%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE
মার্চে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ৯.৮১ শতাংশ, প্রভাব বেশি শহরাঞ্চলে
চলতি বছরের মার্চে দেশের মূল্যস্ফীতি দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। গত ফেব্রুয়ারিতে মূলস্ফীতির এই হার ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সর্বশেষ আর্থিক পরিসংখ্যানে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস।
বিবিএসের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মাসটিতে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে, আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশে। তুলনামূলকভাবে গত ফেব্রুয়ারিতে খাদ্য পণ্যের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
গ্রামীণ অঞ্চলের তুলনায় শহরের অঞ্চলগুলোতে উচ্চতর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়েছে। শহর এলকায় মুদ্রাস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং গ্রামীণ অঞ্চলে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মার্চে শহর এলাকায় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং গ্রামীণ এলাকায় খাদ্যপন্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বেসিক ব্যাংক
আইএমএফের সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে দেশ। আর এর প্রভাব পড়ছে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর।
এটি নিয়ন্ত্রণে পলিসি সুদের হার বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কৌশল বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশে। তবে ড. মনসুর উল্লেখ করেছেন যে বিলম্ব এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এই পদক্ষেপগুলো এখনও উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব দেখাতে পারেনি।
ক্রমাগত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হারের পিছনে একটি অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা এবং নিয়মিত পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে প্রাথমিকভাবে দায়ী হিসাবে চিহ্নিত করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
আরও পড়ুন: মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম ভরিতে বেড়েছে ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা
মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম ভরিতে বেড়েছে ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের বাজারে দাম বৃদ্ধির দ্রুততম গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
বৈশ্বিক এই প্রবণতার ধারাবাহিকতায় সোমবার একই দিন বিকাল ৪টা থেকে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাজুস।
শনিবার স্বর্ণের দাম ভরি প্রতি ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা বাড়ানোর পর মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এখন ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা বা প্রতি গ্রামের দাম ১০ হাজার ৮০ টাকা; ২১ ক্যারেট ১ লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা; আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।
স্বর্ণের দাম উল্লেখযোগ্য সমন্বয় দেখা গেলেও রুপার দাম স্থিতিশীল রয়েছে, যার মধ্যে ২২ ক্যারেট রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬০০ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সেই অনুযায়ী, প্রতি আউন্স (৩১.১০৩ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩২৯ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বর্ণের দাম বাড়ার জন্য মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে দায়ী করা হয়েছে যে কারণে স্বর্ণে বিনিয়োগের পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে।
বৈশ্বিক আর্থিক বাজার এবং পণ্যের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক বাংলাদেশে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণের কৌশলকেও প্রভাবিত করে।
সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বেসিক ব্যাংক
বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চলেছে বেসিক ব্যাংক।সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং সিটি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিনের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে এই কৌশলগত একীভূতকরণের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়।
বেসিক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের মধ্যে একীভূতকরণ স্বেচ্ছায়ই হতে যাচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়। গত ১৯ মার্চ সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ একীভূতকরণের সুপারিশ করার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও উভয় ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
সংযুক্তিকরণ সত্ত্বেও আগামী তিন বছর দুই ব্যাংক আলাদাভাবে তাদের আর্থিক হিসাব দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
