রাজনীতি
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি: ওবায়দুল কাদের
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অনেক রাস্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এজন্য সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসিদের সঙ্গে সংলাপের পর সাংবাদিকদের তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন। তিনদিনব্যাপী জেলাপ্রশাসক সম্মেলনের আজ ছিল দ্বিতীয়দিন।
ওবায়দুর কাদের বলেন, আমি ডিসিদের বলেছি, সরকারের যেসব উন্নয়নমূলক অবকাঠামো হয়েছে। যেমন–পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, শতসেতু, শতরাস্তা, ওভারপাস, ফ্লাইওভার, এগুলো দৃশ্যমান। এগুলো নিয়ে সময় নষ্ট করতে চাই না। এগুলো সবাই দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে আরও বেশি করে সবার জানান সুযোগ মিলবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তাদের বলেছি, আমি এখন আর নতুন কোনো রাস্তা করতে চাই না। আগামী নির্বাচনের আগে নতুন করে কোনো রাস্তা হবে না। যে রাস্তাগুলো আছে, সেগুলো মেরামত ও সংরক্ষণ করা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।’
আরও পড়ুন: দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো নিজেরাই সমাধান করবো: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আরেকটি বিষয় বলেছি, মোটরসাইকেলের মতো ছোটো ছোটো যানগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি, ৯৫ শতাংশ। ঢাকায় একটি মোটরসাইকেলে দুজন থাকলে তাদের মাথায় হেলমেট থাকে, কিন্তু মফস্বলে তিনজন থাকলেও কারও মাথায় হেলমেট থাকে না।
তিনি জানান, আর আমি সচিবকে একটা কথা বলেছি, গরিব মানুষের জীবন যেমন আছে, জীবিকাও আছে। ওদের জীবিকার চাকা তো আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। কাজেই এগুলোকে একটি নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা প্রণয়ন করতে হবে।
কাদের বলেন, ‘ডিসিদের দায়িত্ব হচ্ছে এসব গাড়িগুলো শহরে ও মহাসড়কে যে যানজটের সৃষ্টি করে, দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেখা গেল, একটি ইজিবাইক দুর্ঘটনা ঘটলে ১০-১২ জন মারা যান। সেটাও বড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার হার কমলেও এতে মৃত্যুর হার কমছে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন এগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমার কথা হচ্ছে, আমি পরিবহন ও সড়কে শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এতে আমি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। অনেক রান্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না হলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এ ক্ষেত্রে ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছি।
নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ডিসিদের কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলা বলতে সবকিছুকেই বোঝায়।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি না: কাদের
নেতার দরকার নেই, চৌকস কর্মী চাই: ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদের
খুলনায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ৬৬ নেতাকর্মী কারাগারে
খুলনায় পুলিশের দায়ের করা নাশকতা সহিংসতার তিন মামলায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন সহ ৬৬ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৫ জানুয়ারী) অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান শুনানী শেষে এ আদেশ দেন।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করেন, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে খুলনার প্রতিটি থানায় পুলিশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হযরানিূলক নাশকতা সহিংসতা ও সরকার উৎখাত পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা করে। এসব মামলায় প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি ছিলেন। অন্যরা উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন। আজ তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর হয়।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলন: ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরু
খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা ও লবনচরা থানার এই তিন মামলায় অন্য যাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মহানগর বিএনপির অন্যতম যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ পারভেজ বাবু, মহানগর বিএনপির সদস্য গাজী আফসারউদ্দিন, কাজী শফিকুল ইসলাম, মাসুদ খান বাদল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েদ, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক ইসতিয়াক আহমেদ, সদস্য সচিব মো. তাজিম বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দল সদর থানা আহবায়ক খায়রুজ্জামান সজীব, নগর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ সুমন, বিএনপি নেতা জালু মিয়া, ফারুক আহমেদ, জামাল উদ্দিন মোড়ল, শহিদ খান, নাসিম আহমেদ প্রমুখ।
শুনানীকালে আদালতে আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মঞ্জুর আহমেদ, গাজী আব্দুল বারী, এস আর ফারুক, মাসুদ হোসেন রনি, মোমরেজুল ইসলাম, আখতার জাহান রুকু, মশিউর রহমান নান্নু, তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষারসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আদেশ ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
তারা মিথ্যা বানোয়াট রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং অবৈধ সরকারের পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করেন ও স্লোগান দেন।
আরও পড়ুন: বুধবার দেশব্যাপী সমাবেশ করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল
যুগপৎ আন্দোলন: ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরু
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপির নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দল ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে সমাবেশ শুরু হয়েছে।
বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়।
আয়োজকরা জানান, ১৯৭৫ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগ কর্তৃক একদলীয় বাকশাল শাসন প্রবর্তন, বিদ্যুত-গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
দুপুর থেকেই দলীয় শত শত নেতাকর্মী ছোট ছোট মিছিল নিযে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থল ও আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: ‘বাকশালের গণতন্ত্র’ জনগণ মেনে নেবে না: ফখরুল
বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য সমমনা বিরোধী দল, জোট ও সংগঠনগুলোও বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করছে।
এদিকে, গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণতান্ত্রিক বম ঐক্য জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পৃথক সমাবেশ করেছে এবং ৪ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সমাবেশ থেকে একই দিনে একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বিএনপি।
এছাড়া বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কের কাছে ১২ দলীয় জোট, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং এফডিসি ক্রসিংয়ে সামনে সমাবেশ করছে এলডিপি।
৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল, ১১ জানুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি এবং ১৬ জানুয়ারি সমাবেশ ও মিছিলের পর এটি যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি।
আরও পড়ুন:জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল
বুধবার দেশব্যাপী সমাবেশ করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা বিরোধী দল, জোট ও সংগঠনগুলো বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে সমাবেশ করবে।
আয়োজকরা জানান, ১৯৭৫ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগ কর্তৃক একদলীয় বাকশাল শাসন প্রবর্তন, বিদ্যুত-গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ এবং ১০ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি। দুপুর ২টায় শুরু হওয়া সমাবেশে বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র নেতারা।
সমাবেশ থেকে তাদের যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচী হিসেবে মির্জা ফখরুল ৪ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন।
৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল, ১১ জানুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি এবং ১৬ জানুয়ারি সমাবেশ ও মিছিলের পর এটি হবে যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি।
বিএনপি ছাড়াও সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিকাল ৩টায় বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কের কাছে ১২ দলীয় জোট, বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, দুপুর ২টায় ক্রসিং এফডিসিতে এলডিপি এবং সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি ও অন্যান্য দলের সঙ্গে গণমিছিল কর্মসূচিতে যোগ দিলেও কিছু রাজনৈতিক ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ইসলামী দলটি যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল
জামায়াতের সূত্র জানায়, জামায়াতের আমিরকে গ্রেপ্তার এবং ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল কর্মসূচি পালনকালে রাজধানীতে দলের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলার বিষয়ে কোনো বিবৃতি না দেয়ায় দলটি বিএনপির ওপর অসন্তুষ্ট।
বুধবার বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বিএনপির পরিকল্পনা অনুযায়ী বরিশাল বিভাগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নেতৃত্ব দেবেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু রাজশাহীতে, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু গাজীপুরে, এম শাহজাহান কুমিল্লায়। জাহিদ হোসেন সিলেটে, শামসুজ্জামান দুদু ময়মনসিংহে, অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান রংপুরে, নিতাই রায় চৌধুরী খুলনায়, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল রংপুরে ও হাবিবুন নবী সোহেল ফরিদপুরে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসী ও বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে কোকো ছিলেন প্রধান নায়ক: ফখরুল
বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে কোকো ছিলেন প্রধান নায়ক: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে কোকো ছিলেন প্রধান নায়ক। কোকো একজন অসাধারণ ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন, যিনি নিজে খেলাধুলা করতেন এবং বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মঙ্গলবার বনানী কবরস্থানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, ‘আজ (২৪ জানুয়ারি) আরাফাত রহমান কোকোর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হলেও ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। দুর্ভাগ্যবশত, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা তার মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে কাজ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক-এগারোর ঘটনার পরে কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং তারপর তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে বিদেশে নির্বাসনে পাঠানো হয়। রাজনীতিতে কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুর পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাই দায়ী।’
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল
তিনি বলেন যে আরাফাত রহমান কোকো ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রধান নায়ক। তিনি ক্রিকেটকে সংগঠিত, প্রতিষ্ঠিত ও এর মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে অবদান রেখেছেন। কিন্তু আমরা দেখেছি কীভাবে তাকে করুণ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে এবং বিদেশে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়েই এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।
ফখরুল স্মরণ করেন যে সরকারবিরোধী তীব্র আন্দোলনের মধ্যে কোকোর মরদেহ মালয়েশিয়া থেকে দেশে আনা হয়েছিল, যখন তার মা খালেদা জিয়াকে গুলশানে তার কার্যালয়ে বন্দি করে রাখা হয়।
তিনি বলেন, কিন্তু লাখ লাখ মানুষ সেদিন রাজপথে নেমে বায়তুল মোকাররম মসজিদে তার জানাজায় অংশ নেন… জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে দেশের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস তা প্রমাণ করেছে। জিয়ার পরিবার বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতীক।
আরও পড়ুন: ‘বাকশালের গণতন্ত্র’ জনগণ মেনে নেবে না: ফখরুল
তিনি আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। কোকোকে খালেদা জিয়ার আদরের ছেলে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাকে হারিয়ে তিনি (খালেদা জিয়া) বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। তিনি এখনও গৃহবন্দি ও আমাদের অনেক নেতাকর্মী কারাবন্দি এবং বর্তমান আন্দোলনে এ পর্যন্ত আমাদের ১৫ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশবাসী এখন কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা সফল হব ও চলমান আন্দোলনে বিজয়ী হব এবং বর্তমান শাসনের পতন নিশ্চিত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব।’
কোকোর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সকাল ৮টায় বনানীতে কোকোর কবর প্রাঙ্গণে কোরআনখানির আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টার দিকে ফখরুলসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোকোর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি কোকো ৪৫ বছর বয়সে মালয়েশিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। ২৭ জানুয়ারি তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে এনে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন: কোকো’র ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে সোমবার
কোকো’র ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে মঙ্গলবার
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি)।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
সকাল ৮টায় বনানীতে কোকোর কবরস্থান প্রাঙ্গণে কোরআনখানির আয়োজন করা হবে। এরপর সকাল ১০টায় তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
কোকোর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বেলা ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন: সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ
এছাড়া দুপুর দেড়টায় দুস্থ ও এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
দিবসটি উপলক্ষে, বিকাল সাড়ে ৪টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও জেলা ও মহানগর বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী ও পেশাজীবী সংগঠন আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার একটি ভাড়া বাসায় ৪৫ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কোকো। ২৭ জানুয়ারি তার লাশ দেশে এনে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা হান্নান শাহের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী কাল
জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে সরকার জাতীয় সংসদকে ‘একদলীয় ক্লাবে’ পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘তারা (সরকার) সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। তারা কি সংসদ গঠন করেছে? তারা একদলীয় ক্লাব তৈরি করেছে। এটা আওয়ামী লীগের ক্লাব।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সরকার জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।
নির্বাচনী ব্যবস্থা গণতন্ত্রের প্রবেশদ্বার উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার জন্য সংসদ ও মন্ত্রিসভা গঠন করার কথা। কিন্তু তারা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। মানুষ এখন ভোট দিতে যায় না।
আরও পড়ুন: ‘বাকশালের গণতন্ত্র’ জনগণ মেনে নেবে না: ফখরুল
আওয়ামী লীগ ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নিয়ে ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে এবং ভোট ডাকাতি ও ভোটের আগের রাতে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করেছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। ‘তারা সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে তাদের পক্ষে নেয়ার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি বলেন, তাদের দল রাষ্ট্রের সংস্কার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করার জন্য ২৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। ‘২৭ দফা রূপরেখা বিএনপির স্বপ্ন এবং আমরা তা জনগণের সামনে তুলে ধরব। স্বপ্ন ছাড়া কখনোই সফল হওয়া যায় না। আমরা স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাব।’
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ১৯ ডিসেম্বর বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের ২৭ দফা কাঠামো ঘোষণা করে।
ফখরুল বলেন, তাদের দল তাদের সাম্প্রতিক ১০টি বিভাগীয় সমাবেশ ও অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ‘যে ঝড়ের ঢেউ শুরু হয়েছে তা বর্তমান শাসনকে ধুয়ে দেবে। কারণ জনগণ তাদের সঙ্গে নেই।’
তিনি বলেন, তাদের ১০ দফা প্রস্তাবের প্রথম দাবি হলো আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা, যা পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধান করবে।
ওই নির্বাচনের পর বিএনপি নেতা বলেন, ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তাদের যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের নিয়ে তারা জাতীয় সরকার গঠন করবে।
তিনি গণতন্ত্র ও জনগণের হারানো অধিকার পুনরুদ্ধার এবং দেশকে দুঃশাসন ও ফ্যাসিবাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানান। ‘কেন আমরা হতাশ হব? আমরা সফল হচ্ছি, এবং আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের শত শত নেতাকর্মী জেলে গেছে। আমি তাদের মুখে কোনো ধরনের হতাশা দেখিনি।’
ফখরুল বলেন, বিরোধীরা অত্যন্ত শক্তিশালী। তাদের হাতে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র, বন্দুক, পিস্তল রয়েছে বলে তারা (বিএনপি) একটি ভারসাম্যহীন লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছেন। ‘তারা নির্বিচারে সেগুলি ব্যবহার করে আমাদের আক্রমণ করে এবং তারপর আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে।’
তিনি বলেন, ‘গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকর্মী মকবুল নিহত হন। উল্টো আমাদের ৪৫০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সুতরাং, মূল কথা হল, আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে এবং আমাদের মানুষকে বাঁচাতে হবে।’
বিএনপি নেতা আরও অভিযোগ করেন, সরকার গোটা বিচার ব্যবস্থাকে রাজনীতিকরণ করেছে, জনগণকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করেছে।
তিনি শোক প্রকাশ করেন যে মিডিয়াও এখন স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারে না। কারণ তারা স্ব-সেন্সরশিপ প্রয়োগ করতে বাধ্য হচ্ছে। ‘প্রতিটি মিডিয়া হাউসে একজন গোয়েন্দাকে সংযুক্ত করা হয়েছে। তারা নির্দেশ করে কী লিখতে হবে, শিরোনাম তৈরি করতে হবে এবং কোনটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং কোনটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে না।’
ফখরুল অবশ্য সাংবাদিকদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তিনি যা বলেছেন এবং সত্য তুলে ধরার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা কি কল্পনা করতে পারেন যে সম্পাদকরাও হত্যার অভিযোগসহ নানা মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন?’
আরও পড়ুন: সরকারের গণতন্ত্র হচ্ছে চুরি, লুট, টাকা পাচার ও মানুষ হত্যা করার গণতন্ত্র: ফখরুল
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ফখরুলের
ইভিএম কেনার বিষয়টি স্থগিত করা হয়েছে, বাতিল হয়নি: ইসি সচিব
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো.জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, সরকার এই মুহূর্তে দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার বিষয়টি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ক্রয় প্রকল্পটি বাতিল করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সরকারের আর্থিক সক্ষমতার কথা বিবেচনা করে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর ইসি ভবনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জাহাঙ্গীর আলম সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে: ইসি সচিব
এছাড়া গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর, নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০টির মধ্যে ১৫০টি আসনে ইভিএম সংগ্রহের জন্য ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়।
তিনি বলেন, গত বছরের ২৩ আগস্ট আগামী নির্বাচনে সর্বাধিক ১৫০টি আসনে ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। আগামী বছরের শুরুতে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে বিএনপি এবং তার মিত্ররা। তারা জুলাই মাস জুড়ে চলা সিইসির সঙ্গে সংলাপে যোগ দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে, কারণ আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ইভিএম ব্যবহারের দাবি তাদের।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচন ৪ জানুয়ারি: ইসি সচিব
এরশাদের আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ১ সেপ্টেম্বর: ইসি সচিব
‘বাকশালের গণতন্ত্র’ জনগণ মেনে নেবে না: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ কোনোভাবেই একদলীয় শাসন মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে আমাদের মতো করে রূপ দেব। গণতন্ত্র এখন তাদের। এটা কোন গণতন্ত্র! এটা কি মুজিববাদের গণতন্ত্র, বাকশালের গণতন্ত্র, একদলীয় শাসনের গণতন্ত্র? এদেশের মানুষ তা হতে দেবে না।
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বর্তমান ‘ফ্যাসিবাদী’শাসনকে অপসারণ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করেছে।
ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান আসাদের ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার শহীদ আসাদ পরিষদ জাতীয় প্রেসক্লাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
যিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, এই প্রক্রিয়ার একটি প্রাথমিক ঘটনা যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে পরিচালিত করেছিল।
ফখরুল বলেন, শহীদ আসাদ গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন সেই সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ের মিল রয়েছে। তখন বুদ্ধিজীবীরা চুপ করে থাকতেন। আমাদের বুদ্ধিজীবীরাও এখন অন্যায় ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন না।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের মুক্তির দাবি ৬০ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের
ফখরুল বলেন, পাকিস্তানের তৎকালীন শাসক আইয়ুব খান পদত্যাগ করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি পাকিস্তানের ধ্বংস দেখতে চান না। কিন্তু তারা (আ.লীগ) কোনোভাবেই ক্ষমতা ছাড়বে না। তারা তাদের অবৈধ ক্ষমতা রক্ষার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে। এটাই বর্তমান ফ্যাসিস্ট শাসন এবং পাকিস্তানের মধ্যে পার্থক্য।
তিনি বলেন, দেশের এই দুঃসময়ে যারা এখন জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছেন তাদের জন্য আসাদ অনুপ্রেরণার উৎস।
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আঁকড়ে ধরে দমন-পীড়নের আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বর্তমান আন্দোলনকে আরও তীব্র করার ইচ্ছা অনেকের আছে, কিন্তু আন্দোলনের রসায়ন, বিজ্ঞান ও ধারা রয়েছে।
এছাড়া আমি বিশ্বাস করি আমাদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষ জেগে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে এবং রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জনগণকে অন্যায়ভাবে দমন-পীড়ন করে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষ তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন শুরু করেছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছি এবং এ লক্ষ্যে আরও ঐক্যবদ্ধ হব। আমরা যখন ঐক্যবদ্ধ হব তখন জনগণ আমাদের রাক্ষস শাসককে পরাজিত করার পথ দেখাবে।
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার জাতির দুটি জিনিসকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে—গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। অতএব, গরীবরা গরীব হচ্ছে, ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে তারা আরও বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলবেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী রাজপথে জীবন উৎসর্গ করেছেন বলে আশার আলো আছে। সুতরাং, আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা যেভাবে সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, আমরা অবশ্যই এই দেশকে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে এবং ভয়ঙ্কর দানবদের হাত থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হব।
আরও পড়ুন: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল হাসপাতালে ভর্তি
মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আ.লীগ সরকারকে এরশাদের মতো ক্ষমতাচ্যুত করা হবে: মোশাররফ
বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, স্বৈরাচারী শাসক এইচ এম এরশাদকে যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল, সেভাবে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হবে।
তিনি বলেন, ‘কোনো স্বৈরাচারী শাসন স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়ে না। আমরা বিশ্বাস করি না যে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে...এক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই শাসক ক্ষমতাচ্যুত হবে, যেভাবে স্বৈরাচারী এরশাদকে পতন করা হয়েছিল।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ জেগে উঠেছে বলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার। বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে জনগণ গণঅভ্যুত্থান ঘটাবে।’
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আ.লীগ সরকারের পতনের বিকল্প নেই: বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, সরকারের বিভিন্ন বাধা, হয়রানি ও দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে উপেক্ষা করে তাদের দল ১০টি বিভাগে সমাবেশ করেছে। ‘আমাদের প্রতিটি সমাবেশ সফল হয়েছে কারণ শুধু আমাদের নেতা-কর্মীরাই নয়, সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ৭ ডিসেম্বর ঢাকার মহাসমাবেশের আগে সরকার তাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভয়ঙ্কর ও বর্বরোচিত হামলা চালায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা মহাসমাবেশ প্রমাণ করেছে যে কীভাবে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। ‘শাসক দলের নেতারা যাই বলুক না কেন, এই শাসন আর মানুষকে দমন করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দুঃশাসন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতার কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মোশাররফ অভিযোগ করেন, সরকার লুটপাট ও দুর্নীতি করে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, তাদের দল ইতোমধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে ২৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছে।
দেশের উন্নয়নে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান এবং দেশের অর্থনীতির পরিবর্তনে তার ভূমিকার কথা তুলে ধরেন বিএনপির এই নেতা।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ।
আরও পড়ুন: সরকারের গণতন্ত্র হচ্ছে চুরি, লুট, টাকা পাচার ও মানুষ হত্যা করার গণতন্ত্র: ফখরুল