রাজনীতি
বর্তমান ইসির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে যাবে না: খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্পষ্টভাবে বলেছেন, তাদের দল বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে কোনো সংলাপে অংশ নেবে না।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপে অংশ নেয়ার কোনো কারণ নেই। কমিশন সংলাপ করুক বা না করুক সেটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।’
শনিবার বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সম্মিলিত ছাত্র যুব ফোরাম এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু।
আরও পড়ুন: অচিরেই বিএনপিসহ সব দলের সঙ্গে সংলাপ হবে: সিইসি
শিগগিরই বিএনপিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের মন্তব্যের একদিন পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ আরও বলেন, তাদের দল মনে করে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সংলাপের কোনো মূল্য নেই। তাই তাদের (ইসি) সঙ্গে কথা বলার প্রশ্নই আসে না।
আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
তিনি বলেন, সরকার যখন বর্তমান ইসি গঠন করে তখন রাষ্ট্রপতি ও সার্চ কমিটির নাটকে বিএনপি অংশ নেয়নি। ‘যারা এখন কমিশনে আছেন, আমরা তাদের কোনভাবেই স্বীকৃতি দিতে পারি না।’
বিএনপি নেতা বলেন, আমরা যে নির্বাচন চাই তা অবশ্যই শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে।
তিনি বলেন, নির্দলীয় সরকার দেশের দায়িত্ব নিলে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ইসি গঠন করবে। তারপর আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলব।
মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা কৌশল অবলম্বন করেছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি ও জনগণ আর ক্ষমতাসীন দলের ফাঁদে পা দেবে না।
তিনি সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপি থেকে কুমিল্লা সিটি মেয়র সাক্কু আজীবন বহিষ্কার
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের কোনো কিছুর ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলে মন-মেজাজ ভালো নেই। ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ভালো ঘুমাতে পারেন না...অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, সরকার অর্থনীতির সব সূচক জনসমক্ষে প্রকাশ করছে না। ‘সরকার রিজার্ভের কথা বলে। অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার আমাদের রিজার্ভ থেকে ঋণ পরিশোধের তথ্য পুরোপুরি দিচ্ছে না।’
বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পদ্মাসেতু তার জলন্ত দৃষ্টান্ত।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, বরং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপির হাত ধরেই হত্যা-ক্যু- ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষকে নির্মূল করার অপরাজনীতি শুরু করা হয়।
এখনো এই চিহ্নিত মহল ক্রমাগতভাবে দেশের স্বার্থ ও জনকল্যাণ বিরোধী বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী এই গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন ও জনগণকে সতর্ক করতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থ পাচারকারীদের তালিকায় তারেক শীর্ষে: ওবায়দুল কাদের
জনকল্যাণমুখী সৎ-সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেতা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোন ষড়যন্ত্রই একটি জাতিকে পিছিয়ে দিতে পারবে না।
সকল প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে সফলভাবে পদ্মাসেতু নির্মাণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিব ও তাদের নেতারা দুরভিসন্ধিমূলক ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এমনকি বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তথাকথিত হত্যার হুমকি’র বয়ান তৈরি করছে বিএনপি।
গত চার দশকে বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন, তা একমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তার বিবৃতিতে আরও বলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে, আগামীতেও এগিয়ে যাবে।
কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার অগ্রগতির এই গতিধারা থামাতে পারবে না বলেও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও বিএনপি নেতাদের দলত্যাগ করা উচিত: ওবায়দুল কাদের
দেশ ও গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে আ.লীগকে ক্ষমতায় রাখতে হবে: কাদের
আ.লীগ সরকার সংবিধানকে আওয়ামী সংবিধানে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার সব পরিবর্তন করেছে, সংবিধান পরিবর্তন করেছে। সংবিধানের যেই ধারা ছিল তাকে পরিবর্তন করেছে। তারা এটাকে সম্পুর্ণ আওয়ামী সংবিধানে পরিণত করেছে।
শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের এক সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধানের তিনটি অনুচ্ছেদ আছে যে অনুচ্ছেদ সম্পর্কে সংবিধানে সংশোধনী নিয়ে এসেছে, সেখানে কোনদিন হাত দেয়া যাবে না। আজীবন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন হাত দেয়া যাবে না। অর্থাৎ সংবিধানের যে মৌলিক চরিত্র, এটা একটা প্রজাতন্ত্র। জনগণের ভোটে যে নির্বাচিত সরকার, জনগণ এই সংবিধানের পরিবর্তন সাধন করতে পারেন। এটা আর থাকলো না।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ত্রাস করে ক্ষমতায় যায়, সে পরিকল্পনা এবারও করছে তারা।
সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের একটি পরিবেশ তৈরি করতে বলেন তিনি। এটিই এখন বাংলাদেশের একটি বড় সংকট, এ সংকট নিরসন করুন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরাসরি বেগম জিয়াকে ‘হত্যার হুমকি’র শামিল: ফখরুল
ফখরুল বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীকে পদ্মা সেতুতে নিয়ে টুস করে ফেলে দাও- এটা ভয়ংকর কথা। আইন নেই, কানুন নেই, একজন প্রধানমন্ত্রী তিনি বলে দিলেন টুস করে ফেলে দিতে হবে। এটা মেনে নেয়া সম্ভব হয় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বারবার অনুরোধ করছি যে, দেশের যে পরিবেশ তা দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সেটা আর খারাপ না করে কমপক্ষে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করুন।
তিনি আরও বলেন, গত পরশু তার প্রত্যাবর্তন দিবসের একটা অনুষ্ঠানে তিনি বিএনপির ব্যাপারে, বিএনপি নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এবং দেশের যারা শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব তাদের বিরুদ্ধাচারণ করেন। এমনকি পত্রিকার সম্পাদক তাদের বিরুদ্ধে, অর্থনীতিবিদদের বিরুদ্ধেও বলেছেন। আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি, নিন্দা জানাচ্ছি। এটা আ’লীগের স্বভাবসূলভ চরিত্র, সব সময় সন্ত্রাস, ত্রাস করে ক্ষমতায় যায়। সেভাবেই তারা আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পায়তারা শুরু করেছে। ২০১৪ সালে এমন একটা অবস্থা তৈরি করে, ত্রাস করে, সন্ত্রাস করে নির্বাচন করেছিল এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা জনগণকে ভোট দেয়ার কোন সুযোগই দেয়নি। ১৫৪ টি আসনেই বিনা ভোটে নির্বাচিত করে। একই ভাবে সারাদেশে সন্ত্রাসী কায়দায় গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করা ও ১৯ জন প্রার্থীকে বন্দি করা, আদালতকে ব্যবহার করা, নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে আগের রাতেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই যাদের ইতিহাস, আজকের না, শুধু ১৯৭৩ সালে যখন আ’লীগের একক আধিপত্য ছিল এবং জনপ্রিয়তা ছিল তখনও কিন্তু তারা নির্বাচনে কাউকে ছাড় দেয়নি। ওই সময় কুমিল্লার দাউদকান্দিতে কোন এক প্রার্থী খন্দকার মোস্তাকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। ওখানকার ব্যালট বাক্স পর্যন্ত হেলিকাপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। একইভাবে রাশেদ খান মেননের আসনেও হয়েছে। এটাই হলো তাদের স্বভাব। এভাবেই তারা শক্তি প্রয়োগ করে, বল প্রয়োগ করে জোর করে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে চায়। সেটা সেই ক্ষমতাটাও তারা নিয়ে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে ব্যয়বহুল মেগাপ্রকল্প বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
তিনি বলেন, ৭৫ সালে আমরা সবাই জানি পার্লামেন্টে ৫ মিনিটেই ক্যু করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল এই আ’লীগ। এখন তাদের মুখেই যখন গণতন্ত্রের কথা শুনি তখন সেটা একটা হাস্যকর এবং প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। একই ভাবে একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে যখন তিনি কথা বলেন এটা স্বাধীন যে সাংবাদিকতা সেই স্বাধীনতার বিপক্ষে। তিনি যখন একজন বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদকে কটুক্তি করেন তখন সেটা বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা খারাপ ধারণা তৈরি করে। এমনকি যে অর্থনীতিবিদরা মেগা প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছেন, অর্থনীতির অশনী সংকেত নিয়ে কথা বলেছেন তাদেরকেও তিনি গালিগালাজ করতে ছাড়েন নি।
ফখরুল বলেন, ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। ক্ষমতার বাইরে থাকলেই পচনশীল হয় না। বিএনপি হচ্ছে উচ্চগামী একটি দল। আমরা হচ্ছি ঊর্ধ্বগামী দল তা প্রমাণ করার জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনই যথেষ্ট। ওবায়দুল কাদেরের কোন কথাকে গুরুত্ব দেই না আমরা। কারণ তিনি নিজে কোন কথা বলেন না। শেখ হাসিনা যা বলেন পাপেটের মত তিনি সেটাই আওড়িয়ে বলেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি সরকার মো. নুরুজ্জামান নুরু, সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানাসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতারা।
আরও পড়ুন: নতুন ফসল উঠলেও ভুল নীতির কারণে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি
বিএনপি থেকে কুমিল্লা সিটি মেয়র সাক্কু আজীবন বহিষ্কার
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
বিএনপির কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাক্কুকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের এখন থেকে সাক্কুর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ ছিন্ন করতে বলা হয়েছে।
কুমিল্লা সিটির দুই বারের মেয়র সাক্কু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী হয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সাক্কুকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
দলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, সাক্কু দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি থেকে দূরত্ব বজায় রেখে দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালের মে মাসে দ্বিতীয়বারের মতো কুমিল্লা সিটি মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ চেয়েছিলেন বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা সাক্কুর সমালোচনা করেছিলেন।
পরবর্তীতে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া সাক্কু দলীয় সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন না বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ না নেয়া এবং দলের নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করায় সাক্কুর বিরুদ্ধে স্থানীয় বিএনপি নেতারাও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকারকে বহিষ্কার করে।
এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা মহানগর সভাপতি নিজামউদ্দিন কায়সারকে আজীবন বহিষ্কার করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।
আরও পড়ুন: সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামানকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় কায়সারকে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
একইসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা না চালানো এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেন পারভেজকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির আরও ৪ নেতা বহিষ্কার
পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরাসরি বেগম জিয়াকে ‘হত্যার হুমকি’র শামিল: ফখরুল
বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতুর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমি বিস্মিত হয়েছি। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তিনি যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, এ ধরনের উক্তি করতে পারেন না। বেগম খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তাকে সরাসরি হত্যার হুমকির সামিল।
মির্জা ফখরুল ১৯ মে, বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের আয়োজনে এক সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেয়া, এটা কখনও একটা স্বাভাবিক ব্যাপার হতে পারে না। আমি বিস্মিত হয়েছি এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি এবং প্রচণ্ড নিন্দা জানাই। এরকম অরাজনৈতিক, অশালীন বক্তব্য আমরা কেউ কখনও আশা করতে পারি না। কিন্তু উনার স্বভাবই এটা। উনি এভাবেই কথা বলেন এবং এভাবেই তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অশালীন ভাষায় কথা বলেন, আচরণ করেন। এটা রাজনৈতিক কোন শিষ্টাচারের মধ্যে পরে না। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এ ধরনের একটি নেতৃত্ব জাতি আজকে সহ্য করছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে ব্যয়বহুল মেগাপ্রকল্প বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
বিএনপি নেতা বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ইদানিং যে সকল কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন, এটা পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভুত, স্বাধীনতা সবকিছুর বাইরে, ভদ্রতার বাইরে কথাবার্তা বলছেন। এই কথাটা বলার অর্থই হচ্ছে একটি হুমকি দেয়ার মত। এটা কল্পনাও করা যায় না। এটা আমরা যারা সুস্থ চিন্তা ভাবনা করি তারা কখনও করতে পারি না। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এ ধরনের বক্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, অন্যথায় আইনের কোন বিষয় থাকলে আমরা তা খতিয়ে দেখবো।
বিদেশিদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন- এমন অভিযোগের ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা তাদের পুরাতন স্বভাব, এটা উনারা সবসময় করে থাকেন। গত দুই নির্বাচন তারা বাক্স লুট করে নিয়ে গেছে। সব সময় জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করা হয়। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটিয়ে এটা তারা করেছিল। সবসময় আ’লীগ মানুষের ওপর দোষ চাপায়। বরং তারাই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। আমেরিকা গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাহায্য চেয়েছেন। নির্বাচনে আমাদের সহায়তা করবেন। আমরা বিদেশিদের কাছে এ ধরনের কাজ করিনি, করিওনা। ১/১১ তে তারাই সামরিক সরকার এনেছিল। সেখানেও তারাই ছিল। সেই সরকারকে তিনি সব রকম বৈধতা দিয়েছিলেন। তিনি করেছেনও তাই। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি আ’লীগ সরকারকে।
নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনে কোন প্রস্তুতি নিচ্ছি না, তবে নির্বাচন কিভাবে হবে সেটা ভাবছি। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার যে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তার পরে নতুনভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার পরিবেশ করতে হবে। সরকারকে জনগণের দাবি মানতে বাধ্য করবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নূর, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মো. আব্দুল জব্বার, পৌর শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েসসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতারা।
আরও পড়ুন: নতুন ফসল উঠলেও ভুল নীতির কারণে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি
বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া: মোশাররফ
নির্বাচনে কারচুপির ইতিহাস রয়েছে বিএনপির: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির কলুষিত নির্বাচনের ইতিহাস থাকায় এখন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অধিকার তাদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে নির্বাচনের ইতিহাস এতটাই কলুষিত... তাদের এই নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকারই নাই।’
১৯৮১ সালে ভারতে নির্বাসন শেষে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বুধবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠানটি হয় এবং এতে তিনি ভার্চুয়ালি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যোগদান করেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারের উন্নয়নে প্রকৃতি ও পরিবেশকে একীভূত করুন: প্রধানমন্ত্রী
তার দলের প্রার্থীর বিজয় ছিনিয়ে নিতে ১৯৯৪ সালের মাগুরা সংসদীয় উপ-নির্বাচনে বিএনপি সরকার কীভাবে কারচুপি করেছিল তা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, নির্লজ্জ কারচুপি খালেদা জিয়ার সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে জনপ্রিয় আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিল।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত খালেদার সংসদ নির্বাচনের-- যা বিরোধী দলগুলো বর্জন করে এবং ভোটাররা এড়িয়ে যান-- কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, একইভাবে ১৯৮১ সালে বিএনপি এবং ১৯৭৭, ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান নির্বাচনে কারচুপি করেছিল।
আরও পড়ুন: আ’লীগ ক্ষমতায় না থাকলে নিত্যপণ্যের জন্য রাজপথে মারামারি হতো: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে বড় পরাজয় বরণ করবে ভালোভাবে জেনে এখন এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়েও বিস্মিত শেখ হাসিনা।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নিয়ে তার প্রশ্ন আছে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, বিএনপির কোনো নেতৃত্ব নেই; সবাই সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী। সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের দিয়ে কোনো নির্বাচনে জয়লাভ করা সম্ভব নয়।
তিনি বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘মানুষ যদি তাদের আন্দোলনে সাড়া না দেয় তবে এর জন্য কে দায়ী হবে।’
তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়ন আওয়ামী লীগের চিন্তা-চেতনার বাস্তবায়ন। তিনি ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ইভিএমের কথা উল্লেখ করেন।
‘আমরা ভোটারদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাই তাদের (বিএনপি) উদ্বেগ অর্থহীন’, তিনি বলেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তার দল জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: এসডিজি বাস্তবায়নে অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার করুন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। এটাই এর সবচেয়ে বড় শক্তি এবং সেই শক্তিতে আমরা ক্ষমতায় থাকায় জনগণের জন্য কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যাপক উন্নয়ন আওয়ামী লীগের কাছে ঋণী। কেননা দলটি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে।
১৭ মে শেখ হাসিনার ৪২তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করে আওয়ামী লীগ। ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি ভারতে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসেন।
অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে ব্যয়বহুল মেগাপ্রকল্প বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের মধ্যে বাংলাদেশ ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিরোধীদলীয় এই নেতা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কার মতো একই পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে। তাই তারা সরকারকে ব্যয়বহুল মেগা প্রকল্পগুলো বাদ দেয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বুলেট ট্রেন, দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, পূর্বাচলে ১১০ তলা বঙ্গবন্ধু বহুতল ভবন কমপ্লেক্স, শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, নোয়াখালী বিমানবন্দর, দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প এবং রাজধানী ঢাকার বাইরে স্থানান্তরের মতো প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ এবং পদ্মা সেতু হয়ে পায়রা বন্দর এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার এবং দোহাজারী হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণসহ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা ইতোমধ্যে এই প্রকল্পগুলোকে ব্যয়বহুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যা কেবলমাত্র সরকারি ঋণের বোঝা বাড়াবে।
আরও পড়ুন: নতুন ফসল উঠলেও ভুল নীতির কারণে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি
সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, ‘আমার মনে হয় বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা আশঙ্কা করছি, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতো বিপদে পড়তে পারে। আমাদের আশঙ্কাকে বাস্তবসম্মত বলা যায়।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ব্যাপকভাবে লুণ্ঠন করে অর্থ উপার্জন করা। ‘অর্থনীতি তখনই চাঙ্গা হবে, যখন জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই বিএনপি নেতা বলেন, বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে তাদের দলের ঐক্য প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ‘আপনারা আমাদের আন্দোলন পরিকল্পনাসহ সবকিছু জানতে পারবেন, আমরা প্রকাশ্যে ঐক্য প্রক্রিয়ার ঘোষণা নিয়ে আসব।’
ফখরুল বলেন, তাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ‘দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি গত ১৩-১৪ বছরের তুলনায় এখন সবচেয়ে বেশি চাপের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, রপ্তানি হ্রাস এবং রেমিট্যান্স হ্রাসের কারণে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে দ্রব্যমূল্য অসহনীয় হয়ে উঠছে। মনে হচ্ছে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত আট মাসে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নেমে এসেছে। আগামী দুই মাসে এটি আরও ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে যদি রপ্তানির তুলনায় আমদানি বাড়তে থাকে এবং রেমিট্যান্সের মাধ্যমে সেই শূন্যতা পূরণ না হয়, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ খুব শিগগিরিই শেষ হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: তীব্র সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশ: বিএনপি
এরকম কতজন পি কে হালদার আছে, জানতে চাই: ফখরুল
নতুন ফসল উঠলেও ভুল নীতির কারণে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকারের ভুল নীতি ও ক্ষমতাসীন দলের নোংরা খেলায় ভরা বোরো ধান কাটার মৌসুমেও ধানের দাম বাড়ছে।
বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে মঙ্গলবার বিএনপির নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার দেশের কৃষি খাতের উন্নয়ন ও কৃষকদের উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
ফখরুল বলেন, ‘এই ভরা মৌসুমে ধানের দাম বাড়ার কথা নয়। বোরো কাটা শুরু হওয়ায় দাম কমার সময় এসেছে। তবে বেড়েছে প্রতিটি জাতের চালের দাম। তার মানে পুরো পরিকল্পনায় কিছু সমস্যা আছে।’
তিনি আরও বলেন, এই ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এমন ব্যক্তিদের কাছে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছে। ‘খাদ্য বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ, মানুষের সেবা করার চেয়ে ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া: মোশাররফ
এই বিএনপি নেতা বলেন, বড় কৃষক ও ধান ব্যবসায়ীরা ধান মজুদ করে কয়েকদিন পর বেশি দামে বিক্রি করে। কারণ আগামী দিনে ধানের দাম বাড়বে এবং তাদের লাভও বাড়বে। এটা তাদের (ক্ষমতাসীন দলের) কৌশল।’
বিএনপি সরকারের কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ফখরুল বলেন, আ.লীগ সরকারের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে সুচিন্তিত পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন,‘প্রান্তিক কৃষকেরা এখন রিকশা ও ভ্যান চালায়, অনেক মধ্যম চাষি কৃষিকাজ ছেড়ে দিচ্ছে; কারণ কৃষি এখন একটি অলাভজনক পেশা। তাই খাদ্যশস্যের চাষ কমছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকার শুধু সেসব কাজ করে যেখানে তাদের নিজস্ব মুনাফা ও কোটি কোটি টাকা কমিশন থাকে। তাই তারা হাওর এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে না।
হাওর অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উজান থেকে আসা পানির কারণে বন্যা হওয়া অনেক পুরনো সমস্যা। ‘বাঁধ নির্মাণ বা জলাধার নির্মাণ করে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। এটি কৃষকদের বছরে দুই-তিনবার ফসল ফলাতেও সাহায্য করবে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কর্মসূচি বা পরিকল্পনা নেয়া হয়নি।’
হাওরাঞ্চলে বাঁধ নির্মাণের নামে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ব্যাপক দুর্নীতি করেছে বলেও অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, হাওর এলাকায় কিছু বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু সেগুলো এতই নাজুক ও দুর্বল যে ২৪ ঘণ্টার পানির চাপ ধরে রাখতে পারে না।
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পর্যবেক্ষণের বরাত দিয়ে ফখরুল বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জের বিশাল এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এ বছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে।
কৃষকদলের পক্ষ থেকে তিনি হাওরে সিমেন্ট ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সুদমুক্ত ঋণ প্রদান, ঋণের সুদ প্রত্যাহার এবং স্বাভাবিক অবস্থা না আসা পর্যন্ত ঋণের কিস্তি স্থগিত করাসহ আট দফা দাবি জানান। হাওর এলাকায় বীমা এবং বাঁধ নির্মাণ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা।
আরও পড়ুন: তীব্র সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশ: বিএনপি
এরকম কতজন পি কে হালদার আছে, জানতে চাই: ফখরুল
মির্জা আব্বাস পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস পেটে ব্যাথা নিয়ে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র এবং খালেদা জিয়ার শেষ মন্ত্রিসভার সাবেক মন্ত্রী আব্বাসকে রাজধানীর শ্যামলী এলাকার বাংলাদেশ বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি জানান, গত রাত থেকে আব্বাস পেটব্যাথায় ভুগছিলেন। ‘সকালে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
রফিকুল বলেন, ইতোমধ্যে এই বিএনপি নেতার কিছু প্রয়োজনীয় মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতালের বাইরে থেকে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককেও ডাকা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া: মোশাররফ
এদিকে দুপুরে হাসপাতালে আব্বাসকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে বিএনপি নেতার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডারদের’ হামলায় গুরুতর আহত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নাটোর জেলা শাখার নেতা এস এম মোস্তফা আনাম ও শফিকুল ইসলাম সুমনকে দেখতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশনে (নিটোর) যান।
আরও পড়ুন: তীব্র সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশ: বিএনপি
ড. আব্দুল মঈন খান এভারকেয়ারে ভর্তি
‘নেত্রী বললেন, ক্ষমতার জন্য দেশে আসিনি’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দেশে ফিরে নেত্রী বললেন, ক্ষমতার জন্য আসিনি। দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে এসেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ভোলা জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে: তোফায়েল আহমেদ
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বাংলাদশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের এই দিনে স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে বাংলাদেশে পা রাখেন। ওই দিনটি এখনও স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে। এক পাশে আমি, অপর পাশে রাজ্জাক ভাই। নেত্রী বললেন, ক্ষমতার জন্য আসিনি। দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে এসেছি।’
তোফায়েল বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তায়িত হচ্ছে। এটাই আমাদের বড় পাওয়া।
আরও পড়ুন: করোনায় প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত: তোফায়েল
জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি দোস্ত মাহামুদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- ভোলা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.মোশারেফ হোসেন,জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন লাভুসহ দলে নেতাকর্মীরা।