রাজনীতি
বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কম: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানী, তুরস্ক এবং আশেপাশের সার্কভুক্ত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি অনেক কম।
বুধবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে তথ্য অধিদপ্তর প্রকাশিত পদ্মা সেতুভিত্তিক সংবাদ সংকলনের সাতটি খন্ডের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে দেশের অর্থনৈতিক বিষয়ে বিএনপি মহাসচিবের নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান বলেন, আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলবো, তিনি শিক্ষক ছিলেন আমিও শিক্ষকতা করি, এখনও পার্টটাইম পড়াই। মাস্টার হিসেবে একজন প্রাক্তন মাস্টারের কাছে অনুরোধ, মাস্টার সমাজের যাতে বদনাম না হয়, সেজন্য তার একটু পড়াশুনা করা দরকার। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির দিকে তাকে একটু তাকাতে বলবো। ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে, সেটি ৮.৬%। ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ যুক্তরাজ্যে ৯.১%, জার্মানীতে ৭. ৯%, রাশিয়াতে ১৭.১%, তুরস্কে ৭৩.৫%, নেদারল্যান্ডে ৯.৬%।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলংকায় ৩৯.১%, পাকিস্তানে ১৩.৮%, ভারতেও ৭ শতাংশের ওপরে। আমাদের দেশে মে মাস পর্যন্ত সেটি ৬ শতাংশের একটু ওপরে ছিল, সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে ৭ শতাংশ হয়েছে, যেটি আজকে সমস্ত পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। দেশে এখনও এই কম মূল্যস্ফীতি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভবপর হয়েছে। এবং বিশ্ব বাজারে ধীরে ধীরে ভোগ্যপণ্যের দাম কমছে, আমরা আশা করছি দু-এক মাসের মধ্যে এর সুফল পাবো।’
এদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অফিসে আসার সময় প্রেসক্লাবের সামনে দেখেছি জনা পঞ্চাশ মানুষ দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করছে। আশেপাশের গাছপালায় তার চেয়ে বেশি কাক পাখি আছে। সাড়ে ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে তাদের হুমকি-ধামকির মধ্যেই জনগণ আমাদের আরও দু’বার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। এ ধরনের হুমকি-ধামকি তাদেরকে হাস্যকর বানাচ্ছে এবং এসবে কোনো কাজ হবে না। দেশে যথাসময়ে নির্বাচন হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী সমস্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেমন- ভারত, ইংল্যান্ড, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে, অস্ট্রেলিয়া, জাপানে যেভাবে হয় ঠিক একইভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে এবং এবং বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।’
আরও পড়ুন: ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি, জুনে ৭.৫৬ শতাংশ
মন্ত্রী এ সময় তার নির্দেশে পদ্মা সেতুভিত্তিক দুই হাজারেরও বেশি সংবাদের সংকলন দ্রুত প্রকাশের জন্য তথ্য অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, পৃথিবীতে আমাজান নদীর পরেই সবচেয়ে খরস্রোতা নদী হচ্ছে পদ্মা। এবং আমাজানের ওপর এখনও কোনো সেতু নির্মিত হয়নি। দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণ ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। পদ্মা সেতু শুধুমাত্র একটি সেতু নয়, পদ্মা সেতু বাঙালির গর্ব, সক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক। এই পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আবার প্রমাণ করেছেন যে, কোনো রক্তচক্ষু তাকে দমাতে পারে না, কোনো ষড়যন্ত্রও তাকে থামাতে পারে না। সমস্ত ষড়যন্ত্রকে উপড়ে ফেলে তিনি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন দেশকে, জাতিকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারেন। তাই আমরা আশা করি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায়, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছেবে ২০৪১ সাল নাগাদ কিংবা তার আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে।
দেশে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে গত অর্থবছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা যথার্থ বর্ণনা করে ড. হাছান বলেন, প্রথমত করোনা দ্বিতীয়ত ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দা চলছে। ইউরোপের ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়ামসহ সমগ্র পৃথিবীতে সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ক’দিন আগে সমস্ত নাগরিকদের কাছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য মোবাইলে বার্তা পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে বার্তাটি পড়ে শোনান তিনি।
সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসারদের মধ্যে মো. আবদুল জলিল এবং ইয়াকুব আলী গ্রন্থমোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
সিইসির প্রশংসা করলেও বর্তমান ইসির সঙ্গে সংলাপে যোগ দেবে না বিএনপি
বিএনপিকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানোয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের প্রশংসা করলেও সরকার পরিবর্তন না হলে দলটি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে কোনো সংলাপে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যৈষ্ঠ নেতা মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যোগ দিতে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমরা এতে অংশ নিইনি। কারণ আমরা নির্বাচন কমিশন বুঝি না, জানি না, মানিও না।’
আরও পড়ুন: লোডশেডিং সরকারের ভুল নীতির ফল: বিএনপি
এক সমাবেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা চান বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে ও বর্তমান সরকারের বিদায়ের পর নতুন সরকারের অধীনে ইসি পুনর্গঠিত হোক। ‘আমরা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং আমরা সেই কমিশনের সংলাপে যোগ দেব।’
বিএনপিকে বারবার ইসিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে- সিইসির এমন মন্তব্যের জবাবে আব্বাস বলেন, ‘আমরা আপনাকে (সিইসি) সাধুবাদ জানাই। আপনি বিএনপিকে বারবার আমন্ত্রণ জানাবেন কারণ বিএনপি ছাড়া নির্বাচন করতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো ইসিই বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না: বিএনপি
বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন করার ক্ষমতা বাংলাদেশে কারো নেই বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপি।
লোডশেডিং সরকারের ভুল নীতির ফল: বিএনপি
ভুল নীতির কারণে সরকার লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন।
সোমবার লোডশেডিং নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিএনপি চেয়ার পার্সনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো বিদ্যুৎ প্রকল্প নেয়ার আগে এর স্থায়িত্ব মূল্যায়ন করতে হয়। কিন্তু সরকার ক্ষতির মূল্যায়ন না করেই জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে কী পরিণতি হবে তা তারা বিবেচনা করেনি।’
তা না করার ফলে মানুষ এখন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হবেন বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটি কেবল একটি ব্যয়বহুল লোডশেডিং হয়ে উঠেছে।’
টুকু বলেন, ‘সরকার জনগণের টাকা লুটপাটের ‘অশুভ’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভাড়ায়চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। যেকোনো দুর্নীতিবাজ এবং ফ্যাসিবাদী শাসন এমন কাজ করে।’
লোডশেডিং নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে সহায়ক হবে কি না জানতে চাইলে টুকু বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তারা আমদানি ব্যয় কমাতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। মজুদের ঘাটতির কারণে জ্বালানি ও গ্যাস আমদানি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
তিনি বলেন, সরকার দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত মজুদ নিয়ে বড়াই করে আসছে। ‘কোথায় গেল সেই রিজার্ভ, হঠাৎ হারিয়ে গেল কেন? সরকার একটি প্রচারণাও চালায় যে আমরা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশকে ছাড়িয়ে গেছি। কিন্তু দেশ এখন অর্থনৈতিক সংকটে। এর জন্য আমি সরকারকে দায়ী করব।’
বিএনপি নেতা বলেন, অতীতে জনগণকে লোডশেডিংয়ের জন্য টাকা দিতে হতো না। কিন্তু জনগণকে এখন লোডশেডিংয়ের জন্য টাকা দিতে হচ্ছে। এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।’
এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার তড়িঘড়ি করে বেসরকারি খাতকে সব সেরা পরিকল্পনা দিয়েছে এবং রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলিকে সেরা সমাধান হিসাবে নিয়ে এসেছে। আমি মনে করি এগুলো ছিল খারাপ এবং বিপথগামী পরিকল্পনা ‘
বিদ্যুৎ উৎপাদন সরকারের হাতে রাখার পরামর্শ দিয়ে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে এখন ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হতো না। কিন্তু সরকার এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করছে।’
আরও পড়ুন: কাল থেকে এলাকাভিত্তিক ২ ঘণ্টা লোডশেডিং
আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো ইসিই বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না: বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেয়া অর্থহীন, কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কোনো কমিশন নিরপেক্ষ বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, গত দুই নির্বাচনে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কোনো কমিশনই বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না।
রবিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করার পর তারা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু দেখা গেল ভোটের আগের রাতেই ব্যালট ভর্তি করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় আপনারা (সাংবাদিকরা) কীভাবে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেব বলে আশা করেন? ইসি কী করবে? তাদের কিছু করার ক্ষমতা নেই।’
ফখরুল বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে কি হবে না তা নির্ভর করছে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রকৃতির ওপর। ‘আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাহলে আমরা ইসির আলোচনায় যোগ দিই কি না দিই তাতে কি হবে?’
দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য রবিবার সকালে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসি আলোচনা শুরু করার সময় বিএনপি নেতা এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, জনগণ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বা বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন দেখতে চায় না।
আরও পড়ুন: সরকার পতনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি: আব্বাস
তিনি বলেন, ‘তাই এই কমিশনের কোনো সংলাপ, আলোচনা বা ইভিএম ইস্যুতে আমরা কোনো মন্তব্য করছি না। কারণ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। সরকারের পরিবর্তন না হলে এবং নিরপেক্ষ সরকার না এলে দেশে নির্বাচন হবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, দেশের প্রধান সংকট হলো এখানে গণতন্ত্র নেই। ‘নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রথম দরজা। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেশে চারটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে চিরকালের জন্য ক্ষমতায় টিকে থাকতে এই ব্যবস্থা বাতিল করেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, এটা সত্য যে অনেক দেশে দলগত সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রের চর্চা করে আসছে।
ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি হলো আমাদের দেশে একটি রাজনৈতিক দল আরেকটিকে বিশ্বাস করে না। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না তা আওয়ামী লীগ নিজেই আগের নির্বাচনগুলোতে প্রমাণ করেছে। এমনকি তারা জোরপূর্বক স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কারচুপি করেছে।’
আরও পড়ুন: যাত্রাপথে ভোগান্তিতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের আনন্দ নেই: বিএনপি
ঈদ আসলেই আওয়ামী পরিবহন সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে: রিজভী
সরকার পতনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি: আব্বাস
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মির্জা আব্বাস বলেছেন, তাদের দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য নয়, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনের জন্য বিএনপি প্রস্তুত হচ্ছে না। বরং এই সরকারের পতন নিশ্চিত করার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
শনিবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের যশোর শাখার নেতা বদিউজ্জামান ধানি হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে।
যশোর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান ধানি (৪২) কে গত ১২ জুলাই যশোর শহরে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: যাত্রাপথে ভোগান্তিতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের আনন্দ নেই: বিএনপি
সমাবেশে বক্তব্যে এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, তাদের দল সরকারকে আর দুঃশাসন ও দমনমূলক কাজ করতে দেবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্বাস বলেন, সরকার বদিউজ্জামানের হত্যাকাণ্ডকে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের পরিণতি হিসেবে বর্ণনা করে খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটা পরিষ্কার করতে চাই যে এটি কোনও অভ্যন্তরীণ বিবাদ নয়। বিএনপির কর্মীদের ভয় দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা আর কোনো হত্যা দেখতে চাই না। এবার আমরা প্রতিরোধ ও প্রতিবাদে নামব। এই সরকারকে আর রেহাই দেয়া হবে না।’
বিএনপি একটি পতিত রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে এমন মন্তব্যের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করেন আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘আমি বলব বিএনপি যদি পতিত দল হয়, তাহলে এত ভয় কেন? কেন আমাদের মিছিল-মিটিং করার অনুমতি নেই?’
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করলেও বিএনপি শক্তিশালী অস্তিত্ব নিয়ে রাজনীতিতে রয়েছে।
এই বিএনপি নেতা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের জনরোষের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে তাদের (আওয়ামী লীগের) শীর্ষ নেতারা কখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন তার পরিণতি নিয়ে ভাবতে বলেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনকে ভয় পাওয়া উচিত নয়। কারণ দলটির নেতারা তাদের শাসনামলে দেশে ব্যাপক উন্নয়নের বড়াই করেন। ‘আমরা এমন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব যখন সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হবে এবং শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না।’
আরও পড়ুন: ঈদ আসলেই আওয়ামী পরিবহন সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে: রিজভী
এক হাজার পদ্মা সেতু করেও জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে না আ.লীগ: বিএনপি
বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন, সেহেতু দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার যেহেতু আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, তাই সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায় মান্য করে। এসময় তিনি আশ্বস্ত করেন, দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিশ্চয়ই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ন্যাশনাল স্টেকহ্ল্ডোর কানসালটেশন অন ইনস্টিটিউশনাল অব প্যারালিগ্যাল অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ, যেখানে আইনের মাধ্যমে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন জনগণকে সুষ্ঠু- নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে। এটার জন্য কারও দরজায় গিয়ে তদবিরের দরকার হবে না।বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। এভাবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশেও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। ভোট হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে তারা শুধু দৈনন্দিন কাজ করবার জন্যই থাকবে। সেটা আইনের মধ্যেই আছে। আমরা আশা করবো সবাই নির্বাচনে আসবে।বিএনপির নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি বিনা অপরাধে কারাগারে থেকে থাকে, রাজনৈতিক কারণে থেকে থাকে অবশ্যই মুক্তি পাবে। কিন্তু কেউ যদি মামলার আসামি হিসেবে থেকে থাকে, তাহলে আদালত ছাড়া তার মুক্তি সম্ভব না।মামলাজট কমাতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতিককালে মামলা বেশি হচ্ছে। মামলাজটের সঠিক পরিসংখ্যান জানতে একটা কমিটি করা হয়েছে। তারা প্রকৃত মামলার পরিমাণ আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে জানাতে পারবে।অনুষ্ঠানে আইনি সহায়তাকারী বা প্যারালিগ্যাল কর্মীদের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন এনজিও’র সহায়তায় ৪০টি জেলায় প্যারালিগ্যাল কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে ১০টি জেলায় এ কার্যক্রম রয়েছে। জার্মান দাতা সংস্থা জিআইজেড’র আর্থিক সহায়তা এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার, জি আই জেড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আন্দ্রেয়াস কুক ও রুল অব ল প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম হেড প্রমিতাসেন গুপ্তা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
শনিবার শেখ হাসিনার কারবন্দি দিবস পালন করবে আ.লীগ
২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস শনিবার।
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো দিনটিকে ‘শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস’ হিসেবে পালন করে।
১/১১-এর সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ধানমন্ডির সুধা সদনের বাসা থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে দলটি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বেলা ১১টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সভা পরিচালনা করবেন উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
এছাড়া আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দিবসটি পালনের জন্য আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এদিকে, কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ এক বিবৃতিতে, যার যার অবস্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মহান আল্লাহর কাছে দেশবাসীকে প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল বাঙালি হৃদয়ে দেশপ্রেমের বহ্নিশিখা প্রজজ্বলিত করে সংকট জয়ের ঐক্যবদ্ধ সুরক্ষা ব্যুহ সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।
প্রায় ১১ মাস বন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিশেষ সাব-জেল থেকে মুক্তি পান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
পড়ুন: দেশের অর্থনীতি নিয়ে জিএম কাদের ও রিজভীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তথ্যমন্ত্রীর
বাংলদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে: জিএম কাদের
দেশের অর্থনীতি নিয়ে জিএম কাদের ও রিজভীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তথ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শিক্ষিত মানুষ বলে জানতাম। শিক্ষিত হয়েও অর্থনৈতিক ইনডেক্সগুলো না পড়ে যে সমস্ত রাজনীতিবিদরা বক্তব্য দেন, তাদের কি বলবো!’
সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত গবেষণা ও সংবাদ প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ইনডেক্স প্রকাশ করছে। সেখানে ২৫টি দেশের তালিকায় অনেক বড় বড় দেশ আছে, কিন্তু বাংলাদেশের নাম নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই সংবাদগুলো কি এই সমস্ত রাজনীতিবিদরা পড়েন না? না পড়েই তারা যে সমস্ত বক্তব্য রাখছেন, এগুলো তো গুজব রটানোর শামিল। আমি আশা করবো, শিক্ষিত মানুষগুলো যেন অশিক্ষিতের মতো কথা না বলেন।’
শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বক্তব্য ‘বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হতে পারে’ এবং বিএনপিনেতা রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ এখন সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে’- এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের জিডিপির ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ নিরাপদ। সে জায়গায় আমাদের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির মাত্র ১৬ শতাংশ এবং এর বিপরীতে সুদের ব্যয় জিডিপি’র মাত্র দুই শতাংশ। আর জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত সরকারি ঋণ নেয়া যায়। সেই জায়গায় আমাদের ঋণ মাত্র ৩৬ শতাংশ। সুতরাং দেশের অর্থনীতির ভিত শক্ত।’
আরও পড়ুন: কোনো ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়ন ঠেকাতে পারবে না: কাদের
বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এক নয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ করার ক্ষেত্রে কখনো দেরি করেনি, সময় মতো ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার ওপরের দিকে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সেই কারণেই ব্লুমবার্গের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যে ডাটা সংগ্রহ করেছে সেখানে অনেক বড় বড় দেশ পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, তুরস্ক, মেক্সিকো, মরক্কোসহ বহু দেশের নাম থাকা সত্ত্বেও সেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। আমাদের রাজনীতিবিদ যারা এ নিয়ে কথা বলছেন, তাদেরকে বলবো একটু পড়াশোনা করার জন্য।
আইনের শাসন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের নেতিবাচক মন্তব্যের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপিই আদালতের রায় মানে না। বিএনপির আহনজীবীরাই আদালতে প্রধান বিচারপতির দরজায় অর্থাৎ দেশের প্রধান বিচারালয়ে লাথি মেরেছিল। তারা আইন-আদালত কোনটাই মানে না, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়। আর দেশে আইনের শাসন আছে বিধায়ই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যকে আদালতের রায়ে জেলে যেতে হয়, আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার হয়। আর আদালতে শাস্তি পাওয়া সত্ত্বেও বিএনপিনেত্রী বেগম জিয়াকে শেখ হাসিনা তার প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে মুক্ত থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। সেজন্য মির্জা ফখরুলের উচিৎ বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপি যাবে না-এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তো নির্বাচনকেই ভয় পায়। আশা করবো, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তারা ইসির সংলাপে যাবে। সেখানে গিয়ে তাদের ওজর-আপত্তি থাকলে সেটা জানিয়ে আসবে।’
এর আগে এটিএন বাংলার ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এসময় এটিএন বাংলার চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে: কাদের
আ’লীগের হাত ধরে বাঙালি জাতির সব অর্জন এসেছে: তথ্যমন্ত্রী
বাংলদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে: জিএম কাদের
বিদেশি ঋণ নিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে বাংলাদেশের অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার অনেক মিল রয়েছে। দু’দেশই বিদেশ থেকে রেমিটেন্স গ্রহণ করে, পর্যটন ও গার্মেন্টস শিল্প থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।’
বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির প্রধান আরও বলেন, কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় প্রায় দশ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলেছে, কিন্তু সে কারণে দেশটি দেউলিয়া হয়নি। বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গেছে।’
দলের প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কাকরাইল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় পার্টি।
জিএম কাদের বলেন, ‘ঋণের ওপর নির্ভর করে ২০২২-২৩ সালের জাতীয় বাজেট দেয়া হয়েছে। এ জন্য আমরা সরকারকে ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমানোর জন্য অনুরোধ করেছি, কিন্তু এ বিষয়ে সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, অহেতুক ফূর্তি করতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জনগণের কাছ থেকে কর আদায় করতে পারেনি। সাধারণ মানুষ কর দিতে না পারলে এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেন, সরকার বৈদেশিক ঋণ নিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যখন সুদসহ ঋণ শোধ করতে হবে, তখন দেশের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যাবে।
পড়ুন: এরশাদের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
তিনি বলেন, ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে প্রতিদিন ১ কোটি টাকা হারে বছরে ৩৬৫ কোটি টাকা আয় করলে আসল ঋণ পরিশোধ করতে ৯০ বছর সময় লাগবে।
কাদের বলেন, ‘সুদসহ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গেছে।’
জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, ঋণ নির্ভরতার কারণে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়েছে। পরিচালন ব্যয় না কমালে সরকারকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। এ কারণে বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে।
দেশে মেগা প্রকল্পের নামে জনগণের টাকা লুটপাট চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে।
কাদের বলেন, সরকার এখন করের বিনিময়ে অবৈধভাবে অর্জিত হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা বৈধ করার পথ বের করেছে। পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই। কর দিয়ে যদি অপরাধ মাফ হয়, তাহলে খুন-ডাকাতি করেও করের মাধ্যমে বৈধ করা যাবে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় বৃহস্পতিবার সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
পড়ুন: বিদেশিদের কাছে নয়, জনগণের কাছে যান: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী
এরশাদের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার পালিত হয়েছে। যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশে দলের সকল কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এরশাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে কাকরাইল কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সকালে কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দলটির নেতাকর্মী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শ্যামপুর-জুরাইন রেলগেটে জনসভা করবে জাতীয় পার্টি।
অনুষ্ঠান শেষে তিন হাজার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে রংপুরে এরশাদের কবরে ফাতেহা পাঠ করেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
সেখানে দোয়া-মাহফিল-কাম আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর বারিধারায় প্রেসিডেন্ট পার্কে এরশাদ ট্রাস্ট স্মরণ সভার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: জিয়া-এরশাদ-খালেদা দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চেয়েছিল: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী
জেনারেল এরশাদ, যিনি তার নয় বছরের স্বৈর শাসনের পর ১৯৯০ সালের ১৪ জুলাই ক্ষমতাচ্যুত হন। ২০১৮ সালে ৮৯ বছর বয়সে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এরশাদ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক (সিএমএলএ) হিসাবে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৮৬ সালে 'জাতীয় পার্টি' গঠন করেন এবং একই বছর তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে পাঁচ বছরের জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, যা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ব্যাপক প্রতিবাদের সূত্রপাত করে।
বিরোধী দলগুলির একটি সম্মিলিত আন্দোলনের মধ্যে অবশেষে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন রওশন এরশাদ