জীবনধারা
লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ক্যাটস আইয়ের সঙ্গে টুর্যাগ অ্যাক্টিভের অংশীদারিত্ব
ফিটনেস, ফ্যাশন ও ফ্যাব্রিকেশনের জগতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সমন্বয় ঘটিয়েছে ওয়েভ রাইডার্স লিমিটেডের ব্র্যান্ড টুর্যাগ অ্যাক্টিভ।
সম্প্রতি, ব্র্যান্ডটি ক্যাটস আইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
ওয়েভ রাইডার্সের প্রধান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, এখন থেকে ক্যাটস আইয়ের সবগুলো আউটলেটে সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাবে টুর্যাগ অ্যাক্টিভওয়্যারের বিস্তৃত পণ্যের সমাহার।
আরও পড়ুন: দেশের বাজারে ঊর্মি গ্রুপের নতুন পণ্য ‘টুর্যাগ অ্যাক্টিভ’
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দু’পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন: টুর্যাগ অ্যাক্টিভ প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ফাইয়াজ রহমান এবং ক্যাটস আইয়ের পরিচালক সাদিক কুদ্দুস।
চুক্তি অনুযায়ী, এলিফ্যান্ট রোড, বসুন্ধরা সিটি, গোল্ডেন এইজ (গুলশান), আরএকে টাওয়ার (উত্তরা), আফমি প্লাজা (চট্টগ্রাম), যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুর ১০ এবং বাণিজ্য ভবন শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত ক্যাটস আইয়ের আউটগুলোতে টুর্যাগ অ্যাক্টিভ মেন’স কালেকশন-গো ইজি, পারফর্মার ও ইনটেন্স এবং উইমেন’স কালেকশন ভাইটালিটি, অপ্টিমাম, ফ্রিমুভ ও ফ্লেক্স৩৬০ পাওয়া যাচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ক্যাটস আইয়ের পরিচালক সাদিক কুদ্দুস বলেন, ‘টুর্যাগ অ্যাক্টিভ সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বের ব্যাপারে জানাতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। টুর্যাগের সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নতমানের অ্যাথলেটিক পোশাকের বিস্তৃত পরিসরের পণ্য রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা যে ক্যাটস আই ও টুর্যাগের এই যাত্রা সফলতা অর্জন করবে।’
এ বিষয়ে টুর্যাগ অ্যাক্টিভ প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ফাইয়াজ রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ক্লথিং ব্র্যান্ড ক্যাটস আইয়ের সঙ্গে চুক্তি করা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। সাম্প্রতিক সময়ে মানুষ পোশাকের মাধ্যমে এমন স্টাইল করতে চাচ্ছে, যা একইসঙ্গে তাদের অ্যাক্টিভ হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে, স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক হবে, পাশাপাশি ফ্যাশনেবলও হবে। অ্যাক্টিভওয়্যার এখন শুধুমাত্র লাইফস্টাইল চয়েজই নয়, এটি বৈশ্বিক ফ্যাশনে প্রভাব বিস্তারকারী ভূমিকা রাখছে। আমাদের প্রত্যাশা, টুর্যাগ অ্যাক্টিভ ও ক্যাটস আইয়ের এ অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হবে এবং দেশের ফ্যাশন সচেতন মানুষদের কাছে পৌঁছে যাবে আমাদের পোশাক।’
পারফরমেন্স বৃদ্ধি করবে, স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ও ফ্যাশনেবল পোশাক তৈরির মাধ্যমে অ্যাথলেইজার ও লাইফস্টাইল খাতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রত্যাশী টুর্যাগ অ্যাক্টিভ।
এর ধারাবাহিকতায়, দেশের ফ্যাশন সচেতন মানুষের কাছে বিস্তৃত পণ্যের সমাহার পৌঁছে দেয়ার নিরলস চেষ্টার অংশ হিসেবে ক্যাটস আইয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করলো ব্র্যান্ডটি।
আরও পড়ুন: প্যাকেটজাত আলুর চিপস কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২২: ‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে গুরুত্ব পেয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু প্রায় আড়াইশ’
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ৫২৩ জন।
এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট ২৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৫১৯
আক্রান্তদের মধ্যে ২৭৭ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ২৪৬ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক হাজার ৯২৯জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ১২৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ৮০০ জন রোগী ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৬ হাজার ১৩০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকায় ৩৫ হাজার ৮০৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ২০ হাজার ৩২৫জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৫৩ হাজার ৯৫৪ জন ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন।
এদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৫২৬ জন ঢাকার এবং বাকি ১৯ হাজার ৪২৮ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৪৬২
দেশে ডেঙ্গুতে ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২২১
আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২২: ‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে গুরুত্ব পেয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস কাউন্সিল (বিআইবিসি) ও উইমেনস ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডব্লিউআইসিসিআই) যৌথ উদ্যোগে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২২। ‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে উঠে এসেছে মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক কুসংস্কার, নারীর বর্তমান অবস্থা শিশুদের স্বাস্থ্যসহ দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন বুধবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
উদ্বোধনের দিন সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া, বিআইবিসি’র প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. মালিহা মান্নান আহমেদসহ অনেকে।
আরও পড়ুন: মানসিক রোগ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫% শিক্ষার্থী সচেতন: শাবিপ্রবির গবেষণা
ড. মালিহা মান্নান আহমেদের সঞ্চালনায় ‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে আলোচনা করেন বিডার নির্বাহী পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া, বুশরা আলম, রুনা খান, জাহিদা ফিজ্জা কবির, ড. রুমানা দৌলা, আরিফ মাহমুদ, মৌসুমী ইসলাম।
‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে আলোচনা শুরু হয় ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. বুশরা আলমের বক্তব্য দিয়ে। উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বলতে আমরা শারীরিক অবস্থাকেই সাধারণত বুঝি। কিন্তু আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা কম। সামাজিক কুসংস্কারের কারণে এটাকে আমরা প্রতিনিয়ত লুকাই। তবে করোনার পরবর্তীতে এ নিয়ে খোলামেলা আলোচনার পরিবেশ কিছু তৈরি হয়েছে।’
সমাজে নারীদের অবস্থান প্রসঙ্গে ডা. বুশরা আলম বলেন, ‘বর্তমানে নারীরা দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন ভূমিকা রাখছে। আমরা চেষ্টা করছি নারীদের কাজের অগ্রগতিকে কীভাবে আরও সামনে নিয়ে আসতে পারি। এটা শুধুমাত্র উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরির বিষয় নয়। বরং এর চেয়েও বেশি। নারীরা পাবলিক যানবাহনে করে তাদের কর্মস্থলে যাতায়াত করে। কিন্তু সেখানে তাদের অবস্থা কী? সেখানে তারা প্রতিনিয়ত হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে পুরষদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। কারণ সবার সম্মিলত প্রচেষ্টায় পরিবর্তন আসে।’
আরও পড়ুন: কোন দেশে বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার, বেশি মানসিক রোগ?
