্ষুন্ন করবে না, এটি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের সংবিধান সম্মত প্রতিবাদের অধিকারের পরিপন্থি। বিএনপি প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনের পরিধি শুধু বিস্তৃত নয়, অসীম। সরকার ইচ্ছা করলেই যেকোনো শিল্প, প্রতিষ্ঠা, পেশা ও সেবাকে এই আইনের আওতায় এনে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করে তা অমান্য করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানাতে পারবে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই প্রস্তাবিত আইনকে প্রচলিত শ্রম আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে যুগ যুগ ধরে আন্দোলন করে শ্রমজীবী জনগণ যা কিছু অধিকার অর্জন করেছিলো তা এই আইন দিয়ে নাকচ করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও কনভেনশন নং ৮৭ ও ৯৮ অনুসমর্থন করেছে। যেখানে ধর্মঘটের অধিকারকে সংগঠিত হওয়ার অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত বিলে দেশের বিপুল সংখ্যক শিল্প, প্রতিষ্ঠান ও সেবা খাতকে ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা’ চিহ্নিত করে শ্রমজীবী মানুষের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অর্থ হলো তাদের সংগঠিত হওয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহুমদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠক করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ
‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
অবিলম্বে ডিএসএ বাতিল ও এই আইনের সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে (ডিএসএ) ‘কুখ্যাত আইন’ উল্লেখ করে এটিকে বাংলাদেশের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় প্রধান বাধা বলে মনে করে অবিলম্বে তা বাতিল এবং এর অধীনে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
সোমবার রাতে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার এই আইনের সুযোগ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে এবং এই পশ্চাদপসরণমূলক আইনকে 'ফ্যাসিবাদী' শাসনকে দীর্ঘায়িত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে কিডনী রোগে আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খাদিজাতুল কুবরার মুক্তি দাবি করা হয়। যিনি ডিএসএ মামলায় গত আট মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন।
এতে বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ বাংলাদেশের (ইউএনবি) বিশেষ প্রতিবেদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিএসএ মামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে দমনমূলক আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে থাকা সকলের মুক্তি দাবি করা হয়।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যা সম্প্রতি সংসদে পেশ করা হয়েছে যাতে এটি শিগগিরিই আইনে পরিণত হয়।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার আইনের বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়নি এবং বিল অনুযায়ী সরকার চাইলে যে কোনো শিল্প-প্রতিষ্ঠান, পেশা ও সেবাকে এ আইনের আওতায় এনে এই সংস্থাগুলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে তা বন্ধ করতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
'অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা' বিলে ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়া যৌথ দর কষাকষির অধিকারও কেড়ে নেয়, তারা যোগ করে যে এটি সরকারের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারেরও একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং মালিকপক্ষের নিপীড়ন, বঞ্চনা ও শোষণ থেকে রক্ষার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন এবং আন্দোলনকে অবৈধ করার একটি হাতিয়ার।
বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত আইন শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না, এটা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের প্রতিবাদ করার সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা বিল ২০২৩’ প্রত্যাহারের জোরালো দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ডক্টর আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠক করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ
সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠক করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ
সরকার হটানোর যুগপৎ আন্দোলনে করণীয় ঠিক করতে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির এই বৈঠক হয়।
দুই ঘন্টার বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসুর মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বৈঠকে চলমান আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুগপৎ আন্দোলন অব্যাহতভাবে চলছে সেটা আপনারা দেখতে পারছেন এবং এই আন্দোলনকে আরও শক্তিশালীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যেসমস্ত কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ আমরা সকলে মিলে একটা জয়েন্ট স্টেটমেন্ট (যৌথ ঘোষণা) করব, এ ব্যাপারেও আমরা সিদ্ধান্ত আমরা দিয়েছি। গণতন্ত্র মঞ্চসহ অন্যান্য যতগুলো দল ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সাথে যুগপৎ আন্দোলনে আছে সকলে মিলে আমরা একটি যৌথ ঘোষণা দেবো জাতির সামনে। এটা খুব তাড়াতাড়ি হবে।’
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘আলোচনার একটা জায়গা হচ্ছে- অতীতে যেভাবে আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশে, বর্তমানের আন্দোলন এর চাইতে আলাদা। এটা আপনাদেরকে সুনির্দিষ্টভাবে বলছি। আমরা কেবলমাত্র সরকার পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করছি না, আমরা এই সরকার বদল এবং এই যে স্বৈরতান্ত্রিক সরকারগুলো ক্ষমতায় আসীন হয় তাদের কাঠামো বদলের জন্য আমরা রাষ্ট্রের সংস্কার কিংবা মেরামতের জন্য সরকার পরিবর্তনে আমরা কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই লক্ষ্যে আমরা অল্পদিনের মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপিসহ অপরাপর বাংলাদেশকে নিয়ে যারা ভাবেন, বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে যারা ভাবেন তাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে- সেটার রুপরেখা আমরা আপনাদের সামনে যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে তুলে ধরবো- সেই বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐক্যমত হয়েছে। খুব সময়ের মধ্যে সেটা আমরা তুলে ধরবো বলে আশা করছি।’
বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারি পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এবং জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির আমির খসরুর সঙ্গে ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার: খসরু
গণফোরাম ও পিপলস পার্টির সঙ্গে আন্দোলনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছে বিএনপি
‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমজীবীসহ জনগনকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আজকে সবচেয়ে কষ্টে আছে আমাদের শ্রমজীবী মানুষ, আজকে সবচেয়ে কষ্টে আছে আমাদের খেটে খাওয়া মানুষ। তারা দুই বেলা দু‘মুঠো খেতে পায় না। তাই আমাদের নিজেদের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, শ্রমিকের স্বার্থে, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে, কৃষকের স্বার্থে, জনগনের স্বার্থে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
সোমবার বিকালে মে দিবসের এক শ্রমিক সমাবেশে বিএনপি’র মহাসচিব এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগনকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেরকে (সরকার) পরাজিত করতে হবে। আজকে আমাদের শ্রমিক শ্লোগান দিয়েছে- মে দিবসের অঙ্গীকার রুখতে হবে স্বৈরাচার। কারণ গণতন্ত্র যদি প্রতিষ্ঠা না হয়, স্বৈরাচার দূর করা না যায় তাহলে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করা যাবে না, তাদের অধিকার আদায় করা যাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার অবৈধ সরকার, এই সরকার জনগনের নির্বাচিত সরকার নয়। আমরা দেশের মানুষের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে ১০ দফা দিয়েছি। এর প্রধান শর্ত হচ্ছে- এই গণতন্ত্র বিরোধী সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং একটা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচন করে জনগনের সরকার, শ্রমিকদের সরকার, কৃষকদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
আরও পড়ুন: জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিদেশিদের কাছে সুবিধা চান প্রধানমন্ত্রী: আমীর খসরু
মে দিবসে সমাবেশে ব্যাপক মানুষের সমাগমের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এই সমাবেশ প্রমাণ করছে যে, বাংলাদেশ এখন জনগনের বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এখন মুক্তির বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রের বাংলাদেশ।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে মানুষের বাক স্বাধীনতাকে বন্ধ করে রাখার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির শ্রমিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে মে দিবস উপলক্ষে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশের পর নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও শ্রমিক দল সারাদেশে জেলায় জেলায় শ্রমিক সমাবেশ ও র্যালি করেছে।
আরও পড়ুন: নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে বিএনপির কোনো প্রত্যাশা নেই: ফখরুল
পলাশবাড়ি পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি গ্রেপ্তার
গাইবান্ধার পলাশবাড়ি পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে পলাশবাড়ি পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পলাশবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মাসুদ রানা জানান, উপজেলার কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে গোপন কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।
আজ সোমবার দুপুরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ পলাশবাড়ি পৌর এলাকা থেকে তাক গ্রেপ্তার করে।
ওসি আরও জানান, তাজুল বিভিন্ন নাশকতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে পলাশবাড়ি থানা সহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক মামলা রয়েছে। সে পুলিশের নজর এড়িয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ পালিযে বেড়াচ্ছিলেন।
বিএনপি হতাশাগ্রস্ত, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ভয় পায়: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে ভয় পাচ্ছে কারণ তাদের নেতারা বারবার জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি নেতারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে ভয় পাচ্ছে। একই সময়ে তারা নির্বাচন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নিয়োজিত রয়েছে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানালেও আসন্ন সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই দ্বৈত আচরণের কারণে জনগণ বিএনপির প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে হেয় করতে প্রথম আলো ও বিএনপি একে অপরের পরিপূরক: ওবায়দুল কাদের
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আমলে বিভিন্ন প্রহসনমূলক নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে আ.লীগ নেতা বলেন,‘ বিএনপি এই মুখ নিয়ে নির্বাচনের কথা বলে কিভাবে? বিএনপির হাতে এদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলে মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছে।
‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই বিএনপির কাছ থেকে গণতন্ত্রের পাঠ নেবে না। বিএনপি যে গণতন্ত্র চর্চা করেছে তাতে আওয়ামী লীগের আস্থা বা আস্থা নেই।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে আ.লীগ: কাদের
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষকে কারফিউ জারি করা গণতন্ত্র দিয়েছেন।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পথকে মসৃণ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার ভূমিকার কারণে শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের সব নেতার কাছে প্রশংসিত।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি জনগণের ভাগ্যের উন্নতি হয়েছে, কিন্তু বিএনপি ও তার সহযোগীরা তা সহ্য করতে পারবে না বলে তিনি দাবি করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই অগ্রগতি ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই যে জনগণকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে এই সমস্ত ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না।’
আরও পড়ুন: বিএনপির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখানো হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার: খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে প্রাপ্য উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘তাকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে জেলে পাঠানো হয়েছে। তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ওনার অবস্থা ভালো না। বিদেশের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে তার প্রয়োজনীয় বিশেষায়িত চিকিৎসা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে খসরু এ মন্তব্য করেন।
চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর কথা বললেও সরকার তা উপেক্ষা করে আসছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে নিম্নস্তরের রাজনীতিকরা প্রায়ই চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। ‘কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাকে বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া এভারকেয়ারে ভর্তি
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে শনিবার রাতে কিছু শারিরীক পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে হাসপাতালের একটি কেবিনে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু বলেন, সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার মূল উদ্দেশ্য নিয়েই বিদেশে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।’
খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রেখে ক্ষমতাসীন দল আবারও ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা অবশ্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের জনগণ এবার সরকারকে যোগ্য জবাব দেবে।
সরকারের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের অভিযোগও করেন তিনি। ‘বর্তমান সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করা। তারা কোনোভাবেই জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে রাজি নয়।’
বিএনপি ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে খসরু বলেন, চলমান যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া এভারকেয়ারে নিবিড় পর্যবেক্ষণে: ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ
খালেদা জিয়া এভারকেয়ারে নিবিড় পর্যবেক্ষণে: ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন অসুস্থতার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি কেবিনে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা) একটি কেবিনে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ায় তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।’
এর আগে শনিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কিছু মেডিকেল টেস্ট ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ডা. জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর শনিবার রাতে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক হয় এবং তারা বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া এভারকেয়ারে ভর্তি
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়েছি এবং মেডিক্যাল বোর্ড আজ (রবিবার) সন্ধ্যায় রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করতে এবং তার চিকিৎসার পরবর্তী পন্থা নির্ধারণ করতে আবার বসবে। গতকাল (শনিবার) তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে মেডিকেল বোর্ড তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে।’
জাহিদ জানান, সকালে মেডিকেল বোর্ডের কয়েকজন সদস্য তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেন।
হাসপাতালে ভর্তির কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের আগের রোগের পাশাপাশি নতুন কিছু উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা জরুরি ছিল।
চিকিৎসক বলেছেন,‘মিডিয়ায় রোগীর অসুস্থতা নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়। আমি শুধু বলতে পারি তিনি হার্ট, লিভার এবং কিডনির জটিলতা সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন... তাদের মধ্যে কোন কোনোটির একটু অবনতি হয়েছে। তাই চেক-আপ এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।’
জাহিদ বলেন, কেবিনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সরা খালেদা জিয়ার যথাযথ যত্ন নিচ্ছেন।
খালেদা জিয়া কতদিন হাসপাতালে থাকতে পারবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নির্ভর করবে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও তার শারীরিক অবস্থার ওপর। তাই এ মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।
জাহিদ জানান, স্থানীয় চিকিৎসক ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন চিকিৎসক এবং খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন।
খালেদা জিয়ার আরেক পুত্রবধূ ও প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান শিঁথিও হাসপাতালে তার সঙ্গে রয়েছেন।
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি একই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে খালেদা ছয়বার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন।
আরও পড়ুন: বিএনপির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখানো হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী