ব্যবসা
‘বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্সের জন্য ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়ন জরুরি’
টেকসই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের জন্য বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করার জন্য সুবিধাজনক ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত 'বৈধ চ্যানেল: ডিজিটাল প্লাটফর্মের প্রসপেক্টস' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই অভিমত দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার এবং বিশেষজ্ঞরা বৈদেশিক মুদ্রার ক্রমহ্রাসমান স্টক নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আরও বেশি রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করার জন্য আরও ভাল কৌশলের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন।
আরও পড়ুন: বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে ফি দিতে হবে না প্রবাসীদের
মান্নান বলেন, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ যারা রেমিট্যান্স গ্রহণ করেন,তাঁদের ব্যাংকে গিয়ে লেনদেনের বিষয়ে এক ধরনের সামাজিক ও মনস্তাত্বিক দূরত্ব আছে। ফলে ঘরে বসেই অবৈধ পথে রেমিট্যান্স গ্রহণ করাকেও তাঁরা অপেক্ষাকৃত সহজ মনে করেন। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে যারা কাজ করছে তাদের সঙ্গে প্রবাসীদের দূরত্ব কমাতে না পারলে রেমিট্যান্স বাড়ানো যাবে না। এ জন্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যম কার্যকারী ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে সপ্তাহে তিন দিন বিদেশের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ থাকে। এ কারণে অনেকেই সুবিধাজনক বিকল্প হিসেবে হুন্ডিকে বেছে নিচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার এসব ঐতিহ্য ভেঙে একটি ধারা শুরু করতে চায়। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অভিবাসী শ্রমিকরা হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি আগ্রহী, যখন অবৈধ চ্যানেলগুলিতে ডলারের বিনিময় হারের পার্থক্য বৈধ উপায়ের চেয়ে বেশি হয়।’
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মওলা বলেন, দেশে প্রবাসীদের স্বজনদের কাছে টাকা পাঠানোর সমস্যা দূর হলে বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রা ও রিজার্ভ সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে।
তিনি বলেন, 'ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেমিট্যান্স পাঠানো সম্ভব হলে আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের চেয়ারম্যান ড. বজলুল এইচ খোন্দকার এ বিষয়ে একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শারমিন নীলরমী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিএফআইইউ'র সাবেক উপ-প্রধান ইস্কান্দার মিয়া, বিকাশ প্রধান পররাষ্ট্র ও করপোরেট বিষয়ক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) শেখ মো. মনিরুল ইসলাম এবং অর্থনীতিবিদ খোন্দকার শাখাওয়াত আলী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ডলারের অভিন্ন দাম: রেমিট্যান্সের জন্য সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা ও রপ্তানি আয়ের জন্য ৯৯ টাকা
২৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৭২ বিলিয়ন ডলার
আইএমএফের ৪৫০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে পাওয়া যাবে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নিশ্চিত করেছেন যে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সাড়ে ৪শ’ কোটি ডলার পাবে। এই ঋণের প্রথম কিস্তি সংস্থাটি আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে দিবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
আইএমএফ জানিয়েছে, তারা এই ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে। সফররত আইএমএফের একটি দল ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনা বুধবার শেষ হওয়ার পর এই চুক্তি হয়।
ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৪শ’ কোটি ডলার নিশ্চিত করে কামাল বলেন, '২০২৬ সাল পর্যন্ত সাত কিস্তিতে এই ঋণ পাওয়া যাবে।’
‘আমি আশা করি, আইএমএফ আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসডিআর ৩৫২.৩৫ মিলিয়নের প্রথম কিস্তির অর্থ দিতে সক্ষম হবে। অবশিষ্ট ঋণ স্পেশাল ড্রয়িং রাইটসের (এসডিআর) অধীনে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি ছয় মাসে এসডিআর ৫১৯ মিলিয়নের ছয়টি সমান কিস্তিতে পাওয়া যাবে,’ তিনি যোগ করেন।
আইএমএফের প্রতিটি সদস্য দেশের কোটার পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে এসডিআর বরাদ্দ করা হয়। কোটার পরিমাণ যত বেশি হবে, একটি দেশ তত বেশি এসডিআর বরাদ্দ পাবে। সাধারণভাবে, শক্তিশালী অর্থনীতিতে উচ্চতর কোটা রয়েছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি অর্থমন্ত্রীর আহ্বান
অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ মিশন তাদের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে ঋণ প্রস্তাবের সকল আনুষ্ঠানিকতা ও চূড়ান্ত বোর্ড অনুমোদন সম্পন্ন করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সরকারি নথি অনুসারে, বর্ধিত ঋণ সুবিধার (ইসিএফ) আওতায় বাংলাদেশ সুদমুক্ত এসডিআর ৮২২ দশমিক ৮২ মিলিয়ন পাবে। বর্ধিত তহবিল সুবিধা (ইএফএফ) এর অধীনে একটি উন্মুক্ত (ফ্লোটিং) এসডিআর ১ শতাংশ সুদের হারে এসডিআর ১৬৪৫ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন পাবে। অন্যদিকে এসডিআর রেটের সঙ্গে শুন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে যা দাঁড়াবে তাই হবে রেজিলিয়েন্স ট্রাস্ট ফ্যাসিলিটি বা আরসিএফের ১০০ কোটি ডলার ঋণের সুদহার।
কামাল বলেন, সারা বিশ্বের অর্থনীতি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সমস্ত উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। ডলারের তুলনায় প্রায় সব দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে বলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে।
তিনি বলেন, 'আমরা আইএমএফকে এই অস্থিতিশীলতা যাতে সংকটে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য একটি পূর্বনির্ধারিত পদক্ষেপ হিসেবে ঋণের জন্য অনুরোধ করেছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমরা চলমান ঋণ আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি।’
সফররত আইএমএফ টিম বাংলাদেশ সরকারের সকল স্টেকহোল্ডারদের, বিশেষ করে আর্থিক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
‘তারা (আইএমএফ) আমাদের বলেছে, আমাদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে ভালো। আইএমএফ টিম আমাদের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে একমত হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা চার বছরের জন্য ঋণ কর্মসূচি নিতে যাচ্ছি,’ বলেন কামাল।
চলতি বছরের জুলাই মাসে ঢাকা ঋণ চাওয়ার পর ঋণের আবেদন নিয়ে আলোচনা করতে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে ওয়াশিংটনভিত্তিক বৈশ্বিক ঋণদাতার প্রতিনিধি দল গত ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশে আসে।
এটি আইএমএফের কাছ থেকে চাওয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পরিমাণ ঋণ। কারণ কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে।
সফরকালে আইএমএফের দলটি অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, বিদ্যুৎ বিভাগ, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), ইআরডি, এনবিআর, বিডা এবং অন্যান্য আর্থিক সংস্থার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করে।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার হার বাজারভিত্তিক করা হবে: অর্থমন্ত্রী
বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়াতে আইএমএফের কোনো প্রস্তাব পাইনি: অর্থমন্ত্রী
আইএমএফ’র সঙ্গে বাংলাদেশের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক ঋণচুক্তি
আইএমএমএফ থেকে বাংলাদেশের চাওয়া ঋণের বিষয়ে বুধবার একটি প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে।
বাড়তি ঋণ সুবিধা এবং বাড়তি তহবিল সুবিধার অধীনে প্রায় তিন দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সেইসঙ্গে স্থিতিস্থাপকতা এবং স্থায়িত্বের অধীনে এক দশমিক তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার সুবিধা দিতে ৪২ মাসের জন্য আইএমএফ প্রতিনিধিদল এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দেশের অর্থনৈতিক নীতিগুলোকে সহযোগিতা করতে এই প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছে।
আইএমএফের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নতুন তহবিল-সমর্থিত কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা এবং দুর্বলদের রক্ষা করার পাশাপাশি শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ইতিবাচক উন্নয়নকে সহযোগিতা করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিলো আইএমএফ
স্থিতিস্থাপকতা এবং স্থায়িত্ব সুবিধা (আরএসএফ) বাংলাদেশের জলবায়ু বিনিয়োগের চাহিদাকে সমর্থন করতে, জলবায়ু অর্থায়নকে অনুঘটক করতে এবং আমদানি-নিবিড় জলবায়ু বিনিয়োগ থেকে অর্থপ্রদানের ভারসাম্যের চাপ কমাতে সাশ্রয়ী, দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে, রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মিশন বাংলাদেশের জন্য আইএমএফ-এর সমর্থন এবং কর্তৃপক্ষের ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা সফর করে।
মিশন শেষে, রাহুল আনন্দ নিম্নলিখিত বিবৃতি দেন:
‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এবং আইএমএফ টিম প্রায় তিন দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার (এসডিআর দুই দশমিক পাঁচ বিলিয়ন, কোটার ২৩১ দশমিক ৪ শতাংশের সমতুল্য) ৪২ মাসের নতুন ইসিএফ বা ইএফএফ ব্যবস্থার অধীনে কর্তৃপক্ষের সংস্কার নীতিগুলোকে সমর্থনের জন্য একটি কর্মী পর্যায়ের চুক্তিতে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে সংঘটিত আএসএফ ব্যবস্থার প্রায় এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার (এসডিআর এক বিলিয়ন, কোটার ৯৩ দশমিক ৮০ শতাংশের সমতুল্য)।
‘নতুন ইসিএফ বা ইএফএফ ব্যবস্থার লক্ষ্য হলো সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা এবং দুর্বলদের রক্ষায় বিঘ্নিত সমন্বয় প্রতিরোধ করা, যেখানে শক্তিশালী অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ইতিবাচক উন্নয়নকে সহযোগিতার জন্য কাঠামোগত পরিবর্তনে জোর দেয়া। বাংলাদেশের বৃহৎ জলবায়ু অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা প্রতিফলিত করে, সমসাময়িক আরএসএফ। যা ইসিএফ বা ইএফএফ -এর অধীনে উপলব্ধ সংস্থাগুলোর পরিপূরক করে। অন্যান্য অর্থায়নের অনুঘটকসহ কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনায় চিহ্নিত জলবায়ু অগ্রাধিকারগুলোর অর্থায়নের জন্য আর্থিক খাতকে প্রসারিত করে এবং জলবায়ুর আমদানি বিনিয়োগের বাহ্যিক চাপ হ্রাস করবে।আশা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহে কর্মকর্তা-পর্যায়ের চুক্তিটি আইএমএফ ব্যবস্থাপনার অনুমোদন এবং নির্বাহী বোর্ডের অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে, ‘মহামারি থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে চলতি হিসাবের ঘাটতি তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দ্রুত পতন, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে।’
আরও পড়ুন: নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তুলতে আইএমএফ এর ঋণ দরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে বাংলাদেশকে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার দরকার নেই: এফবিসিসিআই
এলডিসি উত্তরণ নতুন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সুযোগ তৈরি করবে: বাণিজ্য সচিব
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ স্বীকার করেছেন যে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ অর্থনীতির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সুযোগ তৈরি করবে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের (বিএফটিআই) ‘আইডেন্টিফিকেশন অব ট্রেড-রিলেটেড গ্র্যাজুয়েশন চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড প্রিপারেশন অব সেক্টর-স্পেসিফিক ট্রেড রোডম্যাপস ফর অভারকামিং দ্য চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অধীনে সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি অধীনস্থ সংস্থা বিএফটিআই বাণিজ্য ও ব্যবসায়ের জন্য উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর সম্প্রতি পরিচালিত গবেষণার ফলাফল নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই সভার আয়োজন করে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, এলডিসি উত্তরণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব বাজারে আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে: বাণিজ্য সচিব
তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং বাণিজ্য বিকাশের জন্য পণ্য ও রপ্তানির বহুমুখীকরণ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। ব্যবসা সহজ করার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সরকারের সকল মন্ত্রণালয় ও সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে।’
পরামর্শ সভায় অংশীজনরা এলডিসি উত্তরণের বাণিজ্যসম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করতে এবং তা কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং নন-লেদার জুতা চারটি সেক্টরের জন্য বাণিজ্যের রোডম্যাপ তৈরির জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
এর আগে প্রথম ধাপে তৈরি পোশাক, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, কৃষি পণ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং মৎস্য ও পশুসম্পদসহ বিভিন্ন খাতের জন্য বাণিজ্যসম্পর্কিত রোডম্যাপ তৈরি করতে ৩ নভেম্বর অনুরূপ অংশীজন পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে: বাণিজ্য সচিব
আরও চারটি সেক্টর সমন্বিত অংশীজন পরামর্শের তৃতীয় ধাপ ১০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
বিএফটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাফর উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও উইংয়ের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি শামীম আহমেদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় ১৪৫০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হবে: বাণিজ্য সচিব
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঋণের সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) এক নির্দেশনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণের সীমা প্রত্যাহার করেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ৫ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে পারবে।
মঙ্গলবার ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগের পরিচালক মো. আলী আকবর ফরাজি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বৃদ্ধির মধ্যে বাংলাদেশ গ্যাস-ভিত্তিক এবং ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য সংগ্রাম করছে।
এতে বলা হয়েছে, জমি ক্রয়, যন্ত্রপাতি আমদানি ও ক্রয়, যন্ত্রপাতি স্থাপন সংক্রান্ত ব্যয় এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণসহ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যাংকগুলো প্রয়োজনীয় ঋণ দিতে পারে।
ফলে ব্যাংক ঋণ পেতে সংরক্ষিত মূলধনের ২৫ শতাংশ ঋণ দেয়ার হিসাব আগামী পাঁচ বছর কার্যকর হবে না।
জুলাই মাসে ছয় মাসের জন্য এ নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ: ৬ পদে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে চাকরির সুযোগ
স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ রাজস্ব খাতভুক্ত ৬ ধরনের পদে মোট ১৫ জন নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডে নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
১১তম গ্রেডের পদসমূহ:
১. পদের নাম: রিপোর্টার
পদসংখ্যা: ২
যোগ্যতা ও দক্ষতা: এইচএসসি বা সমমান পাস। সাঁটলিপিতে প্রতি মিনিটে ইংরেজি ও বাংলায় যথাক্রমে ১২০ ও ৯০ শব্দের গতি থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা
২. পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ২
যোগ্যতা: বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি।
বেতন স্কেল: ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা
১৪তম গ্রেডের পদসমূহ:
৩. পদের নাম: উচ্চমান সহকারী
পদসংখ্যা: ৫
যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলে চাকরি: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চাকরির বিজ্ঞপ্তি
৪. পদের নাম: গ্রন্থাগার সহকারী
পদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা
১৬তম গ্রেডের পদ
৫. পদের নাম: হিসাব সহকারী
পদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: স্নাতক ডিগ্রি
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
২০তম গ্রেডের পদ
৬. পদের নাম: দপ্তরি
পদসংখ্যা: ৪
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান পাস
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা ( ২০তম গ্রেড)
আরও পড়ুন: ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: পূবালী ব্যাংকে ৭৭ পদে চাকরি, আবেদন ফি নেই
বয়স:
আবেদনকারীর বয়স ১ অক্টোবর তারিখে ১৮-৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তারিখে যাঁদের বয়স ৩০ হয়েছে, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন।
যেভাবে আবেদন:
আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমের আবেদন করতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া ও নিয়োগসংক্রান্ত বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে।
আবেদন ফি:
১ ও ২ নম্বর পদের জন্য আবেদন ফি ৩০০ টাকা, ৩ ও ৫ নম্বর পদের জন্য ২০০ এবং ৬ নম্বর পদের জন্য ১০০ টাকা টেলিটক প্রিপেইড নম্বরের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ:
৩০ নভেম্বর ২০২২
আরও পড়ুন: মাল্টার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যেভাবে আবেদন করবেন
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিলো আইএমএফ
বাংলাদেশে সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সক্ষমতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন। তারা এমনভাবে কাজ করতে পরামর্শ দিয়েছেন যাতে বাজারে বিভিন্ন স্তরের লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
সোমবার (০৭ নভেম্বর) একটি বৈঠকে এই পরার্মশ দেন আইএমএফ প্রতিনিধি দল।
বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম ইউএনবিকে বলেন, নির্ধারিত বৈঠকে আইএমএফ দলটি সমাজের সব অংশের মানুষের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে শেয়ারবাজারে পণ্য বৈচিত্র্যের পরামর্শ দিয়েছে।
তারা (আইএমএফ) কমোডিটি এক্সচেঞ্জ মার্কেট, রিয়েল এস্টেট এবং শেয়ার মার্কেটে অন্যান্য সেক্টরের তালিকাভুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তুলতে আইএমএফ এর ঋণ দরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, আইএমএফ পুঁজিবাজারের প্রযুক্তিগত মানোন্নয়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রেই সহায়তা করবে। যাতে বিশ্ব মান বজায় রেখে বাজার কাজ করতে পারে।
বাংলাদেশে আইএমএফ মিশন চিফ রাহুল আনন্দ আইএমএফের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবং বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং বিএসইসির সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন।
এর আগে, আইএমএফ দল অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, বিদ্যুৎ বিভাগ, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সঙ্গে আলোচনার জন্য বৈঠক করেন।
সোমবার চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে আইএমএফ দল বিএসইসির শীর্ষ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে দেখা করে এবং নিয়ন্ত্রকের সক্ষমতা বাড়াতে কিছু পরামর্শ দেয়।
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক বৈশ্বিক ঋণদাতার প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে এবং উপলব্ধি করতে ২৬ অক্টোবর সফর শুরু করে। কারণ দেশটি বাজেট সহায়তা হিসাবে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছিল।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত কোন বৈশ্বিক ঋণদাতার কাছে এত বড় ঋণ চায়নি। কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে প্রভাবিত করেছে।
ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি বছরের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএমএফ-এর কাছে সাড়ে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের জন্য আবেদন করে।
আরও পড়ুন: মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে বাংলাদেশকে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার দরকার নেই: এফবিসিসিআই
জিডিপি প্রতিবেদন প্রতি ৩ মাসে হালনাগাদ করার পরামর্শ আইএমএফের
নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তুলতে আইএমএফ এর ঋণ দরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের স্বার্থ রক্ষা করেই আইএমএফ এর ঋণ নেয়া হবে। আমাদের নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তোলার জন্য এ ঋণ দরকার। প্রয়োজনীয় শর্ত অর্থ মন্ত্রণালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।
শনিবার সকালে রংপুরে লেক ভিউ পার্ক সিটি এলাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আইএমএফ এর ঋণ নিলে দেশের রিজার্ভে কোন প্রভাব পড়বে না। সব দিক বিবেচনা করে আইএমএফ এর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও রয়েছে। আইএমএফ টাকা না দিলে আমরা রসাতলে যাবো, তা নয়। যদি প্রয়োজন পড়ে সেজন্য একটা সিকিউরিটি নিয়ে রাখা হচ্ছে। আমাদের নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তোলার জন্য এ ঋণ দরকার। আশা করি বিশ্বব্যাংক আমাদের সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সামনে দুর্ভিক্ষ হতে পারে। আমরা যেন এক ইঞ্চিও আবাদযোগ্য জমি ফেলে না রাখি। আমরা দেশে সর্বোচ্চ ফসল ফলনোর চেষ্টা করবো। তিনি আমাদের সতর্ক করেছেন। আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে, আশা করি বাংলাদেশের কোন সমস্যা হবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বের পোশাক মার্কেটে এ মুহূর্তে ডাউনওয়ার্ক চলছে। যেটা গত দু-তিন মাস আগে সর্বোচ্চ পিকআপে ছিল। করোনার প্রভাব, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ইস্যু এগুলোর জন্য মানুষ অর্থনৈতিকভাবে খুব চাপে পড়েছে। পাশাপাশি আমাদের দেশে যে পোশাক উৎপাদন করি সেটা হলো সাধারণ মানুষের জন্য। এ ধরনের পোশাক সেলস-এ কোন ক্ষতি হয় না। সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। আশা করি জানুয়ারির পর থেকে ধীরগতি কভার হয়ে যাবে।নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিশ্ব বাজারে একটু দাম বেড়ে গেলে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে। সে জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্য দপ্তরগুলো সজাগ রয়েছে এবং কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় রংপুর জেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসাদ্দেক হোসেন বাবলুসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি রংপুর জেলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত রংপুর জেলা আওয়ামী যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগদান করেন। সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শ্রী রমেশ চন্দ্র সেন, এমপি, শাহজাহান খান, এমপিসহ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: শিগগিরই চিনির দাম স্থিতিশীল হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
ব্যবসায়ীরা কানাডা থেকে গম আমদানি করছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে বাংলাদেশকে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার দরকার নেই: এফবিসিসিআই
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, দেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণ নেয়ার দরকার নেই।
তিনি বর্তমান ঋণের সুদের হার বাড়ানোরও বিরোধিতা করেছেন।
শনিবার ঢাকায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ইআরএফ এর সংলাপ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে জসিম এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে এফবিসিসিআই সভাপতির শোক
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে নেই যে আইএমএফ থেকে কোনো শর্তে ঋণ নিতে হবে।
‘ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি উৎপাদন খরচ বাড়াবে এবং সেইসঙ্গে ভোক্তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে’, যোগ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা বিশ্বাস করে না যে সুদের হার বাড়ানোর মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে। তবে তিনি ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে।
তিনি বলেন, ‘যখন সুদের হার কমানো হয়েছিল, তখন অনেক বিনিয়োগকারী এখানে বিনিয়োগ করে... ঋণের হার বাড়ানোর জন্য গবেষণা সংস্থাগুলির বিভিন্ন এজেন্ডা রয়েছে...এক্ষেত্রে শিল্প প্রভাব থেকে বাঁচবে কিনা তা বিবেচনা করা দরকার।’
নির্বাচনী বছরে অর্থ পাচারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যেহেতু বলেছে যে তারা আমদানির আড়ালে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি দামের প্রমাণ পেয়েছে, সেহেতু জড়িতদের আইনের আওতায় আনা উচিত। যদি তা না হয়, তবে শুধুমাত্র জনপ্রিয়তার জন্য আপনাদের বড় বড় অভিযোগ তোলা বন্ধ করতে হবে।
জসিম বলেন, যারা চালান কারচুপি করে অর্থ পাচার করে তাদের ধরা উচিত এবং এফবিসিসিআই চায় সরকার এ বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
সম্ভাব্য আসন্ন দুর্ভিক্ষ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুর্ভিক্ষ হলে তা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে প্রভাব ফেলবে।
‘আমাদের কঠোরতা বজায় রাখতে হবে। এর পাশাপাশি আমাদের কৃষি খাতে কাজ করতে হবে’, তিনি আরও যোগ করেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের ওপর জোর দেন এবং জাতির বৃহত্তর স্বার্থে গৃহস্থালির গ্যাস সরবরাহ কমানোর পক্ষে বলেন।
আরও পড়ুন: ডিম ও গোশতের দাম কমতে পারে সরকারের নীতিগত সহায়তায়: এফবিসিসিআই
মার্কিন কোম্পানির জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান এফবিসিসিআই’র
সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়াতে চান পরিশোধনকারীরা
বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিসি) উচ্চ উৎপাদন খরচের কারণে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনা করছে। এতে সয়াবিন তেলের দাম বাড়তে পারে।
ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরবিএমএ) সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
তেল পরিশোধনকারীরা যুক্তি দিয়েছেন যে সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয় না করা হলে বিশ্ববাজারে উচ্চ উৎপাদন খরচ ও দাম বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হবে।
আরও পড়ুন: পাম তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা কমেছে, চিনির দাম কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা
পরিশোধনকারীরা গত মঙ্গলবার বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের কাছে একটি চিঠি জমা দিয়ে সরকারকে রবিবারের (আগামীকাল) মধ্যে দাম পুনরায় সমন্বয় করার আহ্বান জানিয়েছে। সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা কমানোর এক মাস পর পরিশোধনকারীরা এই প্রস্তাব দিয়েছেন।
বিভিওআরবিএমএ-এর প্রধান নির্বাহী নুরুল ইসলাম মোল্লা ইউএনবিকে জানান, বাণিজ্য সচিবকে পরিস্থিতি বর্ণনা করা হয়েছে।
৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর অ্যাসোসিয়েশনটি লিটারে ১৪ টাকা দাম কমায়। খোলা এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৫৮ টাকা, এক লিটারের বোতলের দাম ১৭৮ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা কমল
প্রতিকেজি পাম তেলের দাম ১২ টাকা ও চিনির দাম ৬ টাকা কমল