%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC
রাশিয়ায় কনসার্ট হলে বন্দুক হামলায় নিহত ৬০ ও আহত ১৪৫, আইএসের দায় স্বীকার
শুক্রবার রাশিয়ার মস্কোর একটি বড় কনসার্ট হলে হামলাকারীরা ঢুকে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি ছুড়লে ৬০ জনেরও বেশি নিহত হন। এ ঘটনায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং ঘটনাস্থলে আগুন ধরে যায়।
হামলার দায় স্বীকার করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্কিত একটি চ্যানেলে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ (আইএস)।
যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতে পেরেছে- আফগানিস্তানে গ্রুপটির শাখা মস্কোতে হামলার পরিকল্পনা করছিল এবং তারা রুশ কর্মকর্তাদের এ তথ্য দিয়েছে।
হামলার ঘটনার পর হামলাকারীদের কী হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। বিষয়টি সন্ত্রাসবাদ হিসেবে আমলে নিয়ে রাষ্ট্রীয় তদন্তকারীরা তদন্ত করছেন।
আরও পড়ুন: চীনের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৪, আহত ৩৭
এই হামলার কারণে কনসার্ট হলের ছাদ ধসে পড়ে এবং সেখানে আগুন লেগে যায়। এই হামলাটিকে কয়েক বছরের মধ্যে রাশিয়ায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন এই হামলার ঘটনাকে 'বড় ট্র্যাজেডি' বলে অভিহিত করেছেন।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, হামলাকারীরা ক্রোকাস সিটি হলে ঢুকে পড়ার কয়েক মিনিট পর পুতিনকে বিষয়টি জানানো হয়। ক্রোকাস সিটি হল মস্কোর পশ্চিম প্রান্তে একটি বড় সংগীত ভেন্যু। যার ধারণক্ষমতা ৬ হাজার ২০০ মানুষের।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত ৩৮
রাশিয়ান রক ব্যান্ড পিকনিকের পারফরম্যান্স উপভোগ করার জন্য সবাই যখন ভেন্যুতে জড়ো হচ্ছিল সে সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
দেশটির শীর্ষ অপরাধ তদন্ত সংস্থা ইনভেস্টিগেশন কমিটি শনিবার ৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আহত ১৪৫ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। যাদের মধ্যে ১১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে ৫ শিশুও রয়েছে।
আরও পড়ুন: হুমকি পেলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন
গাজা-ইউক্রেন বিষয়ে 'দ্বৈত নীতি' পরিহার করতে ইইউর প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
ইউক্রেনকে সমর্থন করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি যেমন শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা, ঠিক একইভাবে মারাত্মক খাদ্য ঘাটতিতে থাকা লাখ লাখ ফিলিস্তিনি এবং দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা গাজার ক্ষেত্রে একই ধরনের মনোভাব প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার(২১ মার্চ) ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনে বর্ণিত মানদণ্ডের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে দৃঢ় ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের মূল নীতি হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া। ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের পাশে দাঁড়িয়ে গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনের মতো গাজাতেও আমাদের অবশ্যই নীতিতে অটল থাকতে হবে।
জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক একটি সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ আসন্ন। এদিকে, ইসরায়েল দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহয় স্থল আক্রমণ শুরু করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে, যেখানে অনেক লোক যুদ্ধ থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
২৭ জাতির ইইউ দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে গভীরভাবে বিভক্ত। ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের বিধ্বংসী হামলা এই বিভক্তির সৃষ্টি করেছে। তবে গাজায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার বেড়ে যাওয়ায় আরও অনেক দেশ যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধকে অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে দেখছে প্রায় পুরো জোট। তারা দেশটিকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সহায়তা করার জন্য শত শত কোটি ইউরো ঢালছে জোটটি।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার বলেছেন, 'ফিলিস্তিনের ভয়াবহ সংকট মোকাবিলা ইউরোপের জন্য মোটেও উপযুক্ত সময় ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি ইউক্রেনকে রক্ষার জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে হ্রাস করছে কারণ গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ ইউক্রেন ও ফিলিস্তিনের বিষয়ে ইউরোপের পদক্ষেপকে দ্বৈত অবস্থান হিসাবে ব্যাখ্যা করে। আমি মনে করি, এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি আছে।’
বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু গাজায় ঘটে যাওয়া ঘটনাকে 'নাটকীয়' বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা আজ এমন মানুষদেরও দেখতে পাচ্ছি যারা ঘাস খেয়ে নিজেদের পেট ভরানোর চেষ্টা করছে। যারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। ইউরোপকে নেতৃত্ব দিতে হবে, অনুসরণ করা নয়। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করার সময় এসেছে: অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দাবি করা, জিম্মিদের মুক্তির দাবি করা।’
শীর্ষ সম্মেলনের উপসংহারে নেতারা ‘বেসামরিক মানুষের নজিরবিহীন প্রাণহানি এবং গুরুতর মানবিক পরিস্থিতি’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় কাউন্সিল অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়েছে, যার ফলে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে যাওয়ায় গাজায় ত্রাণের জন্য আলোচনায় সমুদ্রপথ
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, ইসারায়েল-হামাস যুদ্ধ গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ ক্ষুধার্ত রয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে শুরু হওয়া অতর্কিত হামলায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা প্রায় ১২০০ জন ইসরাইলিকে হত্যা করে এবং আরও ২৫০ জনকে অপহরণ করে। হামাস এখনও প্রায় ১০০ জনকে জিম্মি করে রেখেছে বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি আরও ৩০ জনের লাশও তাদের জিম্মায় রয়েছে।
মিশর সীমান্তের কাছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহয় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আসন্ন স্থল অভিযানের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এটি এমন একটি পরিকল্পনা যা সেখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিকের ক্ষতির আশঙ্কায় বিশ্বে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন: বড় বাধার মুখে ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কারের পরিকল্পনা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, রাফাহয় অভিযান না চালিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে 'সম্পূর্ণ বিজয়ের' লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না ইসরায়েল।
ইইউ নেতারা ইসরায়েলি সরকারকে রাফাহতে স্থল অভিযান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি 'এরই মধ্যে মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় মৌলিক সেবা ও মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে।’
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস রবিবার দেশটি সফর করে বলেছেন, 'আমরা রাফাহয় বড় ধরনের আগ্রাসনের পক্ষে নই। আমি নিজেই ইসরায়েলে এটির ওপর জোর দিয়েছি। আমরা আশা করি যে এখন একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি সম্ভব হবে। সমস্ত জিম্মির মুক্তি এবং নিহতদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, 'গাজায় আজ যা ঘটছে তা মানবতা রক্ষার ব্যর্থতা। এটা কোনো মানবিক সংকট নয়। এটা মানবতার ব্যর্থতা।’
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'এটা ভূমিকম্প নয়, বন্যা নয়। এটা বোমা হামলা।’
আরও পড়ুন: গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’, উত্তরাঞ্চলের প্রধান হাসপাতালে আবারও ইসরায়েলি হামলা
ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ৬৯ রোহিঙ্গা শরণার্থী উদ্ধার
ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি বিধ্বস্ত হওয়া নৌকার সন্ধান পেয়েছে ইন্দোনেশিয়ার একটি তল্লাশি ও উদ্ধারকারী জাহাজ। বৃহস্পতিবার সেই নৌকার ধ্বংসাবশেষে আশ্রয় নেওয়া ৬৯ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে তারা।
উদ্ধারকারী জাহাজে থাকা এপির এক আলোকচিত্রী জানিয়েছেন, স্থানীয় মাছ ধরার নৌকায় ১০ জনকে তোলা হয়েছে এবং আরও ৫৯ জনকে ইন্দোনেশিয়ার জাহাজটি উদ্ধার করেছে।
রাতের বৃষ্টিতে ভিজে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। উদ্ধার করা রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুও ছিল। রাবারের ডিঙ্গি নৌকায় করে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়ার সময় ছোট নৌকাটিতে কতজন শরণার্থী ছিল তা এখনো জানা যায়নি। স্থানীয় জেলেরা প্রাথমিকভাবে ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে, ধারণা করা হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ জনের মতো রোহিঙ্গা ছিল।
প্রাথমিকভাবে উপকূলের উত্তাল পানিতে নৌকাটি খুঁজে পেতে অসুবিধা হচ্ছিল। কয়েক ঘণ্টা পরে, ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল বুধবার সন্ধ্যায় বান্দা আচেহ শহর ত্যাগ করেছে।
অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নৌকা ও জীবিতদের খুঁজে পাওয়া যায়।
আচেহ বারাত জেলার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের নেতা আমিরুদ্দিন বলেন, উদ্ধার করা রোহিঙ্গারা জানয়েছেন, নৌকাটি পূর্ব দিকে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে এটি ফুটো হতে শুরু করে এবং তারপরে তীব্র স্রোত এটিকে আচেহর পশ্চিমের দিকে ঠেলে দেয়। ওই ছয়জন জানান, ডুবে যাওয়া নৌকায় এখনও বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন বাকিরা।
মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযানের নৃসংশতা থেকে বাঁচতে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশের জনাকীর্ণ শিবির ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালানোর চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। নভেম্বর থেকে ইন্দোনেশিয়ায়ও শরণার্থীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো ইন্দোনেশিয়াও জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তাই শরণার্থীদের আইনি সুরক্ষা দিতে এবং তাদের গ্রহণ করতে বাধ্য নয় তারা। তবে তারা এখন পর্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, গত বছর প্রায় সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা, যাদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু, তাদের জন্মভূমি মিয়ানমার ও প্রতিবেশী বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে নৌকায় করে পালিয়ে আসে। এর মধ্যে ৫৬৯ জন বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন, যা ২০১৪ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ প্রাণহানির সংখ্যা।
চীনের উত্তরাঞ্চলে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৪, আহত ৩৭
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শানশি প্রদেশে মঙ্গলবার যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।
বিষয়টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
শানশির হোহোত-বেইহাই এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী বাসটি একটি টানেলের দেয়ালে ধাক্কা খায়।
উদ্ধারকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত ৩৮
গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’, উত্তরাঞ্চলের প্রধান হাসপাতালে আবারও ইসরায়েলি হামলা
গাজার উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ ভয়াবহ খাবারের সংকটে ভুগছে। বলা হচ্ছে অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ 'আসন্ন'।
খাদ্য সংকটের তীব্রতা নির্ধারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের তীব্রতা বাড়লে গাজার মোট জনসংখ্যার অর্ধেককে অভুক্ত থাকতে হবে।
এই প্রতিবেদনটি এমন সময় এলো যখন গাজা উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশ সহজ করে দিতে এবং আরও স্থল ক্রসিং খুলে দিতে কাছের মিত্রদেরও ক্রমবর্ধমান চাপের মুখোমুখি হচ্ছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ত্রাণ সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের আকাশ ও সমুদ্রপথে পণ্য সরবরাহ খুবই ধীর গতির এবং কম।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, আসন্ন দুর্ভিক্ষ 'সম্পূর্ণরূপে মানবসৃষ্ট' কারণ 'ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’
এদিকে, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম হাসপাতাল শিফাতে হামাস সেনারা পুনরায় সংগঠিত হয়ে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে এমন দাবি তুলে হাসপাতালটিতে সোমবার ভোরে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
হাসপাতালের ভেতরে ও এর আশপাশে দিনভর সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল, যেখানে হাজার হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে, বলছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।
হামাস সেনা হিসেবে চিহ্নিত করে ২০ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এসময় তাদের একজন সৈন্যও নিহত হয়েছে। যদিও নিহতদের হামাস সদস্য হিসেবে শনাক্ত করা যায়নি।
ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, নিহতদের মধ্যে গাজার হামাসের পুলিশ বাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রয়েছেন, যিনি ওই হাসপাতালে লুকিয়ে ছিলেন। অন্যদিকে গাজার কর্মকর্তারা জানান, ওই কমান্ডার ত্রাণবাহী গাড়িবহরের সুরক্ষার সমন্বয় করছিলেন।
আরও পড়ুন: বড় বাধার মুখে ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কারের পরিকল্পনা
শিফা হাসপাতালের ভেতরে ও নিচে হামাস কমান্ড সেন্টার গড়ে তুলেছে এমন দাবি করে গত নভেম্বরে হাসপাতালটিতে সর্বশেষ অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। কিছু ভূগর্ভস্থ কক্ষের দিকে যাওয়ার একটি সুড়ঙ্গ এবং হাসপাতালের ভিতরে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছিলেন তারা। তবে অভিযানে আগে তারা যে পরিমাণ অস্ত্র আছে বলে দাবি করেছিল তার চেয়ে কমই ছিল যে কারণে বেপরোয়াভাবে বেসামরিক নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করার অভিযোগে সমালোচকরা ইসরায়েলি বাহিনীকে অভিযুক্ত করেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতালে রোগী, চিকিৎসা কর্মী এবং নিরাপত্তার খোঁজে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া লোকজনসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। যুদ্ধের কারণে গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, হামাসের জ্যেষ্ঠ যোদ্ধারা হাসপাতালে পুনরায় সংগঠিত হয়ে ভেতর থেকে হামলার নির্দেশ দিচ্ছে।
হামলায় নিহতদের মধ্যে গাজা পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফাইক মাভুহও রয়েছেন বলে দাবি করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তিনি সশস্ত্র ছিলেন এবং শিফায় লুকিয়ে ছিলেন এবং পাশের একটি কক্ষে অস্ত্র পাওয়া গেছে।
গাজা সরকার জানিয়েছে, মাভুহ উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ সুরক্ষা এবং ত্রাণ গোষ্ঠী ও স্থানীয় উপজাতিদের মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
হাগারি বলেন, রোগী ও চিকিৎসা কর্মীরা মেডিকেল কমপ্লেক্সে থাকতে পারেন এবং যেসব বেসামরিক নাগরিক চলে যেতে চান তাদের জন্য নিরাপদ পথের ব্যবস্থা রয়েছে।
ইসরায়েল অভিযোগ করেছে যে হামাস তার যোদ্ধাদের রক্ষা করার জন্য হাসপাতাল এবং অন্যান্য বেসামরিক স্থাপনা ব্যবহার করছে এবং যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বেশ কয়েকটি হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে।
গাজার অর্ধেককে অনাহারের দিকে ঠেলে দিতে পারে রাফাহর আক্রমণ
২০০৪ সালে সোমালিয়ার দুর্ভিক্ষের সময় প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন বা আইপিসি যা এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার তীব্রতা নির্ধারণের জন্য জাতিসংঘের এক ডজনেরও বেশি সংস্থা, সহায়তা গোষ্ঠী, সরকার এবং অন্যান্য সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তারা গাজায় ক্ষুধা পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সংস্থাটি বলছে, গাজার মানুষ পর্যাপ্ত খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে এবং প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ অর্থাৎ গাজার জনগোষ্ঠীর প্রায় এক তৃতীয়াংশ সর্বোচ্চ মাত্রার খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। খাদ্যের চরম অভাব এবং তীব্র অপুষ্টির গুরুতর স্তরে রয়েছে তারা। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলেরই প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার মানুষ রয়েছেন।
এখন থেকে মে মাসের মধ্যে যে কোনো সময় উত্তরাঞ্চলে সরাসরি দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যখন ২০ শতাংশ পরিবারে খাদ্যের চরম অভাব থাকে, ৩০ শতাংশ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভোগে এবং প্রতি ১০ হাজার লোকের মধ্যে কমপক্ষে ২ জন প্রাপ্তবয়স্ক বা ৪টি শিশু প্রতিদিন মারা যায় তখন সেই অঞ্চলকে দুর্ভিক্ষপীড়িত মনে করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম শর্তটি পূরণ হয়েছে এবং দ্বিতীয় শর্তটিও পূরণ হওয়ার 'অত্যন্ত সম্ভাবনা' রয়েছে। শিগগিরই মৃত্যুর হার আরও বাড়বে এবং দুর্ভিক্ষের পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইসরায়েল যদি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে আক্রমণ চালায়, তাহলে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ (গাজার জনসংখ্যার অর্ধেক) বিপর্যয়কর ক্ষুধা পরিস্থিতিতে পড়বে এবং দক্ষিণাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হবে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাথিউ হলিংওয়ার্থ বলেন, 'এই মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হচ্ছে এবং এটি ঘটতে মাত্র পাঁচ মাস সময় লেগেছে।’
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী জেমি ম্যাকগোল্ডরিক উত্তর ও মধ্য গাজাসহ ত্রাণের জন্য 'সব রাস্তা' খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ডব্লিউএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাকে করে যে সহায়তা আনা হয় তার তুলনায় এয়ারড্রপ থেকে সহায়তা 'নগণ্য'।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে যাওয়ায় গাজায় ত্রাণের জন্য আলোচনায় সমুদ্রপথ
গাজা শহরসহ গাজার উত্তরাঞ্চল ছিল আগ্রাসনের প্রথম লক্ষ্যবস্তু এবং পুরো এলাকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এটি এখন গাজার মানবিক বিপর্যয়ের কেন্দ্রবিন্দু। অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ফিলিস্তিনি ইস্যু নিয়ে কাজ করা ইসরায়েলি সামরিক সংস্থার মুখপাত্র শিমন ফ্রিম্যান বলেছেন, ইসরায়েল 'গাজা উপত্যকায় প্রবেশের সব সুযোগ দিচ্ছে এবং দেশগুলোকে সহায়তা প্রেরণে উৎসাহিত করছে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সময়মতো ত্রাণ বিতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, শত্রুতা, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ের অসুবিধা এবং আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার কারণে গাজার বেশির ভাগ এলাকায় বিতরণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ল্ড পিস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এবং বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স ডি ওয়াল বলেছেন, ইসরায়েলকে ‘যথেষ্ট হুঁশিয়ারি’ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যদি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করা অব্যাহত রাখে, বিপুলসংখ্যক লোককে বাস্তুচ্যুত করে এবং ত্রাণ তৎপরতায় বাধা দেয় তবে এর পরিণতি হবে বিপর্যয়কর।
তিনি বলেন, 'নীতি পরিবর্তন করতে না পারলে এসব মৃত্যুর জন্য দায়ী হবেন তারা।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, আরও ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি ইসরায়েলের বিষয়। ইসরাইলকে এটা করতেই হবে। এটা লজিস্টিকের প্রশ্ন নয়। এর কারণ এই নয় যে, জাতিসংঘ পর্যাপ্ত সহায়তা দেয়নি। ট্রাক থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ মারা যাচ্ছে, আর ল্যান্ড ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, পুলিশের ওপর ইসরায়েলি হামলা জনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ, যার ফলে মরিয়া ফিলিস্তিনিরা রাস্তায় ত্রাণবাহী ট্রাকে উপচে পড়ছে।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি অভিযানে অন্তত ৩১ হাজার ৭২৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাস অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা করে এবং আরও ২৫০ জনকে জিম্মি করে। গত বছর যুদ্ধবিরতির সময় বাকিদের বেশিরভাগ মুক্তি দেওয়ার পরেও হামাস এখনও প্রায় ১০০ জন জিম্মির পাশাপাশি ৩০ জনের দেহাবশেষ নিজেদের হেফাজতে রেখেছে বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
বড় বাধার মুখে ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কারের পরিকল্পনা
ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা বলেছেন, তিনি একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করবেন এবং গাজার পুনর্গঠনের জন্য একটি স্বাধীন ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করবেন।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) হাতে বিবৃতি এসেছে। এতে সংঘাত নিরসনে মার্কিন কর্তৃপক্ষ যুদ্ধ পরবর্তী যে ধরনের ফিলিস্তিন সরকার গঠন করতে চেয়েছিল, তার জন্য বিস্তৃত পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন তিনি।
কিন্তু উল্লেখ করার মতো আরেকটি বিষয় হলো, গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো ক্ষমতা নেই। ২০০৭ সালে হামাস তাদের বাহিনীকে বিতাড়িত করেছে। ইসরায়েলি অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশে কেবল সীমিত কর্তৃত্ব রয়েছে এই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের গাজায় ফেরার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছেন এবং তার সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোর বিরোধী।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গত সপ্তাহে মুস্তাফাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। যিনি মার্কিন অর্থনীতিবিদ এবং আব্বাসের দীর্ঘদিনের উপদেষ্টা, যার কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি নেই।
বিবৃতিতে মোস্তফা বলেন, তিনি একটি নির্দলীয়, টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করবেন। যা তাদের জনগণের আস্থা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন উভয়ই অর্জন করতে পারবে। তিনি পিএ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক সংস্কার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তিনি অঞ্চলগুলোকে পুনরায় একত্রিত করতে চাইবেন এবং গাজার পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য একটি ‘স্বাধীন, দক্ষ ও স্বচ্ছ সংস্থা এবং প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ, পরিচালনা ও বিতরণের জন্য একটি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের চেষ্টা করবেন।’
ভিশন বিবৃতিতে হামাসের কথা উল্লেখ করা হয়নি, যারা ২০০৬ সালে শেষবার ফিলিস্তিনিদের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জন করেছিল এবং কোনো কোনো জরিপ ইঙ্গিত দেয় যে এখনও উল্লেখযোগ্য সমর্থন রয়েছে।
আরও পড়ুন: ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
পিএ'র সার্বিক নিয়ন্ত্রণে থাকা ৮৮ বছর বয়সী আব্বাস ২০০৯ সালে তার নিজের ম্যান্ডেটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন এবং ইসরায়েলি বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে নির্বাচন করতে অস্বীকার করেছেন।
জনমত জরিপে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিদের একটি বড় অংশ চায় তিনি পদত্যাগ করুন।
মুস্তাফা বলেন, পিএ প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তিনি কোনো সময়সূচি ঘোষণা করে বলেন, এটি গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের 'বাস্তবতা'র ওপর নির্ভর করবে। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েল দখল করা অঞ্চলগুলোর ওপর ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র চায়।
২০২১ সালে, আব্বাস নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত করার সিদ্ধান্তের জন্য অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি বিধিনিষেধকে দায়ী করেন, যেখানে তার ধর্মনিরপেক্ষ ফাতাহ পার্টি বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত ৩৮
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে এক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২১ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রাদেশিক ট্রাফিক বিভাগ।
হেলমান্দের বিভাগটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রবিবার সকালে হেলমান্দ প্রদেশের গেরাশক জেলায় দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার ও পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রধান মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
হেলমান্দের ট্রাফিক কর্মকর্তা কাদরাতুল্লাহ বলেন, একটি মোটরসাইকেল একটি যাত্রীবাহী বাসকে ধাক্কা দেয়, যা রাস্তার বিপরীত দিকের একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কারে আঘাত করে। এতেই মূলত দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
হেলমান্দ পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র হাজাতুল্লাহ হাক্কানি জানান, আহত ৩৮ জনের মধ্যে ১১ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ৩০০ শিক্ষার্থী অপহরণ
অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডগামী উড়োজাহাজে ‘যান্ত্রিক ত্রুটির’ কারণে ৫০ জন আহত
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী
ভারতীয় নৌবাহিনী সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে একটি বাল্ক ক্যারিয়ারের (বাণিজ্যিক জাহাজ) নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং জাহাজের ১৭ জন ক্রুকে উদ্ধার করেছে।
শনিবার এক এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় ভারতীয় নৌবাহিনী উল্লেখ করেছে, মাল্টার পতাকাবাহী এমভি রুয়েন নামের জাহাজটি দখলে নেওয়া ৩৫ জন জলদস্যুর সবাই আত্মসমর্পণ করেছে এবং জাহাজটিতে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং নিষিদ্ধ দ্রব্য রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুপুরে সোমালিয়া উপকূলে পৌঁছাতে পারে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’
শুক্রবার আন্তর্জাতিক জলসীমায় বাল্ক ক্যারিয়ার থেকে একটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর পর এই অভিযান পরিচালিত হয়।
গত ১৪ ডিসেম্বর সোমালিয়া থেকে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার দূরে ইয়েমেনের সোকোত্রা দ্বীপের কাছে জলদস্যুরা জাহাজটির দখল নেয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোমালিয়ার জলদস্যুদের তৎপরতা কমেছে। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের জাহাজে হামলাসহ ওই অঞ্চলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ব্যাপক বিশৃঙ্খলার মধ্যে তৎপরতা আবার শুরু হতে পারে বলে উদ্বেগ বাড়ছে।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার হাবিয়ো বন্দরে নোঙর করেছে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ
হুমকি পেলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয়তা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার জন্য হুমকির কারণ হলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে প্রস্তুত।
বুধবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো উত্তেজনা এড়াতে পারবে যা পরমাণু যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে পারে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়ার পরমাণু বাহিনী এর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
ইউক্রেনে কখনো যুদ্ধক্ষেত্রে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, এর কোনো প্রয়োজন নেই।
তিনি আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে বলেন, মস্কো ইউক্রেনে তার লক্ষ্য অর্জন করবে এবং আলোচনার জন্য দরজা খোলা রাখবে এবং যে কোনো চুক্তির জন্য পশ্চিমাদের কাছ থেকে দৃঢ় নিশ্চয়তার প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: ক্রেমলিনের শত্রু অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যু পশ্চিমা ক্ষোভকে উস্কে দিয়েছে, তবে পুতিনকে থামানো যায়নি
বাংলাদেশে শুধু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, শান্তিপূর্ণ পরমাণু শিল্পও গড়ে তুলেছে রাশিয়া: পুতিন
হাইতির ৪০ লাখ মানুষ 'তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার' শিকার : জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থা
হাইতিতে 'তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার' মুখোমুখি হয়েছেন ৪০ লাখ মানুষ এবং তাদের মধ্যে ১০ লাখ দুর্ভিক্ষের মাত্র এক ধাপ দূরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার পরিচালক জিন-মার্টিন বাউয়ার।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ক্যারিবীয় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির খাদ্য সংকটের চিত্র তুলে ধরেন জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সতর্ক সংকেত বেজে উঠছে’ কারণ সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাং সহিংসতা বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতিকে খুব খারাপ থেকে আরও খারাপ করে তুলেছে এবং মার্চের প্রথম সপ্তাহেই রাজধানী পোর্ট অ-প্রিন্সে অতিরিক্ত ১৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
তিনি বলেন, এক কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। জাতিসংঘের হিসাব মতে মোট বাস্তুচ্যুতদের অর্ধেকেই শিশু।
বাউয়ার বলেন, ২০২০ সালে কোভিড মহামারির সময় ৪০ লাখ খাদ্য নিরাপত্তাহীন ও ক্ষুধার্ত হাইতিয়ান ছিল এবং এই সংখ্যা কমেনি, তবে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা সংখ্যাটি ১০ লাখে উন্নীত হয়েছে।
বাউয়ার বলেন, পোর্ট-অ-প্রিন্সকে 'একটি বুদ্বুদে' পরিণত করা হয়েছে। যেখানে গ্যাংগুলো রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করে, বন্দর ও বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয় এবং কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারে না।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক বলেন, সংস্থাটি এবং তার অংশীদাররা রাজধানীতে নতুন করে বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য একটি গরম খাবার পরিষেবা শুরু করেছে, দিনে ২ হাজার জনের খাবার দিয়ে শুরু করে এখন তা দিনে প্রায় ১৪ হাজার জনের খাবার রয়েছে।
তবে তিনি বলেন, বন্দরটি পুনরায় চালু করা হলে না করলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ডব্লিউএফপির গুদামের সরবরাহ শেষ হয়ে যাবে।
হাইতি তার খাদ্য সরবরাহের ৫০ শতাংশের জন্য খাদ্য আমদানির উপর নির্ভর করে। বাউয়ার বলেন, ডব্লিউএফপি নিশ্চিত করতে পারে যে পোর্ট-অ-প্রিন্সের পাশাপাশি হাইতির অন্য এলাকায় খাদ্যের দাম বাড়ছে।
তিনি বলেন, জানুয়ারিতে গোলযোগ হয়েছিল এবং দক্ষিণে খাদ্যের দাম ২৫ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে রাস্তাঘাট অবরোধ করা হয়েছিল এবং ট্রাকগুরো মৌলিক প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পোর্ট-অ-প্রিন্সে যেতে পারেনি। সেখানে রান্নার জন্য প্রাথমিক জ্বালানি প্রোপেনের সংকট ছিল।
আরও পড়ুন: চিলির দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩১, নিখোঁজ ৩০০
বাউয়ার বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গ্যাং সহিংসতার কারণে খাদ্যপণ্যের দাম অন্তত ১০ শতাংশ বেড়েছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর বাইরের গ্রামীণ এলাকার অর্থনীতি পোর্ট-অ-প্রিন্সের সংযোগের উপর নির্ভর করে এবং বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার কারণে দেশের অন্যত্র খাদ্যের দামও বেড়েছে।
বাউয়ার বলেন, ডব্লিউএফপির এক জরিপে দেখা গেছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিবারের আয় কমে যাচ্ছে, কারণ মানুষ কাজে যেতে পারছে না। তারা ' একটি জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে' এবং অর্থ উপার্জন করছে না।
প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরির পদত্যাগের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে বাউয়ার বলেন, তিনি রাজনৈতিক গতিশীলতা পড়ার ক্ষেত্রে ভাল নন ‘তবে আমরা অবশ্যই আশা করি যে নিরাপত্তার উন্নতি হবে।’
তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতা মানুষকে এই মুহূর্তে খুব সাধারণ কাজগুলো করতে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া, বা সুপারমার্কেটে যাওয়া বা 'অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ' কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উত্তর হাইতির ক্যাপ হাইতিয়েন থেকে কথা বলার সময় বাউয়ার জোর দিয়ে বলেন, ‘শুধু নিরাপত্তার দিকে নজর দিলে হবে না, আমাদের জোরালো মানবিক সহায়তাও প্রয়োজন।’
কিন্তু এ বছর হাইতির জন্য জাতিসংঘের ৬৭ কোটি ৪০ লাখ ডলারের মানবিক আবেদনের মাত্র ২ দশমিক ৬ শতাংশ অর্থায়ন করা হয়েছে।
একটি ইতিবাচক নোটে, বাউয়ার বলেন, স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ডব্লিউএফপি কিনতে পারে এমন সরবরাহের জন্য ধন্যবাদ। এটি চলমান কর্মসূচির অংশ হিসাবে সোমবার উত্তর ও দক্ষিণ হাইতি এবং অন্যান্য শান্ত অঞ্চলে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার স্কুল শিশুকে খাওয়াতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, সহিংসতার কারণে প্রবেশের ঝুঁকি সত্ত্বেও ডব্লিউএফপি হাইতির কিছু দরিদ্র মানুষের কাছে তাদের মোবাইল ফোনে অর্থ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক মঙ্গলবার বলেছেন, গোষ্ঠীগত সহিংসতার কারণে অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টারে রক্তের ঘাটতি রয়ে গেছে এবং প্রতিবেশী ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র থেকে রক্ত আনার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: চিলির ঘনবসতিপূর্ণ মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু