বিশ্ব
গুজরাট দাঙ্গা: ১১ দণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষকের মুক্তির বিরুদ্ধে ভারতে বিক্ষোভ
২০০২ সালে ভারতের গুজরাটের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় এক মুসলিম নারীর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১১ আসামির মুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শনিবার শত শত মানুষ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে।
দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেয় এবং গুজরাট সরকারের কাছে এই মুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানায়। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গানও গায় বিক্ষোভকারীরা।
অন্যান্য রাজ্যেও একই ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পড়ুন: নূপুর শর্মার দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
১৫ আগস্ট যখন ভারত স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করে, তখন সাজা স্থগিত করে এই ১১ জনকে মুক্তি দেয়া হয়। ধর্ষণ, হত্যা এবং বেআইনি সমাবেশের জন্য ২০০৮ সালে তারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল।
ভুক্তভোগী, যার বয়স এখন ৪০, তিনিও আদালতের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গুজরাট রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত তাকে অসাড় করেছে এবং ন্যায়বিচারের প্রতি তার বিশ্বাসকে নড়বড়ে করে দিয়েছে।
২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নির্মমভাবে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সময় ওই ভুক্তভোগী গর্ভবতী ছিলেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ছিল এই গুজরাট দাঙ্গা। এই দাঙ্গায় এক হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই মুসলমান ছিল। এই সহিংসতায় ভুগভোগী নারীর তিন বছরের মেয়েসহ পুরো পরিবারও নিহত হয়েছে।
সমাজকর্মী কবিতা কৃষ্ণান বলেন, ‘পুরো দেশের উচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি উত্তর চাওয়া।’
গুজরাটের কর্মকর্তারা, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)ক্ষমতায় রয়েছে, তারা বলেছে যে অপরাধীদের ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। কারণ তারা ১৪ বছরেরও বেশি জেল খেটেছে। ১৯৯২ সালের ক্ষমা নীতির অধীনে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
ফেডারেল সরকার কর্তৃক ২০১৪ সালে গৃহীত নীতির একটি নতুন সংস্করণে ধর্ষণ এবং হত্যাসহ কিছু অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের সাজা মওকুফ ও মুক্তি দেয়ার বিধান বাতিল করা হয়েছে।
এই দাঙ্গার জন্য গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এই দাঙ্গার অনুমতি দিয়েছেন এবং এমনকি উস্কানি দিয়েছেন। কিন্তু মোদি বারবার এ ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ বলে আসছেন। তিনি দাঙ্গায় ভূমিকা রাখার কথা অস্বীকার করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টও বলেছে যে তার বিরুদ্ধে মামলা করার কোনও প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নয়াদিল্লির তরুণ বিক্ষোভকারী আছিয়া কুরেশি জানান, তিনি ভুক্তভোগীর জন্য ন্যায়বিচারের নিশ্চিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মোদি ১৫ আগস্ট ভারতের নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে একটি ভাষণ দিয়েছিলেন এবং একই দিনে তারা ধর্ষকদের মুক্তি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে নিরাপদ?’
