রাজনীতি
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার ও তার দালালরা বিভিন্ন 'অশুভ' কৌশল অবলম্বন করে এবং বানোয়াট গল্প তৈরি করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চাইছে। বিরোধী জোটের মধ্যে ফাটল সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য অটুট রয়েছে এবং তারা 'ফ্যাসিস্ট' সরকাকে উৎখাত করতে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মধ্যে (বিরোধী জোটের) কোনো সমস্যা নেই...স্বাভাবিকভাবেই সরকার ও তার দালালরা বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দমন ও বানচাল করতে মিডিয়াকে ব্যবহার করে নানা অশুভ কৌশল অবলম্বন করছে এবং নানা রকম গল্প তৈরি করছে।’
বিরোধী দলগুলোর ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে তারা কম চিন্তিত বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল ফোকাস এখন মানুষকে আরও একত্রিত করা এবং ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসনকে উৎখাত করার জন্য আমাদের আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা।’
বিকাল ৪টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শুরু হয়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে।
বৈঠকে ফখরুল বলেন, চলমান যুগপৎ আন্দোলনকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: খালেদা, তারেককে নিয়ে সময় টিভির প্রতিবেদন সম্পর্কে যা বললেন ফখরুল
‘আমাদের বৈঠকে আমরা বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের একযোগে আন্দোলনের আগের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছি। আমাদের আন্দোলনকে সফল করার জন্য আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেছি’, তিনি বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে তারা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দল ও জোটের সঙ্গেও তারা একই ধরনের বৈঠক করবেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আন্দোলনকে ধীরে ধীরে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার কৌশল ও নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করার উপায় নিয়েও কথা বলেছেন। কেউ যেন কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আমাদের ঐক্যে কোনো ফাটল সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
মান্না বলেন, রাজধানী ঢাকায় বিরোধী জোটের তৎপরতা কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়েও তারা কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ঢাকায় বিএনপি স্বতন্ত্রভাবে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ‘আমরা মনে করি যে প্রোগ্রামগুলি কার্যকর হতে পারে। আমরাও কর্মসূচিতে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করব। আমরা আশাবাদী যে আমরা বিপুল জনসমর্থন পাচ্ছি বলে আমরা বিজয়ী হব।’
খালেদাকে নিয়ে সেলিমের মন্তব্য 'ভিত্তিহীন'
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইলে ফখরুল বলেন, এটা একটি বানানো গল্প।
‘তিনি (সেলিম) হঠাৎ করেই এই গল্পটা তৈরি করলেন। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বানোয়াট মন্তব্য’, বিএনপি নেতা যোগ করেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
‘বিএনপি নির্বাচনের আগে শীতের পাখির মতো আসে, খায়দায়, মোটাতাজা হয়ে আবার চলে যায়’
বিএনপির নেতাকর্মীদের অতিথি পাখির সঙ্গে তুলনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, বিএনপির তারা নির্বাচনের আগে শীতের পাখির মতো আসে, খায়দায়, মোটাতাজা হয়ে আবার চলে যায়।'শুক্রবার বিকালে রাজশাহীর মাদরাসা মাঠে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল আগাম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির দম ফুরিয়ে গেছে বলে তারা এখন হাঁটার পথ ধরেছে বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'মানুষ যেমন দম ফুরিয়ে গেলে আর দৌড়াতে পারে না, তেমনি মনে হচ্ছে বিএনপির দম ফুরিয়ে গেছে তাই তারা ঢাকায় এখন নিরব পদযাত্রা অর্থাৎ হাঁটার কর্মসূচি দিয়েছে। আসলে গাড়ি পুরনো হয়ে গেলে মাঝে মাঝে স্টার্ট না দিলে গাড়ি অচল হয়ে যায়। সে কারণেই বিএনপিও ক'দিন পরপরই নানা কর্মসূচি ঘোষণা করে।'
আগামী সংসদ নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমরা আওয়ামী লীগ সারা বছর মানুষের কাছে যাই, তাদের পাশে থাকি। গত ১৪ বছর ধরে আমরা মানুষের পাশে আছি, আগেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। মানুষের সুখে-দুঃখে অভাব অভিযোগে শুধু আওয়ামী লীগকেই পাওয়া গেছে।'
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, 'করোনা মহামারির সময় খাদ্যসামগ্রী বলুন আর করোনা প্রতিরোধসামগ্রী বলুন, সরকারের পাশাপাশি এই আওয়ামী লীগই সারাদেশের মানুষের কাছে সেগুলো পৌঁছে দিয়েছে। সেটা করতে গিয়ে অনেক নেতাকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। বিএনপিকে সেই সময় খুঁজেও পাওয়া যায়নি। ঝড়-বন্যা-ঘুর্ণিঝড়সহ যে কোনো দুর্বিপাকেও আওয়ামী লীগই সবসময় মানুষের পাশে ছিল, আছে।’ রবিবার প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী সফর নিয়ে দলের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার এই সফর নিয়ে সমগ্র রাজশাহী বিভাগের মানুষ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তাতে জনসভাস্থল মাদরাসা মাঠে কোনোভাবেই মানুষের স্থান সংকুলান সম্ভব নয়। সমগ্র রাজশাহীর জনগণ শেখ হাসিনাকে বরণ করতে উন্মুখ হয়ে আছে। লাখ লাখ মানুষের আগমনে পুরো শহরই জনসমুদ্রে পরিণত হবে।'
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থীর মৃত্যু মানবাধিকারের লঙ্ঘন: তথ্যমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজশাহী সফর ও জনসভার প্রস্তুতি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ শুক্রবার বিকালে ঢাকা থেকে রাজশাহী পৌঁছান। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি জনসভা ময়দান মাদরাসা মাঠে উপস্থিত হন এবং কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠ পরিদর্শন করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য বেগম আকতার জাহান, রাজশাহী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারকে আবার ধাক্কা দিতে গেলে বিএনপির পা ভেঙে যাবে: তথ্যমন্ত্রী
খালেদা, তারেককে নিয়ে সময় টিভির প্রতিবেদন সম্পর্কে যা বললেন ফখরুল
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের উদ্ধৃতি দিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে সম্প্রতি প্রকাশিত সময় টিভির প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘বিএনপির ২৭ দফা ঘোষণায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের কথা বলা হলেও তাদের নেতৃত্বের শীর্ষে আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্তদের রাখাকে ‘সাংঘর্ষিক ও নৈতিক অবক্ষয়’- ইফতেখারুজ্জামানের এই মন্তব্যে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সময় টিভিকে কটাক্ষ করেছেন এই বিএনপি নেতা।
ফখরুলের বক্তব্য তুলে ধরে, সময় টিভি বৃহস্পতিবার আবার আগের প্রতিবেদন প্রচার করেছে এবং প্রতিবেদনটির পিছনে তার অবস্থান এবং ন্যায্যতা রক্ষা করতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলায় মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এজেন্টের সাক্ষ্যের কথাও উল্লেখ করা হয়। .
সংবাদ সম্মেলনে সময় টিভি সম্পর্কে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বেগম জিয়া সম্পর্কে ওই প্রতিবেদন সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাতের শামিল। যেহেতু আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি, তাদের উচিত এই ধরনের প্রতিবেদন প্রচার করা থেকে বিরত থাকা।’
আরও পড়ুন: বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
ফখরুল আরও স্বীকার করে বলেছেন, ‘চ্যানেলটি একটি মূলধারার সংবাদমাধ্যম এবং দেশের মানুষ বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে গ্রহণ করে।’
গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত দলের সমাবেশ কভার করার সময় সময় টিভি’র এক সাংবাদিক তার ওপর ‘হামলা করার’ জন্য বিএনপিকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সময় টিভির ওই প্রতিবেদনেন বলা হয়, তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া উভয়কেই আদালত সাজা দিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাবতীয় সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা সে বিষয়েও প্রতিবেদনে আইনের উল্লেখ করা হয়েছে।
এটিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের পর্যবেক্ষণও রয়েছে যে বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থান নেয়ার কথা বলছে এবং একই সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বে দণ্ডিতদের নিয়ে দল পরিচালনা করছে।
বিএনপির ২৭ দফার কথা উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক এর আগে দলটির সেগুলো বাস্তবায়নের সামর্থ্য আছে কিনা তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ইতিহাস এবং দেশের মানুষের সঙ্গে এর অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে বলা যেতে পারে যে রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহার তৈরি করে। তারা ক্ষমতায় এলেও চিত্র ভিন্ন। সেই অর্থে, এটি একটি ইচ্ছা তালিকা। যদিও উল্লিখিত অনেক বিষয় বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: সরকারের দিন ঘনিয়ে আসছে: ফখরুল
২০১১ সালের নভেম্বরে, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ২০ দশমিক ৪১ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলায় এফবিআই এজেন্ট সাক্ষ্য দেন। এই প্রথম কোনো মার্কিন এফবিআই এজেন্ট বাংলাদেশের কোনো আদালতে সাক্ষ্য দিলেন।
এফবিআই-এর তত্ত্বাবধায়ক বিশেষ এজেন্ট ডেব্রা ল্যাপ্রেভোট, ঢাকার একটি আদালতের সামনে বর্ণনা করেছেন যে কীভাবে তিনি পাচারের অভিযোগে তারেক রহমান এবং মামুনের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ট্র্যাক করেছিলেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে তিনি দ্বিতীয় দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।
মহামারির মধ্যে, সরকার ২০২০ সালে ২৫ মার্চ এ একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তার জেলের মেয়াদ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। সরকার দুটি দুর্নীতির মামলায় তার শর্তসাপেক্ষ মুক্তির মেয়াদ কয়েকবার বাড়িয়েছিল।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দশ দফা দাবির লক্ষ্যে চার দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
তিনি বলেন, তাদের দলের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা ২৮, ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবেন। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারি শাহজাদপুর থেকে মালিবাগ আবুল হোটেল এবং ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মিরপুর ১০ মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, এদিকে ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপি।
এছাড়া সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তাদের পদযাত্রার কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
সরকারের দিন ঘনিয়ে আসছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দিন ঘনিয়ে এসেছে। কারণ জনগণ নির্বাচনের নামে আর কোনো নাটক করতে দেবে না।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের দিন শেষ হয়ে গেছে... এবার তাদের যেতে হবে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নানাভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তাদের সেই ঋণ শোধ করতে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার ছদ্মবেশে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে পরিকল্পিতভাবে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ‘সুতরাং, তারা একটি নির্বাচনের নামে নাটক এবং উপহাস করতে চায় ... যে নির্বাচন এই দেশে আর হবে না কারণ মানুষ এখন তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে প্রস্তুত।’
ফখরুল বলেন, জনগণের সঙ্গে বর্তমান ‘অনির্বাচিত’ সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই এবং তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের টাকা লুটপাট করা। কারণ তারা বাংলাদেশকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি এবং দেশের জনগণকে তাদের প্রজা মনে করে।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলন: ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরু
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। দল ও এর অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
আয়োজকরা জানান, ১৯৭৫ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগ কর্তৃক একদলীয় বাকশাল শাসন প্রবর্তন, বিদ্যুত-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ সরকারের ওপর তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য চাপ বৃদ্ধিই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
ফখরুল বলেন, শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত না হলে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়বে না। ‘আমরা এই শাসনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করছি।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, যতদিন আওয়ামী লীগ পদত্যাগ না করবে এবং যতদিন গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের জেল থেকে মুক্তি না দেয়া হবে, ততদিন তাদের চলমান আন্দোলন চলবে।
ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে জাতি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। এই আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালের এই দিনে (২৫ জানুয়ারি) জনগণের সব আশা-আকাঙ্খাকে ধোঁকা দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল।
বিএনপি নেতারা প্রশ্ন তোলেন, আওয়ামী লীগ কেন ভুলে যায় যে তারা প্রথমে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সব দল ও সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করে দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং ভিন্ন মতকে সহ্য করতে পারে না। আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই সন্ত্রাসী দল। তাদের ইতিহাস সন্ত্রাসের ইতিহাস এবং তারা সর্বদা শক্তি প্রয়োগ করে এবং সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়।’
বর্তমান আন্দোলনে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী নিহত হয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসার জঘন্য আকাঙ্খা চরিতার্থ করতে এত প্রাণ হরণ করেছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় ও ইউটিলিটি সেবার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানুষ খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বিদ্যুৎ-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক কমাবে না। ‘সুতরাং, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই শাসনকে অবশ্যই ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
রাষ্ট্রপতি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন না
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে ক্ষমতা নেই এমন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে অত্যন্ত সম্মান করি, ব্যক্তি যেই হোক না কেন এবং তিনি যে দলেরই হোন না কেন। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপ্রধান।’
তবে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি এখন নিরপেক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবেন না। ‘তাই আমরা আমাদের ২৭ দফা প্রস্তাবে স্পষ্ট করেছি যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছিল।
তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার করেছেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, বাকশাল শাসনামলে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত হয়েছে কারণ জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন, দলটিকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার নতুন সুযোগ দিয়েছিলেন। তাই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের ঘাতক আর বিএনপি গণতন্ত্র রক্ষাকারী।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়িতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় পুলিশের দায়ের করা চারটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করসহ ১০২ জন নেতাকর্মী।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী ইদ্রিস আলী জামিন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) হাইকোর্ট ডিভিশনের সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ এর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এর ব্রাঞ্চ ৬ সপ্তাহের জন্য জামিনের আবেদন মঞ্জুরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির মিছিলে বাধা, সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৪০
আবেদনকারীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন- সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ.জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দীন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামান, এডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, এডভোকেট আব্দুল মান্নান, এডভোকেট ওসমান চৌধুরী, এ.কে.এম খলিলুল্লাহ কাসেম, গোলাম মুক্তাদী উজ্জ্বল প্রমুখ আইনজীবী।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনকালে নগরীর নাসিমন ভবনের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে সমাবেশে যোগ দিতে মিছিল নিয়ে যাবার সময় পুলিশের বাধা পেয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ ও বিএনপি কর্মীরা। এসময় ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ২০ জনকে আটক করে। পুলিশসহ অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়। ওই দিন রাতে পুলিশ দেড় থেকে দুইশ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চারটি পৃথক মামলা দায়ের করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি-পুলিশ সংর্ঘষ: শাহাদাতসহ ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
বরিশালে বিএনপির সমাবেশের মঞ্চের সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কিছুক্ষণ এই সংঘর্ষ চলার পর বিএনপির সিনিয়র নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বুধবার দুপুরে নগরীর অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন বিএনপির সমাবেশস্থলে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঞ্চের সামনে দাড়ানোকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী তপু কাজীর সাথে জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি সবুজ আকনের দ্বন্দ হয়। এই নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই জনের সমর্থক হাতাহাতিতে জড়ায় এরপর তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কর্মী পর্যায়ের লোকজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। পরে তাদের শান্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষে আহত ১২, আটক ২০
ফরিদপুরে বিএনপির ১১৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে ৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দল ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
আয়োজকরা জানান, ১৯৭৫ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগ কর্তৃক একদলীয় বাকশাল শাসন প্রবর্তন, বিদ্যুত-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ সরকারের ওপর তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য চাপ বৃদ্ধিই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য সমমনা বিরোধী দল, জোট ও সংগঠনগুলোও বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলন: ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরু
এর মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পৃথক সমাবেশ করেছে, বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কের কাছে ১২ দলীয় জোট, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং এফডিসি ক্রসিংয়ে এলডিপি সমাবেশ করেছে।
৪ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণাও দিয়েছে তারা।
৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল, ১১ জানুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি এবং ১৬ জানুয়ারি সমাবেশ ও মিছিলের পর এটি ছিল যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি।
আরও পড়ুন:খুলনায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ৬৬ নেতাকর্মী কারাগারে
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি: ওবায়দুল কাদের
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অনেক রাস্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এজন্য সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসিদের সঙ্গে সংলাপের পর সাংবাদিকদের তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন। তিনদিনব্যাপী জেলাপ্রশাসক সম্মেলনের আজ ছিল দ্বিতীয়দিন।
ওবায়দুর কাদের বলেন, আমি ডিসিদের বলেছি, সরকারের যেসব উন্নয়নমূলক অবকাঠামো হয়েছে। যেমন–পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, শতসেতু, শতরাস্তা, ওভারপাস, ফ্লাইওভার, এগুলো দৃশ্যমান। এগুলো নিয়ে সময় নষ্ট করতে চাই না। এগুলো সবাই দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে আরও বেশি করে সবার জানান সুযোগ মিলবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তাদের বলেছি, আমি এখন আর নতুন কোনো রাস্তা করতে চাই না। আগামী নির্বাচনের আগে নতুন করে কোনো রাস্তা হবে না। যে রাস্তাগুলো আছে, সেগুলো মেরামত ও সংরক্ষণ করা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।’
আরও পড়ুন: দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো নিজেরাই সমাধান করবো: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আরেকটি বিষয় বলেছি, মোটরসাইকেলের মতো ছোটো ছোটো যানগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি, ৯৫ শতাংশ। ঢাকায় একটি মোটরসাইকেলে দুজন থাকলে তাদের মাথায় হেলমেট থাকে, কিন্তু মফস্বলে তিনজন থাকলেও কারও মাথায় হেলমেট থাকে না।
তিনি জানান, আর আমি সচিবকে একটা কথা বলেছি, গরিব মানুষের জীবন যেমন আছে, জীবিকাও আছে। ওদের জীবিকার চাকা তো আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। কাজেই এগুলোকে একটি নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা প্রণয়ন করতে হবে।
কাদের বলেন, ‘ডিসিদের দায়িত্ব হচ্ছে এসব গাড়িগুলো শহরে ও মহাসড়কে যে যানজটের সৃষ্টি করে, দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেখা গেল, একটি ইজিবাইক দুর্ঘটনা ঘটলে ১০-১২ জন মারা যান। সেটাও বড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার হার কমলেও এতে মৃত্যুর হার কমছে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন এগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমার কথা হচ্ছে, আমি পরিবহন ও সড়কে শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এতে আমি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। অনেক রান্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, কিন্তু শৃঙ্খলা না হলে সাফল্য ধরে রাখতে পারবো না। এ ক্ষেত্রে ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছি।
নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ডিসিদের কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলা বলতে সবকিছুকেই বোঝায়।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি না: কাদের
নেতার দরকার নেই, চৌকস কর্মী চাই: ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদের
খুলনায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ৬৬ নেতাকর্মী কারাগারে
খুলনায় পুলিশের দায়ের করা নাশকতা সহিংসতার তিন মামলায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন সহ ৬৬ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৫ জানুয়ারী) অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান শুনানী শেষে এ আদেশ দেন।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করেন, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে খুলনার প্রতিটি থানায় পুলিশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হযরানিূলক নাশকতা সহিংসতা ও সরকার উৎখাত পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা করে। এসব মামলায় প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি ছিলেন। অন্যরা উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন। আজ তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর হয়।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলন: ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরু
খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা ও লবনচরা থানার এই তিন মামলায় অন্য যাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মহানগর বিএনপির অন্যতম যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ পারভেজ বাবু, মহানগর বিএনপির সদস্য গাজী আফসারউদ্দিন, কাজী শফিকুল ইসলাম, মাসুদ খান বাদল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েদ, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক ইসতিয়াক আহমেদ, সদস্য সচিব মো. তাজিম বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দল সদর থানা আহবায়ক খায়রুজ্জামান সজীব, নগর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ সুমন, বিএনপি নেতা জালু মিয়া, ফারুক আহমেদ, জামাল উদ্দিন মোড়ল, শহিদ খান, নাসিম আহমেদ প্রমুখ।
শুনানীকালে আদালতে আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মঞ্জুর আহমেদ, গাজী আব্দুল বারী, এস আর ফারুক, মাসুদ হোসেন রনি, মোমরেজুল ইসলাম, আখতার জাহান রুকু, মশিউর রহমান নান্নু, তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষারসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আদেশ ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
তারা মিথ্যা বানোয়াট রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং অবৈধ সরকারের পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করেন ও স্লোগান দেন।
আরও পড়ুন: বুধবার দেশব্যাপী সমাবেশ করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো
জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল