রাজনীতি
আওয়ামী লীগের সর্বব্যাপী দুর্নীতি অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে বর্তমান সরকারের সর্বব্যাপী দুর্নীতির কারণে দেশের সম্পদের অবক্ষয় হয়েছে। কারণ, আওয়ামী লীগের মূল নীতি দুর্নীতিতে লিপ্ত হওয়া এবং বিদেশে অর্থ পাচার করা।
তিনি বলেন, ‘ভারতে একটি স্লোগান ছিল---চোররা প্রতিটি অলি-গলিতে আছে এবং এই নেতা (আমি কারও নাম উল্লেখ করতে চাই না) একজন চোর। এখন আমাদের স্লোগান ভোট চোর আওয়ামী লীগের নীতি দুর্নীতি ও অর্থপাচারে লিপ্ত।’
শনিবার নয়া পল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন দল শুধু ভোট চোর নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিরও চোর। আওয়ামী লীগের দুর্নীতির কারণে পুরো দেশ ও অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজদের হটিয়ে প্রকৃত অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমরা শিগগিরই জয়ী হব: ফখরুল
ফখরুল বলেন, তারা অন্যান্য দল ও দেশের জনগণের সঙ্গে মিলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবে এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করতে পারবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরকার গঠিত হবে।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের চলমান আন্দোলন জোরদার করতে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচন ছাড়াই বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় এসেছে, তাকে আমাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।’
গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাদের দলের ১৭ নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিহত দলের নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সংগ্রামকে সফল করতে বিএনপির কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হলে উ. কোরিয়ার মতো স্বৈরাচারী হতে পারে বাংলাদেশ: ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বব্যাপী দুর্নীতি, বিদ্যুত, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা 'মিথ্যা' মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য সরকারের ওপর চাপ বৃদ্ধি করাও এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল। বিরোধী দগুলো সরকারের সর্বব্যাপী দুর্নীতির প্রতিবাদেও এই কর্মসূচি পালন করছে।
যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসাবে সারাদেশের অন্য সব মহানগরে সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট, ১২ দলীয় জোট, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও এলডিপি পৃথক পৃথক সমাবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নির্বাচন বলতে কিছু নাই: নজরুল ইসলাম খান
ওয়ার্কার্স পার্টি নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে: মেনন
ওয়ার্কার্স পার্টি নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, আমরা এবার নির্বাচন করবো। আমরা আমাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবো।
বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে শনিবার বিকালে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবিতে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মেনন বলেন, ‘আমি আপনাদের বরিশালের সন্তান। দুই দুইবার আমি এই বরিশাল থেকে নির্বাচিত হয়েছি। ৭৩’ সালেও আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম, কিন্তু আমার বিজয়কে ছিনতাই করা হয়েছিলো। আমি তারপরও ঐক্য করতে পিছিয়ে থাকিনি। পরের তিনবার আমি ঢাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলে দিতে চাই, ওই নির্বাচন নিয়ে বিএনপি এমন খেলেছে, অনুগ্রহ করে আপনারাও (আ. লীগ) খেলবেন না। সব খেলার শেষ আছে।’
আরও পড়ুন: ১৪ দলের চিঠির জবাব দেয়া হবে: মেনন
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা (আ.লীগ) বলেন খেলা হবে’ কিসের খেলা? খেলা একটাই জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দেবে। সেই ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবে এবং যারা নির্বাচিত হবেন তারাই ক্ষমতায় যাবেন।’
মেনন বলেন, হেফাজত, জামায়াত ও ইসলামী শাসনতন্ত্রের সঙ্গে কোলাকুলি করবেন? কেউ আপনাকে একটা ভোট দেবে না। এমনকি যে সংখ্যালঘুদের ভোটকে আপনারা আপনাদের ভোট ব্যাংক মনে করেন, সেই সংখ্যালঘুরা আজকে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা ভোট কোথায় দিবে। সুতরাং এই সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি আমার আহ্বান ১৪ দলের ঐক্যকে আরও শক্ত করুন।
তিনি আরও বলেন, আর যদি তা না করেন তাহলে মনে রাখবেন ১৯৯৬, ২০০১ ও ১৯৯১ সালের কথা। আমি অংক করে দেখিয়ে দেবো। ৭৩ সাল বাদে একক কোনও নির্বাচনে আপনারা (আ.লীগ) বিজয় লাভ করেননি। নির্বাচনে বিজয় লাভ করতে গেলে বামপন্থীদের আপনাদের সঙ্গে লাগবে, পাশে লাগবে। যদি ভুল করেন তাহলে সেই ভুলের খেসারত আপনারা না, জাতি দেবে। তখন এই জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।
সমাবেশে আরও বক্তৃতা দেন পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, টিএম শাহজাহান।
জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল হক নীলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতানের সঞ্চালনায় সমাবেশ হয়।
এর আগে বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে লাল পতাকা মিছিল নিয়ে সমবাশেস্থলে জড়ো হয়।
আরও পড়ুন: ৯ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে: মেনন
মন্ত্রী হলে কি মেনন এমন কথা বলতেন: কাদের
বাংলাদেশে নির্বাচন বলতে কিছু নাই: নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, গণতন্ত্র চলে নির্বাচনের হাত ধরে। বাংলাদেশে নির্বাচন বলতে কিছু নাই।
শনিবার বিকাল ৫টার দিকে কুমিল্লার কান্দিরপাড় ভিক্টোরিয়া কলেজ রোড বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করতে পারবে না সরকার। এছাড়া সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে কারণ তারা ক্ষমতার পরিবর্তন চায়।
আরও পড়ুন: সরকার বিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হবে: নজরুল ইসলাম খান
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যারা লুটপাট করে হারাম উপার্জন করে, আজ বাংলাদেশ তাদের বাড়ি হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন ‘রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে লুটপাট। প্রকাশ্যে লুট করা হচ্ছে দেশের সম্পদ, পাচার করা হচ্ছে বিদেশ। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সরকার লুট করে ফেলেছে।’
পরে এক বিক্ষোভ মিছিল নগরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এছাড়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে, সরকারের পদত্যাগসহ ১০দফা দাবিতে কুমিল্লায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাদুল বারী আবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক ও কুমিল্লা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুল হক সাঈদ, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমির, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী জসিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুসহ মহানগর ও জেলার নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলন: বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি গঠন
১০ দফা বাস্তবায়নই বিএনপির নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: মোশাররফ
সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি এখন মানুষের কাছে কৌতুক: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি-ধামকি এখন মানুষের কাছে কৌতুক।
তিনি বলেন, এগুলাতে হনুমানও এখন ভেঙচি কাটে।
শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া মৌসুমী আবাসিকের আরসিসি ড্রেনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা করেন।
আরও পড়ুন: ভাষা ও সংস্কৃতি বিকৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন: তথ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকেই বিএনপি সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বহুবার সরকারকে টেনে নামাতে গিয়ে বিএনপিই জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। তারাই দড়ি ছিড়ে পড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তারাই ঘি ঢেলেছিল। বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে বিএনপি ও বিএনপিনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। বিডিআর বিদ্রোহ যেদিন হয়, সেদিন প্রত্যূষে বেগম জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে বহুবার কথা বলেছিলেন। সেই রেকর্ড আমাদের কাছে আছে।'
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'সরকার ক্ষমতায় থাকবে কি থাকবে না, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে কি করবে না, সেই সময় দেয়া না দেয়ার মালিক হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। বাংলাদেশের জনগণ দেশ পরিচালনার জন্য গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। সেজন্যই তিনি দেশ পরিচালনা করছেন।'
সাংবাদিকরা এ সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জালিয়াতি ও ডাকাতি করেছে বলে মির্জা ফখরুলের অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করে।
জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে যত কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে সবকিছুই বিএনপি ঘটিয়েছে। তারা ইতোপূর্বে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিল। এবার ঢাকা বারের নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে জয়লাভের কোনো আশা নেই বুঝেই তারা প্রথমে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়, এরপর নির্বাচনী কার্যক্রমকে ভণ্ডুল করার জন্য ব্যালট ছিনতাই ও নির্বাচনী প্যান্ডেলসহ সব স্থাপনা ভাঙচুর করে।'
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, '২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে যেভাবে তারা নির্বাচনী কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল, ঠিক সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেছে বিএনপি-এ জন্য তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।’
এর আগে আরসিসি ড্রেইনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধনকালে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরাসনের জন্য এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বরাদ্দ দিয়েছেন। এটি ঢাকা শহরের জন্যও দেয়া হয়নি। এই প্রকল্পের কাজ চলছে, আশা করি আগামী মৌসুমে আগের মত জলাবদ্ধতা আর হবে না।
শহরের পরিচ্ছন্নতা ও নর্দমা সচল রাখা নিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরের পৌণে এক কোটি মানুষ মিলে শহর ময়লা করলে সিটি করপোরেশনের চার হাজার কর্মীর পক্ষেও তা পরিষ্কার রাখা সম্ভব না। পলিথিন ও বাসাবাড়ির ময়লা না ফেললে ড্রেইন সচল থাকবে।
১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী।
আরও পড়ুন: তথ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ চায় আ.লীগ: পর্যবেক্ষকদেরকে তথ্যমন্ত্রী
শনিবার সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি, এর সহযোগী সংগঠন এবং সমমনা দলগুলো যারা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারকে অগ্রাধিকার দেয় তারা শনিবার দেশের সব বিভাগের শহরে সমাবেশ করবে।
বিদ্যুত, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা 'মিথ্যা' মামলা প্রত্যাহার ও তার নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করাই মূলত এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
এটি হবে যুগপৎ আন্দোলনের ১০তম কর্মসূচি যা ডিসেম্বরে একসঙ্গে শুরু করে। বিএনপির সর্বশেষ বিভাগীয় পর্যায়ের দশটি স্থানে অত্যন্ত সফল সমাবেশ কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটেছিল। ১১ মার্চ ঢাকাসহ দেশের সব জেলা শহর ও ১৩টি সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে পালিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে আগামীকালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখা। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ‘তথাকথিত’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে: ফখরুল
এছাড়া বিএনপির অন্য সব মহানগর ইউনিটও একই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করবে স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের সিনিয়র নেতারা।
বিএনপি ছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট, ১২ দলীয় জোট, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও এলডিপিও বেলা ১১-১২টা ও ৩টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক সমাবেশ করবে। .
গত বছরের ডিসেম্বরে বিএনপি ও সমমনা দল ও জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিন্ন লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে।
এ পর্যন্ত তারা ১০ দফা দাবি আদায়ে দেশের সব ইউনিয়ন, জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমরা শিগগিরই জয়ী হব: ফখরুল
সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমরা শিগগিরই জয়ী হব: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের ভোট ও অন্যান্য অধিকার পুনরুদ্ধারের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা বিজয়ী হব।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় না আসার আন্দোলন শুরু করেছি কারণ আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে সত্যিকারের আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা। যাতে জনগণ তাদের সমস্ত অধিকার ফিরে পায়। আমরা ন্যায়বিচার, সমতা নিশ্চিত করতে এবং অসমতা দূর করার আন্দোলনও শুরু করেছি।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা আরও বলেন, তাদের বর্তমান আন্দোলনে তাদের ভালো অগ্রগতি হয়েছে। ‘সাধারণ মানুষের চোখে আমরা যে ভাষা দেখি এবং তাদের দৃঢ় ইচ্ছা ও সংকল্প আমাদের প্রতিদিন এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও সাহস যোগায়। আমি বিশ্বাস করি খুব শিগগিরই আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে এই সংগ্রামে জয়ী হব।’
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং চলমান আন্দোলনে নিহত বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের স্মরণে ‘অর্পণ বাংলাদেশ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি রমজানকে সামনে রেখে নিহত বিরোধী নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের উপহারও দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, জোরপূর্বক গুম ও হত্যার শিকার পরিবারের সদস্যদের জন্য তিনি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেন। ‘আমি গত ১৫ বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছি। ‘আমি যখন এই ধরনের প্রোগ্রামে আসি, তখন আমি দুঃখবোধ করি এবং তারা (ভুক্তভোগীদের পরিবার)ও একই রকম অনুভব করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের জন্য তেমন কিছু করতে পারিনি।’
নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আপনারা স্বামী, বাবা, ছেলে ও ভাই হারিয়েছেন। মানব সভ্যতার ইতিহাস বলে যে এরূপ সর্বোত্তম আত্মত্যাগ কখনই বৃথা যাবে না। তাদের রক্ত ও তাদের মায়ের চোখের পানি কখনো বৃথা যাবে না।’
আরও পড়ুন: বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হলে উ. কোরিয়ার মতো স্বৈরাচারী হতে পারে বাংলাদেশ: ফখরুল
ফখরুল বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণের অধিকার হরণ, গণতন্ত্র ধ্বংস এবং নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় তারা দেশকে স্বাধীন করেছে। আমরাও একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য লড়াই করেছি। ‘আমরা সেই যুদ্ধে জিতেছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা আবার সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করছি এবং আমাদের জীবন দিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা কখনও এমন বাংলাদেশ কল্পনা করেনি, যেখানে মানবিক মর্যাদা, জীবনের নিরাপত্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভোটাধিকার ও ন্যায়বিচার থাকবে না।
ফখরুল বলেন, হামলার শিকার আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নিয়ে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন। ‘তিনি (প্রধান বিচারপতি) তাদের বলেছিলেন যে তার কিছু করার বিকল্প থাকলে তিনি করবেন। তাহলে, আমরা কোথায় যাব, কার কাছে যাব এবং দেশের মানুষ কোথায় যাবে?
আরও পড়ুন: আ.লীগ ‘তথাকথিত’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে: ফখরুল
রিজার্ভ সঙ্কটের কারণে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে: জিএম কাদের
রিজার্ভ সঙ্কটের কারণে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, রিজার্ভের অর্থ আমরা বিদেশিদের ধার দিয়েছি, পায়রা বন্দরে খরচ করেছি, বিভিন্ন ভাবে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আমরা খরচ করে ফেলেছি। ফলে যখন দরকার তখন রিজার্ভ নেই।
তিনি বলেন, নিত্য খাদ্যপণ্য ও ওষুধ আমদানি করতে গিয়ে সরকার এলসি খুলতে পারছে না। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় সমস্ত জিনিসের দাম বাড়ছে। এখন রিজার্ভ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে দেশ দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি চলে গেছে।
কাদের বলেন, যদিও সরকার বার বার এটিকে অস্বীকার করছে। তবে এমুহুর্তে আমি মনে করি সরকারের কাছে যে রিজার্ভ রয়েছে তার চেয়ে বেশি দেনা রয়েছে। দেনা পরিশোধ করলে রিজার্ভে কোনও টাকা থাকবে না। এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে কয়েকটি খাতে লুণ্ঠনের কারণে। ব্যাংকিং ও বিদ্যুৎ খাতে অবাধ লুণ্ঠনের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
কাদের রমজান মাসে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে রেশনিং কার্ড দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দ্রব্য মূল্য অনেক বেড়ে গেছে, আয় রোজগার কমে গেছে। তাই রমজান মাসে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তদের রেশন কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকার গোঁজামিল দিয়ে দেশ চালাচ্ছে: জিএম কাদের
হজের সরকার নির্ধারিত খরচের সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সামনে হজের মওসুম। আমাদের দেশ থেকে এবার এক লাখ ২৭ হাজার মানুষ হজে যাওয়ার কথা। কিন্তু বার বার সময় বাড়ানোর পরও মাত্র এক লাখ লোক হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর কারণ আমাদের দেশের মানুষ হজে যে দাম ধরা হয়েছে সেই দাম দিয়ে হজে যেতে পারছেন না। একটি মানুষ সারাজীবন কষ্টকরে হজে যাবার জন্য। কিন্তু প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে হজ করা এখন অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশে যেটা অর্ধেক বা অর্ধেকের কম।
জাতীয় পার্টি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু ক্ষমতা হস্তান্তর নয়, রাজনীতির পরিবর্তন চায়। ক্ষমতা শুধু মানুষের মুখের পরিবর্তন নয়, বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগ বা আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপি, একই ধরনের লুটপাট, একই ধরনের দলীয়করণ, টেন্ডারবাজি ও মানুষের ওপর অত্যাচার। মানুষ এসব থেকে এখন মুক্তি চায়। জাতীয় পার্টি চায় দেশের মানুষ সুশাসন পাক, নাগরিক হিসেবে সবাই সমান সুযোগ পাক। প্রশাসন দলীয়মুক্ত হয়ে সরকরি কাজ করবে।
জাতীয় পার্টির গাজীপুর মহানগর সভাপতি এম এম নিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান আবু হোসেন বাবলা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মচারীরা ক্ষমতাসীন দলের সেবা করছে, জনগণের নয়: জিএম কাদের
যে যত বেশি লুণ্ঠন করতে পারে, সে তত বেশি সম্মানিত: জিএম কাদের
আ.লীগ ‘তথাকথিত’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে: ফখরুল
পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
দলটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পবিত্রতার স্বার্থে ‘তথাকথিত’ হিংসাত্মক নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচনের দাবি করেছে।
শুক্রবার এসসিবিএ নির্বাচনের ফল ঘোষণার একদিন পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে এমন একটি দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিজয়ী হতে পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করতে হচ্ছে। এটা খুবই লজ্জার বিষয়।’
আরও পড়ুন: বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হলে উ. কোরিয়ার মতো স্বৈরাচারী হতে পারে বাংলাদেশ: ফখরুল
ফখরুল বলেন, তাদের দল চায় প্রধান বিচারপতি এগিয়ে এসে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
আইনগতভাবে নির্বাচন না হলেও ভোটের নামে নাটক সাজিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের ‘অবৈধ’ ও ‘একতরফাভাবে’ নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমি অবিলম্বে তথাকথিত নির্বাচন বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের প্যানেল বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ বুধবার ও বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের সবকটিতেই জয়ী হয়েছে।
হট্টগোল, সহিংসতা, সংঘর্ষ, পুলিশের তৎপরতা এবং ব্যালট চুরি ও ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগের মধ্যে বুধবার ও বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ হয়।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি
বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হলে উ. কোরিয়ার মতো স্বৈরাচারী হতে পারে বাংলাদেশ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে, তাদের ১০ দফা আন্দোলন ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়ার মতো কঠোর ‘কর্তৃত্ববাদী শাসকের’ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে।
এক আলোচনা সভায় তিনি আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার নিজস্ব বিধি-বিধান, সংবিধান প্রবর্তন করে রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অস্তিত্ব দেখতে চাই এবং এখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চাই কিনা সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের। অন্যথায়, এটি উত্তর কোরিয়ার মতো একটি সম্পূর্ণ কর্তৃত্ববাদী শাসকের দেশে পরিণত হবে।’
তিনি বলেন, চলমান ১০ দফা আন্দোলন শুধু বিএনপি বা কোনো জোটের আন্দোলন নয়। ‘এই আন্দোলন দেশের ১৮ কোটি মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম, তাই একে সফল করতে রাজপথে নামি।’
ফখরুল বলেন, গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে ইতোমধ্যে তাদের দলের ১৭ নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আরও বেশি মানুষকে সম্পৃক্ত করি।’
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে ২৭ দফা প্রস্তাবের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে ১২-দলীয় জোট।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (এসসিবিএ) বার্ষিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি গুরুতর কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে এবং সরকার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের আদালতের কর্মকর্তা বলা হয়। যারা ওই আদালতে কাজ করেন বা বিচার ব্যবস্থায় সহযোগিতা করেন তাদের বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠান একটি ঐতিহ্য এবং সবাই একে সম্মান করে। কিন্তু ওই
নির্বাচনে গতকাল (বুধবার) যা ঘটেছে তা জাতি ও দেশের বিচার ব্যবস্থার জন্য সবচেয়ে কলঙ্কজনক ও কলঙ্কজনক ঘটনা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসসিবিএ নির্বাচন নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনায় প্রকাশ হয়েছে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই। দেশে কোনো সরকার আছে কিনা আমারও সন্দেহ আছে।
আরও পড়ুন:যমুনা নদী সংকীর্ণকরণ প্রকল্প বাতিলের দাবি বিএনপির
বিএনপি নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আইনজীবীদের পরিচালনায় সুষ্ঠু ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এসসিবিএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘কিন্তু তারা (আ.লীগ) গতকাল (বুধবার) এই ব্যবস্থা ভেঙ্গেছে। তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাচনী ব্যবস্থাও ভেঙ্গেছে। এর মানে আওয়ামী লীগের এখন একমাত্র লক্ষ্য হলো রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভগুলোকে পুরোপুরি ভেঙ্গে ফেলা... তারা ইতোমধ্যেই এটা ভেঙ্গেছে। তারা নিজেদের নিয়ম-কানুন, সংবিধান প্রবর্তন করেছে।’
যমুনা নদীর প্রস্থ ১৫ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার করার পরিকল্পনার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘যমুনা নদী আমাদের দেশে হাজার বছর ধরে প্রবাহিত। নদীগুলো বন্যা ও জলাবদ্ধতার মতো সমস্যা সৃষ্টি করে…কিন্তু এই নদীকে সংকুচিত করার ধারণা এবং এ বিষয়ে ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পকে আপনি কীভাবে সমর্থন করবেন?