আরও পড়ুন: ভারতে মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ৩
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সঙ্গে অন্য কোনো সম্পর্কের তুলনা হয়না: তথ্যমন্ত্রী
পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার
পাকিস্তানে ভারী বর্ষণে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার জনে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার দেশটির কর্মকর্তারা বন্যায় এই মৃতের সংখ্যার পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ আহত ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার কথা জানায়।
দরিদ্র ইসলামিক জাতিটি মারাত্মক বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়ার একদিন পরই নতুন করে মৃত্যুহার বাড়ল।
এই সংকট সরকারকে জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য করেছে।
চরসদ্দার একজন উচ্চ কর্মকর্তা সানিয়া সাফি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রদেশ খায়বার পাখতুনে বন্যায় সোয়াত নদীর পানি নিয়ন্ত্রণের প্রধান
গেটটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় চরসদ্দা ও নওশেরা জেলা প্লাবিত হয়েছে।
দেশটির তথ্যমন্ত্রী মারিয়াম আওরঙ্গজেব বলেন, সিন্ধু, খায়বার পাখতুন ও পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের অনেক জেলায় সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো আক্রান্ত মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অসীম ইফতেখার বলেন, শাহবাজ শরীফের সহযোগিতার আহ্বানের পর জাতিসংঘ বন্যার্তদের জন্য ১৬০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার ও শনিবার পর্যন্ত বন্যায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৪৫ জন। যা এখন দাঁড়িয়েছে ৯৮২ জনে, আহত হয়েছেন আরও ১৪৫৬ জন।
প্রবল বর্ষণ পরবর্তী আকস্মিক বন্যায় সেতু, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় গোটা পাকিস্তানে ফল ও সবজি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ভুল’ করে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ: ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত
পাকিস্তানে মৌসুমী বৃষ্টিতে নিহত ৩৫৭, আহত ৪ শতাধিক
পাকিস্তানে নৌকাডুবিতে ১৯ নারীর মৃত্যু
ফিলিপাইনে ফেরিতে অগ্নিকাণ্ডে ৮০ জনের বেশি মানুষ উদ্ধার
ফিলিপাইনের ম্যানিলার দক্ষিণের একটি বন্দরের কাছে ‘এমভি এশিয়া ফিলিপাইন’ নামের একটি ফেরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ওই ফেরি থেকে যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে ৮০ জনের বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করেছে দেশটির উপকূলরক্ষী কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। তবে এখনও দুজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা যায়, এমভি এশিয়া ফিলিপাইন ৪৯ জন যাত্রী ও ৩৮ জন ক্রু নিয়ে যাত্রা করেছিল।
শনিবার কর্মকর্তারা জানায়, ঝোড়ো বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচায়। দুইজন যাত্রীর খোঁজে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত না দুজন নিখোঁজ আছেন নাকি ইতোমধ্যেই তারা অন্য যাত্রীদের সঙ্গে পাড়ে উঠে এসে কর্মকর্তাদের না জানিয়েই তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ি চলে গেছেন।
উদ্ধারকৃত যাত্রীদের একজন জানান, ফেরিটি ওরিয়েন্টাল মিন্ডোরো প্রদেশের কালাপান শহর থেকে যাত্রা শুরু করে। বাটাঙ্গাস বন্দর থেকে প্রায় এক মাইল দূরে থাকার সময় দ্বিতীয় ডেক থেকে ধোঁয়া বের হয় এবং তারপরে আগুন ধরে যায়।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা
বন্দরের কাছাকাছি চলে আসায় উপকূলরক্ষী কর্মকর্তারা দ্রুত জাহাজ, মোটর ব্যাঙ্কাস ও টাগবোট নিয়ে গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের উদ্ধার করে।
উপকূলরক্ষী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোস্টগার্ড একটি জাহাজ নিয়ে গিয়ে ফেরিটির আগুন নেভাতে সমর্থ হয়। ফেরিটিতে অন্তত ১৬টি গাড়ি ও ট্রাক ছিল।
অপর এক যাত্রী বেনেডিক্ট ফার্নান্দেজ শুক্রবার রাতে ডিজেডএমএম রেডিওকে জানান, ফেরিটি বন্দরের কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রু সদস্যরা একটি ইঞ্জিন চালু ও বন্ধ করার চেষ্টা করার সময় দ্বিতীয় ডেক থেকে ধোঁয়া ও আগুনের শিখা দেখা যায়।
তিনি আরও জানান, তিনি অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে তৃতীয় ডেক থেকে তার দুই সন্তানকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
উপকূলরক্ষীরা বলেছেন, সাধারণত এমন ঘটনা ঘটে যখন ফেরিগুলো নিয়ম অমান্য করে অধিক যাত্রী বহন করে। তবে এই ফেরিটি প্রায় ৪০০ যাত্রী বহন করতে সক্ষম। এখনও তদন্ত চলছে।
ঘন ঘন ঝড়, খারাপভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা নৌযান ও অতিরিক্ত ভিড় প্রভৃতি কারণে ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে প্রায়ই সমুদ্র দুর্ঘটনা ঘটে।
১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে, ফেরি ডোনা পাজ একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে ডুবে যায়। শান্ত সমুদ্রে হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ সামুদ্রিক বিপর্যয় এটি। এ ঘটনায় প্রায় ৪৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে ঝড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৭, নিখোঁজ ১১০
ফিলিপাইনে টাইফুন ‘রাই’য়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ২০৮
এফবিআই: ম্যাগাজিন ও অন্যান্য নথির সঙ্গে ‘টপ সিক্রেট’ নথি মিশিয়ে রেখেছিল ট্রাম্প
চলতি বছরের শুরুর দিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডা এস্টেট থেকে উদ্ধার করা ১৫টি বাক্সের মধ্যে ১৪টি শ্রেণীবদ্ধ নথি রয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলো ‘টপ সিক্রেট’ নথি বিভিন্ন সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও ব্যক্তিগত চিঠিপত্রের সঙ্গে মিশিয়ে রাখা হয়েছিল। দেশটির বিচার বিভাগের অনুরোধের প্রেক্ষিতে শুক্রবার প্রকাশিত এফবিআই হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ট্রাম্পের মার-এ-লাগো এস্টেটে অভিযান চালিয়ে এসব নথি উদ্ধারের দাবি করে আমেরিকার এই গোয়েন্দা সংস্থা।
৩২-পৃষ্ঠার হলফনামা সাক্ষী ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ও ‘চলমান তদন্তের অখণ্ডতা’ রক্ষা করার জন্য ব্যাপকভাবে সংশোধন করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে কীভাবে শীর্ষ গোপনীয় সরকারি নথিগুলো এলামেলো করে রাখা হয়েছিল এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের কয়েক মাসব্যাপী অনুরোধ সত্ত্বেও ট্রাম্প সেগুলো হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়।
এর ফলে ২০২৪ সালে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভিত্তি স্থাপনের আগেই ট্রাম্প সম্ভবত নতুন আইনি বিপদের মুখোমুখি হতে পারেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন ক্যাপিটল ভবনে হামলায় দায়ী ট্রাম্প
একজন এফবিআই এজেন্ট হলফনামার প্রথম পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘সরকার অননুমোদিত জায়গায় শ্রেণীবদ্ধ তথ্যের বেআইনিভাবে স্থানান্তর ও সংরক্ষণ এবং বেআইনিভাবে সেগুলো গোপন করা বা সরকারী রেকর্ড অপসারণের বিষয়ে একটি ফৌজদারি তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে।’
যদিও ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে জোর দিয়ে বলে আসছেন, নথিগুলিতে ‘গোপন’ কিছু নেই।
হলফনামায় গত ৮ আগস্ট মার-এ-লাগোতে অভিযানে উদ্ধার হওয়া ১১ সেটের শ্রেণীবদ্ধ রেকর্ডের বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। বরং এর পরিবর্তে পৃথক ১৫টি বাক্সের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যা ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানুয়ারিতে ট্রাম্পের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছিল। আর্কাইভস বিষয়টি বিচার বিভাগে পাঠিয়েছে।
হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, এই ১৫টি বাক্সে পাওয়া অত্যন্ত সংবেদনশীল উপাদানগুলোর কারণে মার-এ-লাগোতে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন ছিল।
হলফনামায় বলা হয়েছে, শ্রেণীবিন্যাস চিহ্ন সহ ১৮৪টি নথির মধ্যে ২৫টি ‘টপ সিক্রেট’ স্তরের।
আর্কাইভের একটি চিঠির বরাত দিয়ে হলফনামায় বলা হয়, এই শ্রেণীবদ্ধ নথিগুলো কিছু সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও বিবিধ প্রিন্ট-আউট সহ অন্যান্য নথির সঙ্গে মিশিয়ে রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাতিলে ফের বাইডেনের স্বাক্ষর
ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার শুরু ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে
পারমাণবিক চুক্তি সম্মেলনে চূড়ান্ত নথিতে রাশিয়ার বাধা
পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি বা অ-প্রফ্লফ্রেশন চুক্তি (এনপিটি) রিভিউ’ নিয়ে জাতিসংঘের চার সপ্তাহব্যাপী পর্যালোচনার চূড়ান্ত নথিতে বাধা দেয় রাশিয়া। কেননা এই নথিতে রুশ সেনাদের ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্রের সামরিক দখলের বিষয়ে সমালোচনা করা হয়। যার কারণে বড় ধরনের পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা ছিল।
শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপসারণ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপপরিচালক আইগর ভিশনেভেৎস্কি ৫০ বছরের এনপিটি চুক্তির পর্যালোচনামূলক চূড়ান্ত বৈঠকে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এই নথির ক্ষেত্রে কোনো ঐকমত্য নেই।’
এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি দেশের কাছে তিনি জোর দাবি করেছিলেন যে, নানা অসংগতিতে জর্জরিত ৩৬ পৃষ্ঠার ওই চূড়ান্ত খসড়া নথিতে যেন সম্মতি না দেয়া হয়।
নথিটিতে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ ও সেসব অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য ১৯১টি রাষ্ট্রের অনুমোদন প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ: ইউক্রেনে রেকর্ড মানবিক সহায়তা সংকটের মুখে জাতিসংঘ
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত ও সম্মেলনের সভাপতি গুস্তাভো জ্লাউভিনেন বলেন, চূড়ান্ত নথিটিতে বিভিন্ন মতামতের সমন্বয় করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে এবং এতে অংশ নেয়া দেশগুলো এর মাধ্যমে একটি ‘ইতিবাচক ফলাফল’ প্রত্যাশা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব এমন এক মুহূর্তে আছে যেখানে আমাদের পৃথিবী ক্রমবর্ধমান সংঘাতে জর্জরিত এবং সবচেয়ে উদ্বেগজনক হচ্ছে অকল্পনীয় পারমাণবিক যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা।
কিন্তু ভিশনেভেৎস্কির বক্তব্য পেশ করার পর জ্লাউভিনেন সম্মেলনের প্রতিনিধিদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি যা দেখছি, তাতে সম্মেলনটি চুক্তি বাস্তবায়নের অবস্থায় নেই।’
এনপিটি চুক্তির পর্যালোচনা সম্মেলন প্রতি পাঁচ বছর পর পর হওয়ার কথা থাকলেও এবার কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ সভা দেরিতে শুরু হয়েছে। নথির ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে দেশগুলোর দ্বিতীয় ব্যর্থ চেষ্টা এটি।
এর আগে ২০১৫ সালের পর্যালোচনা সম্মেলনটিও ব্যর্থ হয়েছিল। গণবিধ্বংসী অস্ত্রমুক্ত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠা নিয়ে গুরুতর মতপার্থক্যের কারণে সেসময়ের চুক্তি হয়নি।
সে মতপার্থক্যগুলো এখনও দূর হয়নি, তবে আলোচনা চলমান।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও দ. কোরিয়ার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সংগৃহীত খসড়া নথি অনুযায়ী একটি পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুতরাং,বলা যায় এ বছর এটি নিয়ে বড় কোনো মতপার্থক্য হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ইস্যুটি সম্মেলনের গতিপথ বদলে দিয়েছে। কেননা এই আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্টের সতর্কবার্তার কথা উল্লেখ করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেসময়জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া একটি ‘পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ’ দেশ এবং তাদের কার্যক্রমে যেকোনো হস্তক্ষেপের ফলে ‘এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বিশ্ব যা আগে কখনও দেখেনি।’
যদিও পরবর্তীতে পুতিন তার বক্তব্য থেকে সরে এস বলেন, ‘পারমাণবিক যুদ্ধ জয় করা সম্ভব না এবং এই যুদ্ধ করা উচিত নয়।’
২ আগস্ট সম্মেলনে একজন জ্যৈষ্ঠ রুশ কর্মকর্তা পুতিনের এই বক্তব্যটি পুনরায় ব্যক্ত করেন।
কিন্তু পুতিনের প্রাথমিক হুমকি ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্র দখল নতুন করে বিশ্বব্যাপী আরেকটি পারমাণবিক জরুরি অবস্থার আশঙ্কা সৃষ্টি করে।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে জাতিসংঘের মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন, বাইডেন প্রশাসন একটি সর্বসম্মত চূড়ান্ত নথি চাইছিল যা পারমাণবিক চুক্তিকে শক্তিশালী করবে এবং স্বীকার করবে যে রাশিয়ার যুদ্ধ ও তাদের ইউক্রেনে দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড গুরুতরভাবে চুক্তিটির অবমূল্যায়ন করেছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া ওই কাউন্সিলের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, চূড়ান্ত নথির কাজে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার বদলে রাশিয়াকে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টের খসড়া চূড়ান্ত নথিতে চারটি রেফারেন্স রয়েছে, যেখানে রাশিয়া ও ইউক্রেনকে একে অপরকে গোলাগুলির জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
এ কথা বলে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে সামরিক অভিযানের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে।
