���������������������
বিএনপি রাজধানীতে শোকমিছিল করবে বৃহস্পতিবার
লক্ষ্মীপুরে কৃষকদল নেতাকে হত্যা এবং মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে দল ও জোটের শরিকদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে শোকমিছিল করবে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোকমিছিল বের করবে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী অভিমুখে দলের দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তাদের এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রখর রোদে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পদযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।
আরও পড়ুন: এখনই ক্ষমতা ছাড়ুন, জনগণ আপনাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না: ফখরুল
দীর্ঘ পথ হেঁটে নেতা-কর্মীরা সেখানে পৌঁছালে যাত্রাবাড়ীতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে পদযাত্রা কর্মসূচি শেষ করে দলটি।
অন্যান্য সকল মহানগর ও জেলা শহরেও অনুরূপ কর্মসূচী পালন করে দলটির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম অ্যান্ড পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্যরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিভিন্ন এলাকায় কর্মসূচি পালন করে।
যাত্রাবাড়ীর জনসভায় আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি আগামী নির্বাচনে যাবে না। ‘যারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবেন তাদেরকে আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। দেশের মাটিতে তাদের বিচার হবে।’
তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন না হওয়ায় শুধু বিএনপি নয়, সারা বিশ্ব বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় যারা বিরোধী দলের পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে এবং লক্ষ্মীপুরে কৃষকদল নেতাকে হত্যা করেছে তাদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদেরও বিচার করা হবে।
এর আগে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে উত্তরার আবদুল্লাহপুরে পলওয়েল মার্কেটের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে পদযাত্রার উদ্বোধন করেন আব্বাস।
মার্চ শুরু করার আগে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্যে তিনি সতর্ক করেছিলেন যে তাদের দল আর রাজনৈতিক নিপীড়ন সহ্য করবে না। তারা আগামী দিনে উপযুক্ত জবাব দেবে।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিএনপির দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শুরু
আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার আদায় করবে। আমরা ১৫ বছর ধরে আপনাদের (সরকারের) অত্যাচার সহ্য করেছি। আমরা এটা আর সহ্য করব না। ইনশাআল্লাহ, আপনারা (আ.লীগ) গতকাল সারাদেশে আমাদের ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছেন আমরা তার উপযুক্ত জবাব দেব।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে। ‘আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং আমাদের ভোটের অধিকার উপলব্ধি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পদযাত্রায় আপনারা (মিরপুরে) বাংলা কলেজ থেকে যখন ইট-পাথর নিক্ষেপ করলেন আমরা কীভাবে আপনাদের রেহাই দেব? এটা ঘটবে না। আপনাদের বাঁচার দিন শেষ। আমাদের অধিকার রক্ষা করতে হবে বলে অন্য কেউ রেহাই পাবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দলের নেতা-কর্মীরা কীভাবে জেলে যেতে হয়, মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হয় এবং প্রতবন্ধকতাকে মারিয়ে মিছিল করতে হয় তা জানে। ‘আমরা আর আপনাদের অত্যাচার সহ্য করব না, নৃশংসতার জবাব দেব।’
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা ‘শান্তি মিছিলের’ নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুরে আমাদের দলের একজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং আপনারা শান্তি মিছিলের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। আপনারা কেন ঝামেলা তৈরি করতে চান?’
আরও পড়ুন: আর নিপীড়ন সহ্য নয়, উপযুক্ত জবাব দিন: মির্জা আব্বাস
সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে পাল্টা কর্মসূচি না দিতে তিনি ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানান।
তাদের দল আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বে না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আব্বাস বলেন, তারাও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আগে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন চায়।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত মিছিল করে। একইভাবে দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরেও কর্মসূচি পালন করে নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার দলটির মিছিল সারাদেশে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত এবং কয়েক শতাধিক লোক আহত হয়।
রাজধানীর মিরপুরের সরকারি বাংলা কলেজের কাছেও বিএনপির মিছিলে হামলা হয়, যার ফলে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
গত ১২ জুলাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ‘একদফা’ আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
এক দফা দাবি আদায়ে প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি ১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দিনের দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
বিদেশিরা আসে-যায় বিএনপির আশা পূরণ হয় না: কাদের
বিদেশিদের কাছে বিএনপির আশা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা এসে চলে গেল কিন্তু তাদের আশা পূরণ হয়নি। এখন সব দোষ শেখ হাসিনার। নির্বাচনে এলে হেরে যাবে একথা ভাবতেই তাদের মন খারাপ।’
বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাত রাস্তায় আয়োজিত আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতারা আশার মালা গেঁথে প্রহর গুনেছে কখন আসবে আজরা জেয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। বিএনপি নেতাদের চোখে, মুখে আনন্দের ধারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এল, এখন যায় যায়। আমেরিকান প্রতিনিধি এসে চলে গেল। বিএনপি যা শুনতে চেয়েছিল, তা পায়নি। তাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে গলার পানিও শুকিয়ে গেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আনন্দ নেই, শুকনো মুখ, শুখনো চোখ। কারণ বিএনপি নেতাদের আমেরিকা বলে দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। বিএনপিকে শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। এটাই তাদের জ্বালা।’
আরও পড়ুন: বিএনপির বিজয় মিছিল নয়, পরাজয়ের মিছিল: কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সারাদেশে স্লোগান আর দফা একটাই- শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। সাত রাস্তায় এসে দেখুন জনতার ঢল আর জনতার বিপ্লব।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানসম্মান থাকতে আন্দোলন ছেড়ে নির্বাচনে আসুন। অন্যথায় মানসম্মান থাকবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপিকে পরিষ্কার বলতে চাই নির্বাচনে আসুন। নির্বাচনে না এলে সেটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু নির্বাচনে বাধা দিতে এলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতিহত করব।’
বিএনপির ৫৪ দল, ৩৬ দল, ২৭ দফা, এক দফা ভুয়া উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিএনপির ভুয়া রাজনীতি চায় না।
তিনি বলেন, বিএনপির অন্তরজ্বালা বেড়ে যাচ্ছে। এক দিনে শত সেতুর উদ্বোধন, আগামী মাসে আরও শত সেতুর উদ্বোধন হবে। এ ছাড়া পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল - এত উন্নয়ন কীভাবে ঠেকাবে? বিএনপির ঘুম নেই।
শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন পায়ে পা রেখে ঝগড়া করতে চায়। আমরা শান্তি চাই।
কর্মীদের মাথা গরম না করার নির্দেশ দিয়ে কাদের বলেন, যত শান্তি থাকবে, আওয়ামী লীগের ভোট তত বাড়বে। একদিকে জনগণের শক্তি, অন্যদিকে সন্ত্রাস আর তাণ্ডব।
আরও পড়ুন: বিএনপি ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে সরে আসেনি: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপিকে নির্বাচনে এসে নিজেদের জন সমর্থন প্রমাণ করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিদেশিদের ক্রীড়নক হওয়ার চেষ্টা করবেন না।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ আরও অনেকে।
সমাবেশ সঞ্চালনা করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
আরও পড়ুন: রাজধানীর সাতরাস্তা মোড়ে আ.লীগের শান্তি মিছিলের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি শুরু
চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
চট্টগ্রামে বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে কাজির দেউরিস্থ নগরী নসিমন ভবনে মোটরসাইকেলসহ বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার এই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তবে হামলার সময় দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা কেউ ছিল না।
বিএনপি নেতারা জানান, পদযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করে নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পর ছাত্রলীগ নামধারী একদল সন্ত্রাসী এই হামলা চালায়। হামলার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের বাধা দেয়নি বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডাক্তার শাহাদাত হোসেন জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি শেষ করে নেতাকর্মীরা বাসায় চলে যাওয়ার পর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের কার্যালয় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলাকারীরা ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চেয়েছিল: আ.লীগ প্রার্থী আরাফাত
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে দলীয় কার্যালয়ের মাঠে এলাকার শিশু কিশোর ফুটবল খেলোয়ারদের মারধর ও ছুরিকাঘাত করে ৭ থেকে ৮ জনকে আহত করা হয়েছে। তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ও দলীয় কার্যালয়ে লুটপাট চালায়। এসময় মাঠে দু’টি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের এ ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তিনি।
এদিকে ঘটনার একঘন্টা পর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্করের নেতৃত্বে বিএনপি নেতারা ভাঙচুর করা অফিস পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই: হিরো আলমের ওপর হামলা প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি জানান, বিএনপি'র পদযাত্রা থেকে উপনির্বাচনে আমাদের নৌকার প্রার্থী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের মারধর করে আহত করে। এতে এলাকার লোকজনদের কেউ কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির অফিসে হামলা করেছে। তারা কারা আমরা জানি না।
সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান জানান, নগরীর ওয়াসার মোড়ে রাত থেকে অফিস ভাঙচুরের ঘটনার পর কিছু লোক পাল্টা বিএনপির অফিসে হামলা করেছে। তবে আমরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আরও পড়ুন: মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে বিএনপির পদযাত্রায় হামলা
আর নিপীড়ন সহ্য নয়, উপযুক্ত জবাব দিন: মির্জা আব্বাস
বিএনপি আর রাজনৈতিক নিপীড়ন সহ্য করবে না এবং আগামী দিনে উপযুক্ত জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করবে। আমরা ১৫ বছর ধরে আপনাদের (সরকারের) অত্যাচার সহ্য করেছি। এটা আর সহ্য করব না।’
বুধবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ীর দিকে বিএনপির পদযাত্রা শুরুর আগে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
আব্বাস অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিল কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা করেছেন এবং অনেককে আহত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল সারাদেশে আপনারা (আ.লীগ) আমাদের উপর যে নিপীড়ন চালিয়েছেন আমরা তার উপযুক্ত জবাব দেব ইনশাআল্লাহ।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দল গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। ‘আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং আমাদের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মিছিল করার সময় মিরপুর বাঙলা কলেজ থেকে ইট-পাথর নিক্ষেপ করলে আমরা কীভাবে আপনাকে রেহাই দেব? এটা ঘটবে না। আপনাদের বাঁচার দিন শেষ। আমাদের অধিকার রক্ষা করতে হবে বলে অন্য কেউ রেহাই পাবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দলের নেতা-কর্মীরা কীভাবে জেলে যেতে হয়, মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হয় এবং প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবিলা করে কীভাবে মিছিল করতে হয় তা জানে।
আরও পড়ুন: মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে বিএনপির পদযাত্রায় হামলা
‘আমরা আর আপনাদের অত্যাচার সহ্য করব না। আমরা নৃশংসতার জবাব দেব।’
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা ‘শান্তি মিছিলের’ নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) লক্ষ্মীপুরে আমাদের দলের একজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং আপনারা শান্তি মিছিলের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। আপনারা কেন ঝামেলা তৈরি করতে চান?’
সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে পাল্টা কর্মসূচি না দিতে তিনি ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানান।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সংবিধান থেকে এক বিন্দুও নড়বে না- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আব্বাস বলেন, তারাও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আগের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন চান।
পরে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে উত্তরার আবদুল্লাহপুরে পলওয়েল মার্কেটের সামনে পদযাত্রা কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আব্বাস।
প্রখর রোদে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পদযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী।
আজ দেশের অন্যান্য মহানগর ও জেলা শহরেও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত মিছিল করে। সব শহর ও জেলা শহরেও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিএনপির দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শুরু
মঙ্গলবার দলটির মিছিল সারাদেশে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষ হয়েছিল যাতে কমপক্ষে একজন নিহত এবং কয়েক শতাধিক লোক আহত হয়।
রাজধানীর মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজের কাছেও বিএনপির মিছিলে হামলা হয়, যার ফলে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
টানা দ্বিতীয় দিনের মতো নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম অ্যান্ড পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও ছাত্র অধিকার পরিষদও কর্মসূচি পালন করে।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত ১২ জুলাই ‘এক দফা’ আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক দফা দাবি আদায়ে প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি ১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দিনের দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিএনপিসহ ৩৬টি দল আজ তাদের এক দফা আন্দোলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
আরও পড়ুন: এখনই ক্ষমতা ছাড়ুন, জনগণ আপনাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না: ফখরুল
রাজধানীর সাতরাস্তা মোড়ে আ.লীগের শান্তি মিছিলের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি শুরু
আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী ‘শান্তি ও উন্নয়ন মিছিল’-এর দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি ঢাকার সাতরাস্তা মোড় এলাকায় শুরু হয়েছে।
বুধবার বিকাল ৪টায় দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তর মহানগর শাখা।
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির এক দফা আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় এ কর্মসূচি পালন করছে ক্ষমতাসীন দলটি।
বিএনপির ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রচেষ্টা’ প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ মিছিল বের করবে।
আরও পড়ুন: আ. লীগের 'শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা' শুরু আজ বিকালে
সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তর শাখার সভাপতি বজলুর রহমান; শোভাযাত্রা পরিচালনা করবেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
একটি মিছিল সাতরাস্তা, তিব্বত, নাবিস্কো এবং মহাখালী বাস টার্মিনাল অতিক্রম করবে।
এছাড়া রাজধানীর বাইরেও মিছিল করছে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ।
গতকাল দলটির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখা একটি মিছিল বের করে যা শাহবাগ, কাঁটাবন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও কলাবাগান হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির বিজয় মিছিল নয়, পরাজয়ের মিছিল: কাদের
বিএনপি ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে সরে আসেনি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে সরে আসেনি।
তিনি বলেন, বিএনপি যে সাংঘর্ষিক রাজনীতি করে; জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে সরে আসেনি, সেটি তারা মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) প্রমাণ করেছে।
তিনি বলেন, আজ বুধবার (১৯ জুলাই) আবার তারা পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছে। আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। একই সঙ্গে আমাদের উন্নয়ন ও শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী সংলাপ নিয়ে কোনো বিদেশি চাপ নেই: তথ্যমন্ত্রী
বুধবার (১৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আপনারা জানেন, মঙ্গলবার বিএনপি সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকেও শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য দেশে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করা। যেটি গতকাল আবার স্পষ্ট হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, তারা দেশের ৯টি জায়গায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। মিরপুর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের এক নেতার মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দিয়েছে, জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: আ. লীগের 'শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা' শুরু আজ বিকালে
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজনের উপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেছে। তারা পৌরভবনেও হামলা চালিয়েছে।
বগুড়ায় সাতমাথা মোড়ে বিএনপির যাওয়ার কোনো অনুমতি ছিল না, পুলিশ বাধা দিলে ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এতে বাধ্য হয়ে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুঁড়েছে।
লক্ষ্মীপুরে সামাদ একাডেমির সামনে আওয়ামী লীগের নেতাদের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষকে প্রভোক (উসকানি) করেছে।
এভাবে সংঘর্ষ বাধিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল এটিই। এভাবে সংঘর্ষ বাধিয়ে দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। আমরা সেটির সুযোগ দেব না।
আরও পড়ুন: বিএনপির বিজয় মিছিল নয়, পরাজয়ের মিছিল: কাদের
এক দফা আন্দোলন: আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিএনপির দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শুরু
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শুরু করেছে বিএনপি।
বুধবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে উত্তরার আবদুল্লাহপুরের পলওয়েল মার্কেটের সামনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
প্রখর রোদে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এই পদযাত্রায় অংশ নেন।
আজ অন্যান্য সব মহানগর ও জেলা শহরেও একই ধরনের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আব্বাস বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে প্রতিহত করে 'শান্তি মিছিলের' নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
আরও পড়ুন: মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে বিএনপির পদযাত্রায় হামলা
তিনি অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও অনেককে আহত করেছে।
আব্বাস বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা ১৫ বছর ধরে নিপীড়নের শিকার। আমরা আর দমনমূলক কর্মকাণ্ড সহ্য করব না। আমরা এর উপযুক্ত জবাব দিব।’
তিনি আরও বলেন যে তারা জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করবেন এবং নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করতে বর্তমান সরকারকে বাধ্য করবেন।
দলটির মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে সারা দেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা প্রত্যক্ষ করা হয়, যাতে কমপক্ষে একজন নিহত এবং কয়েকশ’ মানুষ আহত হয়।
রাজধানীর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে বিএনপির পদযাত্রায় হামলা হলে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম, পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও স্বাধীন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পদযাত্রা করবে।
আরও পড়ুন: এখনই ক্ষমতা ছাড়ুন, জনগণ আপনাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না: ফখরুল
এর আগে, ১২ জুলাই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে 'এক দফা' আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
এক দফা দাবি আদায়ে প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই দেশব্যাপী ২ দিনের পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
বিএনপিসহ ৩৬টি দল আজ তাদের এক দফা আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
দলটির এই দাবির মধ্যে রয়েছে- বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, বিদ্যমান সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব ‘মিথ্যা’ ও ‘বানোয়াট’ মামলা প্রত্যাহার এবং সকল ‘মিথ্যা সাজা’ বাতিল।
আরও পড়ুন: বিএনপির বিজয় মিছিল নয়, পরাজয়ের মিছিল: কাদের
দলীয় বিদ্রোহী তারেককে ‘মারধরের’ অভিযোগ নূর সমর্থকদের বিরুদ্ধে
গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের সমর্থকরা দলটির বিদ্রোহী নেতা তারেক রহমানকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার এ ঘটনায় সাইফুল ও নুরসহ তিনজনকে আসামি করে পল্টন থানায় একটি মামলা হয়েছে।
নূরের চাচাতো ভাই ও ব্যক্তিগত দেহরক্ষী সাইফুল তারেকের মাথায় আঘাত করেন বলে অভিযোগ করা হয়। এরপর তারেক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
আগের দিন, রেজা কিবরিয়া ও নূরের নেতৃত্বে উভয় পক্ষই সংবাদ সম্মেলনের সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
কয়েকদিন আগে তারেক গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় নুরের অন্য একজন সমর্থকের একটি অডিও রেকর্ডিং মোবাইলে শোনান। যেখানে তাকে সরাসরি তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: না’গঞ্জে বিএনপি-জামাত-গণঅধিকারের ১৯৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
বিদেশ থেকে আসা বাংলাদেশিদের দান করা অর্থ আত্মসাৎ করা এবং ‘দল পরিচালনায় নূরের স্বৈরাচারী স্বভাব’ নিয়ে তারেক ও নূরের মধ্যে সাম্প্রতিক বিবাদ বেড়েছে নূরের।
গতকাল রাতে দলীয় কার্যালয়ে মিটিংয়ে অংশ নিয়ে মোটরসাইকেল স্টার্ট দেওয়ার সময় সাইফুল ও নূরের দেহরক্ষী তাকে ধাক্কা দেন।
তারেক বলেন,‘তারা প্রথমে জিজ্ঞেস করে যে আমি কেন নূরের পক্ষ থেকে পাঠানো অনুদান লুটপাটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি, তারপর তারা আমাকে নির্বিচারে চড় ও লাথি মেরেছে।’
আরও পড়ুন: রেজা কিবরিয়াকে গণঅধিকার পরিষদ থেকে অপসারণ
তারেক আরও বলেন, ‘আমি যখন বাইকটি স্টার্ট করছিলাম, তখন সাইফুলের নেতৃত্বে একটি দল আমার ওপর হামলা করে এবং তারা আমাকে সতর্ক করে যে আমি যদি নূরের বিরুদ্ধে কথা বলতে থাকি তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।’
রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের নেতা তারেক। তিনি নূরের সমালোচকও। তিনি পরবর্তীতে দলীয় তহবিল আত্মসাৎ, ইসরায়েলি নাগরিক মেন্ডি এন সাফাদির সঙ্গে তার বৈঠকের নিয়ে লুকোচুরির বিষয় দিয়ে দলীয় সহকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং স্বৈরাচারী পদ্ধতিতে পার্টি পরিচালনার অভিযোগ তুলেছেন।
আরও পড়ুন: গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুর, সম্পাদক রাশেদ
বিএনপির বিজয় মিছিল নয়, পরাজয়ের মিছিল: কাদের
বিএনপির দেশব্যাপী পদযাত্রাকেকে ‘পরাজয়ের দিকে অগ্রযাত্রা’বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আজকের বিএনপির মিছিলকে ‘বিজয় মিছিল’ বলেছেন। কীসের বিজয়? তাদের পদযাত্রা ছিল প্রকৃতপক্ষে পরাজয়ের দিকে অগ্রযাত্রা, পতনের যাত্রা,’
মঙ্গলবার বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) সামনে আওয়ামী লীগের সমাবেশে এক ভাষণ তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন (প্রতিনিধিদল) থেকে বিএনপি কী পেয়েছে? তারা কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পেয়েছে? নাকি শেখ হাসিনার পদত্যাগ? নাকি সরকারের পদত্যাগ? বিএনপি কিছুই পায়নি।’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি ভেবেছিল যে তারা আমেরিকার কাছ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পাবে এবং আমেরিকা আমাদের তাদের সঙ্গে সংলাপ করতে বলবে। আমেরিকানরা এসেছে এবং গেল। কী পেল বিএনপি? তারা বিশ্রাম পায়নি।’
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ইইউ, যা আ. লীগেরও অঙ্গীকার: কাদের
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের অন্যান্য গণতন্ত্রের মতোই নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা তার দায়িত্ব পালন করবেন।
কাদের বলেন, ‘কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে না এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না।’
বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনকে সংবিধান মেনে চলার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের।
আওয়ামী লীগ কারো কাছে মাথা নত করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের এক দফা বাংলাদেশের সংবিধান। সংবিধানে যা লেখা আছে আমরা তা প্রয়োগ করব। সেভাবেই নির্বাচন হবে। আপনারা যাই করুন না কেন, আমরা এর থেকে এক ইঞ্চিও দূরে সরে যাবো না।’
আরও পড়ুন: বিদেশি বন্ধুদের সমর্থন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
সমাবেশে ওবায়দুল কাদেরের উদ্বোধনী বক্তব্যের পর বিকাল ৪টায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও উন্নয়ন মিছিল’ কর্মসূচি শুরু হয়।
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির এক দফা আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
পরে আওয়ামী লীগের ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা বিকাল ৫টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের বাইরে থেকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে মিছিলে অংশ নেন। র্যালিটি শাহবাগ, কাটাবন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, কলাবাগান হয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: আ. লীগের 'শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা' শুরু আজ বিকালে
এখনই ক্ষমতা ছাড়ুন, জনগণ আপনাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না: ফখরুল
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে তাদের মিছিলকে অধিকার আদায়ের ‘বিজয় মিছিল’ আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণ আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না, এখনই ক্ষমতা ছাড়ুন।
এছাড়া সোমবার (১৭ জুলাই) ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের নামে নির্বাচন কমিশন প্রহসন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এটি কেবল একটি মিছিল নয়, এটি বিজয়ের মিছিল। এটা জনগণের অধিকার আদায়ের বিজয় মিছিল।
মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী এলাকায় দলের পদযাত্রা পূর্ব বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মিছিল কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তারা আরও ৩৬টি বিরোধী দলের সঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নতুন যাত্রা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: 'সময় শেষ, পদত্যাগ করুন': সরকারের প্রতি ফখরুল
ফখরুল বলেন, পদযাত্রার মধ্য দিয়ে আমাদের এক দফা দাবি আদায় করে আমরা বিজয় অর্জন করব। আমরা এই ভয়ঙ্কর দানবীয় সরকারকে পরাজিত করব এবং একটি সরকার ও জনগণের সংসদ গঠন করব।
ফখরুল বলেন, সারা দেশের মানুষ তাদের হারানো অধিকার ফিরে পেতে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে জেগে উঠেছে।
এছাড়াও নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু বিএনপি নয়, ১২ জুলাই একযোগে আরও ৩৬টি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেছিল যে বর্তমান সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। এদেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশ ও জনগণকে রক্ষায় রাজপথে নেমে আসতে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল হিরো আলমের বিরুদ্ধে হেভিওয়েট প্রার্থী ও তার প্রধান বুদ্ধিজীবী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে বসিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেনি।
ফখরুল বলেন, ভোট কেন্দ্র ফাঁকা ছিল। পঙ্গু-অকেজো এবং পরাধীন নির্বাচন কমিশন ১১ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি দেখিয়েছে। আমরা দেখলাম কোথাও ভোটার নেই। ফলাফল ঘোষণার পর আরাফাত বিজয় চিহ্ন দেখালেন। অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিরো আলমকে মারধর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এটা লজ্জার বিষয়।
এছাড়া ভোটকেন্দ্রের সামনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলার সময় পুলিশের নীরব ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে ১১ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি সবচেয়ে ভাল ছিল। জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য এমন উপহাস করার কোনো মানে নেই।
তিনি বলেন, ভয়াবহ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে রাজধানীবাসী যখন কঠিন সময় পার করছেন, তখন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ছুটি কাটাতে ইউরোপে গেছেন। আর ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী গেছেন আমেরিকায়। তাদের কী দায়িত্ববোধ আছে!’
তাদের এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী পুরান ঢাকা এলাকার রায় সাহেব বাজার অভিমুখে মিছিলে নিয়ে যাত্রা করেন।
ফখরুল সকাল ১১টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এবং বিকাল ৪টায় রায় সাহেব বাজার মোড়ে তা শেষ হয়।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে মিছিলটি মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজে পৌঁছালে কয়েকজন যুবক তাদের ওপর হামলা চালায়, ফলে সংঘর্ষ বাধে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানিয়েছেন, পরে একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে একটি মোটরসাইকেল ও একটি সাইকেলও পুড়ে গেছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এছাড়া অন্য সব মহানগর ও জেলা শহরেও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য নিয়ে বিরোধী দলের এক দফা আন্দোলনের এটাই প্রথম কর্মসূচি।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ আন্দোলন করছে।
এর আগে গত ১২ জুলাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ‘একদফা’ আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
এক দফা দাবি আদায়ে প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি ১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দিনের দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এছাড়াও বিএনপি আগামী ১৯ জুলাই (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত মিছিল করবে।
একই দিন রাজধানীতে কর্মসূচি পালন করবে অন্যান্য বিরোধী দল ও জোট।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলা গণতন্ত্রের নামে আ. লীগের তামাশা: ফখরুল
আ. লীগের ভয় দেখানোর কৌশল আর চলবে না, জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: ফখরুল