রাজনীতি
আ.লীগ নেতারা ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী হয়েছে: ফখরুল
ব্যক্তিগত আক্রমণ করার জন্য ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা কীভাবে ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী হয়েছে তা জনগণ ভালো করেই জানে।
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, দলের অনেক নেতা নিজের উপার্জনে কিংবা পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করছেন।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, কাদের শনিবার সব ধরনের নৈতিকতার ঊর্ধ্বে গিয়ে তাকে নিয়ে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘তিনি (কাদের) আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে আমরা দুবাই থেকে টাকা পাই এবং আমি টাকা নিয়ে মিথ্যা বলছি। আমি ওবায়দুল কাদেরকে বলতে চাই, আমাদের বেশি চাপ দেবেন না। কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে।’
আরও পড়ুন: পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের সবাই জানে আওয়ামী লীগ নেতারা কী করে এবং কীভাবে অর্থ উপার্জন করে। ‘বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে আপনারা কী করছেন,তা এদেশের মানুষ জানে। রাতারাতি ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী বনে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে কারা কানাডা,সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করছে এবং কারা নানাভাবে বিদেশে টাকা পাচার করছে তার সব তথ্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে আছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমরাও জানি আমেরিকায় কে কত ব্যাংকের মালিক, আর কে কত ঘর বানিয়েছে...এটা এদেশের করদাতার টাকা। আপনারা সেই টাকা লুটপাট করছেন।’
ফখরুল বলেন, একটি বড় দলের মহাসচিব তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অশালীনভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা খুবই দুঃখজনক। ‘আপনি যদি ব্যক্তিগত পর্যায়ে আক্রমণ করেন তবে আপনি এটি মোকাবিলা করতে পারবেন না। আপনি কীভাবে জনগণের টাকা লুট করেছেন তার তথ্য একদিন প্রকাশিত হবে।’
এর আগে শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, মির্জা ফখরুল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে বিদেশ থেকে তহবিল পাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন,ফখরুল দুবাই থেকে টাকা নিচ্ছেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
কাদেরের অভিযোগকে নস্যাৎ করে ফখরুল বলেন, আমরা পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি। আমরা কারও টাকা নিয়ে রাজনীতি করি না। আমাদের দলের লোক এবং আমাদের প্রত্যেক সদস্য আমাদের সমাবেশ করার জন্য তাদের নিজস্ব অর্থ দিচ্ছেন। এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য।’
রংপুরে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে তাদের শনিবারের সমাবেশ অনেক বড় বলে মন্তব্য করে আ.লীগ সাধারণ সম্পাদকের সমালোচনা করে তিনি বলেন,‘ক্ষমতাসীন দল যানবাহনে ও জনগণের টাকা ব্যবহার করে তাদের কর্মসূচিতে লোক এনেছে, কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে রাখা ২২ হাজার চেয়ার পূরণ করতে পারেনি। তাহলে আপনারাই নির্ধারণ করুন কত লোক সেখানে জড়ো হয়েছিল।’
ক্ষমতাসীন দল এত শক্তিশালী হলে বিএনপির সমাবেশে বাধা দিতে কেন ক্ষমতাসীন দল পরিবহন বন্ধ করে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাতে দলীয় ক্যাডারদের লেলিয়ে দেয়, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা, রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন উপলক্ষে রবিবার নানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর সকালে সারাদেশে দলের সকল কার্যালয়ে তাদের দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বেলা ১১টায় বিএনপির জ্যৈষ্ঠ নেতারা পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।
একই দিন দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করবে দলটি।
এছাড়া দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ও সকল ইউনিট সারাদেশে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সংবাদপত্রে সম্পূরক প্রকাশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা, রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সামরিক ও বেসামরিক জনগণ যৌথভাবে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে। যা জিয়ার ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত করেছিল।
বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে উদযাপন করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর ফ্রন্ট সংগঠনগুলো একে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে বিবেচনা করে।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৭ নভেম্বরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত দুঃশাসন থেকে মুক্ত করে আবারও বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে।
তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বৈরাচারী শাসনকে পরাজিত করতে হবে।’
বিএনপি ক্ষমতায় এলে গোটা দেশ গ্রাস করবে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্ষমতায় এলে গোটা দেশ গ্রাস করবে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি (ক্ষমতায় থাকাকালে) দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছে। অর্থনীতিও ভেঙে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকেও সম্মান করা হয়নি। স্বাধীনতার আদর্শের অস্তিত্ব ছিল না।’
শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে কাদের এসব কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার সময় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম।
তিনি বলেন, ওই অবস্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও বিএনপি নেতাদের দলত্যাগ করা উচিত: ওবায়দুল কাদের
চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বই এক তীব্র আর্থিক সংকটের সম্মুখীন।
রংপুরে বিএনপির জনসভার সঙ্গে তাদের কাউন্সিলের তুলনা করে ওবায়দুল কাদের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে শেখ হাসিনার উপস্থিতি ছাড়া জেলা পরিষদে কতজন উপস্থিত হয়েছেন তা দেখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে যোগদানকারী বেশিরভাগ নেতাকর্মী দুই-তিন দিন আগে এসে খোলা আকাশের নিচে সময় কাটাচ্ছেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল টাকার বিছানায় জীবন-যাপন করছেন। তিনি যত বেশি অনুষ্ঠান সাজাতে পারবেন, তত বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। দুবাই থেকে টাকা আসছে।’
তিনি বলেন, আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের জনসভায় ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেবেন।
ঢাকা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদকে সভাপতি এবং পনিরুজ্জামান তরুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের সুস্থ, তবে বিশ্রাম প্রয়োজন: চিকিৎসক
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এখন শঙ্কামুক্ত: চিকিৎসক
বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার দলের এমপিরা বর্তমান সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। কেননা তাদের মূল লক্ষ্য আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সরাসরি বলতে চাই, শেখ হাসিনার অধীনে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমাদের একমাত্র দাবি এই সরকারের পদত্যাগ।’
শনিবার রংপুরে সরকারবিরোধী এক বিশাল সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর জলাবদ্ধতা সরকারের অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্পের ফল: ফখরুল
এসময় বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, সরকারকে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। ‘আমাদের সংসদ সদস্য হারুন, রুমিন ও জাহিদ দলের নির্দেশে (সংসদ থেকে) পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। সরকারকে অবশ্যই একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে যা একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং এর অধীনে একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের দ্বারা ধ্বংস হওয়া রাষ্ট্র, অর্থনীতি ও রাজনীতি মেরামতের জন্য বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পর একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।
বিভাগীয় পর্যায়ে দলের পরিকল্পিত সমাবেশের অংশ হিসেবে রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে এ কর্মসূচির আয়োজন করে রংপুর মহানগর বিএনপি।
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে সমাবেশে যোগ দেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।
যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের আশপাশে এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পূর্বে পুলিশের অভিযানে পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের কারণে প্রতিবন্ধকতার মুখে তিন দিন অক্লান্ত কষ্ট সহ্য করে এবং কঠোর পরিশ্রম করে সমাবেশ সফল করায় শনিবার ফখরুল রংপুরবাসীকে অভিনন্দন জানান।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিএনপিকে ভয় না পেলে সরকার কেন বিএনপির জনসভায় বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করে হামলা চালায়?
আরও পড়ুন: পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
ফখরুল বলেন, ‘একটি দল এবং একজন ব্যক্তি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) গত ১৫ বছর ধরে গোটা দেশকে ধ্বংস করেছে এবং আমাদের দমন-পীড়ন করেছে… তারা অর্থনীতিকে চিবিয়ে খেয়ে ধ্বংস করেছে। তারা এখন পুরো বাংলাদেশকে খেয়ে ফেলতে চাইছে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগই তাদের একমাত্র দাবি, কারণ এটি দেশের সব অর্জনকে ধ্বংস করেছে। ‘আপনারা যেদিকেই তাকাবেন, তাদের চুরি দেখতে পাবেন। তারা রাস্তা ও সেতু নির্মাণের কাজ থেকে, এমনকি আমাদের দরিদ্র মানুষের জন্য ঘর তৈরির কাজ থেকেও চুরি করছে। তারা সবকিছু খেয়ে ফেলছে, কিছুই ছাড়ছে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হোক; সংবিধান অনুযায়ী তা করা সম্ভব নয় বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
শুক্রবার বিকাল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকে এবং তাদের অনেকেই সেখানে রাত কাটান।
শনিবারের সমাবেশটি বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ। এর আগে প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি খুলনায় অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশকে সফল করতে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ট্রেন, মোটরবাইক, অটোরিকশা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্নভাবে রংপুরে আসেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ অঞ্চলে ধর্মঘট পালন করছে।
তবে রংপুরের ক্ষমতাসীন দল পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
আরও পড়ুন: সরকার বৈদেশিক রিজার্ভ গিলে ফেলেছে: ফখরুল
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিপুল জনসমাগম
আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে ঢাকা ও আশপাশের কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নিয়েছেন।
শনিবার ঢাকার শেরেবাংলা নগর পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দুপুর ১২টা থেকে অনুষ্ঠানস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। দুপুর ২টার মধ্যে পূর্ণ হয়ে যায় মাঠ।
অনুষ্ঠানে বিপুল কাউন্সিলরের উপস্থিতি দেখা যায় এবং দলটির নেতাকর্মীদের রঙিন শার্ট পরে সভায় অংশ নিতে দেখা যায়। একই সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ঢাকা জেলার পদপ্রত্যাশী নেতাদের বড় বড় মিছিল নিয়ে আসতে দেখা গেছে।
এতে উৎসবমুখর পরিবেশ ও আয়োজন উপভোগ করছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। ঢাকা জেলা ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত: সাভার, ধামরাই,দোহার,নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ।
আরও পড়ুন: ২০০১ সালে হত্যাযজ্ঞ চালাতে জঙ্গিদের ভাড়া করেছিল বিএনপি-জামায়াত সরকার: সজীব ওয়াজেদ
২০০১ সালে হত্যাযজ্ঞ চালাতে জঙ্গিদের ভাড়া করেছিল বিএনপি-জামায়াত সরকার: সজীব ওয়াজেদ
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,২০১১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পরপরই লোকেরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ ও ধর্ষণ করতে শুরু করে।
শনিবার তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এক পোস্টে সজীব ওয়াজেদ লিখেছেন, এমনকি উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনগুলোকে অর্থ ও তালিকা দিয়ে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে তারা।
পোস্টে আরও লেখা হয়েছে, ‘তারেক রহমানের নির্দেশনায় বিএনপির ৮ জন নেতার মাধ্যমে জঙ্গিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতো খালেদা জিয়ার সরকার।’
সজীব ওয়াজেদের পোস্টে বলা হয়েছে, ‘এমনকি মন্ত্রীদের চাপের কারণে পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যও বাধ্য হয়েছিল জঙ্গিদের সহযোগিতা করতে।’
পোস্টে তিনি বলেন, ‘পুলিশের হাত দিয়ে জঙ্গিদের কাছে নিরাপদে অর্থ পাঠাতো বিএনপি সরকারের নেতারা। এমনকি কখনো পুলিশ এই জেএমবি জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করলেও, সরকারের চাপে ছেড়ে দিতে বাধ্য হতো; অথবা আদালত থেকে তাদের জামিন দেয়ার জন্য বিশেষ নির্দেশ আসতো সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে।’
পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বিএনপি সরকারের নেতারা পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে জঙ্গিদের কাছে নিরাপদে টাকা পাঠাতেন। এমনকি যদি পুলিশ কখনও কখনও জেএমবি জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করে তবে সরকারের চাপের কারণে তারা তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে বা আদালত থেকে তাদের জামিন দেয়ার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বিশেষ আদেশ আসবে।’
ধাক্কা দিয়ে সরকার ফেলে দেয়া যাবে না: হানিফ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার কচু পাতার পানি নয়, তাই ধাক্কা দিয়ে সরকার ফেলে দেয়া যাবে না।
শনিবার দুপুরে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হানিফ বলেন, বিএনপি স্বপ্ন দেখছেন, সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবেন। এটা আওয়ামী লীগ সরকার। এ দলের শিকড় বাংলার মাটিতে অনেক গভীরে।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি মানবিকতার সঙ্গে বিবেচনা করুন: হানিফ
তিনি আরও বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যত মানুষকে হত্যা করেছেন, ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে তথাকথিত আন্দোলনের নামে যত মানুষকে হত্যা করেছেন, এই পাপের দায়ভার বিএনপিকে বহন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব এমপি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শ্রী সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, কুমিল্লা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান বাবলু সহ কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
সভায় অর্থমন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.হ.ম মুস্তফা কামাল ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে: হানিফ
জনগণ যতদিন চাইবে ততদিন আ.লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবে: হানিফ
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা, রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে রংপুরে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী দলটির বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
শনিবার রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে রংপুর মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশটি নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের আশপাশে এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের অভিযানে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় নির্ধারিত সময়ের আগেই বিএনপির সমাবেশ শুরু
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনও রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে।যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী সেটির সুযোগ নেই বলে তা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন।
শুক্রবার বিকেল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকে এবং তাদের অনেকেই সেখানে রাত কাটায়।
আজকের সমাবেশটি বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ, প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি হয়েছে খুলনায়।
আগামী বছরের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাতে অন্যান্য বিভাগীয় সদর শহরেও অনুরূপ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে দলটি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে রংপুর শহর কার্যত মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়।
সকাল থেকেই বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন এবং কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী সেখানে রাত কাটান।
শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সারাদেশের মধ্যে ট্রেন ছাড়া যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ থাকলেও বিভাগের আট জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা বাধা অতিক্রম করে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, শনিবার তাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য বাধা ও হয়রানি এড়াতে তারা সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন।
সমাবেশকে সফল করতে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ট্রেন, মোটরবাইক, অটোরিকশা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্নভাবে রংপুরে আসেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ অঞ্চলে ধর্মঘট পালন করছে।
তবে রংপুরের ক্ষমতাসীন দল পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেন, তাদের দলের সমাবেশে লোকজন যাতে না আসে সেজন্যই এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
গত সপ্তাহে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাধা অতিক্রম করে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ: জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী
রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পর হত্যাকাণ্ড চালাতে জঙ্গিদের ভাড়া করে: জয়
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পরপরই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ ও ধর্ষণ করতে শুরু করে।
সজীব ওয়াজেদ তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে লিখেন, এমনকি উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনগুলোকে অর্থ ও তালিকা দিয়ে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে তারা।
পোস্টে তিনি লিখেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশনায় বিএনপির ৮ জন নেতার মাধ্যমে জঙ্গিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতো খালেদা জিয়ার সরকার।‘
সজীব ওয়াজেদের পোস্টে বলা হয়, এমনকি মন্ত্রীদের চাপের কারণে পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যও বাধ্য হয়েছিল জঙ্গিদের সহযোগিতা করতে।
এতে বলা হয়, পুলিশের হাত দিয়ে জঙ্গিদের কাছে নিরাপদে অর্থ পাঠাতো বিএনপি সরকারের নেতারা। এমনকি কখনো পুলিশ এই জেএমবি জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করলেও সরকারের চাপে ছেড়ে দিতে বাধ্য হতো, অথবা আদালত থেকে তাদের জামিন দেয়ার জন্য বিশেষ নির্দেশ আসতো সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে।
আরও পড়ুন: রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ: জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী
পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ: জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ব্যবহার করে ধর্মঘট কার্যকর করার অভিযোগের মধ্যে শনিবার হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী রংপুর শহরে সরকারবিরোধী সমাবেশে যোগ দিতে জড়ো হয়েছেন।
শুক্রবার সকাল থেকে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু হলেও বিরোধী দল রংপুরে চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ করতে প্রস্তুত। তবে ক্ষমতাসীন দল রংপুরে পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
শনিবার দুপুর ২টায় রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে মঞ্চ তৈরি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করে শুক্রবার বিকাল থেকে এ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে শুরু করেন।
সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সারাদেশের মধ্যে বাস যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও আশেপাশের ৮টি জেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মাইক্রো বাস, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনে করে নগর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় আসতে দেখা গেছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, শনিবার তাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য বাধা ও হয়রানি এড়াতে তারা রংপুর শহর ও এর আশপাশের এলাকায় আগাম অবস্থান নিয়েছেন।
শুক্রবার ঢাকা থেকে মাত্র কয়েকটি বাস রংপুরে আসলেও সকাল থেকে কোনও বাস রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে কোনও গন্তব্যে ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধর্মঘটের কারণে রংপুরগামী আন্তঃজেলা বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে অন্য জেলার বাসগুলো রংপুরে প্রবেশ করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেছেন, তাদের দলীয় সমাবেশে লোকজন যাতে আসতে না পারে সেজন্যই এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, পরিবহন ধর্মঘট ও ক্ষমতাসীন দলের তৈরি করা অন্য সব বাধা উপেক্ষা করে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার লাখ লাখ মানুষ শনিবার তাদের কর্মসূচিতে অংশ নেবে।
গত সপ্তাহে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের হরতাল কার্যকর করা হয়েছিল, তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাধা অতিক্রম করে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বিএনপি তার চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করে।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের দ্বারা পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনও রাজনৈতিক সরকারের অধীনে হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনরা বর্তমান সংবিধানে সে সুযোগ নেই বলে প্রত্যাখান করে আসছে।
শনিবারের সমাবেশটি হবে বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ। এরআগে প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি খুলনায় করেছে দলটি।
২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাতে অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও অনুরূপ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে বিএনপি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের
মামলা পুনরুজ্জীবিত: সরকারবিরোধী আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা