রাজনীতি
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সরকারের ‘জনবিরোধী’ সিদ্ধান্ত: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে 'জনবিরোধী' বলে অভিহিত করেছেন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার অনির্বাচিত হওয়ায় জনগণের চরম দুর্ভোগের মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি একটি বুদ্ধিহীন ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত।’
মাসিক মূল্য সমন্বয়ের নামে সরকার ধাপে ধাপে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ‘এটি মানুষের সঙ্গে একটি খুচরা কৌশল মাত্র।’
ফখরুল বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ১৬ জানুয়ারি সকল মহনগরী ও উপজেলায় সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচিতে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া বিদ্যুতের খুচরা মূল্য পাঁচ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষবার খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে মরিয়া: ফখরুল
ফখরুল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যুতের দাম এমন সময়ে বাড়ানো হলো- যখন চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ সব পণ্যের দাম চরমভাবে বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়। মানুষ তাদের চাকরি হারাচ্ছে। ‘সুতরাং, বিদ্যুৎ বৃদ্ধির পদক্ষেপ মানুষের দুর্ভোগকে আরও তীব্র করবে।’
তিনি আরও বলেন, খুচরা এবং এর আগে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম নতুন করে বৃদ্ধির ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় এবং সেচ ও কল-কারখানার উৎপাদন খরচসহ সবকিছুর দাম বাড়বে।
বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের খেসারত জনগণই দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, দুর্নীতি, অপচয় ও অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সরকার জনগণের পকেট থেকে টাকা নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করুন নতুবা রাজপথে নামবে জনগণ: সরকারকে বিএনপি
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করুন নতুবা রাজপথে নামবে জনগণ: সরকারকে বিএনপি
সরকার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। এটা সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। আমরা এর বিরুদ্ধে ১৬ জানুয়ারি সারাদেশের মহানগরী ও উপজেলায় বিক্ষোভ করব।’
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি নেতা বলেন, অবিলম্বে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। ‘অন্যথায় আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করব। আমরা আগামী দিনে বিদ্যুৎ বিল দেব না এবং মানুষ বিদ্যুৎ বিল দেয়া বন্ধ করে দেবে।’
দুর্নীতির মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আদালতের আদেশের প্রতিবাদে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বিরোধীদলীয় মঞ্চ ডেমোক্রেসি ফোরাম।
আরও পড়ুন: ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে আরও জেগে ওঠুন: জনগণের প্রতি ফখরুল
জানুয়ারি থেকে কার্যকর বিদ্যুতের খুচরা মূল্য পাঁচ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার।
এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল।
জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে সরকারের নির্দেশে আদালত তারেক ও তার স্ত্রীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বুলু। এই সরকার তারেক রহমানের ভয়ে ভুগছে।
তিনি বলেন, দুঃশাসনের কারণে জনগণ আর আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে।
কুইক রেন্টাল অ্যান্ড রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট ও মেগা প্রজেক্টের নামে যারা ব্যাংক থেকে লাখ লাখ টাকা লুট করেছে এবং বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছে তাদের আগামী দিনে জনআদালতে বিচার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বুলু।
আরও পড়ুন: সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে মরিয়া: ফখরুল
পরবর্তী সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী
সংসদের পরবর্তী উপনেতা হতে যাচ্ছেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা,আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই পদের জন্য মতিয়া চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন, যা সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন সমর্থন করেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে উপনেতার পদটি শূন্য হয়।
ক্ষমতাসীন দলের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজেদা টানা তৃতীয়বারের মতো একাদশ জাতীয় সংসদের উপনেতা নির্বাচিত হয়েছেন।
শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মতিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কৃষিমন্ত্রী ছিলেন।
সংসদে উপনেতা পদে কাউকে নিয়োগ দিতে বাধ্যতামূলক আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।
২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কাউকে উপনেতা হিসেবে নিয়োগ দেননি।
আরও পড়ুন: টানা তৃতীয়বার সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী
তবে আওয়ামী লীগ বরাবরই একজন সিনিয়র নেতাকে মন্ত্রী পদে বসিয়েছে।
মতিয়া পাঁচবারের সংসদ সদস্য।
এসময় আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের জনগণের কাছাকাছি থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন প্রণেতাদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তার কাছে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট কার্ড রয়েছে এবং যারা জনগণের সঙ্গে যুক্ত এবং তাদের নির্বাচনী এলাকায় ভালো কাজ করছেন, তারাই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন বলে বৈঠক সূত্র জানায়।
প্রধানমন্ত্রী সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন, তাদের মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হবে না।’
বিএনপির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চললে তাতে সরকারের কোনো আপত্তি নেই।
বৈঠকে শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে একজন আইনপ্রণেতা বলেছেন, ‘তবে তারা যদি অতীতে যেভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলন চালিয়েছিল, একইভাবে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের পথ অবলম্বন করে; তবে তাদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে তার সরকার এই মুহূর্তে নতুন কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে অংশ নেবে না। বরং চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার ওপর জোর দেবে সরকার।
এদিন রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে।
প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদের জনগণের সঙ্গে কথা বলতে এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সবাইকে জানানোর আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, সরকার আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: সংসদ উপনেতা নির্বাচিত হওয়ায় সাজেদা চৌধুরীকে অভিনন্দন
আ.লীগ নেত্রী সাজেদা চৌধুরী মারা গেছেন
সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে মরিয়া: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, চলমান গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে ভয় পেয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনে সরকার ‘মরিয়া’ হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, আপনি (আ.লীগ নেতা) কয়েকদিন আগে বলতেন, আমাদের রাজপথে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই, আমাদের পিঠ ভেঙে গেছে। কিন্তু এখন আপনারা (আ.লীগ) এতটাই অস্থির হয়ে পড়েছেন যে আমাদের আন্দোলন থামানোর জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করে জনগণকে নিপীড়ন করছেন।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বুধবার ফরিদপুর ও ময়মনসিংহসহ দেশের আরও কয়েকটি এলাকায় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলার নিন্দা জানিয়ে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ১৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী সমাবেশ ও মিছিলের ঘোষণা বিএনপি’র
তিনি বলেন, ‘সরকার পায়ের নিচের মাটি হারিয়ে ফেলেছে। সরকার এতটাই ভীত হয়ে পড়েছে যে তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালাচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা তাদের পতন টের পেয়ে চলমান আন্দোলন নিয়ে নানা রকম অসংযত মন্তব্য করছেন।
ফরিদপুর ও ময়মনসিংহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডাররা বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেখানে পুলিশ শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেনি, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে।
এই বিএনপি নেতা দাবি করেন, হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই বিভাগের শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং আরও ২৫০ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিলেন ফখরুল
এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে বলেও জানান তিনি।
ছোট দল নিয়ে একযোগে আন্দোলনের ফলাফল নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বিষয়ে তার মন্তব্য জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা কী বলেন, জনগণ তা আমলে নেয় না। ‘আমার মতো, সারা দেশের মানুষ তার মন্তব্যকে গুরুত্ব দেয় না।’
১৬ জানুয়ারি জেলা পর্যায়ে কোনো কর্মসূচি নেই:
ফখরুল বলেন, সরকারের বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে ১৬ জানুয়ারি সব মহানগরী ও উপজেলা সদরে সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি পালন করবে তাদের দল।
তিনি বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) আমি বলেছিলাম সব জেলায়ও কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে জেলায় নয়, সব মেট্রোপলিটন শহর ও উপজেলাতেই কর্মসূচি পালন করা হবে।’
আরও পড়ুন: ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে আরও জেগে ওঠুন: জনগণের প্রতি ফখরুল
জামায়াতের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না: ওবায়দুল কাদের
জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সমঝোতা হয় নি বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘কোনো সমঝোতা না। যেহেতু জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। সেহেতু ভিন্ন কোনো উদ্যোগ নেয়া যুক্তিসংগত নয় বলে আমরা মনে করি।’
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা(বিএনপি) কর্মসূচি দিতে পারে, তাদের দফা আছে, দশ দফা আবার বলে এক দফা। তারপর দেখলাম, ২৩ দল, আবার ৫৪ দল। এখন শুনলাম আবার ৫২ দল একসঙ্গে ১৬ জানুয়ারি কর্মসূচি পালন করবে। এখন তাদের এই জগাখিচুড়ি ঐক্যের শেষ কোথায়, পরিণতি আমরা গত নির্বাচনে দেখেছি। অতিবাম, অতি ডান মিলিমিশে একাকার।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে ২ পুলিশ আহত
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গতকাল বিএনপির সমাবেশ দেখলাম, অবশ্যই বড় হয়েছে, অস্বীকার করে লাভ নেই। আমাদের দুটো মিটিং অনেক বড় হয়েছে। শহীদ মিনারের সমাবেশ বড় হয়েছে। মিরপুরে তো বিরাট সমাবেশ হয়েছে। আলোচনাসভা সমাবেশে রূপ নিয়েছে, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে। তাদের এই যে এত জোট, প্রেসক্লাবের সামনে, বিজয়নগরে, দেখলাম ফুটপাতে বসে আছে সমমনা ১২ দল। প্রেসক্লাবের সামনে দেখলাম, কয়েকটি চেয়ার, সেখানে আবার তাদের কর্মীদের চেয়ে সাংবাদিক বেশি। আর মঞ্চে আছে কিছু নেতা।’
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, তাদের তো কোনো নেতা নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনের নেতৃত্ব দেবেন। রাজনৈতিকভাবে তিনি আমাদের সভাপতি। তিনি আমাদের পরবর্তী নির্বাচনের নেতা। তাদের কে? তারা কখনও বলে বেগম জিয়া, কখনো বলে তারেক রহমান তাদের নেতা। কিন্তু তাদের নির্বাচন করার যোগ্যতা নেই। তারা অভিযুক্ত আসামি। কাকে তারা নেতা বানাবেন? গতবার কামাল হোসেন ছিল। পরে তাদের মানসম্মানও বিঘ্নিত হয়ে গেছে। সবাই জানেন, শেষ পর্যন্ত তিনিও(কামাল) হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এবার কী হবে, সময় বলে দেবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা রাজপথে আছি। আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আমাদের বিক্ষোভ করার কিছু নেই। তবে শান্তি সমাবেশ করব। শান্তির শোভাযাত্রা করব। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সতর্ক অবস্থানে থাকব। আমাদের বিক্ষোভের কোনো কারণ নেই।
ফরিদপুরে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচিতে সংঘর্ষ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল কোথাও সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ফরিদপুরে যেটা হয়েছে, সেটা হচ্ছে তাদের মিটিং থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে সেটা বেশি দূর গড়ায়নি। সমাধান হয়ে গেছে। আর ময়মনসিংহে স্পটে কিছু হয়নি। তবে তাদের গাড়ি নাকি আক্রান্ত হয়েছে। ঢিল ছুড়েছে, এ রকম কিছু হয়েছে। ঢাকায় উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।
বিএনপির সঙ্গে পাল্টা কোনো কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ১০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। পরের দিন ১১ জানুয়ারি আমাদের কর্মসূচি ছিল।
মহানগরী উত্তর-দক্ষিণ আমাদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ, অন্য সহযোগী সংগঠন, মফস্বলের উপজেলা পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করেছি। এটি সবসময় হয়ে আসছে। এখানে পাল্টাপাল্টির কোনো বিষয় না।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মিছিল থেকে জামায়াত শিবিরের ৮ নেতাকর্মী আটক
‘তবে বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। সেটা হচ্ছে সতর্ক পাহারায় থাকা। যাতে করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে না পারে এবং অশান্তি, বিশৃঙ্খলা সহিংসতার কোনো উপদান যুক্ত হতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকছি,’ বললেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে জামায়াতের সঙ্গে সরকারের কোনো সমঝোতা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ ধরনের প্রক্রিয়া শুরু করার ব্যাপারে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
জামায়াতকে নিয়েই বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, তা সবাই জানেন। জামায়াত ছাড়া বিএনপির টিকে থাকাই দুষ্কর। নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে বিএনপি যেখানে গিয়ে পৌঁছেছে, তাদের বড় সমাবেশ, বড় মিছিল করতে হলে জামায়াতকে দরকার। জামায়াতের আবার একটি সমর্থক-কর্মীর ব্যাংক আছে। কাজেই সমাবেশ বড় করতে হলে, মিছিলে লোক বেশি আনতে হবে জামায়াত ছাড়া তাদের (বিএনপি) চলবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বারবার একই কথা বলেছি, সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর বিশ্বস্ত ঠিকানা বিএনপি। বিএনপি-জামায়াত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তাদের একটিকে ছাড়া আরেকটি চলবে না।’
আরও পড়ুন: বিশ্বের কোথায়ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নেই: ওবায়দুল কাদের
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে সতর্ক থাকবে আ.লীগ: কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আমরা সতর্ক থাকব। তারা যাতে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করিনি। আমরা রাজপথে আছি। রাজপথ আমরা ছাড়ব না। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পালন করব।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, গতকাল বিএনপির বৈঠক অনেক বড় হয়েছে। আমাদের আলোচনা সভাও বড় সমাবেশে রূপ নেয়।
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, পরের নির্বাচনে আমাদের নেতৃত্ব দেবেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তাদের নেতা কে? গত নির্বাচনে তারা কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচন করেছে।
তিনি বলেন, গতকাল কোনো সহিংস পরিস্থিতি কোথাও হয়নি। ফরিদপুরে তাদের মিটিং থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছে। তবে তা বেশিদূর গড়ায়নি।
তারা শোভাযাত্রা করলে আমরা শান্তি সমাবেশ করব বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আদালতের বিষয়। এ বিষয়ে আমরা সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিইনি। আদালতের বিষয়ে দলীয় ভূমিকা যুক্তিসঙ্গত হবে না।
তার মতে, জামায়াত ছাড়া বিএনপি শক্তিহীন। বিএনপি-জামায়াত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জামায়াত ছাড়া তাদের চলা অচল। বেশি লোক আনতে হলে তাদের জামায়াত ছাড়া চলবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় এলে একাত্তরের চেতনা বিলুপ্ত হয়ে যাবে: ওবায়দুল কাদের
ভারতের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়: কাদের
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত আ.লীগ: কাদের
ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে আরও জেগে ওঠুন: জনগণের প্রতি ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে দেশবাসীকে আরও জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে এবং আমাদের শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য সত্যিকারের জনগণের বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এখন আরও বেশি করে জেগে উঠতে হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেয়ার সময় বিএনপি নেতা বর্তমান 'স্বৈরাচারী' সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার জন্য সর্বস্তরের জনগণকে তাদের চলমান যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়া যার মাধ্যমে একটি গণমুখী সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হয়।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, আসুন আমরা সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাই। আমাদের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়ে যেতে হবে। এছাড়া দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা এই লক্ষ্যে এগিয়ে আসছেন এটি একটি ভাল লক্ষণ।
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসাবে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং দেশের আরও নয়টি বিভাগে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করেছে অন্যান্য সমমনা বিরোধী দল, জোট ও সংগঠনগুলো।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নয়াপল্টনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি।
৩০ ডিসেম্বর ৩৩টি বিরোধী দলের গণমিছিলের পর এটি ছিল একযোগে আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর বিএনপিসহ ৩২টি সমমনা বিরোধী দল একযোগে আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসাবে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে।
আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের রাজনৈতিক দল হিসাবে পরিচয় দেয়। আমরা জানি যে তারা অনেক পুরানো পরিচিত দল। কিন্তু এখন তারা তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় থাকার জন্য তাদের এখন পুলিশ ও আমলাদের ওপর নির্ভর করতে হবে।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটের অধিকারের জন্য বর্তমান সরকারকে অপসারণে সব বিরোধী রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। তারা ১০ দফা দাবি আদায় করে এই আন্দোলন সফল করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই আমরা রাজ্য সংস্কারের জন্য ২৭ দফার কথা বলছি।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাড়ি তৈরি করছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের লোকজন লুটপাট ও বিদেশে বিপুল অর্থ পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে।
এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ব্যাংকসহ সব প্রতিষ্ঠানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান টার্গেট জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাকশাল শাসন পুনরুদ্ধার করা। আমরা সরকারকে তা করতে দেব না। এই শাসনের পতন নিশ্চিত করতে আমরা জনগণের সঙ্গে একসাথে এগিয়ে যাব।
ফখরুল বলেন, তাদের দলের অনেক নেতাকর্মী এখনও অসহনীয় দুর্ভোগ সহ্য করে কারাগারে বন্দি।
তিনি সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও প্রচার বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানিসহ দলের গ্রেপ্তার হওয়া কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবি জানান।
ফখরুল অভিযোগ করেন, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহে তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা চালিয়েছে।
আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার বলত বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করে। তবে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ১০টি সমাবেশ ও পরবর্তী কর্মসূচির আয়োজন করেছি।
তিনি বলেন, আগামী দিনেও তারা একইভাবে জনগণের সঙ্গে একত্রে সরকারকে উৎখাত করতে এবং রাষ্ট্রের সংস্কারে তাদের ২৭ দফা বাস্তবায়নে তাদের সব কর্মসূচি পালন করবেন।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণে অবস্থান কর্মসূচি সফল করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, জনগণ জেগে উঠেছে বলে এই সরকারকে যেতেই হবে।
তিনি বলেন, আমরা এই শাসনকে নিচে ঠেলে সরিয়ে দিতে চাই না। আমরা একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে এর পতন নিশ্চিত করতে চাই।
আব্বাস বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাসী হওয়ায় তাদের দল কোনো সহিংসতার আশ্রয় নিতে চায় না। সরকার অহেতুক আতঙ্কে ভুগছে। বিএনপি কোনো বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি চায় না। আমরা সরকারকে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। এমনটা করলে পরিণতি ভালো হবে না। জোর করে ক্ষমতায় থাকার দিন শেষ।
তিনি তাদের দলের ১০ দফা দাবি মেনে নিয়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান।
এদিকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিলে এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হয়।
এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ একই কর্মসূচি পালন করে, বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কের কাছে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসি ক্রসিংয়ে এলডিপি এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের পূর্ব পাশে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং আরামবাগে ক্লাব ও গণফোরাম (মন্টু)।
আরও পড়ুন: ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ বানচালে নয়াপল্টনে সংঘর্ষ করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল
ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কর্মকর্তাদের অপসারণ করছে সরকার: মির্জা ফখরুল
সরকারকে আবার ধাক্কা দিতে গেলে বিএনপির পা ভেঙে যাবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকারকে আবার ধাক্কা দিতে গেলে বিএনপির পা ভেঙে যাবে।
তিনি বলেন, দয়া করে আর ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করবেন না। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির কোমর ভেঙেছে, আবার ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করলে পা ভেঙে যাবে।
বুধবার বিকালে রাজধানীর মিরপুরে শাহ আলী ঈদগাহ ময়দানে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি অস্থিরতা তৈরি করতে চায়: তথ্যমন্ত্রী
ড. হাছান বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। ক’দিন আগে আইএমএফ (আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল) রিপোর্ট দিয়েছে-বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন পৃথিবীর ৩৫তম। আমরা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেছিলাম, দেশ ছিল ৬০তম। আমরা গত ১৪ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশকে এবং পাকিস্তানকে বহু আগেই পেছনে ফেলেছি।
এই উন্নয়ন বিএনপি, খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের পছন্দ হয় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে সরকার উন্নয়নের চাকাকে ধাবমান চাকায় পরিণত করে আজকে উন্নয়নের মহাসড়কে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সেই সরকারকে তারা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চায়। তারা ১০ ডিসেম্বর ধাক্কা দিতে চেয়েছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ কোনও ধাক্কায় পড়ে যাওয়ার দল নয়, বরং যে ধাক্কা দেয় সে-ই পড়ে যায়। ১০ তারিখ সেটিই প্রমাণ হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর বিএনপি আমাদের ধাক্কা দিতে গিয়ে তারাই পড়ে গিয়ে নয়াপল্টন থেকে গরুর হাটে চলে গেছে, তাই আজকে সুর পাল্টে ফেলেছে' উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, আজকে মির্জা আব্বাস বক্তব্য রেখেছেন আমরা কোনও সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চাই না। অর্থাৎ ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করে বুঝতে পেরেছে ১০ ডিসেম্বর তাদের কোমর ভেঙে গেছে। সুতরাং এখন লাইনে এসেছে, বলে কী—আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় দেবো।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি এখন কর্মসূচি দিয়েছে ১৬ তারিখ নাকি তারা গণমিছিল করবে। আমরা রাজপথে নেমেছি, আমরা রাজপথ ছাড়বো না, আমরা রাজপথে থাকবো। কারণ, এই রাজপথেই জন্ম আওয়ামী লীগের। আর বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। রাজপথ আর কাউকে দখলে নিতে দিবো না।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি, যে দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে বাংলাদেশে পর্দাপণ করেছিলেন, সে দিনই আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা লাভ করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে যখন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়, তখন আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯.৫৪ শতাংশ। আমরা আজ পর্যন্ত সেই রেকর্ড ভাঙতে পারিনি।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থীর মৃত্যু মানবাধিকারের লঙ্ঘন: তথ্যমন্ত্রী
ভারতীয় সাংবাদিকদের সফর দু’দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেবে: তথ্যমন্ত্রী
স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় ইসি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল৷
বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনোত্তর মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
সিইসি বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কিছু সংকটের কথা শোনা গেছে। ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণে ধীরগতি হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে এমন সমস্যা কোন ভোটে দেখতে চায়না ইসি। তাই সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেবে না: আনিসুর রহমান
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধীরগতির কারণ পর্যালোচনাও করবে কমিশন বলেও জানান তিনি।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ফিঙ্গার প্রিন্টের সমস্যা কম ছিল। তবে নানা কারণে নির্বাচনে ভোট কাস্টিং এ ধীরগতি কম ছিল। ইভিএম এ ভোট সংকট দূর করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এর আগে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নানা বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এতে নির্বাচন কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকরা ভোটের দিনের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতির কথা ইসিকে অবহিত করেন।
সভায় গণমাধ্যমকর্মীরা রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে নিজেদের দেখা অভিজ্ঞতার বিষয়গুলো তুলতে গিয়ে ভোটারদের বাধা দেয়া, ইভিএম ত্রুটি ধরা পড়া, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না পাওয়ার কথা বলেন।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ভোটাররা এখনও অভ্যস্ত হয়ে উঠেনি ইভিএমে। অনেকের হাতের ছাপ না মিলায় রংপুরে ভোটগ্রহণ ধীরগতি হয়েছে। আরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
মতবিনিময় সভায় সিইসি ছাড়াও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিল।
পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মী, সদ্য সমাপ্ত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসাররা, নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও অংশ নেন এই সভায়।
আরও পড়ুন: শর্ত পূরণ হলে নিবন্ধন পেতে পারে জামায়াত: নির্বাচন কমিশনার
সিসি ক্যামেরা ব্যবহারে ভোট কেন্দ্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: নির্বাচন কমিশনার
বিএনপি ক্ষমতায় এলে একাত্তরের চেতনা বিলুপ্ত হয়ে যাবে: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকবে না।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপিকে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারি না।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বুধবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় যোগ দিতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: গোলাপবাগে সমাবেশ করে বিএনপি ‘অর্ধেক পরাজিত’: ওবায়দুল কাদের
এছাড়া পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে বঙ্গবন্ধু ঢাকায় ফিরে আসেন।
কাদের বলেন, বাংলাদেশের আরেক নাম শেখ মুজিবুর রহমান। যতদিন এই ভূমি থাকবে বঙ্গবন্ধু থাকবেন।
বুধবার বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বিরোধী দলের কড়া সমালোচনা করে বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫৪টি দল হাত মিলিয়েছে। কিন্তু ৫৪ দল কী করবে? তারা কিছু করতে পারে না।
কাদের বলেন, বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে যা ধ্বংস করেছিল হাসিনা তা মেরামত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা একদিনে শত শত সেতু ও শত শত রাস্তার উদ্বোধন করেছেন। শেখ হাসিনাই পারেন, একমাত্র শেখ হাসিনাই পারেন। আসুন আমরা তার হাতকে শক্তিশালী করি।
স্থানীয় গণমাধ্যমের সমালোচনা করে কাদের বলেন, বিএনপির শাসনামলে ৫০ দিনও তিনি ঘরে থাকতে পারেননি। এখন বিএনপির দুই নেতা ২৬ দিন ধরে কারাগারে ছিলেন।
এছাড়া কিছু মিডিয়া এমনভাবে লিখছে যেন তারা ২৬ হাজার বছর ধরে জেলে ছিল।
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
আরও পড়ুন: নেতার দরকার নেই, চৌকস কর্মী চাই: ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদের
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের