রাজনীতি
আ.লীগ যতদিন থাকবে পহেলা বৈশাখ ততদিন উদযাপন করবে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পহেলা বৈশাখ নিজের পরিচয় ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রকাশের দিন হওয়ায় যতদিন আওয়ামী লীগ দেশে থাকবে ততদিন বৈশাখ পালিত হবে।
শুক্রবার বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পহেলা বৈশাখসহ বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আগেও ছিল এবং আজও আছে। কে পালন করছে বা করছে না তা আমাদের মাথাব্যথা নয়। তবে আমরা পালন করব।’
বাঙালিরা উৎসবমুখর পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গন্তব্য।
আরও পড়ুন: নভেম্বরের মধ্যে ১০০টি ডাবল ডেকার এসি বাস পাবে বিআরটিসি: কাদের
ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটসহ সকল সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনা চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার চর্চা বেড়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের উৎখাত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ পছন্দ করে এবং দ্বি-জাতীয়তাবাদ পছন্দ করে, তারা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাসকে সম্মান করে না, তাদের প্রতিহত করা হবে।’
শোভাযাত্রাটি রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: নভেম্বরের মধ্যে মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ চালু: ওবায়দুল কাদের
৫ সিটি নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন ফরম নিলেন ৪১ প্রার্থী
গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট-এ পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোট ৪১ জন মেয়রপ্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
পাঁচটি পৌরসভা ও ছয়টি উপজেলা পরিষদে আরও প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়নের জন্য ৯ এপ্রিল থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করে ১২ এপ্রিল শেষ হয়।
প্রার্থীরা ৯ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন।
গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ ও কক্সবাজার পৌরসভা, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভা, বগুড়ার তালোড়া, টাঙ্গাইলের বাসাইল ও নারায়ণগঞ্জের গোপালদীর তফসিলও ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বর্জন করলে বিএনপি গুরুত্বহীন দলে পরিণত হবে: তথ্যমন্ত্রী
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে ২৫ মে, খুলনা ও বরিশালে ১২ জুন এবং রাশাহী ও সিলেটে ২১ জুন ভোট হবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ১৭ জন, খুলনায় চারজন, বরিশালে সাতজন, সিলেটে ১০ জন এবং রাজশাহীতে তিনজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
পৌরসভার (পৌরসভা)- কক্সবাজার সদর, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, বগুড়ার গোপালদী ও তালোড়ায় ২২টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়েছে এবং টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভার জন্য কেউ ফরম সংগ্রহ করেনি।
এছাড়া ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলা, জগন্নাথপুর উপজেলা ও সন্দ্বীপ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩৮টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের সদস্যদের সতর্ক করে বলেছেন যে, স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রগতি সহ্য করতে পারে না বলে ভবিষ্যতে দেশের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক ষড়যন্ত্র করা হতে পারে।
‘আগামী দিনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক ষড়যন্ত্র হবে। কারণ, যারা দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করতে চায় না তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলা শাখার নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে এ মন্তব্য করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি আ.লীগ নেতাদের আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে দলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রগতি যাতে অব্যাহত থাকে সেটি আপনাদের মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের সামনে সরকারের সাফল্য তুলে ধরুন: ড. হাছান
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ‘তাই, জনগণ আমাদের ভোট দেয়। এটা বাস্তবতা। সুতরাং, আমাদের ভোট কারচুপির দরকার নেই।তিনি আরও বলেন, আ.লীগ জনগণের সেবা করে তাদের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে...আ.লীগ সব সময় ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে।’
বাংলাদেশের উন্নয়নে তার সরকারের সাফল্যকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি সাম্প্রতিক পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলকে সংযুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে সংযোগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই, দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছে এবং আরও প্রত্যক্ষ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার শতভাগ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছে, শিক্ষার হার বাড়িয়েছে এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়েছে।
তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের জন্য যা যা প্রয়োজন তার সরকার সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছে।
সাম্প্রতিক মাথাপিছু আয় ও ব্যয় সমীক্ষার ফলাফলের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ শতাংশ থেকে এখন ১৮ দশমিক সাত শতাংশে নেমে এসেছে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ২৫ শতাংশ থেকে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশে কোনো মানুষ চরম দরিদ্র থাকবে না।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন যখনই হোক বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না: কাদের
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় মানেই জনগণের ভাগ্যের উন্নতি হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির জন্ম।
তিনি বলেন, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো দল মাটি ও জনগণ থেকে উঠে আসেনি।
যেহেতু দুই দল বন্দুক নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখতে না পাওয়ায় বিএনপি নেতা ও তাদের সমমনাদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তারা প্রতিদিন মাইকে প্রতিদিন মিথ্যা বলতেছে। আমি বুঝতে পারছি না কেন তারা রোজার দিনেও মিথ্যা কথা বলে!
তিনি স্মরণ করেন যে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসনে জিতেছিল, যদিও সেই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। তিনি বলেন, বিএনপির অবস্থান এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম আলো আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র ও জনগণের শত্রু: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
ডা. জাফরুল্লাহ অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন: বিএনপি
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের (জিএসকে) প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিএনপি বলেছে, তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার।
বুধবার এক শোক বার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের নায়ক ডা. জাফরুল্লাহ জাতি, দেশ ও জনগণের কল্যাণে সারা জীবন কাজ করে গেছেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিএনপি ও এলডিপির ২৬ নেতাকর্মী কারাগারে
বিএনপি নেতা স্মরণ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের জন্য মাঠ হাসপাতাল এবং স্বাধীনতার পর স্বল্প খরচে চিকিৎসার জন্য গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় ডা. জাফরুল্লাহ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন এবং সমাজ সংস্কার ও অগ্রগতিতেও এই মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।
ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রের সব সংকটে তিনি নির্ভীক সৈনিক হিসেবে এগিয়ে এসেছিলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে এবং আওয়ামী সরকারের গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং দল কর্তৃক জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন।
তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং জাফরুল্লাহর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা: নাটোরে আ.লীগ ও যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় সরকার: বিএনপি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় সরকার: বিএনপি
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও ক্ষমতা দখলের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) ব্যবহার করে জনগণের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার জন্য সরকার ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার এক সেমিনারে বক্তব্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি ডিএসএ বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান কারণ এটি এখন জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
ফখরুল বলন, ‘সরকার বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় বসতে এ ধরনের আইন করেছে। জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। তারা এই আইন করেছে যাতে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে এবং নির্বাচনের আগে তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে না পারে।’
বিএনপি নেতা বলেন, দেশের নাগরিকদের কথা বলতে ও অভিযোগ জানাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিএসএ ’র অপব্যবহার করে লিখতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারও ডিএসএ এবং অন্যান্য 'কালো' আইন ব্যবহার করে তাদের বিরোধীদের সম্পূর্ণভাবে দৌড়ের বাইরে রেখে নির্বাচনের বাধা অতিক্রম করতে চায়।
ফখরুল বলেন, ‘সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে। সবার আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। এটা এখন দেশ ও জনগণের দাবি।’
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক পরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
কয়েকজন ব্যক্তি যারা ডিএসএ এবং আইসিটি আইনের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে তারাও সেমিনারে তাদের দুঃসহ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কথা বলেছেন।
ফখরুল বলেন, সরকার ডিএসএসহ আরও অনেক আইন করেছে যাতে দেশের নাগরিকরা কথা বলতে ভয় পায়।
তিনি বলেছিলেন যে ১৯৮৪ শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র রয়েছে যেখানে দেখানো হয়েছে যে কীভাবে উত্তর কোরিয়ায় তার নাগরিকদের ভয় দেখিয়ে এবং সেই জাতিকে দাসত্ব করার জন্য ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ‘প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে রাখা এবং তার ও আরও অনেক সাংবাদিক ভাইয়ের বিরুদ্ধে ডিএসএ মামলা দায়েরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এর প্রতিফলন শুরু হয়েছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার অনেক সাংবাদিক ও সাইবার কর্মীকে জেলে, নির্যাতন ও গুম করেছে।
আরও পড়ুন: সরকার দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে: ফখরুল
র্যাবের ওপর ডয়চে ভেলের একটি তথ্যচিত্রে সাক্ষাৎকার নেওয়া নাফিজ মোহাম্মদ আলমকে গ্রেপ্তার করার জন্যও তিনি সরকারের নিন্দা জানান৷
ফখরুল বলেন, পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলায় নাফিজকে মদসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ‘এটা তাদের (সরকার) পুরনো অভ্যাস। এটা তাদের অস্ত্রও বটে। তাদের কাছে এরকম অনেক অস্ত্র আছে এবং তারা সেই অস্ত্রগুলোকে একের পর এক ব্যবহার করে
নাগরিকদের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। এবং এভাবে তারা নিজেদের মতো করে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করছে।’
তিনি বলেন, বিচার বিভাগে ন্যায়বিচার পাওয়া এখন ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ প্রশাসনকে পুরোপুরি রাজনীতিকরণ করা হয়েছে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত ধ্বংস হয়ে গেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকার একটি অনির্বাচিত, অবৈধ ও দখলদার সরকার। ‘এটি সম্পূর্ণরূপে একটি দখলদার শাসন হিসাবে কাজ করছে এবং দেশকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের মৌলিক বৈশিষ্ট্যকে ধ্বংস করছে এবং একটি গণতন্ত্রপ্রিয় জাতিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য পরিকল্পিত ও ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের গণতান্ত্রিক আত্মাকে ধ্বংস করে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ করেছে।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্রের আড়ালে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করা। ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং গণমুখী সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠা করতে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার বিকল্প নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা-১৯৪৮-এর পরিপন্থী হওয়ায় ডিএসএ প্রত্যাহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি: খুলনায় বিস্ফোরক আইনে ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
মূল প্রবন্ধে আসাদুজ্জামান বলেন, ডিএসএ নিঃসন্দেহে একটি বিতর্কিত আইন যা সরকারের ভিন্নমত ও রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ‘এই আইনের প্রয়োগ শুধুমাত্র নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকেই প্রভাবিত করে না বরং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকেও প্রভাবিত করে যা আমাদের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো।’
তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন যে ডিএসএ অবিলম্বে বাতিল করা উচিত, যাতে নাগরিকদের সুরক্ষা এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলো রক্ষা করা উচিত নয়, গণতন্ত্র নিশ্চিত করা এবং ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার করাও।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মহাসচিব সাইফুল হক, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক লুৎফর রহমান।
আরও পড়ুন: পাঁচ সিটি নির্বাচনে সরকারের ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি: ফখরুল
জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে: রওশন এরশাদ
বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তার দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বলেছেন, ক্ষমতায় আসা বা পরিবর্তন আনার একমাত্র উপায় নির্বাচন।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জাতীয় পার্টি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া জাতীয় পার্টি কখনো নির্বাচন বয়কট করেনি এবং ভবিষ্যতেও বয়কট করবে না।
সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সোমবার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় তার সমাপনী বক্তব্যে বিরোধীদলীয় নেত্রী এসব মন্তব্য করেন।
সংসদের ৫০ বছর পূর্তিতে শুক্রবার সংসদে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় গঠনমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমরা কখনই ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করিনি। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, জাতীয় পার্টি দেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক সরকার বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে ও সংসদের বাইরে গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, কয়েকদিন ধরে দেশে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।
আরও পড়ুন: রাজনীতি এখন ‘পেশা’ হয়ে গেছে, আগে ছিল আবেগের বিষয়: ফিরোজ রশীদ
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত আগুন নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে উঠছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অসাবধানতা, অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বে অবহেলার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, বারবার এ ধরনের ঘটনার কারণে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের সঠিক তদন্ত ও উপযুক্ত প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সংসদকে সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি দল ও বিরোধী দলের উপস্থিতির পাশাপাশি তাদের পারস্পরিক আলোচনা-সমালোচনায় সংসদ সমৃদ্ধ হয়।
এটি জনগণের প্রত্যাশা ও আশা পূরণকেও প্রতিফলিত করে। এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। সংসদের কাজ জনগণের পক্ষে কাজ করা। জনস্বার্থের বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং আইন প্রণয়নে ভূমিকা পালন করা।
এছাড়া সংসদে এসব কার্যক্রম ভালোভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। বিরোধী দল হিসেবে আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছি।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মূল কেন্দ্র হচ্ছে সংসদ। জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এই সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানটি জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক এবং জনমত ও প্রত্যাশাকে ধারণ করে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ আশা করে যে সংসদ নাগরিক জীবনের জরুরি ও জনসাধারণের সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। জাতীয় সংসদকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমাজের সকল স্তরের নাগরিক, বিভিন্ন দল, দল, সংগঠনের দাবি ও স্বার্থ সমন্বয় করতে হবে।
রওশান বলেন, রাজনৈতিক ভিন্নতা ও মতাদর্শের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু সংসদকে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য থাকতে পারে না। তাই জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে সংসদকে কার্যকর করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: রিজার্ভ সঙ্কটের কারণে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে: জিএম কাদের
সরকার গোঁজামিল দিয়ে দেশ চালাচ্ছে: জিএম কাদের
পাঁচ সিটি নির্বাচনে সরকারের ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি: ফখরুল
চলতি বছরের জুনের মধ্যে পাঁচটি সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাকে সরকারের ফাঁদ আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দল এই চক্রান্তে প্রলুব্ধ হবে না।
তিনি বলেন, ‘এবার জনগণ ও বিএনপি সরকারের কোনো ফাঁদে পা দেবে না...আমরা তাদের ফাঁদ উল্টে দেব।’
সোমবার রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় এই বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সংসদ নির্বাচন হতে পারে না এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, এই স্পষ্ট অবস্থান নিয়ে তাদের দল আন্দোলনে রয়েছে।
ফখরুল আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না।
নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি এক বৈঠকে বরিশাল, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট- এই পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগামী ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নাটোর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনকে দেখতে ডেল্টা কেয়ার হাসপাতালে যান ফখরুল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ‘এখন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে দেখবেন আওয়ামী লীগ ত্রিশটি আসনও পাবে না। এটাই বাস্তবতা।’
এই বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস, মিথ্যা মামলা এবং রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি নস্যাৎ করে ক্ষমতায় বসতে চায়।
বর্তমান সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত দেশে কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ফখরুল বলেন, নাটোরে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা আবুল হোসেনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে। ‘আসলে পুলিশ তাকে উদ্ধার না করলে তাকে হত্যা করা হতো। তারা (আ.লীগ ক্যাডার) তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।’
তিনি বলেন, নাটোরে বারবার এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। তারা শুধু নাটোরে নয়, খুলনা, হবিগঞ্জ ও যশোরসহ সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডাররা’ পুলিশের সহায়তায় শনিবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের দলের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মূলত একটি সন্ত্রাসী দল এবং বর্তমান সরকার পুরোপুরি সন্ত্রাসী শাসনে পরিণত হয়েছে। দেশের জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে এর যোগ্য জবাব দেবে।’
একাদশ জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশন স্থগিত
একাদশ জাতীয় সংসদের বিশেষ ও ২২তম অধিবেশন পাঁচ কার্যদিবসের পর সোমবার স্থগিত করা হয়েছে।
স্থগিতকরণের আগে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এদিকে গোপালগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তিতে সংসদে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা: প্রধানমন্ত্রী
এছাড়া ১০ ঘন্টা ২৩ মিনিটের আলোচনায় অংশ নেন প্রায় ৬৩ জন সংসদ সদস্য।
এর আগে সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সংসদে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
দুপুর ২টা ২৩ মিনিটে রাষ্ট্রপতির স্থগিতাদেশ পাঠ করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর জন্য মোট ২০টি প্রশ্ন এসেছে এবং অধিবেশনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪৪৯টি প্রশ্ন আসে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সংসদ অধিবেশন হয়।
আরও পড়ুন: প্রথম আলো আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র ও জনগণের শত্রু: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
সংবিধান পর্যালোচনার জন্য সংসদীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব ইনুর
প্রথম আলো আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র ও জনগণের শত্রু: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম আলো পত্রিকার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বাংলা ভাষার এই দৈনিকটি তার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের শত্রু।
তিনি সংসদে বলেন, ‘পত্রিকাটির নাম প্রথম আলো (প্রথম আলো), কিন্তু বাস করে অন্ধকারে। প্রথম আলো আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র ও দেশের জনগণের শত্রু।’
সোমবার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর (সুবর্ণজয়ন্তী) উপলক্ষ্যে সংসদে তার দেওয়া প্রস্তাবের আলোচনায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভাত, মাছ-মাংসের স্বাধীনতা চাই’-পত্রিকাটি একটি ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে ১০ টাকা দিয়ে এমন মিথ্যা কথা বলালো। আর এই মন্তব্যটি রেকর্ড করে প্রচার করা হলো।
তিনি বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই যে তারা কখনই চায় না যে এই দেশে স্থিতিশীলতা থাকুক।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৭ সালে যখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় তখন পত্রিকাটি খুবই আনন্দিত হয় এবং সেই সময় দুটি সংবাদপত্র আন্তরিকভাবে কাজ করে।
নাম উল্লেখ না করে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন যে দেশটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, কিন্তু তারা দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের পক্ষে ওকালতি করে আসছে।
ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম অনেক বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে: তথ্যমন্ত্রী
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম অনেক বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনাকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই সিটি করপোরেশনসহ সব নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশ নিক। তবে নির্বাচনে যাবে কিনা; সেই সিদ্ধান্ত যে কোনো রাজনৈতিক দল নিতে পারে। এটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে সবসময়ই নির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমানতা থাকে। তারা কোনো কোনো সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, আবার কোনো নির্বাচনে করে না। এ দোদুল্যমানতা বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্দোলনের অংশ হলেও বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারত। তাদের জন্য সেটি ভালো হতো। তারা নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারত। নির্বাচন কী রকম হচ্ছে,সেটিও তারা পরোখ করতে পারত।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন বর্জন করলে বিএনপি গুরুত্বহীন দলে পরিণত হবে: তথ্যমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়,সেটি তাদেরই জন্য মঙ্গলজনক। এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও অবাধ হবে, নির্বাচন কমিশন তা নিশ্চিত করেছে। সরকার সবসময় নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করেছে। কাজেই এ নির্বাচনে অংশ নেওয়াই বিএনপির জন্য মঙ্গলজনক। নির্বাচন থেকে পালিয়ে বেড়ানো বিএনপির জন্য শুভ হয়নি,হবেও না। বিএনপির এই নির্বাচন বিমুখতা আসলে গণতন্ত্র বিমুখতারই শামিল।’ভোক্তা অধিকারের তৎপরতার জন্য এবারের রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়েনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতি রমজানেই আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেয়। এবারেই সেই তৎপরতা ছিল। কিন্তু সরকারের নানামুখী তৎপরতার কারণে কোনো কোনো পণ্যমূল্য কমেছে। মুরগির দামে যেমন অনেক বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল, সেটি কমেছে। এতে প্রমাণিত হয়, যদি আমরা ভোক্তা অধিকারকে আরও শক্তিশালী করতে পারি,তাদের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করতে পারি,তাহলে পণ্যমূল্য যখন-তখন অহেতুক বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। ভোক্তা অধিকারই না,এফবিসিসিআইও সোচ্চার হয়েছে।
তিনি জানান, ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় পণ্যের সংকট আছে। কোনো কোনো বিপণিবিতানে এক লিটারের বেশি ভোজ্যতেল কিনতে দেয়া হয়নি। ছয়টি কিংবা ১২টির বেশি ডিম কিনতে দেয়া হয়নি। যে কারণে দেখা গেছে, কেনার জন্য একই পরিবারের পাঁচজন মার্কেটে গেছেন। সেখানে পণ্যের সংকট আছে। যেটি আমাদের দেশে নেই। অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে যদি পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট হয়, তাহলে সেটি সরকারের জন্য সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, ভারতে তথ্য অধিদপ্তরকে ফ্যাক্টচেকের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কোন সংবাদটি সঠিক,কোনটি সঠিক না, সেটি তারা পরীক্ষা করবে, এ ধরনের সংবাদ যদি কেউ পোস্ট করে,তাহলে সেই দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে নিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যখন বলা হবে, এই সংবাদটি সঠিক না, সেটি তাদেরকে নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিতে হবে। সরিয়ে না নিলে সেই ক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বাংলাদেশে এমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এমন কোনো ব্যবস্থা আমরা নিইনি। তার মানেটা এই যে আমাদের দেশের গণমাধ্যম ভারতের চেয়ে অনেকে বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে রিপোর্ট প্রকাশ করার কারণে বিবিসির কার্যালয়ে কয়েকদিন ধরে তল্লাশি করা হয়েছে ট্যাক্স অফিসের মাধ্যমে। আমাদের দেশে কোনো পত্রিকা অফিসে তো ট্যাক্স অফিস যায়নি।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রশ্নই আসে না: তথ্যমন্ত্রী
অপরাধ-অপপ্রচারের সঙ্গে সাংবাদিকতাকে না মেলানোর আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর