রাজনীতি
চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস
শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বিএনপি নেতা তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন বলে তার চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মির্জা আব্বাস বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।’
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল জানান, আব্বাসকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।
পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে রফিকুল বিএনপি নেতার দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এর আগে ১৭ মে পেটে ব্যাথা নিয়ে অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র এবং খালেদা জিয়ার শেষ মন্ত্রিসভার সাবেক মন্ত্রী আব্বাসকে রাজধানীর শ্যামলী এলাকার বাংলাদেশ বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
পড়ুন: মির্জা আব্বাস পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি
বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া: মোশাররফ
পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের পৈতৃক সম্পত্তি নয়: বিএনপি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ভুলে গেলে চলবে না বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, কারণ এটি জনগণের টাকায় নির্মিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখন পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বড়াই করছেন। আমরা বলতে চাই পদ্মা সেতু আপনাদের একার নয় এবং এটি আওয়ামী লীগের পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’
সোমবার পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর ‘অশালীন’ মন্তব্যের প্রতিবাদে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি ইউনিটগুলো জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে দল ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী যোগ দেন।
এই সমাবেশে বিএনপি নেতা বলেন, দেশের জনগণ ও করদাতাদের টাকায় পদ্মা সেতু হচ্ছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘মানুষ জানতে চায় পদ্মা সেতু নির্মাণে আপনি মানুষের কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন এবং কত খরচ করেছেন। তারা আরও জানতে চায়, আপনি দুর্নীতির মাধ্যমে কত টাকা পকেটস্থ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেতু নির্মাণের জন্য যে বৈদেশিক ঋণ নেয়া হয়েছিল তা পরিশোধ করতে ভবিষ্যত প্রজন্মকে কত টাকা ব্যয় করতে হবে তাও জনগণ জানতে আগ্রহী।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান বিএনপির
পদ্মা সেতু থেকে খালেদা জিয়াকে নদীতে ঠেলে দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান এই বিএনপি নেতা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য তিনি সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনাও করেন।
তিনি বলেন,‘সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ক্রমবর্ধমান দামের সঙ্গে লড়াই করতে হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের দেশের কৃষক, শ্রমিক এবং দিনমজুর শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাচ্ছে। তাদের পক্ষে বেঁচে থাকা এখন কঠিন।’
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, দেশের মানুষের রোষানল এড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নিজের বাসভবনে আবদ্ধ রয়েছেন। ‘আপনি মানুষকে ভয় পান। এইজন্য আপনি মানুষের সামনে আসেন না।’
আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস ও জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে ফখরুল একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ সুগম করে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ক্ষমতাসীনদের পদত্যাগের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলে `দমনমূলক’ গণমাধ্যম আইন বাতিল করব: বিএনপি
বর্তমান ইসির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে যাবে না: খন্দকার মোশাররফ
খালেদা জিয়া সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান বিএনপির
পদ্মা সেতু থেকে খালেদা জিয়াকে নদীতে ফেলে দেয়া উচিত বলে করা মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘আপনি খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। তিনি দেশের জনগণের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং জনপ্রিয় নেত্রী; যিনি কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি।’
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক হত্যার হুমকির প্রতিবাদ’ শীর্ষক এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে দল ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী যোগ দেন।
এ সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ।
এসময় তিনি তাকে (খালেদা জিয়াকে)উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য তার দলের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ফখরুল বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রী যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য আসাটা অকল্পনীয়।
তিনি বলেন, ‘কোনও সভ্য দেশের মানুষ এ ধরনের মন্তব্য সহ্য করতে পারে না। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) আপনার মন্তব্যের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলছি।’
বিএনপি নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অন্যথায় জনগণ ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ না দিয়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।
এর আগে বুধবার আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা একবার বলেছিলেন পদ্মা সেতু প্যাচওয়ার্ক দিয়ে তৈরি হওয়ায় ব্যবহার করতে গিয়ে ভেঙে পড়বে। ‘এখন তাদের কী করা উচিত? তাদের পদ্মা সেতুতে নিয়ে যেতে হবে এবং সেখান থেকে নদীতে ঠুস করে ফেলে দেয়া উচিত।’
ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এমন আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, কারণ তিনি এখন তার ক্ষমতার অবসান ঘটতে দেখছেন।
খালেদার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, খালেদা জিয়া এখন খুবই অসুস্থ এবং বিদেশে যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ না দিলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
ফখরুল বলেন, ‘এই সমাবেশ থেকে আমরা সরকারের কাছে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মুক্ত করতে এবং সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানাতে চাই।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দলীয় চেয়ারপার্সনকে গণতন্ত্রের আন্দোলনে বাধা দিতে তাকে ‘গৃহবন্দি’ করে রেখেছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
একই বছর তিনি আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫শে তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন।
তবে মুক্তির শর্ত ছিল, তিনি (খালেদা জিয়া) তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ রছরড় বাইরে যাবেন না।
ক্ষমতায় এলে `দমনমূলক’ গণমাধ্যম আইন বাতিল করব: বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতায় এলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ)সহ সকল ‘দমনমূলক’ আইন ও অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করবে বিএনপি।
রবিবার বিএনপি আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ‘ শীর্ষক এক কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিএনপি নেতা আরও বলেন, আগামী দিনে তাদের দল সরকার গঠন করলে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ওয়েজ বোর্ডের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে এবং প্রেস কাউন্সিলকে ক্ষমতায়ন করবে।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকার সংবিধানকে আওয়ামী সংবিধানে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
ফখরুল বলেন, `আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই , আমরা সরকার গঠন করলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতিবন্ধক সব দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও অধ্যাদেশ বাতিল করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্রকে আন্তর্জাতিক রূপ দেয়া সম্ভব নয়। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমল থেকেই বিএনপি সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরাসরি বেগম জিয়াকে ‘হত্যার হুমকি’র শামিল: ফখরুল
বর্তমান ইসির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে যাবে না: খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্পষ্টভাবে বলেছেন, তাদের দল বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে কোনো সংলাপে অংশ নেবে না।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপে অংশ নেয়ার কোনো কারণ নেই। কমিশন সংলাপ করুক বা না করুক সেটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।’
শনিবার বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সম্মিলিত ছাত্র যুব ফোরাম এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু।
আরও পড়ুন: অচিরেই বিএনপিসহ সব দলের সঙ্গে সংলাপ হবে: সিইসি
শিগগিরই বিএনপিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের মন্তব্যের একদিন পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ আরও বলেন, তাদের দল মনে করে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সংলাপের কোনো মূল্য নেই। তাই তাদের (ইসি) সঙ্গে কথা বলার প্রশ্নই আসে না।
আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
তিনি বলেন, সরকার যখন বর্তমান ইসি গঠন করে তখন রাষ্ট্রপতি ও সার্চ কমিটির নাটকে বিএনপি অংশ নেয়নি। ‘যারা এখন কমিশনে আছেন, আমরা তাদের কোনভাবেই স্বীকৃতি দিতে পারি না।’
বিএনপি নেতা বলেন, আমরা যে নির্বাচন চাই তা অবশ্যই শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে।
তিনি বলেন, নির্দলীয় সরকার দেশের দায়িত্ব নিলে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ইসি গঠন করবে। তারপর আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলব।
মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা কৌশল অবলম্বন করেছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি ও জনগণ আর ক্ষমতাসীন দলের ফাঁদে পা দেবে না।
তিনি সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপি থেকে কুমিল্লা সিটি মেয়র সাক্কু আজীবন বহিষ্কার
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের কোনো কিছুর ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলে মন-মেজাজ ভালো নেই। ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ভালো ঘুমাতে পারেন না...অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, সরকার অর্থনীতির সব সূচক জনসমক্ষে প্রকাশ করছে না। ‘সরকার রিজার্ভের কথা বলে। অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার আমাদের রিজার্ভ থেকে ঋণ পরিশোধের তথ্য পুরোপুরি দিচ্ছে না।’
বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পদ্মাসেতু তার জলন্ত দৃষ্টান্ত।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, বরং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপির হাত ধরেই হত্যা-ক্যু- ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষকে নির্মূল করার অপরাজনীতি শুরু করা হয়।
এখনো এই চিহ্নিত মহল ক্রমাগতভাবে দেশের স্বার্থ ও জনকল্যাণ বিরোধী বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী এই গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন ও জনগণকে সতর্ক করতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থ পাচারকারীদের তালিকায় তারেক শীর্ষে: ওবায়দুল কাদের
জনকল্যাণমুখী সৎ-সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেতা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোন ষড়যন্ত্রই একটি জাতিকে পিছিয়ে দিতে পারবে না।
সকল প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে সফলভাবে পদ্মাসেতু নির্মাণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিব ও তাদের নেতারা দুরভিসন্ধিমূলক ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এমনকি বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তথাকথিত হত্যার হুমকি’র বয়ান তৈরি করছে বিএনপি।
গত চার দশকে বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন, তা একমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তার বিবৃতিতে আরও বলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে, আগামীতেও এগিয়ে যাবে।
কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার অগ্রগতির এই গতিধারা থামাতে পারবে না বলেও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও বিএনপি নেতাদের দলত্যাগ করা উচিত: ওবায়দুল কাদের
দেশ ও গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে আ.লীগকে ক্ষমতায় রাখতে হবে: কাদের
আ.লীগ সরকার সংবিধানকে আওয়ামী সংবিধানে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার সব পরিবর্তন করেছে, সংবিধান পরিবর্তন করেছে। সংবিধানের যেই ধারা ছিল তাকে পরিবর্তন করেছে। তারা এটাকে সম্পুর্ণ আওয়ামী সংবিধানে পরিণত করেছে।
শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের এক সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধানের তিনটি অনুচ্ছেদ আছে যে অনুচ্ছেদ সম্পর্কে সংবিধানে সংশোধনী নিয়ে এসেছে, সেখানে কোনদিন হাত দেয়া যাবে না। আজীবন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন হাত দেয়া যাবে না। অর্থাৎ সংবিধানের যে মৌলিক চরিত্র, এটা একটা প্রজাতন্ত্র। জনগণের ভোটে যে নির্বাচিত সরকার, জনগণ এই সংবিধানের পরিবর্তন সাধন করতে পারেন। এটা আর থাকলো না।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ত্রাস করে ক্ষমতায় যায়, সে পরিকল্পনা এবারও করছে তারা।
সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের একটি পরিবেশ তৈরি করতে বলেন তিনি। এটিই এখন বাংলাদেশের একটি বড় সংকট, এ সংকট নিরসন করুন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরাসরি বেগম জিয়াকে ‘হত্যার হুমকি’র শামিল: ফখরুল
ফখরুল বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীকে পদ্মা সেতুতে নিয়ে টুস করে ফেলে দাও- এটা ভয়ংকর কথা। আইন নেই, কানুন নেই, একজন প্রধানমন্ত্রী তিনি বলে দিলেন টুস করে ফেলে দিতে হবে। এটা মেনে নেয়া সম্ভব হয় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বারবার অনুরোধ করছি যে, দেশের যে পরিবেশ তা দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সেটা আর খারাপ না করে কমপক্ষে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করুন।
তিনি আরও বলেন, গত পরশু তার প্রত্যাবর্তন দিবসের একটা অনুষ্ঠানে তিনি বিএনপির ব্যাপারে, বিএনপি নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এবং দেশের যারা শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব তাদের বিরুদ্ধাচারণ করেন। এমনকি পত্রিকার সম্পাদক তাদের বিরুদ্ধে, অর্থনীতিবিদদের বিরুদ্ধেও বলেছেন। আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি, নিন্দা জানাচ্ছি। এটা আ’লীগের স্বভাবসূলভ চরিত্র, সব সময় সন্ত্রাস, ত্রাস করে ক্ষমতায় যায়। সেভাবেই তারা আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পায়তারা শুরু করেছে। ২০১৪ সালে এমন একটা অবস্থা তৈরি করে, ত্রাস করে, সন্ত্রাস করে নির্বাচন করেছিল এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা জনগণকে ভোট দেয়ার কোন সুযোগই দেয়নি। ১৫৪ টি আসনেই বিনা ভোটে নির্বাচিত করে। একই ভাবে সারাদেশে সন্ত্রাসী কায়দায় গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করা ও ১৯ জন প্রার্থীকে বন্দি করা, আদালতকে ব্যবহার করা, নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে আগের রাতেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই যাদের ইতিহাস, আজকের না, শুধু ১৯৭৩ সালে যখন আ’লীগের একক আধিপত্য ছিল এবং জনপ্রিয়তা ছিল তখনও কিন্তু তারা নির্বাচনে কাউকে ছাড় দেয়নি। ওই সময় কুমিল্লার দাউদকান্দিতে কোন এক প্রার্থী খন্দকার মোস্তাকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। ওখানকার ব্যালট বাক্স পর্যন্ত হেলিকাপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। একইভাবে রাশেদ খান মেননের আসনেও হয়েছে। এটাই হলো তাদের স্বভাব। এভাবেই তারা শক্তি প্রয়োগ করে, বল প্রয়োগ করে জোর করে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে চায়। সেটা সেই ক্ষমতাটাও তারা নিয়ে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে ব্যয়বহুল মেগাপ্রকল্প বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
তিনি বলেন, ৭৫ সালে আমরা সবাই জানি পার্লামেন্টে ৫ মিনিটেই ক্যু করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল এই আ’লীগ। এখন তাদের মুখেই যখন গণতন্ত্রের কথা শুনি তখন সেটা একটা হাস্যকর এবং প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। একই ভাবে একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে যখন তিনি কথা বলেন এটা স্বাধীন যে সাংবাদিকতা সেই স্বাধীনতার বিপক্ষে। তিনি যখন একজন বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদকে কটুক্তি করেন তখন সেটা বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা খারাপ ধারণা তৈরি করে। এমনকি যে অর্থনীতিবিদরা মেগা প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছেন, অর্থনীতির অশনী সংকেত নিয়ে কথা বলেছেন তাদেরকেও তিনি গালিগালাজ করতে ছাড়েন নি।
ফখরুল বলেন, ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। ক্ষমতার বাইরে থাকলেই পচনশীল হয় না। বিএনপি হচ্ছে উচ্চগামী একটি দল। আমরা হচ্ছি ঊর্ধ্বগামী দল তা প্রমাণ করার জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনই যথেষ্ট। ওবায়দুল কাদেরের কোন কথাকে গুরুত্ব দেই না আমরা। কারণ তিনি নিজে কোন কথা বলেন না। শেখ হাসিনা যা বলেন পাপেটের মত তিনি সেটাই আওড়িয়ে বলেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি সরকার মো. নুরুজ্জামান নুরু, সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানাসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতারা।
আরও পড়ুন: নতুন ফসল উঠলেও ভুল নীতির কারণে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি
বিএনপি থেকে কুমিল্লা সিটি মেয়র সাক্কু আজীবন বহিষ্কার
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
বিএনপির কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাক্কুকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের এখন থেকে সাক্কুর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ ছিন্ন করতে বলা হয়েছে।
কুমিল্লা সিটির দুই বারের মেয়র সাক্কু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী হয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সাক্কুকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
দলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, সাক্কু দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি থেকে দূরত্ব বজায় রেখে দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালের মে মাসে দ্বিতীয়বারের মতো কুমিল্লা সিটি মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ চেয়েছিলেন বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা সাক্কুর সমালোচনা করেছিলেন।
পরবর্তীতে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া সাক্কু দলীয় সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন না বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ না নেয়া এবং দলের নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করায় সাক্কুর বিরুদ্ধে স্থানীয় বিএনপি নেতারাও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকারকে বহিষ্কার করে।
এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা মহানগর সভাপতি নিজামউদ্দিন কায়সারকে আজীবন বহিষ্কার করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।
আরও পড়ুন: সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামানকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় কায়সারকে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
একইসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা না চালানো এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেন পারভেজকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির আরও ৪ নেতা বহিষ্কার
পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরাসরি বেগম জিয়াকে ‘হত্যার হুমকি’র শামিল: ফখরুল
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতুর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমি বিস্মিত হয়েছি। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তিনি যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, এ ধরনের উক্তি করতে পারেন না। বেগম খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তাকে সরাসরি হত্যার হুমকির সামিল।
মির্জা ফখরুল ১৯ মে, বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের আয়োজনে এক সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেয়া, এটা কখনও একটা স্বাভাবিক ব্যাপার হতে পারে না। আমি বিস্মিত হয়েছি এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি এবং প্রচণ্ড নিন্দা জানাই। এরকম অরাজনৈতিক, অশালীন বক্তব্য আমরা কেউ কখনও আশা করতে পারি না। কিন্তু উনার স্বভাবই এটা। উনি এভাবেই কথা বলেন এবং এভাবেই তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অশালীন ভাষায় কথা বলেন, আচরণ করেন। এটা রাজনৈতিক কোন শিষ্টাচারের মধ্যে পরে না। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এ ধরনের একটি নেতৃত্ব জাতি আজকে সহ্য করছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে ব্যয়বহুল মেগাপ্রকল্প বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
বিএনপি নেতা বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ইদানিং যে সকল কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন, এটা পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভুত, স্বাধীনতা সবকিছুর বাইরে, ভদ্রতার বাইরে কথাবার্তা বলছেন। এই কথাটা বলার অর্থই হচ্ছে একটি হুমকি দেয়ার মত। এটা কল্পনাও করা যায় না। এটা আমরা যারা সুস্থ চিন্তা ভাবনা করি তারা কখনও করতে পারি না। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এ ধরনের বক্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, অন্যথায় আইনের কোন বিষয় থাকলে আমরা তা খতিয়ে দেখবো।
বিদেশিদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন- এমন অভিযোগের ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা তাদের পুরাতন স্বভাব, এটা উনারা সবসময় করে থাকেন। গত দুই নির্বাচন তারা বাক্স লুট করে নিয়ে গেছে। সব সময় জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করা হয়। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটিয়ে এটা তারা করেছিল। সবসময় আ’লীগ মানুষের ওপর দোষ চাপায়। বরং তারাই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। আমেরিকা গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাহায্য চেয়েছেন। নির্বাচনে আমাদের সহায়তা করবেন। আমরা বিদেশিদের কাছে এ ধরনের কাজ করিনি, করিওনা। ১/১১ তে তারাই সামরিক সরকার এনেছিল। সেখানেও তারাই ছিল। সেই সরকারকে তিনি সব রকম বৈধতা দিয়েছিলেন। তিনি করেছেনও তাই। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি আ’লীগ সরকারকে।
নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনে কোন প্রস্তুতি নিচ্ছি না, তবে নির্বাচন কিভাবে হবে সেটা ভাবছি। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার যে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তার পরে নতুনভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার পরিবেশ করতে হবে। সরকারকে জনগণের দাবি মানতে বাধ্য করবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নূর, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মো. আব্দুল জব্বার, পৌর শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েসসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতারা।
আরও পড়ুন: নতুন ফসল উঠলেও ভুল নীতির কারণে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি
বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া: মোশাররফ
নির্বাচনে কারচুপির ইতিহাস রয়েছে বিএনপির: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির কলুষিত নির্বাচনের ইতিহাস থাকায় এখন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অধিকার তাদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে নির্বাচনের ইতিহাস এতটাই কলুষিত... তাদের এই নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকারই নাই।’
১৯৮১ সালে ভারতে নির্বাসন শেষে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বুধবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠানটি হয় এবং এতে তিনি ভার্চুয়ালি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যোগদান করেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারের উন্নয়নে প্রকৃতি ও পরিবেশকে একীভূত করুন: প্রধানমন্ত্রী
তার দলের প্রার্থীর বিজয় ছিনিয়ে নিতে ১৯৯৪ সালের মাগুরা সংসদীয় উপ-নির্বাচনে বিএনপি সরকার কীভাবে কারচুপি করেছিল তা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, নির্লজ্জ কারচুপি খালেদা জিয়ার সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে জনপ্রিয় আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিল।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত খালেদার সংসদ নির্বাচনের-- যা বিরোধী দলগুলো বর্জন করে এবং ভোটাররা এড়িয়ে যান-- কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, একইভাবে ১৯৮১ সালে বিএনপি এবং ১৯৭৭, ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান নির্বাচনে কারচুপি করেছিল।
আরও পড়ুন: আ’লীগ ক্ষমতায় না থাকলে নিত্যপণ্যের জন্য রাজপথে মারামারি হতো: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে বড় পরাজয় বরণ করবে ভালোভাবে জেনে এখন এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়েও বিস্মিত শেখ হাসিনা।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নিয়ে তার প্রশ্ন আছে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, বিএনপির কোনো নেতৃত্ব নেই; সবাই সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী। সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের দিয়ে কোনো নির্বাচনে জয়লাভ করা সম্ভব নয়।
তিনি বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘মানুষ যদি তাদের আন্দোলনে সাড়া না দেয় তবে এর জন্য কে দায়ী হবে।’
তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়ন আওয়ামী লীগের চিন্তা-চেতনার বাস্তবায়ন। তিনি ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ইভিএমের কথা উল্লেখ করেন।
‘আমরা ভোটারদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাই তাদের (বিএনপি) উদ্বেগ অর্থহীন’, তিনি বলেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তার দল জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: এসডিজি বাস্তবায়নে অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার করুন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। এটাই এর সবচেয়ে বড় শক্তি এবং সেই শক্তিতে আমরা ক্ষমতায় থাকায় জনগণের জন্য কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যাপক উন্নয়ন আওয়ামী লীগের কাছে ঋণী। কেননা দলটি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে।
১৭ মে শেখ হাসিনার ৪২তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করে আওয়ামী লীগ। ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি ভারতে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসেন।