%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF
বিএনপির সমাবেশ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন: কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ যেন সুষ্ঠুভাবে করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগের ৮ ডিসেম্বরের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ৬ তারিখে করবে।
রবিবার পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে রাজধানীর নিজ বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে কোনো বাধা দিবে না সরকার, তবে আগুন-লাঠি নিয়ে খেলতে এলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন কাদের।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে আ.লীগের সম্মেলনের সঙ্গে কারও মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক নেই: কাদের
বিএনপিকে একটি ‘সন্ত্রাসী দল’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কানাডার একটি আদালত বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাদের রাজনীতি হচ্ছে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতি না করার শর্তে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে নেতা বানানো এতো সহজ নয়।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির মহাসচিবের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘দুনিয়ার কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আছে? আপনাদের নেত্রীই তো বলেছিলেন পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়!’
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন মিউজিয়ামে।’
কুমিল্লার সমাবেশে কোথায় গেল হাঁকডাক, কোথায় গেল জনস্রোত আর ঢল- এমনটা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন যে ঢাকা শহরে দেখা যাবে কত ধানে কত চাল।
আরও পড়ুন: দেশে এখন সরকার হটানোর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে: ওবায়দুল কাদের
প্রতিহিংসার রাজনীতির হোতাই হচ্ছে বিএনপি: কাদের
বিএনপি নেতাদের কারাগারে রেখে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার 'মিথ্যা' মামলায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মতো তাদের দলের সিনিয়র নেতাদের কারাগারে রেখে আগামী নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা সহজেই দূর করার ষড়যন্ত্র করছে।
শনিবার এক বিশাল জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করবেন না, ততদিন বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই শাসন কিছুই অক্ষত রাখে নি। আমরা এখন বিচার পাচ্ছি না। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক মামলা দায়ের করে আমাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে। আমাদের সকল সিনিয়র নেতাদের নামে ১০-৬০টি মামলা রয়েছে।’
ফখরুল বলেন, সরকার এখন বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা’ মামলার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করছে। ‘এর মানে এই যে, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে যেভাবে কারাগারে বন্দী করা হয়েছিল, সেভাবে তারা (সরকার) আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের কারাগারে নিক্ষেপ করে সহজেই নির্বাচনের বাধা অতিক্রম করতে চায়।’
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের জনগণ এবার সরকারকে আর কোনো একতরফা জাতীয় নির্বাচন করতে দেবে না।
বিএনপির বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে সমাবেশের আয়োজন করে দলটির কুমিল্লা মহানগর শাখা।
এবারের সমাবেশে পরিবহন ধর্মঘট ছাড়া কিছুটা স্বস্তির মধ্যে কুমিল্লায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন।
মানুষ আর নৌকায় চড়ে না
ফখরুল বলেন, ‘অবৈধ’ প্রধানমন্ত্রী তার অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচন জোর করে ক্ষমতা দখল করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ও রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার যশোরে জনসভা করেছেন শেখ হাসিনা। ‘সেই জনসভায়, তিনি (তার অধীনে) আবার নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং নৌকা (আ.লীগের) নির্বাচনী প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন…কিন্তু সারা বাংলাদেশের মানুষ এখন গান গাইছে, যদি তারা পরিণতি জানত তাহলে তারা নৌকায় চড়ত না। ’
তিনি বলেন, তাই সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার আগে মর্যাদার সঙ্গে ক্ষমতা ছেড়ে দিন, কারণ মানুষ এখন চায় আপনি চলে যান।’
ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও জনগণকে তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করতে হবে, জীবন উৎসর্গ করতে হবে।
জামানতের টাকা হারাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা
বিএনপি বলেছে, সরকার এর অধীনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে একটি মঞ্চ-পরিচালিত নির্বাচন করার জন্য আবারও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। কারণ একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা তাদের জামানতের অর্থ হারাবেন।
তিনি বলেন, সরকার দল ও এর কর্মসূচি দমন করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে কাল্পনিক মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করছে। ‘এটা একটা নির্লজ্জ শাসন। এদের চামড়া গন্ডারের মতো পুরু।’
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ হবে
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ১০ ডিসেম্বরের জনসভা ঠেকাতে সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও রাজধানীতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি শুরু করেছে। ‘আপনারা কুমিল্লাসহ কোথাও আমাদের সমাবেশ থামাতে পারেননি। আপনিও ১০ ডিসেম্বর ঢাকায়ও এটি করতে পারবেন না।’
ঢাকা মহানগরীতে বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেয়ার বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নানা মন্তব্য করলেও ফখরুল বলেন, তারা এখন বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে এসে নয়াপল্টনে সমাবেশ হবে।
তিনি বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র, ভোট ও জনগণের অন্যান্য অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছে কিন্তু সরকার একে অন্য দিকে মোড় নেয়ার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: আপেক্ষিক স্বস্তির মধ্যেই কুমিল্লায় বিএনপির অষ্টম বিভাগীয় সমাবেশ শুরু
আগামী নির্বাচনের আগে কোনো সংলাপ না করার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো সংলাপ না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘অনেকেই বলেন ডায়ালগ করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। কাদের সঙ্গে? ওই বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া- সাজাপ্রাপ্ত আসামি; যারা গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তাদের সঙ্গে?’
শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রিবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন যে সভা-সমাবেশ করতে বিএনপির কোনো বাধা নেই। তবে সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে তারা যদি অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ড ঘটায় তাহলে তার সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন: ২৯ বছরেও বাংলাদেশ কেন উন্নয়নের মুখ দেখেনি: প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন
তিনি বিএনপিকে সতর্ক করে বলেন, ‘আপনাদের আন্দোলনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে অগ্নিসংযোগ, মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা ও নিরীহদের ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটলে আমরা একজনকেও রেহাই দেব না।’
প্রধানমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি এসেছে যখন বিএনপি আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের প্রচারণা করছে। বিরোধী দল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদও করছে।
২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর সারাদেশে নির্যাতন ও দমন-পীড়নের লাগাম টেনে ধরার জন্য বিএনপি-জামায়াত শাসনের সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকটের আশঙ্কা করছেন না প্রধানমন্ত্রী
ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়িতে রাখলে চোরেরা উৎসাহিত হবে: প্রধানমন্ত্রী
আপেক্ষিক স্বস্তির মধ্যেই কুমিল্লায় বিএনপির অষ্টম বিভাগীয় সমাবেশ শুরু
পরিবহন ধর্মঘট ছাড়া আপেক্ষিক স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যেই কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ আজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এই সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
শনিবার সকাল ১১টা ৫ মিনিটে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি কুমিল্লা মহানগর শাখা।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুরসহ কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে সমাবেশস্থলে সকাল থেকেই বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা ভিড় জমায়। অন্যান্য বিভাগে দলের আগের সমাবেশের বিপরীতে এখানে কোনো পরিবহন ধর্মঘট না হওয়ায় কুমিল্লায় কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ ও উচ্ছ্বাস।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে পারে বিএনপি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটের পর বিভাগীয় পর্যায়ে কুমিল্লায় এটি বিএনপির অষ্টম সমাবেশ।
জানা গেছে, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের আশপাশে ও শহরের বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও যশোরে পুলিশের অভিযানে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে - সংবিধান অনুমোদন করে না বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও জানান আয়োজকরা।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশ আজ
তুলনামূলক সহজ পরিস্থিতির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির কুমিল্লা সমাবেশ
কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশ আজ
কুমিল্লার টাউন হল মাঠে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। আগের দিনই বিএনপির নেতাকর্মীদের পদচারণায় পূর্ণ হয়েছে এই সমাবেশস্থল।
খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা এসেছেন। বর্তমানে টাউন হল মাঠে দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী অবস্থান করছেন। জানা গেছে, তারা কুমিল্লা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে এসেছেন। তারা ব্যান্ড পার্টি, ব্যানার পোস্টার নিয়ে নেচে-গেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তি, জ্বালানি তেল, চাল, ডাল তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি। দেশব্যাপী বিএনপির নেতা কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই গণসমাবেশ করছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বরকত উল্লাহ বুলু।
সভাপতিত্ব করবেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন। মঞ্চে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য দু’টি চেয়ার খালি রাখা হয়েছে। সকাল ১২ টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
তুলনামূলক সহজ পরিস্থিতির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির কুমিল্লা সমাবেশ
বিএনপির অষ্টম বিভাগীয় সমাবেশ কুমিল্লা শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শনিবার। পূর্বের সমাবেশগুলোর তুলনায় এবারে কিছুটা সহজ পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই পালন করতে যাচ্ছে দলটি। যা বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।
সমাবেশ সফল করতে বিএনপি শুক্রবার পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড ও বর্ণাঢ্য মিছিলের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে কুমিল্লা শহর নিজেদের দখলে নেয়া শুরু করে।
গত মাসে চট্টগ্রামে শুরু হওয়া বিভাগীয় সমাবেশের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি নেতারা জানান যে তারা সমাবেশের মাধ্যমে আরেকটি বিশাল শোডাউন করবে।
দুপুর ১২টায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে মঞ্চ তৈরি করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
পূর্বের অন্তত ছয়টি সমাবেশের সময় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতারা ধর্মঘটের ডাক দিলেও এবার তারা সেরকম কোনো কর্মসূচি দেননি।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে পারে বিএনপি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
যেহেতু এবারের সমাবেশ কোনো পরিবহন ধর্মঘট ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবং পুলিশের অনুমতির বিষয় বেশ সরল প্রক্রিয়া, তাই শনিবারের সমাবেশটি আগের চেয়েও বেশ বড় হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যা দলটির নেতাদের কাছে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
আগের জনসভায় সমর্থকের অভাব না থাকলেও বিএনপি দাবি করে আসছে, সরকার জনগণের অংশগ্রহণে কথিত বাধা সৃষ্টি না করলে উপস্থিতি আরও বেশি হতো।
ইউএনবি’র সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির সমাবেশের আগে কুমিল্লায় কোনো পরিবহন ধর্মঘট না ডাকায় স্থানীয় বেশ কয়েকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
বিএনপি সমর্থকরা আশঙ্কা করছেন যে তাদের স্থানীয় প্রভাবশালী দুই নেতা নগর শাখার আহ্বায়ক আমিনুর রশিদ ইয়াসিন এবং সাবেক সিটি মেয়র ও বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কুর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব বিশাল সমাবেশ করার জন্য দলের প্রচেষ্টাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
তবে, স্থানীয় দলীয় কর্মীরা ইউএনবিকে বলেছেন যে ইয়াসিন ও সাক্কু উভয়েই তাদের অনুসারীদের সমাবেশকে সফল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, যদি কিছু হয় তবে কে বেশি জমায়েত করতে পারে তার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা করছে।
আরও পড়ুন: ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে আ.লীগের ফাঁদে পা দিবে না বিএনপি: গয়েশ্বর
শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, তাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে 'গণতরঙ্গ' ঠেকাতে সরকার নানা কৌশল অবলম্বন করছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন যে বিভিন্ন হুমকি-ধামকিকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী আগাম আসতে শুরু করায় কুমিল্লা উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন যে সমাবেশের আগে 'সরকারের নির্দেশে' পুলিশ তাদের হয়রানি করছে এবং তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডাররা’ বিএনপির সমাবেশে যোগ দিলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কাল্পনিক মামলায় ফাঁসানোসহ ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিচ্ছে।
মোশাররফ অবশ্য বলেছেন, তারা ক্ষমতাসীন দলের কোনো উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের জবাব না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করবেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু বলেছেন, কুমিল্লায় ‘স্মরণীয়’ সমাবেশ করতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো পরিবহন ধর্মঘট কার্যকর না হলেও আমাদের নেতাকর্মীরা কুমিল্লা যাওয়ার পথে ক্ষমতাসীন ক্যাডারদের বাধার মুখে পড়ছেন। তবে কোনো বাধাই আমাদের নেতাকর্মীদের সমাবেশে অংশ নিতে বাধা দিতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিতে নতুন নাটক তৈরি করছে সরকার: ফখরুল
শনিবার ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বাধার আশঙ্কায় সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার সকাল থেকেই চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনীসহ বিভিন্ন উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বিএনপি সমর্থকদের কুমিল্লা শহরে আসতে দেখা গেছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিলে জড়ো হওয়ায় জনসমাগম তৈরি হয়।
অনুষ্ঠানস্থলে তাদের রাত্রিযাপনের অনুমতি না থাকায় আয়োজকরা তাদের জন্য খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করেছেন।চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটে অনুষ্ঠিত ৭টি সমাবেশের পর শনিবার কুমিল্লায় হবে বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির ৮ম সমাবেশ।
চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ; ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পূর্বে পুলিশের অভিযানে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে আগামী জাতীয় নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হোক। তবে সংবিধান তা হতে দেয় না বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ সফল করতে সরকার সহায়তা করছে: তথ্যমন্ত্রী
সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে জনগণ বাধ্য করবে: খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে জনগণ বাধ্য করবে।
শুক্রবার কুমিল্লায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে শনিবার কুমিল্লায় অনুষ্ঠিতব্য সরকারবিরোধী সমাবেশের পরিকল্পনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বর্তমান ইসির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে যাবে না: খন্দকার মোশাররফ
সকাল ১০টায় টাউন হলে সমাবেশ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয়।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোশাররফ বলেন, ব্যাপক দুর্নীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থতা এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের জনগণ সরকারকে ‘লাল কার্ড’ দেখাবে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই আগামী জাতীয় নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। তবে দাবিটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিএনপির পক্ষে জানানো হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ; ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের অভিযানে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে তাদের বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজিত হয়ে আসছে।
বৈঠকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক আমিনুর রশিদ ইয়াছিন, সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, মহানগর আহ্বায়ক উবাতুল বারী আবু ও সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ‘বিদেশিদের’ পরামর্শের ওপর নির্ভর করছে না: খন্দকার মোশাররফ
অর্থ পাচার মামলা: সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফের ভাই গ্রেপ্তার
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে পারে বিএনপি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কিছু শর্তের ভিত্তিতে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) জানানো হবে যে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে পারে। তবে আমরা তাদের অনুরোধ করছি যে তারা যেন কোনও সহিংসতায় লিপ্ত না হয়, কোনও বাধা সৃষ্টি না করে এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে।’
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে একটি বিলাসবহুল মোটর লঞ্চ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ আয়োজনের জন্য অনুমতি দিতে তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারকে বলেছেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল এবং তাদের রাজনীতি করার অধিকার আছে। তারা পদ্ধতিগত ও গঠনমূলকভাবে রাজনীতি করলে আমাদের বলার কিছু নেই।’
তিনি অবশ্য বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও খারাপ কিছু করার চেষ্টা করলে সরকারের আপত্তি থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, সরকার সারাদেশে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে। তবে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষকে রাজধানীতে নিয়ে আসার বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে যে তারা পুরো ঢাকা শহরকে অচল করে দেয়ার চেষ্টা করবে। ‘তাই আমরা তাদের যেকোন বড় ভেন্যুতে যেতে বলেছি।’
আসাদুজ্জামান বলেন, শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে বিএনপি। ‘সুতরাং, আমরা (ডিএমপি) কমিশনারকে বিএনপিকে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতির বিষয়ে) জানাতে বলেছি। এটাও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ।’
যোগাযোগ করা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে তাদের জানানো হয়নি।
তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবেন কি না সে বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।
এর আগে ১৫ নভেম্বর একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করে এবং ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তাদের বহুল আলোচিত সমাবেশের অনুমতি চায়।
ডিএমপি কমিশনার অবশ্য বিএনপিকে অন্য কোনও বিকল্প ভেন্যুর নাম দিতে বলেছেন।
চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসাবে, বিএনপি ২৭ সেপ্টেম্বর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের গুলিতে দলের পাঁচ জনের মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দিয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও পরিবহন ধর্মঘট কাটিয়ে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটে সমাবেশের আয়োজন করেছে দলটি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। সংবিধানে এ ধরনের কোনো বিধান না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই দাবি তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে আ.লীগের ফাঁদে পা দিবে না বিএনপি: গয়েশ্বর
বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, তাদের দল রাজধানীর ১০ ডিসেম্বরের জনসভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সহিংসতা উসকে দেয়ার ফাঁদ এড়িয়ে চলবে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের সাতটি সমাবেশে সর্বত্র সংঘর্ষের উসকানি দেয়ার চেষ্টা করেছিল। আমি মনে করি এটি অস্বাভাবিক নয় যে তারা ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় একই চেষ্টা করবে... তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে আমরা (বিএনপি) সরকারের ফাঁদে পা দেব না। আমরা সংঘর্ষ এড়িয়ে সমাবেশ করব।’
বৃহস্পতিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর দলের ঢাকা জেলা শাখার নবগঠিত কমিটির নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে গয়েশ্বর চন্দ্র এসব কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করেন যে সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে এবং দলের আগের সমাবেশে বাস চলাচল বন্ধ করে সহিংসতা সৃষ্টির জন্য বিরোধী কর্মীদের উসকানি দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিচারপতিরা চাকরির ভয়ে বিচারকাজ করতে পারছেন না: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে ঢাকা সমাবেশ করার জন্য তাদের দল ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছে।
‘তারা (সরকার) অনুমতি দিতে না পারলেও আমরা সেখানে সমাবেশ করব। আমরা বলেছি ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ হবে। আমরা অনুমতির জন্য অপেক্ষা করব না, কারণ আমাদের অনুমতি দেয়া হোক বা না হোক আমরা সমাবেশের ব্যবস্থা করব,’ বলেন তিনি।
চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
দলটি ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুর এবং সিলেটে সাতটি সমাবেশ করেছে, অষ্টমটি ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় এবং ২৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে একটি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশ।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের অভিযানে পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
আরও পড়ুন: গণজাগরণের জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষায় বিএনপি: গয়েশ্বর
পাবনায় বিএনপির ১৫০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পাবনায় বিএনপির সাত নেতার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দেড়শ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
জানা যায়, ২০ নভেম্বর বিকেল ৫টার দিকে ট্রাফিক মোড়ের ঘোড়াস্ট্যান্ডে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে এই মামলা করা হয়।
অপরদিকে বিএনপি বলছে ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর সমাবেশে বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যেই তাদেরকে হয়রানির জন্য গায়েবী মামলা দেয়া হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক হিমেল রানা, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান সুইট, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক তরুণ।
আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিতে নতুন নাটক তৈরি করছে সরকার: ফখরুল
তসলিম হাসান খান সুইট বলেন, পাবনা শহরে ককটেল বিস্ফোরণের কোনো ঘটনা না ঘটলেও নাটক সাজিয়েছে পুলিশ। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দিয়েছে। চলমান আন্দোলনে বিএনপি নেতাকর্মীরা যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সেই জন্য পুলিশ রহস্যজনক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর গণসমাবেশে পাবনা থেকে যাতে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করতে না পারেন, এখান থেকে যাতে বিএনপি নেতারা সাধারণ লোকজনকে সমাবেশ নিয়ে যেতে না পারেন, সেই ষড়যন্ত্র হিসেবে মামলা করছে পুলিশ।
পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রোকনুজ্জামান সরকার বলেন, বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রবিবার বিকালে শহরে ককটেল বিস্ফোরণ করে নাশকতার সৃষ্টি করেছে। পরে সেখানে গিয়ে তিনটি ককটেল পাওয়া যায়। পরে অনুসন্ধানে বিএনপি নেতারা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। সেদিন রাতেই সাত জনের নাম উল্লেখ ও বাকিদের অজ্ঞাত করে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী কারাগারে