%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC
আধুনিক সন্ত্রাসবাদ দমনে জাতিসংঘকে ৫ লাখ ডলার দেবে ভারত
আধুনিক সময়ের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে জাতিসংঘকে পাঁচ লাখ ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, সমাজকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে মৌলবাদ ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যমগুলো সন্ত্রাসবাদী ও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর শক্তিশালী হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেবে ভারত: জয়শঙ্কর
শনিবার জয়শঙ্কর ভারতের রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী জাতিসংঘের সন্ত্রাসবাদ দমন কমিটির এক বৈঠকে এসব কথা বলেন। শুক্রবার মুম্বাইয়ে এটির প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের হুমকি প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোকে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদানে ইউএনওসিটি-এর প্রচেষ্টা বাড়াতে ভারত এ বছর স্বেচ্ছায় জাতিসংঘের ট্রাস্ট ফান্ড ফর কাউন্টার টেরোরিজম-এ পাঁচ লাখ ডলার প্রদান করবে।’
প্রথমবারের মতো ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাউন্টার টেরোরিজম কমিটির এ বৈঠকের আয়োজন করছে। এ বছরের থিম হলো- ‘ সন্ত্রাসবাদি কর্মকাণ্ডে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার প্রতিরোধ করা’।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে জয়শঙ্কর আয়োজিত নৈশভোজে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সাক্ষাৎ
যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক সহায়তা ২০২৭ সাল পর্যন্ত স্থগিত হতে পারে: প্রতিবেদন
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের তথ্যমতে, নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক দেশের বৈদেশিক সহায়তা বাজেট আরও দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখার কথা ভাবছেন।
ব্রিটেনের বৈদেশিক সাহায্য ব্যয় দেশটির জাতীয় আয়ের ০.৫ শতাংশের মতো। দুই বছর আগে করোনাভাইরাস মহামারির ফলে ব্রিটেনের সরকারি অর্থব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যে তাদের ব্যয় হ্রাস করেছিল।
করোনাকালে বিটেনের অর্থমন্ত্রী থাকা সুনাক তখন বলেছিলেন, ২০২৪-২০২৫ সালের মধ্যে বৈদেশিক ব্যয় আগের মতো জিডিপির ০.৭ শতাংশে ফিরে আসা উচিত।
আরও পড়ুন: টুইটারের বহিষ্কৃত সিইও পরাগ আগরওয়াল পেতে পারেন ৪২ মিলিয়ন ডলার
যদিও টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিদেশি সাহায্য তহবিল স্থগিত রাখার মেয়াদ আরও দুই বছর অর্থাৎ ২০২৬-২০২৭ পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে আরও বড় কাটছাঁটেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাজ্য যখন ব্যয় হ্রাসের পরিকল্পনা করছে এবং আবাসন, খাদ্য, ও জ্বালানির ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে কর মওকুফ করার পরিকল্পনা করছে।
আরও পড়ুন: ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী
বৈদেশিক আয় বৃদ্ধিতে কৃষিপণ্য বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী
গত এক বছরেরও বেশি সময় থেকে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী অবস্থায় রয়েছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) এর তথ্যানুসারে চলতি মাসের ২১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২০ সালের জুলাই থেকে সর্বনিম্ন ৫২৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাস ধরে কমে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের সপ্তাহে ৫২৮ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে।
ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের অক্টোবরে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৬৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল।
আরও পড়ুন: টুইটারের বহিষ্কৃত সিইও পরাগ আগরওয়াল পেতে পারেন ৪২ মিলিয়ন ডলার
এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশিরভাগ বৈশ্বিক পরিস্থিতির চাপ মোকাবিলায় রুপিকে রক্ষা করতে তহবিল ব্যবহারের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে।
শুক্রবার প্রকাশিত আরবিআই-এর সাপ্তাহিক পরিসংখ্যানগত সাপ্লিমেন্টের তথ্যানুসারে ২১ অক্টোবরে শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ (এফসিএ) মোট রিজার্ভের একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তিন দশমিক ৫৯৩ বিলিয়ন কমে ৪৬৫ দশমিক ০৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
এফসিএ’র ডলারের পরিভাষায় প্রকাশিত, ইউরো, পাউন্ড এবং ইয়েনের মতো অ-মার্কিন মুদ্রার মূল্যায়ন বা অবমূল্যায়নের প্রভাবকে অন্তর্ভুক্ত করে যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রাখা হয়।
এটি আরও বলছে, স্বর্ণের রিজার্ভ ২৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়ে ৩৭ দশমিক ২০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
শীর্ষ ব্যাংক জানিয়েছে, ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস (এসডিআর) বেড়ে ১৭ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাপ্তাহিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, আইএমএফের কাছে দেশের রিজার্ভের অবস্থান ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে চার দশমিক ৭৯৯ বিলিয়ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: কপ-২৭: উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রতিশ্রুত ১০ হাজার কোটি ডলার বাস্তবায়ন করতে বলবে বাংলাদেশ
অক্টোবরের দুই সপ্তাহে দেশে ৭৬৯.৮৮ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে
জি-২০ সম্মেলন: পুতিন ও এমবিএসের সঙ্গে সাক্ষাত হতে পারে বাইডেনের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী মাসে এক সপ্তাহে তিনটি দেশ সফর করবেন। তিনি একটি সম্মেলনের চতুর্থভাগে যোগ দেবেন। এসময় তিনি সম্ভাব্যভাবে চীনের শি জিনপিং এবং রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের মতো বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়ের শুক্রবার জানিয়েছেন, বাইডেন দক্ষিণ-পূর্বের ইউএস-আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে কম্বোডিয়ার নমপেনে যাওয়ার আগে ১১ নভেম্বর প্রথম কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনের জন্য মিশরের শার্ম আল-শেখ যাবেন। পরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতাদের আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এরপর তিনি বিশ্বের বেশিরভাগ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের নেতাদের একটি সমাবেশ গ্রুপ অব-২০ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ইন্দোনেশিয়ার বালিতে যাবেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন পরে প্রেসিডেন্টের বিদেশ ভ্রমণ শুরু হবে। যেটি নির্ধারণ করবে কোন দল হাউস এবং সিনেট নিয়ন্ত্রণ করবে।
বাইডেন জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একইসঙ্গে ধারণা করা হচ্ছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) সঙ্গেও তিনি মিলিত হতে পারেন।
আরও পড়ুন: জর্জিয়ায় জিতলেন জো বাইডেন
তবে পুতিন, শি এবং এমবিএস এখনও তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা ঘোষণা করেননি।
বাইডেন এবং শি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনে একসঙ্গে ভ্রমণ করেছিলেন যখন উভয়ই ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার তিনি আমন্ত্রণ পেয়েছেন৷ কিন্তু মার্কিন ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হয়ে উঠেছে৷
যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট উইঘুর এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য চীনকে দায়ী করেছেন। এছাড়াও হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের কণ্ঠস্বর রোধ করা, জবরদস্তিমূলক বাণিজ্যের অনুশীলন, গণতান্ত্রিক, স্বশাসিত তাইওয়ানের বিরুদ্ধে তার সামরিক উস্কানি এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আট মাস ধরে চলমান যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার বিচারের বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
এদিকে, চীনের প্রেসিডেন্ট শির সরকার তাইওয়ানের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের নীতির সমালোচনা করেছে। এবং বেইজিং শেষ পর্যন্ত চীনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করার নামান্তর উল্লেখ করে তাইওয়ানকে কমিউনিস্ট মূল ভূখণ্ড চীনের সঙ্গে একত্রিত করতে উৎসাহিত করেছে।
হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন যে মার্কিন ও চীনের কর্মকর্তারা নেতাদের একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন। তবে এটি এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
বুধবার প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে বাইডেন ‘চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান তীব্র প্রতিযোগিতা পরিচালনা করার দায়িত্ব’-এর ওপর জোর দিয়েছিলেন।
বাইডেন বলেন, ‘যেমনটি আমি বলেছি, আমাদের যে সামরিক সুবিধা তা আমাদের অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। তবে আমরা এটি স্পষ্ট করছি যে আমরা সংঘাত চাই না।’
বাইডেন পুতিন বা এমবিএসের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করবেন এমন সম্ভাবনা কম।
বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর মস্কোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করেছে। যুদ্ধ দ্বারা প্রভাবিত ইউক্রেন ও এর প্রতিবেশীদের সহায়তার জন্য ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রাশিয়া ইউক্রেনের সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুরু করার কয়েক মাস আগে বাইডেন এবং পুতিন ২০২১ সালের জুনে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে মুখোমুখি বৈঠক করেছিলেন। তারা ফেব্রুয়ারিতে ফোনে শেষ কথা বলেছিল, বাইডেন পুতিনকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে রাশিয়া আক্রমণের জন্য অগ্রসর হলে ‘গুরুতর মূল্যের’ সম্মুখীন হবে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে বাইডেন ঘোষণা করেছিলেন যে রিয়াদের নেতৃত্বাধীন ওপেক + জোট তেল উৎপাদন কমানোর পদক্ষেপ নেয়ার পরে সৌদি আরবের জন্য ‘পরিণাম’ ভোগ করতে হবে। হোয়াইট হাউস আরও বলেছে যে এটি তেল উৎপাদন হ্রাসের আলোকে রাজ্যের সঙ্গে তার সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন করছে যে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন যে রাশিয়া, অপর ওপেক + সদস্য, ইউক্রেনে প্রায় আট মাসের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কারণে রাশিয়াকে সাহায্য করবে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ১৮ থেকে ১৯ নভেম্বর এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন লিডারদের বৈঠকে যোগদানের জন্য থাইল্যান্ডের ব্যাংককে আলাদাভাবে ভ্রমণ করবেন। তারপরে ফিলিপাইনের ম্যানিলা যাবেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের পরাজয় স্বীকার না করা 'বিব্রতকর': জো বাইডেন
প্রথমেই যেসব পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন জো বাইডেন
ফিলিপাইনে বন্যা-ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭
ফিলিপাইনে প্রবল বর্ষণে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ ফিলিপাইন প্রদেশে জোর আঘাতে সেখানকার ৬০ গ্রামবাসী নিখোঁজ এবং বৃষ্টির পানি, কাদা, পাথর ও গাছের চাপায় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রাক্তন বিচ্ছিন্নতাবাদী গেরিলাদের দ্বারা পরিচালিত পাঁচ-প্রদেশের মুসলিম স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাগুইব সিনারিম্বো বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত মাগুইন্দানাও প্রদেশের তিনটি শহরে কমপক্ষে ৪২ জন বন্যার জলে ভেসে ডুবে গেছে বা ধ্বংসাবশেষে ভরা কাদায় চাপা পড়েছে।
সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা জানায়, শনিবার ভোরে পূর্বাঞ্চলীয় ক্যামারিনিস সুর প্রদেশে আছড়ে পড়া গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় নালগের আঘাতে অন্য পাঁচজন মারা যান।
আকস্মিক বন্যা ও কাদা ধসে বেঁচে যাওয়া কুসিওং গ্রামবাসীদের উদ্ধৃতি দিয়ে সিনারিম্বো টেলিফোনে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ ঝড়ের প্রভাব হচ্ছে বৃষ্টির পানি, পাথর ও গাছ মিশ্রিত কাদা মাটির ধস যা মাগুইন্দানাওয়ের দাতু ওডিন সিনসুয়াট শহরের কুসিওং নামক উপজাতীয় গ্রামে ৬০ জনের মতো মানুষসহ কয়েক ডজন বাড়িকে চাপা দেয়।
তিনি আরও বলেন, কুসিওংয়ে কোদাল ব্যবহার করে উদ্ধারকারীরা শুক্রবার ১১টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু ছিল।
সিনারিম্বো বলেন, এই সম্প্রদায় থেকেই আমাদের কাজ শুরু হবে। অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ জোরদার করতে সেনা, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকসহ ভারী সরঞ্জাম এবং আরও উদ্ধারকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে প্রতি বছর প্রায় ২০টি টাইফুন ও ঝড় আঘাত হানে। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত। অর্থাৎ এটি প্রশান্ত মহাসাগরের বেশিরভাগ অংশ বরাবর এমন একটি অঞ্চল, যেখানে অনেক আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং ভূমিকম্প ঘটে। যার ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দেশটি বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগ-প্রবণ দেশ হয়ে উঠেছে।
বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ছাড়াল
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ কোটি ৫০ লাখ অতিক্রম করেছে।
বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ হাজার ২৩৫ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া, এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ ৯২ হাজার ২৭৮ জনে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ৯ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার ৬১০ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ১৬৬ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে চার কোটি ৪৬ লাখ ৪৯ হাজার ৯৮৩ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৮ হাজার ৯৯৯ জনে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে নতুন করে ১০২ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪১৮ জন এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৬৮ জনে পৌঁছেছে।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৯৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ সময়ে শনাক্ত হার ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৪৫৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৭৯ হাজার ৮০০ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বিশ্ব করোনা: আক্রান্ত ৬২ কোটি ৬০ লাখ ছাড়াল
বিশ্ব করোনা: আক্রান্ত বেড়ে ৬২ কোটি ৫৫ লাখ ছাড়াল
বিশ্ব করোনা: মৃত্যু ৬৪ লাখ ২০ হাজারের কাছাকাছি
টুইটারের বহিষ্কৃত সিইও পরাগ আগরওয়াল পেতে পারেন ৪২ মিলিয়ন ডলার
টুইটারের বহিষ্কৃত ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও পরাগ আগরওয়াল টুইটার ছাড়ার পরে ৪২ মিলিয়ন ডলার পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানান।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তনের এক বছরের মধ্যে যদি আগরওয়ালকে বরখাস্ত করা হয়,তাহলে তিনি আনুমানিক ৪২ মিলিয়ন ডলার পাবেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্ক কোম্পানিটি কেনার জন্য ৪৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে।
মাস্ক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের দায়িত্বে রয়েছেন এবং দায়িত্ব নেয়ার পরই সিইও পরাগ আগরওয়াল,সিএফও নেড সেগাল এবং জেনারেল কাউন্সেল ভিজায়া গাড্ডেকে বরখাস্ত করেছেন।
মাস্ক টুইটারের ব্যবস্থাপনায় তার বিশ্বাসের অভাব প্রকাশ করেছিলেন।
এনডিটিভির মতে, আগরওয়াল; যিনি টুইটারের পূর্ববর্তী সিটিও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন,গত বছরের নভেম্বরে সিইও নিযুক্ত হন।
২০২১ সালের জন্য তার মোট ক্ষতিপূরণ ছিল ৩০ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার বেশিরভাগই স্টক পুরষ্কারের মাধ্যমে এসেছিল।
আশিয়ান: বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য না থাকার ঘোষণা মিয়ানমারের
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা স্বীকার করেছেন যে মিয়ানমারে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি এবং তারা দেশটিতে সহিংসতা বন্ধে দৃঢ় সংকল্প বৃদ্ধিতে ঐক্যমত হয়েছে। দেশটিতে গত বছর একটি সামরিক অভ্যুণ্থানের কারণে সংকট তৈরি হয়েছে যা এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
রবিবার মিয়ানমারের কাচিনে সামরিক বিমান হামলা চালিয়ে নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ৪০ জনেরও বেশি সদস্যকে হত্যা এবং জুলাই মাসে রাজনৈতিক বন্দীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাসহ সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংস্থা (আশিয়ান) সদস্য দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে৷
বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় মিয়ানমারের ওপর এক বিশেষ বৈঠকে আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন যে তাদের প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। গত বছরের এপ্রিলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে গ্রুপটি পাঁচ দফা ঐকমত্যে পৌঁছেছে তার বাস্তবায়নকে শক্তিশালী করতে ‘জোরলো, বাস্তবসম্মত এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ’ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পরপরই আসিয়ান অন্তর্ভুক্ত মিয়ানমারে শান্তি স্থাপনের ভূমিকা পালনের চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
পাঁচ দফা ঐকমত্য অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে একটি সংলাপ, একজন আসিয়ান বিশেষ দূতের মধ্যস্থতা, মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে দেখা করার জন্য বিশেষ দূতকে মিয়ানমার সফরের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমার সরকার প্রাথমিকভাবে ঐকমত্যে সম্মত হলেও তারা এটি বাস্তবায়নে খুব কম চেষ্টা করে। মানবিক সাহায্য এবং আসিয়ানের দূত কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখোনকে স্বল্প পরিসরে সফর করার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু তাকে সু চির সাথে দেখা করার অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। সু চিকে গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন অভিযোগে বিচার করা হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন রাজনীতি থেকে তাকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে এটি করা হয়েছে।
এসবের প্রতিক্রিয়ায় আসিয়ান জোট মিয়ানমার নেতাদের তাদের অফিসিয়াল বৈঠকে অংশ নিতে দেয়নি। যদিও কর্মরত পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা যোগ দিয়েছেন।
সর্বশেষ আশিয়ান বৈঠকের সভাপতিত্বকারী প্রাক সোখোন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বৈঠক থেকে বলা হয় যে, আসিয়ানের নিরুৎসাহিত হওয়া উচিত নয়, বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করতে মিয়ানমারকে সাহায্য করতে আশিয়ান আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বলেছেন, কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্য বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় মন্ত্রীরা তাদের উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন ‘অগ্রগতির পরিবর্তে পরিস্থিতির অবনতি এবং অবনতি হচ্ছে বলেও বৈঠকে বলা হয়।
মারসুদি আরও বলেন, ‘আবার সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’ ‘সহিংসতা বন্ধ না করলে এই রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের কোনও অনুকূল পরিস্থিতি থাকবে না।’
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে যে এটি ‘বৈঠকের ফলাফলের দ্বারা তারা প্রভাাবিত হবে না। কারণ বৈঠকে মিয়ানমারের উপস্থিতি ছাড়াই আসিয়ানের অন্য নয় দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা জোর দিয়েছে যে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার আসিয়ানের বিশেষ দূতকে সহযোগিতা করে। জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালানোর পাশাপাশি মানবিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে পাঁচ দফা রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করছে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি ১১ থেকে ১৩ নভেম্বর আসিয়ানের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে অনুষ্ঠিত হলো। আসিয়ানের শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনায় থাকবে মিয়ানমার সংকট। এই সমস্যাটি গ্রুপের ঐক্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আশিয়ান সদস্যরা ঐতিহ্যগতভাবে একে অপরের সমালোচনা করা এড়িয়ে চলে। তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সহিংসতাকে ব্যাপকভাবে দেখা হয়। একটি ভূ-রাজনৈতিক এবং মানবিক জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় গোষ্ঠীটির দুর্বলতা প্রকাশ করে যা তাদের সকলকে প্রভাবিত করতে পারে।
ক্রমবর্ধমান শরণার্থী মিয়ানমার ছেড়ে পুরো অঞ্চল জুড়ে আশ্রয় খুঁজছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্রুপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে আনুমানিক সাত লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে গেছে। সংস্থাটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নেতাদের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে য, এসব জনগণকে যেন ওইসব দেশের সরকারগুলো মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাধ্য না করে।
এই সংস্থাটির গবেষক শায়না বাউচনার বলছেন, ‘জান্তার সহিংসতা এবং নিপীড়ন থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের রক্ষা করার পরিবর্তে আঞ্চলিক নেতারা মিয়ানমারের শরণার্থী এবং অন্যান্য নাগরিকদের ক্ষতির পথে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য করছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ মিয়ানমারে নির্বাসন ত্বরান্বিত করেছে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে তাদের আশ্রয়ের দাবিগুলো অবজ্ঞা করে গত এপ্রিল থেকে দুই হাজার জনেরও বেশি লোককে ফিরিয়ে দিয়েছে। থাই কর্তৃপক্ষ আশ্রয়প্রার্থীদের তাদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা যাচাই না করেই মিয়ানমারের সীমান্তে ফিরিয়ে দিয়েছে।
আসিয়ান গঠিত হয়েছে- ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামকে নিয়ে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
ইউক্রেনে ‘ডার্টি বোম্ব’ বিষয়ে তদন্ত করবে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা
এবার ইউক্রেনে ‘ডার্টি বোম্ব’ বিষয়ে তদন্ত করবে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা। শুক্রবার জাতিসংঘের পারমাণবিক প্রধান রাফায়েল গ্রোসি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের দু’টি স্থানে ডার্টি বোম্ব তৈরির কার্যক্রম চলছে, রাশিয়ার এমন অভিযোগ তদন্তে পরিদর্শক পাঠাচ্ছেন। আশা করছেন যে তারা ‘খুব দ্রুতই একদিনের মধ্যে’ একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।
গ্রোসি বলেন, ইউক্রেনের সরকারের লিখিত অনুরোধের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার পরিদর্শকরা এই সপ্তাহে আইএইএ এর সুরক্ষার অধীনে থাকা দুটি এলাকা পরিদর্শন করবেন।
জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত এই সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে একটি চিঠিতে অভিযোগ করেছেন যে ইউক্রেনের কিয়েভের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের নিউক্লিয়ার রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ভোস্টোচনি মাইনিং অ্যান্ড প্রসেসিং প্ল্যান্ট ‘(প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির) জেলেনস্কির কাছ থেকে এমন ডার্টি বোম্ব তৈরির জন্য সরাসরি আদেশ পেয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, এই তথ্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: পরমাণু আলোচনায় গ্যারান্টি বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সেসময় তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় (রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়) জানিয়েছে একটি ডার্টি বোমার কাজ ‘সমাপ্তির পর্যায়ে রয়েছে’ যা সন্ত্রাসবাদিরা যা তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বিস্ফোরক হিসেবে ব্যবহার করে।
গ্রোসি বলেছেন: ‘এই সপ্তাহের সুরক্ষা পরিদর্শনের উদ্দেশ্য হল সম্ভাব্য অঘোষিত পারমাণবিক ক্রিয়াকলাপ এবং ডার্টি বোম্ব' তৈরির সঙ্গে সম্পর্কিত উপকরণ শনাক্ত করা।’
তিনি বলেন, আইএইএ এক মাস আগে কিয়েভের পারমাণবিক গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছেন। ‘সেখানে কোনও অঘোষিত পারমাণবিক কার্যকলাপ বা উপকরণ পাওয়া যায়নি।’
কিন্তু গ্রোসি বলেছেন যে পরিদর্শকরা একটি ভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে এটি পুনরায় পরিদর্শন করতে যাচ্ছেন।
সাধারণত পরিদর্শকরা পরমাণু উপাদান যেমন-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, প্লুটোনিয়াম ও থোরিয়ামের সন্ধান করেন।
তিনি বলেন, তবে এ ক্ষেত্রে ‘কিছু নির্দিষ্ট আইসোটোপ, সিজিয়াম ও স্ট্রন্টিয়ামের উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং, এটি নিষ্পত্তির জন্য সেখানে জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়া করা হয়েছে কিনা তা নির্ধারণ করতে আমরা একটি ভিন্ন ধরণের কাজ করতে যাচ্ছি।’
গ্রোসি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এসেছিলেন ইউক্রেন সম্পর্কিত পারমাণবিক ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের রুদ্ধদ্বার ব্রিফ করতে। আইএইএ এর আগে তার মাধ্যমে একটি বিবৃতি দেন এবং তিনি কাউন্সিলের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
রাশিয়ার নেবেনজিয়া বলেছেন যে তিনি গ্রোসিকে বলেছিলেন যে ‘তাকে সতর্ক থাকতে হবে’। কারণ দু’টি স্থানই একমাত্র জায়গা নয় যেখানে ‘ডার্টি বোম্ব’ তৈরি করা যেতে পারে।
গ্রোসি বলেন, তিনি একটি পারমাণবিক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা সম্পর্কে ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে: ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি
তিনি আরও বলেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে আইএইএ ইউক্রেনের অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে আরও বিশেষজ্ঞ মোতায়েন করতে চলেছে। এগুলো হলো— রিভনি, খমেলনিটস্কি দক্ষিণ ইউক্রেন ও চেরনোবিল।
এর আগে ১৯৮৬ সালে বিশ্ব সবচেয়ে খারাপ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের পরপরই রাশিয়ান বাহিনী চেরনোবিল দখল করে নেয়, যদিও তারা এপ্রিলের শুরুতে চলে যায়।
অন্যদিকে, ইউক্রেন ‘ডার্টি বোম্ব’ বিস্ফোরণের মস্কোর দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
দেশটির চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনাকারী ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সংস্থা এনারগোঅটম বলেছে, রাশিয়ার সেনারা গত সপ্তাহে দখলকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গোপন নির্মাণ কাজ চালিয়েছে।
এনারগোটম মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে যে অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণকারী রাশিয়ান অফিসাররা প্লান্ট পরিচালনাকারী ইউক্রেনীয় কর্মীদের বা জাতিসংঘের পারমাণবিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার মনিটরদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে না। যাতে রাশিয়ানরা কী করছে তারা তা দেখতে না পারে।
গ্রোসি এক বিবৃতিতে বলেছেন যে জাপোরিঝিয়াতে পারমাণবিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ‘অনিশ্চিত রয়ে গেছে’ এবং প্রকৌশলীরা ‘এই মাসের শুরুতে বারবার বিভ্রাটের পরে প্ল্যান্টের ভঙ্গুর বাহ্যিক বিদ্যুৎ সরবরাহকে স্থিতিশীল করার জন্য কাজ করছেন।
আইএইএ প্রধান বলেছেন, তিনি পরিষ্কারভাবে বলছেন যে এটি ‘পারমাণবিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’
গ্রোসি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে জাপোরিঝিয়াকে ঘিরে একটি সুরক্ষা অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’।
আরও পড়ুন: পরমাণু চুক্তি আলোচনায় ‘লিখিত প্রতিক্রিয়া’ পেশ ইরানের
ফিলিপাইনে বন্যা ও ভূমিধসে ৩১ জনের মৃত্যু
ক্রান্তীয় ঝড় নালগা দক্ষিণ ফিলিপাইনে আঘাত হানার ফলে প্রবল বর্ষণের কারণে হওয়া আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৩১ জন মারা গেছেন এবং অন্তত ৯জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
শুক্রবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
মুষলধারে বৃষ্টি ও ঝড়ের ফলে রাতারাতি আকস্মিক বন্যা শুরু হয়। যার ফলে মিন্দানাও দ্বীপের তিন লাখ মানুষ বাসকারী শহর কোটাবাটো ও এর আশেপাশের এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মুসলিম স্বায়ত্তশাসিত মিন্দানাও এর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাগুইব সিনারিম্বো বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের বেশিরভাগই বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
তিনি বলেন, মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিন্দানাও প্রদেশের তিনটি শহর।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা ও ভূমিধস, নিহত কমপক্ষে ১৯
সিনারিম্বো টেলিফোনে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘রাতারাতি বৃষ্টির পানির পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় এবং নদীগুলো পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি হতাহতের সংখ্যা আর বাড়বে না। তবে এখনও কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে আমরা পৌঁছাতে পারিনি।’
সিনারিম্বো বলেছেন, শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি কমেছে। যার ফলে বেশ কয়েকটি শহরে বন্যা কমতে শুরু করেছে।
সিনারিম্বো আরও বলেছেন মেয়র, গভর্নর ও দুর্যোগ-প্রতিক্রিয়া কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, মিন্দানাওয়ের পার্শ্ববর্তী উপকূলীয় শহর দাতু ওডিন সিনসুয়াত ও দাতু ব্লা সিনসুয়াতে ২৬জন ডুবে মারা যায় এবং বাকি পাঁচজন মাগুইন্দানাওতের উপি শহরে মারা যায়।
সিনারিম্বো বলেন, নিচু গ্রামগুলোতে বন্যার পানি দ্রুত বেড়েছে, কিছু গ্রামবাসী বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। সেনা সৈন্য, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা যেখান থেকে তাদের উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বন্যা ও ভূমিধসে ২১ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
সিনারিম্বো আরও বলেছেন, কোটাবাটো শহরের মতো অনেক এলাকা, যেগুলোতে অনেক বছর ধরে বন্যা হয়নি, সেগুলোও রাতারাতি জলাবদ্ধ হয়ে গেছে।
মিন্দানাওয়ের একটি বন্যা কবলিত শহরের কথা উল্লেখ করে দেশটির দুর্যোগ-প্রতিক্রিয়া কর্মকর্তা নাসরুল্লাহ ইমাম বলেন, ‘উপির একটি এলাকায় বন্যার পানির ওপরে শুধুমাত্র একটি স্কুলের ছাদ দেখা যায়।’
চলতি বছর ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানা ১৬ তম ঝড় নালগাই।
ম্যানিলার প্রাদেশিক আবহাওয়া অফিস বলেছে যে এই ঝড়- বৃষ্টির কারণ গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় ন্যালগে। যা উত্তর ফিলিপাইনের দিকে অগ্রসর হয়েছে।
সিভিল ডিফেন্স অফিসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসকারী স্যাম ডুরান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ন্যালগের কারণে প্রায় ৫ হাজার মানুষকে সুরক্ষিতভাবে ঝড়ের কবল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ফিলিপাইন অ্যাটমোস্ফিয়ারিক, জিওফিজিক্যাল এবং অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলেছে, ন্যালগে (স্থানীয়ভাবে পায়েং নামে পরিচিত) আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তীব্র হতে পারে এবং সম্ভবত বন্যা ও বৃষ্টির কারণে ভূমিধস হতে পারে। এবং সেই সঙ্গে প্রচণ্ড ঘূর্ণি বাতাস বইতে পারে।
ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে প্রতি বছর প্রায় ২০টি টাইফুন ও ঝড় আঘাত হানে। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অফ ফায়ার’-এ অবস্থিত। অর্থাৎ এটি প্রশান্ত মহাসাগরের বেশিরভাগ অংশ বরাবর এমন একটি অঞ্চল, যেখানে অনেক আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং ভূমিকম্প ঘটে। যার ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দেশটি বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগ-প্রবণ দেশ হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ভারতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ৩১ জনের মৃত্যু