রাজনীতি
দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দাবি একটাই, হাসিনার পদত্যাগ। ফয়সালা হবে রাজপথে। সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে হবে। যেই বাংলাদেশ আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে পেয়েছি, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। শনিবার (২০ মে) বিকালে লালমনিরহাট কালেক্টরেট মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, ভোট ডাকাত সরকার ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াতে চেয়ে পারেনি, সারের দাম কয়েক দফায় কয়েকগুণ বাড়িয়েছে, আজ মানুষ পেঁয়াজ কিনতে পারছে না, ডিম কিনতে পারছে না। দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে আওয়ামী লীগ দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সাবেক এমপিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ক্রসফায়ারের নামে নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অসংখ্য শিশু বাবার জন্য, অসংখ্য স্ত্রী তার স্বামীর জন্য, অনেক মা তার সন্তানের আগমনের প্রতিক্ষা করছে। শেখ হাসিনা সরকার আমাদের এমন দেশ উপহার দিয়েছে।
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়নের কথা বলে। সে উন্নয়ন কোথায়? উন্নয়ন তাদের ঘরে। যাদের সাইকেল ছিল না সেই নেতা এখন গাড়ি চালায়। ভূমিহীন নেতারা এখন অসংখ্য আলিসান বাড়ি-গাড়ির মালিক। এই সব তাদের উন্নয়ন। দেশকে ধ্বংস করে নিজেদের উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা বলেছি যে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এজন্য শেখ হাসিনা সরকারকে আগে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকার গঠন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নতুন আইন করেছে, নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচন বাতিল করতে পারবে না। এমন বানানো নির্বাচন কমিশন আমরা চাই না।
ফখরুল বলেন, যারা আমাদের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছে। তাদের আর ক্ষমতায় থাকার সময় নেই। তাদেরকে বিতাড়িত করার সময় এসেছে। ‘কোনঠে বাহে জাগো সবাই’। দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।
সরকার পতনের আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
বেগম কালেদা জিয়ার শর্তহীন মুক্তি, দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ও ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল, যুগ্ন সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের ‘অতিরিক্ত পুলিশ এসকর্ট’ প্রত্যাহার সরকারের ‘চরম দায়িত্বহীনতা’: ফখরুল
এটা সরকারের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে ফখরুল
সিলেট সিটি নির্বাচন: দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে সরে দাঁড়ালেন আরিফ
আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী।
শনিবার (২০ মে) বিকাল ৩টায় নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে আয়োজিত এক নাগরিক সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
জনসভায় আরিফ বলেন, ‘আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিএনপির রাজনীতি শুরু করি। আমার জীবন থাকতে এই দলের ক্ষতি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবো না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করার পরিবেশ নেই। বিশেষ করে ইভিএম নিয়ে নগরের মানুষজন জানে না। এটা ভোট কারচুপির মহাআয়োজন। ইভিএমে উন্নত দেশগুলোও ভোট করছেনা। ইভিএমে আপনারা এক মার্কায় ভোট দিবেন, দেখবেন সেটা আরেক মার্কায় চলে গেছে।
আরিফ বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমার দল বিএনপি অংশ নেবে না। আমি এই সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ালাম।
এসময় আরিফ নগরবাসীকে ভোট বর্জন করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন সিসিক মেয়র আরিফ
তিনি বলেন, জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে সিলেটের উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছিলাম। আমার উন্নয়ন কাজ নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন তাদের বলতে চাই, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও আমার কাজের প্রশংসা করেছেন। আর তাই সিলেটের মানুষজন, মা-বোন যে যেখানেই আমাকে পাচ্ছেন, নির্বাচন করার জন্য বলছেন। অনুরোধ করছেন।
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এখনো আমি মনোনয়নপত্র কিনিনি। অথচ আমার নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে পুলিশ তল্লাশি করছে। গ্রেপ্তার-নির্যাতন, এমনকি রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের সন্তান, আমি আপনাদের ভাই। আমি মেয়র না থাকলেও আপনাদের পাশে সবসময় থাকবো। আমাকে আপনারা ক্ষমা করুন।
আরও পড়ুন: দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনলেন সিসিক মেয়র আরিফ!
পটুয়াখালীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন আহত
পটুয়াখালী সদর উপজেলায় পূর্বনির্ধারিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ (আ.লীগ)ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সকালে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির কার্যলয়ের সামনে এ সংঘর্ষ ঘটে।
জানা যায়, সরকারের পদত্যাগ দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরু করে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল রশিদ চুন্নু মিয়ার সভাপতিত্বে বনানী মোড়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
জেলা বিএনপি সমাবেশ শুরুর আগে নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সমাবেশে হামলা শুরু করলে উভয়েই সম্মুখ সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ উভয় দলের নেতাকর্মীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ১৯; ১২টি মোটরবাইক ভাঙচুর ৩টিতে আগুন
এতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি উজ্জ্বল তালুকদারসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং শহরের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এসপি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করেছে, তবে কত রাউন্ড ব্যবহার হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান জানান, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
বিএনপির জেলা শাখা তাদের ১০ দফা দাবির পক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে এবং আজ বিকালে একটি হোটেলে তাদের সমাবেশে ‘হামলার’ প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না।
এদিকে, সকালে স্থানীয় আ’লীগের নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের জেলা শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর ও সহ-সভাপতি সুলতান আহমদ মৃধা প্রমুখ।
জেলা আ.লীগের সভাপতি বলেন, তাদের সমাবেশে ‘হামলার’ অভিযোগে তারা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ
খুলনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ ১৩০০ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১৩
খুলনায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় শুক্রবার রাতে বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১২০০/১৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। খুলনা সদর থানার এসআই খালিদ উদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, শুক্রবার রাতেই মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১২০০/১৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার (১৯ মে) বিকালে সরকারের পদত্যাগ, মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধসহ ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনা প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ আহ্বান করে বিএনপি। বিকালে প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হয়। আগে থেকেই সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রাইভেটকারে করে ক্লাবের সামনে আসেন।
এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা শ্লোগান দিতে থাকে। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। অপরদিকে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, সমাবেশে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। বক্তব্য দিতে দেয়নি। উল্টো আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
খুলনায় সমাবেশে ১৫ নেতাকর্মী পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার দাবি বিএনপির
খুলনায় পূর্বনির্ধারিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে খুলনা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ১৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
শুক্রবার বিকালে নগরীর খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম তুহিন দাবি করেছেন পুলিশের হামলায় আরও ২০ জন আহত হয়েছেন।
তিনি দাবি করেন, ‘কোনও প্ররোচনা ছাড়াই পুলিশ তাদের উপর গুলি চালালে দলের অন্তত ১৫ জন গুলিবিদ্ধ আহত হয়।’
গুলিবিদ্ধদের মধ্যে রয়েছেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এবায়দুল হক রুবায়েদ, ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আশিকুর রহমান অনি, সিটি কলেজের সদস্য সচিব আরিফ মোল্লা তুর্জো, সদর থানা সদস্য শাহিল, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ কিমিয়া সাদাত, যুবদল নেতা জাহিদুর রহমান এবং দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
বিএনপি নেতাদের আহত হওয়ার ছবি থেকে বোঝা যায় পুলিশ রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে, প্রাণঘাতী গোলাবারুদ নয়।
এছাড়া সমাবেশস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ ও আহতদের নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কোনো উস্কানি ছাড়াই সমাবেশে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়, লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ারশেল ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেন বিএনপিরি এই নেতা।
তুহিনের মতো একই সুরে খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, কোনো উস্কানি ছাড়াই পুলিশ তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশের হামলার সময় প্রেসক্লাবের ভেতরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল ও আনিদ্রা ইসলাম অমিতসহ ২৫ থেকে ৩০ জন দলীয় নেতাকর্মী আটকা পড়েছিলেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির লোকজন কোনো অজুহাত ছাড়াই আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আমরা টিয়ারশেল ব্যবহার করতে বাধ্য হই।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ
তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ১০ জনকে আটক করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করার চেষ্টা করে তাদের ওপর হামলা চালায়।
বিএনপির সদস্যদের ওপর গুলি চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে এড়িয়ে যান।
বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকালে প্রেসক্লাবের সামনে সরকারের পদত্যাগ, ভুয়া মামলা বন্ধ, গণগ্রেপ্তার এবং সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদসহ ১০ দফা দাবিতে জনসভার নির্ধারিত সময় ছিল।
জেলা ও নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা দুপুর থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ সমাবেশস্থলের দিকে অগ্রসর হওয়া মিছিলে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতই দেশ সফর করুন না কেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেষ।
শুক্রবার রাজধানীতে এক সমাবেশে বক্তব্যে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। কারণ, দেশের জনগণ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চায়।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যতই চিৎকার করুক না কেন এই শাসনের সময় শেষ। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কাতার, সৌদি আরব এবং চীনে যান না কেন, আপনি কোন লাভ করতে পারবেন না। আপনার সময় শেষ এবং এটাই বাস্তবতা।’
জনগণকে 'দুঃশাসন' থেকে মুক্ত করতে এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিতে সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
দলটির দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়, এবং 'মিথ্যা মামলায়' দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজধানীর শ্যামলী ক্লাব মাঠে ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে।
এছাড়াও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের 'গায়েবি' মামলা দায়ের, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ঘন ঘন বিদ্যুত বিপর্যয় এবং সরকারের 'সর্বব্যাপী' দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ জানাতে দেশের আরও ২৭টি মহানগর ও জেলায় সমাবেশ করেছে দলটি।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার বারবার ইউটিলিটি সার্ভিসের শুল্ক বাড়ালেও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংকটে মানুষ দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, চাল, তেল, ডিম, লবণ, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম দুই থেকে তিনগুণ বেড়ে যাওয়ায় মানুষ বেঁচে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে।
‘কিন্তু মন্ত্রীরা এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বিলাসবহুল থাকেন তারা বলছেন সবকিছু ঠিক আছে এবং বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো অবস্থায় আছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রায়ই লোকেদের উপহাস করে এই বলে যে তারা সিঙ্গাপুরের চেয়ে ভাল,’ বিএনপি নেতা বলেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় জনগণের স্পন্দন বুঝতে পারছেন না। ‘কোনও রাষ্ট্রীয় প্রোটোকল ছাড়াই মানুষের সামনে দাঁড়ান তাদের চোখ এবং শরীরের ভাষা বুঝতে।’
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলন: রাজধানীতে আবারো পদযাত্রা করল বিএনপি
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের ‘দুঃশাসনে’ মানুষ বিরক্ত হয়ে গেছে। ‘তারা বেঁচে থাকা কঠিন মনে করছে। ‘জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা মানুষকে সম্মান করতে পারে না। যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন বাহিনীর ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকে তারা পতন না হওয়া পর্যন্ত মানুষের মন শান্ত হতে পারে না।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দেশের প্রতিটি সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ‘তারা কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাত থেকে প্রতি বছর ৭৮ হাজার কোটি টাকা চুরি করে... শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করে দেয়। কলেজ, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় সহ কোথাও কোনো একাডেমিক পরিবেশ নেই। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল করে রেখেছে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। তৃতীয় শ্রেণীর ডিগ্রিধারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হচ্ছেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটে লিপ্ত হয়ে স্বাস্থ্য খাতকেও ধ্বংস করেছে।তিনি বলেন, সরকার এখন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও ভুতুড়ে’ মামলা দিয়ে ক্ষমতায় থাকার শেষ অবলম্বন হিসেবে ব্যবহার করছে।
ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে তাদের দলের নেতাকর্মীরা দমন, কারাবরণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ১৭ ভাই বর্তমান আন্দোলনে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ (শুক্রবার) খুলনায় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে আমরা শুনেছি। গুলি করে মানুষের এই আন্দোলন বন্ধ করা সম্ভব হবে না।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে কবরে চলে গেছে এমন মন্তব্যের জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নিন্দা করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে, নিজেদের ভোট দিতে এবং সুষ্ঠু ফলাফল নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।
আরও পড়ুন: আগামী ২৩ ও ২৮ মে ঢাকা ছাড়া সব মহানগরে পদযাত্রা করবে বিএনপি
বিএনপি নেতা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। ‘আমরা ২০১৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচন দেখেছি…..তাদের আর বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। আপনার (শেখ হাসিনা) অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই আসতে পারে না।
তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ফখরুল। ‘তাহলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা কোথায়? আপনি কি বাংলাদেশের সব মানুষকে বোকা মনে করেন? আর কতদিন মানুষকে ঠকাবেন? আপনি আর এটা করতে পারবেন না।’
বর্তমান সরকার দেশে ও বিদেশে সমর্থন হারিয়েছে বলে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কোনো পক্ষপাতমূলক ভূমিকা পালন না করার আহ্বান জানান। ‘দেশের মানুষ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব একটি সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় এবং তারা জানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তা সম্ভব হবে না। তাই দয়া করে এমন পরিস্থিতি তৈরি করবেন না যেখানে আপনাকে (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) চিহ্নিত করা হবে (আপনার পক্ষপাতমূলক ভূমিকার জন্য)।
শনিবার ঢাকা দক্ষিণ মহানগরী, ২১টি সাংগঠনিক জেলা ও অন্যান্য মহানগরে সমাবেশ করবে বিএনপি।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ
জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে: এবিএম রুহুল আমিন
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, তিনশ’ আসনেই প্রার্থী দেবে জাতীয় পার্টি।
তিনি জানান, জরুরি মিটিংয়ে তাদের তিনশ’ আসনে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সকালে তার নির্বাচনী এলাকার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ত্যাগী ও জনপ্রিয়তা দেখে সকল আসনে প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এসময় রুহুল আমিন হাওলাদার আরও বলেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সরকার রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দেবে। এমন কিছু করা উচিত নয় যাতে দেশের ক্ষতি হয়। কোনো রাজনৈতিক দল দেশের ক্ষতি চিন্তা করতে পারে না। আমরাসহ বড় বড় রাজনৈতিক দল এবিষয়ে ভাবছি।
পরে তিনি পটুয়াখালীর দুমকিসহ বিভিন্ন স্থানে জনসংযোগ করেন।
এসময় জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে মেয়র পদে সাবেক সচিব নিয়াজউদ্দিনকে মনোনয়ন দিল জাতীয় পার্টি
জাতীয় পার্টি কারো দাসত্ব করবে না: জিএম কাদের
খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ
খুলনা নগরীর প্রেসক্লাবে বিএনপির সমাবেশে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়।
শুক্রবার বিকাল ৪টায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির বেশকয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা নেই: জিএম কাদের
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা নেই বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, আওয়ামী লীগের একজন মেয়র প্রার্থী কত শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যান্য প্রার্থীরা কত ভোট পাবে তাও তিনি বলছেন।’
বৃহস্পতিবার পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ সদস্যদের যৌথসভায় জিএম কাদের বলেন, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাদের প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত লড়বেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘আমরা বিজয়ী হওয়ার জন্য নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় থাকব। অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে নির্বাচন হলে আমাদের প্রার্থীরা ভালো ফল পাবেন।’
আরও পড়ুন: রিজার্ভ সঙ্কটের কারণে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে: জিএম কাদের
আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে পাঁচ সিটির নির্বাচন শুরু হবে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, খুলনা ও বরিশালে ১২ জুন এবং রাজশাহী ও সিলেটে ২১ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট বাতিলের বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ‘আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কূটনীতিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই যাতে তারা আমাদের দেশে নিরাপদে কাজ করতে পারে।’
আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে কী হয় তা আমরা কেউই জানি না। এমন বাস্তবতায় সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই রাজনীতিতে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
জিএম কাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোনো পক্ষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে বিপদে পড়তে হবে। ‘রাজনীতিতে একটি ভুল সিদ্ধান্তের ভয়াবহ পরিণতি হবে।’
তিনি বলেন, তারা জনগণের সামনে তাদের দলের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে চান। ‘আমরা কোন দলের বি-টিম নই।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সাংগঠনিক সক্ষমতা জোরদারে কাজ করার আহ্বান জানান। ‘জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য আমাদের কঠোর রাজনীতি করতে হবে। নির্বাচনের মাঠে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। জাতীয় পার্টির ঐক্য বিনষ্ট করার ক্ষমতা কারো নেই।
আরও পড়ুন: সংবিধান উপেক্ষা করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা সফল হবে না: রওশন
জাতিসংঘও শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার স্বীকৃতি দিচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা জাতিসংঘে ‘দি শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’- শিরোনামে প্রস্তাব হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় আজকে জাতিসংঘ শেখ হাসিনার প্রশংসা করে এবং তার সরকার পরিচালনার ধরন এবং জনগণের জন্য তার যে কাজ এটিকে জাতিসংঘও স্বীকৃতি দেয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘে ১৬ তারিখে যখন ‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’- প্রস্তাবটি পাস হয়েছে, তখন আমাদের এখানে ১৭ তারিখ অর্থাৎ কাকতালীয়ভাবে তার (প্রধানমন্ত্রীর) স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন। বিশ্বের ৭১টি দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে এই প্রস্তাব কো-স্পন্সর করেছে যা জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘মোখা’র মতো রাজনৈতিক অঙ্গণে একটা ঝড় আসছে -এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আশ্চর্যের বিষয়, একটি প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড় আমাদের দেশের উপকূলে আঘাত হানার পূর্বক্ষণে মানুষ যখন আতংকিত-শংকিত, মানুষ যখন জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত, সেসময় কোথায় ‘মোখা’ যাতে আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে সেজন্য মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা, সেটি না করে বরং সেটিকে নিয়ে রাজনীতির সঙ্গে মেলানো এবং উপহাস করা একজন রাজনীতিবিদের সাজে না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আর এখন তো মোখা পাশ কাটিয়ে চলে গেছে, মোখার মতোই বিএনপির আন্দোলনও পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতায় জলবায়ুঝুঁকি নিরসনে ব্রতী বাংলাদেশ: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হাঁটা শুরু করছে, হাঁটুক। উনারা কিছুদিন আগে হেঁটেছেন এখন আবার সমাবেশ করবেন বলছেন, আবার পদযাত্রা কর্মসূচিও না-কি দেবেন। উনারা হাঁটাহাঁটি করলে ভালো।’
বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘সকল কূটনীতিককে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। কিন্তু দেশে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার পর কয়েকজন কূটনীতিককে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিলো। আমাদের সরকার অত্যন্ত সফলভাবে জঙ্গিদের দমন করতে সক্ষম হয়েছে। জঙ্গি দমনে সক্ষমতায় আমরা অনেক উন্নত, বড় দেশের চেয়েও বেশি সক্ষমতা দেখাতে পেরেছি। বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে এ রকম বাড়তি নিরাপত্তা কূটনীতিকদের দেওয়া হতো না। কয়েকজন কূটনীতিককে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার পর বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিলো। সেটি এখন যেহেতু প্রয়োজন নাই সেজন্য প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তা অব্যাহত আছে।’
হাছান বলেন, ‘এরপরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটাও সুস্পষ্ট করেছেন, কেউ যদি সরকারের কাছে বাড়তি নিরাপত্তা চায় এবং সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করে, তাদের সেটি দেওয়া যেতে পারে। আর এ ক্ষেত্রে কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো বিষয় নাই, এটি রুটিন ওয়ার্ক।’
আরও পড়ুন: বিশ্বাঙ্গণে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি সমর্থন অনুধাবনে ব্যর্থ হলে বিএনপি ভুল করবে: তথ্যমন্ত্রী
৭ মে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে গণতন্ত্রও ফিরতো না: তথ্যমন্ত্রী