রাজনীতি
আ.লীগ জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে আর বিএনপি বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার দল জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে এবং বিএনপি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমার সরকারের লক্ষ্য গণতন্ত্র রক্ষা ও জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন করা।
রবিবার রাজধানীর মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষা ও জনগণের ভাগ্য উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য।’
মিরপুর, মিরপুর ডিওএইচএস, পল্লবী, কালশী, মহাখালী, বনানী, উত্তরা ও ঢাকা বিমানবন্দরে যাতায়াতের সুবিধার্থে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বালুর মাঠ সংলগ্ন কালশী মোড়ে এক অনুষ্ঠান থেকে ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক সংগ্রামের পর আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজনীতির টোকাইদের নিয়ে জোট করেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা জয়ী হয়েছি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আমরা আবারও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং কেউ যদি নির্বাচনে কারচুপি করে তবে তারা তা কখনই মেনে নেবে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা সবার মনে আছে। তখন বিএনপি কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল এবং খালেদা জিয়া নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন। জনগণ তা মেনে নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘একই বছরের ৩০ মার্চ গণআন্দোলনের কারণে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের পর বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল।
তিনি বলেন, বিএনপি এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং ২০০৬ সালের নির্বাচন ঘোষণা করেছে, যা ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে হওয়ার কথা ছিল। অনেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। যখন জনগণ বুঝতে পেরেছিল যে তাদের ভোট কারচুপি করা হবে, তখন তারা পুনরায় আন্দোলন শুরু করে এবং খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
আরও পড়ুন: উত্তরসূরি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শুভেচ্ছা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯টি আসনে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে উপ-নির্বাচনে তারা আরেকটি আসনে জয়লাভ করে। আমরা জনগণের ভোটের মাধ্যমে, তাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে এবং দেশের উন্নয়নের মাধ্যমে বারবার ক্ষমতায় এসেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে এবং আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় সরকার বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ ও 'স্মার্ট বাংলাদেশ'।
এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নির্বাচনে যেতে ভয় পায়, তাই পথ হারিয়ে তারা পদযাত্রা করছে: সেতুমন্ত্রী
একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের জন্য দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন ইউনিটের যৌথসভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মাতৃভাষার প্রতি বাঙালি জাতির সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার একযোগে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হবে। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: আ. লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা আব্বাস
কর্মসূচির অংশ হিসেবে মির্জা ফখরুল বলেন, দিবসটি উপলক্ষে সোমবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
ফখরুলের নেতৃত্বে একই দিন সকাল সোয়া ৬টায় নীলক্ষেতের বলাকা সিনেমা হলের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ করে জড়ো হবেন দলের নেতাকর্মীরা। পরে তারা প্রথমে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের কবরে ফাতেহা পাঠ করবেন এবং এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
এছাড়া সারাদেশে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিট যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করবে।
আরও পড়ুন: ২৫ ফেব্রুয়ারি সব জেলায় পদযাত্রা, আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বিএনপি
আ. লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা আব্বাস
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আওয়ামী লীগ যার নেতৃতে যখনই ক্ষতায় গেছে, তখনই দেশে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার বিকালে ময়মনসিংহে পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সব বাধা ডিঙিয়ে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে প্রস্তুত বিএনপি: মির্জা আব্বাস
সমাবেশ শেষে নগরীর টাউন হল মোড়ে পদযাত্রা বের করে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপি। তারা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নতুন বাজার দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে পদযাত্রা শেষ করে।
‘বিএনপির কোনো বন্ধু নাই’ আওয়ামী লীগের এমন বক্তব্যের জবানে তিনি বলেন, দেশের বাইরে আমাদের কোনো প্রভু নাই, আমাদের দেশের বাইরে যদি কোনো বন্ধু না থাকে তাহলে প্রয়োজনও নাই। দেশের মানুষই আমাদের বন্ধু। কারণ তারা বিএনপিকে পছন্দ করে।
এর আগে সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করে নেতাকর্মীরা। এছাড়া সকাল থেকেই বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে নতুন বাজার বিএনপি কার্যালয় এবং আশপাশে অবস্থান নেয় পুলিশ।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, আমারা যখনই সমাবেশের ডাক দেই তারা তখনই সারা দেশে শান্তি সমাবেশ করে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের মতো অশান্তি সৃষ্টিকারী দল আর একটিও নেই। আজ তারা শান্তি সমাবেশ করছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ ওয়ারেস আলী মামুন ও শরীফুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতারা।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল দুদকের
ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ বিএনপি নেতার জামিন নামঞ্জুর
রাজনীতির টোকাইদের নিয়ে জোট করেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনীতিতে যে সব দলের কোনো খবর নাই, নাম নাই, ঠিকানা নাই, সভাপতি আছে সম্পাদক নাই বা সম্পাদক আছে সভাপতি নাই, সেই সব রাজনীতির টোকাইদের নিয়ে জোট করেছে বিএনপি।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চত্বরে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি অস্থিরতা তৈরি করতে চায়: তথ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডান-বাম-অতিডান-অতিবাম-তালেবান সবাইকে নিয়ে জোট করে মাত্র ছয়টি আসন পাওয়া বিএনপি এবার তাদের সেই ২২ দলীয় জোট ভেঙে দিয়ে করল ১২ দলীয় জোট, তারপর নামসর্বস্ব রাজনীতির 'টোকাই'দের নিয়ে করেছে ৩৪ দলীয় জোট।
তিনি বলেন, গত ডিসেম্বরে বিএনপির ছয় সংসদ সদস্যের পদত্যাগের পর বিএনপি থেকে বেরিয়ে এসে ১ ফেব্রুয়ারির উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পুনরায় এমপি নির্বাচিত হয়েছেন উকিল আব্দুস সাত্তার। আপনারা যদি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেন, শতশত উকিল আব্দুস সাত্তার তৈরি হয়ে আছে।
তিনি বলেন, বিএনপি বিষধর সাপ, তারা এখন পদযাত্রার নামে দম নিচ্ছে, সুযোগ পেলেই ছোবল দেবে। এর নমুনাও পেয়েছি। সিরাজগঞ্জ ও অন্যান্য জেলায় তাদের পদযাত্রা থেকে আমাদের সমাবেশের ওপর হামলা, পিস্তল উঁচিয়ে সন্ত্রাসী তাণ্ডব আমরা দেখেছি।
ড. হাছান বলেন, খালেদা জিয়ার ১০ বছর, এরশাদ সাহেবের সাড়ে ৯ বছরে রংপুর 'বিভাগ' হয়নি, জননেত্রী শেখ হাসিনা রংপুরকে বিভাগ বানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন বানিয়েছেন, ঢাকা সংযোগ মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত হয়েছে, যেখানে দেশের অর্থনীতির লাইফ-লাইন ঢাকা-চট্রগ্রাম সড়ক এখনও চার লেন।
রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ডা. মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ও অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম, রংপুর ২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শাহাদত হোসেন বকুলসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: উৎসবে দেশেও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর সংস্কৃতি চালু করুন: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি রাজনীতি করে খালেদা ও তারেকের জন্য, জনগণের জন্য নয়: তথ্যমন্ত্রী
২৫ ফেব্রুয়ারি সব জেলায় পদযাত্রা, আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বিএনপি
দেশের সকল মহানগরী, জেলা শহর ও ইউনিয়নে তাদের সর্বশেষ সমন্বিত কর্মসূচির পর, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি (আগামী শনিবার) ৬৪টি জেলায় তাদের ১০ দফা দাবিতে মিছিল করবে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাবে দলটি।
১১টি মহানগরে আজকের পদযাত্রা করার পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
আরও পড়ুন: পণ্যের বাজার, সরবরাহ চেইন নিয়ন্ত্রণ করে টাকা লুটপাট করছে আ.লীগ সিন্ডিকেট: বিএনপি
বিদ্যুত-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং কোনো শর্ত ছাড়াই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং দলের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ময়মনসিংহে পদযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন, একই কমিটির অন্যরা নারায়ণগঞ্জে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিলেটে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান, রাজশাহীতে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, খুলনায় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কুমিল্লায় মোহাম্মদ শাহজাহান, গাজীপুরে এজেডএম জাহিদ হোসেন, ফরিদপুরে শামসুজ্জামান দুদু এবং রংপুরে যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এছাড়া বিএনপির পুরনো ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসা ১২ দলীয় জোটও রাজধানীতে ফকিরাপুল পানির ট্যাঙ্কের কাছে মিছিল করেছে এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুরূপ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো সরকার পতনের জন্য যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে। অন্তত আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্ব-গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের বিধানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে দলগুলো।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলা ও বাধার অভিযোগের মধ্যেও ১১ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের সব ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে দলটি।
বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ইউনিট শুক্রবার পৃথক মিছিল করেছে এবং আজ (শনিবার) আরও ১১টি বিভাগীয় শহরে একই কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে বরিশালে বিএনপির পদযাত্রা
মতিঝিল, উত্তরায় বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর শাখার মিছিল
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে সব দলকে সহযোগিতা করতে হবে: হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন শুধু ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্ব নয়। তিনি বলেছেন, একটি অংশগ্রহণমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অবাধ নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগিতা করা বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।
শুক্রবার চট্টগ্রামের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো দল নির্বাচন বর্জন করে বা বাধা দেয়ার চেষ্টা করে, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বা অগ্রহণযোগ্য করার দায়িত্ব তাদের।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী সরকার নির্বাচিত হোক। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। আমরা ইইউ রাষ্ট্রদূতদের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি। এবং অন্যদেরও একই কথা বলা হচ্ছে। আমরাও চাই বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল দেশের আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।’
আরও পড়ুন: বিএনপি রাজনীতি করে খালেদা ও তারেকের জন্য, জনগণের জন্য নয়: তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচনের এক বছর আগে বিদেশি প্রতিনিধিদলের সফর বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে বেশি দর্শক আসা ভালো, তারা বাংলাদেশে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। যেহেতু বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনীতি, এটি স্বাভাবিক। এর ফলে আমাদের বাণিজ্য বহুমুখী হবে এবং আমরা আরও পণ্য বিক্রি করতে সক্ষম হব।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বের কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। “বিএনপি পাকিস্তানকে অনুসরণ করে, কিন্তু আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া অস্ট্রেলিয়া, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মতোই হবে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি গোপনে দূতাবাসে আসে, আর নিমন্ত্রণ পেয়ে বৈঠকে এসেছে আ.লীগ: কাদের
জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সংবিধান সংশোধন করতে হবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রমাণ করেছে যে বর্তমান সংবিধান সংশোধন করা দরকার, কারণ এটি দেশের সমস্যা সমাধানের জন্য অনুকূল নয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে হাস্যকর বলেও উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
‘প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে তিনি (তার মনোনয়ন) এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। আমরাও এ বিষয়ে কিছুই জানতাম না। এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রমাণ করে যে বিদ্যমান সংবিধান দেশের সমস্যার সমাধান করতে পারে না। তাই সংবিধান সংশোধন করতে হবে,’ বলেন বিএনপি নেতা।
বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ সিটি ইউনিটের পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে এক ভাষণে তিনি বলেন, তাদের দল রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এর আগে পেশ করা ২৭ দফা মেমোতে সংবিধান সংশোধনের কথা বলেছিল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে এবং একটি অংশগ্রহণমূলক বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে হবে - যার জন্য সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন।
শুক্রবার বিএনপির নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ দলের ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য মতিঝিল থেকে নয়াবাজার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
মির্জা ফখরুলের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে গোপীবাগে পদযাত্রা শুরু করেন।
বিদ্যুত-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ, বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন এবং কোনো শর্ত ছাড়াই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ বাড়াতেও এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল।
মৌন পদযাত্রার মধ্য দিয়ে ফখরুল বলেন, দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পাশাপাশি তারা নগরবাসীকে জেগে ওঠা ও বর্তমান সরকারের দুঃশাসন ও দমন-পীড়ন প্রতিরোধ করার বার্তা দেবেন।
আরও পড়ুন: পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে আ.লীগ: বিএনপি
‘সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তারা দেশ ও এর প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। গত বছরের মতো এবারও যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামিট ফর ডেমোক্রেসিতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। এটা দুঃখের বিষয়,’ বলেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মূলত একটি 'সন্ত্রাসী' দল যারা সর্বদা সহিংসতার আশ্রয় নিয়ে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চায়। ‘তারা ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে এবং মানুষকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। তারা আবারও আগামী নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি ও দেশের জনগণ আর নির্বাচনে যাবে না।
‘প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসা বিদেশিদের উদ্দেশে বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে খুব ভালো নির্বাচন হবে এবং সবাই স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে। এমন মন্তব্য শুনে ঘোড়ারাও হাসতে শুরু করে,’ বলেন ফখরুল।
তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, বিএনপি ও বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। বাংলাদেশের জনগণ কখনোই এমন কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না যেখানে তারা তাদের ভোট দিতে পারবে না।
আর সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানান ফখরুল। ‘আপনাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশন দ্বারা পরিচালিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ গ্রহণের পর সংসদ ভেঙে দিতে হবে। তা না হলে দেশের মানুষ আপনাকে রেহাই দেবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে অবৈধভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছে। ‘সরকারের নির্দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা (সরকার) এখন পুলিশকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা ও দমন-পীড়ন করছে।
আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে বিএনপির ১০ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনের উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, গত ১৩ মাসে পুলিশের হাতে ৭২ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, গত বছরের আগস্টে শুরু হওয়া চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশও অন্যায়ভাবে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেয় এবং ১০ বিএনপি নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: পণ্যের বাজার, সরবরাহ চেইন নিয়ন্ত্রণ করে টাকা লুটপাট করছে আ.লীগ সিন্ডিকেট: বিএনপি
বিএনপি নেতা আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ অনেক নেতাকর্মীকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের দমন-পীড়ন করেছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ক্রমশ গরীব হচ্ছে আর ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা দুর্নীতি ও লুটপাটে লিপ্ত হয়ে ধনী হচ্ছে। ‘তারা এমনভাবে লুণ্ঠন ও চুরিতে লিপ্ত হয়েছে যে এখন পণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলার জন্য ব্যাংকে টাকা নেই এবং ডলারও নেই। তারা চুরির সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।’
এর আগে বিএনপির ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা উত্তরার জসিমউদ্দিন রোড মোড় থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত মিছিল করেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ডক্টর আবদুল মঈন খান ও আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
ব্যানার, জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ফেস্টুন ও দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতিকৃতি নিয়ে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী পৃথক দুটি কর্মসূচিতে যোগ দেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপি ছাড়াও এলপিডি, গণফোরাম, পিপলস পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোটও বর্তমান সরকারকে হটিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার বিভিন্ন সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে।
শনিবার একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে বিএনপির অন্যান্য মহানগর ইউনিটগুলো।
এর আগে দলটির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে যথাক্রমে ২৮, ৩১, ৩০ ও ১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন।
আরও পড়ুন: মতিঝিল, উত্তরায় বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর শাখার মিছিল
মতিঝিল, উত্তরায় বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর শাখার মিছিল
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ দলের ১০ দফা দাবি আদায়ে পৃথক মৌন মিছিল করেছে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার রাজধানীর মতিঝিল থেকে নয়া বাজার ও উত্তরার জসীম উদ্দিন থেকে পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি।
আয়োজকরা জানান, বিদ্যুত-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ, বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন এবং দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যও এই পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছে।
দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে মতিঝিল থেকে নয়াবাজার পর্যন্ত পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ মহানগর।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান অংশ নেন।
ফখরুল বলেন, মৌন পদযাত্রার মাধ্যমে তারা নগরবাসীকে বর্তমান সরকারের দুঃশাসন ও দমনমূলক কর্মকাণ্ড এবং দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে জেগে ওঠার ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার বার্তা দেবে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তারা দেশ ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তাদের সামিট ফর ডেমোক্রেসিতে আমন্ত্রণ জানায়নি। এটা লজ্জার বিষয়।’
আরও পড়ুন: পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে আ.লীগ: বিএনপি
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মূলত একটি 'সন্ত্রাসী দল' এবং সব সময় শক্তির জোরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চায়। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি ও দেশের মানুষ আর নির্বাচনে যাবে না।
ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষ ক্রমশ দরিদ্র হচ্ছে আর ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা দুর্নীতি ও লুটপাট করে ধনী হচ্ছে।
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় বসেছে। ‘সরকারের নির্দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ‘তারা (সরকার) এখন পুলিশকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা ও দমন-পীড়ন করছে।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমান জাতীয় দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না হওয়ায় সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
এর আগে বেলা পৌনে তিনটার দিকে উত্তরা থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত মিছিল শুরু করেন ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা।
আবদুল মঈন খান ও আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
মিছিল বের করার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের কারণে জনগণ কঠিন সময় পার করায় জনগণের দাবি আদায়ে এবং জনদুর্ভোগের প্রতিবাদে তাদের দল বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নেমেছে।
তিনি বলেন, তাদের কর্মসূচি ব্যাপক জনসমর্থন পাচ্ছে, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ক্ষমতাসীন দল পাল্টা কর্মসূচি পালন করছে। রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে রোডমার্চের তারিখ পরিবর্তন করল বিএনপি
বিএনপি নেতা বলেন, জনগণ ও বিদেশিরা এখন বুঝতে পারছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। ‘এ কারণেই বিদেশি নেতা এবং রাষ্ট্রদূতরা সরকারকে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছেন।’
মোশাররফ দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো উসকানিতে সাড়া না দিয়ে অতীতের মতো শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
ব্যানার, জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ফেস্টুন ও দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি নিয়ে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী পৃথক দু’টি কর্মসূচিতে যোগ দেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপি ছাড়াও এলপিডি, গণফোরাম, পিপলস পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোটও বর্তমান সরকারকে হটিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার ভিন্ন ভিন্ন সময়ে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে।
শনিবার একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে বিএনপির অন্য সব মহানগর ইউনিট।
আরও পড়ুন: পণ্যের বাজার, সরবরাহ চেইন নিয়ন্ত্রণ করে টাকা লুটপাট করছে আ.লীগ সিন্ডিকেট: বিএনপি
পণ্যের বাজার, সরবরাহ চেইন নিয়ন্ত্রণ করে টাকা লুটপাট করছে আ.লীগ সিন্ডিকেট: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দল-সমর্থিত সিন্ডিকেট বাজার ও সাপ্লাই চেইনে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে অস্বাভাবিকভাবে আমদানি পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তেল গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং নরসিংদীতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল।
তিনি বলেন, ‘যারা প্রতিদিন বাজারে লুটপাট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের লোক। এখন শুধু যারা আওয়ামী লীগের কেবল তারাই পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারবেন।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই: মোশাররফ
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা আরও বলেন, এখন ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত আমদানিকারকদের এলসি খুলে পণ্য আমদানির জন্য ডলার দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ আমদানিকারকদের ডলার না দেয়ায় পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। তাই যারা এলসি খুলে পণ্য আমদানি করছেন তারা আমদানিকৃত পণ্য
বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছেন। যেহেতু সাপ্লাই চেইন ক্ষমতাসীন দলের লোকদের হাতে, তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে এবং আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী খসরু বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মূল কারণ আওয়ামী অর্থনীতির মডেল। ‘তারা (আ.লীগ) লুটপাটের জন্য সেই মডেল তৈরি করেছে, কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হচ্ছে... টিসিবির ট্রাকের পিছনের লাইন দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে, মানুষের আসল অবস্থা ফুটে উঠছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান অর্থনৈতিক মডেল অনুযায়ী সরকার ভ্যাট, ট্যাক্স, গ্যাস, বিদ্যুৎ, তেল, আমদানি পণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে টাকা বের করবে। ‘পরে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করবে।
আরও পড়ুন: পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে আ.লীগ: বিএনপি
বিএনপি নেতা আক্ষেপ করে বলেন, দেশের সম্পদ ও অর্থ আজ এক শতাংশেরও কম মানুষের হাতে জমা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবন ধ্বংস হচ্ছে। ‘এই সম্পদ শুধু বাংলাদেশেই জমা হচ্ছে না, কারণ তারা (আ.লীগ নেতা) বিদেশে টাকা পাচার করে কানাডা, দুবাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া ও তুরস্কে সম্পদ তৈরি করছে। ‘আওয়ামী লীগের লোকেরা সারা বিশ্বে সম্পদ পুঞ্জীভূত করছে।’
তিনি তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ রক্ষা ও গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক চোলেটের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে খসরু বলেন, মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে গণতন্ত্রের অবক্ষয় ঘটবে এমন একটি দেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ও সহযোগিতা হ্রাস পাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত কঠোর সতর্কবার্তা এবং তিনি বাংলাদেশে বসেই এটি জারি করেছেন এবং বলেছেন যে মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ইস্যুতে কোনও আপস নেই। যে গণতান্ত্রিক দেশগুলো মানবাধিকার, আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, জননিরাপত্তা ও বাকস্বাধীনতা এখন এই কথাগুলো বলছে।’
আরও পড়ুন: রাজধানীতে রোডমার্চের তারিখ পরিবর্তন করল বিএনপি
বিএনপি গোপনে দূতাবাসে আসে, আর নিমন্ত্রণ পেয়ে বৈঠকে এসেছে আ.লীগ: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘বিএনপি কাউকে না জানিয়ে গোপনে দূতাবাসে আসে, আর আওয়ামী লীগ নিমন্ত্রণ পেয়ে এখানে বৈঠক করতে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক হিসেবে দেখতে চায়। আওয়ামী লীগও চায় একটি সুন্দর, ত্রুটিমুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তবে বিএনপি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করছে।’
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে ইইউ মিশন প্রধানদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইইউ-এর সম্পৃক্ততার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন ইইউ মিশন প্রধানরা।
বিএনপি আগুন-সন্ত্রাসের ওপর ভর করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি সংলাপে বিশ্বাস করে না। তারা রাষ্ট্রপতি ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে অংশ নেননি।
মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ কারও হুকুম মানে না; তারা শুধু সংবিধান মেনে চলে।’
নির্বাচন, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দেশের বিভিন্ন বিষয়ে অর্থপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন হবে বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু ও অবাধ। ইসি স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শেখ হাসিনার সরকার ইসিকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।
বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাতটি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।