রাজনীতি
শেরপুরে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী কারাগারে
শেরপুরে পুলিশর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির গ্রেপ্তার ১৫ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার বিকালে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আসামিদের শেরপুর আদালতে সোপর্দ করলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর আল মামুন আগামী ২৮ নভেম্বর রিমান্ড শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকালে শহরের রঘুনাথ বাজার এলাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে ৬ পুলিশসহ অন্তত ২১ জন আহত হয়। এসময় পুলিশ ১০১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি এবং ২২ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই ঘটনায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে ৬৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১৫০ থেকে ২০০ নেতাকর্মীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুর রহমান বাদী হয়ে পুলিশ অ্যাসল্টের অভিযোগে এ মামলাটি দায়ের করেন। ঘটনাস্থল ও পুলিশের অভিযানে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে বুধবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে, পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. শওকত হোসেন ঢাকায় একটি বেসরকারি সংস্থার প্রশিক্ষণে থাকলেও তাকে পুলিশের মামলায় আসামি (১৭)করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকালের ঘটনায় পুলিশ অ্যাসল্টের অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ৬৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতানামা আরও দেড়শ’-দুইশ’ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার ভিডিওচিত্র দেখে এ মামলায় ইতোমধ্যে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- নালিতাবাড়ী উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক দুলাল হোসেন, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মালেক, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর কবির খান. রিয়াদ, শহর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. খালেদুজ্জামান আসিন।
জেলা বিএনপি’র সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি জানিয়েছেন।
দেশে এখন সরকার হটানোর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে: ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে এখন সরকার হটানোর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে, কোন শক্তি নেই পরাজিত করার।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি জেলার কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কবিরহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিএনপির মসহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের দায় মুক্তি দিতে সংবিধানে কুখ্যাত আইন প্রণয়ন করেছে, ভুলিনি মির্জা ফখরুল। ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ড। জাতীয় নেতাদের খুনিদের বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। আমরা ভুলিনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যা করার জন্য গ্রেনেড হামলা করেছেন। বিএনপি আমাদের মারতে চায়, হত্যা করতে চায়। কথায় কথায় বলে, ৭৫ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার।
আরও পড়ুন: দেশে এখন সরকার হটানোর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে: ওবায়দুল কাদের
তিনি আরও বলেন, লন্ডনে থাকা দণ্ডিত নেতা তারেক রহমান নাকি তাদের নেতা। বিএনপি তাকে নেতা মানতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ তাকে নেতা মানতে পারে না। তার নেতৃত্ব বাংলাদেশের মানুষ কোনদিনও পছন্দ করবে না, ঘৃণা করবে। ১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড জেনারেল জিয়াউর রহমান, ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমান। এই খুনিরা আওয়ামীলীগকে সহ্য করে না। এ দল আওয়ামীলীগকে সহ্য করতে পারে না, শেখ হাসিনাকে সইতে পারে না। লন্ডন থেকে বলে হাসিনা, তুইও বলে, তুমিও বলে। বেয়াদপির একটা সীমা আছে।
সেতুমন্ত্রী বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আজকে খুনের মামলার আসামি গ্রেপ্তার করতে গেলে, তাদের দলের নেতা ফখরুল সাহেব, আপনিসহ আপনার নেতারা যে সব কথা উচ্চারণ করেন, যে সব ভাষায় কথা বলেন, পতন ঘটাবেন। আল্লাহ যাকে ক্ষমতায় রাখবে, কেউ কি তার পতন ঘটাতে পারবে। পতন আপনাদের হবে। আপনাদের পতন নেতিবাচক রাজনীতির জন্য অনিবার্য। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবো।
কবিরহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আমিন রুমির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক রায়হানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এমপি, জেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, যুগ্ম-আহ্বায়ক এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্লাহ খাঁন সোহেল।
আরও পড়ুন: বিএনপির বিরুদ্ধে লাল কার্ড দেখাবে জনগণ: ওবায়দুল কাদের
খেলা হবে ডিসেম্বরে, আওয়ামী লীগ প্রস্তুত: ওবায়দুল কাদের
বিএনপির আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিতে নতুন নাটক তৈরি করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, তাদের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিতে সরকার নতুন নাটকের চিত্রনাট্য তৈরি করছে।তিনি বলেছেন, ‘আমরা অনেক ঘটনা, অনেক উত্থান-পতন এবং দমনমূলক কর্মকাণ্ড, প্রাণহানি, জোরপূর্বক গুম, খুন এবং মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলা দেখেছি। আমরা এখন দেখছি যে তারা (আওয়ামীলীগ) অগ্নিসংযোগ সহিংসতার কথা বলছে। আদালত চত্বর থেকে জঙ্গিদের ছিনতাইয়ের একটি নতুন নাটকও দেখেছি।’এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার ‘অশুভ’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে নতুন নাটকের চিত্রনাট্য লিখছে। জনগণের মূল দাবি নিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য।বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্যের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী কারাগারে
ফখরুল বলেন, সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক মামলা দায়েরের পুরনো খেলায় লিপ্ত হয়েছে।তিনি বলেন, কারওয়ান বাজারে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপির ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও সেখানে এমন ঘটনা ঘটতে দেখেনি কেউ। বিস্ফোরণের শব্দ না হওয়ায় প্রত্যক্ষদর্শীরাও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।এই বিএনপি নেতা বলেন, ইতোমধ্যেই বিএনপির সঙ্গে জড়িত সাড়ে চার হাজার শনাক্ত ও ১০ হাজার অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে ৯৬টি মামলা হয়েছে। ‘এর মানে তাদের পুরোনো খেলা শুরু হয়েছে। তারা ঘটনাগুলো ঘটাবে এবং আমরা মামলার মুখোমুখি হব এবং এভাবে আমরা আদালতে যেতে ব্যস্ত থাকব এবং তারা তাদের কাজ সেরে ফেলবে।’ভোট কারচুপির নতুন কৌশলমির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের সময় এলে ক্ষমতাসীন দলগুলো কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার নতুন কৌশল উদ্ভাবন করে।তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় শক্তিশালী আন্দোলন। ‘এই শাসন অপসারণের একমাত্র উপায় হল জনগণের ঐক্য গড়ে তোলা এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্দোলন চালানো ।‘ ‘সেই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংসদ ও নতুন সরকার গঠিত হবে এবং এভাবে জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি হবে,’ ফখরুল আশা প্রকাশ করেন।বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। ‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে।’তিনি আওয়ামী লীগ শাসনের পতন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেফখরুল বলেন, পুলিশ, সিভিলসহ সব প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের তোষামোদ করতে ব্যস্ত। ‘দুর্নীতিকে সম্পূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে তারা সবচেয়ে খারাপ কাজ করেছে। এমন কোনো খাত নেই যেখানে তারা দুর্নীতি করেনি।’তিনি বলেন, সংসদ সদস্যরা ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দের টাকা ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যানদের মধ্যে বিতরণ করেন। ‘এমনকি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বয়স্ক ও বিধবা ভাতা থেকে ১০-২০ শতাংশ ভাগ পান। জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছে এবং এর মূল কাজ জনগণের টাকা লুট করা।বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ এখন জাতির জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘যদি আমরা আমাদের কাঁধ থেকে এই বোঝা সরাতে না পারি, তবে আমরা সবাই তাদের সঙ্গে ডুবে যাব। আমরা ডুবে যাচ্ছি।’ঢাকার নয়াপল্টনে জনসভা নিশ্চয়ইসরকার এখনও তাদের দলকে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় চূড়ান্ত সমাবেশের অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা যেমন সবসময় আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমাদের কর্মসূচি পালন করি, আমরা অবশ্যই ১০ ডিসেম্বর সেখানে সমাবেশ করব।তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কোনো ঝামেলা না করে সমাবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা যাতে প্রোগ্রামটি সুন্দরভাবে করতে পারি তার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিন।’বিএনপি নেতা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের আন্দোলন চলছে বলে তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চান। ‘এখন সরকারের দায়িত্ব শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে আমাদের সহযোগিতা করা।’
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট বাংলাদেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে: বিএনপি
বিএনপির সমাবেশ সফল করতে সরকার সহায়তা করছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলছেন, বিএনপির সমাবেশ সফল করতে সরকার সহায়তা করছে। একই সঙ্গে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্য হচ্ছে খালি কলসির মতোই। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে যেভাবে বাগাড়ম্বর তারা করছেন, এতে মনে হচ্ছে তাদের খালি কলসি বেশি বাজছে।
তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে সতর্ক পাহাড়ায় থাকবেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির বিরুদ্ধে লাল কার্ড দেখাবে জনগণ: ওবায়দুল কাদের
মন্ত্রী বলেন, তারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন গেল ১২-১৩ বছর ধরে। ১০ ডিসেম্বর কতটুকু কী হবে; সেটা আমরা জানি ও বুঝি। কারণ তারা তো সারাদেশে সমাবেশ করেছেন। সমাবেশের নামে কোনো কোনো জায়গায় পিকনিক করেছেন। কোনো কোনো জায়গায় তারা বিশৃঙ্খলাও করেছেন।
এছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের যে হাঁকডাক দিয়েছিল, তার কোনো বাস্তবিক প্রতিফলন ছিল না। আমাদের একটি জেলার কোনো একটি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে যত মানুষ হয়েছে, তাদের মহাসমাবেশেগুলোতেও সে রকম ছিল না।
সমাবেশে বড় দেখাতে বিএনপি একই লোক বারবার দেখাচ্ছে বলেও দাবি করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
হাছান মাহমুদ বলেন, তারা বারবার একই লোককে জড়ো করেছেন। সমাবেশে যোগ দিতে বরিশাল থেকে লঞ্চে করে তাদের লোকজন চট্টগ্রামে গিয়েছেন। সিলেটের সমাবেশে গেছে কুমিল্লা থেকে। ঢাকা থেকেও গেছে। এখানেও কী হবে; আমরা জানি বুঝি।
বিএনপি যাতে সমাবেশ করতে পারে, সে জন্য সরকার সর্বোচ্চ সহায়তা করছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী।
তিনি জানান, আর সে জন্যই তারা নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে পেরেছে। আর আমরা যখন বিরোধীদলে ছিলাম, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা আমাদের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে, বোমা হামলা চালিয়েছে। বহু মানুষকে হতাহত করেছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের কাউন্সিল ৮ ও ৯ ডিসেম্বর
এছাড়া ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আমি নিজেও আহত হয়েছি। তাদের সমাবেশে আজ পর্যন্ত একটি পটকাও ফুটেনি। সরকার নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। বিধায় এভাবে নির্বিঘ্নে তাদের পক্ষে সমাবেশ করা সম্ভব হয়েছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী কারণে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চান? তারা বিশাল সমাবেশ করবেন, কেউ বলছেন ১০ লাখ, আবার কালকে এক টেলিভিশনে দেখলাম ২৫ লাখ। কিন্তু নয়াপল্টনের সামনে ৫০ হাজার মানুষ ধরে আরকি।’
মন্ত্রী বলেন, নয়াপল্টনের সামনে এক কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তা যদি বন্ধ করা যায়, তাহলে ৫০ হাজার মানুষ ধরে। তাই নয়াপল্টনে তাদের সমাবেশ করার উদ্দেশ্যের মধ্যে বোঝা যায় তাদের সমাবেশ আগে থেকেই ফ্লপ।
কাজেই সে রকম সমাবেশ করতে হলে পূর্বাচল ছাড়া আর কোনো জায়গা আমি দেখছি না। কারণ ১০ কিংবা ২০ লাখ মানুষের জন্য পূর্বাচল ছাড়া তো আর কোনো জায়গা আমাদের চোখে পড়ছে না।
তিনি আরও জানান, তারা কেন নয়াপল্টনের সামনে সমাবেশ করতে চায়। সেটি সহজেই অনুমান করা যায়। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। হেফাজতে ইসলাম যে ধরনের বিশৃঙ্খা সৃষ্টি করেছে, তারাও সেটা করতে চায়। তারা প্রয়োজনে গাড়িঘোড়া ভাঙচুর, অগ্নিসন্ত্রাস করতে চায়। মানুষের সম্পদের ওপর হামলা পরিচালনা করতে চায়। এভাবে তারা বিশেষ একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ তা হতে দেবে না।
আরও পড়ুন: রংপুর সিটি নির্বাচন: আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা
রংপুর সিটি নির্বাচন: আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা
২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হচ্ছেন অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।
তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীরা ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ২৯ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আগামী ৮ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতি ছাড়াই চলবে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিস্তারিত তফসিল ঘোষণা
রংপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবদুল বাতেন।
রংপুরের মেয়র, ২৭ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৯৩টি কেন্দ্রে মোট তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন ভোটার তাদের ভোট দেবেন। রংপুর সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২১ ডিসেম্বর ২০১৭।
আরও পড়ুন: রংপুর সিটি নির্বাচন ২৭ ডিসেম্বর
আ.লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা শুক্রবার
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট বাংলাদেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উভয় সংকটে বাংলাদেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
তিনি বলেন, ‘দেশ প্রায় খাদে পৌঁছে গেছে। একদিকে অর্থনৈতিক সংকট, অন্যদিকে রাজনৈতিক সংকট। এটি একটি সংকটময় মুহূর্ত।’
অবিলম্বে এসব সংকটের সমাধান না হলে দেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এই বিএনপি নেতা।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতাকারীরা ‘জনশত্রু’: ফখরুল
মঙ্গলবার রাজধানীর আসাদ গেট এলাকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদের সঙ্গে তার বাসায় দেখা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
১৮ নভেম্বর, রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে সমর্থন আদায়ের জন্য লিফলেট বিতরণের সময় সিরাজগঞ্জে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের হামলায় আহত হন রুমানা।
ফখরুল আশা প্রকাশ করেন, সন্ত্রাস ও দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে একপাশে রেখে দেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের মধ্যে সদিচ্ছা থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে এমন গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছে যে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন না হলে এবং জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচন না হলে তা থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে না।বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশ চলবে কীভাবে?
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশি দেশগুলোর অনেক সমস্যা থাকলেও তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করছে এবং তাদের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা রেখেছে।
ফখরুল বলেন, ‘এমনকি পাকিস্তানেও নির্বাচনের পরিবেশ রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা তা করতে পারিনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য এই সংকট সৃষ্টি করেছে।’
ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকারকে সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস না করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকতে পারে না। তারা তাদের প্রতিপক্ষকে সহ্য করতে পারে না এবং তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের প্রতিপক্ষকে খতম করতে চায়। তারা সন্ত্রাস ছাড়া শাসন করতে পারে না, এটা তাদের পুরনো অভ্যাস।’
রাজধানীতে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, এতে আওয়ামী লীগের দুর্বল শাসনব্যবস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
ফখরুল বলে, ‘আমরা সর্বত্র চোর, চুরি, গুন্ডামি ও সংঘর্ষ দেখি। তারা (পুলিশ) অনেক কিছু করছে এবং তারা একজন দিনমজুরকে গুলি করেছে। কিন্তু তাদের (পুলিশ) সামনে জঙ্গিরা কীভাবে উধাও হয়ে গেল।’
আরও পড়ুন: লুটপাট, মানি লন্ডারিংয়ের কারণে ব্যবসায় বিপর্যয়: ফখরুল
বিরোধী নেতাকর্মীদের গুলি করা বন্ধ করুন: পুলিশকে ফখরুল
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে: বিএনপি
বিএনপি সরকারের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দামের মধ্যে বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি মানুষকে হত্যা করার মতোই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সরকারকে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বলেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে।এটা কেবল মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।
আরও পড়ুন: লুটপাট, মানি লন্ডারিংয়ের কারণে ব্যবসায় বিপর্যয়: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, এমন সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে যখন চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে এবং মূল্যস্ফীতি চরম পর্যায়ে বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। তারা বিদ্যুতের দাম আরও বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই।’
ফখরুল বলেন, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে জনগণ সরকার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
আগের দিন, সরকার ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) রিভিউ আপিল নিষ্পত্তি করে শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।
ফখরুল বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গণবিরোধী। ‘এই অনির্বাচিত শাসক জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিটি খাতে দুর্নীতি করে অর্থনীতির যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলা করা সরকারের পক্ষে অসম্ভব মনে হচ্ছে। ‘তারা এখন মানুষের ওপর দুর্ভোগ চাপিয়ে দিচ্ছে, কারণ তারা আইএমএফ থেকে ঋণ পেতে মরিয়া।’
বিএনপি নেতা বলেন, দুর্নীতি কমাতে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের জন্য সরকার আগে পদক্ষেপ নিলে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা আরও সহজ হতে পারত।
আরও পড়ুন: বিরোধী নেতাকর্মীদের গুলি করা বন্ধ করুন: পুলিশকে ফখরুল
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতাকারীরা ‘জনশত্রু’: ফখরুল
লুটপাট, মানি লন্ডারিংয়ের কারণে ব্যবসায় বিপর্যয়: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মূলত ব্যাপক লুটপাট ও বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে ব্যবসায়ীরা খুব কঠিন সময় পার করছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বড় ব্যবসায়ী এখন একটি কথা বলছে যে তারা খুব খারাপ সময়ের মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের ব্যবসা এবং কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারাও এখন এমন পরিস্থিতিতে যে তাদের শ্রমিকদের মজুরি দেয়ার মতো টাকাও নেই।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার অর্থনৈতিক সংকটের জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করছে। ‘হয়তো এর পেছনে কিছু কারণ আছে। কিন্তু গত ১০ বছরে ৮৬ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এরমধ্যে গত এক বছরে ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ব্যাপক লুণ্ঠন ও অর্থপাচারে লিপ্ত হয় এমন দেশের অর্থনীতিতে কি থাকতে পারে?’
আরও পড়ুন: বিরোধী নেতাকর্মীদের গুলি করা বন্ধ করুন: পুলিশকে ফখরুল
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এখন ব্যবসায়ীদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রণোদনা ও সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো ডলারের ঘাটতির কারণে নতুন এলসি খুলতে পারছে না এবং এর আগে রিজার্ভ থেকে বিপুল অর্থ লুট করা হয়েছে। রিকশাচালক, হকারসহ সাধারণ মানুষ এখন বলছে এই সরকার চোর।’
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মুক্তি ও সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে জনগণ জেগে উঠেছে। ‘মানুষ রাস্তায় নেমে আসায় ইতোমধ্যে একটি সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এই বৃদ্ধ বয়সে বর্তমান শাসনকে পরাজিত করার জন্য আমাদের প্রতিটি সমাবেশ থেকে আমি আরও একটি মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত হচ্ছি।’
৭ জনকে হত্যা করার মূল্য দিতে হবে সরকারকে:
ফখরুলের অভিযোগ করে বলেন, শনিবার বাঞ্ছারামপুরের সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ শাখার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়াকে বিনা উসকানি ও কারণ ছাড়াই পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এটা কেমন একটা দেশ। তাদেরকে জনগণের আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকারের জন্য চলমান আন্দোলনে নয়ন মিয়াসহ দলের সাত নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। ‘আমরা আমাদের সাত যোদ্ধাকে হারিয়েছি এবং সরকারকে এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।’
ফখরুল সরকারকে সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই নিরাপদে ক্ষমতা ছাড়তে বলেন। ‘অন্যথায়, ইতোমধ্যে তৈরি হওয়া উত্তাল গণতরঙ্গ আপনাকে সুনামির মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।’
সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছেন এমন অভিযোগ তুলে তিনি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতাকারীরা ‘জনশত্রু’: ফখরুল
ঢাকার জনসভা থেকেই বৃহত্তর আন্দোলন শুরু, বললেন ফখরুল
ছাত্রলীগের কাউন্সিল ৮ ও ৯ ডিসেম্বর
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম বার্ষিক কাউন্সিল আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের কাউন্সিল হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন হল ইউনিট ও কলেজ ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শনিবার
জয় জানান, আগামী ৩ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক কলা ভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কাউন্সিলও অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, আগামী ২ ও ৩ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) ছাত্রলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
পদায়ন নিয়ে অবৈধ অর্থ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে জয় বলেন, এগুলোর কোনও প্রমাণ ছাড়াই নিছক অভিযোগ।
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ আমাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত নথি ও প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ করে, আমরা ব্যবস্থা নেব। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এমন একটি সংগঠন যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে।
আরও পড়ুন: প্রতিহিংসার রাজনীতির হোতাই হচ্ছে বিএনপি: কাদের
সুনামগঞ্জে আ.লীগের সম্মেলনের সঙ্গে কারও মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক নেই: কাদের
বিরোধী নেতাকর্মীদের গুলি করা বন্ধ করুন: পুলিশকে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অবৈধভাবে গুলি চালানো বন্ধ করুন। অন্যথায় আপনাদের প্রতিটি কাজের জন্য একদিন জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
রবিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদল নেতা নয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেছেন... আমরা এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই, এবং আমরা তার হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার শপথ নিই।’
তিনি আরও বলেন, দাবি আদায়ে রাজপথে নেমে দলের চলমান আন্দোলনে এ পর্যন্ত তাদের দল ও সহযোগী সংগঠনের ছয় নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে জনগণ গর্জন করছে: ফখরুল
বিএনপি নেতা পুলিশকে সতর্ক করে বলেন, ‘এই আলোচনা সভা থেকে আমি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলতে চাই অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে এবং সংবিধান লঙ্ঘন করে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাবেন না। কারণ, আপনাদের প্রতিটি কাজের জন্য আপনাকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
২০০৮ সাল থেকে 'চিকিৎসার' জন্য লন্ডনে নির্বাসিত তারেকের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর। বিএনপি ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন আলোচনা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে।
এর আগে শনিবার, বাঞ্ছারামপুরের সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ ইউনিট ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নয়ন মিয়া (২২) দলের সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলিতে গুরুতর আহত হন।
নয়নকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আগামী শনিবার ( ২৬ নভেম্বর) কুমিল্লা শহরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের সমর্থনে স্থানীয় বাজারে লিফলেট বিতরণের সময় পুলিশ কোনও কারণ ও উসকানি ছাড়াই নয়নকে গুলি করে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশে একটি মারাত্মক প্রতিকূল পরিস্থিতি বিরাজ করছে যেখানে মানুষ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে না। ‘জনগণের ভোটের অধিকারসহ সকল অধিকার সরকার কেড়ে নিয়েছে। হারানো অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা আন্দোলন করছি এবং রাজপথে জীবন বিসর্জন দিচ্ছি।’
বিএনপি নেতা বলেন, একটি 'ফ্যাসিবাদী' শাসন তাদের প্রতিপক্ষ, যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা কমই চিন্তা করে, তাই তারা খুব কঠিন সংগ্রামে নেমেছে। ‘তাদের একমাত্র লক্ষ্য যেকোনও উপায়ে ক্ষমতায় থাকা।’
‘সরকার তার পায়ের তলায় মাটি হারিয়েছে এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে এটি একটি জনশত্রুতে পরিণত হয়েছে…তারা এমন ভাষায় কথা বলে যে এটি একটি রাজ্য বা রাজা। কিন্তু বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী যা একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
ফখরুল বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের মালিক কিন্তু ক্ষমতাসীনরা তা ছিনিয়ে নিয়েছে। ‘তাদের (এএল) শরীরের রসায়নে দুটি জিনিস রয়েছে। ‘একটি সন্ত্রাসবাদ কারণ তারা হত্যা, ভীতি প্রদর্শন করে সবকিছু দখল করতে চায় এবং অন্যটি লুণ্ঠন করে কারণ তারা সবকিছু চুরি করতে চায়।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি থাকা লেখক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য এবং সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করায় ফখরুল সরকারের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সব অধিকার ফিরে পেতে জনগণ তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, যিনি যুক্তরাজ্য থেকে তাদের দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতাকারীরা ‘জনশত্রু’: ফখরুল
ঢাকার জনসভা থেকেই বৃহত্তর আন্দোলন শুরু, বললেন ফখরুল