%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC
পূর্ব ইন্দোনেশিয়া ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল
শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে পূর্ব ইন্দোনেশিয়া বুধবার কেঁপে ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি এবং কোনো সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়নি।
৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর কিছু বাসিন্দা বাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে যে এটি উত্তর মালুকু প্রদেশের টোবেলো থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সমুদ্রের তলদেশে ৬০ কিলোমিটার গভীরে ঘটেছে।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া, জলবায়ুবিদ্যা এবং জিওফিজিক্স এজেন্সি সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করেনি। হনলুলুতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র সংক্ষিপ্তভাবে বলেছে যে নিকটবর্তী ইন্দোনেশিয়ান উপকূলে একটি সম্ভাব্য হুমকি রয়েছে কিন্তু কিছু পরেই বিজ্ঞপ্তিটি তুলে নেয়।
টোবেলোর বাসিন্দা পিয়াস ওহোইউতুন বলেছেন যে ভূমিকম্পের সময় কিছু মানুষ বাড়ি থেকে দ্রুত বের হয়ে যান।
ওহোইউতুন বুধবার জানান, আমি কিছুটা কম্পন অনুভব করেছি। কেউ কেউ বাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করে।
বুধবার সকালে পূর্ব ইন্দোনেশিয়ায় ৬.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্পও অনুভূত হয়। কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ১৯ লাখ ছুঁইছুঁই
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ১৯ লাখ ছুঁইছুঁই।
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে বুধবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ১৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩৮৬ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৭ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭২ জনে পৌঁছেছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৩৬ লাখ ১৪ হাজার ৪১১ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১১ লাখ ২৫ হাজার ৮৯৫ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে বুধবার সকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত চার কোটি ৪৬ লাখ ৮১ হাজার ৮৮৪ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৭২৬ জনে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্ত ৬৭.০৮ কোটি ছাড়াল
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এসময় নতুন করে ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৬ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ১৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ সময়ে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৯৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬২ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: মৃত্যুশূন্য দিনে দেশে ৯ জনের করোনা শনাক্ত
নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা: ডাটা বক্স ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছে
পোখরা, নেপাল, ১৭ জানুয়ারি (ইউএনবি)-নেপালের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর শুরু করেছে। এছাড়া বিশ্লেষণের জন্য বিমানের ডেটা রেকর্ডার ফ্রান্সে পাঠাচ্ছে।
গত ৩০ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনার কারণ কী তা নির্ধারণ করার চেষ্টা চলছে।
হিমালয়ের পাদদেশে নতুন খোলা পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে যাওয়ার সময় রবিবার ফ্লাইটটি একটি খাদে পড়ে যায়। এসময় বিমানে থাকা ৭২ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ জনের মৃত্যু হয়।
অনুসন্ধানকারীরা সোমবার ককপিট ভয়েস রেকর্ডার এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার খুঁজে পেয়েছেন এবং ৩০০ মিটার গভীর (৯৮৪-ফুট-গভীর) উপত্যকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে চিরুনি অভিযান চালায় নিখোঁজ দুজনের সন্ধানে। মঙ্গলবার সকালেও একজনের লাশ পাওয়া যায়।
বিমানের প্রস্তুতকারক এটিআর-এর সদর দপ্তর টুলুসে নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জগন্নাথ নিরাউলা বলেছেন, ভয়েস রেকর্ডারটি স্থানীয়ভাবে বিশ্লেষণ করা হবে। তবে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারটি ফ্রান্সে পাঠানো হবে।
ফরাসি বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে এটি তদন্তে অংশ নিচ্ছে এবং এর প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে ছিল।
নেপালের ইয়েতি এয়ারলাইন্সের চালিত টুইন-ইঞ্জিন এটিআর ৭২-৫০০টি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) পশ্চিমে রিসর্ট শহর পোখরাতে ২৭ মিনিটের ফ্লাইটটি সম্পন্ন করছিল।
তবে এটি এখনও পরিষ্কার নয় যে কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মনে হচ্ছে যে এটা টার্বোপ্রপ বিমানবন্দরের কাছে যাওয়ার সময় কম উচ্চতায় একটি স্টলে গিয়েছিল, কিন্তু কেন তা স্পষ্ট নয়।
বিমানটিতে ১৫ বিদেশি নাগরিক ও চারজন ক্রু সদস্যসহ ৬৮ জন যাত্রী ছিল। বিদেশিদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রাশিয়ান, দুইজন দক্ষিণ কোরিয়ার এবং আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের একজন করে।
পোখরা হল অন্নপূর্ণা সার্কিটের প্রবেশদ্বার এবং হিমালয়ের একটি জনপ্রিয় হাইকিং ট্রেইল।
মঙ্গলবার বিকালে পোখরার সেতি নদীর তীরে একটি শ্মশানের তুলসী ঘাটে ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল। তারা দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ত্রিভুবন পাউডেল (৩৭) নামক সাংবাদিক এবং স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকের জন্য শোক জানাতে এসেছিলেন।
সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় হাসপাতালের বাইরে শত শত আত্মীয় ও বন্ধুরা জড়ো হয়েছিল।
অনেকে একে অপরকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, যখন কেউ কেউ ময়নাতদন্তের গতি বাড়ানোর জন্য কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানাচ্ছিলেন, যাতে তারা তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য বাড়িতে নিয়ে যেতে পারে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক স্মিথ, যিনি বোয়িং ৭৫৭ এবং ৭৬৭ বিমান চালান এবং ‘পাইলটকে জিজ্ঞাসা করুন’ নামে একটি কলাম লেখেন, তিনি সতর্ক করে বলেন যে দুর্ঘটনার বিষয়ে এখনও অনেক বিবরণ জানা যায়নি।
তিনি একটি ই-মেইলে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘একটি সম্ভাবনা হল একটি ইঞ্জিনের ব্যর্থতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
বিমানের অবতরণের স্মার্টফোনের ভিডিও করা দিওয়াস বোহোরা বলেন, বিমানটি হঠাৎ বাম দিকে না আসা পর্যন্ত এটিকে অন্যান্য বিমানের মতোই সাধারণ অবতরণ মনে হচ্ছিল।
তিনি বলেন, ‘আমি এটা দেখেছি এবং আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম ... আমি ভেবেছিলাম যে আজ এটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরে এখানে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, আমিও মারা যাব।’
আরও পড়ুন: নেপাল-ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি: বাংলাদেশে ভারতীয় সহযোগিতা 'দৃশ্যমান', বললেন নসরুল
দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটি এটিআর৭২, যা সারা বিশ্বের এয়ারলাইনগুলো সংক্ষিপ্ত আঞ্চলিক ফ্লাইটের জন্য ব্যবহার করে।
১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে একটি ফরাসি ও ইতালীয় অংশীদারিত্বে নির্মিত হয় এটি। বিমানের এই মডেলটি বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি মারাত্মক দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।
এর আগে তাইওয়ানে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দু'টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যার মধ্যে একটি এটিআর৭২-৫০০ ও এটিআর৭২-৬০০ বিমান।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে একটি ট্রান্সএশিয়া এটিআর ৭২-৫০০ ফ্লাইট তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে মনোরম পেঙ্গু দ্বীপপুঞ্জে অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। একই তাইওয়ানিজ এয়ারলাইন পরিচালিত একটি এটিআর ৭২-৬০০।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাইপেইতে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। এসময় এর একটি ইঞ্জিন ব্যর্থ হয় এবং দ্বিতীয়টি ভুলবশত বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া ২০১৬ সালে ট্রান্সএশিয়া সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ করার পর ব্যবসাও বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বিমান কোম্পানির মুখপাত্র সুদর্শন বারতৌলা জানিয়েছেন, ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ছয়টি এটিআর৭২-৫০০ প্লেনের বহর রয়েছে।
নেপালে মাউন্ট এভারেস্টসহ বিশ্বের ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে আটটির অবস্থান। এবং দেশটির বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাস রয়েছে।
ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের এভিয়েশন সেফটি ডাটাবেস অনুসারে, ১৯৪৬ সাল থেকে নেপালে ৪২টি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রবিবারের দুর্ঘটনাটি ১৯৯২ সালের পর নেপালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। সেসময় একটি বিমান কাঠমান্ডুতে অবতরণের চেষ্টা করার সময় একটি পাহাড়ে ধাক্কা দেয় এবং এতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে থাকা ১৬৭ জন যাত্রীর সবাই প্রাণ হারান।
নিরাপত্তার মান দুর্বল উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৩ সাল থেকে নেপালের এয়ারলাইন্সকে ২৭টি দেশের ওপর দিয়ে উড়তে নিষেধ করেছে।
২০১৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন নেপালের এভিয়েশন সেক্টরে উন্নতির কথা উল্লেখ করেছে।
কিন্তু, ইইউ এর প্রশাসনিক সংস্কারের দাবি করে আসছে।
আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত: নেপালে জাতীয় শোক পালন
কাবুলে তালেবান শাসন: ম্যানিকুইনেরও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ!
তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলজুড়ে নারীদের পোশাকের দোকানের পুতুলের (ম্যানিকুইন) মাথা কাপড় বা কালো প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
এই পুতুলগুলো তালেবানের শুদ্ধতাবাদী শাসনের অন্যতম প্রতীক।
অন্যদিকে, এটি কাবুলের পোশাক ব্যবসায়ীদের খাপ খাইয়ে নেয়া ও সৃজনশীলতার একটি ক্ষুদ্র প্রদর্শনী।
প্রথমত তালেবানরা পুতুলগুলোর মাথা কেটে ফেলতে চেয়েছিল।
২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখলের কিছুদিনের মধ্যেই তালেবানের ভাইস অ্যান্ড নেচার মন্ত্রণালয় আদেশ দেয় যে, দোকানের জানালা থেকে সব পুতুল সরিয়ে ফেলতে হবে অথবা তাদের মাথা খুলে ফেলতে হবে।
এই আদেশটি তারা ইসলামী কঠোর আইনের ব্যাখ্যা দ্বারা তৈরি করেছে। যাতে মূর্তি ও মানুষের ছবি আঁকা বা কাঠামো তৈরি নিষিদ্ধ। যেহেতু এগুলো প্রতিমা হিসেবে পূজা করা যেতে পারে।
যদিও এটি নারীদের বিষয়ে তালেবানের মতাদর্শ প্রচারের সঙ্গেও জড়িত।
কিছু পোশাক বিক্রেতা এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়, কিন্তু অন্যরা এ সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে।
তারা অভিযোগ করেছে, এ সিদ্ধান্ত মানলে হয় তারা তাদের জামাকাপড় সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হবে অথবা তাদের মূল্যবান ম্যানেকুইনগুলোকে ধ্বংস করতে হবে।
পরবর্তীতে তালেবানদের তাদের এই আদেশ সংশোধন করতে হয় এবং পরিবর্তে দোকান মালিকদের পুতুলের মাথা ঢেকে রাখতে বলা হয়।
একটি দোকানে পুতুলগুলোর মাথা তাদের তৈরি ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মতো একই নকশা করা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল।
পুতুলটি একটি বেগুনি রঙের পোশাকে কাউরি শেল দিয়ে সাজানো ছিল এবং গায়ে বেগুনি রঙের হুড ছিল। আরেকটি পুতুল লাল গাউন পরে ছিল, যার মাথায় সোনার মুকুটসহ লাল ভেলভেটের মুখোশ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পোশাক ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমি প্লাস্টিক বা কুৎসিত জিনিস দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে পারি না, কারণ এতে আমার দোকান ও এর জানালা কুৎসিত দেখাবে।’
তিনি বলেন, ‘দোকান মালিকদের পোশাকগুলো আকর্ষণীয় ভাবে রাখতে হয়, যাতে ক্রেতা সেগুলো দেখে পছন্দ করে কেনে। তবে তালেবান দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকে অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং আন্তর্জাতিক অর্থায়নের অবসান ঘটেছে। যা প্রায় পুরো জনসংখ্যাকে দারিদ্র্যের মুখে ফেলেছে।’
আফগানিস্তানে বিয়ের জন্য বড় ঘের যুক্ত পোশাক সব সময়ই জনপ্রিয়। দেশটির রক্ষণশীল সমাজে হাতে গোনা যে কয়েকটি অনুষ্ঠানে নারীরা তাদের সেরা পোশাক পরার সুযোগ পায়, বিয়ে তার মধ্যে অন্যতম।
আরও পড়ুন: ১১ লাখ আফগান শিশু ভয়াবহ অপুষ্টির মুখে পড়তে পারে
কিন্তু উপার্জন এতটাই কমে গেছে যে বিয়েতেও তারা জনপ্রিয় এই পোশাকগুলো কিনতে পারছে না।
ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘তার বিক্রি আগের তুলনায় অর্ধেক হয়ে গেছে। বিয়ে, সন্ধ্যার অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক কেনা এখন আর মানুষের কাছে অগ্রাধিকার নয়। মানুষ খাদ্য ও বেঁচে থাকার বিষয়ে বেশি চিন্তা করে।’
আরও একটি দোকানের মালিক হাকিম সিদ্ধান্ত নেন যে, পুতুলগুলোর মাথা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দ্বারা মোড়ানো যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি এই নিষেধাজ্ঞা থেকে একটি পরিকল্পনা করেছি, যাতে পুতুলগুলো আগের চেয়ে আরও আকর্ষণীয় হয়।’
তবে সবাই বিষয়টিতে এত মনোযোগ দেয়না।
একটি দোকানে স্লিভলেস গাউন পরা পুতুলগুলোর মাথা কালো প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঢাকা ছিল।
মালিক বলেন,তার আর সামর্থ্য নেই।
আরেক দোকানের মালিক আজিজ বলেন, উপসচিব ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা নিয়মিত দোকান ও শপিংমলগুলোতে টহল দিয়ে থাকে, তারা নজরদারি করে যে পুতুলগুলোর মাথা কেটে ফেলা হয়েছে বা ঢেকে রাখা হয়েছে কিনা।
তিনি এই নিয়মের জন্য তালেবানের যৌক্তিকতা প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, ‘সবাই জানে ডামিগুলো মূর্তি নয় এবং কেউ তাদের উপাসনা করবে না। সব মুসলিম দেশেই পোশাক প্রদর্শনের জন্য ম্যানিকুইন ব্যবহার করা হয়।’
দেশটির বিভন্ন দোকানের ডিসপ্লে উইন্ডোতে অল্প সংখ্যক পুরুষ ডামি দেখা যায়, তাদেরও মাথা ঢেকে রাখা হয়। যাতে বোঝা যায় যে কর্তৃপক্ষ একইভাবে পুরুষ পুতুলের জন্যও একই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
প্রথমদিকে তালেবান বলেছিল যে তারা তাদের আগে মেয়াদের মতো (১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে) সমাজের ওপর কঠোর নিয়ম চাপিয়ে দেবে না। কিন্তু ক্রমান্বয়ে তারা আরও বেশি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে,বিশেষ করে নারীদের ওপর। তারা নারী ও মেয়ে শিশুদের ষষ্ঠ শ্রেণীর পরে স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে, নারীদের ঘরের বাইরে বেশিরভাগ কাজ থেকে নিষিদ্ধ করেছে এবং বাইরে যাওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখার আদেশ দিয়েছে।
সম্প্রতি লাইসি মরিয়ম স্ট্রিটে কেনাকাটা করা এক নারী মুথ ঢেকে রাখা পুতুলগুলো দেখে বলেন,‘আমি যখন তাদের দেখি আমার তখন মনে হয়, এই পুতুলগুলোও ধরা পড়েছে এবং আটকা পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে আমি এই দোকানের জানালার কাঁচে নিজেকে দেখছি, এমন একজন আফগান নারী; যাকে তার সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সাবেক আফগান ও আন্তর্জাতিক বাহিনীর শতাধিক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে: জাতিসংঘ
ওআইসির বৈঠকে আফগান শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান বাংলাদেশের
সেনাবাহিনী দখল নেয়ার পর মিয়ানমারের অস্ত্র শিল্পের প্রসার ঘটেছে: রিপোর্ট
অন্তত ১৩টি দেশের কোম্পানি মিয়ানমারকে অস্ত্র তৈরি করতে তার সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। যা ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির শান্তিকামী জনগণের ওপর নৃশংসতায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্বাধীন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।
মিয়ানমারের জন্য বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদের সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটি কীভাবে অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে এবং একটি গণ ও জনবিরোধী আন্দোলনকে প্ররোচিত করে তার বিবরণ দেয়া হয়েছে।
৫০ বছরের সামরিক শাসনের পরে গণতন্ত্রের পথে প্রায় এক দশকের অগ্রগতির পর দেশটির জান্তা বাহিনী ফের নির্বাচিত বেসামরিক নেতাদের আটক করে ক্ষমতা দখল করে।
এরপর নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে। যার জেরে সেনাশাসন বিরোধীরাও হাতে অস্ত্র তুলে নেয়।
জাতিসংঘের কিছু বিশেষজ্ঞ এই পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা সমিতি, সহিংসতায় দুই হাজার ৭০০টিরও বেশি বেসামরিক মৃত্যুর কথা নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ২৭৭টি শিশু রয়েছে এবং ১৩ হাজারেরও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে।
যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের কোম্পানিগুলো মিয়ানমারের সামরিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে সমর্থন করছে।
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
প্রতিবেদনে এই ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যে তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুবিধা দিচ্ছে না, তা যেন তারা নিশ্চিত করে।
মিয়ানমারের দেশীয় অস্ত্র শিল্পের বিস্তার ঘটেছে। অন্যদিকে, কিছু দেশ অস্ত্র ব্যবসায় বা অস্ত্র উৎপাদনে জড়িত ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী অং মো মিন্টের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
ট্রেজারি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, অং মো মিন্টে মিয়ানমারের হয়ে অস্ত্র চুক্তির কাজ সহজতর করে।
তার ভাই হ্লেইং মো মিন্ট এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত ট্রেডিং কোম্পানি ডাইনাস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এর একজন পরিচালক মায়ো থিটসারকেও নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করা হয়েছিল।
নভেম্বরে মার্কিন বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মারাত্মক বিমান হামলার কথা উল্লেখ করে সামরিক বাহিনীতে বিমান সরবরাহকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের কোনো ব্যক্তিগত অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই এই ধরনের কোনো কোম্পানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা শিল্প অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
এতে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় কারখানাগুলো এখনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রযুক্তি ও বিদেশি সাপ্লাই চেইন, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং আপগ্রেড ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর নির্ভর করে।
একটি বিবৃতিতে কাউন্সিল বিশেষজ্ঞ ক্রিস সিডোটি অনুরোধ করেছেন, সরকার তদন্ত করবে এবং যেসব সংস্থা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘বেসামরিকদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ’ এ ব্যবহৃত অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করে সেসব সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
মানবাধিকার আইনজীবী এবং ২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্য সিডোতি বলেছেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের দুর্ভোগ থেকে লাভবান হওয়া বিদেশি কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের একটি প্রতিবেদনে রাশিয়া, চীন, ইউক্রেন, ইসরায়েল, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইনে কোম্পানির নামকরণের কিছু লিঙ্কের রূপরেখা দেয়া হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ অস্ত্র তৈরির শিল্পের বিকাশের একটি প্রধান কারণ হল অস্ত্র, সামরিক বিমান এবং অন্যান্য অস্ত্র আমদানি নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন ছোট অস্ত্র ও হালকা অস্ত্র তৈরিতে স্বাবলম্বী।
এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অস্ত্র তৈরির ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে- অ্যাসল্ট রাইফেল এবং মেশিনগান থেকে শুরু করে মর্টার, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার এবং আর্টিলারি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন আইটেম।
আরও পড়ুন: সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের
বিমান দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত: নেপালে জাতীয় শোক পালন
পোখরায় বিমান দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সোমবার (১৬ জানুয়িারি) জাতীয় শোক পালন করেছে নেপাল।
রবিবার দেশটিতে একটি বিমান ৭২ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হলে এই প্রাণহাণির ঘটনা ঘটে। এতে ৬৮ জন নিহত হন।
দেশটির কাস্কি জেলার একজন জেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা টেক বাহাদুর কেসি বলেছেন, সোমবার সকালে দুটি লাশ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৬৮ জনে পৌঁছেছে।
তবে বিমান কী কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
দিওয়াস বোহোরা নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী তার বারান্দা থেকে প্লেনের অবতরণের ফুটেজ রেকর্ড করেছিলেন।
তিনি বলেন, তিনি বিমানটিকে নিচু হয়ে উড়তে দেখেন, এরপর হঠাৎই এটি তার বাম দিকে চলে যায়।
বোহোরা বলেন, ‘আমি এটা (দুর্ঘটনা) দেখেছি এবং আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম ... আমি ভেবেছিলাম যে আজ এটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরে এখানে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, আমিও মারা যাব।’
নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে সেটি বিমানবন্দরের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগ করেছিল।
এক বিবৃতিতে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নেপালের ইয়েতি এয়ারলাইন্সের টুইন-ইঞ্জিন এটিআর ৭২ বিমানটি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) পশ্চিমে পোখরা পর্যন্ত ২৭ মিনিটের ফ্লাইট পরিচালনা করছিল।
বিমানটি ১৫ জন বিদেশি নাগরিকের পাশাপাশি চারজন ক্রু সদস্য সহ ৬৮ জন যাত্রী বহন করছিল। বিদেশিদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রাশিয়ান, দুইজন দক্ষিণ কোরিয়ার এবং আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের একজন করে।
পোখরা একাডেমি অব হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স, ওয়েস্টার্ন হাসপাতালে লাশগুলো রাখা হয়েছে।
জেলার পুলিশের মুখপাত্র জ্ঞান খাকদা বলেছেন, ৩১টি লাশ শনাক্ত করা হয়েছে এবং কর্মকর্তারা পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট শেষ করার পরে পরিবারের কাছে সেগুলো হস্তান্তর করবে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশিদের লাশ এবং যাদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না তাদের আরও তদন্তের জন্য কাঠমান্ডুতে পাঠানো হবে।
রবিবার, টুইটারে ছবিতে দেখা যায় যে পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় এক দশমিক ছয় কিলোমিটার (প্রায় এক মাইল) দূরে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়ার ঢেউ দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিষ্ণু তিওয়ারি দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধারে সহায়তার জন্য দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছিলেন।
তিনি জানান, ঘন ধোঁয়া এবং আগুনের কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়েছে।
তিওয়ারি বলেন, ‘শিখাগুলো এতই উত্তপ্ত ছিল যে আমরা ধ্বংসস্তূপের কাছে যেতে পারিনি। আমি একজন লোককে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুনেছি, কিন্তু শিখা এবং ধোঁয়ার কারণে আমরা তাকে সাহায্য করতে পারিনি।’
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন।
দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল বিমানবন্দরে ছুটে যান এবং দুর্ঘটনার তদন্তে একটি প্যানেল গঠন করেন।
তিনি বলেন, ‘এই দুর্ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধারের জন্য নেপালি সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা এখনও দুই দক্ষিণ কোরিয়ার যাত্রীর ভাগ্যে কি ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং ঘটনাস্থলে কর্মী পাঠিয়েছে।
নেপালে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সি নোভিকভ বিমানটিতে থাকা চার রুশ নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আর্জেন্টিনার নিউকুয়েন প্রদেশের গভর্নর ওমর গুতেরেজ তার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন যে ফ্লাইটে একজন আর্জেন্টিনার যাত্রী ছিলেন।
পোখরা হল অন্নপূর্ণা সার্কিটের প্রবেশদ্বার ও হিমালয়ের একটি জনপ্রিয় হাইকিং ট্রেইল। এ শহরের নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি মাত্র দুই সপ্তাহ আগে কার্যক্রম শুরু করেছে।
দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটি এটিআর৭২, যা সারা বিশ্বের এয়ারলাইনগুলো সংক্ষিপ্ত আঞ্চলিক ফ্লাইটের জন্য ব্যবহার করে।
১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে একটি ফরাসি ও ইতালীয় অংশীদারিত্বে নির্মিত হয় এটি। বিমানের এই মডেলটি বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি মারাত্মক দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।
এর আগে তাইওয়ানে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দু'টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যার মধ্যে একটি এটিআর৭২-৫০০ ও এটিআর৭২-৬০০ বিমান।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে একটি ট্রান্সএশিয়া এটিআর ৭২-৫০০ ফ্লাইট তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে মনোরম পেঙ্গু দ্বীপপুঞ্জে অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। একই তাইওয়ানিজ এয়ারলাইন পরিচালিত একটি এটিআর ৭২-৬০০।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাইপেইতে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। এসময় এর একটি ইঞ্জিন ব্যর্থ হয় এবং দ্বিতীয়টি ভুলবশত বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৫ সালের দুর্ঘটনার ফুটেজ নাটকীয়ভাবে ধারণ করা হয়েছে।
এতে দেখা যায় যে বিমানটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে একটি ট্যাক্সিকে আঘাত করে। এতে ৪৩ জন নিহত হয় এবং কর্তৃপক্ষকে কিছু সময়ের জন্য তাইওয়ানি-নিবন্ধিত সমস্ত এটিআর ৭২ বিমানগুলোকে ফ্লাইট না চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
এছাড়া ২০১৬ সালে ট্রান্সএশিয়া সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ করার পর ব্যবসাও বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: পোখরায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: ৭২ জন যাত্রীর মধ্যে নিহত ৬৮
বিমান কোম্পানির মুখপাত্র সুদর্শন বারতৌলা জানিয়েছেন, ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ছয়টি এটিআ৭২-৫০০ প্লেনের বহর রয়েছে।
নেপালে মাউন্ট এভারেস্ট সহ বিশ্বের ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে আটটির অবস্থান। এবং দেশটির বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাস রয়েছে।
ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের এভিয়েশন সেফটি ডাটাবেস অনুসারে, ১৯৪৬ সাল থেকে নেপালে ৪২টি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রবিবারের দুর্ঘটনাটি ১৯৯২ সালের পর নেপালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। সেসময় একটি বিমান কাঠমান্ডুতে অবতরণের চেষ্টা করার সময় একটি পাহাড়ে ধাক্কা দেয় এবং এতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে থাকা ১৬৭ জন যাত্রীর সবাই প্রাণ হারান।
নিরাপত্তার মান দুর্বল উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৩ সাল থেকে নেপালের এয়ারলাইন্সকে ২৭টি দেশের ওপর দিয়ে উড়তে নিষেধ করেছে।
২০১৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন নেপালের এভিয়েশন সেক্টরে উন্নতির কথা উল্লেখ করেছে।
কিন্তু, ইইউ এর প্রশাসনিক সংস্কারের দাবি করে আসছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিশেষ যুদ্ধ প্রশিক্ষণ জার্মানিতে শুরু করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী
গুয়াতেমালার রেইন ফরেস্টের নিচে ২ হাজার বছর পুরনো মায়া শহর আবিষ্কৃত
ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিশেষ যুদ্ধ প্রশিক্ষণ জার্মানিতে শুরু করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী
ইউক্রেনের নতুন সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ বাড়িয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।প্রায় ৫০০ সৈন্যের ব্যাটালিয়নকে যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরাতে এই প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়েছে। যারা আগামী আগামী পাঁচ থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
রবিবার জার্মানিতে এই সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি।
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
মিলি সোমবার গ্রাফেনউয়ার প্রশিক্ষণ এলাকা পরিদর্শন করার পরিকল্পনা করছেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিতে সৈন্যরা কয়েকদিন আগে ইউক্রেন ছেড়ে গেছে। জার্মানিতে তাদের ব্যবহারের জন্য অস্ত্র ও সরঞ্জামের একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে কখন থেকে সেই প্রশিক্ষণ শুরু হবে তা বললে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পেন্টাগন।
তথাকথিত সম্মিলিত অস্ত্র প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ইউক্রেনীয় বাহিনীর দক্ষতাকে বাড়ানো যাতে তারা আক্রমণ চালাতে বা রুশ আক্রমণের যেকোনও ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলায় আরও ভালোভাবে প্রস্তুত থাকে। তারা সম্মিলিত আর্টিলারি, বর্ম এবং স্থল বাহিনী ব্যবহার
করে যুদ্ধে তাদের কোম্পানি- এবং ব্যাটালিয়ন-আকারের ইউনিটগুলোকে আরও ভালভাবে সরানো এবং সমন্বয় করতে শিখবে।
রবিবার তার সঙ্গে ইউরোপে ভ্রমণরত দুই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলার সময়, মিলি বলেছিলেন সমন্বিত এই জটিল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইউক্রেনীয়রা নতুন অস্ত্র, আর্টিলারি, ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে ইউক্রেনীয়রা তাদের অঞ্চলগুলো পুররুদ্ধার করবে, যা রুশ বাহিনী ১১ মাসের যুদ্ধের মাধ্যমে দখল করে নিয়েছে।
মিলি বলেছিলেন, ‘এই সমর্থন ইউক্রেনের পক্ষে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হওয়ার জন্য সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ,’ ‘এবং আমরা আশা করছি এখানে অল্প সময়ে এটি একসঙ্গে টানতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, লক্ষ্য হলো সমস্ত আগত অস্ত্র এবং সরঞ্জাম ইউক্রেনে সরবরাহ করা যাতে নতুন প্রশিক্ষিত বাহিনী এটি ব্যবহার করতে সক্ষম হয় ‘বসন্তের বৃষ্টিপাতের কিছুটা আগে। সেটা হবে আদর্শ।’
রাশিয়া কিয়েভ, উত্তর-পূর্ব শহর খারকিভ এবং দক্ষিণ-পূর্ব শহর ডিনিপ্রো সহ বিস্তৃত এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যেখানে একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ এ পৌঁছেছে।
মিলি বলেছিলেন যে তিনি নিশ্চিত করতে চান যে প্রশিক্ষণটি সঠিক ধারায় রয়েছে এবং অন্য কিছুর প্রয়োজন আছে কিনা এবং এটি নিশ্চিত করতে চান যে এটি সরঞ্জাম সরবরাহের সঙ্গে ভালভাবে চালিত হবে।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটিতে শ্রেণিক্ষে পাঠদান এবং মাঠের অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকবে যা ছোট স্কোয়াড দিয়ে শুরু হবে। এবং ধীরে ধীরে বড় ইউনিটে রূপান্তরিত হবে। এটি জটিল যুদ্ধ অনুশীলনের মাধ্যমে শেষ হবে এবং একটি সম্পূর্ণ ব্যাটালিয়ন ও একটি সদর দপ্তর ইউনিটকে একত্রিত করবে।
এখন অবধি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব হলো ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আরও তাৎক্ষণিক যুদ্ধক্ষেত্রে সরঞ্জাম সরবরাহের দিকে, বিশেষ করে কীভাবে দেশে মার্কিন অস্ত্র ব্যবস্থার বিস্তৃত অ্যারে ব্যবহার করা যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই তিন হাজার ১০০ টিরও বেশি ইউক্রেনীয় সৈন্যকে নির্দিষ্ট অস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। যার মধ্যে হাউইজার, সাঁজোয়া যান এবং হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম রয়েছে, যা এইচআইএমএআরএস নামে পরিচিত। অন্যান্য দেশগুলোও তাদের সরবরাহ করা অস্ত্রের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে।
গত মাসে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে পেন্টাগন প্রেস সেক্রেটারি বিমান বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার বলেন, ধারণাটি হলো ‘তাদেরকে এই উন্নত স্তরের সম্মিলিত প্রশিক্ষণ দিয়ে সক্ষম করে তোলা যা তাদেরকে কার্যকর সম্মিলিত অস্ত্র পরিচালনা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করতে সক্ষম করে তুলবে।’
মিলি বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের আগে যুক্তরাষ্ট্র এই ধরনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে মার্কিন ন্যাশনাল গার্ড এবং বিশেষ অভিযানিক বাহিনী যারা প্রশিক্ষণ দিচ্চিল তারা সবাই দেশ ছেড়ে চলে যায়। এই নতুন প্রচেষ্টাটি মার্কিন সেনাবাহিনী ইউরোপ ও আফ্রিকার সপ্তম আর্মি ট্রেনিং কমান্ড দ্বারা করা হচ্ছে। এটি আক্রমণের আগে তারা যা করে আসছিল তার ধারাবাহিকতা হবে। অন্যান্য ইউরোপীয় মিত্ররাও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
পোখরায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: ৭২ জন যাত্রীর মধ্যে নিহত ৬৮
মধ্য নেপালের শহর পোখারায় একটি ৭২ আসনের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে অন্তত ৬৮ জন নিহত হয়। রবিবার দেশটির একজন সরকারি কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছে।
কাস্কি জেলার একজন সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা তেক বাহাদুর কে.সি. বলেন, উদ্ধারকারীরা পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত স্থানটি অনুসন্ধান করছে এবং আরও মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়, বিমানটিতে ৬৮ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু সদস্য ছিল।
প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল বলেন, উড়োজাহাজটি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে মধ্য নেপালের পোখারায় যাচ্ছিল এবং নিরাপত্তা কর্মী ও সাধারণ জনগণকে উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করছি।
পোখারা শহর কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত।
টুইটারে শেয়ার করা ছবি ও ভিডিওগুলোতে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। সেসময় উদ্ধারকর্মীদের ও সাধারণ মানুষদের উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষের চারপাশে দেখা যায়।
গুয়াতেমালার রেইন ফরেস্টের নিচে ২ হাজার বছর পুরনো মায়া শহর আবিষ্কৃত
গুয়াতেমালার একটি রেইন ফরেস্টের নিচে দুই হাজার বছরের পুরনো বিশাল মায়া শহরের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।
মেট্রো নিউজ অনুসারে, আকাশ থেকে উত্তর গুয়াতেমালায় জরিপ করার সময় গবেষকরা রেইন ফরেস্টের নীচে চাপা পড়ে থাকা একটি বৃহৎ মায়া শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেছেন।
নিউজ আউটলেটটি অনুসারে, এ অঞ্চলটি মেক্সিকান সীমান্তের কাছাকাছি এবং এটি ৬৫০ বর্গ মাইল বিস্তৃত ও মিরাডোর-কালাকমুল কার্স্ট বেসিন নামে পরিচিত।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা অনুমান করেন যে শহরটি দুই হাজার বছর পুরনো। যাতে ১১০ মাইল বাঁধ দ্বারা সংযুক্ত শহরটিতে প্রায় এক হাজার মানুষের জনবসতি ছিল।
নদী তীরবর্তী ১১০ মাইল দীর্ঘ বাঁধগুলো ছিল পরিষ্কার ও উঁচু, যা হাইওয়ে হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ফলে এ সভ্যতার বাসিন্দারা কাছাকাছির বসতিগুলোতে তুলনামূলকভাবে সহজে যাতায়াত করতে পারতো।
বেশ কয়েকটি আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পাশাপাশি ফ্রান্স এবং গুয়াতেমালার সহযোগীদের দ্বারা লিডার (আলো শনাক্তকরণ ও রেঞ্জিং) ব্যবহার করে শহরটি আবিষ্কার করা হয়।
ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতে, রাডারের রেডিও তরঙ্গের পরিবর্তে লেজারের আলোর ওপর ভিত্তি করে শনাক্তকরণ পদ্ধতি হলো লিডার।
আরও পড়ুন: ব্লাড ক্যান্সার প্রতিরোধে যুগান্তকারী আবিস্কার অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের
গবেষকরা এটি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারণ লিডার রেইনফরেস্ট ভেদ করতে পারে এবং এর নিচে কী রয়েছে তা দেখা যায়।
তাদের গবেষণা প্রাচীন মেসোআমেরিকা জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।
ওই গবেষকরা বলেছেন, ‘এই গবেষণায় বায়ুবাহিত লিডার ডেটা ব্যবহার করে দেখা যায় যে কীভাবে জটিল সমাজগুলো তাদের আর্থ-সামাজিক সংগঠন এবং রাজনৈতিক ক্ষমতাকে প্রতিফলিত করার জন্য নিজেদের অবকাঠামো গড়ে তুলেছিল।’
‘একাকীত্ব' মোকাবিলায় রাজা চার্লস নিজের সঙ্গে একটি টেডি বিয়ার রাখেন: হ্যারি
ব্রিটেনের বর্তমান রাজা চার্লসের ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি তার বহুল আলোচিত বই ‘স্পেয়ারে’ প্রকাশ করেছেন যে তার বাবা সব সময় নিজের সঙ্গে একটি টেডি বিয়ার রাখেন। রাজা চার্লস তার শৈশবের এই টেডি দিয়ে একাকীত্ব মোকাবিলা করেন।
হ্যারি তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘টেডি পা'র সঙ্গে সব জায়গায় যায়। এটার অবস্থা করুণ। এর হাত ভাঙা, সুতো বের হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় গর্ত হয়ে গেছে।’
হ্যারি আরও বলেন, ‘টেডি তার (চার্লসের) শৈশবের অপরিহার্য নিঃসঙ্গতা খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।’
ডিএইচ কনসাল্টিং-এর মনোবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল হ্যাগ বলেছেন কিভাবে রাজা চার্লসের স্টাফ খেলনা তার সুস্থতায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আরও পড়ুন: আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটেনের রাজা হলেন তৃতীয় চার্লস