������������������
যেভাবে ‘ওস্তাদ’ হয়ে ওঠেন রশিদ খান
উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের ইতিহাস যাকে ছাড়া অপূর্ণ থেকে যাবে তিনি ওস্তাদ রশিদ খান। তার জাদুকরী কণ্ঠ মাতিয়েছে অজস্র ভক্তদের। সেই মানুষটি ৫৫ বছর বয়সে ৯ জানুয়ারি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন।
সংগীত জগতে উস্তাদ রাশিদ খানের অবদান কতখানি, তা নতুন করে বলে দিতে হয় না। সকলের অন্তরেই যেন তার কণ্ঠ আর গানের বাস। পদ্মশ্রী, বঙ্গ ভূষণ, সংগীত নাটক অ্যাকাডেমির মতো পুরস্কার রয়েছে তার ঝুলিতে। এমন এক শিল্পীর অকালে প্রয়ানে স্তব্ধ সংগীতপ্রেমীরা।
যার নামের আগে ‘ওস্তাদ’ শব্দটি জড়িয়ে আছেন তিনিই শৈশবে গান খুব একটা পছন্দ যে করতেন এমনটা নয়। তবে তার মাঝে যে সংগীতের জ্ঞান তীব্র রয়েছে সেটি বুঝতে পারেন চাচা গোলাম মুস্তফা খান।
১১ বছর বয়সে প্রথম সংগীতানুষ্ঠান করেন রশীদ খান। আর তার কয়েক বছর পরে যুবক রাশিদ খানকে বিরাট ‘সার্টিফিকেট’ দিয়েছিলেন পণ্ডিত ভীমসেন যোশী। গান শুনে মন্তব্য করেন ‘ভারতীয় কণ্ঠ সংগীতের ভবিষ্যত উজ্জ্বল’।
উত্তর প্রদেশে জন্ম হলেও রশিদ খান এক সময় বাংলার মানুষ হয়ে যান। চলতি শতাব্দীর প্রথম দশক থেকেই তিনি ভারতীয় রাগ সংগীতের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন। বিলম্বিত খেয়ালে বিশেষভাবে পারদর্শী ছিলেন এই শিল্পী। শাস্ত্রীয় সংগীতের গায়ক হলেও রশিদ খান ছিলেন আশ্চর্য ব্যতিক্রম, ধ্রুপদী সংগীতের ‘শিক্ষিত’ শ্রোতাদের বাইরেও বেড়ে ওঠে তার ভক্তকুল।
উত্তরপ্রদেশের সম্ভ্রান্ত সংগীতিক পরিবার জন্ম হলেও রশিদ খান আসলে ছিলেন বাঙালি। এই দাবি করতেই পারেন বাংলার মানুষ। কারণ রাগ সংগীতের আশ্চর্য আলোকিত গায়নে রবীন্দ্রনাথের গানকেও নতুন মাত্রা দিয়ে গিয়েছেন তিনি। অন্যতম উদাহরণ হয়ে থাকবে নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে যৌথ অ্যালবাম ‘যাত্রা’। যেখানে রবীন্দ্রসংগীত ও হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় বন্দিশের আশ্চর্য মেলবন্ধন ঘটেছিল।
শাস্ত্রীয় সংগীতে রশিদ খানের ভিত্তি হলেও বলিউড ও টালিউডের অনেক সিনেমায় গান গেয়েছেন। প্রতিটি গান শ্রোতাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে অনন্তকাল।
শাস্ত্রীয় সংগীতে অসামান্য অবদান রাখায় একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন রাশিদ খান। ২০০৬ সালে তিনি পদ্মশ্রী, পাশাপাশি ‘সংগীত নাটক আকাদেমি’ পুরস্কারে ভূষিত হন।
এছাড়াও পেয়েছেন বঙ্গভূষণ পুরস্কার, গ্লোবাল ইন্ডিয়ান মিউজিক অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস, মহাসংগীত সম্মান পুরস্কার আর ২০২২ সালে রশিদ খান ভূষিত হন শিল্পকলার ক্ষেত্রে ভারত সরকার কর্তৃক ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ।
বলিউড স্টাইল আইকন হৃত্বিক রোশনের যে সিনেমাগুলো ২০২৪ সালে মুক্তির অপেক্ষায়
২০০০ সালে বাবা রাকেশ রোশনের মুভি ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’ দিয়ে শুরু। এই অভিষেকেই নিজের জাত চিনিয়েছেন অভিনয় ও নাচে সমান পারদর্শী হৃত্বিক রোশন।
ক্রিশ মুভি সিরিজের পাশাপাশি ২০০৬-এর ধুম ২-এর মাধ্যমে সিনেমাপ্রেমীদের পাশাপাশি মন জয় করেছিলেন সমালোচকদেরও। ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের মধ্যে তিনি একজন। তার সর্বশেষ ব্লকবাস্টার ২০১৯-এর ‘ওয়ার’ তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ আয়কারী মুভি।
১৯৭৪ সালের ১০ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া এই হার্টথ্রব হিরো এবার তার জীবনের অর্ধশতক বসন্তে পদার্পণ করতে চলেছেন। এই উপলক্ষে চলুন, ২০২৪ সালে হৃত্বিক রোশনের নতুন মুভিগুলোর ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
টুয়েলভথ ফেইলের মতো অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী ১০ সিনেমা
বর্তমান সময়ের সব থেকে সাড়া জাগানো ‘টুয়েলভথ ফেইল’ চলচ্চিত্রে মুগ্ধ দর্শকরা খুঁজে পাচ্ছেন থ্রি ইডিয়টের আমেজ। আর তা হবেই বা না কেন! প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে নির্মিত ছবিটির প্রযোজক হিসেবে থাকায় নির্মাতা বিধু বিনোদ চোপড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন রাজকুমার হিরানীর কাজ।
তাই ভিন্ন পটভূমি নিয়ে কাজ করলেও তার পরতে পরতে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই যুক্ত হয়েছে উদ্দিষ্ট দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া উপাদানগুলো।
উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ক্যারিয়ারের প্রত্যাশায় যোগ্যতা নিরূপণের পরীক্ষাগুলোর শিক্ষার্থীরা খুঁজে পাচ্ছেন নিজেদের জীবনের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু ভাবাবেগগুলোর পরিধি শুধুমাত্র এই জনগোষ্ঠীতেই সীমাবদ্ধ নয়। পাহাড়সম বাধা থাকলেও যারা নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল থাকে এমন প্রতিটি প্রাণের জন্য টুয়েলভথ ফেইল একটি অনুপ্রেরণা।
চলুন, জেনে নেই টুয়েলভথ ফেইলের মতো আরও ১০টি সিনেমার কথা, যেগুলো দেখিয়েছে শত কষ্টের মাঝেও বাধা ডিঙিয়ে স্বপ্নের পথে হাটার গল্প।
যে ১০টি চলচ্চিত্র টুয়েলভথ ফেইলের মতো লক্ষ্যে অবিচল থাকার প্রেরণা জোগাবে
কোডা/ইংরেজি/১৩ আগস্ট, ২০২১
বধির অভিভাবক বা বাবা-মায়ের সন্তানকে সিওডিএ বা কোডা বলা হয়ে থাকে। এমনই এক পরিবারের কাহিনী নিয়ে এই টিনেজ মুভিটি বানিয়েছেন সিয়ান হেডার। এটি মূলত ২০১৪ সালের ফরাসি-বেলজিয়ান ফিল্ম ‘লা ফ্যামিলে বেলিয়া’র ইংরেজি ভাষার রিমেক। অস্কার জয়ী কমেডি ড্রামাটিতে রুবি রসি চরিত্রে অসামান্য অবদান রাখার মধ্যে দিয়ে লাইমলাইটে আসেন অভিনেত্রী এমিলিয়া জোন্স।
আরও পড়ুন: একইদিনে বাংলাদেশের হলেও ‘ডাঙ্কি’?
চলচ্চিত্রে বাবা-মা ও দুই ভাইবোনের পরিবারে রুবি একমাত্র শ্রবণশক্তি সম্পন্ন সদস্য। পুরো পরিবারটি টিকে আছে মাছ ধরার ব্যবসার উপর। বাকি সবাই বধির হওয়াতে এক্ষেত্রে রুবিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হয়। আর এরই মধ্য দিয়ে সে এগোতে থাকে তার বহু দিনের লালিত গায়িকা হওয়ার স্বপ্নকে সত্য করার পথে।
দাসভি/হিন্দি/৭ এপ্রিল, ২০২২
জেলবন্দি রাজনীতিবিদ গঙ্গারাম চৌধুরীকে মূর্খ বলে হেয় করেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার জ্যোতি দেশাল। সকল দুর্নীতির ঊর্ধ্বে হওয়া জামিনের কোনো ব্যবস্থা করতে না পারলেও অহংকারী মন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষিত হয়ে দেখিয়ে দেবেন। অন্যদিকে, এই সুযোগে তার স্ত্রী চক্রান্ত করছে সরকার প্রধান হওয়ার।
এমনই মজার গল্প নিয়ে দাসভি সিনেমার মাধ্যমে পরিচালনা জগতে প্রবেশ করলেন তুষার জালোটা। এখানে সেই অশিক্ষিত রাজনীতিবিদের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অভিষেক বচ্চন। আর তারই হাই স্কুল ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার যাত্রা নিয়ে নির্মিত এই সামাজিক কমেডি ছবিটি। কঠোর পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় ছিলেন ইয়ামি। পুলিশ ও বন্দির সম্পর্কটা তিতো দিয়ে শুরু হলেও ক্রমেই তা পরিণত হয় পারস্পরিক শ্রদ্ধায়।
দ্য সুইমার্স/ইংরেজি/১১ নভেম্বর, ২০২২
এটি একটি জীবন-নির্ভর স্পোর্টস ড্রামা যার পরিচালনা করার পাশাপাশি জ্যাক থর্নের সঙ্গে যুগ্মভাবে চিত্রনাট্য লিখেছেন স্যালি এল হোসাইনি। চলচ্চিত্রটির গল্প সাঁতারু হতে চাওয়া দুই টিনেজ বোনকে নিয়ে, যাদের একমাত্র গন্তব্য ২০১৬-এর রিও অলিম্পিক। কিন্তু সিরিয়ার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত প্রেক্ষাপট তাদের এই যাত্রাকে পরিণত করে দুঃস্বপ্নে। যন্ত্রণাদায়ক পথে উদ্বাস্তুতে পরিণত হওয়া দুই বোনের একমাত্র অবলম্বন হৃদয় ভরা আশা আর সাঁতারের দক্ষতা।
চলচ্চিত্রের প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করা ন্যাথালি ইসা এবং মানাল ইসা বাস্তব জীবনেই দুই বোন। বিভিন্ন চড়াই উৎড়াইয়ের ঘটনার মাঝে তাদের পরিচয় হয় এক সুইমিং কোচ স্ভেনের সঙ্গে, যে চরিত্রে ছিলেন ম্যাথিয়াস শোয়েগফার।
মুল কাহিনী সুইমিং কেন্দ্রিক হলেও এখানে দৃশ্যায়িত হয়েছে কি করে হাজারও স্বপ্নবাজ মানুষ উন্নত জীবনের খোঁজে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে কষ্টকর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়।
আরও পড়ুন: 'প্যারাসাইট' অভিনেতা লি সান-কিউন মারা গেছেন
দ্য ফেবলম্যানস/ইংরেজি/১১ নভেম্বর, ২০২২
যারা চলচ্চিত্র নির্মাণে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের কাছে স্টিভেন স্পিলবার্গ সবচেয়ে অনুসরণীয় একজন ব্যক্তিত্ব। পুরোপুরি না হলেও দ্যা ফেবলম্যান্স স্পিলবার্গের আধা-আত্মজীবনীমূলক সিনেমা বলা যেতে পারে, যা নির্মিত হয়েছে তার কৈশোরের বছরগুলোর আলোকে।
টিনেজ ড্রামাটি পরিচালনার পাশাপাশি টনি কুশনারের সঙ্গে রচনা ও প্রযোজনা করেছেন স্পিলবার্গ। চলচ্চিত্রটি একটি আধা-আত্মজীবনীমূলক গল্প যা স্পিলবার্গের কৈশোর এবং একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে প্রথম বছরগুলির উপর ভিত্তি করে।
মুভিতে নাম চরিত্র স্যামি ফেবেলম্যান একজন প্রতিশ্রুতিশীল চলচ্চিত্র নির্মাতা। আর এই দক্ষতা তাকে তার পরিবার ও চারপাশের মানুষদের সম্পর্কে রহস্য উদঘাটনে সাহায্য করে।
বায়োপিকটিতে স্যামির চরিত্রে অভিনয় করেছেন গ্যাব্রিয়েল লাবেল। সহশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন মিশেল উইলিয়ামস, পল ড্যানো, স্যাথ রোজেন এবং জুড হির্শ।
ডেভোশন/ ইংরেজি/২৩ নভেম্বর, ২০২২
এই জীবনীমূলক যুদ্ধের চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছে যা অ্যাডাম মাকোসের ২০১৫ সালের বই ‘ডেভোশন: অ্যান এপিক স্টোরি অব হিরোইজম, ফ্রেন্ডশিপ এবং স্যাক্রিফাইস’-এর উপর ভিত্তি করে। প্রেক্ষাপটটি ছিল কোরিয়ান যুদ্ধের সময়কাল। জেসি ব্রাউন এবং টম হাডনার ফাইটার পাইলট মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে মিশনে সফল হওয়ায় মার্কিন বিমান বাহিনীর বিখ্যাত উইংম্যান হয়ে ওঠেন। জেসি ব্রাউন ছিলেন প্রথম নিগ্রো বিমানচালক যিনি মার্কিন বিমান বাহিনীর উইঙ্স অফ গোল্ড খেতাব পেয়েছিলেন।
অ্যাকশন ছবিটি পরিচালনা করেছেন জে.ডি. ডিলার্ড এবং লিখেছেন জ্যাক ক্রেন ও জনাথান স্টুয়ার্ট। মুভিতে ব্রাউন চরিত্রে ছিলেন জনাথান মেজর্স এবং হাডনার চরিত্রে গ্লেন পাওয়েল।
চলচ্চিত্রটিতে ব্রাউনের অর্জনের পাশাপাশি গুরুত্ব পেয়েছে তার ও হাডনারের মাঝে বন্ধুত্ব এবং একই সঙ্গে ক্যারিয়ারের ব্যাপারে তাদের বস্তুনিষ্ঠ মতাদর্শগুলো।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ঢালিউডে মুক্তি পাবে যেসব বাংলা সিনেমা
ফুলের মালা দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে: ফেরদৌস
রঙিন থেকে সাদাকালো পোস্টারেও জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে জয়ী হয়ে এমনটা আবারও প্রমাণ দিলেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে প্রায় ৬৩ হাজার ভোট বেশি পেয়ে এই তারকা এগিয়ে ছিলেন।
নিজের এই জয়কে তার প্রতি জনগণের ভালোবাসা বলছেন ফেরদৌস। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তার চোখেও পানি চলে আসে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস
ফেরদৌস বলেন, ‘বাবাকে খুব মিস করছি। আমার শ্বশুর থাকলেও খুব খুশি হতেন। তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। যিনি আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন। কীভাবে মানুষকে ভালোবাসা যায়, তার কাছ থেকে শিখেছি। কীভাবে সাধারণ মানুষ হয়েও অসাধারণভাবে ভালোবাসা যায়, সেটাও জেনেছি। গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখেছি। তাদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করেছি।’
কর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে ফেরদৌস বলেন, ‘এই ফুলের মালা আমার দায়িত্ব আরও বাড়িয়েছে। আমি সেবক হতে চেয়েছিলাম, সেবা করব। মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম সেবার করার, করেছিও। জনগণ মালা পরিয়ে দিয়েছে, এখন নিশ্চিত হয়ে তাদের পাশে দাঁড়াব। আমি নেতা-কর্মীদের প্রতি ভীষণ কৃতজ্ঞ। তারা ছাড়া এ জয় কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না।’
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব: ফেরদৌস
এদিকে জয়ের পরেই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন ফেরদৌস আহমেদ। সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকাল তিনটার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এরপর তিনি তার নির্বাচনি এলাকার পোস্টার অপসারণ করার কথা জানান।
বিজয়ী হয়ে ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার জন্য আমার নির্বাচনী এলাকার সব ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে চাই।’
আরও পড়ুন: ভাষানটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন অভিনেতা ফেরদৌস
অভিনেতা ও প্রযোজক সাজু মুনতাসিরের বিশেষ দিন
দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা সাজু মুনতাসির। এছাড়াও তার অন্যতম পরিচয় একজন প্রযোজক এবং টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সাধারণ সম্পাদক।
সাজু মুনতাসির বর্তমানে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ১৯৫২ ইন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের সিইও। এ ছাড়াও তার মালিকাধীন আরেকটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ডিজিটালিয়ার কাজ নিয়ে ব্যস্ততা চলছে নিয়মিত।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) জনপ্রিয় এই অভিনেতা জন্মদিন। ১৯৭৭ সালে আজকের দিনে পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা ওবায়দুল কবির এবং মা কানিজ নাজনীন আক্তার।
টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসির জীবনের বিশেষ দিনটিতে ভাসছেন শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায়।
সাজু ইউএনবিকে বলেন, ‘এটা সত্যি দারুণ একটি বিষয় যে প্রতিবছর জন্মদিন এলে কাছের মানুষেরা, সহকর্মীরা শুভেচ্ছা দিয়ে সেটি রঙিন করে রাখেন। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সবার কাছে আমি দোয়া চাই যেন সততা নিয়ে একজন প্রযোজক নেতা হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারি। ভালো ভালো নির্মাণ দিয়ে যেন ইন্ডাস্ট্রি ও দর্শকের চাহিদা মেটাতে পারি।’
তিনি ১৯৯৭ সালে র্যাম্প মডেল হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন টিভিসিতে মডেল হিসেবে অভিনয় করেন। তিনি ২০০২ সালে জনপ্রিয় পরিচালক আহমেদ ইউসুফ সাবের পরিচালিত বাংলা নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৫০টিরও বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন।
সাজু মুনতাসির মিডিয়ার সব অঙ্গনেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মডেলিং, অভিনয় থেকে শুরু করে প্রযোজক হিসেবেও তিনি সর্বমহলে অত্যন্ত সমাদৃত।
তিনি কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন নানা পুরস্কার। তার মধ্যে ট্রাব অ্যাওয়ার্ড, চ্যানেল আই ডিজিটাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, সিজেএফবি অ্যাওয়ার্ড অন্যতম। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দুইটি টিভি রিয়েলিটি শো বিনোদন বিচিত্রা ফটোসুন্দরি এবং ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম- দ্যা আলটিমেট ম্যান পাওয়ারড বাই বাংলাদেশ নেভীর বিচারক হিসেবেও নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজ লাগিয়েছেন তিনি।
শিশুদের জন্য বিনোদনমূলক যত বাংলা ইউটিউব কার্টুন চ্যানেল
শুধু বিনোদনের জন্য নয়, শিশুদের ভাষা বিকাশ এবং জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা অর্জনের জন্যও বিশ্বজুড়ে বহুল প্রচলিত একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে কার্টুন। দ্বিমাত্রিক এই চলচ্চিত্রকলার ধারা বাংলা ভাষাতেও খুব একটা নতুন নয়। কিন্তু ইউটিউবে বাংলা কার্টুনের পদচারণা সর্বোচ্চ এক দশক আগে। সেই থেকে বাংলা ভাষার পাশাপাশি শিশুদের স্বাভাবিক ক্রমবিকাশের জন্য বিরাট অবদান রেখে চলেছে এই কন্টেন্টগুলো। আজকের নিবন্ধটি তেমনি কিছু শিশুতোষ ইউটিউব কার্টুন চ্যানেল নিয়ে। চলুন দেখে নেওয়া যাক-শীর্ষস্থানীয় ইউটিউব কিডস বাংলা চ্যানেলগুলো।
বাংলা ভাষায় শিশুদের জন্য মজার কিছু ইউটিউব কার্টুন চ্যানেল
ইনফোবেলস বাংলা
সব বয়সের শিশুদের সাংস্কৃতিক ও নৈতিক মূল্যবোধকে উন্নত করার লক্ষ্যে রীতিমতো এক সৃজনশীল দল গঠন করেছেন কুবের নটরাজন এবং তার স্ত্রী জয়লক্ষ্মী কুবের। ইনফোবেলস বাংলা তাদেরই ব্রেইনচাইল্ড।
বাংলার মানুষের মুখে মুখে খ্যাতি পাওয়া ছড়া ও গানগুলোকে আকর্ষণীয়ভাবে প্রকাশের উদ্দেশ্য নিয়ে ভারতের কর্ণাটকভিত্তিক চ্যানেলটি শুরু হয় ২০১৬ সালের ১৩ জুন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত পুরো কুবের টিম ভিডিও প্রকাশ করেছে মোট ৪০৬টি। ৭ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের সুফল স্বরূপ তারা পেয়েছেন ১৭ কোটি ৪০ লাখ গ্রাহকের এক বিশাল পরিবার। সর্বমোট ৮ দশমকি ৮৫ বিলিয়ন ভিউ পাওয়া ভিডিওগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া মিলেছে লালাজি চরিত্রের গল্পগুলোতে।
বেঙ্গলি ফেয়ারি টেল্স
অনলাইনে কার্টুন গল্পের চিত্তাকর্ষক বিষয়টিকে সবচেয়ে সফলভাবে উপজীব্য করতে পেরেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেলটি। ২০১৬ সালের ৬ জুন থেকে বাংলা ভাষাভাষি নেটিজেনদের কাছে স্বনামধন্য একটি নাম বেঙ্গলি ফেয়ারি টেল্স।
আরো পড়ুন: কড়ক সিং: জয়ার প্রথম হিন্দি সিনেমা আসছে ওটিটির পর্দায়
তারা নামকরা সব বিদেশি রূপকথাগুলোর বাংলা ভার্সন নিয়ে তৈরি করেছে ৬৬৬টি ভিডিওর বিশাল এক সংগ্রহশালা। এখানে আছে স্লিপিং বিউটি থেকে শুরু করে আগলি ডাকলিং বা কুৎসিত হাঁসের বাচ্চা, জেলে ও তার স্ত্রী, থাম্বেলিনা, ও সিনডারেলার মতো কল্পকাহিনী।
তাদের মোট গ্রাহক সংখ্যা ৮ কোটি ৬০ লাখ এবং শুরু থেকে এ পর্যন্ত সব ভিডিওতে পাওয়া ভিউ সংখ্যা ৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন।
কিডস টিভি বাংলা-নার্সারি রাইমস
ভারতের কিডস টিভি ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই থেকে তাদের বিনোদন প্রচার সেবা প্রসারিত করেছে বাংলা ভাষাভাষিদের জন্যও। বিশ্ব জোড়া প্রতিটি বাবা-মার মুখে নার্সারি রাইমস মানেই এখন কিডস টিভি বাংলা।
তবে শুধু ছড়া আর গান নয়; মজার মজার কিছু বুদ্ধিবৃত্তিক খেলা নিয়ে ৭৭১টি ভিডিওর সমৃদ্ধ এক রিসোর্চ এই চ্যানেল। দীর্ঘ ৮ বছরের স্ট্রীমিং কার্যক্রমে তাদের অর্জন ১৭ লক্ষাধিক গ্রাহক এবং ৭২২ মিলিয়নের বেশি ভিউ।
ইনরেকো চিলড্রেন
চমকপ্রদ কন্টেন্টের মাধ্যমে বাংলার লোক সাহিত্যের গল্প, ধাঁধা, প্রবাদ-প্রবচন ও গানকে অনবদ্যভাবে তুলে এনেছে এই ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেলটি। ১৩ লাখ ৬০ হাজার সাবস্ক্রাইবারের বিশাল পরিবারের শুরুটা ছিলো ২০১৪ সালের ২১ মে। তারপর থেকে সুদীর্ঘ ৯ বছরে মোট কন্টেন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৪টি। এগুলোর সবকটিতেই গানের কথা লিখেছেন সলিল চৌধুরী এবং কন্ঠ দিয়েছেন অন্তরা চৌধুরী।
আরো পড়ুন: ফের আরটিভিতে সিসিমপুর
এ পর্যন্ত ভিডিওগুলো ভিউ পেয়েছে ৬৫৪ মিলিয়নেরও অধিক এবং এখনও মুগ্ধতা ছড়িয়ে চলেছে প্রতিটি শিশুর মাঝে।
কিডিজ টিভি বাংলা
বাংলাতে বাচ্চাদেরকে বর্ণমালা ও রঙ চেনানোসহ বিভিন্ন ধরনের মজার এনিমেশনের অভিজ্ঞতার জন্য দেখতে হবে কিডিজের কন্টেন্টগুলো। ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেলটি ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে প্রকাশ করে আসছে এমন বিস্ময়কর চিত্রনাট্যগুলো। ১৪৬টি ভিডিওর প্রতিটিতেই বাচ্চাদের জন্য রয়েছে আনন্দ ও চমকের মাধ্যমে যে কোনও কিছু শিখে নেয়ার রসদ।
২ দশমিক ০৩ বিলিয়নের অধিক ভিউ পাওয়া ভিডিওগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে হাম্পটি রেইলগাড়ি চরিত্রটি। চ্যানেলের মোট গ্রাহক সংখ্যা ৫০ লাখ ৭ হাজার।
চুচুটিভি বাংলা
২০১৯ সালের ১ আগস্ট ভারত থেকে চ্যানেলটি তার কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই এর হাস্যরস ও নির্মল আনন্দ নিয়ে বেশ সাড়া পড়ে যায়। সব বয়সের এমনকি বাড়ন্ত বয়সের শিশুদেরও নজর কেড়ে ফেলে খুব কম সময়ের মধ্যেই। ৭০ লাখ ৯৬ হাজার গ্রাহক এবং ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ভিউ সে কথাই সমস্বরে জানান দিচ্ছে। ৪ বছরে তাদের মোট ভিডিও ৩১৮টি। যেগুলো এখনও সুনামের সঙ্গে চ্যানেলের নাম ধরে রেখেছে।
আরো পড়ুন: সিনেমা ২০২৩: আলাচনায় শুধু ঈদের সিনেমা
ভোট দিয়ে উচ্ছ্বসিত তারকারা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে। দেশের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন শোবিজ তারকারা।
রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ৯টা ৪৬ মিনিটে ভোট দেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। ভোট দেওয়ার ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমি ভোট দিয়েছি। আপনি দিয়েছেন কি?’
রাজধানী ধানমন্ডির গভর্মেন্ট হাইস্কুল ভোটকেন্দ্রে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ভোট দিয়েছেন অভিনেত্রী ও শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন। ভোট দিয়ে কালি দেওয়া আঙুলের ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন ‘ভোট দিয়ে আসলাম’।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের সিনেমায় সম্ভাবনাময় উপস্থিতি
মানিকগঞ্জে নিজের নির্বাচনি এলাকায় সকাল ১০টার দিকে ভোট দিয়েছেন সংগীতশিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ। কেন্দ্রে গিয়ে তিনি বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে ভোট প্রদানের ছবি তিনি তার ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
গুলশান মডেল হাই স্কুলে ভোট দিয়েছেন গান বাংলা টেলিভিশনের কর্ণধার তাপস ও তার স্ত্রী মুন্নী। তাপস ভোট দেওয়ার ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘জয় বাংলা’।
অভিনেত্রী তারিন জাহান ভোট দিয়ে হাতের অমোচনীয় কালি প্রদর্শন করা ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমি আমার ভোট দিয়েছি, আপনি?’
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব: ফেরদৌস
তরুণ প্রজন্মের দুই অভিনয়শিল্পী সৌম্য ও দিব্য প্রথমবার ভোট দিলেন।
তাদের মা অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি তার ফেসবুকে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। দুই ছেলের ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘প্রথমবার ভোট। যারা ভোট বর্জন করেছে, তারা তরুণদের আবেগ বর্জন করেছে। আমার ভোট, আমার দেশ, ভালোবাসি বাংলাদেশ।’
আরও পড়ুন: আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিনেমা ‘টুয়েল্ভ্থ ফেইল’ হাজারও সংগ্রামী তরুণের জীবনের গল্প
সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব: ফেরদৌস
রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস।
ঢাকা-১৭ আসনের ভাসানটেক এলাকার ভোটার হওয়ার তিনি রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৪৬ মিনিটে এ কেন্দ্রে ভোট দেন। যদিও তার নির্বাচনি এলাকা ঢাকা-১০।
ভোট দিয়ে গণমাধ্যমে ফেরদৌস বলেন, ‘নৌকার বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। অভিনয়ে যেভাবে শতভাগ দিয়েছি দর্শকদের, সেভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব।’
ফেরদৌসের আসনের ভোটার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভোট দিয়েছেন। একজন প্রার্থী হিসেবে এই ভালো লাগা মুখে বলে প্রকাশ করার মতো নয়। আমি ঢাকা-১৭ আসনের ভোটার। নির্বাচনে আসার শুরু থেকে যেভাবে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি আশা করছি ভোটের রায়ে সেটা বজায় থাকবে।’
আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিনেমা ‘টুয়েল্ভ্থ ফেইল’ হাজারও সংগ্রামী তরুণের জীবনের গল্প
নির্মাণাধীন তেমন একটা প্রতিশ্রুতিশীল না হলেও ২০২৩-এর ২৭ অক্টোবর মুক্তির পর থেকে অভাবনীয় সাড়া পেতে শুরু করে হিন্দি চলচ্চিত্র টুয়েল্ভ্থ ফেইল। বিধু বিনোদ চোপড়া প্রযোজিত, রচিত ও পরিচালিত এই সিনেমার জনপ্রিয়তা সমালোচক ও দর্শকদের নজরে এখন অন্য সব বলিউড চলচ্চিত্র থেকে এগিয়ে।
এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সিনেমাটির আয় এর নির্মাণ খরচের তিন গুণেরও বেশি। স্বাধীন চলচ্চিত্র হিসেবে প্রতিযোগিতার জন্য ইতোমধ্যে অস্কারেও দেওয়া হয়েছে বায়োগ্রাফি ফিল্মটি। নতুন মুখ নিয়ে কীভাবে সিনেমাটি এত আলোড়ন সৃষ্টি করল, চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
টুয়েল্ভ্থ ফেইল-এর কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলো
সত্য কাহিনিনির্ভর ছবিটিতে দর্শকদের ভালোবাসার মধ্যমণি ছিল প্রধান চরিত্র মনজ কুমার শর্মা। যেটিকে অসামান্য দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন উদীয়মান অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসি। তার মাঝেই তরুণ সিনেমাপ্রেমীরা খুঁজে পেয়েছেন জীবিকা ও স্বপ্নের পেছনে ছোটা একজন সংগ্রামী মনজকে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের জাঁতাকলে প্রতিশ্রুতিশীল মেধাবী যুবকদের পিষ্ট হওয়াটা মোটেই নতুন কোনো ঘটনা নয়। বরং আটার মিলে মেশিন ঘরে থেকে পড়াশোনা করার দৃশ্য প্রতিনিধিত্ব করেছে নাম না জানা অনেক কিংবদন্তির।
প্রতিটি ব্যাচেলর জীবনে প্রেরণার মূর্ত প্রতীক হচ্ছে গৌরি ভাইয়া চরিত্রটি, উৎকৃষ্টভাবে যার সুবিচার করেছেন আংশুমান পুষ্কার। পৃথিবীতে উৎসাহ দেওয়া যেসব মানুষ কদাচিৎ মেলে, এই গৌরি ভাইয়া হচ্ছে সেই শ্রেণির। নিজের জীবনে অর্জন বলতে কিছু না থাকলেও কোনো এক বিমূর্ত লক্ষ্যকে বুকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকে এরা। শুধু কী তাই, ‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’ কালীপ্রসন্ন ঘোষের এই বিখ্যাত লাইনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই ‘ছা পোষা’ লোকগুলো। পুরো সিনেমার ট্যাগ লাইন হয়ে আছে এই চরিত্রের ‘রিস্টার্ট’ ফিলোসফি, যা বুলি হয়ে বেড়াচ্ছে টুয়েল্ভ্থ ফেইল ভক্তদের মুখে মুখে।
আরো পড়ুন: ধুম ৪-এ শাহরুখ খান: ঘটনা না কি রটনা?
এরপরেই বলতে হয় প্রিতম পান্ডের কথা, যেটি এমন কিছু বন্ধুকে চিত্রায়িত করেছে যারা না থাকলে গল্পটা হয়ত শূন্যতেই রয়ে যেত। প্রতিটি সফলতার পেছনে এরকম কিছু মানুষের ভূমিকা থাকে। যাদের ভাগ্য সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় এনে দেয়। এদের কারণেই ইউপিএসসি(ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন)-এর ইউ-এর মানে না জানা গেঁয়ো ভূতটিও এক সময় আইপিএস(ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস) অফিসারে পরিণত হয়। শুধু এই চরিত্রকে চিত্রায়নই নয়, অনন্ত ভি জোশীর ধারা বিবরণীতে জীবন্ত হয়ে ছিল মুভির প্রতিটি মুহূর্ত।
পুরো চিত্রনাট্যে সযত্নে বোনা নকশার মতো প্রতীয়মান হয়েছে শ্রদ্ধা জোশী চরিত্রটি। বাস্তবের শ্রদ্ধাকে যথাযথ মাধুর্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন মেধা শঙ্কর। প্রধান সহ-শিল্পীর এই ভূমিকাটি তাকে প্রথমবারের মতো লাইমলাইটে আসতে সাহায্য করেছে। চরিত্রটির সবচেয়ে বড় দিক হলো- এটি জীবনের একটি পরস্পরবিরোধী দাবিকে উপযুক্ত উপসংহার দিয়েছে। তা হলো- প্রিয় মানুষগুলো কখনও অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার পথে অন্তরায় নয়। বরং উদ্দীষ্ট পথে এগোতে যেয়ে হোঁচট খেলে তাদের কথা ভেবেই আবার উঠে দাঁড়ানোর শক্তি আসে।
সবশেষে ডিএসপি (ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ) দুষ্মন্ত সিংয়ের কথা না বললেই নয়। প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি অভিনীত এই চরিত্রটি সেই সব কারিগরদের কথা বলেছে, যারা অবচেতনে জন্ম দিতে পারে যুগান্তকারী নেতৃত্বের। তার ছোট দুটো শব্দ ‘স্টপ চিটিং’-ই যথেষ্ট ছিল- মনজের মাঝে থাকা সমাজ পাল্টানোর বীজকে মহীরুহে রূপদান করার জন্য।
আরো পড়ুন: ২০২৪ সালে ঢালিউডে মুক্তি পাবে যেসব বাংলা সিনেমা
২০২৪ সালের সিনেমায় সম্ভাবনাময় উপস্থিতি
বাংলা সিনেমার এক নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয় ২০২৩ সালে। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ আরও আড়ম্বরপূর্ণ হবে ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি। সংশ্লিষ্টদের ধারণা অনেকটা এমনই।
শাকিব খানের ৩ সিনেমা, ওয়েব ফিল্মের দৌরাত্ম্য, বিগ বাজেট নিয়ে সিনেমার ঘোষণা- এসবকিছুই ইন্ডাস্ট্রির সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিবে।
কিন্তু সব আলোচনার কেন্দ্র করে যেকজন তারকার নাম উঠে আসে সেগুলো নিতান্ত খুব বেশি এমনটা বলা চলে না।
বাংলা সিনেমায় নতুন মুখের উথান নিয়ে সংকট অনেকদিন ধরেই চলছে। ২০২৩ সালে যে এটি খুব বেশি উতরে গেছে তাও নয়। তবে আশার কথা হচ্ছে- ২০২৪ সালে যাদের নিয়ে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তারা গত বছর বিভিন্ন সময় আলোচনায় ছিলেন।
এবিএম সুমন
বেশ কয়েক বছর ধরে বড়পর্দায় প্রায় নিয়মিত বলা চলে এবিএম সুমনকে। তবে ২০২৩ সালে ‘এমআর নাইন’ দিয়ে তার ক্যারিয়ারের নতুন টার্নিং পয়েন্ট শুরু হয়। আর এর মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিষেক হলো তার। তাই ২০২৪ তার জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জের বছর। একইসঙ্গে সম্ভাবনাও রয়েছে তাকে ঘিরে।
এরই মধ্যে মুক্তির তালিকায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে ওয়েবফিল্ম ‘বুকিং’। মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত এতে সুমন জুটি বেঁধেছেন পরীমণির সঙ্গে। এছাড়াও দীপঙ্কর দীপন পরিচালিত ‘দিগন্তে ফুলের আগুন’ সিনেমায় দেখা যাবে এই নায়ককে।
সৌম্য জ্যোতি
খুব অল্প সময়ে ছোটপর্দায় নজর কেড়েছেন অভিনেতা সৌম্য জ্যোতি। অভিনয়ের মুন্সিয়ানা দিয়ে দর্শকদের মনে তার জায়গা এরই মধ্যে পাকাপোক্ত। ছোটপর্দা বা ওটিটির পাশাপাশি তার ব্যস্ততা এখন বড়পর্দায়।
২০২৩ সালে সেই সম্ভাবনার বীজ তিনি বুনেছেন ‘দুঃসাহসী খোকা’ দিয়ে। এতে তিনি বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেন। যদিও এর আগেই বড়পর্দায় তার অভিষেক হয়। কিন্তু এই সিনেমা দিয়ে প্রথমবার সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যায় সৌম্যকে।
২০২৪ এ সৌম্যর দুটি সিনেমার এখন পর্যন্ত মুক্তির তালিকায় রয়েছে। সেগুলো ‘নকশী কাঁথার জমিন’ ও ‘দাওয়াল’। এর মধ্যে আকরাম খান পরিচালিত ‘নকশী কাঁথার জমিন’ সিনেমাটি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সুনাম কুড়িয়েছে।
অন্যদিকে পিকলু চৌধুরী পরিচালিত ‘দাওয়াল’ সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার কথা চলতি মাসেই। আর এতেও বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৌম্য।
মন্দিরা চক্রবর্তী
ঢালিউডে নায়িকাদের বর্তমান অবস্থা অতিথি পাখির মতো। দুই-একজন ছাড়া সারা বছর সিনেমা নিয়ে ব্যস্ততা তাদের খানিকটা কম। এর মধ্যে নতুন কয়েকজন নায়িকা এলেও তাদের নিয়ে আলোচনাটা একটি গন্ডিতেই থেকে যায়।
তাদের মধ্যে যে নামগুলো কানে প্রায় আসে তাদের একজন মন্দিরা চক্রবর্তী। গত বছর গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’র মধ্যে দিয়ে অভিষেক হয় তার। এ বছর সেটি মুক্তি পাবে। তবে এর আগেই আরিফিন শুভর সঙ্গে ‘নীলচক্র’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে নতুন আলোচনায় এলেন তিনি। দুটি সিনেমাই মুক্তি পাবে ২০২৪ সালে। তবে দেখার বিষয় এই সম্ভাবনা তাকে শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে যায়।
সাদিয়া নাবিলা
‘ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমায় নারী পুলিশ কর্মকর্তা ইরা চরিত্রে অভিনয় করে ২০২৩ সালে বেশ সাড়া জাগিয়েছেন সাদিয়া নাবিলা। যদিও বড়পর্দায় তার অভিষেক আরো আগে। তবে অ্যাকশনধর্মী এই সিনেমায় সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের মেধা ও মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ২০২৪ সালেও নতুন সিনেমা নিয়ে হাজির হবেন এই নায়িকা। যদিও সেটি এখনও অঘোষিত। তবে ঢালিউডে তার যে জনপ্রিয়তা তৈরি ২০২৪ এ নতুন এক সম্ভাবনা রয়েছে তাকে ঘিরে।
সায়মা স্মৃতি
২০২৩ সালে আরিফুর জামান আরিফ পরিচালিত ‘যন্ত্রণা’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হয় সায়মা স্মৃতির। প্রথম সিনেমা দিয়েই নজর কেড়েছেন তিনি। এরপর ব্যস্ততাটা সিনেমাটি নিয়েই। শুধু তাই নয় ২০২৪ সালে এরইমধ্যে নায়িকার একাধিক সিনেমা রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায় সেগুলো হলো ‘জল কিরণ’, ‘জলরং’ এবং ‘সংযোগ’।