জীবনধারা
শেরপুরে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় মানুষের ঢল
পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও শেরপুর শহরের নবীনগর ছাওয়াল পীরের দরগা সংলগ্ন খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দুই শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। শুক্রবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নবীনগর এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মেলায় সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছিল।
পৌষমেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ‘গাঙ্গি’ খেলা (কুস্তি) ছাড়াও ঘোড়দৌড়, সাইকেল রেস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কারর বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. নজরুল ইসলাম।
শেরপুরের এ পৌষ মেলার প্রধান আকর্ষণ ‘গাঙ্গী খেলা’। বড়-মাঝারি-ছোট এ তিনটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হয় গাঙ্গী খেলা। মেলায় বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের দোকানেও ছিল ব্যাপক ভিড়। শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে পৌষমেলা হয়ে উঠেছিলো জমজমাট ও প্রাণবন্ত।
রাতে এ উপলক্ষে দরগাহ প্রান্তরে আয়োজন করা হবে বাউল গানের আসর।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও পৌষ মেলা আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী শেখ মমতাজ জানান, স্থানীয় নবীনগর এলাকাবাসী প্রায় ২০০ বছর যাবত এ মেলার আয়োজন করে আসছে। প্রতি বছর বাংলা পৌষ মাসের শেষদিন (পঞ্জিকা মতে) ছাওয়াল পীরের দরগাহ সংলগ্ন মাঠে এ পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য বজায় রেখে এবছরও পৌষমেলার আয়োজন করেছি। এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। এর মধ্য দিয়ে গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতি লালনের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় হয়।
আরও পড়ুন: ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই’
কসমস আতেলিয়ার৭১ এর আয়োজনে 'আর্টিস্ট রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম'
‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম, আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই।
মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভূমিকা বিষয়ক গবেষক সিহাবুল ইসলামের গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
বুধবার ইউএনবিতে সম্প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠান ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ সিরিজের তৃতীয় পর্ব ‘নারী ও ৭১’ এ অতিথি হিসেবে ছিলেন সিহাবুল ইসলাম। তরুণ প্রজন্মের এই গবেষক মুক্তিযুদ্ধে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে হিন্দু জনগোষ্ঠী ও নারীদের ওপর পাক বাহিনীর চালানো বহুমাত্রিক নির্যাতন এবং মুক্তিযুদ্ধে এই দুই জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক অবদান নিয়ে দুটি সমৃদ্ধ বই রচনা করেছেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো নির্মম গণহত্যা নিয়ে ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ শিরোনামের চার পর্বের আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে ইউএনবিতে। এর আগে ১৬ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের প্রথম পর্ব ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পরাজয়’ এবং ২৩ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ‘গণহত্যা ও ৭১’।
আরও পড়ুন: গণহত্যা নিয়ে ইউএনবিতে আলোচনা অনুষ্ঠান
চার পর্বের এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করছেন ইউএনবি’র এডিটর এট লার্জ আফসান চৌধুরী। তিনি একজন শিক্ষক, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাংবাদিক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন আফসান চৌধুরী।
গবেষণা করতে গিয়ে সিহাবুল ইসলাম দেখেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম, আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি একেবারেই নেই। এমনকি তাদের ওপর চলা নির্যাতনের চিত্রও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণায় তেমন উঠে আসেনা।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, তেমনি এদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীদের ওপর পাকবাহিনীর চালানো বহুমাত্রিক নির্যাতনের চিত্রও আমাদের মূলধারার ইতিহাস চর্চায় উঠে আসেনি। আমাদের পত্র-পত্রিকা, পাঠ্য বই;কোথাও আমরা এইসব বিশদ ইতিহাস খুঁজে পাইনা।
গবেষক এ জন্য আমাদের গবেষকদের মানসিকতার পশ্চাদপদতাকে দায়ী করেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাস জানতে গ্রামে যেতে হয়, আমাদের গবেষকরা এই কষ্টটা করতে চান না। গুগল-উইকিপিডিয়ার এই যুগে তারা,সহজ পন্থা অনুসরণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য করেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আবার গবেষক আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না।
সঞ্চালক আফসান চৌধুরীর করা এক প্রশ্নের জবাব আলোচক সিহাবুল ইসলাম আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নারীর ওপর ধর্ষণ ছাড়াও বহুমাত্রিক নির্যাতন হয়েছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী; এই নারীদের প্রকৃত ইতিহাস এই পঞ্চাশ বছরেও অদৃশ্য হয়ে আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারীর ইতিহাস ১০-২০ শতাংশও উঠে আসেনি।
আরও পড়ুন: জাতীয় গণহত্যা দিবস আজ
মুক্তিযুদ্ধে নারীর কথা বললেই আমাদের প্রচলিত গবেষণাগুলোতে শুধু শারিরীক নিপীড়নের কথাই উঠে আসে। কিন্তু নারীর অবদান শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ না। নারী সেসময় যেমন শারিরীকভাবে নির্যিাতিত হয়েছে, তেমনি অনেক নারী সরাসরি যুদ্ধ করেছে, অনেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছে। এছাড়া সেসময় অধিকাংশ সংসারের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে নারীরা। তারা ধান কেটেছে, শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছে আরও বহু কাজ করে সমাজটাকে টিকিয়ে রেখেছে।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মতো নারীদের অবদানও আমাদের ইতিহাস চর্চায় না উঠে আসার কারণ হিসাবে আলোচক আমাদের গবেষকদের লিঙ্গ বৈষম্যমূলক মনোভাবকে দায়ী করেন।
সবশেষে আমাদের মূলধারার ইতিহাস চর্চায় হিন্দু ও নারীদের তথা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাস তুলে ধরার জন্য গবেষক সিহাবুল ইসলাম এ সময়ের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান করেন। লেখা, গবেষণা, সিনেমা, অডিও-ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যম কাজে লাগিয়ে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে তুলে ধরা উচিত। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এই গুরু দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের হাতেই পুরো ইতিহাস চর্চার ভাগ্য নির্ধারণী পড়ে আছে। তাদের চেষ্টায়ই আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীগুলো আমাদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণহত্যার ‘স্বীকৃতি’ আদায়ে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) পালন করা হচ্ছে।
১৯১৪ সালের আজকের এই দিনে সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারি এ শিল্পী কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ফোক আর্ট মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার পিছনে এ মানুষটির ভূমিকা ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে কিংবদন্তি শিল্পীর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে।
বেলা ১১টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।
আরও পড়ুন: লা গ্যালারিতে শুরু হলো ‘ক-সম্বন্ধীয়’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনী
ঐতিহাসিকভাবে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে আঁকা ছবিগুলোর জন্য তিনি বিখ্যাত। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে কাটানো শৈশবে শিল্পের প্রতি অনুরাগী হয়ে উঠেন জয়নুল। ১৯৩৩ সালে কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি। ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা ছেড়ে স্থায়ীভাবে মাতৃভূমি বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ফিরে আসেন।
ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পেছনে জয়নুল সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিলেন এবং ১৯৪৯ সালে এর অধ্যক্ষ হন। পরে এ ইনস্টিটিউট থেকেই আজকের চারুকলা অনুষদে হয়েছে।
ইনস্টিটিউট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চারুকলা অনুশীলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল এবং জয়নুলের শৈল্পিক নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতে শিল্পীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান এবং ইনস্টিটিউট থেকে তাকে শিল্পাচার্য (চারুকলার গুরু) উপাধিতে ভূষিত হন।
১৯৭৩ সালে জয়নুল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লেটার্স (ডি-লিট) পান। ১৯৭৫ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করা হয়। ২০০৯ সালে এ আইকনিক চিত্রশিল্পীর সম্মানে নাসা বুধ গ্রহের একটি গর্তর নাম রাখেন ‘আবেদীন ক্রেটার’।
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৬ সালের ২৮ মে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মারা যান।
শীতের অতিথি পাখি দেখতে কোথায় যাবেন?
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের পাখিরা তাদের খাবারে সন্ধানে, প্রজনন এবং ছানাদের লালন-পালনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের খোঁজে হাজার হাজার মাইল উড়ে যায়। বাংলাদেশে অতিথি পাখিরা আসে মূলত উত্তর মেরু, ইউরোপ, সাইবেরিয়াসহ রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল, মঙ্গোলিয়া এবং হিমালয়ের পাদদেশ থেকে। নিজেদের জায়গা থেকে তুলনামূলকভাবে কম শীতল হওয়ায় বাংলাদেশকে বেছে নেয় এই পরিযায়ী পাখিগুলো। এই অতিথি পাখিদের ভীড় করা দেশের কয়েকটি স্থানের তালিকা নিয়েই এবারের ফিচার।
শীতের অতিথি পাখি দেখতে কোথায় যাবেন
ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের এলাকা
ঢাকার ভেতরে অতিথি পাখির দেখা মেলে পিলখানা, মিরপুর চিড়িয়াখানা ও মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের পার্শ্ববর্তী লেকে। তবে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির ভীড় প্রাণ ভরে উপভোগ করতে হলে যেতে হবে ঢাকার নিকটে সাভার উপজেলায় অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হওয়া নয়নাভিরাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ২০১৪ সালে ঘোষণা করা হয় অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে।
আরও পড়ুন: ঢাকার কোথায় ভালো পরিবেশে সাঁতার শেখা যায়
সিলেটের হাওড় এলাকায়
হাওড়, নদী ও পাহাড়ের সমৃদ্ধ সিলেটে অতিথি পাখিগুলো খুঁজে পায় পরম আশ্রয়। সিলেট বিভাগজুড়ে বিস্তৃত হাকালুকি হাওড়, মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিল, হাইল হাওড় ও পাত্রখোলা লেক, সুনামগঞ্চের টাঙ্গুয়ার হাওড় ও রোয়া বিল-এ প্রতি বছরই মুখরিত হয়ে উঠে অতিথি পাখির কলকাকলিতে।
ঢাকার কোথায় ভালো পরিবেশে সাঁতার শেখা যায়
সারা শরীরের রক্ত সঞ্চালন এবং হৃদযন্ত্রে কার্যকলাপ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার চমৎকার উপায় হলো সাঁতার। এক ঘণ্টা সাঁতার কাটা হাড় এবং জয়েন্টগুলোতে কোন নেতিবাচক প্রভাব ছাড়াই শরীরের ক্যালোরি খরচ করতে সাহায্য করে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ব্যথা কমাতে বা শারীরিক সুস্থতাকে ত্বরান্বিত করার জন্যও সাহায্য করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা শারীরিকভাবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন বা দীর্ঘ দিন ধরে আহত ব্যক্তিদের ব্যায়ামের জন্য সাঁতারকে বেছে নিতে বলেন। এছাড়া দুশ্চিন্তা কমিয়ে মানসিক প্রশান্তি লাভের ক্ষেত্রেও সাঁতার বেশ কার্যকর। তাই চলুন জেনে নিই, ঢাকার কোথায় ভালো পরিবেশে সাঁতার শেখা যায়।
ঢাকায় সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিংপুল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার শেখার জন্য ২ হাজার ১০ টাকা দিয়ে ৪৫ মিনিট করে ১৬টি ক্লাস করা যায়। দ্বিতীয় মাসে অনুশীলন করতে চাইলে নবায়ন ফি বাবদ এক হাজার টাকা দিতে হয়। এখানকার শিক্ষার্থীরা ১০০ টাকা দিয়ে সপ্তাহে দুটো করে ক্লাস করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সুইমিংপুলের সদস্য নিতে পারেন ২৬০ টাকা দিয়ে। বিকালের শিফটে সুইমিংপুলের সদস্যদের ফি ছয় মাসের জন্য ৮ হাজার টাকা ও এক বছরের জন্য ১২ হাজার টাকা।
এখানে ভর্তি হওয়া যাবে সাত বছর বয়স থেকে, কিন্তু প্রশিক্ষনার্থীকে লম্বায় কমপক্ষে অবশ্যই চার ফুট হতে হবে। সুইমিংপুলের সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
সৈয়দ নজরুল ইসলাম জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্স, মিরপুর
এই সুইমিংপুলে এক ঘণ্টা করে সাঁতার কাটা যায়। এখানে ভর্তির বয়স কমপক্ষে আট বছর। রবিবার ও সোমবার বাদে প্রতিদিনি খোলা থাকে সুইমিংপুলটি। ভর্তি ফি তিন হাজার টাকা দিয়ে মাসের যে কোন দিন-ই সাঁতার প্রশিক্ষণে ভর্তি হওয়া যাবে। প্রশিক্ষণের মেয়াদ ত্রিশ দিন যেখানে প্রতি সপ্তাহে ক্লাস থাকবে পাঁচ দিন। দ্বিতীয় মাস থেকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হয়। এছাড়া একদিন সাঁতার কাটতে চাইলে এক ঘণ্টার জন্য ২৫০ টাকা। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা সাঁতার শেখার ব্যবস্থা আছে। দশ বছরের নিচে প্রশিক্ষণার্থীর ক্ষেত্রে সাথে একজন অভিভাবক সুইমিংপুলে প্রবেশ করতে পারবেন।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সুইমিংপুল
এই সুইমিংপুলটি শুধুমাত্র ছেলেদের জন্য। সাত বছর বয়স থেকে এখানে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি নেয়া হয়। প্রথম মাসে ভর্তি ফি আড়াই হাজার এবং দ্বিতীয় মাস থেকে দুই হাজার টাকা। মাসের যে কোন দিন ভর্তি হয়ে শুরু করা যাবে ত্রিশ দিনব্যাপি কোর্সটি। সপ্তাহে পাঁচ দিন এক ঘণ্টা করে ক্লাস। সাপ্তাহিক বন্ধ মঙ্গলবার, বুধবার এবং সোমবার বিকালে। শুধুমাত্র যারা সাঁতার জানেন তাদের একদিনের সাঁতার অনুশীলনের জন্য ঘণ্টা প্রতি নেয়া হয় ২০০ টাকা।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত আবেগ হতে পারে শরীরের ক্ষতির কারণ
কসমস আতেলিয়ার৭১ এর আয়োজনে 'আর্টিস্ট রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম'
বাংলাদেশের চিত্রশিল্পীদের জন্য স্টুডিও-ভিত্তিক শিল্প চর্চাকে উৎসাহিত করে প্রিন্টমেকিং-এর মাধ্যমকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে 'আর্টিস্ট রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম'-এর মাধ্যমে নতুন ও প্রতিভাবান শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে কসমস আতেলিয়ার৭১।
সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীর মালিবাগের কসমস সেন্টারের কসমস আতেলিয়ার৭১-এ শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান ডিসেম্বর মাসব্যাপী চলবে। বছরে সাধারণত দু’বার অনুষ্ঠিত হয় এই 'আর্টিস্ট রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম'।
দেশের চারজন প্রতিভাবান চিত্রশিল্পী ও ভিজ্যুয়াল শিল্পী-ইকবাল বাহার চৌধুরী, ফারজানা রহমান ববি, কামরুজ্জোহা ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু কালাম শামসুদ্দিন এবারের রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। এচিং অ্যাকোয়াটিন্ট, উড ইন্টাগ্লিও, ড্রাইপয়েন্ট, কোলাগ্রাফ-এই চারটি মাধ্যম তারা নিজ নিজ থিমের ওপর ভিত্তি করে কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: 'ইনসাইড আউট’: শিশুদের জন্য গ্যালারি কসমসের দিনব্যাপী পেইন্টিং ও অরিগামি ওয়ার্কশপ
পুষনা উৎসবে মেতেছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা
সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির ভূমি অধিকার রক্ষা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় পুষনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সদর উপজেলার শ্রীকৃষ্ণপুর সীতা আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মঞ্চস্থ হলো গণহত্যা বিষয়ক নাটক ‘ডাকরা ও তারপর’
একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে সুমন বেশরার সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুল জব্বার, শাহ্ মো. আমিনুল হক, ঝর্না বেগম, ইয়্যুথ দলের সদস্য সানি মার্ডি, মুন্নি টুডু, সীতা হেমব্রম, আরতি মার্ডি, নজরুল ইসলাম, ম্যানুয়েল হেমব্রম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: চীবর দানোৎসবে মুখর পাহাড়
বঙ্গমাতার ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব-এর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে সারা দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্মাতক পর্যায়ে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। যার উদ্যোগে ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ। রবিবার বিকাল ৪টায় একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত হিসাবে ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক জনাব আশরাফুল আলম পপলু।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ৮-৩১ আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত সারাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতক এই দুই বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার ও ফেলোশিপ প্রদান
বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার ও ফেলোশিপ প্রদান
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পরিচালিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাহিত্য পুরস্কার ও সাম্মানিক ফেলোশিপ ২০২১ প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নজরুল মঞ্চে আয়োজিত ৪৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় পুরস্কারপ্রাপ্তদের ক্রেস্ট, সম্মাননা সনদ ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
২০২১ সাদাত আলী আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি, সাহিত্যিক ও সংগঠক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা, মেহের কবির বিজ্ঞান সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন পাখি বিজ্ঞানী ইনাম আল হক, হালিমা শরফুদ্দীন বিজ্ঞান পুরস্কার পেয়েছেন ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী ,অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ নাট্যজন পুরস্কার পেয়েছেন ফেরদৌসী মজুমদার, সাহিত্যিক মো. বরকত উল্লাহ প্রবন্ধ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মাজহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার পেয়েছেন ছড়াকার ও শিশু সাহিত্যিক সুকুমার বড়ুয়া।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মঞ্চস্থ হলো গণহত্যা বিষয়ক নাটক ‘ডাকরা ও তারপর’
এছাড়াও সভায় সাত জনকে বাংলা একাডেমি সাম্মানিক ফেলোশিপ-২০২১ প্রদান করা হয়। ফেলোশিপ প্রাপ্তরা হলেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, কবি আজিজুর রহমান আজিজ, সিআরপি'র প্রতিষ্ঠাতা ভেলরি এ.টেইলর, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম, সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার অধ্যাপক শেখ সাদী খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্য ব্যক্তিত্ব এম. হামিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুস।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা ও অনুষ্ঠানের সভাপতি রামেন্দ্র মজুমদা পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও চেক তুলে দেন।
পড়ুন: মুকুট জিতে যেসব সুবিধা পাবেন নতুন মিস ইউনিভার্স
বড়দিন: রাঙামাটির খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
বড়দিন উদযাপনে রাঙামাটির খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের মধ্যে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। এ উপলক্ষে গীর্জাগুলোকে ফুল দিয়ে নানান রঙে সাজাঁনো হয়েছে।
গত দুই বছর করোনার কারণে স্বল্প পরিসরে বড়দিন পালন করলেও এবছর করোনার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন উদযাপন করবেন খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা।
রাঙামাটি শহরে সাতটি খ্রিস্টান পল্লী রয়েছে। তার মধ্যে আসামবস্তি, নতুনবস্তি, বন্ধু যীশুটিলা, রির্জাভমুখসহ অন্যান্য গ্রামের মানুষ গীর্জায় প্রার্থনা করে নানা আয়োজনে প্রভু যীশুর জন্মদিন পালন করবেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বড়দিন ঘিরে নানা আয়োজন, নিরাপত্তা জোরদার
এছাড়া কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা ও বিলাইছড়ির পাংখো পাড়ায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী পাংখো ও খিয়াং সম্প্রদায়ের মানুষ বড় দিন উৎযাপন করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
রাঙামাটি ক্যাথলিক চার্চের ফাদার জেওমে ডি. রোজারিও বলেন, দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধির পাশাপাশি পাহাড়ের শান্ত পরিস্থিতি ও করোনার পরিস্থিতিতে সকল মানুষ যাতে সুস্থ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে প্রভু যীশুর জন্মদিনে এমনটাই প্রার্থনা করবে সকলে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে গুর্খা সম্প্রদায়ের ‘টিকা লাগাউনে’ উৎসব