আলোচনার দ্বিতীয় বক্তা ফ্রেন্ডশিপ এনজিও’র প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে তার কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ’২০ বছর আগে আমি এমন একটা বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করি যখন দেশে প্রায় ৪০ হাজার এনজিও ছিল। কিন্তু শিশুদের নিয়ে কাজ করার কাউকে তেমন পাইনি। আমি দেখেছি, একজন শিশুর হয়তো ডায়রিয়া হয়েছে, কিন্তু তার মা মাত্র পাঁচ টাকার জন্য শিশুটিকে সেলাইন খাওয়াতে পারছে না। ২০ বছর আগে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কাজটা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু আমাদের প্রত্যয় ছিল কাজটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেখান থেকে আমরা স্যাটেলাইট হাসপাতাল পর্যন্ত এসেছি।’
সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাহিদা ফিজা কবীর বলেন, ‘সাজেদা ফাউন্ডেশন ব্যতিক্রম একটি উদ্যোগ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রেনাটার অর্থে এটা চলে। রেনাটার মুনাফার ৫১ শতাংশ এই সাজেদা ফাউন্ডেশনে খরচ করা হয়। এটি দারিদ্র্য বিমোচন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, জীবনমান উন্নয়নে কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। বর্তমানে আমরা মানসিক স্বস্থ্য নিয়েও কাজ করছি। যেটি আজকের আলোচনার অন্যতম অংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় আট বছর আগে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। যখন দেখেছি আমাদের এখানে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের সেবা নেই। সেখান থেকেই আমাদের চিন্তা এলো এমন একটি সেবায় বিনিয়োগ করার বিষয়। যেখানে আমরা আন্তর্জাতিক মানে সেবা প্রদান করতে পারব। এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা পেয়েছি।’
আরও পড়ুন: মানসিক বিকাশে শিশুর সঙ্গে মা-বাবার টেলিভিশন দেখা হতে পারে উপকারী
বাংলাদেশে প্যালিয়েটিভ অ্যান্ড সাপোর্ট কেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. রুমানা দোলা সেশনে কথা বলেন দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের অবস্থা প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের দুরারোগ্য ব্যাধিতে প্রতি বছর অনেক মানুষ ভোগে। যার জন্যই প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজনীয়তা। অনেকেই আছেন দীর্ঘদিন হৃদরোগ, ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, এইডস, ডায়াবেটিকে ভুগছেন, এমনকি অনেকে একসময় তীব্র যন্ত্রণায় ভোগেন। প্যালিয়েটিভ কেয়ার এই ধরনের রুগীদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবার অংশ।’
বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবা প্রসঙ্গে নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। করোনার সময় আমরা বিষয়টি আরও লক্ষ্য করেছি। তখন বিদেশি যাওয়া বন্ধ ছিল, জনগনকে হয়তো সরকারি বা বেসরকারি চিকিৎসা নিতে হয়েছে। আর আমরা কিন্তু পেরেছি। তবে বর্ডার খুলে দেয়ার পর আবারও মানুষ চিকিৎসার জন্য বাইরে যাচ্ছে। সেটার দুটি কারণ, প্রথমত বাংলাদেশে যেসব চিকিৎসা সম্ভব। দ্বিতীয়ত অনেকের অভিযোগ আমাদের দেশের অনেক ডাক্তার রোগীর বিষয়ে মনযোগী নন। দুটি বিষয়ের উন্নতির জন্য এরই মধ্যে কাজ হচ্ছে।’
বাংলাদেশে মেডিকেল যন্ত্রাংশ ব্যবসায় নিজের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রমিস্কো গ্রুপের নির্বাহি পরিচালক মৌসুমী ইসলাম বলেন, ‘একজন নারী উদ্যোক্তার হিসেবে আমার শুরু পথটা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু আমি সৌভাগ্যবান, এই কাজে আমি অনেককে বন্ধুর মতো পাশে পেয়েছি। যাদের জন্য আমি এগিয়ে যেতে পেরেছি। বাংলাদেশের অত্যাধুনিক মেডিকেল যন্ত্রাংশ আসার সময়টা কিন্তু নতুন। ২০১৫ থেকে আমরা মেডিকেল যন্ত্রাংশ তৈরি করে আসছি। করোনার সময় আমরা প্রমাণ করেছি বাংলাদেশেরও বিশ্বমানে মেডিকেল যন্ত্রাংশ তৈরি করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: উন্নত দেশ গড়তে ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজিনেস’ সূচক উন্নয়নের বিকল্প নেই: বিডা
বিডার নির্বাহী পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া ২০২২ আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা সম্মেলনের আলোচনা সেশনে বলেন, ‘এই সম্মেলন নারী উদ্যোক্তাদের ভালো একটি সুযোগ আমি মনে করি। যারা অংশগ্রহণ করেছেন সবার মনোবল ও আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে বিশ্বাস করি। এ সম্মেলন নারী উদ্যোক্তাদের মনোবল আরও দৃঢ় ও সাহসী করবে। এ সম্মেলনে চার হাজার নারী উদ্যোক্তা ও প্রায় ৪০টি দেশের পেশাজীবী ও বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিগণ অংশগ্রহণ করছেন।’
প্যাকেটজাত আলুর চিপস কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি মানুষের আকর্ষণটা বরাবরই একটু বেশি। সেখানে আলুর চিপসের ব্যাপারে অনেকেরই দুর্বলতা আছে। কালে ভদ্রে মচমচে চিপস উপভোগ করাটা খারাপ নয়; বরং তা স্বাদে ভিন্নতা আনার জন্য বেশ ভালো কাজে দেয়। কিন্তু স্ন্যাকসের তালিকায় প্রতিদিন প্রায় নিয়ম করে চিপস খাওয়াটা স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে কোন তারতম্য অনূভুত না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ভয়াবহ স্বাস্থ্য অবনতি ঘটতে পারে। তাই চলুন জেনে নিই প্যাকেটজাত আলুর চিপসের স্বাস্থ্যহানিকর দিকগুলো সম্বন্ধে।
প্যাকেটজাত আলুর চিপসের ৭টি ক্ষতিকর দিক
রক্তচাপের ঊর্ধ্বগতি
লবণযুক্ত চিপসের প্রধান উপাদান সোডিয়াম। দেহের খনিজ উপাদান যোগানে সোডিয়ামের প্রয়োজন আছে। কিন্তু অত্যধিক সোডিয়াম রক্তচাপ বৃদ্ধিজনিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিদিনের স্ন্যাকসের তালিকায় নিয়মিত আলুর চিপস থাকা মানেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেহে উচ্চ রক্তচাপের বিকাশ ঘটানো।
আরো পড়ুন: খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
চিপসে থাকা সোডিয়াম কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রক্তচাপ বৃদ্ধির ফলে স্ট্রোক, হার্ট ফেইল, করোনারি হৃদরোগ এবং কিডনি রোগের আশঙ্কা থাকে। আলুর চিপস-এ সাধারণত প্রতি আউন্সে ১২০ থেকে ১৮০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে এবং টর্টিলা চিপস-এ প্রতি আউন্সে ১০৫ থেকে ১৬০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। চিপসের প্যাকেটগুলো সাধারণত এক আউন্সের বেশি হয়ে থাকে। তাই চিপস খাওয়ার সময় সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সোডিয়াম দেহের ভেতর প্রবেশ করে।
ওজন বৃদ্ধি
চিপসে থাকা চর্বি এবং ক্যালোরির পরিমাণ ওজন বৃদ্ধি; এমনকি স্থূলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এক আউন্স প্লেইন পটেটো চিপস বা প্রায় ১৫ থেকে ২০টি চিপসে প্রায় ১০ গ্রাম ফ্যাট এবং ১৫৪ ক্যালোরি থাকে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
চিপসের লবণ উপাদান চিপসকে অত্যন্ত মুখরোচক করে তোলে, যার ফলে অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় চিপস বেশি খেয়ে নেয়। লবণের সঙ্গে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত উপাদান একত্রিত হয়ে একটি ক্ষতিকর খাবারে পরিণত হয়, যেটি যে কারও ওজন নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।
আরো পড়ুন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি খাবার
হৃদরোগের ঝুঁকি
যে কোন প্রক্রিয়াজাত চর্বিযুক্ত খাবার হৃদযন্ত্রের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। আর চিপস এ ধরণের খাবারগুলোর মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। যাদের প্রিয় স্ন্যাক্স চিপস, তাদের কার্সিনোজেনিক অ্যাক্রিলামাইডের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। চিপসে থাকা এই রাসায়নিকটি হৃদরোগের বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টির জন্য দায়ী। ঘন ঘন চিপস খাওয়া কোলেস্টেরলের মাত্রায় বৃদ্ধিতেও অবদান রাখতে পারে। কারণ এতে আছে অধিক পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের ফ্যাট।
বেশিরভাগ চিপস বেশি করে ভাজা হয়, যার ফলে এতে তৈরি হয় ট্রান্স ফ্যাট, যেটি ফ্যাটের সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরণ। এছাড়াও চিপস ভাজার জন্য ব্যবহৃত তেলগুলো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সম্পন্ন, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য সক্রিয় প্রভাবক। রক্ত প্রবাহে উচ্চ মাত্রার ট্রান্স চর্বি করোনারি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ক্যান্সারের আশঙ্কাঅ্যাক্রিলামাইড এমন একটি রাসায়নিক, যেটি মুলত প্রক্রিয়াজাত খাবারে পাওয়া যায় এবং এর কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্যের জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হতে পারে। যারা চিপস পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি নিতান্ত ভয়ানক ব্যাপার। কারণ অনেকেই বিষয়টি উড়িয়ে দেন। আলুর চিপ্স-এ উচ্চ মাত্রায় অ্যাক্রিলামাইড থাকায় চিপসে আসক্ত ব্যক্তিরা আসলে অ্যাক্রিলামাইডে আসক্ত হয়ে পড়ে।
আরো পড়ুন বাজেটের মধ্যে ঢাকার সেরা ১০টি বুফে রেস্টুরেন্ট
সিগারেটের ধোঁয়া এবং আলুর চিপস দুটোই এই কার্সিনোজেন ধারণ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য স্পষ্টভাবে হুমকিস্বরূপ। ধূমপায়ীদের ন্যায় এই প্যাকেটজাত আলুর চিপস খাওয়া ব্যক্তিরাও দাবী করেন যে, এটা তাদের তেমন ক্ষতি করবে না। কিন্তু চরম পর্যায়ে এই অ্যাক্রিলামাইড ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়
স্ন্যাক্স খাবার ক্ষেত্রে বিশেষ করে যখন চিপসের কথা আসে, তখন এতে থাকা অ্যাক্রিলামাইডের জন্য ব্যাপারটিকে একটু গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া উচিত। এছাড়া চিপসে থাকা প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল অনেক ক্ষেত্রে খুব খারাপ ফলাফলের অবতারণা করতে পারে। বিশেষ করে ব্যক্তির পরিবারে যদি ইতোমধ্যে পূর্বে কারো স্ট্রোকের ঘটনা থেকে থাকে।
এ ধরণের রেকর্ড থাকা পরিবারের উত্তরাধিকারীদের চিপস এড়িয়ে চলতে হবে। অন্যথায় যদি এই চর্বি ভর্তি আলু চিপসের লোভ সামলানো না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে যে কোন সময় একটি সম্ভাব্য অ্যানিউরিজমের সম্মুখীন হতে হবে। উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার থেকে চর্বি জমা হয়। এটি ধমনীতে বাধা সৃষ্টি করে এবং ফলশ্রুতিতে সরাসরি স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন গ্রীন কফি: উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বানানোর নিয়ম
বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি
এক প্যাকেট চিপসে থাকা চর্বি বা কোলেস্টেরল অনাকাঙ্ক্ষিত ও ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন করতে পারে। একটি মানুষের প্রতিদিনের বিপজ্জনক চর্বির যোগানের একটা বিরাট অংশ আসে চিপসে থাকা ট্রান্স ফ্যাট থেকে। এই ট্রান্স ফ্যাটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।
তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা থেকে এমন কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে, যা চিপস পছন্দকারীদের অবিলম্বে চিপস থেকে মুখ ফিরিয়ে দিতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণায় দেখা গেছে ট্রান্স ফ্যাট মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়। আর চিপস যেহেতু উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাটের আধার, তাই অতিরিক্ত চিপস খাওয়া মহিলাদের জন্য এটি একটি সাবধান বাণী।
শেষাংশ
নিত্যদিনের ব্যস্ততার কারণে বাধ্য হয়েই সবাই প্রস্তুতকৃত খাবারের দিকে ছুটে থাকেন। ঘরে খাবার তৈরির প্রবণতা কমে যাওয়াতে কিশোর ও তরুণরাও ঝুঁকে পড়েছেন এই খাবারগুলোর প্রতি। বিশেষ করে চিপসের একটা প্যাকেট চলতে ফিরতে বা আড্ডার মাঝে সবার হাতে হাতে দেখা যায়। কিন্তু প্যাকেটজাত আলুর চিপসের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ঘন ঘন চিপস খাওয়াটা এড়িয়ে চলা উচিত।
আরো পড়ুন জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
শুধু দৈহিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়; এই পুষ্টিহীন খাবারটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। একদম ক্যালরি শূন্য এই খাবার মানুষকে দ্রুত ক্ষুধার্ত করে তুলে। এর থেকে শুরু হয় চিপসের প্রতি নেশা, যা শরীরকে আরো খারাপ অবস্থার দিকে ঠেলে দেয়।
টাঙ্গাইলে ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন
‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন’-স্লোগানে চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি টাঙ্গাইল-এর উদ্যোগে ও চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের পৃষ্ঠপোষকতায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ টাঙ্গাইল পর্ব।
সকাল ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন।
বরেণ্য অতিথি হিসেবে অনলাইনে যোগ দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা তানভীর হোসেন প্রবাল, রিয়াজুল রিজু, ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশের উৎসব পরিচালক শাহরিয়ার আল মামুন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার এরশাদ হাসান।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সংস্কৃতিকর্মী সাম্য রহমানের সভাপতিত্বে চিলড্রেন’স্ ফিল্ম সোসাইটি টাঙ্গাইলের সভাপতি ও টাঙ্গাইল উৎসবের পরিচালক মুঈদ হাসান তড়িৎ, আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হাসান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: লা গ্যালারিতে অভিজিৎ চৌধুরীর একক চিত্র প্রদর্শনী
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সকাল ১১টায় প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশি চলচ্চিত্র কাঁঠাল, ৪৫ মিনিট; শহরটা ঢাকা, ১১ মিনিট; অশ্লেশা, ৬ মিনিট; ফ্রেমড মেমোরিস, মালেশিয়া, ৭ মিনিট। দুপুর ২টায় পাঠশালা, ভারত, ১৯ মিনিট ; ফাইন্ডারস অফ দ্যা লস্ট ইয়ট, ফিনল্যান্ড, ৮৬ মিনিট । বিকাল ৫টায় দীপু নাম্বার টু, বাংলাদেশ, ১৫৪ মিনিট প্রদর্শিত হয়।
উৎসবে আগামী ২৫ নভেম্বর সিনেম্যাটোগ্রাফি বিষয়ে নির্মাতা এনামুল হাসান ও এ্যানিমেশন বিষয়ে এ্যানিমেশন নির্মাতা শাহরিয়ার আল মামুন কর্মশালা পরিচালনা করবেন। আগামী ২৬ নভেম্বর মোবাইল চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে কর্মশালা পরিচালনা করবেন নির্মাতা রাকা নোশীন নাওয়ার। একই দিন বিকাল ৫টায় উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
তিনদিনব্যাপী এ চলচ্চিত্র উৎসবে ১৪টি দেশের ২০টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। প্রতিদিন সকাল ১১টা, দুপুর ২টা এবং বিকাল ৫টায় প্রদর্শনী রয়েছে। উৎসবের সকল প্রদর্শনী অভিভাবক, শিশু-কিশোরসহ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
২৫ নভেম্বর, ২০২২ শুক্রবার সকাল ১১টায় প্রদর্শিত হবে দি রিপাবলিক অফ চিলড্রেন, পোল্যান্ড, ৭২ মিনিট; মেসি, ইরান, ১৪ মিনিট। দুপুর ২টায় সুমো কিড, রাশিয়া, ৮৮ মিনিট; ক্রিপি, জার্মানি, ৫ মিনিট; থ্যাংক ইউ ফর ইয়র টিথ, রোমানিয়া, ২ মিনিট। বিকাল ৫টায় আমার বন্ধু রাশেদ,বাংলাদেশ, ৯৬ মিনিট। ২৬ নভেম্বর, ২০২২ শনিবার সকাল ১১টায় প্রদর্শিত হবে জিম বাটন এন্ড দি ওয়াইন্ড ১৩, জার্মানি, ১০৯ মিনিট;
সুমন'স ওডিশি-ভস্ট ইং, ফ্রান্স,২৬ মিনিট। দুপুর ২টায় নেইবোরস,সুইজারল্যান্ড, ৯০ মিনিট ; মেও অর নেভার, ইউকে, ১০ মিনিট ; মাই গ্যান্ডমা মাটিলডি, মেক্সিকো, ১০ মিনিট; মুন ল্যান্ডিং, কোস্টারিকা, ৬ মিনিট । সন্ধ্যা ৬টায় তারে জামিন পার, ভারত, ১৬৪ মিনিট।
উৎসবের সহ-আয়োজক জেলা শিল্পকলা একাডেমি টাঙ্গাইল। এছাড়া উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বুরো বাংলাদেশ, মেলো, সময় টিভি, ডুগডুগি মিডিয়া, শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন ও স্পটলাইট।
উল্লেখ্য যে গত মার্চ মাসজুড়ে ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগে চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত হয় ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ। ঢাকা উৎসবে ৩৮টি দেশের ১১৭টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
আরও পড়ুন: জাবির নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আফসার আহমদের ৬৩তম জন্মজয়ন্তী
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘উদ্যমী আমি-ভেনচার মায়েস্ট্রাস’ কর্মসূচি আয়োজিত
কুমিল্লার ১০ দর্শনীয় স্থান
কুমিল্লা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ সমৃদ্ধ শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত ঐতিহাসিক এই জেলাটি সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দীর বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের আশ্রয়স্থল। অনেক অনেক আগে এই জেলা সমতট জনপদের অংশ ছিল। কালক্রমে এটি ত্রিপুরা রাজ্যভুক্ত হয়। কুমিল্লা নামটি এসেছে কমলাঙ্ক শব্দ থেকে, যার অর্থ পদ্মের পুকুর। কুমিল্লার পর্যটন আকর্ষণগুলোর মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে পরিচিত হয় বাংলাদেশ। এখানে অবস্থিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈন্যদের কবরস্থানটি কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। আজকের নিবন্ধটি এই গুরুত্বপূর্ণ জেলা কুমিল্লার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান নিয়ে।
কুমিল্লা জেলার ১০টি প্রসিদ্ধ দর্শনীয় স্থান
শালবন বৌদ্ধ বিহার
এক সময়কার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের প্রধান উপাসনালয় শালবন বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান কুমিল্লার কোটবাড়িতে। এখানকার বনে প্রচুর পরিমাণে শাল গাছ থাকায় স্বভাবতই বিহারটির শালবন বিহার নাম হয়েছে। বিহারে মোট ১৫৫টি কক্ষ আছে, যেখানে ধর্মচর্চা করতেন বুদ্ধের অনুসারিরা।
এই বিহার থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৪০০টি স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, ব্রোঞ্জ ও মাটির মূর্তি, সিলমোহর, আটটি তাম্রলিপি এবং অসংখ্য পোড়া মাটির ফলক বা টেরাকোটা পাওয়া গেছে। কুমিল্লা সদর থেকে ২০ টাকা সিএনজি ভাড়ায় কোটবাড়ি বিশ্বরোড হয়ে সরাসরি শালবন বিহার যাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
ময়নামতি জাদুঘর
কুমিল্লার ঐতিহাসিক নিদর্শনের এক গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহশালা এই ময়নামতি জাদুঘর, যার অবস্থান কুমিল্লা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে সালমানপুরে। জাদুঘরের ৪২ টি ভিন্ন ভিন্ন সংরক্ষণাগার ঘুরে দেখার সময় চোখে পড়বে ব্রোঞ্জ ও পাথরের ছোট-বড় মূর্তি, স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, ব্রোঞ্জের বিশাল ঘন্টা, পোড়ামাটির ফলক, মাটির খেলনা, কাঠের পুরানো জিনিসপত্র, মৃৎশিল্প সামগ্রী এবং প্রাচীন হাতে লেখা পান্ডুলিপি।
কুমিল্লার চারপত্র, রূপবান ও কোটিলা মুড়া, শ্রীভবদের মহাবিহার, ইটাখোলা, রানীর বাংলা ও ভোজ রাজবাড়ি বিহার এবং আনন্দ বিহার খননকালে খুঁজে পাওয়া যায় এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো। আঙ্গিনার বিশ্রামাগার আর ফুল বাগান জাদুঘরের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ১৯৬৫ সালে কোটবাড়ির শালবন বিহারের পাশেই স্থাপন করা হয় এই জাদুঘর। পাশাপাশি হওয়ায় এক সাথে দুটো স্থানই ঘুরে আসতে পারেন পর্যটকরা।
ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি
২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় শহীদ হওয়া ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার সৈনিকদের একটি আন্তর্জাতিক সমাধিক্ষেত্র এই ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি। ২৪ জন জাপানি যুদ্ধবন্দি ও একজন বেসামরিক ব্যক্তি সহ মোট ৭৩৭ জন সৈন্যের কবর আছে এই সমাধিক্ষেত্রে। কমনওয়েলথ পরিচালিত ওয়ার সিমেট্রিটির অবস্থান ময়নামতি সাহেব বাজার এবং কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের টিপরা বাজারের মধ্যস্থলে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরের ১০ জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান
প্রায় ৪ দশমিক ৫ একর পাহাড়ি ভূমির ওপর গড়ে তোলা ওয়ার সিমেট্রি বাংলাদেশের ২য় কমনওয়েলথ সমাধিক্ষেত্র। স্থানীয় নিবাসীরা একে ইংরেজ কবরস্থান নামে ডাকলেও এখানে সমাহিত সৈন্যদের মধ্যে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও ইহুদিও রয়েছেন। কুমিল্লা থেকে সিএনজি-অটোরিক্সা কিংবা বাসে করে পৌছা যায় ময়নামতির এই যুদ্ধের গোরস্থানে।
ধর্মসাগর দীঘি
কুমিল্লা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই দর্শনীয় স্থানটি। আঙ্গিনায় ঢুকতেই দেখা যায় একটি সাইনবোর্ড, যেখানে লেখা আছে এই দীঘির ইতিহাস। ১৭৫০ থেকে ১৮০৮ সালে রাজা ধর্মপালের শাসনামলে রাজ্যে এক ভয়ানক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তখন পাল বংশের এই জনদরদী রাজা প্রজাদের কষ্ট দূর করার জন্য খনন করে দেন ধর্মসাগর দীঘিটি। অতঃপর তার নামেই দীঘিটি প্রসিদ্ধি লাভ করে।
দীঘির উত্তরে সবুজে ঘেরা শিশুপার্ক থেকে ধর্মসাগরের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করা যায়। পর্যটকদের কেউ ধর্মসাগরের পাড় ধরে হেটে বেড়ান, কেউ বা নৌকা নিয়ে ভেসে বেড়ান দীঘির জলে। কুমিল্লার শাসনগাছা থেকে স্থানীয় যে কোন যানবাহন নিয়ে বাদুরতলা পর্যন্ত গেলেই দেখা যাবে ধর্মসাগর।
আরও পড়ুন: কাতার ভ্রমণ: বিভিন্ন শহরের শীর্ষস্থানীয় ১০ দর্শনীয় স্থান
নব শালবন বিহার
কুমিল্লার প্রাচীন নিদর্শনের এক নতুন সংযোজন কোটবাড়ি এলাকার এই বিহারটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শান্তি বিহার নামে পরিচিত এই বিহারটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৯৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। এখানকার মুল আকর্ষণ আপাদমস্তক ধাতুতে মোড়া প্রায় ছয় টন ওজনের ৩০ ফুট উচ্চতার সোনালী রঙের বুদ্ধের মূর্তি। ২০১৪ সালে থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ ধর্মীয় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এটি বাংলাদেশকে উপহার দেয়া হয়।
এই বিহার পরিদর্শন করতে হলে কোটবাড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি-অটোরিক্সা দিয়ে বিহার পর্যন্ত যেতে হবে। এছাড়া কুমিল্লা জিরো পয়েন্ট থেকে কান্দিরপাড় সড়ক দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাওয়া যায়। সেখানে বামের রাস্তা ধরে কিছু দূর গেলেই নব শালবন। একই পথে ফেরার সময় কান্দিরপাড় থেকে মনোহরপুর গেলেই মিলবে কুমিল্লার বিখ্যাত মাতৃভান্ডারের রসমালাই।
ইটাখোলা মুড়া
কোটবাড়ির এই স্থানটি মূলত ৭ম বা ৮ম শতকে নির্মিত একটি বৌদ্ধ বিহার। প্রাচীনকাল থেকেই এখানে ইট পোড়ানো হয় বিধায় জায়গাটির নাম হয়েছে ইটাখোলা মুড়া। ইটাখোলা মুড়ায় প্রবেশ করে উপরে উঠে গেলে চতুর্ভূজাকার ক্ষেত্রের মাঝে দেখা যায় বিহারের প্রধান মন্দিরটি।
আরও পড়ুন: বান্দরবান ট্যুর গাইড: সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহ
ইটাখোলা মুড়া থেকে এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে ১৮ তোলা ওজনের স্বর্ণ, রৌপ্য মুদ্রা, মাটির পাতিলে রক্ষিত সোনার বল, ধ্যাণী বুদ্ধ মূর্তির আবক্ষ অংশ, তাম্রশাসন, মাটির ফলকলিপি, ধাতব ধ্যানীবুদ্ধ অক্ষোভ্য, ধাতব ধ্যানীবুদ্ধ অমিতাভ, অলংকৃত পোড়া মাটির ফলক, গণেশ মূর্তি ও তেলের প্রদীপ।
কোটবাড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি কিংবা অটোরিক্সাযোগে ইটাখোলা মুড়া যাওয়া যায়।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি
গাছ-গাছালি ও ফুল বাগানে সুসজ্জিত কোটবাড়ির এই স্থাপনাটি মুলত একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৯ সালের ২৭ মে প্রতিষ্ঠার সময় এটির নাম ছিলো পাকিস্থান গ্রাম উন্নয়ন একাডেমি। পরবর্তীতে পল্লী গবেষক ড. আখতার হামিদ খান এটিকে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী নাম দেন, সংক্ষেপে যেটি বার্ড নামে সুপরিচিতি লাভ করে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ গাইড: দর্শনীয় স্থান সমূহ, খরচ
প্রায় ১৫৬ একরের বিশাল জায়গায় রয়েছে ৫টি হোস্টেল, হেলথ ক্লিনিক, চারটি কনফারেন্স রুম, মসজিদ, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, লাইব্রেরি, একটি প্রাইমারি স্কুল ও দু’টি ক্যাফেটেরিয়া। বিশেষ অনুমতি নিয়ে এখানে পিকনিক করার সু-ব্যবস্থা আছে। কোটবাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে হেটেই বার্ড-এ পৌঁছা যায়।
রূপবান মুড়া
কোটবাড়িতে ইটাখোলা মুড়ার ঠিক উল্টো পাশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাটির নাম রূপবান মুড়া। রহিম ও রূপবানের ভালোবাসার কিংবদন্তিতে প্রচলিত আছে এই ঐতিহাসিক স্থান ঘিরে। ৯০-এর দশকে কুমিল্লা-কালিবাজার সড়কের কাছে আবিষ্কৃত হয় এই প্রত্নস্থানটি। এখানে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো ৭ম থেকে ১২শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিলো বলে ধারণা করা হয়।
রূপবান মুড়ার উঁচু বিহারের উপর থেকে সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখার জন্য কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ভীড় জমান পর্যটকরা। কোটবাড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে যেতে হবে কুমিল্লা-কালির বাজারের পথে। অতঃপর দক্ষিণ দিকে বিজিবি ও বার্ডের মাঝখানে টিলার উপর দেখা যাবে নয়নাভিরাম রূপবান মুড়া।
আরও পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
রাণী ময়নামতির প্রাসাদ
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ধরে পূর্ব দিকে কমনওয়েলথের ওয়ার সিমেট্রি থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার গেলেই দেখা যাবে এই প্রাসাদ। এই পুরাকীর্তিটির নির্মাণকাল ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মাঝের কোনো সময়। সে সময় চন্দ্র বংশের রাজা মানিক চন্দ্র তার স্ত্রী ময়নামতির আরাম আয়েশের জন্য বানিয়ে দেন এই প্রাসাদ।
১৯৮৮ সালে ভূপৃষ্ঠ থেকে তিন মিটার গভীরে থাকা একটি সুড়ঙ্গের সামনে খননের সময় আবিষ্কৃত হয় এই প্রাসাদ। প্রতি বৈশাখের ৭ম দিন থেকে এখানে মাসব্যাপী উদযাপন হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৈশাখী মেলা।
কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট গেইট অথবা কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে অটোরিকশা নিয়ে ময়নামতি সাহেব বাজার গেলেই দেখা পাওয়া যাবে এই প্রাচীন প্রাসাদের।
আরও পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপায়
আনন্দ বিহার
কোটবাড়ির ময়নামতিতে অবস্থিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় এই বিহারটি ছিলো উপমহাদেশের সর্বশেষ বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। এটি নির্মাণ করেছিলেন দেব রাজবংশের তৃতীয় শাসক শ্রী আনন্দ দেব ৭ম অথবা ৮ম শতাব্দীর প্রথম দিকে। ধারণা করা হয়, ৭ম শতকের শেষ সময়ে এই বিহার ছিলো সমতটের রাজধানী।
নান্দনিক বর্গাকৃতির বিশাল অবকাঠামোর ঠিক মাঝখানে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্দির এবং অপরূপ এক দিঘি। কুমিল্লা সদর থেকে কোটবাড়ির আনন্দ বিহার যাবার পথে বিখ্যাত টমছম ব্রিজ দেখে নেয়া যেতে পারে।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে বাসে অথবা ট্রেনে করে কুমিল্লা যাওয়া যায়। সায়েদাবাদ কিংবা কমলাপুর থেকে বাস যোগে কুমিল্লা যেতে খরচ পড়তে পারে জনপ্রতি ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা। এই যাত্রায় সময় নিবে মাত্র আড়াই ঘন্টা। এছাড়া চট্টগ্রামগামী প্রায় সকল ট্রেনই কুমিল্লা স্টেশনে যাত্রী নামায়। ট্রেনের সিটের ধরন ভেদে ভাড়া জনপ্রতি ১৭০ থেকে ৪৬৬ টাকা।
আরও পড়ুন: বনভোজনের জন্য ঢাকার কাছেই ১০টি মনোরম জায়গা
শেষাংশ
ঢাকার খুব কাছে হওয়াতে কুমিল্লা জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে অনেকগুলোই এক দিনে ঘুরে আসা যায়। আর এ জন্যেই একদিনের ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে ঢাকাবাসীদের কাছে কুমিল্লা অনেক জনপ্রিয়। এরপরেও ভালো ভাবে পুরো জেলাটি ঘুরে দেখার জন্য হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে যাওয়া উচিত। তাছাড়া ঝটিকা সফরে অনেক ছোট ছোট সৌন্দর্য্য চোখ এড়িয়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেকের জন্য তা ক্লান্তিকরও বটে। তাই ঢাকার নিরন্তর যান্ত্রিকতা থেকে বেরিয়ে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে কয়েকটি দিন কুমিল্লায় কাটিয়ে আসা যেতে পারে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আবারও ৭ দিনের টিকা ক্যাম্পেইন
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী সাত দিনের বিশেষ টিকা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, সামনে বিজয় দিবস আসছে, এই উপলক্ষে টিকার ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নিয়েছি। এটি পহেলা ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে, চলবে ডিসেম্বরের ৭ তারিখ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: দেশেই স্থানীয়ভাবে করোনা টিকা তৈরির প্রচেষ্টার অগ্রগতি হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে আয়োজিত বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিশেষ এই টিকা ক্যাম্পেইনে ৯০ লাখ লোককে টিকা দেয়া হবে। আমরা এর আগে যতগুলো ক্যাম্পেইন করেছি, সবগুলোই সফল হয়েছে। আশা করি এটিও সফল হবে।
এছাড়া আমরা এ পর্যন্ত ১৪ কোটি ৬৯ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা আমরা দিয়েছি।
১২ কোটিরও বেশি দ্বিতীয় ডোজ দিয়েছি।
আরও পড়ুন: প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের টিকার ক্যাম্পেইন বাড়ল আরও ৩ দিন
দিনাজপুরের ১০ জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান
রংপুর বিভাগের অন্তর্গত দিনাজপুর জেলাটি আবহমান কাল ধরে ধারণ করে আছে উত্তরবঙ্গের ইতিহাস ও সংস্কৃতি। রাজধানী থেকে ৪১৩ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সদর উপজেলার প্রধান নদী পুনর্ভবা। এই জেলার পূর্বে রংপুর ও নীলফামারী, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় এবং দক্ষিণে রয়েছে জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলা। ১৭৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত দিনাজপুর শহর ভ্রমণ মানে শুধুই একটি অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান জানা নয়। অঞ্চলটির অতীতের সঙ্গে এক সেতুবন্ধনও বটে। এর প্রতিটি ইট আর দেয়ালের রঙ সরবে জানান দেয় ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর কথা। পাশাপাশি পরিচয় করিয়ে দেয় শহরবাসীর পূর্বসূরীদের। আজকের আয়োজনে থাকছে দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ।
ঢাকা থেকে দিনাজপুর যাওয়ার উপায়
উত্তরাসহ গাবতলীর পথে ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া যায় দিনাজপুরের বাসগুলো। এগুলোতে মান ভেদে ভাড়া ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা।
আর ট্রেনে যেতে হলে কমলাপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ অথবা সকাল ৯টা ৫০-এ টিকেট বুক করা যেতে পারে। সিটের ধরন ভেদে এগুলোতে ভাড়া ১৮৫ থেকে ৮৯৭ টাকা পর্যন্ত নিতে পারে।
আরও পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
দিনাজপুরের ১০ জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান
রামসাগর দিঘি
বাংলাদেশের বৃহত্তম দিঘি হিসেবে পরিচিত এই জলাশয়টি মূলত একটি কৃত্রিম দিঘি। পলাশী বিপ্লবের কিছু পূর্বে রাজা রামনাথ রাজ্যের পানির চাহিদা মেটাতে খনন করেছিলেন এই দিঘি। রাজার নামানুসারেই দিঘিটি পরবর্তীতে পরিচিতি পায়। বর্তমানে এটি দিনাজপুর পর্যটন বিভাগের দায়িত্বে আছে।
প্রায় চার লাখ ৩৭ হাজার ৪৯২ বর্গমিটার ক্ষেত্রফল এবং ১০ মিটার গভীরতার এই দিঘির আশপাশে বিকালে ঘুরে বেড়ানোর জন্য দারুণ জায়গা। এখানে সাঁতার কাটারও ব্যবস্থা আছে। পূর্ণিমার সময় ক্যাম্পিং করার জন্য রামসাগর বেশ জনপ্রিয় একটি স্থান।
শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে রামসাগর জাতীয় উদ্যানে যেতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগতে পারে।
আরও পড়ুন: কাতার ভ্রমণ: বিভিন্ন শহরের শীর্ষস্থানীয় ১০ দর্শনীয় স্থান
কান্তজির মন্দির
বাংলাদেশের এই বিখ্যাত স্থাপনাটি নির্মিত হয়েছিল ১৮ শতকে, যার আরও একটি নাম নবরত্ন মন্দির। ঢেপা নদীর তীরে কান্তনগর গ্রামে এর অবস্থান। মন্দিরের শিলালিপি অনুসারে মহারাজা প্রাণনাথ রায় মন্দিরের কাজ শুরু করেছিলেন। ১৭২২ সালে তিনি মারা যাওয়ার পর তার পুত্র মহারাজা রামনাথ রায় ১৭৫২ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
প্রথমে মন্দিরটির উচ্চতা ছিলো ৭০ ফুট। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ক্ষতির কারণে এটি এখন ৫০ ফুট লম্বা। মহাভারত, রামায়ণ ও অন্যান্য পৌরাণিক কাহিনীগুলো মন্দিরের বাইরের দেয়ালে প্রায় ১৫ হাজার টি বর্গাকার পোড়ামাটির ফলকে চিত্রিত করা। শহর থেকে অটোরিকশা করেই পৌঁছা যায় কান্তজির মন্দিরে।
খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিশ্বজুড়ে মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে আসছে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়। ফলে কিডনি জটিলতাসহ স্ট্রোকের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভয়ঙ্কর রোগটির জন্য সচেতনতা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘস্থায়ী এই রোগের জটিলতা তুলে ধরতে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়।
দিবসটি ১৯৯১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমর্থনের জন্য আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়েছিল এবং ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ দিবসে পরিণত হয়।
তাই, আপনি যদি ডায়াবেটিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার খাদ্যাভ্যাসের ওপর নজর রাখা জরুরি। সর্বোপরি রক্তের গ্লুকোজ, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনাকে খাদ্যগ্রহণে মনযোগী হতে হবে।
তাই বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আজকের আয়োজনে থাকছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী কিছু খাবারের তালিকা। আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হন এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে চান তাহলে খাবারের তালিকায় এই খাবারগুলো রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন: কাউনের চালের তৈরি নুডলস নিয়ন্ত্রণ করবে ডায়াবেটিস: শাবিপ্রবির গবেষণা
বনভোজনের জন্য ঢাকার কাছেই ১০টি মনোরম জায়গা
চিরাচরিত যান্ত্রিকতায় পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে শহরের বাইরে বনভোজনে যাওয়ার সময় পাওয়া বেশ দুষ্কর। ব্যস্ততম শহর ঢাকার নিরন্তর বাড়তে থাকা ভিড়ে বেড়ানোর জায়গাগুলো সবসময়ই থাকে কোলাহলপূর্ণ। সেখানে সবুজে ঘেরা ছায়া ঢাকা পরিবেশে বা নদীর ধারে বনভোজন অসম্ভব ব্যাপার। তবে,নগরবাসীর এই চাহিদা পূরণ করতে পারে ঢাকার উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা পিকনিক স্পটগুলো। সপ্তাহান্তের ছুটিতে দারুণ ভাবে কাটানো যেতে পারে পুরো একটি দিন। অস্থিরতার সাময়িক অবসানে একটু শান্তির নিমিত্তে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে পারেন ঢাকাবাসী। আর সেই পরিকল্পনার সহায়ক হতেই বনভোজনের জন্য ঢাকার কাছেই ১০টি চমৎকার জায়গার খোঁজ নিয়ে আজকের নিবন্ধ।
ঢাকার কাছেই বনভোজনের জন্য ১০টি দর্শনীয় স্থান
জল ও জঙ্গলের কাব্য
বিগত কয়েক বছর ধরে ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় জায়গায় পরিণত হয়েছে গাজীপুরের পুবাইলের এই রিসোর্টটি। ৯০ বিঘা জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা রিসোর্টটি স্থানীয়দের কাছে পাইলট বাড়ি নামে পরিচিত। পুকুরে মাছ ধরা, শীতের পিঠা সহ অন্যান্য বাঙালি খাবার; সব মিলিয়ে জায়গাটির সর্বত্র ছড়িয়ে আছে এক গ্রামীণ আমেজ।
আরো পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপায়
এখানকার ডে আউট প্যাকেজে বড়দের জন্য খাবারের খরচ ২০০০ টাকা। বাচ্চাদের জন্য অথবা সঙ্গে গাড়ি চালক থাকলে তাদের খরচ মাথাপিছু ১০০০ টাকা। রিসোর্টটিতে যাওয়ার জন্য গ্রুপে নূন্যতম ১০ জন থাকতে হয়। প্রতি সপ্তাহান্তেই জায়গাটি বেশ ব্যস্ত থাকে, তাই যাওয়ার আগে বুকিং দিয়ে নেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ।
উত্তরা দিয়ে টঙ্গীর রাস্তায় পূবাইল কলেজ গেট হয়ে রিসোর্টে পৌঁছানো যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক
গাজীপুরের বাঘের বাজারে অবস্থিত অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দর্শনীয় স্থান এটি। সাফারি পার্কটিতে রয়েছে ৫টি সেকশন: কোর সাফারি, সাফারি কিংডম, জীববৈচিত্র্য পার্ক, বিস্তৃত এশিয়ান সাফারি পার্ক ও বঙ্গবন্ধু চত্বর।
আরও পড়ুন: শীতকালে বাংলাদেশে ভ্রমণের জনপ্রিয় ১০ স্থান
বন্যপ্রাণীদের মধ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ও সাদা সিংহ তো আছেই। এছাড়াও দেখা পাওয়া যাবে জেব্রা, হরিণ, বাইসন, ম্যাকাও, হর্নবিল, ময়ূর, হাতি, কুমির, চিত্রা হরিণ, বানর ও হনুমানের। আলাদাভাবে দৃষ্টি কাঁড়ে জাতীয় ইতিহাস জাদুঘর, অ্যাকোয়ারিয়াম, হাঁসের পুকুর এবং ছোট প্রজাপতি ঘের।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে বনভোজনের জন্য প্রবেশ মূল্য ৪০০ টাকা। এছাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা করে রাখা হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রতিদিনি খোলা থাকে সাফারি পার্কটি। ঢাকা-ময়মনসিংহ পথে বাঘের বাজার যেয়ে বাঁ দিকে কিছুদুর গেলেই পৌঁছানো যায় এই পার্কটিতে।
সোনারগাঁও পানাম নগর
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে নির্মিত হওয়া বাংলাদেশের হিন্দু বণিকদের সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত এই শহরটি এখন একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। সোনারগাঁও লোক-শিল্প ও কারুশিল্প জাদুঘর, গোয়ালদী মসজিদ এবং সোনারগাঁয়ের অন্যান্য আকর্ষণগুলো দেখতে দেখতে সারাটা দিন কেটে যাবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদী ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ দ্বারা সংরক্ষিত অঞ্চলটি সপ্তাহের ৬ দিন উন্মুক্ত থাকে দর্শনার্থীদের জন্য। শুধুমাত্র রবিবার বন্ধ থাকে পানাম নগর। এছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মাত্র ১৫ টাকা প্রবেশ মূল্যে এই ঐতিহাসিক স্থানটি ঘুরে বেড়াতে পারেন পর্যটকরা।
গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জের পথে মোগরাপাড়া হয়ে হাতের বাঁ দিকে কিছু দূর এগোলেই পৌঁছানো যায় পানাম নগরে।
মৈনট ঘাট
প্রমত্তা নদী পদ্মার সাগরসম রূপের জন্য স্থানীয়দের কাছে এই মৈনট ঘাট মিনি সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত। এখানে আসার পথে নবাবগঞ্জের পথে দেখে নেয়া যেতে পারে নবাবগঞ্জের জজবাড়ি, আনসার ক্যাম্প, কোকিলপ্যারি দালান, উকিলবাড়ি, খেলারাম দাতার বাড়ি বা আন্ধার কোঠার মত ঐতিহাসিক কিছু দর্শনীয় স্থান।
আরো পড়ুন: পাহাড় ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা
লক্ষ্য যখন পদ্মার পাড়, তখন দর্শনার্থীদের সবারই মধ্যে হিড়িক পড়ে যায় ইলিশ ভাজা খাওয়ার। এছাড়া কার্তিকপুর বাজারের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ও বান্দুরা বাজারের চারা বিস্কুট কিনে নিতে তারা ভোলেন না।
গুলিস্তান থেকে বাবু বাজার সেতু পার হয়ে দোহারের পথে এগোলে রাস্তা গিয়ে শেষ হয় মৈনট ঘাটে। এছাড়া মোহাম্মদপুরের বসিলা সেতু দিয়েও ওঠা যায় দোহারের রাস্তায়।
জিন্দা পার্ক
নৌকা বাইচ, লাইব্রেরি, কৃত্রিমভাবে তৈরি খিলান-সুড়ঙ্গ এবং পদ্ম পুকুর; কোন কিছুরই ঘাটতি নেই ঢাকাবাসীদের প্রিয় জিন্দা পার্কে। পরিবারকে নিয়ে পিকনিক করার জন্য একটি আদর্শ জায়গা এই পার্কটি। ১৯৮০ সালে জিন্দা গ্রামের অগ্রপথিক পল্লী সমিতির ৫০০০ অধিবাসী দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে গড়েছেন এই অপূর্ব পার্কটিকে।
আরও পড়ুন: নারীর একাকী ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ১০ শহর
পার্কে ঘোরার সময় গাছের ওপর দেখা যাবে টং ঘর, মাটির ঘর, সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর লাইব্রেরি ও ছোট্ট একটি চিড়িয়াখানা। পার্কের লেকে নৌবিহারের জন্য সাজানো আছে ৮ টি নৌকা।
কুড়িল হাইওয়ে ধরে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত যেয়ে বাঁয়ে বেশ খানিকটা ভেতরে গেলেই পাওয়া যাবে জিন্দা পার্ক। এখানে প্রবেশ টিকেট জনপ্রতি ১০০ টাকা। লাইব্রেরির প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা।
আহসান মঞ্জিল
ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে প্রভাবশালী জমিদার পরিবারের সাক্ষী হয়ে আছে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেষা এই গোলাপী প্রাসাদটি। প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই পর্যটকরা যেন নিজেদের আবিষ্কার করেন প্রাচীন কোন নগরীতে।
আরও পড়ুন: কাতার ভ্রমণ: বিভিন্ন শহরের শীর্ষস্থানীয় ১০ দর্শনীয় স্থান
একসময়ের পুরনো ঢাকার সবচেয়ে উচু ভিত্তির ওপর স্থাপিত এই দালানটি ১৯৯২ সাল থেকে জাদুঘর হিসেবে উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত জাদুঘরটি ঘুরে বেড়াতে ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করতে হয়। শুধু শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এছাড়া বৃহস্পতিবারসহ বিভিন্ন সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে এই দর্শনীয় জায়গাটি।
লালবাগ কেল্লা
পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় অবস্থিত বিধায় প্রাচীন ঢাকার এই দুর্গটির নামকরণ করা হয়েছে লালবাগ কেল্লা হিসেবে। মুঘল সাম্রাজ্যের দুর্দান্ত এই শৈল্পিক স্বাক্ষরটি ঔরঙ্গাবাদ দুর্গ নামেও পরিচিত। তিনটি দালানে পরিবেষ্টিত দুর্গের কেন্দ্রীয় এলাকাটি। পূর্বে দিওয়ান-ই-আম ও হাম্মাম, পশ্চিমে মসজিদ। আর এই দুয়ের মাঝখানে পরী বিবির সমাধি।
আরো পড়ুন: চট্টগ্রাম ভ্রমণ গাইড: ঘুরে আসুন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্দর নগরী
সুন্দর ফোয়ারার একটি জলধারা তিনটি ভবনকে সংযুক্ত করেছে। পুরো স্থাপনাটি অবস্থিত বুড়িগঙ্গা নদী তীরের সমৃদ্ধ লাল মাটিতে। কেল্লা রবিবার বাদে প্রতিদিনি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মাঝে দুপুর ১টা থেকে দেড়টা আধঘন্টা বন্ধ থাকে। এছাড়া যে কোন সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে লালবাগ কেল্লা।
গোলাপ গ্রাম
সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাদুল্লাপুরে তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত গোলাপ ফুলের এক বিস্ময়কর রাজ্যের নাম গোলাপ গ্রাম। এখানকার লাল, হলুদ ও সাদাসহ রঙ-বেরঙের গোলাপগুলো যে কোন পর্যটকের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। রাজধানীতে গোলাপ ফুল যোগানের একটি বিরাট অংশ পুরণ করে এই গ্রামটি। গোলাপের ক্ষেত্রে মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা সরু পথ নিমেষেই ভুলিয়ে দেবে শহরের যত কোলাহল।
এখানকার শ্যামপুর গ্রামে প্রতি সন্ধ্যায় বসে গোলাপের জমজমাট হাট। সেখানকার আবুল কাশেম বাজার ছাড়াও মোস্তাপাড়ার সাবু বাজারের সন্ধ্যাগুলো প্রতিদিনি মুখরিত থাকে ফুল ব্যবসায়ীদের আনাগোনায়। ঢাকা থেকে বিরুলিয়ায় সরাসরি বাস সার্ভিস আছে। তবে মিরপুর ১-এর দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট থেকে নৌকা ভ্রমনটি সবচেয়ে রোমাঞ্চকর যাত্রা।
আরো পড়ুন: ভারতের টুরিস্ট ভিসা কীভাবে পাবেন: আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রসেসিং ফি
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান
ঢাকা নগরবাসীর বনভোজনের জন্য সেরা জায়গা হলো গাজীপুর। আর সেই গাজীপুরের প্রধান আকর্ষণ হলো এই ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। এখানে আছে চিড়িয়াখানা, ভাওয়ালের প্রাচীন গাছ শালের বন এবং একাধিক পিকনিক স্পট। চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে বাঘ, চিতাবাঘ, মেছোবাঘ, হাতি, ময়ূর ও হরিণের। থাকার জন্য আছে ১৩টি কটেজ এবং ৬টি বিশ্রামাগার। যাওয়ার জন্য আগে ভাগেই বুকিং দিয়ে নিতে হবে।
উদ্যানটিতে জনপ্রতি ৫০ টাকা প্রবেশ মূল্যে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা অব্দি ঘুরে বেড়ানো যাবে।
ঢাকা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পেরিয়ে ময়মনসিংহ রুটে একদম ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের গেটের সামনে নামা যায়।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে ৩০০০ ফুটের অধিক উচ্চতার ১৪ পাহাড়
নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট
বনভোজনের জন্য রিসোর্ট খুঁজতে গেলে ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই থাকে গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুরের এই রিসোর্টটি। নাট্য দম্পতি তৌকির আহমেদ ও বিপাশা হায়াত ২০১১ সালে প্রায় ২৫ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করেন এই রিসোর্ট।
সবুজে ঘেরা জায়গাটিতে গড়ে তোলা হয়েছে দীঘি, ঝর্ণা, সুইমিংপুল ও কনফারেন্স হল। তাই পরিবার-পরিজন কিংবা অফিসের কলিগদের নিয়ে পিকনিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট সেরা জায়গা।
এই রিসোর্টে যেতে হলে প্রথমে ঢাকা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তার পর ময়মনসিংহ রোড ধরে পৌঁছাতে হবে রাজেন্দ্রপুরের রাজাবাড়িতে। তারপর রাজাবাড়ি বাজার থেকে ডান দিকে চিনাশুখানিয়া গ্রাম পর্যন্ত গেলেই পাওয়া যাবে নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট। রিসোর্ট ঘুরে দেখতে ৫০০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিতে হবে।
আরো পড়ুন: সমুদ্রে স্নানের সময় সতর্ক থাকতে করণীয়
শেষাংশ
পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে বনভোজনের জন্য ঢাকার নিকটবর্তী ১০টি মনভোলানো স্থান শুধু একটি দিনকে স্মরণীয় করবে না; নতুন উদ্যমে কর্মব্যস্ত সপ্তাহটি শুরু করতেও শক্তি যোগাবে। এগুলোর প্রতিটি স্থানই প্রিয়জনদের নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর জন্য একটি নিখুঁত প্রবেশদ্বার। তবে বনভোজনের পূর্বপ্রস্তুতিতে অবশ্যই সতর্কতামূলক কর্মকাণ্ডগুলোকে খেয়াল রাখতে হবে। সুন্দর পরিবেশকে সুন্দর রাখতে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, আনন্দের আতিশয্য যেন স্থানীয়দের বিরক্তির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।