%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF
শনিবার সব উপজেলা ও থানায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে শনিবার সারাদেশের সব উপজেলা ও থানায় দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ জানানোর জন্যও এই কর্মসূচি।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানান, দলের সিনিয়র নেতাদের অংশগ্রহণে সারাদেশের সব উপজেলা ও থানায় বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি জানান, কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে তাদের কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন উপজেলায় গেছেন।
রাজধানীতে টিপু বলেন, ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি ২৬টি থানায় এবং দলের ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখা ২৪টি থানায় কর্মসূচি পালন করবে।
বিএনপি ছাড়াও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি শনিবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর পান্থপথে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বলে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে সরকার ব্যর্থ: ফখরুল
এর আগে গত ১ এপ্রিল বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন ও সমমনা দলগুলো ১০ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সব বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিএনপি ও সমমনা দল ও জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে।
এ পর্যন্ত তারা ১০ দফা দাবি আদায়ে দেশের সব ইউনিয়ন, জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে আ.লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সন্দেহ ফখরুলের
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে আ.লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সন্দেহ ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা জমি দখলের জন্য বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে।
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবাজার মার্কেট দখলের চেষ্টা করছে। সত্যিকার নিরপেক্ষ তদন্ত হলে জানা যাবে এই ঘটনা সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে।’
শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারর্সনের গুলশান কার্যালয়ে ১২ দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাদের দল সত্য উদঘাটনের জন্য ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চায়।
মার্কেটের আগুনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সম্পৃক্ততার বক্তব্যের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ঘটনার একদিন পরই বঙ্গবাজারে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা বলা শুরু করেছে সরকার।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে এক বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং এটি আশেপাশের কয়েকটি বাজারে ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক হাজার দোকান, প্রধানত তৈরি পোশাক এবং জুতার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বিএনপি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে সরকার ব্যর্থ: ফখরুল
বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন বৈধ হবে না
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার আগের মতো ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো মঞ্চ-পরিচালিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি সরকার আগের মতোই একতরফা নির্বাচন করতে চায়। এ কারণে তারা জাতিসংঘের প্রস্তাব (আগামী জাতীয় নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য) প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এর আগে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ যথেষ্ট পরিণত এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘের সাহায্য নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি ও জোটের শরিকরা নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচনের কোনো বৈধতা থাকবে না। এ কারণেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার গতকাল (বৃহস্পতিবার) বলেছেন, প্রধান দলগুলো অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার জানান, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে তারা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আগামী দিনে তারা আন্দোলন আরও জোরদার করবেন এবং সফল করবেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার মার্কেট নিয়ে সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে: ফখরুল
যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে সরকার ব্যর্থ: ফখরুল
দেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি সত্ত্বেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা আধুনিকায়ন এবং অগ্নিনির্বাপক বাহিনীকে পর্যাপ্তভাবে সজ্জিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
ফখরুল বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জন্য সরকার ও সংস্থাগুলোকে দায়ী করেন, যেখানে কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লুটপাটের শিকার হয়।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার দেশে ব্যাপক উন্নয়নের কথা বলত। কিন্তু আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক ব্যবস্থা এখানে নেই। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল বাহিনীর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই।’
ফখরুল বলেন, জননিরাপত্তা নিয়ে সরকার কম মাথা ঘামায় বলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তদের তাদের সেবার উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়নি।
তিনি বলেন, ‘তাদের গুরুত্ব হলো যেখানে তারা আরও কমিশন পেতে পারে এবং কোথায় তারা আরও অর্থ উপার্জন করবে। এভাবেই তারা তাদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে। আমরা মনে করি এই (বঙ্গবাজার মার্কেট) অগ্নিকাণ্ডের জন্য পুরো সরকার দায়ী এবং তাদের দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত।’
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং এটি আশেপাশের কয়েকটি বাজারে ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক হাজার দোকান, প্রধানত তৈরি পোশাক এবং জুতার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সংবাদপত্রের প্রতিবেদন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর কয়েক বছর আগে বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সকে অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।
তিনি বলেন, ‘এই কাঠের কাঠামোকে মারাত্মক বিপদের মধ্যে ফেলে রেখে, সরকার এবং সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা বাজার খালি করার দায়িত্ব পালন করেনি।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স থেকে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আটক
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দল মনে করে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদাসীনতা, অযোগ্যতা, দুর্নীতি ও তদারকির অভাবের কারণেই বঙ্গবাজার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এমন ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হয়েছে।
যদিও সৌভাগ্যবশত বাজারে অগ্নিকাণ্ডে কেউ মারা যায়নি, তবে তিনি বলেন, ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের অনেকেই ঈদের আগে তাদের সমস্ত বিনিয়োগ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
ফখরুল বলেন, বুধবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির নীতিনির্ধারকরা সব মার্কেটে যথাযথ অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এবং বঙ্গবাজার মার্কেটে ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার মার্কেট নিয়ে সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে: ফখরুল
বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও বঙ্গবাজারের দোকান মালিকরা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি: সংসদে এনামুর
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বৃহস্পতিবার বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির কথা জানিয়ে নিয়ে ১০ বার সতর্কতামূলক নোটিশ দিলেও বঙ্গবাজারের দোকান মালিক সমিতি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বৃহস্পতিবার সংসদে কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ ধারায় এ বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এছাড়া আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে সরকারও মার্কেট উচ্ছেদ বা ভাঙতে পারেনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৮৫ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছ থেকে বঙ্গবাজার মার্কেটের প্রায় ১ দশমিক ৬৯৭ একর জমি পায়। ১৯৯৫ সালে বাজার সমিতি নিজস্ব খরচে তিনতলা বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স নির্মাণ করে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট সেখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়। কর্তৃপক্ষ ১৪১টি গাড়ি পার্কিং সুবিধা এবং ৪ হাজার ৪১৩টি দোকানসহ প্রতি ফ্লোরে ৬৭ হাজার ৩৩২ দশমিক ৫৩ বর্গফুটসহ একটি স্টিলের কাঠামোর বহুতল ভবন অনুমোদন করেছিল।
তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্তরা শনিবার থেকে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন: সালমান এফ রহমান
এনামুর বলেন, ২০১৯ সালে কর কর্মকর্তা বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতিকে ৩০ দিনের মধ্যে মার্কেট খালি করার জন্য একটি নোটিশ জারি করেছিলেন।
কিন্তু দোকান মালিকদের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে তিনটি মামলা করা হয় এবং হাইকোর্ট স্থগিতাদেশের আদেশ দেন; যা বারবার বর্ধিত করে আজ পর্যন্ত বহাল রয়েছে।
বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস থেকে মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠির মাধ্যমে ছয়বার অবহিত করা হয়েছে যে কোন সময় আগুন লাগতে পারে এবং মার্কেটটি পুরাতন টিন, কাঠের তৈরি ও জরাজীর্ণ, ব্যবহারের অযোগ্য ও বিপজ্জনক। তাই বাজারটি খালি করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এনামুর বলেন, ‘কিন্তু মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খালি করেনি, বরং সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আদালতের আদেশের কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে মার্কেট ভাঙা বা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি আরও বলেন যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ২০১৯ সালের এপ্রিলে এটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছিল এবং বাজারে ব্যানার ঝুলিয়ে সতর্ক করেছিল।
অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায়ী সমিতিকে বারবার নোটিশ জারি করে তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আরও পড়ুন: ব্যবসায় টিকে থাকতে সুদমুক্ত ঋণ চান বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে কোনো সংস্থার গাফিলতি পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আগামী নির্বাচনে ব্যালট পেপার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত কোনো চাপে নেওয়া হয়নি: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত কোনো চাপে নেওয়া হয়নি। এটা নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এসব কথা বলেন।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বা ব্যালট পেপার নির্বাচনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নয় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ।
তিনি আরও বলেন, ‘সব দল যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কমিশনের। সব দল নির্বাচনে অংশ নিলে তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’
আরও পড়ুন: সংলাপে নয়, অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বিএনপিকে আমন্ত্রণ: সিইসি
সিইসি বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা।
'ব্যালটের চেয়ে ইভিএম বেশি নিরাপদ' উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে কারচুপি বন্ধ করা সহজ। কিন্তু ব্যালট বা ইভিএম দিয়ে শতভাগ সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়।
আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সুতরাং আগাম নির্বাচনের প্রশ্নই আসে না।
আরও পড়ুন: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে: সিইসি
বঙ্গবাজার মার্কেট নিয়ে সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, বঙ্গবাজার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডে বর্তমান সরকারের দায়িত্বহীনতা এবং বিভিন্ন সংস্থার আগুন নেভাতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে।
বুধবার রাজধানীর মালিবাগ এলাকার একটি হোটেলে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনকারী ১২-দলীয় জোটের এক ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কয়েক হাজার মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তনাদ সারা দেশের মানুষকে আচ্ছন্ন করেছে।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বলি এই শাসন ব্যবস্থা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং তারা কোথাও তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে না। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভাতে এবং হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।’
তিনি বলেন, সম্প্রতি পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারসহ রাজধানীতে অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যাতে প্রায় দুই ডজন লোক মারা গেছে।
ফখরুল বলেন, ‘বঙ্গবাজারে আগুনে কেউ মারা যায়নি বলে আমরা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, তবে তারা (দোকান মালিকরা) আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ঘটনার পেছনের কারণ চিহ্নিতকরণ এবং অগ্নিকাণ্ড রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনেক সরকারি সংস্থা ও দপ্তরের দায়িত্ব থাকলেও তারা এ ব্যাপারে কিছুই করতে ব্যর্থ হয়েছে।
দেশে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারি সংস্থাগুলোও সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারছে না বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা।
এছাড়া কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থার অভাবে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন বলেও জানান বিএনপি নেতা।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং এটি আশেপাশের কয়েকটি বাজারে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় পাঁচ হাজার দোকান, প্রধানত তৈরি পোশাক এবং জুতার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত: মির্জা ফখরুল
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের নিরাপত্তা ও তাদের দুর্ভোগ নিয়ে কম চিন্তা করে। কারণ, এর মূল উদ্দেশ্য যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার সব নৈতিকতা ও নীতিকে বিসর্জন দিয়ে, সংবিধান লঙ্ঘন করে এবং জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে বেআইনি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার কুমিল্লায় তাদের দলের একটি ইফতার কর্মসূচি ছিল যেখানে পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই হামলা চালিয়ে ২০-২৫ জন বিরোধী নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া বুধবার ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির সভায় পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডাররা’ হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে আহত করেছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি খুলনা ও নাটোরসহ দেশের আরও কয়েকটি এলাকায় একই ধরনের হামলা হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বিবৃতি দিয়ে কোনো লাভ নেই। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে এখনই আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে এবং শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স থেকে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আটক
সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে বৃহস্পতিবার
আইনসভার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একাদশ সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে বৃহস্পতিবার। এটি বর্তমান সংসদ বা জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনও হবে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ৭ এপ্রিল সংসদে দেশের অর্জন ও আইনসভার ভূমিকা তুলে ধরে স্মারক ভাষণ দেবেন।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এই বিশেষ অধিবেশন চার কার্যদিবস চলার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ১৭ লাখ: জাতীয় সংসদে প্রতিমন্ত্রী
সংসদ সদস্যদের আলোচনা সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর একটি প্রস্তাব জাতীয় সংসদে গৃহীত হবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গৃহীত বছরব্যাপী কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন।
১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদের অধিবেশনের দিনটির কথা স্মরণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় আমরা ২০২৩ সালে সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছি। সেজন্য ৭ এপ্রিল সংসদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।’
তিনি বলেন, সংসদ নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং স্পিকার সবাই নারী।
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, এই কার্যক্রমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সংসদের বিশেষ অধিবেশন।
এদিন বেলা ১১টায় হাউস অধিবেশনে যাওয়ার আগে সংসদের ব্যবসায় উপদেষ্টা কমিটি তার সময়কাল এবং ব্যবসা নির্ধারণের জন্য স্পিকারের সভাপতিত্বে একটি বৈঠকে বসতে পারে।
বিশেষ অধিবেশন ছাড়াও জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী স্মরণে বছরব্যাপী কিছু অনুষ্ঠান থাকবে।
স্পিকার বলেন, ‘আমরা সিনিয়র সংসদ সদস্য এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পারস্পরিক মতবিনিময়ের কথা ভাবছি। সিনিয়র সংসদ সদস্যরা সেখানে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনও করতে চাই। সেটা হতে পারে বাজেট অধিবেশনের পর। সেখানে আমরা অন্যান্য দেশের কয়েকজন বক্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানাব। আশা করি এটি সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের অংশ হবে। এটি সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হতে পারে।’
এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের সংসদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদে বিইআরসি আইনের সংশোধনী পাস
হাট ও বাজার (প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা) বিল জাতীয় সংসদে
কুমিল্লায় তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স থেকে বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আটক
কুমিল্লায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় একটি সমাবেশ ও ইফতার অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল ভাষণ দেয়ার সময় সেখান থেকে ২০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার টাউনহল মিলনায়তনে কুমিল্লা বিভাগীয় যুবদল আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে তাদের আটক করা হয়।
এসময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হলে ইফতার মাহফিল বানচাল হয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাউদ্দিন টুকুর বক্তব্যের পর তারেক রহমান ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: শনিবার সব মহানগর ও জেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
তারেক রহমান তার বক্তব্য শুরু করলে কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক তপন বাগচী টাউন হলে প্রবেশ করেন। এ সময় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বলে জানান তারা।
পরে ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করা হয়।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, তারেক রহমানের যোগদানের কথা ছিল না। তাদের ইফতার মাহফিল করার কথা ছিল। তারেক রহমান যোগ দিলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে জড়িত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, মানুষের যে অধিকার তা পুরোপুরিভাবে হরণ করা হয়েছে। এছাড়া লঙ্ঘিত হচ্ছে মানুষের ব্যক্তগত অধিকার ও মানবাধিকার।
মঙ্গলবার বিকালে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের কালিবাড়িস্থ পৌর কমিউনিটি হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিমকালে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নতুন করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত তামাশা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কোনো তামাশার নির্বাচনে বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ যেখানে তার সত্যিকারের ভোট দিতে পারবে, তার মত প্রকাশ করতে পারবে; এই ধরনের একটা নির্বাচন আমরা চাই। আর সে নির্বাচন আওয়ামী লীগ যদি সরকারে থাকে তা কখনো নিরপেক্ষ হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির ১০ দফা দাবির প্রথম দফাটাই হচ্ছে বর্তমানে যে প্রধানমন্ত্রী আছেন শেখ হাসিনা, যিনি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হননি, তাকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সংসদকে বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। তবেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়। এটিই হচ্ছে আমার প্রধান দাবি।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান সরকার অর্থনীতির যে ভিত্তিগুলো-সেগুলো পর্যন্ত ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে সরকারের উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করলেও প্রকৃত চিত্র উল্টো। অথচ সরকার সব সময় ভুল পরিসংখ্যান প্রচার করছে।’
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা নেই: ফখরুল
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনে সরকারি দলের আইনজীবীরা পুলিশের সহায়তায় নির্বাচনকে পুরোপুরিভাবে পণ্ড করে দিয়েছে। শুধু তাই নয় পুলিশ সেখানে সম্পূরর্ণ রীতি বিরোধীভাবে, সুপ্রিমকোর্টের ভেতরে প্রবেশ করে বার লাইব্রেরিতে তারা আক্রমণ চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ঢাকাতেই নয়, অনেক স্থানে লক্ষ্য করা গেছে প্রাতিষ্ঠানিক যে একটা ব্যবস্থা বার সমিতি; সেটাকে দখল করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সকল শক্তি প্রয়োগ করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করতে তারা দ্বিধা করছে না। এখানে মানুষের একটা আস্থা ছিল, সেখান থেকেও আস্থা নির্মূল হওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘এখানে সংবিধানকে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কিছু ব্যক্তিকে র্যাব তুলে নিয়ে গেছে, এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।’
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে নওগাঁয় একজন নারী কর্মচারীকে তারা তুলে নিয়ে যাওয়ার পর র্যাব কাস্টডিতে মারা গেছে। একইভাবে ডিজিটাল সিকিউরিটি মামলার মাধ্যমে মানুষের যে অধিকার তা খর্ব করা হচ্ছে।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা যেটা সেটা হচ্ছে সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে যে লেখা সেটা খর্ব করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যা অর্জন করেছিলাম, যে স্বপ্ন নিয়ে ও চিন্তাচেতনা নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, তা সম্পূর্ণভাবে এরা হরণ করেছ, লুন্ঠন করেছে। বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি কর্তৃত্ববাদী একনায়েকতন্ত্রের দেশে পরিণত করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়: ফখরুল
৫ সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ইসির
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সোমবার পাঁচ সিটি করপোরেশন- গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেটের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।
গাজীপুরে ২৫ মে, খুলনা ও বরিশালে ১২ জুন এবং রাশাহী ও সিলেটে ২১ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রাজধানীর আগারগাঁও এর নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব জাহাঙ্গীর আলম।।
তিনি বলেন, পাঁচটি সিটিতে প্রচলিত ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হবে।
শহরগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো বিরতি ছাড়াই ভোটগ্রহণ হবে।
পাঁচ সিটি নির্বাচনে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারাই রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান তিনি।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী গাজীপুর সিটিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৩০ এপ্রিল এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ মে নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা।
খুলনা ও বরিশাল সিটিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৬ মে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১৮ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৫ মে।
দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন খুলনা ও বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এছাড়া ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ, কক্সবাজার পৌরসভা ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভারও একই তফসিল অনুযায়ী খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে ১২ জুন।
রাজশাহী ও সিলেট সিটিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ মে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২৫ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১ জুন।
দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন রাজশাহী ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এছাড়াও, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের জন্য ঘোষিত একই তফসিল অনুসারে ২১ জুন বগুড়ার তালোড়া, টাঙ্গাইলের বাসাইল এবং নারায়ণগঞ্জের গোপালদীতে তিনটি পৌরসভা নির্বাচন হবে।
আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে কোনো সিটি করপোরেশন এবং অন্যান্য স্থানীয় সংস্থার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার। তবে যে কোনো স্থানীয় সংস্থার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রথম অধিবেশন দিয়েই মেয়াদ শুরু হয়।
সর্বশেষ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গাজীপুরে ২০১৮ সালের ২৬ জুন, রাজশাহীতে সিলেট ও বরিশালে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই এবং খুলনা সিটিতে ২০১৮ সালের ১৫মে।