দেশে ব্যাংক একীভূতকরণের বিস্তৃত প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বর্তমানে বেশ কয়েকটি ব্যাংক সম্ভাব্য সংযুক্তিকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করছে। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পর জনগণকে জানানো হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে মার্চ মাসে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের একীভূতকরণের মধ্য দিয়ে কৌশলগত একীভূতকরণের যে জোয়ার শুরু হয়েছে তার মধ্যেই এই নতুন পদক্ষেপ এলো।
প্রাইভেট বিনিয়োগে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার চাকরির বাজারের জন্য উদ্বেগপূর্ণ: বিশ্বব্যাংক অর্থনীতিবিদ
প্রাইভেট বিনিয়োগে পিছিয়ে থাকা এবং জিডিপিতে এর ন্যূনতম অবদান রাখায় দক্ষিণ এশিয়ার চাকরির বাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগ রয়েছে বলে এক সেমিনারে এমনি মতামত তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল ) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন মিলনায়তনে 'দক্ষিণ এশিয়া কি কর্মহীন উন্নয়নের অভিজ্ঞতা অর্জন করছে?' ‘বিশ্ব ব্যাংকের 'দক্ষিণ এশিয়া উন্নয়ন হালনাগাদ' ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের প্রতিবেদন’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও বিশ্বব্যাংক।
সেমিনারে অন্যান্য উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার আশাবাদী প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে, তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতাগুলোর কথা উল্লেখ করে চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কারের অভাববেই দায়ী করেছেন।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. ফ্রান্সিসকা ওনসর্গ তার 'রিপোর্ট ফোকাসিং অন জব রেজিলিয়েন্স ইন সাউথ এশিয়া এপ্রিল-২০২৪' শীর্ষক উপস্থাপনায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির বাধা দূর করতে নীতি সংস্কারের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ড. ওনসর্গের মতে, অন্যান্য উন্নয়নশীল অঞ্চলের তুলনায় বেসরকারি বিনিয়োগে পিছিয়ে থাকা এবং জিডিপিতে এর ন্যূনতম অবদান দক্ষিণ এশিয়ার চাকরির বাজারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়।
বাণিজ্য উন্মুক্ততা এবং প্রাতিষ্ঠানিক গুণমানকে এই অঞ্চলে কাজের সুযোগকে জোরদার করার মূল কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। ড. ওনসোর্গ দক্ষিণ এশিয়ায় নিম্ন বাণিজ্য-জিডিপি অনুপাত তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত এবং ভারতীয় তথ্য-প্রযুক্তি (আইটি) শিল্পের মতো প্রবৃদ্ধির নির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উচ্চ বাধা আরোপের জন্য বাংলাদেশের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করছে।
আরও পড়ুন: এপ্রিল থেকে সুদের হার ১৩.৫৫ শতাংশ, ভোক্তা ঋণে যোগ হবে আরও ১ শতাংশ
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য ড. রুবানা হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা এবং বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বার্নার্ড হ্যাভেন।
প্যানেলিস্টরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কাজের গুণগত মান এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে কর্মশক্তিতে একীভূত করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
বার্নার্ড হ্যাভেন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগের উপর জোর দিয়েছিলেন, আরও বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) এবং অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশের পক্ষে ছিলেন। তিনি কর্মী ও দৃঢ় উৎপাদনশীলতা বাড়াতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং মানব মূলধনে বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দেন।
হ্যাভেন আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উৎপাদনশীল জনশক্তি নিশ্চিত করতে উন্নত দৃঢ় ব্যবস্থাপনা, নারীর শ্রমশক্তির অংশগ্রহণের জন্য সমর্থন, অভিবাসন ব্যয় হ্রাস এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।
বেকারত্বহীন প্রবৃদ্ধির ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং তাদের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ব্যাপক নীতি সংস্কার গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সেমিনারটি শেষ হয়।
আরও পড়ুন: তৃতীয় কিস্তির ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ পেতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে জোর আইএমএফর
বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৩৩ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়: ড. দেবপ্রিয়
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ একটি অনিশ্চিত আর্থিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়।
ড. ভট্টাচার্যের মতে, সরকারের মোট ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসে, যার ফলে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ ডলারে পৌঁছায়।
বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এশিয়া ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে সিপিডি আয়োজিত 'বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের পরিস্থিতি: উদ্বিগ্ন হওয়ার কি কোনো কারণ আছে?' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বাংলাদেশের ঋণ কাঠামোর জটিলতার ওপর আলোকপাত করেন সেমিনারে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
ড. দেবপ্রিয় পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, 'জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যয়ের ৩৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিসংখ্যানে অভ্যন্তরীণ ঋণের জন্য ২৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মাত্র তিন বছরে ২৬ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, রাজস্ব বাজেট এখন এতটাই টানাটানি যে, উন্নয়ন প্রকল্পে এক পয়সাও অর্থায়ন করা সম্ভব নয়।
ঋণ পরিশোধের বৃহত্তর প্রভাব তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় অর্থনীতিবিদদের সতর্কবাণীর প্রতি নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাখ্যানমূলক মনোভাবের সমালোচনা করেন। তিনি ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দুই বছর আগে করা নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করেন। ২০২৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২৬ সালে ঋণ পরিশোধে প্রত্যাশিত অস্বস্তির ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
তিনি বেসরকারি খাতের ঋণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, মোট ঋণের ৮০ শতাংশই সরকারি ঋণ, বাকি ২০ শতাংশ বেসরকারি খাত। তিনি দেশের দায় ও বিনিময় খাতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রভাবের ওপর জোর দিয়ে ব্যক্তিগত ঋণ এবং এর ব্যবহার দেশে বা বিদেশে যেখানেই হোক না কেন, অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানান।
বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ একত্রিত করে ড. ভট্টাচার্য মাথাপিছু দায়বদ্ধতার বোঝার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা কেবল বৈদেশিক ঋণের জন্য ৩১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে প্রায় ৮৫০ ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির এই সামগ্রিক বিশ্লেষণ সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় রাজস্বের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও কৌশলগত পরিকল্পনার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার-সোনালির দাম বেড়েছে ১০-৩০ টাকা
বিডিবিএল সোনালী ব্যাংকে এবং রাকাব বিকেবির সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে
ব্যাংকিং খাতকে সুশৃঙ্খল করার অংশ হিসেবে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক অধিগ্রহণ করবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।
বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংককে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বৈঠকে এই একীভূতকরণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই হবে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে পদ্মা ব্যাংক
বিকেবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান ইউএনবিকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক উভয় ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছে এবং ব্যাংকের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে সোমবার বিকেবি ও রাকাবের মধ্যে একটি চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা।
এছাড়াও বিডিবিএলকে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সোনালী ব্যাংক ও বিডিবিএলের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকের একীভূতকরণ না হলে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষায় ইংরেজি ভাষা দক্ষতার বিচারে আইইএলটিএস (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম) এখন আর একমাত্র উপায় নয়। সময়-সাপেক্ষ নিরীক্ষণ পদ্ধতি, ব্যয়বহুল নিবন্ধনের কারণে এর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে বিকল্প পরীক্ষাগুলো। সেই সঙ্গে যুগান্তকারী সুবিধা হিসেবে যুক্ত হচ্ছে প্রযুক্তি-বান্ধব বৈশিষ্ট্য। পরীক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উভয়ের জন্যই সহজসাধ্য হওয়ায় নিমেষেই গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে নতুন পদ্ধতিগুলো। এমনি একটি পরীক্ষা ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট, যেটি ইতোমধ্যে অপরিহার্য যোগ্যতা হিসেবে চাওয়া হচ্ছে উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ডুওলিঙ্গো পরীক্ষা পদ্ধতি, আর কীভাবেই বা এতে অংশ নিবেন।
ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী
কাগজ-কলমে লিখিত পরীক্ষার গন্ডির বাইরে আদ্যোপান্ত সম্পর্ণূ ইন্টারনেট-ভিত্তিক ইংরেজি ভাষার প্রমিত পরীক্ষার নাম ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট (ডিইটি)। সঙ্গত কারণেই এখানে প্রয়োজন হয় নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ এবং ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও স্পিকার সমেত একটি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার। শুধুমাত্র এই উপকরণগুলো থাকলেই পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকে যে কোনো সময়েই অংশগ্রহণ করা যায় ডিইটি পরীক্ষায়।
আমেরিকান প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ডুওলিঙ্গোর ডিইটি চালু করে ২০১৬ সালে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন: চাকরির ইন্টারভিউয়ে প্রত্যাশিত বেতন নিয়ে যেভাবে কথা বলবেন
ডিইটি এমন একটি নিরীক্ষণ ব্যবস্থা, যেখানে পরীক্ষার্থীর প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর যাচাইয়ের মাধ্যমে তার মেধাবৃত্তিক অবস্থানকে মূল্যায়ন করা হয়। বিগত প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তুলনামূলক ভাবে একটু কঠিন করে করা হয় নতুন প্রশ্নটি। আর এভাবেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে এগোতে থাকে পুরো পরীক্ষা পদ্ধতি। স্বভাবতই এখানে ব্যবহৃত হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত অ্যালগরিদমের।
ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট পদ্ধতি
পরীক্ষার মোট সময়সীমা ১ ঘণ্টা। প্রশ্ন বাছাইয়ের জন্য ডুওলিঙ্গোর রয়েছে সমৃদ্ধ ডাটাবেস। তাই যতবারই পরীক্ষা দেওয়া হোক না কেন, একই প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ১ ঘণ্টা সময় বন্টিত থাকে পরস্পর থেকে ভিন্ন ধরনের প্রশ্নাবলি সম্বলিত ৩টি বিভাগে।
প্রশ্ন বিন্যাস ও সময় বন্টন
ইন্ট্রোডাকশন অ্যান্ড অনবোর্ডিং (বরাদ্দ সময় ৫ মিনিট)
এখানে কম্পিউটারের ক্যামেরা, স্পিকার এবং মাইক্রোফোন সঠিকভাবে কাজ করছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের যে কোনো একটি আপলোড করে জমা দিতে হবে। এরপর শুরু হবে পরীক্ষার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনা।
আরও পড়ুন: চাকরির জন্য সিভি তৈরিতে যে বিষয়গুলো পরিহার করবেন
অ্যাডাপ্টিভ টেস্ট (বরাদ্দ সময় ৪৫ মিনিট)
এটিই পরীক্ষা প্রধান অংশ, যেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে ইংরেজি দক্ষতা পরিমাপ করা হয়। প্রতিটি প্রশ্ন কতটা কঠিন হবে তা নির্ভর করবে ঠিক আগের প্রশ্নে পরীক্ষার্থীর দেওয়া উত্তরের উপর।
রাইটিং স্যাম্পল অ্যান্ড স্পিকিং স্যাম্পল (বরাদ্দ সময় ১০ মিনিট)
এখানে যাচাই হবে ইংরেজি লিখতে ও কথা বলতে পারার দক্ষতা। কথা বলার নমুনার বিপরীতে প্রতিক্রিয়া প্রদানের জন্য সময় পাওয়া যাবে ১ থেকে ৩ মিনিট। আর লেখার ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে ৩ থেকে ৫ মিনিট।
ডিইটি স্কোর পদ্ধতি
ইংরেজি ভাষার পারদর্শিতা মূল্যায়নের জন্য স্কোর করা হয় ১০ থেকে ১৬০ ডিইটি স্কেলে। এখানে ন্যূনতম ১২০ এর উপরে স্কোর থাকলে ইংরেজিতে দক্ষ বলে বিবেচিত হয়। পরীক্ষা দেওয়ার পর ফলাফল পাওয়া যায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
এই ফলাফলটি সামগ্রিক এবং সাবস্কোর এই ২ ভাগে সরবরাহ করা হয়। সামগ্রিক স্কোরে ফলাফল হিসেবে ১০ থেকে ১৬০-এর মধ্যে একটি সংখ্যা উল্লেখ থাকে। আর সাবস্কোরে ৪টি বিভাগে স্কোর দেখানো হয়। এগুলো হলো-
- কম্প্রিহেনশন (পড়া ও শোনার দক্ষতা)
- কনভারসেশন (শোনা ও কথা বলার দক্ষতা)
- লিটারেসি (পড়া ও লেখার দক্ষতা)
- প্রডাকশন (লিখতে ও কথা বলার দক্ষতা)
প্রাপ্ত ফলাফল হিসেবে ডিইটি স্কোর বা গ্রেডের মেয়াদ থাকে ২ বছর।
আরও পড়ুন: ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
বিশ্বব্যাপী ডুওলিঙ্গো (ডিইটি) পরীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা
ডিইটি স্কোর হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড, এমআইটি (ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি) এবং ইয়েলসহ ৫ হাজারেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা হয়। আয়ারল্যান্ড তার স্টুডেন্ট ভিসা প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এই পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, কিংস্টন ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ সাউদাম্পটন এবং মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির মতো স্বনামধন্য ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ডুওলিঙ্গো স্কোর গ্রহণ করে।
পরীক্ষার একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনলাইনে হওয়ায় এখানে আলাদা করে ভেন্যু ব্যবস্থাপনার ঝামেলা নেই। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক পরীক্ষার স্কোর ট্র্যাক রাখাও সহজতর। সর্বসাকূল্যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক কম প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদেরকে মূল্যায়ন করতে পারে।
আরও পড়ুন: ফুড ব্লগার বা ভ্লগার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়
মার্চে ৫১০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ: ইপিবি
চলতি বছরের মার্চে ৫১০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার(২ এপ্রিল) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এতে দেখা যায় যায়, গত চার মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৫ বিলিয়ন ডলার।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯ মাসে ৪ হাজার ৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এই রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি এখন পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল এবং প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমেছে।
ফলে সার্বিক পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম।
আরও পড়ুন: পর্তুগালের এআইসিইপি’র সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সমঝোতা স্মারক সই করল ইপিবি
২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭২০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ৭৯ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ কম।
গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) মোট ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ৬ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হলেও মার্চ মাসের শেষে পণ্য রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ পিছিয়ে ছিল।
আরও পড়ুন: ১১ মাসে রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৫০.৫২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: ইপিবি
'খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার' চালু করল বিজিএমইএ
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে 'খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার' উদ্বোধন করেছে বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার(২ এপ্রিল) ঢাকায় বিজিএমই’র প্রধান কার্যালয়ে এটির উদ্বোধন করা হয়।
খলিলুর রহমানের মেয়ে নাসরিন সুবহান, ছেলে স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল ও পুত্রবধূ রূপা সায়েফের উপস্থিতিতে 'খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার' উদ্বোধন করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
বিজিএমইএ বৈশ্বিক বাজারের প্রবণতার ক্রমবর্ধমান প্রেক্ষাপটে নেভিগেট করার ক্ষেত্রে ক্রমাগত শেখার ও উদ্ভাবনের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বিজিএমইএ ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান দিয়ে শিল্প অংশীজনদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি প্রয়াত মেজর জেনারেল খলিলুর রহমানের (অব.) সম্মানে নামকরণ করা এই নলেজ সেন্টারটি বাংলাদেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক।
আরও পড়ুন: উচ্চমানের পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধানে জোর দিচ্ছে বিজিএমইএ
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি তৈরি পোশাক শিল্পের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য অব্যাহত জ্ঞানার্জনের অপরিহার্যতার উপর জোর দেন।
তিনি শিল্প-প্রাসঙ্গিক জ্ঞানার্জনে সহায়তা এবং এর সামগ্রিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিতে নলেজ সেন্টারটি যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তা তুলে ধরেন।
অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস সম্বলিত খলিলুর রহমান নলেজ সেন্টার প্রশিক্ষণ সেশন, সেমিনার এবং কর্মশালার সুবিধার্থে শিক্ষা ও সহযোগিতার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
এর ডিজিটাল-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, শিল্প বিশেষজ্ঞ, পণ্ডিত এবং বিশ্বজুড়ে পেশাদাররা ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়ার, বর্তমান ও উদীয়মান ব্যবসায়িক বিষয়গুলোর পাশাপাশি শিল্প-সম্পর্কিত প্রযুক্তিগুলোতে অগ্রগতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ও দক্ষতা বিনিময় করার সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দাবি
পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের জন্য ৫, ৬ ও ৭ এপ্রিল খোলা থাকবে ব্যাংক
পোশাক শ্রমিকদের বেতন, ঈদ বোনাস, ভাতা ও রপ্তানি বিল পরিশোধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় ৫, ৬ ও ৭ এপ্রিল তফসিলি ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন (ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা থাকবে।
এতে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা ও নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামে অবস্থিত ব্যাংকের শিল্প সংশ্লিষ্ট শাখাসমূহে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দাবি
গাজীপুরে সরকার নির্ধারিত মজুরির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