রাজনীতি
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: বুধবার ডিসি অফিসে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি
দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার দাবিতে বুধবার সারাদেশের সব জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দেবে বিএনপি।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সমাবেশে ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রীর (খালেদা) বিদেশে চিকিৎসার জন্য তার মুক্তির দাবিতে আগামী ২৪ নভেম্বর (বুধবার) জনগণের সাথে আমাদের নেতাকর্মীরা সকল জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দেবে।
সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ফখরুল। এসময় তিনি বলেন, আন্দোলন জোরদার করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই আমাদের হাতে।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশের কোনো উন্নত কেন্দ্রে যেতে দেয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন: চিকিৎসক
একই দাবি আদায়ে শনিবার রাজধানীসহ সারাদেশে সাত ঘণ্টার গণ-অনশন কর্মসূচি পালন করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ছয়দিন পর গত ১৩ নভেম্বর পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চক্ষু ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
তারা আরও বলেছেন, তিনি এখন একটি গুরুতর কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগছেন। তার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে ফিরে নতুন করে আবেদন করলে সরকার তার আপিল বিবেচনা করবে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি: ফখরুল
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার বিএনপির সমাবেশ
কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা আর নেই
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা (৬৩) আর নেই। অগ্নাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে রবিবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এ রাজনীতিবিদের প্রথম নামাজে জানাযা রাজধানীর মোহাম্মদপুর তার নিজ বাসভবন এলাকায় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এ (কেআইবি) তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সকাল সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় নামাজে জানাযা হওয়ার হয়েছে। বাদ জোহর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহে বাদ তৃতীয় এবং বাদ মাগরিব নিজ জন্মভূমি শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে চতুর্থ নামাজে জানাযা শেষে লাশ দাফন করা হবে।
কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা ১৯৫৮ সালের ৫ জানুয়ারি শেরপুরে নালিতাবাড়ীর ছিটপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
বদিউজ্জামান বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি, নালিতাবাড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
আরও পড়ুন: বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হত্যা দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে তিনি অসুস্থ হলে গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। একপর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৩ অক্টোবর তাকে ভারতের চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সংকটাপন্ন অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র নিয়ে গত ৯ নভেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয় এবং ওই দিনই রাজধানীর পান্থপথে বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) হাসপাতাল এবং পরে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। রবিবার রাতে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
পড়ুন: টাঙ্গাইলের সাংসদ একাব্বর হোসেন আর নেই
সংসদের সামনে বিএনপির এমপিদের মানববন্ধন
রাষ্ট্রপতিকে তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। রবিবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক মানববন্ধনে এ আহ্বান জানান তারা।
বগুড়া-৪ আসনের সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, আমরা আজকে একটি অবৈধ সরকারের কাছে আবেদন করছি। কারণ কোন উপায় তো নেই। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। যেখানে চিকিৎসক পরিবার এবং দলের আবেদনকে উপেক্ষা করছে সরকার। সরকার তাদের নিজের মতো চলছে। আইনমন্ত্রী পাগলের প্রলাপ বকছেন। ৪০১ ধারা নিয়ে তিনি পজিটিভ নেগেটিভ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জেলখানায় ঢুকে বেগম জিয়াকে আবার আবেদন করতে হবে।
খালেদা জিয়ার বাড়িকে সাবজেল ঘোষণা করে তাকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম জিয়া যেখানে আছেন সেখানেই সাবজেল ঘোষণা করা হোক। সেখান থেকেই তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশ নেয়ার ব্যবস্থা করা হোক। সরকার চাইলে তাকে ২৫ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে পারে। আইনমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশ থেকে ডাক্তার আনার অনুমতি তিনি দিতে পারেন। পৃথিবীতে চিকিৎসাব্যবস্থা তো সহজ হয়ে গেছে। আমাদের ডাক্তাররা যা বলছে ইংল্যান্ডের ডাক্তাররাও তাই বলছে। সমস্যা তো হলো চিকিৎসা। দরকার লজিস্টিকস, মেডিকেল ইকুইপমেন্ট। ম্যাডামের যে অবস্থা এদেশের ট্রিটমেন্ট নেই। তার যে সার্জারি লাগবে সেই সার্জারি ইকুইপমেন্ট কোথায়? আইনমন্ত্রীকে বলতে চাই, এর মধ্যে একটা কাজ করেন আপনি জাহাজে করে একটি হাসপাতাল এ দেশে নিয়ে আসুন।
এই সাংসদ বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তার বক্তব্য শুনে আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি না নেত্রী বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে চাই আপনি আপনার নিজস্ব ক্ষমতাবলে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। কারণ আপনাকে সেই সাংবিধানিক ক্ষমতা দেয়া আছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য ৫ দলের আবেদন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক
চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদদ হারুনুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি জায়গা উপনীত হয়েছে যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন, একেবারে অনুপস্থিত। সাম্প্রতিক এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন এর জন্য আজকে সত্যিকার অর্থেই আমার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই, প্রতিবাদ করার ভাষা নাই। একথা কি সুষ্ঠুভাবে প্রমাণ করে না প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া না পাওয়া।
তিনি বলেন, একজন আইনমন্ত্রী সিনিয়র ল ইয়ার। তিনি আইনের যে ব্যাখ্যা দেন সেটা এদেশের সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে না। হঠাৎ করে তিনি বলছেন, বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার সুযোগ দিবেন। আমরা তো বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার জন্য দাবি জানাইনি।
হারুন বলেন, ১৯৯৬ এবং ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই সরকার এযাবতকালে ৩০ জনের অধিক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা মওকুফ করেছে। বেআইনিভাবে আইনের বরখেলাপ করে খুনের আসামি, ইয়াবা সম্রাট, মানবপাচারকারী, টাকা পাচারকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অন্যায়ভাবে সরকার জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন: চিকিৎসক
তিনি বলেন, আমরা চাই অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। এর ব্যতিক্রম আমরা অন্য কোন কিছুই মানবো না। আপনারা আমাদেরকে বাধ্য করবেন না সংসদ থেকে বেরিয়ে যেতে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ও বিএনপির বিরোধীদলীয় হুইপ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আপনারা জানেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার আবেদন করা হয়েছে। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি যখন কারাগারে জান তিনি পায়ে হেঁটে গেছেন। কিন্তু গত তিন বছরে তার কি হাল হয়েছে এটা দেশের মানুষ জানে। এর দায় এই সরকারকে নিতে হবে। কারণ গত তিন বছরে তিনি দল, পরিবার এবং নিজের হেফাজতে ছিলেন না। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের হেফাজতে।
তিনি বলেন, আমরা দেখি সামান্য একটু হাঁচি, কাশি, সর্দি চিকিৎসার এমনকি রুটিন চেকআপের জন্য রাষ্ট্রপতি জার্মানি, ইংল্যান্ডে যান। কিন্তু আমাদের সরকার দলীয় এমপিরা আমাদের শোনায় উনার বেস্ট চিকিৎসা নাকি বাংলাদেশে হচ্ছে। বাংলাদেশে যদি সেরা চিকিৎসাটা হতো তাহলে কেন আমরা দেখি অতি সাধারণ মানুষও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চিকিৎসা জন্য ছুটে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি: ফখরুল
রুমিন বলেন, গত তিন বছরে বেগম জিয়ার উপর নিপীড়ন, নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাকে কোন প্রকার ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়নি। যদি তিনি তার অসুখের চিকিৎসা করাতে পারতেন, সরকার যদি সেই সুযোগ দিতো তাহলে আজকে তার এই অবস্থা হয় না। বেগম জিয়ার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ৪০১ ধারায় সরকার যে কোন ব্যক্তিকে সাজাপ্রাপ্ত বা সাজাপ্রাপ্ত নয় তাদেরকে শর্তযুক্ত বা শর্তহীনভাবে দণ্ড মওকুফ করতে পারে কিংবা দন্ড স্থগিত করতে পারে। এ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়েছে। সরকার দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে। কিন্তু এখন আইনমন্ত্রী বলছেন, ওনাকে কোন ভাবে তার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার সুযোগ নাই। এটা একেবারেই ডাহা মিথ্যা কথা এবং আইনের অপব্যাখ্যা। আইনের ভুল ব্যাখ্যা। আমি একজন আইনজীবী হিসেবে বলতে চাই, ৪০১ এর ক্ষমতাবলে সরকার যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দেশে যদি আইনের শাসন থাকতো, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকতো, দেশে সুশাসন থাকতো তাহলে কোর নির্বাহী আদেশের প্রয়োজন হতো না। বহু আগেই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হতেন। জামিনে মুক্ত হতে যে শর্তগুলো প্রয়োজন- সামাজিক অবস্থা, তার বয়স, তার শারীরিক অবস্থার যেকোনো একটি বিবেচনায় তিনি জামিন লাভের যোগ্য। আমরা যেটা দেখলাম এই ফ্যাসিস্ট সরকার তার জামিন দেয়া দূরের কথা একটার পর একটা মামলা বাড়িয়ে চলছে। আজকে আমি সরকারকে আহ্বান জানাব অবিলম্বে ৪০১ ধারায় বেগম জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হোক। কারণ সরকার জানে তারা চাইলেই এ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার, বগুড়া ৪ আসনের মোশাররফ হোসেন, চাপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার বিএনপির সমাবেশ
গণঅনশনে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বিএনপির সমলোচনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগের দাবিতে বিএনপির গণঅনশন কর্মসূচিতে মাস্ক না পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এর সমালোচনা করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, একদিকে তারা করোনা নিয়ে সরকারের সমালোচনা করবেন, অন্যদিকে নিজেরাই স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না, মাস্ক পরবে না, দূরত্ব বজায় রাখবে না।রবিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ সমালোচনা করেন।তিনি বলেন, গতকাল করোনায় মৃত্যু শূন্য ছিল। এটি সবাই মিলে কাজ করার জন্য হয়েছে। এটি বহু প্রতিক্ষিত ছিল। বিনামূল্যে নয় কোটি টিকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে কেউ দূরত্ব রাখছেন না, মাস্ক পরছেন না। এতে করে সংক্রান্ত যেকোনো সময়ে আবারও বেড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: জানুয়ারি মাসের মধ্যে ১৫ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা গতকালই দেখলাম একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীরা কেউই মাস্ক পড়েনি। যেখানে হাজার হাজার লোক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছে কিন্তু কারো মুখে মাস্ক নেই। এত দুইটা বিষয় বোঝা যায়, করোনা এত ভালোভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে যে, যার ফলে তারা আর মাস্কই পড়তে চায় না। ওনারাই আবার বিগত সময়ে অনেক সমালোচনা করেছেন। এখন গতকাল আবার তারাই মাস্ক ছাড়া বক্তব্য দিচ্ছেন। কর্মীরাও মাস্ক পড়ছে না। এতে করে তারা প্রত্যেকেই হওয়ার আশঙ্কায় পড়ে গেল। সুতরাং আমাদেরকে এসব বিষয়ে দৃষ্টি রাখতে হবে।মন্ত্রী আরও বলেন, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠানগুলো করতে হবে। সাংবাদিক ভাইদের বলবো আপনারা এই বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।
আরও পড়ুন: সারাদেশের স্কুলে স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ডায়াবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিন দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন: চিকিৎসক
একাধিক শারিরীক জটিলতা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কাটাপন্ন হলেও তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত এ খবর সত্য নয় বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তবে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কিডনি ও হৃদরোগের পাশাপাশি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন।
রবিবার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এম জাহিদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের মতোই আছে। তার অবস্থার কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। আমরা একে সামান্য উন্নতিও বলতে পারি না, স্থিতিশীলও বলতে পারি না। এক কথায়, তার শারিরীক অবস্থা এখনও গুরুতর।
আরও পড়ুন: অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া উচিত: রেজা কিবরিয়া
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটার ওঠানামা করছে, আমরা সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল এবং তাকে বেশিরভাগ সময় বিছানায় শুয়ে কাটাতে হচ্ছে। তাকে শুধুমাত্র নরম খাবারের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মৃত ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিথি হাসপাতালে তার সেবা যত্ন করছেন।
চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়ার বহুমুখী রোগের সঠিক চিকিৎসার জন্য বিদেশের যে কোনও উন্নত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এখন অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার বিএনপির সমাবেশ
খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস সমস্যা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে জায়েদ বলেন, এটা সত্য যে তিনি লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, হার্ট এবং অন্যান্য জটিলতায় ভুগছেন। কিন্তু আমি জানি না মিডিয়া কোথা থেকে তথ্য পেল যে তার সিরোসিস ধরা পড়েছে।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ছয়দিন পর গত ১৩ নভেম্বর পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চক্ষু ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
তারা আরও বলেছে যে তিনি এখন একটি গুরুতর কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগছেন। তার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে, খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
খালেদাকে বিদেশ যেতে দিন, নয়তো সরকার পতনের আন্দোলনের মুখোমুখি হতে হবে: ফখরুল
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিলে সরকার পতনের দাবিতে এক দফা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎকরা বলছেন যে তার এখন বিদেশে চিকিৎসা নেয়া জরুরি। কিন্তু সেই অনুমতি দেয়া হয়নি।’
রবিবার এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেত্রী দেশের বাইরে যে কোনো উন্নত কেন্দ্রে যাতে চিকিৎসা নিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
এ সময় হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হোক। অন্যথায় তাদের এক দফা সরকার পতনের আন্দোলনের মুখে পড়তে হবে।’
মহান জাতীয় নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্য যথেষ্ট করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ভাসানীর আজীবন সংগ্রামের কথা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, ‘ভাসানী অন্যতম প্রধান নেতা যারা দেশকে স্বাধীন করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মানুষ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। দেশে এখন গণতন্ত্র না থাকায় এবং ভোট ও অন্যান্য অধিকার না থাকায় জনগণ সরকারের ওপর বিরক্ত হয়ে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়াকে ‘বিনা কারণে’ কারাগারে পাঠিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ।
আরও পড়ুন: অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া উচিত: রেজা কিবরিয়া
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য ৫ দলের আবেদন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক
বিএনপির চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা আবেদন দিয়েছে ২০-দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত পাঁচ দল।
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের মন্ত্রীর সাথে বৈঠকের সময় পাঁচ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা এই আবেদন তুলে দেন।
নেতারা হলেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান ক্বারী মোহাম্মদ আবু তাহের, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব শাহদাৎ হোসেন সেলিম।পরে সাংবাদিকদের সাথেও কথা বলেন জোট নেতারা।
২০ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, আবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদারতার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘আমরা পাঁচটি রাজনৈতিক দলের প্রধানরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য এসেছিলাম। আমাদের আসার উদ্দেশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা একটি বিষয়ে, বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা। তাকে বিদেশে পাঠানো। এটির জন্যই আমরা এসেছি। লিখিত আবেদন জমা দিয়েছি। মুখে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা করেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে কথা শুনেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবেন এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।’
আরও পড়ুন: অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া উচিত: রেজা কিবরিয়া
ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের আবেদনের সারমর্ম, বেগম খালেদা জিয়া এতটাই গুরুতর অসুস্থ্য যে দেশে চিকিৎসার মাধ্যমে তার সুস্থ্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। রাজনীতির সব মত পার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে, অতীতের ভুল ভ্রান্তিকে ভুলে গিয়ে একান্তভাবে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্বরুপ সহমর্মীতা প্রদর্শন করে সরকার যেন বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যক্তিগত আবেদন।’
‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অনুমতি দিলে হয় সরকার বন্দোবস্ত করে পাঠাবে অথবা পরিবার বা দল বন্দোবস্ত করে পাঠাবে। এই কাজটি যদি করা হয় বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে এটা সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিকতার, উদারতার সৌজন্যবোধের দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে, ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে’, এমন মন্তব্য করেন ইব্রাহিম।
বঙ্গবন্ধুর উদারতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বাক্ষী যেহেতু আমি একজন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর আমলে আমি সেনাবাহিনীতে ছিলাম, তার আমলেই বীরপ্রতিক খেতাব পেয়েছি। তিনি কত উদার ও মহৎ ছিলেন, বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের ভুলভ্রান্তিকে কিভাবে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। তাই আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা আপনি তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে এই মহানুভবতা প্রদর্শন করুন।’
অতীতে এমন কোনো উদাহরণ আছে কিনা জানতে চাইলে ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা বলেছি অতীতের কোনো রেফারেন্স কোনো আইন দৃষ্টান্তের প্রয়োজন নেই। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এককভাবে এ সিদ্ধান্ত নিন।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি: ফখরুল
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য -
২০ দলের পাঁচ নেতা খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর আবেদন করলেও আইনে এই ধরনের কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পাঁচ দলের নেতাদের সাথে কথা শেষে তাদের দেয়া আবেদনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘এরা পাঁচ দলের পাঁচ প্রতিনিধি, যারা বিএনপির ২০ দলের জোটের সদস্য তারা এসেছিলেন। তাদের আবেদন ছিল, খালেদা জিয়া অসুস্থ্য তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন, তিনি একদম জীবনের শেষ প্রান্তে এসেছেন। সুতরাং তাকে আরও উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া যায় কিনা, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সে আবেদন নিয়ে এসেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, এর আগেও খালেদা জিয়ার ছোট ভাই একটি আবেদন করেছিলেন সেটিও আমি আইন মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য পাঠিয়েছিলাম। আইনমন্ত্রী যথাযথভাবে পার্লামেন্টে প্রশ্ন উত্তরের সময় বিস্তারিত বলেছেন। আমি এটা বলার পরেও তারা বলছেন, এটা মানবিক কারণে দেয়া যায় কিনা সে পত্র দিয়েছেন। এটা আমি যথাযথভাবে আবার যেখানে প্রয়োজন পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেবো।’
‘বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা যাবে বলে আইনমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন সে বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন তো যে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখানে আসতে পারেন। আমাদের হাসপাতালগুলো ওয়েল ইকুইপড। কাজেই বিদেশি ডাক্তার আসলে যে চিকিৎসা বিদেশে করা যায় সেটা এখানেও করতে পারেন’, বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘জেনারেল ইব্রাহিম আমাকে বলেছেন এটা কোনো উদাহরণ বা আইন নয় এটা প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ছুটে গিয়েছিলেন কোকোর ইন্তেকালের পর আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। সে সময় কিন্তু খালেদা জিয়ার বাসভবনের গেটটিও খোলা হয় নি। এগুলো সবই তারা জানেন। তারপরও তারা এটা বলছেন। ওনারা বলেছেন অতীতে যা ঘটেছে সেগুলোকে ভুলে গিয়ে তিনি যেন উদাহরণ তৈরি করেন সেটা বলেছেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটার আইন অনুযায়ী কোনো স্কোপ নেই। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে করতে পারেন এটা ওনারা বলে গেছেন। কিন্তু আইনের ভাষায় বলতে গেলে এটার কোনো স্কোপ নেই।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার বিএনপির সমাবেশ
খালেদা জিয়ার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে দলের নেতা-কর্মীরা রাজপথে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছেন। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এ দেশের মাটির সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। আমাদের অবশ্যই আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে এবং বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য আমরা যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছি।’
খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি প্রদানের দাবিতে দেশব্যাপী গণঅনশন কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতা-কর্মী গণঅনশন করেন।
এ সময় তাদের দাবি দ্রুত মেনে না নেয়া হলে সরকার পতনে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এ কর্মসূচি থেকে সরকারকে বলতে চাই, আমাদের নেত্রীকে (খালেদা) মুক্তি দিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিন এবং চিকিৎসা নেয়ার জন্য তাকে বিদেশে পাঠান। অন্যথায় গণঅনশনের মাধ্যমে আজকে যে কর্মসূচি শুরু হলো তা আপনার পতন নিশ্চিত করবে।’
এ সময় ফখরুল ও দলের অন্যান্য নেতা-কর্মী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মুক্ত না করে এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য না পাঠানো পর্যন্ত ঘরে না ফেরার শপথ নেন।
পরবর্তীতে বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরীর দেয়া পানি পান করে সাত ঘণ্টার গণঅনশন ভঙ্গ করেন বিএনপি নেতারা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
খালেদা জিয়া মৃত্যুর সাথে লড়ছেন: ফখরুল
গণতন্ত্রের অভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ: ফখরুল
আইন-আদালত মানে না বলেই বিএনপি দায়িত্বহীন কথা বলে: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি নিজেরা কোনো আইন-আদালত মানে না, সেই কারণেই তারা লাগামহীন ও দায়িত্বহীন কথা বলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।শনিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শঙ্করমঠ ও মিশনের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে 'সরকার চাইলে বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে নিতে পারবেন'-বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। ড. হাছান বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথায় মনে হচ্ছে আইন-আদালত কোন কিছুরই দরকার নেই, সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে পারে। তাহলে সরকারকে জজকোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের ভুমিকাও পালন করতে হবে। আইনমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, আইনানুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কোন সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, খালেদা জিয়া কি তা পারতেন: তথ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার একটু অসুখ হলেই বিদেশ কেন নিয়ে যেতে হবে এমন প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, দেশে কোটি কোটি মানুষের চিকিৎসা হয়, দেশে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক ভালো হাসপাতাল আছে, যেখানে অনেক ভাল চিকিৎসা হয় এবং অন্যদেশ থেকেও অনেকে এখানে অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে আসে। বেগম খালেদা জিয়ার পেটে-হাঁটুতে বা অন্যকোন সমস্যা হলেই বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা জিকির তোলেন কেন সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন।এভাবে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার ধুঁয়া তোলার মাধ্যমে তারা আমাদের চিকিৎসক এবং হাসপাতালগুলোকে অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন, বলেন চট্টগ্রাম ৭ আসনের সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ।
এর আগে যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম আমরা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। আজকে যারা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়, ধর্মীয় বিভাজন করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায় তারা শুধু সমাজের শত্রু নয়, রাষ্ট্রের শত্রু। কারণ এই রাষ্ট্র রচিত হয়েছে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি পোষাতে উন্নত দেশগুলোর গড়িমসি কাম্য নয়: তথ্যমন্ত্রী
ধর্ম যার যার এই রাষ্ট্র সবার, সবাই সবার আনন্দ উৎসবে শামিল হন, এটিই আমাদের সংস্কৃতি। এই চেতনাই আবহমান বাঙালি, বাংলা এবং বাংলাদেশ ধারণ করে। তাই ছোটখাট বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমাদের এই সম্প্রীতির বন্ধনে কখনো বিভেদ তৈরি করতে পারেনি এবং পারবেনা।শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শ্রীমৎ পরমানন্দ মহারাজ। বক্তব্য দেন বিমল কান্তি দাশ, কাউন্সিলর শফিউল আলম মুরাদ, দুলাল দে প্রমুখ।
আরও পড়ুন: কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার বিএনপির সমাবেশ
দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে শনিবার সাত ঘণ্টার গণ-অনশনের পর,আগামী সোমবার রাজধানীসহ সারাদেশে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণ-অনশন কর্মসূচি শেষে এ ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এসময় তিনি বলেন, সোমবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া তাদের দলের মহানগর, জেলা শহর ও উপজেলা সদরের সব ইউনিট এই সমাবেশে অংশ নিবে।
ফখরুল আরও বলেন,‘আমরা সমাবেশে একই দাবি নিয়ে আসব। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে আমরা আরও কর্মসূচি ঘোষণা করব এবং তাকে মুক্ত করে বিদেশে তার চিকিৎসা নিশ্চিত করব।’
এদিন বিকাল চারটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরীর দেয়া পানিতে চুমুক দিয়ে অনশন ভাঙেন বিএনপি নেতারা।
আরও পড়ুন: খুলনায় পুলিশী বাধায় অনশনে বসতে পারেনি বিএনপি
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৯টা থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনশন শুরু করেন দল ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী। এই কর্মসূচিতে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী যোগ দেন।
এছাড়া বিএনপির শরিক দল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতারাও অনশন কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দলের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
কয়েকটি স্থান ছাড়া দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ছয়দিন পর ফের ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গত ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবিতে শনিবার বিএনপির গণ-অনশন
বিএনপি চেয়ারপার্সনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চক্ষু ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
তারা আরও বলেছে যে তিনি এখন একটি গুরুতর কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগছেন। তার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেছেন।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কারাগারে ফিরে খালেদা জিয়া নতুন করে আবেদন করলে সরকার তার আপিল বিবেচনা করবে।
আরও পড়ুন: সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে: বিএনপি