ব্যবসা
বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংক নীতি অনুমোদন করবে ১৪ জুন
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) সকল স্তরের জনগণকে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ১৪ জুন তার বোর্ড সভায় অনুমোদনের জন্য ‘ডিজিটাল ব্যাংক’ নীতিমালার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
দেশে ডিজিটাল ব্যাংক কার্যক্রমের রূপরেখা ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে।
আগামী ১৪ জুন অনুষ্ঠিতব্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী পর্ষদ সভায় ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হবে।
সারাদেশে শাখা ছাড়াই চলবে এই ব্যাংক।
আরও পড়ুন: বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিবেদন দ্রুত পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে বিবি’র নির্দেশ
বিবি সূত্র জানায়, প্রযুক্তিনির্ভর এই আধুনিক ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম ১৫০ কোটি টাকা মূলধন প্রয়োজন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি প্রচেষ্টাকে সম্প্রসারণ ও ত্বরান্বিত করতে একটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের কথা বলেছেন।
এ লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে। এই নীতিমালা এবং ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালিত হবে।
আরও পড়ুন: এমএফএসের দৈনিক লেনদেন ৩২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে: বিবি
ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন পেলেই স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে ব্যাংকটির যাত্রা আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।
বর্তমানে প্রচলিত ব্যাংক লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধনের প্রয়োজন ৫০০ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণের আবেদন এবং ঋণ অনুমোদন অনলাইন ভিত্তিক হবে এবং এতে ভুয়া ঋণগ্রহীতা ও প্রকৃত ঋণগ্রহীতা শনাক্ত করা সহজ হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের রূপরেখা ও নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। এটি ১৪ জুন বোর্ড সভায় পাঠানো হবে।
বোর্ড সভায় অনুমোদনের পর পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাতের ডিজিটালাইজেশনে বিপ্লব ঘটিয়েছে: ড. আতিউর
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু, কেজিতে কমল ২০ টাকা
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি শুরু হওয়ায় কমতে শুরু করেছে দেশি পেয়াজের দাম। ফলে ৮০ টাকার পেঁয়াজ আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে কেজিতে ২০ টাকা কমে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ এখনো পুরোপুরি বাজারে আসেনি। তবে ৪০ টাকায় কিছু পেঁয়াজ বন্দরের মোকামে পাইকারী বিক্রি হয়েছে। আর এই এই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে।
সরকার ৮০ দিন পর পেঁয়াজ আমদানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩টি ট্রাকে ৬০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। যা আজও ভারত থেকে আমদানি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক সেলিম উদ্দিন জানান, আজ সন্ধ্যা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ সরবরাহ করা হবে। এরপর থেকে দাম অনেক কমে আসবে। পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজের দামও অনেক কমবে। ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই পেঁয়াজের বাজার ৩০-৪০ টাকার মধ্যে চলে আসবে।
আরও পড়ুন: হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু
আরেক আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম জানান, আমদানিকারকরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য প্রায় ১৮ হাজার মেট্রিকটনের এলসি করেছেন। যা গতকাল থেকে আমদানি করা হচ্ছে।
স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ী মঈনুল হোসেন জানান, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ এখনো পুরোপুরি বাজারে আসেনি। তবে আমদানি হচ্ছে এই খবরে দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি করা হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। দু-একজন খুচরা ব্যবসায়ী ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০ টাকায় বিক্রি করছে।
বাজারে বিকাল বা সন্ধ্যা নাগাদ ভারতীয় পেঁয়াজ পুরোপুরি চলে আসবে। কাল থেকে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাবে। এতে ভোক্তারা পেঁয়াজের দামে স্বস্তি পাচ্ছে।
এদিকে সরকার দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৬ মার্চ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি বন্ধ রাখে। এরপর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের সংকট দূর হবে, পেঁয়াজ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হবে: কৃষিমন্ত্রী
শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষি সচিব
হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু
দীর্ঘ ২ মাস ২০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার থেকে আবারও দিনাজপুরের হাকিমপুরে হিলি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার (৫ জুন) হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ এবং সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ জানান, সরকারের অনুমতির সঙ্গে সঙ্গে দিনাজপুরের হাকিমপুরে স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, দীর্ঘ আড়াই মাস পর আজ সোমবার বিকাল পৌনে ৬ টার দিকে ৪০ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজবাহি ২টি ট্রাক হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা ল্যান্ডেপার্টে প্রবেশ করেছে।
তিনি আরও জানান, সোমবার দুপুরে ১৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র হাতে পার হিলির সততা বাণিজ্যালয়, রায়হান ট্রেডার্স, এন আলম ট্রেডার্স, সালাম ট্রেডার্স, সালেহা ট্রেডার্স, বিকে ট্রেডার্স ও বিএস ট্রেডিং নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ৭ জন আমদানিকারক।
এছাড়া দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করেছিল সরকার।
তিনি আরও জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়ি থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতিপত্র পেয়েছেন কয়েকজন আমদানিকারন প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা এলসি খুলেছেন৷ এলসির পেঁয়াজ বাজারে পৌঁছালে দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।
এছাড়া দুই-একদিনের মধ্যে কয়েকশ’ পেঁয়াজবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করবেন বলে আশা করছেন তারা।
অপরদিকে, সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ জানান, দীর্ঘ দুই মাস ২০ দিন পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার বিকাল থেকে পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় ট্রাক বন্দর দিয়ে আসতে শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত পেঁয়াজ ভর্তি ৫৭ টি ভারতীয় ট্রাক সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে।
তিনি জানান, পেঁয়াজবাহী ৫৭ টি ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ শুরু করেছে। এতে মোট ১ হাজার ৯৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। আইপি অনুমোদন পাওয়া নথিপত্র পেলেই বন্দরে ট্রাক প্রেবেশের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, ২ মাস ২০ দিন বন্ধ ছিল পেঁয়াজ আমদানি। তবে আজ সোমবার বিকালের পর থেকে স্থল বন্দরে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ পেঁয়াজ এসেছিল সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে। এরপরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আমদানির অনুমতি না দেওয়ায় ফের পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা
হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
বাংলাদেশ মে মাসে ৪.০৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে
বাংলাদেশ মে মাসে পোশাক রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে ৪ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
গতমাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার মূলের ওভেন পোশাক রপ্তানি করেছে যা লক্ষ্যমাত্রার ২৩ দশমিক ১৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আর নীট পোশাক রপ্তানি করেছে ২ দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা লক্ষ্যমাত্রার ৩২ দশমিক ৫৩ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া ৭.৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন অসম্ভব: বিজিএমইএ সভাপতি
সোমবার বিজিএমইএ –এর পরিচালক মহিউদ্দিন এই তথ্য জানান।
মে মাসে মোট পোশাক রপ্তানিতে ৪ দশমিক ০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৮ দশমিক ৩৩ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার।
এতে দেখা যায় বাংলাদেশ গত মাসে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে পিছিয়ে রয়েছে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার বা ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
সেই আলোকে চলতি ১১ মাসে(জুলাই-মে) পর্যন্ত পোশাক রপ্তানি করে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৪২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।
যেখানে গত ২০২১-২২ অর্থবছর (জুলাই-মে) প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৮ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ জুলাই-মে সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশের বেশি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড: ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ১ কোটি টাকা অনুদান দিল এফবিসিসিআই
১১ মাসে রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৫০.৫২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: ইপিবি
বাংলাদেশ মে মাসে পণ্য রপ্তানি করে ৪ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা বছরে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশে ২০২২ সালের মে মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মধ্যে রপ্তানি খাত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে।
রবিবার প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের এপ্রিলে পণ্য রপ্তানি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়, কারণ হঠাৎ করেই রপ্তানি ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৩ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। তবে মে মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৮৯০ মিলিয়ন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের ২০২২-২৩ সালের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) ৫০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ রপ্তানি ৭ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৪৭ দমমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারের।
আরও পড়ুন: আইসিটি খাত থেকে রপ্তানি আয় ১.৭ বিলিয়ন ডলার: প্রধানমন্ত্রী
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, নন-লেদার জুতা ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে।
তবে পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৪২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছর ২০২১-২২ এর একই সময়ের তুলনায় ১০ দমমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি পণ্য ছিল ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এইখাতে প্রবৃদ্ধি ৪২ শতাংশ।
তৃতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানিকৃত পণ্য হল ১ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের হোম টেক্সটাইল পণ্য। এ খাতের রপ্তানি কমেছে ৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: এলডিসি-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাধার সম্মুখীন হতে পারে: বাণিজ্য সচিব
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৩৮.৫৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে
শিল্প উৎপাদন সচল রাখতে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করুন: এফবিসিসিআই
দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আর্থিক বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্পখাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখা এবং কারখানাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার সম্প্রসারণের আহ্বান জানানো হয়।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআইয়ের নিজস্ব সম্মেলন কক্ষে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন এ আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দিয়ে কাঁচামালের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড: ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ১ কোটি টাকা অনুদান দিল এফবিসিসিআই
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করতে শিল্প উৎপাদন সচল রাখতে হবে। সুতরাং, সাশ্রয়ী মূল্যের এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আর্থিক সম্পদ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারকে আরও কৌশলী হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রস্তাবিত বাজেটে বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম বলেন, এই ঋণ নেওয়ার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।
এমতাবস্থায় ব্যাংকিং খাতের পরিবর্তে তহবিলের ব্যয় বিবেচনা করে সম্ভাব্য সর্বনিম্ন সুদে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন গ্রহণের জন্য তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে: নসরুল হামিদ
তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ
শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া ৭.৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন অসম্ভব: বিজিএমইএ সভাপতি
বর্তমান সংকটকালীন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স এবং বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের নিম্নমুখী ধারায় সরকার আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, তা শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান
শুক্রবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজেটের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা ও রাজস্ব বাড়ানো।
ফারুক বলেন, যেহেতু জিডিপি’র প্রায় ৩৫ দশমকি ৬ শতাংশ আসে শিল্প খাত থেকে, যা ২০৪১ সাল নাগাদ ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। শিল্পের সকল সুযোগ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ তার।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা মনেকরি অর্থনীতিকে প্রানবন্ত রাখতে, প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে অর্থনৈতিক সুরক্ষা দিয়ে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতি তৈরি করার জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে যা বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত যৌক্তিক। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় পোশাক শ্রমিকদের অন্তভর্‚ক্ত করার বিষয়টির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানিমুখী শিল্পখাতের জন্য ইতিবাচক প্রস্তাবগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, আমদানি ও রপ্তানিতে ব্যবহৃত কন্টেইনার আমদানিতে করভার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা। কৃত্রিম আঁশের তৈরি কাটা ফেব্রিক্স এবং নষ্ট টুকরা (এক মিটারের বেশি দীর্ঘ নয়); বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেষ্টিং ইনস্টিটিউশনের নিকট নমুনা হিসেবে বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ফেব্রিক্স (তিন বর্গমিটারের নীচের আকৃতির) এবং ট্যাপস অ্যান্ড ব্রেইডসের উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদান।
ফারুক প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩টি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ মূসক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে সবধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও এলএনজি ও এলপিজি’র আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি করেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেলেও নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের জায়গাটিতে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
ফারুক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় আমরা রপ্তানিমূখী বস্ত্র ও তৈরি পোশাকখাতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা খুঁজে পাইনি। বিশেষ করে আমরা উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব না করে ২০২১-২২ অর্থবছরের যেটি ছিল, অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করার জন্য প্রস্তাব করেছিলাম। কারণ এমনিতেই কোভিডের কারণে আমাদের শিল্পে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটি পুষিয়ে নিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বাজেট বক্তব্যে অন্যান্য বছরের মতো রপ্তানিখাতগুলোর জন্য প্রণোদনা বাবদ অর্থ বরাদ্দের কোনো ঘোষণা আসেনি বলেও জানান তিনি।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০২১ সালের আগষ্ট মাসে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে বর্তমানে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে এসেছে। সে সময়টিতে কিন্তু আমাদের রপ্তানি বেড়েছে, রপ্তানি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ঐ এক বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, আর চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। যদিও শেষের ২মাসে রপ্তানি কমে এসেছে।
বর্তমান সংকট তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের ফলে আমাদের পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। অনেক কারখানা সক্ষমতার বাইরে চলছে, আগামি মাসগুলোতে আমরা এই অবস্থা উত্তরণের কোন লক্ষণ দেখছি না। এর উপর ১ জুলাই থেকে ব্যাংক সুদের যে ক্যাপ নির্ধারিত ছিল তা তুলে দেয়া হচ্ছে। এর ফলে আমাদের ব্যয় আরও বাড়বে এবং আমরা প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাব।
তিনি বলেন, আমাদের পোশাকের প্রধান দুই বাজার আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে ঋণের সুদের হার অনেক বেড়েছে; মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমেছে। পোশাক রপ্তানির জন্য ইউরোপের জার্মানি অফিসিয়ালি জানিয়েছে, দেশটি মন্দার কবলে পড়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থাও ক্রমশ সঙ্গীন হচ্ছে। আশঙ্কার বিষয় হলো- ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জানুয়ারি-মার্চ মাসের আমদানি তথ্য নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাক আমদানি নভেম্বরে কমেছে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ, এবং ডিসেম্বরে কমেছে ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
নভেম্বর-মার্চ সময়ে ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি ভ্যালুতে বেড়েছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ভলিউমে কমেছে ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। অবশ্যই পণ্যের রপ্তানি মূল্য বেড়েছে বলে এমনটি ঘটেছে।
চলমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উৎসে কর ২০২১-২২ অর্থবছরের ন্যায় শূন্য দশমকি ৫০ শতাংশ ধার্য করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত তা কার্যকর করার জন্য পুনরায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ফারুক।
এছাড়া নগদ সহায়তার উপর আরোপকৃত ১০ শতাংশ কর প্রতাহারের অনুরোধও জানান তিনি। যেহেতু নগদ সহায়তা কোন ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিসংগত বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
করারোপ করা সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাবনাও তুলে ধরে তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের মূল্যায়নের সময় স্বাভাবিক হারে ৩০ শতাংশ কর আরোপ না করে কর্পোরেট কর হার ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। তৈরি পোশাক শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চুক্তির মূল্য পরিশোধের সময় প্রস্তাবিত ধাপ অনুযায়ী উৎসে কর ধার্য করা, উক্ত করকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করা, অন্যথায় মূল্যায়নের সময় কর আরোপকালে কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ হারে কর ধার্য করা। রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য পরিশোধিত ফি হতে উৎসে আয়কর কর্তনের হার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা।
তিনি বলেন, বিগত চার দশকে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছলেও আমাদের পণ্যের উপাদান পরিবর্তন তুলনামুলকভাবে কম হয়েছে। বিশ্বে মোট টেক্সটাইল চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই নন-কটন এবং বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের ৫২ শতাংশ পণ্য নন-কটনের। আর আমাদের নন-কটন পোশাকের রপ্তানির হার মাত্র ২৬ শতাংশ। সরকারকে নন-কটন খাতে বিনিয়োগ ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে এবং প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে নন-কটন পোশাক রপ্তানির উপর ১০ শতাংশ (রপ্তানি মূল্যের) হারে বিশেষ প্রনোদনা প্রদানের অনুরোধ করেন তিনি।
ফারুক বলেন, টেক্সটাইল ও পোশাকখাত থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টনের মতো ঝুট তৈরি হয়। এগুলো রিসাইকেল করে পুনরায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব, যা প্রকারান্তরে আমাদের দেশজ প্রবৃদ্ধি আনবে। তাই, এ খাতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে রিসাইকেলিং শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়া, পণ্য ও সেবাকে শুল্ক ও ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি করেন তিনি।
বন্ড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে ৩ বছর করার দাবি করেন ফারুক। এছাড়া কাঁচামাল আমদানিতে এইচ. এস. কোড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের বিষয়টি বিবেচনার জন্যও পুনরায় অনুরোধ করেন ফারুক।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্বে ব্যবসা সহজীকরণে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত করার জন্য সেবা প্রদানকারী সংস্থা, যেমন কাষ্টমস, বন্দর এর সেবা প্রাপ্তি আরও গতিশীল ও সহজ করা গেলে তা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশকে আরও উন্নত করবে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি দিতে প্রয়োজন নীতি সহায়তা ও নীতি স্থিতিশীলতা। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক ও রাজস্ব সংক্রান্ত নীতি স্থির করা হলে বিনিয়োগকারীরা স্বস্তির সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার মাত্র ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এই শেয়ারটি ১২ শতাংশে এ উন্নীত করা এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিরিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তারা কাজ করছেন বলেও জানান ফারুক হাসান।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তোরণে বাংলাদেশকে সহায়তায় ইইউ’র প্রতি বিজিএমইএ প্রধানের আহ্বান
কুমারখালীর ৩০ নারী তৈরি করছেন ‘ইচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিন’
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৩০ জন নারী মিলে ঘরে বসে তৈরি করছেন ‘ইচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিন’ নামের এক ধরনের স্যানিটারি ন্যাপকিন।
‘ঐহিত্যের পর্যটন, উদ্ভাবনে উন্নয়ন’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে 'ইচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিন' বিষয়ক অভিহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানান উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, বেকারত্ব নিরসন ও উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষে ইউএনও বিতান কুমার মণ্ডলের সার্বিক সহযোগিতায় ২০২২ সালে প্রথমে ১৫ জন বয়স্ক নারী জাইকা সংস্থা থেকে ৬ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর তারা ব্যক্তিগত মাসিক চাঁদা ও পল্লী উন্নয়ন সঞ্চয় ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে কিছু টাকা ঋণ নিয়ে ইচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কাজ শুরু করেন।
বর্তমানে ৩০ জন নারী প্রতিমাসে প্রায় ১০ হাজার পিস ন্যাপকিন তৈরি করছেন। প্রতি প্যাকেট (১০ পিচ) ৫০ টাকায় পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করছেন তারা।
আরও পড়ুন: পোশাক কারখানায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে বিকাশ
ঢাকায় আসছেন এয়ারএশিয়া’র প্রধান নির্বাহী বো লিংগাম
তিন দিনের দাপ্তরিক সফরে ৩০ মে ঢাকায় আসছেন প্রেসিডেন্ট (এভিয়েশন), ক্যাপিটাল এ এবং এয়ারএশিয়া এভিয়েশন গ্রুপ লিমিটেডের গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বো লিংগাম।
সফরকালে তিনি এয়ারএশিয়ার স্থানীয় অংশীদার এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে যোগ দিবেন।
বাংলাদেশের বিমান শিল্পের আরও সম্ভাবনা বোঝার জন্য তিনি এভিয়েশন সংস্থার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
এয়ারএশিয়া এভিয়েশন লিমিটেডের গ্রুপ সিইও হিসেবে বো লিংগাম এয়ারএশিয়া গ্রুপের চারটি এয়ারলাইনসের ব্যবসার (এয়ারএশিয়া মালয়েশিয়া, এয়ারএশিয়া ফিলিপাইনস, এয়ারএশিয়া থাইল্যান্ড এবং এয়ারএশিয়া ইন্দোনেশিয়া) পাশাপাশি এয়ারএশিয়ার পরামর্শক, কর্পোরেশন বিভাগসহ শেয়ার পরিষেবা এবং সান্টান ফুড গ্রুপ ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিষেবার যৌথ উদ্যোগের ব্যবসা গ্রাউন্ড টিম রেড পরিচালনা করছেন।
বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড: ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ১ কোটি টাকা অনুদান দিল এফবিসিসিআই
ঢাকার বঙ্গবাজারে সাম্প্রতিক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য অনুদানের এক কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
শনিবার চেম্বারের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এফবিসিসিআই আইকন, ঢাকায় বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির কাছে চেক হস্তান্তর করেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন,‘যে কোনো ধরনের অগ্নিকাণ্ড যেকোনো ব্যবসায়ীর জন্যই দুর্ভাগ্যজনক। বঙ্গবাজারে যখন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আগুন এতটাই ভয়াবহ ছিল যে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়, সেখানে কিছুই অবশিষ্ট থাকেনি। এই সংকটে আমাদের একটু হলেও অবদান রাখা উচিত। তাই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের এক কোটি টাকা সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের ১ কোটি টাকা অনুদান দেবে এফবিসিসিআই
সার্ক চেম্বারের নতুন সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন,‘আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা আজ এই চেক হস্তান্তর করছি। আমি মনে করি, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অগ্নিকাণ্ডে সকল সক্ষম ব্যবসায়ীদের ছোট ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।’
জসিম উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীদের অবশ্যই কমপ্লায়েন্স মেনে চলতে হবে। তবে শুধু ব্যবসায়ীদের দোষ দিলে হবে না, বাণিজ্যিক ভবন ও কারখানার লাইসেন্স প্রদানকারী কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে এফবিসিসিআই সভাপতি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ী ও আধুনিক ভবন নির্মাণের পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এফবিসিসিআই প্রধান ব্যবসায়ী নেতারা এবং বাজার কমিটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বাজার সম্পর্কে সচেতন হতে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করার আহ্বান জানান।
দেশের কারখানায় অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এফবিসিসিআই সরকারের সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি খাতে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আমরা ফায়ার সেফটি কাউন্সিল গঠন করেছি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ৩,৮৪৫ জন: ডিএসসিসি
এই নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার কোম্পানি পরিদর্শন করা হয়েছে। এই নিরাপত্তা পরিষদ সারাদেশে মোট ৪৪ হাজার কোম্পানি পরিদর্শন করবে। এ ছাড়া প্রতিটি কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান জসিম।
তিনি বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এবং এফবিসিসিআই ফায়ার সেফটি কাউন্সিলকে দোকান ও শপিং মলে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন।
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ফায়ার সার্ভিস ইউনিট বঙ্গবাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে কয়েকবার সতর্ক করে দিলেও বাজার কমিটি বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি।
সরকারকে দোষারোপ না করে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ দোকন মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, রাজধানীর বিদ্যমান বাজারগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোনো ধরনের ঝুঁকি লক্ষ্য করা গেলে তাদেরকে সতর্ক করার পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংস্কারের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবিব উল্লাহ ডন, পরিচালকবৃন্দ, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ (অব.), বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি এবং অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর