বিশ্ব
করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৮১ লাখ ছাড়াল
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৮১ লাখ অতিক্রম করেছে।
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৮১ লাখ ৯ হাজার ৯১০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৭ লাখ ৮৬ হাজার ২২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৪৮ লাখ ৭২ হাজার ৮৭৭ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১১ লাখ ৪১ হাজার ২২০ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত চার কোটি ৪৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫০২ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৭ জনে।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে মৃত্যু নেই, শনাক্ত ১৩
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এসময় নতুন করে ১৩ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৭১৬ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ ছাড়াল
টেক্সাসের শপিংমলে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ১, আহত ৩
টেক্সাসের এল পাসো’র পুলিশ বলেছে, বুধবার একটি শপিংমলে বন্দুকধারীর গুলিতে একজন নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
এল পাসো পুলিশের মুখপাত্র সার্জেন্ট রবার্ট গোমেজ জানান, একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অনুমান করার ক্ষেত্রে বর্তমান সময় খুব তাড়াতাড়ি। আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা জানা যায়নি।’
আরও পড়ুন: জেরুজালেমের সিনাগগে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৭
গোমেজ বলেন, পুলিশ বিশ্বাস করে যে ঘটনাস্থল নিরাপদ এবং কর্মকর্তারা এটি যাচাই করার জন্য পুরো শপিংমলটি ঘুরে দেখছেন।
কর্তৃপক্ষ নিকটবর্তী একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে একত্র হওয়ার জন্য কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
এর আগে পুলিশ জানায়, শপিংমলের ফুড কোর্টে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: লস অ্যাঞ্জেলেসে চান্দ্র নববর্ষ উৎসবের কাছে বন্দুকধারীর হামলা, নিহত ১০
পানামায় বাস দুর্ঘটনায় ৩৯ অভিবাসী নিহত
পানামার পশ্চিমাঞ্চলে একটি যাত্রীবাহী বাস পাহাড় থেকে ছিটকে পড়লে অন্তত ৩৯ জন অভিবাসী নিহত ও প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবারের এই দুর্ঘটনায় কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয়তার বিষয়ে কথা বলেননি। তবে অভিবাসীরা কলম্বিয়া থেকে দারিয়েন গ্যাপ অতিক্রম করেছে।
পানামা সরকার সাধারণত দারিয়েন সীমান্ত অতিক্রমকারী অভিবাসীদের পানামার ওপারে কোস্টারিকা সীমান্তের কাছে একটি শিবিরে স্থানান্তরিত করে। অভিবাসীরা বাসের টিকিটের জন্য অর্থ প্রদান করে এবং বাসগুলো কেবল অভিবাসীদের জন্য। যেখানে সাধারণত দু'জন চালক থাকে, পাশাপাশি ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন সার্ভিসের কর্মীরাও।
পানামার ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন সার্ভিসের পরিচালক সামিরা গোজাইন বলেন যে দেখে মনে হচ্ছে বাসচালক গুয়ালাকার একটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রবেশদ্বার অতিক্রম করেছিলেন এবং যখন তিনি মহাসড়কে ফিরে যাওয়ার জন্য গাড়ি ঘুরানোর চেষ্টা করেন, তখন বাসটি অন্য একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পাহাড় থেকে ছিটকে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবে ৩৪ জনের মৃত্যু
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মাত্র কয়েকশ’ গজ দূরে বনাঞ্চলের একটি বাঁকে একটি ভাঙা গার্ডরেল (রেলিং) রয়েছে। বাসটি ৬৬ জন অভিবাসীকে নিয়ে লস প্লেনস আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিল।
অ্যাম্বুলেন্স আহতদের ডেভিডের নিকটতম হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রেসিডেন্ট লরেন্টিনো কর্টিজো এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘এই সংবাদটি পানামা ও এই অঞ্চলের জন্য দুঃখজনক।’
অন্তত এক দশকের মধ্যে পানামাতে অভিবাসীদের নিয়ে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা দিয়ে অভিবাসীদের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় বিপজ্জনক ক্রসিংটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
আরও পড়ুন: সীমান্ত টহল: টেক্সাসের রিও গ্র্যান্ডে ৮ অভিবাসীর লাশ উদ্ধার
কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি ৩ শিক্ষার্থী নিহত, আহত ১
কানাডার ডান্ডাস স্ট্রিট ওয়েস্টের ৪২৭ নম্বর মহাসড়কের দক্ষিণমুখী র্যাম্পে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে ও অপর একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার রাতের দুর্ঘটনা সম্পর্কে টুইট বার্তায় অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িতে থাকা চারজনকেই শনাক্ত করা হয়েছে। তারা বাংলাদেশ থেকে স্টাডি পারমিট নিয়ে টরন্টোতে বসবাস করছিলেন।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনায় ২০ বছর বয়সী এক নারী ও পুরুষ এবং ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়। চালকের আসনে থাকা আহত ২১ বছর বয়সীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন: প্রশিক্ষণের সময় বরিশাল ক্যাডেট কলেজ শিক্ষার্থী নিহত
কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসি বলেছে যে উক্ত চারজনের পরিবারকে ইতোমধ্যেই জানানো হয়েছে।
টরন্টো পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের ওই এলাকায় ডাকা হয় এবং বলা হয় যে একটি গাড়ি উল্টে গিয়ে তাতে আগুন ধরে যায়।
টরন্টো ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন নেভাতে ও আটকা পড়াদের উদ্ধার করতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
প্যারামেডিকেল টিম বলেছে, দুজনকে ঘটনাস্থলে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং আরও দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ নিশ্চিত করে যে তৃতীয় ব্যক্তিও মারা গেছে।
সড়কটি খুলে দেয়া হলেও এ ঘটনায় অনুসন্ধান চলছে বলে জানায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: কেমব্রিজে বাংলাদেশি-আমেরিকান শিক্ষার্থী নিহত: বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত, আহত ১
তুরস্কে ভূমিকম্পের ৮ দিন পর আরও জীবিত মানুষ উদ্ধার
গত সপ্তাহে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা মানুষদের উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
মঙ্গলবার অলৌকিকভাবে জীবিত আরও একজনের সন্ধান পায় উদ্ধারকর্মীরা।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় সাত দশমিক আট এবং সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পে ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার পেরিয়ে গেছে। এবং উদ্ধারকর্মীদের চলমান অনুসন্ধান কার্যক্রমে আরও লাশ খুঁজে পাওয়ায় সংখ্যাটি নিশ্চিতভাবেই বৃদ্ধি পাবে।
তুর্কি টেলিভিশন মঙ্গলবারও উদ্ধারকাজ সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন জীবিতদের খোঁজার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
আদিয়ামান প্রদেশে ১৮ বছর বয়সী মুহাম্মাদ ক্যাফার সেটিনের কাছে উদ্ধারকারীরা পৌঁছেছিল। একটি বিপজ্জনক ভবন থেকে উদ্ধার চেষ্টা করার আগে চিকিৎসকরা তাকে আইভি দিয়ে তরল খাবার দিয়েছিলেন। উদ্ধারকারীরা কাজ করার সময় ভবনটি আরও ভেঙে পড়েছিল।
তার চাচা বললেন, ‘আমরা খুব খুশি,’ চিকিৎসকরা তাকে একটি স্ট্রেচারে অক্সিজেন মাস্কসহ ঘাড়ের বন্ধনী বেঁধে রেখেছিলেন এবং ১৯৯ ঘন্টা পর তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন; ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে কেন্দ্রীয় কাহরামানমারাসে ধ্বংস হওয়া একটি ভবন থেকে প্রায় ১৯৮ ঘন্টা পরে মঙ্গলবার অন্য দু'জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
হাবের্তুর্ক টেলিভিশন জানিয়েছে, ১৭ বছর বয়সী মুহাম্মাদ এনেস নামে এক কিশোরকে একটি গরম কম্বলে মুড়িয়ে স্ট্রেচারে করে একটি অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। কয়েক ডজন উদ্ধারকারী ঘটনাস্থলে কাজ করছিল এবং তুর্কি সৈন্যরা তাদের উদ্ধারের পরে জড়িয়ে ধরে হাততালি দিয়েছিল।
উদ্ধারকারীরা তখন অন্যদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার জন্য শান্ত থাকতে বলে এবং চিৎকার করে বলেছিল ‘কেউ কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছে?’
উদ্ধারকৃতদের স্বাস্থ্যের অবস্থা স্পষ্ট নয়।
হাতায় প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের সামনে অপেক্ষা করার সময় অত্যন্ত শোকাহত সেনগুল আবালিওগ্লু দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, তিনি তার বৃদ্ধ বোন এবং চার ভাগ্নেকে হারান। ‘মৃত বা জীবিত এটা কোন ব্যাপার না, আমরা কেবল আমাদের লাশ চাই যাতে তাদের অন্তত একটি কবর থাকে এবং আমরা তাদের কবর দিই।’
ভূমিকম্পে লক্ষ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য এবং সরঞ্জাম সরবরাহ জরুরি বলে সোমবার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। এরপর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তুরস্ক থেকে দেশটির বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমে দু’টি নতুন ক্রসিং পয়েন্ট খুলতে সম্মত হয়েছেন।
বাব আল-সালাম এবং আল রাইয়ের ক্রসিংগুলো প্রথমত তিন মাস সময়ের জন্য খোলা হবে। অদ্যাবধি জাতিসংঘকে কেবলমাত্র বাব আল-হাওয়াতে একটি একক ক্রসিংয়ের মাধ্যমে ইদলিব অঞ্চলে সহায়তা সরবরাহ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে ভূমিকম্পের পর থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আরও সাহায্য এবং ভারী সরঞ্জাম পাওয়ার জন্য জাতিসংঘের তীব্র চাপ রয়েছে। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের অন্যান্য জীবিত স্বজনদের উদ্ধারের উপায় নেই এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে ৩৫ টন খাদ্য নিয়ে প্রথম সৌদি ত্রাণবাহী একটি বিমান সরকার নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সৌদি আরব তুরস্ক এবং সিরিয়াকে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য করার ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবারের আগে, সৌদি বিমানগুলো তুরস্কে অবতরণ করেছে। সৌদি ট্রাকগুলো বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত পিছিয়ে পড়া উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় কিছু সহায়তাও সরবরাহ করেছে।
জর্ডান, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি আরব দেশ সরকার নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ায় আরও বেশ সাহায্য বোঝাই বিমান পাঠিয়েছে। এছাড়া আলজেরিয়া, ইরাক, ওমান, তিউনিসিয়া, সুদান এবং লিবিয়া রাজধানী দামেস্কে সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় জানিয়েছেন, সোমবার গভীর রাতে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল কাহরামানমারাস এবং আদিয়ামানসহ হাতায় প্রদেশে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বাকি সাতটি প্রদেশে উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
ভূমিকম্পে তুরস্কের ১০টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে প্রায় এক কোটি ৩৫ লাখ মানুষ বাস করে। পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার একটি বিশাল এলাকায়ও লক্ষাধিক মানুষ বাস করে।
ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরাও বিধ্বস্ত শহরগুলোর মধ্যে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। তারা অনেক ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে বাইরে ঘুমাচ্ছে। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ পানির ব্যবস্থা কাজ করছে না। এবং সিস্টেমের ক্ষতি দূষণের ঝুঁকি বাড়ায়। তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন যে পানি সঞ্চালন ব্যবস্থার কয়েক ডজন পয়েন্ট থেকে নেয়া নমুনাগুলো ‘মাইক্রোবায়োলজিক্যাল পরীক্ষায় অনিরাপদ’ দেখা যাওয়ায় মৌলিক চাহিদাগুলো অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে চলেছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আরও একজনকে জীবিত উদ্ধার করল বাংলাদেশ দল, ৯ জনের লাশ পুনরুদ্ধার
পরিবেশ ও নগরায়ন মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রায় ৪১ হাজার ৫০০ এর বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে বা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। ওই ভবনগুলোর নিচে লাশ রয়েছে এবং নিখোঁজের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।
তুরস্কের অনেকেই বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণকে দায়ী করেন এবং কর্তৃপক্ষ ধসে পড়া ভবনের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারদের শনাক্ত করা অব্যাহত রেখেছে।
তুরস্ক যে ভবন নির্মাণ আইন চালু করেছে তা ভূমিকম্প-ইঞ্জিনিয়ারিং মান নিশ্চিত করে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কোডগুলো খুব কমই প্রয়োগ করা হয়।
সোমবার পর্যন্ত তুরস্কে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৬৪৩ জনে। কর্মকর্তারা প্রতিক্রিয়ার প্রথম সপ্তাহ থেকে মৃত্যুর সংখ্যার আপডেটের পুনরাবৃত্তির হার হ্রাস করেছে। এখন দিনে একবার বা দুবার বড় সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করছে।
উদ্ধারকারী দল হোয়াইট হেলমেট’র তথ্যানুসারে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ১৬৬ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া দামেস্কে সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এক হাজার ৪১৪ জন মারা গেছে। সিরিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৫৮০ জনে।
মঙ্গলবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় বেঁচে যাওয়া হাজারো মানুষ
মোদির তথ্যচিত্র প্রকাশের পর বিবিসির দিল্লি অফিসে তল্লাশি
নয়া দিল্লিতে বিবিসি’র কার্যালয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে ভারতের আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয় বলে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে(এপি) জানিয়েছে বিবিসি’র তিনজন সম্প্রচারকর্মী।
২০০২ সালে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা মূল্যায়ন করে এমন একটি বিতর্কিত তথ্যচিত্র প্রকাশ করার কয়েক সপ্তাহ পরে তল্লাশি অভিযানটি চালানো হলো।
নাম পরিচয় গোপন রেখে কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানিয়েছে, ট্যাক্স বিভাগের আভিযানিক দলগুলো বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বাই অফিসে অনুসন্ধান চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: গুজরাট দাঙ্গা: ১১ দণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষকের মুক্তির বিরুদ্ধে ভারতে বিক্ষোভ
ভারত গত মাসে ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ দুই-অংশের ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ করেছে এবং কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান প্রদর্শন বন্ধ করতে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে এর ক্লিপগুলোকে সীমাবদ্ধ করতে একটি পদক্ষেপ নেয়। সমালোচক এবং রাজনৈতিক বিরোধীরা এই পদক্ষেপকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডকুমেন্টারিটিতে বস্তুনিষ্ঠতার অভাব থাকার কথা উল্লেখ করে ‘অসম্মানিত আখ্যানকে বিশেষভাবে তুলে ধরার জন্য ডিজাইন করা একটি প্রোপাগান্ডার অংশ’ বলে অভিহিত করেছে।
বিবিসি এক বিবৃতিতে বলেছে যে ডকুমেন্টারিটি নিয়ে ‘কঠোরভাবে গবেষণা করা হয়েছে’ এবং এতে বিভিন্ন কণ্ঠ ও মতামত জড়িত।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ভারত সরকারকে সিরিজে উত্থাপিত বিষয়গুলোর উত্তর দেয়ার অধিকারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম- এতে তারা প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেছে।’
আরও পড়ুন: দিল্লির দাঙ্গায় পুড়িয়ে দেয়া মসজিদে জুমার নামাজ আদায়
আরও পড়ুন: বাংলাসহ ১০ ভাষায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করছে বিবিসি
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বন্দুক হামলায় নিহত ৩
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সোমবার রাতে বন্দুকধারীর গুলিতে তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। হামলা চালানোর পর হামলাকারী নিজেকে গুলি করেছে।
পুলিশ জানায়, প্রথমে বার্কি হল নামে একটি একাডেমিক ভবনে এবং পরে এমএসইউ ইউনিয়নে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পাস পুলিশ বিভাগের অন্তর্বর্তীকালীন উপ-প্রধান ক্রিস রোজম্যান বলেন, ‘ঘটনাটি সত্যিই একটি দুঃস্বপ্ন।’
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ার ২টি ফার্মে বন্দুক হামলায় নিহত ৭
ডেট্রয়েট থেকে প্রায় ৯০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইস্ট ল্যানসিং ক্যাম্পাসে শত শত পুলিশ কর্মকর্তা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে খুঁজছেন। পুলিশ ব্যক্তিটির বর্ণনা দিতে গিয়ে জানায়, খাটো প্রকৃতির কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিটির গায়ে জিন্সের জ্যাকেট, পায়ে লাল জুতা ও মাথায় বল ক্যাপ দেখা গেছে।
রোজম্যান বলেন, ওই ব্যক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা আছে কি না তা এখনো জানা যায়নি। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
রোজম্যান বলেন, 'এমন অনেক কিছুই আছে যা আমরা এই মুহুর্তে জানি না।
বার্কিতে দুইজন এবং এমএসইউ ইউনিয়নে একজন নিহত হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাত ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ পুলিশ জানায়, বার্কি ও আশেপাশের আবাসিক হলগুলো সুরক্ষিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ায় ডান্স ক্লাবে বন্দুক হামলাকারীর আত্মহত্যা
করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ ছাড়াল
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ অতিক্রম করেছে।
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ ২৪ হাজার ৪০৭ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১১ লাখ ৪০ হাজার ২০৯ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত চার কোটি ৪৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৩ জনে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৯
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় নতুন করে ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮৮ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৪ লাখ ছাড়াল
দেশের আকাশসীমায় ১০টিরও বেশি মার্কিন বেলুন উড়েছে: চীন
চীন বলেছে, গত এক বছরে ১০টিরও বেশি মার্কিন হাই-অ্যালটিটিউড বেলুন বিনা অনুমতিতে তাদের দেশের আকাশসীমায় উড়েছে। বেইজিং বিশ্বজুড়ে নজরদারি বেলুনগুলোর একটি বহর পরিচালনা করছে বলে ওয়াশিংটনের এমন অভিযোগের পরই চীন এ দাবি করলো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গুলি করে একটি সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুন ধ্বংস করার পরে চীনের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হলো।
সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুনটি আলাস্কা থেকে দক্ষিণ ক্যারোলিনা অতিক্রম করেছিল। এ ঘটনার মধ্যদিয়ে কয়েক দশকের মধ্যে এই দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।
সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন অভিযুক্ত মার্কিন বেলুনগুলো সম্পর্কে জানালেও, এগুলো সম্পর্কে কোনও বিশদ বিবরণ দেননি। এমনকি কীভাবে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছিল বা এগুলোর সঙ্গে মার্কিন সরকারের বা সামরিক বাহিনীর কোনও সম্পর্ক ছিল কিনা তাও জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: বেলুন ইস্যুতে ব্লিঙ্কেনের চীন সফর বাতিল
ওয়াং তার প্রাত্যাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মার্কিন বেলুনগুলো অন্য দেশের আকাশসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করা সাধারণ ব্যাপার।’
তিনি বলেন, গত বছর থেকে, মার্কিন গোয়েন্দা বেলুনগুলো চীনের কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ১০ বারের বেশি অবৈধভাবে চীনের আকাশসীমার ওপর দিয়ে উড়েছে।’
ওয়াং বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ‘প্রথমে নিজের কর্মকাণ্ডের বিচার করা এবং সংঘাত সৃষ্টি না করে মনোভাব পরিবর্তন করা।’
চীন বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংস করা বেলুনটি ছিল আবহাওয়া গবেষণার জন্য তৈরি একটি মনুষ্যবিহীন বিমান।
তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এটিকে গুলি করে অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়া দেখানোর অভিযোগ করেছে এবং এই প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে।
ঘটনার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তার বেইজিং সফর বাতিল করেছেন।
এ ঘটনার আগে অনেকেই আশা করেছিলেন যে তাইওয়ান, বাণিজ্য, মানবাধিকার এবং বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা পদক্ষেপের হুমকির বিষয়ে সম্পর্কের তীব্র অবনতি এবার কিছুটা কমবে।
এছাড়াও, সোমবার ফিলিপাইন একটি চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজকে একটি সামরিক-গ্রেড লেজার দিয়ে ফিলিপাইনের উপকূলরক্ষী জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা এবং দক্ষিণ চীন সাগরে কয়েকজন ফিলিপিনো ক্রুকে সাময়িকভাবে অন্ধ করে দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে।
ফিলিপাইন এটিকে ম্যানিলার সার্বভৌম অধিকারের ‘স্পষ্ট’ লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
ওয়াং বলেন, ফিলিপাইনের একটি উপকূলরক্ষী জাহাজ ৬ ফেব্রুয়ারি অনুমতি ছাড়াই চীনা জলসীমায় অনুপ্রবেশ করেছিল এবং চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজগুলো ‘পেশাদারভাবে ও সংযমের সঙ্গে’ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
চীন মৌখিকভাবে তার আশেপাশের সমস্ত কৌশলগত জলপথের মালিকানা দাবি করছে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে তার সামুদ্রিক বাহিনী ও দ্বীপ ফাঁড়ি গড়ে তুলছে।
ওয়াং বলেছেন, ‘চীন ও ফিলিপাইন এই বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখছে।’
তবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ঘটনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
অন্যদিকে, উত্তেজনা আরও বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে রবিবার একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান লেক হুরনের ওপর একটি ‘অজ্ঞাত বস্তু’কে লক্ষ্য করে গুলি করে।’
গত বৃহস্পতিবার বাইডেন প্রশাসন আমেরিকান ইউ-২ গুপ্তচর বিমানের ছবির কথা উদ্ধৃত করে বলে, তাদের ধ্বংস করা চীনা বেলুনটি ৪০টিরও বেশি দেশকে লক্ষ্যবস্তু করে গোয়েন্দা সংকেত শনাক্ত এবং তথ্য সংগ্রহ করছিল।
বেলুনকাণ্ডের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি চীনা সংস্থার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইউএস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসও সর্বসম্মতভাবে চীনকে মার্কিন সার্বভৌমত্ব ‘লঙ্ঘন’ এবং ‘গোয়েন্দা অভিযান সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রতারিত করার চেষ্টা করা’র জন্য অভিযুক্ত করেছে।
চীনের মুখপাত্র ওয়াং এই অভিযোগকে ফের প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘বস্তুগুলোকে গুলি করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘন ঘন উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিশ্রম ও অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো।’
আরও পড়ুন: চীনের বেলুন গোয়েন্দা সংকেত সংগ্রহ করতে সক্ষম: যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র সমুদ্রের উপর চীনা বেলুন ধ্বংস করল, ধ্বংসাবশেষ পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় বেঁচে যাওয়া হাজারো মানুষ
এক সপ্তাহ আগে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েক হাজার মানুষ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
যদিও অনেককে বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, তবে অনেকেই এখনও নিজেদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িতেই অবস্থান করছেন এবং নিখোঁজ প্রিয়জনের সন্ধান অব্যাহত রেখেছেন।
উদ্ধারকারীরা প্রথম ভূমিকম্পের ১৭৪ ঘন্টা পরে একজন নারীকে জীবিত খুঁজে পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়াল
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এ ভূমিকম্পে ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার অশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার ইস্তাম্বুলের আন্তাকিয়া শহরের একটি ধসে পড়া ভবন থেকে উদ্ধারকারীরা নাইদে উমায় নামে এক নারীকে উদ্ধার করেন।
এর আগে, গাজিয়ান্তেপ প্রদেশের ইসলাহিয়ে শহরে একটি পাঁচতলা ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে ৪০ বছর বয়সী এক নারীকে এবং আদিয়ামান প্রদেশের বেসনিতে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে উদ্ধার করে।
ভূমিকম্প আঘাত হানার এক সপ্তাহ পরেও, অনেক মানুষ এখনও আশ্রয়হীন অবস্থায় রাস্তায় দিন কাটাচ্ছে। কিছু জীবিত ব্যক্তি এখনও তাদের প্রিয়জনের লাশ উদ্ধারের জন্য ধসে পড়া ভবনের সামনে অপেক্ষা করছেন।
মালটায়া প্রদেশের পোলাট গ্রামে ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) দূর পর্যন্ত প্রায় কোনও বাড়িই অবশিষ্ট নেই।
বাসিন্দারা ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ি থেকে রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জেহরা কুরুকাফা বলেছেন, পর্যাপ্ত তাঁবু আসেনি, তাই যা পাওয়া গেছে তাই-ই চারটি পরিবার ভাগ করে নিতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চারটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে মাটিতে ঘুমাই, কারণ পর্যাপ্ত তাঁবু নেই।’
আদিয়ামান শহরে ২৫ বছর বয়সী মুসা বোজকার্ট তাকে এবং অন্যদের পশ্চিম তুরস্কের আফিয়ন শহরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন।
বোজকার্ট বলেন, ‘আমরা চলে যাচ্ছি, কিন্তু আমরা সেখানে যাওয়ার পর আমাদের কী হবে তা আমরা জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কোন লক্ষ্য নেই। আমার বাবা-চাচা কেউ বেঁচে নেই। আমার আর কি বাকি আছে।’
আদিয়ামানের কৃষক ফুয়াত একিনসি (৫৫) ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও তার বাড়ি ছেড়ে যেতে অনিচ্ছুক।
তিনি বলেন, তার অন্য কোথাও বসবাস করার উপায় নেই এবং তার খেতগুলো দেখাশোনা করা দরকার।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আরও একজনকে জীবিত উদ্ধার করল বাংলাদেশ দল, ৯ জনের লাশ পুনরুদ্ধার
তিনি বলেন, ‘যাদের সামর্থ্য আছে তারা চলে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা দরিদ্র। সরকার সেখানে গিয়ে এক-দুই মাস বাস করতে বলছে। আমি কিভাবে আমার বাড়ি ছেড়ে যাব? আমার খেত এখানে, এটা আমার বাড়ি, আমি কিভাবে এটা রেখে যাব?’
তুরস্ক জুড়ে স্বেচ্ছাসেবকরা কয়েক লাখ জীবিত মানুষকে সাহায্য করার জন্য একত্র হয়েছে। যার মধ্যে একদল স্বেচ্ছাসেবক শেফ এবং রেস্তোরাঁর মালিকরা ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন- মটরশুটি, চাল ও মসুর ডালের স্যুপ শহরের কেন্দ্রস্থলে আশ্রয় নেয়া মানুষদের জন্য পরিবেশন করছেন।
যদিও স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।
তবে মেক্সিকো ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এডুয়ার্ডো রেইনোসো অ্যাঙ্গুলো বলেছেন, জীবিত মানুষ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা ‘এখন খুব কম।’
রেইনোসো বলেছেন, ধ্বংসাবশেষে আটকে থাকা লোকদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা পাঁচ দিন পরে কমে যায় এবং ৯ দিন পরে তা শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসে, যদিও ব্যতিক্রম কিছু ঘটতেও পারে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জরুরি পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক ডেভিড আলেকজান্ডারও রেইনোসোর সঙ্গে একমত হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে জীবিত উদ্ধারের আশা ‘প্রায় শেষ’।
আলেকজান্ডার বলেন, অনেক বিল্ডিং এতটাই বাজেভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে সেগুলো খুব ছোট ছোট টুকরোয় ভেঙে পড়েছিল, খুব কম জায়গাই মানুষের বেঁচে থাকার মতো যথেষ্ট জায়গা ছিল।
তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে বলতে গেলে আমরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খোলা জায়গা খুঁজে পাই, যেখানে আমরা সুড়ঙ্গ করতে পারি। তবে তুরস্ক ও সিরিয়ার এই ছবিগুলোর মধ্যে কয়েকটির দিকে তাকালে আমরা এমন কোনো জায়গা দেখতে পাইনি।’
শীতকালীন তাপমাত্রা দুর্ঘটনাকবলিত মানুষদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও কমিয়ে দিয়েছে। এই অঞ্চলের তাপমাত্রা রাতারাতি মাইনাস ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এ নেমে গেছে।
ভার্জিনিয়া টেকের ইমার্জেন্সি মেডিসিনের অধ্যাপক ড. স্টেফানি লারেউ বলেছেন, ‘হাইপোথার্মিয়া থেকে শরীরকে বাঁচিয়ে রাখার সাধারণ উপায় হল কাঁপুনি এবং কাঁপুনির জন্য প্রচুর ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। ‘সুতরাং জীবিত কেউ যদি এতদিন খাবার না খেয়ে থাকে এবং এতটা শীতল তাপমাত্রার সংস্পর্শে থাকে, তবে তারা হয়তো হাইপোথার্মিয়াতে আরও দ্রুত মারা যাচ্ছে।’
তুরস্কের বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের জন্য অনেকেই ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ কাঠামোকে দায়ী করেছেন এবং কর্তৃপক্ষ ধসে পড়া ভবনের সঙ্গে জড়িত কন্ট্রাক্টরদের শনাক্ত করা শুরু করেছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ভূমিকম্প অসহনশীল ভবন নির্মাণের জন্য কমপক্ষে ১৩১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে তুরস্কে ভবন নির্মাণের জন্য নির্মাণ কোড থাকলেও কোডগুলো খুব কমই মানা হয়।
সিরিয়ায় জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাহায্য প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে।
রবিবার তুর্কি-সিরিয়ান সীমান্ত পরিদর্শন করে গ্রিফিথস বলেন, সিরিয়ানরা ‘আন্তর্জাতিক সাহায্যের সন্ধান করছে, যা আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার জনগণকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার এবং আমাদের দায়িত্ব হল এই ব্যর্থতা যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করা।’
হোয়াইট হেলমেট উদ্ধারকারী গ্রুপের মতে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ১৬৬ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
সিরিয়ায় সামগ্রিক মৃত্যুর সংখ্যা শনিবার তিন হাজার ৫৫৩ জনে পৌঁছেছে। যদিও দেশের সরকার-নিয়ন্ত্রিত অংশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ৩৮৭ জনের বেশি আপডেট করা হয়নি। রবিবার পর্যন্ত তুরস্কের মৃতের সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৬৪৩।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়েসাস সতর্ক করে বলেছেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিপর্যয় আরও বাড়বে। যুদ্ধ, করোনা, কলেরা, অর্থনৈতিক পতন এবং এখন ভূমিকম্পের জটিল সঙ্কট এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’