রাজনীতি
স্পিকারের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সোমবার (২৬ জুন) তার কার্যালয়েসৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
সাক্ষাৎকালে তারা স্পিকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক জাপান সফর, বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
স্পিকার বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ১৯৭৩ সালে জাপান সরকারের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফরে যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক জাপান সফরটি ছিল খুবই ফলপ্রসূ।
জাপানের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ও হাউজ অব কাউন্সিলরসের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
জাপানে সংসদের অধিবেশন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সংসদীয় প্রতিনিধিদলের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হয়েছে।
জাপানের ন্যাশনাল মিউজিয়াম ফর ইমার্জিং সাইন্স এন্ড ইনোভেশন এবং ওসাকাস্থ একুরিয়াম পরিদর্শন স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেন স্পিকার।
বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক জাপান সফর জাপানের জন্য অত্যন্ত গৌরবের উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, বাংলাদেশ জাপানের অনেক পুরনো বন্ধু।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে সংসদীয় প্রতিনিধিদলের জাপান সফর জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের মাইলফলক।
জাপান বাংলাদেশের বিনিয়োগ সহযোগী। ভবিষ্যতে জাপান-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সফর বিনিময় দুদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং তথ্য-প্রযুক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করার জন্য রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানান স্পিকার।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের
স্পিকারের সঙ্গে সফররত জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ
‘শিগগিরই’ বিএনপি এক দফা আন্দোলন শুরু করবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার বলেছেন, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তাদের দল ‘শিগগিরই’ তাদের ‘এক দফা’ আন্দোলন শুরু করবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের জন্য একটি উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য কাঠামো বেরিয়ে আসবে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা মূলত এক দফা আন্দোলনে আছি। খুব শিগগিরই আমরা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবো।’
তিনি আরও বলেন, ঈদুল আজহার পর নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারকে মেনে নিতে সরকারকে বাধ্য করতে আন্দোলন আরও জোরদার করবেন।
ফখরুল বলেন, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে কথা বলছি, কারণ আমরা আন্দোলন বাড়াতে চাই এবং তা আরও জোরদার করা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে তারা আলোচনা শুরু করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করেছি (নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে) এবং আমরা একটি সেমিনারে পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে কথা বলেছি। আমরা ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্টভাবে কথা বলব।’
তিনি তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সরকারের একটি উপযুক্ত কাঠামো নির্ধারণ করতে সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞদের এ বিষয়ে তাদের মতামত দেওয়ার আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করি সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য কাঠামো পাওয়া যাবে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সংশোধনীর মাধ্যমে বর্তমান সংবিধান দলীয় ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রজাতন্ত্র জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী চলবে এবং জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করা যেতে পারে।
ফখরুল বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যখন দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে, এরপর যেকোনোভাবেই তারা একদলীয় শাসন পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধন শুরু করে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার জনগণের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের অজুহাত দেখিয়ে সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তা বাতিল করেছে; যা ছিল প্রতারণা। জনগণ ও বিচার বিভাগের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে এটা করা হয়েছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা দাবি করেন, পঞ্চদশ সংশোধনী বা সরকার কোনোটাই বৈধ নয়।
তার চেয়ে ভালো দেশ কে চালাতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘এটি তার গণতন্ত্রবিরোধী, স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী মনোভাব প্রকাশ করেছে।’
ফখরুল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারলে দেশ পরিচালনা ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে অনেক যোগ্য নেতা পাওয়া যাবে।
একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সরকার পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করার সদিচ্ছা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচন কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। ‘তাই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট যে এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে সারাদেশে দমনমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, একদিকে তারা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করছে, অন্যদিকে আমাদের দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তুলে নিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে এখানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কীভাবে আশা করেন?’
এবার ঠাকুরগাঁওয়ে তার গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপন করায় ফখরুল সাংবাদিকদের সঙ্গে আগাম ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
রাজনৈতিককর্মী, আর সন্ত্রাসী গুলিয়ে ফেলেছেন বিএনপি নেতারা: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে যে তারা রাজনৈতিককর্মী আর সন্ত্রাসী গুলিয়ে ফেলেছেন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আর রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে পার্থক্য আছে। কিন্তু বিএনপির কর্মসূচি হচ্ছে সন্ত্রাসনির্ভর; তারা রাজনীতির নামে সন্ত্রাস করেন। এখানেই হচ্ছে বিপত্তি।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) প্রকাশিত ড. কামরুল হাসান সম্পাদিত ‘সংবাদপত্রে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান’- গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আমরা চাই বিএনপি পূর্ণশক্তিতে নির্বাচনে অংশ নিক: তথ্যমন্ত্রী
পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ ও গ্রন্থকার মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে জাতির সব অর্জন অগ্রগতি হারিয়ে যেতে বসেছে’- নিয়ে প্রশ্ন করলে ড. হাছান বলেন, এর অর্থ গত সাড়ে ১৪ বছরে জাতির অনেক অর্জন আছে এটা মির্জা ফখরুল সাহেব স্বীকার করে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার কারো ওপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে না। কিন্তু যারা আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে, পুলিশের ওপর হামলা করেছে এবং এখনও করছে, মির্জা ফখরুল সাহেবদের নেতৃত্বে যারা এখনো রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া ভাঙচুর করছে, তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রিজভী সাহেব কি এটা জেগে বলেছেন, না ঘুমিয়ে বলেছেন এবং তার মানসিক স্বাস্থ্য কেমন-সেটি আমার প্রশ্ন।
তিনি বলেন, দেশে কোথাও তারা তাদের কর্মীদেরও নামাতে পারেনি, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা। আসলে দু-চারশ’ মানুষ নিয়ে তারা মিটিং করতে অভ্যস্ত, এখন দু-চার হাজার দেখে মাথাটা নষ্ট হয়ে গেছে, এই হচ্ছে সমস্যা।
চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত অনিবন্ধিত আইপি এবং ক্যাবল টিভি’র বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসন চারটি অবৈধ আইপি টিভি’র অফিস সিলগালা করা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, সরকার অনুমোদিত বৈধ টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রতি মাসে শুধু বিটিআরসিকে ২০ লাখ টাকার বেশি ফি দেয়।
তিনি আরও বলেন, এসব টিভিতে অনেক সাংবাদিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৬টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে, আরও আসবে। কিন্তু কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই দেখা যায় যে, এই টিভি চ্যানেলের মতো একই ধরনের বুম আর ছোট একটা ক্যামেরা নিয়ে হাজির হয় অননুমোদিত নানা আইপি টিভি। এদের কোনো অনুমোদন নাই, এরা চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত।
হাছান মাহমুদ জানান, সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেলের নামে সংবাদ বুলেটিন বা অন্য কৌশল অবলম্বন করে সংবাদ প্রচার করা যায় না, তারপরও তারা এই কাজটি করে। এবং সেটি করতে গিয়ে অমুকের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করার জন্য চাঁদা নেয়, বিপক্ষে করার জন্যও হুমকি দিয়ে চাঁদা নেয়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সাংবাদিক নিয়োগ দেওয়ার জন্য টাকা নেয়, প্রতি মাসেও প্রতিনিধিদের কাছে উল্টো টাকা দাবি করে। এই কাজগুলো সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করার জন্য এবং যাদের বৈধ লাইসেন্স নেই যারা চাঁদাবাজি এবং অন্যান্য অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
রবিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সেই অভিযান পরিচালনা করেছে এবং কয়েকটি আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাদের অফিসও সিলগালা করে দিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সেটি করতে গিয়ে আবার ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে এসেছে’ অর্থাৎ সেখানে তাদের কার্যালয়ের মধ্যে অবৈধ ও ভেজাল নানা ধরণের খাদ্যসামগ্রী পাওয়া গেছে। অন্যান্য জেলাতেও খুব সহসা এ ধরনের অভিযান পরিচালিত হবে।
আরও পড়ুন: অ্যামনেস্টি'র বিবৃতি বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক: তথ্যমন্ত্রী
বাঙালির ইতিহাস লিখতে গেলে আ. লীগের নাম লিখতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
হিন্দুদের ব্যাপারে বিএনপি নেতা গয়েশ্বরের সাম্প্রতিক দাবির নিন্দা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সাম্প্রতিক দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সম্প্রতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দাবি করেন যে বাংলাদেশের বৃহত্তম ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুরা ধীরে ধীরে ‘নিরাপত্তার অভাবে দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা আরও জানিয়েছেন, বাইডেনের কাছে দেওয়া চিঠিতে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থান সম্পর্কে দেওয়া তথ্য ‘ত্রুটিযুক্ত অনুমান’, বিএনপি নেতাদের এধরনের তথ্য সমর্থন করার প্রবণতা, জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
২০১৪ এবং তার আগে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘুদের ওপর বারংবার হামলার কথা উল্লেখ করে তারা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকেও দায়ী করেছেন।
মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠির বিরুদ্ধে তার আগের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করে এটিকে ‘সত্যের অপলাপ’ বলে অভিহিত করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন: ‘১৯৭৭ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমানের ছত্রছায়ায় দেশের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির নীতিগুলো ধ্বংস হয়ে যায়’।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জেনারেল জিয়া এবং জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বাধীন ধারাবাহিক সরকারগুলো সবাই পাকিস্তানপন্থী সাম্প্রদায়িক শাসনের প্রবর্তন করে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আলিঙ্গন করে একই পথ ধরে হেঁটেছে।’
দাশগুপ্ত বলেন, মানুষের অবশ্যই ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের অধীনে সংখ্যালঘুদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় হামলার ঘটনা বিবেচনা করতে হবে।
আরও পড়ুন: আরেকটি সাজানো নির্বাচন করতে সরকার পুলিশ ও জনপ্রশাসনে রদবদল শুরু করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা হ্রাসের প্রবণতা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে ঘটেছে।
বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, শিক্ষাবিদ এবং যুদ্ধাপরাধ বিরোধী প্রচারকারীরা সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের অনুমান ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।
তারা আরও বলেছে যে এটি ‘বাংলাদেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি।’
মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসার পর থেকে হিন্দু জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে... শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান জনসংখ্যাকেও নিপীড়ন করেছে; উপাসনালয় জ্বালিয়ে দেওয়া ও লুটপাট করা, যাজকদের কারাগারে বন্দী করা এবং ধর্মান্তরিত করার মাধ্যমে পরিবার ভেঙে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।’
আর্চবিশপ ইমেরিটাস প্যাট্রিক ডি'রোজারিও এর আগে বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে ‘নির্যাতিত’ হিসেবে চিত্রিত করার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।
এই ধরনের বক্তব্যকে ‘ভুল’ বলে অভিহিত করে ঢাকার প্রাক্তন আর্চবিশপ জোর দিয়ে বলেছিলেন যে সরকার ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে।
প্রায় ২০০ বিশিষ্ট বাংলাদেশি আমেরিকানদের একটি দল একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে যে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য রয়েছে।’
বাংলাদেশি আমেরিকানদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চিঠিতে ২০০১ সালের অক্টোবরের জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতাকে উপেক্ষা করা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন জোট হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যেসব হামলা করেছিল।’
আরও পড়ুন: ফয়জুল করিমের ওপর হামলার বিষয়ে সিইসি’র মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ফখরুলের
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে জামায়াত: গয়েশ্বর
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুন পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৪ হাজার কর্মী বিদেশ গেছে: মন্ত্রী
চলতি অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) জুন পর্যন্ত মোট ১০ লাখ ৭৪ হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে গেছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি।
সোমাবার প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ সংসদে ভোলা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আলী আজমের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে আ.লীগকে ক্ষমতায় থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরের একই সময়ে (২০২১-২২) মোট ৯ লাখ ৭ হাজার কর্মী বিদেশে গেছেন।
বগুড়া থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, জনশক্তি রপ্তানির জন্য নতুন দেশের সঙ্গে চুক্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে লিবিয়া, মাল্টা, আলবেনিয়া, রোমানিয়া ও সার্বিয়ার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে।
ভোলা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য নুরন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে অভিবাসনের কাজে ঋণ হিসেবে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার প্রবাসী শ্রমিকের মাঝে ২ হাজার ৮১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একেএম রহমতুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আগে দেশে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা উৎপাদনের তুলনায় কম ছিল এবং সে কারণেই বেশি চা রপ্তানি হতো।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে সমালোচনার মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী
বর্তমানে দেশে চায়ের চাহিদা প্রায় ১০০ মিলিয়ন কেজি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে উৎপাদিত সব চা অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ব্যবহৃত হয় এবং রপ্তানির জন্য সামান্য উদ্বৃত্ত থাকে।
তিনি আরও বলেন, চা রপ্তানি বাড়াতে সরকারের পাশাপাশি চা বোর্ড মানসম্পন্ন চায়ের উৎপাদন বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।
ফেনীর আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ২১টি দেশের ২৩টি শহরে বাংলাদেশের বাণিজ্য মিশন রয়েছে।
সেগুলো হলো-
ক্যানবেরা, ব্রাসেলস, বেইজিং, কুনমিং, প্যারিস, বার্লিন, নয়াদিল্লি, কলকাতা, তেহরান, টোকিও, ইয়াঙ্গুন, কুয়ালালামপুর, মস্কো, সিউল, সিঙ্গাপুর, মাদ্রিদ, জেনেভা, দুবাই, লন্ডন, ওয়াশিংটন ডিসি ও লস অ্যাঞ্জেলেস।
তিনি আরও বলেন, অদূর ভবিষ্যতে ব্রাসিলিয়া, তুরস্ক, আঙ্কারা, মেক্সিকো, মেক্সিকো সিটি ও আফ্রিকায় বাণিজ্যিক শাখা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডেও মিশন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ড. মোমেনের কৃতজ্ঞতা
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে সমালোচনার মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে সংসদে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের একজনকে মন্ত্রণালয় পরিচালনার দায়িত্ব দিলে পদত্যাগ করতে তার কোনো সমস্যা নেই।
সোমবার গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবিত কাট মোশন নিয়ে আলোচনা চলাকালে টিপু মুন্সীর বিরুদ্ধে প্রথম তোপ দাগেন।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বাণিজ্যমন্ত্রীর সমালোচনাও করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরাও।
এছাড়া বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত কি না, এমন প্রশ্নও তোলেন তারা।
আরও পড়ুন: ব্যবসা-বাণিজ্যে এশিয়া অঞ্চলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
ছাটাই প্রস্তাবের আলোচনায় জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল কী করে?
তিনি বলেন, এত বড় মন্ত্রণালয়। মন্ত্রীর গতিশীলতা না থাকলে দাম বাড়বে। একজন মানুষ কাজ করলে আর সবাই ঘুমালে দেশ চলবে না। বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইচ্ছা করলে অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু আপনি যদি মনে করেন ব্যবসাটা আমারই, তাহলে এটা দেশ ও জনগণের জন্য দুঃখজনক।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, গত কয়েক মাসে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব পড়ছে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ শতাংশ, এখন মনে হয় ১০ শতাংশ এবং এটা ক্রমবর্ধমান। মূল্যস্ফীতি মানুষের আয় শুষে নিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির কারণে সাবান, রুটি সবকিছুরই আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সরকারি বাজেট আর গৃহস্থালির বাজেট করা এক জিনিস নয়।
তিনি বলেন, সরকারের বাজেট কমছে এবং এ কারণে চাল, ডাল, তেল, মুরগির মাংসের পিছও ছোট হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতির দুষ্ট চক্রে আটকা পড়েছে। এটি কাটিয়ে উঠতে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট আছে। এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সেই সিন্ডিকেট শক্তিশালীও। কিন্তু তারা কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী?
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি না তারা সরকারের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে। সরকারের মধ্যে কোনো সিন্ডিকেট থাকলে তা চিহ্নিত করতে হবে।
তিনি বলেন, মন্ত্রীর বিশাল ব্যবসা রয়েছে।
তিনি বলেন, তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। আমি বিশ্বাস করি যে যদি তাকে পদক্ষেপ নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়, তবে তিনি অবশ্যই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেছেন, বর্তমান সরকারের সবচেয়ে ব্যর্থ মন্ত্রণালয় হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন বাজারে গেলে, আপনারা মানুষের মুখে শুনতে পাবেন যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এতটাই ব্যর্থ, মানুষ এটিকে সিন্ডিকেটবান্ধব মন্ত্রণালয় বলে অভিহিত করে।
পণ্যের দাম বাড়ানোর পেছনে ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট জড়িত থাকার অভিযোগ করে মোকাব্বির বলেন, অনেকেই বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী এতে জড়িত।
এসময় মোকাব্বির বাণিজ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন যে এত কিছুর পরেও আপনি পদত্যাগ করছেন না কেন?
মোকাব্বির বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী যখন বলেন কোনো পণ্যের দাম কমবে, পরের দিন সেই পণ্যের দাম বাড়ে।
তিনি আরও বলেন, তিনি জানেন যে মন্ত্রীেএসব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেবেন না।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, বাজারে গেলে মানুষ বিরক্ত হয়।
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার মনিটরিং করছে না। বাণিজ্যমন্ত্রী একজন মুক্তিযোদ্ধা। কেন তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না?
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে বাজারে গেলে মানুষ কাঁদে, আর তার একমাত্র কারণ সিন্ডিকেট।
তিনি আরও বলেন, মানুষ এটাও বোঝে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য শুধুমাত্র রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করা উচিত নয়। ডিমের বাজারে হাজার হাজার টাকা লুট করেছে সিন্ডিকেট। মুরগির ডিম ইউক্রেন থেকে আসে না।
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তির সুবিধা কাজে লাগাতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন যে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়ার সুযোগ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী দাম বাড়ায় সিন্ডিকেটের লোকজনকে গ্রেপ্তার করতে পারেন না। কারণ তিনি নিজেও একজন ব্যবসায়ী। তিনি জানেন কোন ব্যবসায়ীরা এটা করছেন। তাহলে এই ব্যবসায়ীরা কি তার ঘনিষ্ঠ, যে কারণে সে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ধরতে পারছে না?
তিনি কেন তা করতে পারছেন না বাণিজ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে বলার দাবি জানান তিনি।
পীর ফজলু বলেন, পেঁয়াজের বাজারে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছু কোম্পানি চিনির বাজারে দৈনিক ১৭ কোটি টাকা লুটপাট করছে। দেড় মাসে ব্রয়লার মুরগির বাজারে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী কিছুই করতে পারবেন না।
এসব আলোচনা-সমালোচনার জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “পণ্যমূল্য বাড়ছে ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির’ প্রভাবে। আর দেশে যে ‘সিন্ডিকেটের’ কথা বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া সম্ভব। তবে তাতে জটিলতাও আছে।”
তিনি বলেন, ‘বাজারে সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। এটা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। আমাদের লক্ষ্য রাখা দরকার- আমরা জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম। সেটা হয়ত করা সম্ভব। কিন্তু তাতে হঠাৎ করে ক্রাইসিসটা (সংকট) তৈরি হবে, সেটা সইতে তো আমাদের কষ্ট হবে। এজন্য আমরা আলোচনার মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে থেকে চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, আমি জানি না তাদের কত বছরের অভিজ্ঞতা আছে রাজনীতিতে। কিন্তু আমি ৫৬ বছর ধরে রাজনীতি করছি। আমি এখন ৪০ থেকে ৪২ বছর ধরে ব্যবসা করছি।
পদত্যাগের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে একজন তো আমাকে পদত্যাগ করতে বললেন। খুব ভালো কথা বলছেন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলব, উনি (মোকাব্বির) দায়িত্ব নিলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে ওনারে দায়িত্বটা দিতে পারেন। কোনো সমস্যা নেই আমার।’
দাম বেড়েছে উল্লেখ করে টিপু বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, অভ্যন্তরীণ কারণ নয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতি দেশকে প্রভাবিত করেছে। আমাদের এটা মনে রাখতে হবে।
পেঁয়াজের দাম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দাম বেড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পেঁয়াজের কথা বলা হয়েছে। আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে কৃষকদের এমন একটি মূল্য দেওয়া উচিত যা তাদের বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করে।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশে প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ লাখ টন পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে। দাম ভালো হলে কৃষকরা উৎপাদনে মনোযোগ দেবে। এই ধাপে আমাদের ঘাটতি অর্ধেক কমে যায়। কিন্তু এটা ঠিক ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি হওয়া উচিত নয়। সেজন্য আমরা আমদানির ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, স্থানীয় কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার পেঁয়াজ আমদানি করতে চায় না।
কিন্তু আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমদানি করেছি। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ এখন প্রতি কেজি ৪০/৪৫ টাকা। আজ আমাদের দেশি পেঁয়াজের দাম ৬৫ টাকা। আমার মনে হয় আরও কমানো উচিত। আমরা চেষ্টা করছি ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ টাকা কেজির মধ্যে চলে আসবে।
সব কিছু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করে না মন্তব্য করে টিপু মুনশি বলেন, ‘তারপরও দায় আমি নিয়ে বলছি, আমরা সর্বৈবভাবে চেষ্টা করছি কী করা যায়।’
চিনির দাম বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, দাম ১০০ টাকার মধ্যে নামিয়ে আনতে শুল্ক কাঠামো কমানোর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন।
আরও পড়ুন: দেশে প্রথমবারের মতো ৮ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে দেওয়া হবে ‘জাতীয় চা পুরস্কার’: বাণিজ্যমন্ত্রী
সিলেটের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ড. মোমেনের কৃতজ্ঞতা
সিলেটের অভাবনীয় উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সিলেটের অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্নের জন্যে অনুরোধ জানিয়েছেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
রবিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন সিলেটের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়েছে। সিলেটবাসীর জন্য এটি অত্যন্ত খুশির বিষয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজও শুরু হচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন, প্রায় শত বছর পরে সিলেট সিটি করপোরেশনের আয়তন তিনগুণ বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-সিলেট সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তর ও সিলেটের রেললাইনের ডুয়েলগেজ নির্মাণের কাজটি তাড়াতাড়ি শুরু করলে অর্থনীতি আরও উপকৃত হবে।’
আরও পড়ুন: বৃহত্তর বৈশ্বিক স্বার্থে বহুপাক্ষিকতাকে সমুন্নত রাখুন: জি২০ সভায় মোমেন
‘সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে বন্যা হয়েছে। পানি আমাদের দেশের সম্পদ। এবারের বন্যা আমাদেরকে অন্যরকম শিক্ষা দিয়ে গেল। এখন থেকে প্রতিরোধের ব্যবস্থা না করতে পারলে এটি ভবিষ্যতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।
তিনি সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারাসহ সকল নদ-নদীর নাব্যতা সৃষ্টির জন্য ড্রেজিংসহ নদী তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকরণে গৃহীত প্রকল্পের কাজ যথাসময় বাস্তবায়নের আহবান জানান। ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করায় তিনি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কেও ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘সিলেটে তিনি তারজঞ্জালবিহীন বৈদ্যুতিক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। যার ফলে সিলেট একটি সুন্দর নগর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সিলেটে প্রথম ডিজিটাল সিলেট সিটি তৈরির কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এ কাজগুলো সম্পন্ন হয়নি, বাকি কাজগুলো সম্পন্ন হওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাব। বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিভাগীয় শহরে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। এই কর্তৃপক্ষগুলো পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলার কাজ করে থাকে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সিলেটে এখনও এ ধরনের কোনো কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি হয়নি।’ তিনি সিলেটের জন্যেও এধরনের কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলার অনুরোধ জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিছুদিন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষা করে এই কারাগারটাকে বঙ্গবন্ধু পার্ক নির্মাণের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন আহ্বান জানান।
শিক্ষা ক্ষেত্রে সিলেট এখনও পিছিয়ে আছে উল্লেখ করে এক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য ড. মোমেন আহ্বান জানান। তিনি সিলেট এয়ারপোর্ট ও চৌকিদিঘীর চারিদিকে ৫ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করার জন্যেও অনুরোধ জানান।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত-এর আকাঙ্খা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনের কথা উল্লেখ করে সেটা বাস্তবায়নেরও অনুরোধ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সিলেটের উন্নয়নের জন্য অনুমোদিত কাজগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে সিলেটের জনগণের উপকার হবে এবং সেইসাথে সিলেটে বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তা আরও অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের চিঠিতে উল্লেখিত সংখ্যালঘুদের নিয়ে বক্তব্য সত্য নয়: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ নদীমাতৃক হাওর-বাওর ও জলাশয়ের দেশ। এসব জনসাধারণের ওপর নির্ভরশীল আমাদের কৃষি, জীবন-জীবিকা। তবে নদী সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প অনেক সময় হাতে নেয়া হয়, যাতে নদীর স্বাভাবিক গতিধারা ব্যাহত হয়। এতে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ঠিক তেমনি তৎসংশ্লিষ্ট অঞ্চলের অর্থনীতিতেও বিরুপ প্রভাব পড়ে।’ এজন্য তিনি নদী বা জলাধার সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে আরও সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
বিগত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশে নানাক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্যের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত ও টেকসই করে রাখতে হলে রাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত প্রয়োজন। সেই জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বিক কার্যক্রমের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার উপর জোর দিচ্ছে যাতে কোনো ধরনের উন্মাদনা বা সন্ত্রাসী তৎপরতা অথবা আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতার কারণে রাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত না হয়।’
বিভিন্ন গোষ্ঠী দেশের স্থিতিশীলতা ধ্বংসের জন্যে বহুবিধ উদ্যোগ নিয়েছে, এব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘যে সমস্ত দেশ স্থিতিশীল সে সমস্ত দেশের জনগণ সুখে আছে। আর যে সমস্ত দেশে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে যেমন আফগানিস্তান, লিবিয়া, ইয়েমেন এবং তাদের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।’এজন্য যারা বিভিন্ন অজুহাতে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে চাচ্ছে তাদের থেকে সাবধান থাকতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হবে: মোমেন
খালেদার সঙ্গে দেখা করলেন ফখরুল
দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফখরুল খালেদার গুলশানের বাসায় যান এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন বলে ইউএনবিকে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব দলীয় প্রধানের সঙ্গে দেখা করে মূলত তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান কারণ তিনি বিভিন্ন রোগে চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সেন্ট মার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া কিছুই নয়: ফখরুল
এর আগে গত ১৭ জুন বিএনপি চেয়ারপার্সন এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চারদিন চিকিৎসা নিয়ে গুলশানের বাসায় ফেরেন।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি নেত্রী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকার দেশে ও বিদেশে সমর্থন হারিয়েছে: ফখরুল
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সরকার তার সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। এতে শর্তে দেয়া হয়েছে যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আ.লীগ সরকারকে অপসারণের কোনো বিকল্প নেই: ফখরুল
নিবন্ধন সার্টিফিকেট গ্রহণ করল ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নতুন নিবন্ধন পাওয়া ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ নিবন্ধন সার্টিফিকেট গ্রহণ করেছে।
রবিবার (২৫ জুন) নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলমের কাছ ৪৬ নম্বর নিবন্ধিত নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে 'নিবন্ধন’ সনদ গ্রহণ করেন সংগঠনটির মহাসচিব শেখ রেহান আফজাল রাহবার'।
এ সময় দলের চেয়ারম্যান ও প্রবর্তক ইমাম আবু হায়াত, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য - আবু আবরার চিশতী, আহমেদ শাহ মোর্শেদ ও আউয়াল কাদরী, দপ্তর সম্পাদক মাইনুদ্দীন টিটু, অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান আখন্দ, আন্ত:রাষ্ট্রীয় সমন্বয় সম্পাদক এস এম মারুফ উদ্দিন।
আরও পড়ুন: এনআইডি নিবন্ধন ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের খসড়া বিল মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। গত ৯ মে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।
ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আপিল বিভাগের রায় ও আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধান অনুযায়ী ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছে। এই দলের প্রতীক ‘আপেল’। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর গুলশানে।
আরও পড়ুন: নাজমুল হুদাকে ‘তৃণমূল বিএনপি’র নিবন্ধন দেয়ার রায় আপিলে বহাল
কোনো দলকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হলে ইসিতে নিবন্ধিত হতে হয়। নতুন এই দলসহ এখন ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪২। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো নতুন দলকে নিজেরা সরাসরি নিবন্ধন দেয়নি। যে দলগুলো নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, এর মধ্যে ১২টি দলের মাঠপর্যায়ের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এই কমিশনের আমলে দু’টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এর একটি ইনসানিয়াত বিপ্লব।
এর আগে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দেয় ইসি। নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে নিবন্ধন না পেয়ে এই দলগুলো উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল।
আরও পড়ুন: নিবন্ধন অবৈধের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সারসংক্ষেপ প্রস্তুতির ২ মাস সময় পেল জামায়াত
পদ্মা সেতু বিএনপির ১৪ বছরের আন্দোলনকে ঢেকে দিয়েছে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গত ১৪ বছরে বিএনপির আন্দোলনকে ম্লান করে দিয়েছে এক পদ্মাসেতু।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক পদ্মাসেতু সম্প্রসারিত করেছে দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিগন্ত।
রবিবার সকালে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর সেতুভবনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন: ওবায়দুল কাদের
কাদের বলেন, সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী পদ্মা সেতু চালুর পর দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগে নবদুয়ার খুলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার যানবাহন চলাচল করেছে। দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার যানবাহন পারাপার হচ্ছে।
এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হচ্ছে প্রায় ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা করে। গতকাল রাত পর্যন্ত টোল আদায় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।
আজ রবিবার বিকাল নাগাদ ৮০০ কোটি টাকা টোল আদায়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন সেতুমন্ত্রী।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ৩৫ বছরে বাংলাদেশ সরকারকে পদ্মাসেতু নির্মাণ ব্যয় পরিশোধ করতে হবে। ইতোমধ্যে ৪ কিস্তিতে প্রায় ৬৩২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতুকে জাতীয় সম্পদ উল্লেখ করে তা সংরক্ষণে সকলকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপির জনসমর্থন ১০ শতাংশে নেমে এসেছে কিনা তা ভেবে দেখা উচিত।
সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক সফিকুল ইসলাম সহ সেতু বিভাগ, সেতু কর্তৃপক্ষ ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন হবে দেশের সংবিধান অনুযায়ী: ওবায়দুল কাদের
বিদেশি শক্তি বন্ধু হতে পারে কিন্তু নির্বাচনে জয়ী করতে পারে না: কাদের