খসড়াটি ইউক্রেনের পারমাণবিক স্থাপনা, বিশেষ করে জাপোরিঝিয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনজুড়ে সামরিক স্থাপনায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ছাড়াল
বিশ্বের বিভিন্ন অংশে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ছাড়াল।
বৈশ্বিক ডাটা অনুযায়ী, শনিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ১৬৫ জনে ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬০৪ জন।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৭০ হাজার সাত জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ১০ লাখ ৬৮ হাজার ৮৪৩ জন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৬০ কোটি ৪১ লাখ ছাড়াল
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট চার কোটি ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৬ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৬ জনে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজন মারা গেছেন। এই সময়ে নতুন ১৯৬ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৩২১ জন এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ১০ হাজার ৯৪৪ জনে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ৭২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৬০ কোটি ৪১ লাখ ছাড়াল
এই সময় শনাক্তের হার চার দশমিক ১৫ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২৭৮ জন। এই নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৪ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ২২ শতাংশ।
কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করলেন গোলাম নবি আজাদ
ভারতের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ গোলাম নবি আজাদ। তার এই পদত্যাগ প্রধান বিরোধী দলটির জন্য একটি বড় ধাক্কা।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) পাঁচ পৃষ্ঠার পদত্যাগ পত্র দলটির অন্তবর্তী প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী বরারবর লেখেন তিনি।
আজাদ গান্ধী পুত্র রাহুলকে ‘শিশুসুলভ’, ‘চকচকে অপরিপক্ক’ এবং দলকে পরিচালনায় ‘অনভিজ্ঞ মানসিক রোগী’ বলে আক্রমণ করেছেন।
২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়ের জন্য রাহুলকে দায়ী করে ৭৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক দাবি করেন, ‘দল এখন এমন জায়গায়, ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।’
সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও চরমভাবে একটি ‘দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ ধারণায়’ চলছিলেন, যার মাধ্যমে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধন্ত নেয়া হতো ‘রাহুল গান্ধীর মাধ্যমে কিংবা তার খারাপ নিরাপত্তারক্ষী কিংবা সহকারী ব্যক্তিদের দ্বারা।’
বিগত তিন বছরে দলটির অনেক নেতা চলে যাওয়ার পর দলটি যখন অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি তখন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে, সেসময়ই আকস্মিক বের হয়ে গেলেন আজাদ।
জম্মু-কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন আজাদ। এছাড়া তিনি ২০০৫ সালের ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মহমোহন সিং-এর সংসদীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ২০২২ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণ’ খেতাবপ্রাপ্ত হন।
আরও পড়ুন: আবারও তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেত্রী মমতা
রাহুলের বিকল্প না পেয়ে সোনিয়ার কাঁধেই কংগ্রেসের ভার
করোনা জটিলতায় হাসপাতালে কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী
কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে সোমালিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মসূচি চালু
সোমালিয়ায় কোভিড-১৯-এর ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়া রোধে বৃহস্পতিবার নতুন একটি প্রকল্প চালু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সোমালিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি মামুনুর রহমান মালিক বলেন, প্রকল্পটি চলমান সমন্বয়হীনতার শূন্যতা পূরণ, পর্যবেক্ষণ, টিকাদান, কোভিড-১৯ এর কার্যক্রমে সহযোগিতা এবং দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে মহামারী থেকে উদ্ধারে আরো অধিক পরিমাণ ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা।
মোগাদিসুতে এক বিবৃতিতে মালিক বলেন, সোমালিয়ার রাজধানীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতা ও অংশগ্রহণে দেশটির সরকার ঊর্ধ্বগতির কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধ করতে পদক্ষেপ নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ভাইরাসটির পুনরুত্থান রোধ করবে। এটি অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী অত্যাবশ্যকীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোতে মহামারীর বিরূপ প্রভাবও কমিয়ে দেবে। এরমধ্যে শিশুদের নিয়মিত টিকাদান, যা ইতোমধ্যে গত দু’বছর ধরে উল্লেখযোগ্যহারে করা হয়েছে।’
পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৬৪ লাখ ৭৩ হাজার ছাড়াল
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বুধবার পর্যন্ত সোমালিয়ায় ১ হাজার ৩৫১ জনের মৃত্যু ও ২৭ হাজার ১৩৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটির রোগ পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি এখনও দুর্বল ও ভঙ্গুর, সুসংগঠিত নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বর্তমানে সোমালিয়ার মাত্র ৬২ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা সতর্কতার মাধ্যমে দেয়া হয়। দেশটির মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ কোভিড-১৯ পূর্ণ টিকার আওতায় এসেছে, টিকার আওতায় না আসা আরও অনেক মানুষ উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মালিক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ –এর ধরণ বিস্তার রোধ, মৃত্যু হ্রাস এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অসুস্থতা কমাতে কাজ করবে।
তিনি বলেন, এটি সরকার ও ফেডারেল রাজ্যের সদস্যদের সহযোগিতা ও তদারকিতে আবিষ্কার ও গবেষণাসহ সমস্যা চিহ্নিতকরণ, পরীক্ষাগারের নিশ্চয়তা এবং পারস্পরিক যোগাযোগ শনাক্ত, তথ্যের অগ্রগতি ও আদান প্রদান করা হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একটি কার্যকর ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ কোভিড-১৯ দ্বারা ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ মৃত্যু থেকে জীবন বাঁচানো, রোগের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করবে।
সোমালিয়ার ভঙ্গুর স্বাস্থ্যখাত দুর্বল মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া রোধে ও প্রশমনে সংগ্রাম করছে। বিশেষ করে সেসকল দুর্গম এলাকায় যেখানে ৪৭ শতাংশ মানুষ বসবাস করে, যেখানে রোগ শনাক্ত করা দুর্বল ও অপূর্ণ।
জাতিসংঘের সংস্থাটি বলছে, যেভাবে প্রতিবেদন করা হচ্ছে তাতে দেশের কোভিড-১৯ মহামারী ও রোগ বিস্তারের সত্যিকার সংখ্যা ও পরিধি হয়তো তুলে ধরে না।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৬০ কোটি ৪১ লাখ ছাড়াল
ভবিষ্যতে বিপজ্জনক তাপপ্রবাহ ৩ গুণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস
একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তন আরও খারাপ পর্যায়ে পৌছানোয় ‘বিপজ্জনক তাপ’ হিসেবে বিবেচিত তাপপ্রবাহ আগামী কয়েক দশকে সারাবিশ্বে অন্তত তিনগুণ বেশি আঘাত হানবে।
সম্প্রতি কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর মধ্য-অক্ষাংশে এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে। বর্তমানে গ্রীষ্মকালের কোনো কোনো সময় এখানকার তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ১০৩ ডিগ্রি (৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশিতে পৌঁছায়।
গবেষণার লেখক বলেছেন, ২১০০ সালের মধ্যে এই অসহনীয় তাপপ্রবাহের প্রভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মতো জায়গাগুলোতে গ্রীষ্মকাল দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ১২৪ ডিগ্রি (৫১ সেলসিয়াস) ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে মনে করা হয়। বর্তমানে এটি খুব কমই ঘটে। এই শতাব্দীর শেষ দিকে ভারতের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলগুলোতে এই ধরনের তাপপ্রবাহ প্রতিবছর এক থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
হার্ভার্ডের জলবায়ু বিজ্ঞানী ও এই গবেষণার লেখক লুকাস জেপেটেলো বলেছেন, ‘তাই এটি এক ধরণের ভীতিকর বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর ফলে কয়েক বিলিয়ন মানুষ খুব নিয়মিতভাবে অত্যন্ত বিপজ্জনক মাত্রার তাপের সংস্পর্শে আসতে চলেছে।’
জেপেটেলো ও তার সহকর্মীরা উচ্চ তাপের দুটি ভিন্ন স্তরের সম্ভাব্যতা দেখার জন্য ১ হাজার টিরও বেশি কম্পিউটার সিমুলেশন ব্যবহার করেছেন। মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী তারা ১০৩ ডিগ্রি (৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ১২৪ ডিগ্রি (৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর ওপরে তাপ সূচককে বিপজ্জনক এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
তারা ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রতি বছর কতবার এই ধরনের তাপপ্রবাহ ঘটেছিল তার সঙ্গে ২০৫০ ও ২১০০ সালের মধ্যে কতবার এটা ঘটবে তার তুলনা করেছেন।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, মধ্য-অক্ষাংশে ১০৩-ডিগ্রি তাপ তিন থেকে দশগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে তাপপ্রবাহ কম হওয়ার এবং খুব কম হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র পাঁচ শতাংশ।
সমীক্ষা অনুসারে, সম্ভবত ২১০০ সালের মধ্যে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ‘প্রতি সাধারণ বছরের বেশিরভাগ দিনে’ ১০৩-ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকবে।
গবেষণায় দেখা যায়, শিকাগো ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মাত্র চারবার ১০ ডিগ্রী তাপ সূচকে পৌঁছায়।
কিন্তু শতাব্দীর শেষ নাগাদ শিকাগোতে বছরে ১১ বার সেই তাপদাহ ঘটেছে।
জেপেপেটেলো বলেছেন, তাপপ্রবাহ হল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, পানির ঘাটতি ও সামগ্রিক বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তনের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের নতুন চারটি লক্ষণের মধ্যে একটি।
তিনি ২০২১ সালে ওয়াশিংটন রাজ্যের উষ্ণায়নের সময় অনেক গবেষণা করেছেন। যে তাপদাহ বহু বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ যাতে প্রাণ হারায়।
উডওয়েল ক্লাইমেট রিসার্চ সেন্টারের জলবায়ু বিজ্ঞানী জেনিফার ফ্রান্সিস বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে এই গবেষণায় দেখানো ভয়ঙ্কর ভবিষ্যদ্বাণীগুলো বিশ্বাসযোগ্য।’
আরও পড়ুন:জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান
তিনি বলেন, ‘গত দুটি গ্রীষ্ম আমাদের ইউরোপ, চীন, উত্তর-পশ্চিম উত্তর আমেরিকা, ভারত, দক্ষিণ-মধ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মধ্য সাইবেরিয়া এবং এমনকি নিউ ইংল্যান্ডে প্রাণঘাতী তাপপ্রবাহ সহ ভবিষ্যতের তাপদাহের জন্য একটি ইঙ্গিত দিয়েছে। গরম অঞ্চলগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। কারণ তাপ সূচকগুলো বিপজ্জনক সীমা ছাড়িয়ে যাবে, যা মানুষ ও বাস্তুতন্ত্রকে সমানভাবে প্রভাবিত করবে। যে অঞ্চলগুলোতে এখন চরম তাপ বিরল, সেখানেও ক্রমবর্ধমান ক্ষতি হবে।’
হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ড. রেনি সালাস বলেছেন, গবেষণাটি তাপ সূচকের ওপর আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাপ সূচক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরকে শীতল করা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে ওঠে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হিট স্ট্রোক হল তাপ অসুস্থতার একটি সম্ভাব্য মারাত্মক রূপ, যা শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনক মাত্রায় বেড়ে গেলে ঘটে।’
আরও পড়ুন:জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান বাংলাদেশ ও আইওএম-এর
এখনই জলবায়ু নিয়ে ভাবুন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কথা শুনুন: ব্যাচেলেট
বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৬০ কোটি ৪১ লাখ ছাড়াল
বিশ্বের বিভিন্ন অংশে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ কোটি ৪১ লাখ ছাড়াল।
বৈশ্বিক ডাটা অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ কোটি ৪১ লাখ ২১ হাজার ৬৪৪ জনে ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ৭৬৪ জন।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার ৬৭৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ১০ লাখ ৬৮ হাজার ১১১ জন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৬৪ লাখ ৭৩ হাজার ছাড়াল
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট চার কোটি ৪৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৬ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৪৮৮ জনে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজন মারা গেছে। এসময়ে নতুন ২৫৮ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৩২০ জন এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ১০ হাজার ৭৪৮ জনে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ হাজার ৯৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একদিনে বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৩,০৩৭, শনাক্ত ৭,০৫,৬৩০
এ সময় শনাক্তের হার চার দশমিক ৩৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২২১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৮০৬ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ২২ শতাংশ।