সরকার সম্পূর্ণ নির্লজ্জ হয়ে এ ধরনের প্রকল্প নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, কিছু বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী আওয়ামী লীগ ও তার সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান শাসনব্যবস্থার সমর্থনে কথা বলছেন। ‘তারা অত্যন্ত চাটুকারিতায় লিপ্ত হয়। আমরা কী ধরনের দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি (১৯৭১ সালে) তা ভেবে আমার খারাপ লাগে। এখন আমরা চিৎকার করছি যে আমরা এমন দেশ চাইনি।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাম্য, জনগণের মর্যাদা এবং তাদের ভোটের অধিকার এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ‘অস্বাভাবিক চোর’: ফখরুল
বিএনপি নেতা আরও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ খুবই কঠিন সময় পার করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শরীরের রসায়নে সন্ত্রাস ও চুরি দুটি জিনিস আছে। ‘তারা জোর করে সবকিছু করতে চায় এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে চুরি করতে চায়।’
ফখরুল অভিযোগ করেন, তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ গোয়েবলসের মতো বলেছেন, বিএনপি স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে এবং অগ্নিসংযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ‘আপনিই (আ.লীগ) দেশে অগ্নিসংযোগের সূচনা করেছেন... আপনিই জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে ১৭৩ দিন হরতাল চালিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনেছিলেন।’
তিনি স্মরণ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তনের দাবিতে আওয়ামী লীগ হরতালে রাজধানীতে বারুদ দিয়ে বাসে আগুন দিয়ে ১১ জনকে হত্যা করেছিল। ‘মানুষকে লগি ও বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। তারা (আ.লীগ) এখন বলছে এটা (তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা) কোনো সভ্য দেশে নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জরুরি। কারণ, এখন যারা ক্ষমতায় আছে তারা সভ্য নয়। তারা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।’
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফখরুল দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সকাল ৭টায় সাভারের জাতীয় সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
পরে তারা দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেখানে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আয়োজনে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জামানত হারাবে: ফখরুল
এছাড়া সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
দিবসটি পালনে জাতীয় পত্রিকায় ক্রোরপত্র প্রকাশের ব্যবস্থাও নেবে বিএনপি।
আগামী ২৫ মার্চ মহানগর নাট্যমঞ্চে বা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভা করবে দলটি।
আগামী ২৭ মার্চ, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা শাখা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ’ করবে।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী সংকীর্ণকরণ প্রকল্প বাতিলের দাবি বিএনপির
সারাদেশে বিএনপির সকল জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা শাখা এবং দলের সকল সহযোগী সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকায় এবার স্বাধীনতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ‘স্বাধীনতা দিবস এখন আরও প্রাসঙ্গিক এবং এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’
তিনি বলেন, তাদের দল ১০ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার নতুন শপথ নেবে।
স্বাধীনতা দিবসের আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ অন্য রাজনৈতিক রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ‘অস্বাভাবিক চোর’: ফখরুল