ব্যবসা
তৈরি পোশাক শিল্পে জুলাই-ডিসেম্বরে ১৬% বেড়ে রপ্তানি ২৩ বিলিয়ন ডলার: বিজিএমইএ
বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
সোমবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যের বরাত দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
১৩ দশমিক ৪২ ও ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে নিটওয়্যার ও ওভেন পোশাক খাত যথাক্রমে ১২ দশমিক ৬৬ ও ১০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার ভূমিকা রেখেছে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সাল ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর বছর: বিজিএমইএ
বিজিএমইএর পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘ডিসেম্বরে পোশাক শিল্প ভালোই চলেছে। ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে চার দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে, যা এক মাসের হিসাবে সর্বোচ্চ।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমরা ক্যালেন্ডার বছরের তথ্য বিবেচনা করি তাহলে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই বাংলাদেশ ২০২২ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে একটি নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে। বিজিএমইএ-এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২১ সালের তুলনায় ২৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২০২২ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।’
মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘নিটওয়্যার খাত থেকে রপ্তানি আয় ২৪ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে ওভেন খাত থেকে আয় ২০ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। উভয় খাতে ২০২২ সালে যথাক্রমে ২৬ দশমিক ১১ শতাংশ ও ২৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি হয়েছে।’
ইপিবি অনুসারে, ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ ২৭ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে।
আরও পড়ুন: ইউরোপে পোশাক রপ্তানিতে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের
ইতালির সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ আছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশে জুলাই-ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় ২৭.২২ বিলিয়ন ডলার
এক সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে চলতি অর্থবছরের ২০২২-২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ ২৭ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে।
দেশে শুধুমাত্র গত দুই মাসে (নভেম্বর ও ডিসেম্বর) রপ্তানি থেকে ১০ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা দুই মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালে লেদারপণ্যের রপ্তানি হবে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মতে, ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা একমাসের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ও।
২০২২ সালের নভেম্বরে রপ্তানি আয় প্রথমবারের মতো ৫ বিলিয়ন অতিক্রম করে। ডিসেম্বরে রপ্তানি আয়ে আরেকটি রেকর্ড গড়েছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় ছিল ৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন। চলতি বছরের ডিসেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
রপ্তানি আয়ে যথারীতি সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে তৈরি পোশাক।
তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয় ডিসেম্বরে বছরে ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় ছিল ৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, এক ইউনিটের দাম বৃদ্ধির কারণে ডিসেম্বরে পোশাক খাতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তিনি বলেন, ভালো দাম এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিলাস বহুল পণ্যের অনুপাত বৃদ্ধির কারণে পোশাক খাতের অবদান বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে দেশে কারখানাগুলো চালু রাখার বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ অনেক অর্ডার পেয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পোশাক নির্মাতারা প্রতি পিস ৪০ ডলারের বেশি দামে জ্যাকেট রপ্তানি করছে, যা আগে ছিল ৩০ ডলার।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার এবং ৪ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। পোশাক খাতের ভালো পারফরম্যান্সের জন্য জুলাই মাসে রপ্তানি ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বছরে ৩ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ আগস্টে রপ্তানির মাধ্যমে ৪ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা বছরে ৩৬ দশমিক ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করেছে।
সেপ্টেম্বরে এটি গত বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন হয়েছে। কেননা উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে পোশাকের অর্ডার কমে যায়।
আরও পড়ুন: জুলাই-নভেম্বর: প্রধান দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’
জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার সঙ্গে চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া চলছে: মন্ত্রী
ঋণ কেলেঙ্কারি সত্ত্বেও ২০২২ সালে পরিচালন মুনাফার শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক
অব্যবস্থাপনা এবং ঋণ কেলেঙ্কারির সমালোচনা সত্ত্বেও ২০২২ সালে পরিচালন মুনাফা অর্জনে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল)। বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আইবিবিএল এখন দেশের সর্বোচ্চ আমানত ধারণকারী ব্যাংক। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ঋণ কেলেঙ্কারির প্রতিবেদনের পর এই ব্যাংক থেকে অনেক আমানতকারী টাকা তুলে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫ ইসলামী ব্যাংকে তারল্য সংকটে ৪০০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংকগুলি বিতরণকৃত ঋণ এবং সংগ্রহের আপডেটের ওপর তাদের শাখা অফিসের তথ্যের ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
শনিবার প্রকাশিত বিবি’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ২০২২ সালে আগের (২০২১) বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিচালনা মুনাফা অর্জনে ব্যাংকগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আইবিবিএল। ২০২২ সালে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর), ব্যাংকটি দুই হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা অর্জন করেছে।
এর আগের বছর ২০২১ সালে ব্যাংকটির (আইবিবিএল) মুনাফা ছিল দুই হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। ২০২০ সালে তা ছিল দুই হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।
অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে, ২০২২ সালে, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক দুই হাজার ৫২০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০২১ সালে তা ছিল দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা।
কিন্তু পরিচালন মুনাফা ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। পরিচালন মুনাফা থেকে ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে প্রভিশন বা সেফটি স্টক সংরক্ষণ এবং কর্পোরেট ট্যাক্স পরিশোধের পর নিট মুনাফা গণনা করা হবে। নিট মুনাফা হল ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা।
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক ২০২২ সালে পরিচালন মুনাফা করতে পারেনি। বিপরীতে, তারা ৩৭১ কোটি টাকা লোকসান করেছে; গত বছরও লোকসান হয়েছিল ৮০ কোটি টাকা। এছাড়া ছয় মাসে সিটিজেন ব্যাংক পরিচালন মুনাফা করেছে দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ব্যাংকটি ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে কার্যক্রম শুরু করে।
অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবিএম মির্জা আজিজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে এবং এ ধরনের ঋণের সুদ আয় খাতে দেখিয়ে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। কাগজে ভাল দেখানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সদিচ্ছা প্রয়োজন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের প্রান্তিকে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৩৪ লাখ টাকার বেশি, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে বিবি’র পর্যবেক্ষক
২০২২ সাল ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর বছর: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) শনিবার বলেছেন, সদ্য শেষ হওয়া ২০২২ ছিল অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ও পুনর্গঠনের একটি বছর।
বিজিএমইএ পরিচালক মো মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় দুর্যোগ, কোভিড-১৯-এর দ্বারা সৃষ্ট সমস্ত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আমরা আমাদের স্থিতিস্থাপকতা প্রমাণ করেছি এবং ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। উন্নত অর্থনীতিগুলোও মন্দার দিকে যাচ্ছে, আর আমরা আমাদের অর্থনীতি এখনও মহামারি সঙ্কট থেকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে পারিনি। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যসহ পণ্যের দাম বাড়ছে এবং বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতির হার ২০২২ সালে রেকর্ড ৮ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছিল; যা ২০২১ সালে ছিল ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।’
তাই আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা সংকুচিত হচ্ছে। এসবই খুচরা বিক্রয় বাজারকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনকে ব্যাহত করছে।
রুবেল বলেন, ‘তবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে, আমাদের পোশাক রপ্তানি ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার ছিল। এটি তৈরি পোশাক (আরএমজি) উৎপাদনের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা, কেননা আমরা ৪০ বছরের যাত্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বাজারগুলো ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মার্কিন অপ্রচলিত বাজারে আমাদের রপ্তানি অংশ দ্বিগুণ হয়েছে। ০৯ অর্থবছরে রপ্তানি ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে ২২ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’
২০২১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিভিউ’ অনুসারে, বিশ্ব বাজারে ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ শেয়ার নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে স্থান পেয়েছে।
রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য শীর্ষ ডেনিম-সোর্সিং দেশ হয়ে উঠেছে। এখন আমরা সবচেয়ে বড় পোশাক রপ্তানিকারক চীনের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতায় রয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২২ আমাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বছর হয়ে থাকবে, কারণ আমরা ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি ছাড়িয়েছি।’
বিজিএমইএর পরিচালক বলেন, ‘২০২২ সালে আমরা ইএসজি অগ্রাধিকার ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০৩০ এর সঙ্গে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্নির্মাণ করেছি। আমাদের কাছে ইউএসজিবিসি দ্বারা স্বীকৃত লিড (এলইইডি) সবুজ আরএমজি কারখানার সংখ্যা সর্বাধিক। বর্তমানে, লিড গ্রিন কারখানার সংখ্যা ১৮৩, যার মধ্যে ৬০টি প্লাটিনাম।’
তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের সবচেয়ে বড় সাফল্যের মধ্যে একটি ছিল ‘মেড ইন বাংলাদেশ সপ্তাহ’।
রুবেল বলেন, ‘শুধুমাত্র ২০২৩ সালে এগিয়ে যাওয়া নয়, পরবর্তী দশকেও আমাদের এই সমস্ত রূপান্তর বজায় রাখতে হবে এবং চালিয়ে যেতে হবে। পণ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন, ফাইবার ও বাজার বৈচিত্র্য এবং মূল্য সংযোজন এই সেক্টরের জন্য প্রধান সুযোগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও আমাদের ব্যাকওয়ার্ড এবং ফরোয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্পে আমাদের সক্ষমতা বিকাশ করতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের উদ্ভাবন, প্রযুক্তিগত আপগ্রেডেশন, ডিজাইন ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক সক্ষমতার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।’
ওএমএস-এর জন্য ২ কোটি ৯ লাখ লিটার তেল ও ৮ হাজার টন ডাল কেনা হবে
রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কোনো টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের কাছ থেকে মোট দুই কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সংগ্রহ করবে।
টিসিবি খোলা টেন্ডারের মাধ্যমে আট হাজার মেট্রিক টন মসুর ডালও সংগ্রহ করবে।
বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে কার্যত উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
পণ্যগুলো তার চলমান খোলা বাজার বিক্রয় (ওএমএস) প্রোগ্রামের জন্য সংগ্রহ করা হবে যা সারা দেশে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য চালু করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে টিসিবি ওএমএস প্রোগ্রামের আওতায় স্থানীয় বাজারে বিক্রি করার জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে আসছে।
আরও পড়ুন: ওএমএস-এর জন্য ২.২০ কোটি লিটার সয়াবিন তেল সংগ্রহ করবে টিসিবি
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ৮১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকার সেনা ভোজ্যতেল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে প্রায় ৪৪ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। সে হিসেবে প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৮৪ টাকা ৫ পয়সা।
টিসিবি ওমানের জাদ আল রাহিল ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি সালতানাত (স্থানীয় এজেন্ট: স্কাই ট্রেডিং) থেকে ডিপিএম এর মাধ্যমে ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সংগ্রহ করবে। অর্থাৎ প্রতি লিটারের জন্য খরচ হবে ১৩৭ টাকা ৯৪ পয়সা।
এছাড়া ডিপিএমের মাধ্যমে শুন শিং এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ১০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সংগ্রহ করবে। প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৮৫ টাকা ৫ পয়সা।
টিসিবি আরাবেল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক এএস (স্থানীয় এজেন্ট: বিআইএনকিউ, ঢাকা) ৮১ টাকা ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আট হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সংগ্রহ করবে। প্রতি কেজির দাম পড়বে ১০১ টাকা ৯৭ পয়সা।
আরও পড়ুন: ১ কোটি নিম্নআয়ের পরিবারের জন্য পণ্য বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি
৩.৩০ কোটি লিটার সয়াবিন তেল আমদানি করবে টিসিবি
খাদ্যপণ্য আমদানিতে ভারতের কাছে বার্ষিক কোটা সুবিধার অনুরোধ: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ভারতের কাছে এ সকল পণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধা প্রদানে অনুরোধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভা ২২-২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রী পিয়ুশ গয়ালের নেতৃত্বে দু'দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অবস্থায় ভারতের কাছে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সভায় আমাদের পক্ষ থেকে এসব পণ্যের আমদানির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের কোটার কথা তুলে ধরা হয়।
তবে ভারত বলেছে, যে পরিমাণ পণ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশ সেই পরিমাণ পণ্য ভারত থেকে আমদানি করে না।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক
তাছাড়া, বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য পাটজাত সামগ্রীর ওপর ২০১৭ সাল থেকে আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি আর বহাল না রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের একটি দাবি ছিল দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা, সেটি নিয়ে কথা হয়েছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী একটি বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছিলেন ভারত থেকে উচ্চ ফলনশীল রাবার ক্লোন আমদানি করার বিষয়ে।
এর কারণ আমাদের দেশের রাবার খুব বেশি ভালো হয় না।
এছাড়া কারেন্সির বিষয়ে কথা হয়েছে, দুই দেশের বাণিজ্যে বিনিময় মাধ্যম হিসাবে ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় রুপি ব্যবহারের। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত কিছু বলতে পারিনি, কারণ এক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ লাগবে।
আমরা বলেছি আলোচনা হতে পারে। তারা রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে এটি শুরু করেছে। এটা পারব কিনা সেই হিসাবের ব্যাপারও আছে।
এছাড়াও বর্ডার হাট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সবগুলো আলোচনা নিয়েই আমরা সন্তুষ্ট।
টিপু মুনশি বলেন, পণ্য ইম্পোর্টে যে কোটার কথা বলেছি সেখানে পরিমাণ উল্লেখ করেছিলাম। তারা বলেছে, পরিমাণ তো আমরা (বাংলাদেশ) আন্দাজ করে বলেছি, সেক্ষেত্রে সঠিক কতো পরিমাণ পণ্য প্রয়োজন হবে সেটি নির্ধারণ করতে বলেছে।
আমরা একটু বেশি করেই চেয়েছিলাম।
তারা বলেছে, অতীতের ৭-৮ বছরের রেকর্ড বলে না তোমাদের (বাংলাদেশ) এতো দরকার। বাংলাদেশের জন্য রাখার পর যদি না নেয় তাহলে সেগুলো নষ্ট হবে। সেজন্য দুইপক্ষ আলোচনা করে ঠিক করতে বলেছে।
ব্যবসায়ীদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা প্রদানে ভারতের আপত্তি নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা বলেছে এক থেকে দেড় মাস একটু অপেক্ষা করতে হবে। করোনার পর মেডিকেল ভিসার জন্য প্রচুর চাপ পড়েছে। সেটা দিতেই তাদের সমস্যা হচ্ছে। তারা বলছে, জানুয়ারির শেষ দিকে তাদের প্রেসার কমে আসবে। তখন তারা রেগুলার ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসা, মাল্টিপল ভিসা, ব্যবসায়ীদের ভিসার ব্যবস্থা করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছিলাম একটা সিইও ফোরাম করার বিষয়ে। আমাদের দেশের ১০টি বড় প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং তাদের দেশের ১০টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সিইও নিয়ে এটি করা যেতে পারে। যেমন আমাদের দেশে প্রাণ, এফবিসিসিআই এর মতো প্রতিষ্ঠান আছে, সেই প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। তারা (ভারত) বলছে, তাদের নামগুলো সিলেক্ট করতে একটু দেরি হচ্ছে, তারপরও তারা আশাবাদী এই দশটি নাম দিলে দুই দেশের ১০টি করে প্রতিষ্ঠানের সিইওদের নিয়ে ফোরাম গঠিত হবে।
বিভিন্ন বাণিজ্যিক ইস্যুতে তারা আলোচনা করবেন। সরকারকে তারা আলোচনা করে কোন পরামর্শ থাকলে দেবেন।
সভায় প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-ভারত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশীপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সম্পাদনের লক্ষ্যে নেগোসিয়েশন শুরুর বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বিভিন্ন দ্বি-পক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরাম পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদান, বিভিন্ন প্রকার শুল্ক/অশুল্ক বাধা অপসারণের মাধ্যমে বাণিজ্য সহজীকরণ, ভারতের পক্ষ থেকে করোনার কারণে বন্ধ থাকা বর্ডার হাটসমূহ পুনরায় চালু করার বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে শিগগিরই সেগুলো চালুর কার্যক্রম ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের বৃহৎ ব্যবসায়িক অংশীদার বাংলাদেশ: বাণিজ্যমন্ত্রী
ঘরে ঘরে শিক্ষিত সন্তান থাকলে মানুষের অভাব থাকবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী
জাতীয় পর্যায়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২২’ পেল ফুডপ্যান্ডা
ডিজিটাল রূপান্তর এবং তরুণদের জন্য আয়ের পথ তৈরিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২২’ পেয়েছে অনলাইন ফুড ও গ্রোসারি ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশ। দেশের প্রথম কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্মানজনক এ স্বীকৃতি পেল মার্কেটপ্লেসটি।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দা আম্বারীন রেজা এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের বি এ সিদ্দিকীর হাতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২২’ তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। এ সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, কয়েকজন সংসদ সদস্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং এ খাতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে একটি শক্তিশালী ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরিতে সফলভাবে কাজ করছে ফুডপ্যান্ডা। প্রতিষ্ঠানটি শীর্ষস্থানীয় মার্কেটপ্লেস হিসেবে রেস্তোরাঁ ও শপকে ক্রেতা এবং ডেলিভারি পার্টনাদের সঙ্গে যুক্ত করেছে। বড় ধরণের বিনিয়োগের ঝুঁকি ছাড়াই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, বৃহৎ রেস্তোরাঁ পার্টনার, শপস ও হোমশেফদের ডিজিটালি রূপান্তর করেছে ফুডপ্যান্ডা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির তৈরি মার্কেটপ্লেসের সহায়তায় গত ৭ বছরে দেশের রেস্তোরাঁ খাত বিকশিত হয়েছে। এ মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে মাত্র ৩০ মিনিটে খাবার, গ্রোসারি, ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী গ্রাহকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাইডারদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিখো’র সঙ্গে ফুডপ্যান্ডার চুক্তি
মার্কেটপ্লেসটি তাদের প্রযুক্তি এবং অ্যাপের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্স রাইডারদের যুক্ত করেছে এবং তরুণদের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং সুরক্ষার জন্য মার্কেটপ্লেসটির মাধ্যমে বীমা, প্রশিক্ষণ, ঋণ ও অনলাইন শিক্ষার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
দেশজুড়ে ৬৪ জেলায় সেবা বিস্তারসহ প্রযুক্তি ভিত্তিক এ ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখের বেশি মানুষের আয়ের পথ তৈরি করেছে ফুডপ্যান্ডা।
এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের সমৃদ্ধির জন্য ফুডপ্যান্ডার বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। প্ল্যাটফর্মটির হোমশেফ কর্মসূচিতে তিন হাজারের বেশি হোমকুক সক্রিয় রয়েছেন। যাদের ৭০ শতাংশই নারী। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাতটি সূচক নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি খাবারের অপচয় রোধে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এবং আরও কয়েকটি সংস্থার সাথে যৌথ অংশীদারিত্বে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে মার্কেটপ্লেসটি।
ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং তরুণদের আয়ের সুযোগ তৈরি করার জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী এবং আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দা আম্বারীন রেজা এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের বি এ সিদ্দিকী।
পুরস্কার প্রাপ্তি প্রসঙ্গে ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের বি এ সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশের ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরির ক্ষেত্রে ফুডপ্যান্ডার ভূমিকা অগ্রগণ্য। অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, শপ, এসএমই ও হোমশেফদের ডিজিটালি রূপান্তরে সহায়তা এবং আমাদের মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে তাদের লাখো গ্রাহকের সাথে যুক্ত করার জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমি বিশ্বাস করি, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য এ খাতটির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: আইফোন ১৪ প্রো জেতার সুযোগ দিল ফুডপ্যান্ডা!
বাংলাদেশে সাবস্ক্রিপশন সেবা প্যান্ডাপ্রো চালু করেছে ফুডপ্যান্ডা
জুলাই-নভেম্বর: প্রধান দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) একজন পরিচালক বলেছেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মাসে প্রধান দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’ পেয়েছে।
বিজিএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল জানান, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের পোশাক রপ্তানি ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ২০২২-২৩ সালের জুলাই-নভেম্বরে ৭ দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৯ দমমিক ০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, জার্মানি, ইউরোপের বৃহত্তম বাজার যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ ২ দশমিক ৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
স্পেন ও ফ্রান্সে রপ্তানিও যথাক্রমে ১৯ দশমিক ১৫ শতাংশ ও ৩৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্যান্য দেশ যেমন- ইতালি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে রপ্তানি যথাক্রমে ৫০ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ৪৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও ২২ দশমিক ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে পোল্যান্ডে রপ্তানি বছরে ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
উল্লিখিত সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি ছিল ৩ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালে লেদারপণ্যের রপ্তানি হবে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
রুবেল বলেন, ‘এছাড়া, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় আমাদের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ ও ৩০ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
একই সময়ে, অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি একই সময়ের মধ্যে ২ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপানে আমাদের রপ্তানি ৫৯৭ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২২-২৩ সালের জুলাই-নভেম্বর মাসে আগের বছরের তুলনায় ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে।
উচ্চ প্রবৃদ্ধি সহ অন্যান্য অ-প্রথাগত বাজারগুলো হল মালয়েশিয়া ১০০ দশমিক ২১ শতাংশ, মেক্সিকো ৪৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ভারত ৪৮ দশমিক ৭৮ দশমিক, ব্রাজিল ৪৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: নভেম্বরে রপ্তানি আয় পাঁচশ’ কোটি ছাড়াল, ডলার সংকট কেটে যাওয়ার আশা
জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার সঙ্গে চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া চলছে: মন্ত্রী
ডিসেম্বরের মধ্যে ঋণের কিস্তির ৫০% পরিশোধ করলে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবে না: বিবি
শ্রেণিবদ্ধ ঋণের পরিমাণ কমাতে এই বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মেয়াদী ঋণের (শিল্প ঋণ) কিস্তির অর্ধেক বিলম্বিত পরিশোধের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)।শ্রেণীবদ্ধ ঋণ হল ব্যাংক ঋণ যা খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বড় ঋণগ্রহীতাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সুবিধা দিয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) রবিবার ‘ঋণ শ্রেণীবিভাগ’ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এবং তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং দেশীয় মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের আয় কমে গেলেও বিবি’র জারি করা এই প্রজ্ঞাপনে ক্ষুদ্র ও ব্যক্তিগত ঋণগ্রহীতাদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।তবে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যদি এই বছরের শেষ প্রান্তিকের ডিসেম্বরের মধ্যে ঋণের কিস্তির অর্ধেক (৫০ শতাংশ) পরিশোধ করা হয়, তবে ঋণগুলিকে ‘শ্রেণিবদ্ধ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হবে না। এর আগে, ‘শ্রেণিকৃত’ ঘোষণা এড়াতে ঋণের কিস্তির ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হতো। ‘দীর্ঘদিন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে, এর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব শিল্প খাতে উৎপাদন খরচ বাড়িয়েছে। ফলস্বরূপ, ঋণগ্রহীতাদের প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছে,’ প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।এ কারণে এবং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল রাখতে এবং ঋণগ্রহীতাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ পরিশোধে শিথিলতা দিয়েছে।প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদী ঋণের বকেয়া কিস্তির কিস্তি বা অপরিশোধিত অংশ বিদ্যমান ঋণের পূর্বনির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে সমান কিস্তিতে (মাসিক এবং ত্রৈমাসিক) প্রদেয় হবে।যাইহোক, ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে, অবশিষ্ট মেয়াদ বিবেচনায় নিয়ে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী কিস্তি পুনঃনির্ধারণ এবং সংগ্রহ করা যেতে পারে এবং এক বছর মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়া এ সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সার্কুলারের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত খেলাপি ঋণের এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের অবস্থা দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৬ লাখ কোটি টাকা।দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ চলতি বছরের জুনের শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।
আইএমএফ’র ঋণ একটি চারিত্রিক সনদের মতো: প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান বৃহস্পতিবার বলেছেন, আইএমএফ-এর ঋণ একটি চারিত্রিক সনদের মতো।
‘দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমাত্রিক সহযোগিতা: নতুন সুযোগ উন্মোচন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি এই সার্টিফিকেট পাই, তাহলে সবাই আমাদের ঋণ দিতে আগ্রহ দেখাবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও ইউএনডিপি যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করে।
মশিউর বলেন, বাজেট সহযোগিতা হিসেবে আইএমএফের ঋণ মানে একটি দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু।
তিনি বলেন, ‘এটি হলে, অন্যান্য দেশ বা সংস্থাগুলো সহজেই ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করবে। এর সঙ্গে বিনিয়োগও আসবে।’
ইআরডি সচিব শরিফা খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের সিইও ও চেয়ারম্যান এম. মাসরুর রিয়াজ এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ফয়জুল ইসলাম এবং ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট নাজনীন আহমেদ।