লাইফস্টাইল
মুকুট জিতে যেসব সুবিধা পাবেন নতুন মিস ইউনিভার্স
গত ১৩ ডিসেম্বর হয়ে গেল মিস ইউনিভার্স ২০২১ এর ৭০-তম আসর যেখানে গালা রাউন্ডে বিশ্ববাসীর অবাক দৃষ্টির সামনে বহু প্রত্যাশিত মুকুটটি জিতে নিলেন ভারতের চণ্ডীঘরের মেয়ে হারনাজ সান্ধু। এত বড় একটা অর্জন তার সামনে উন্মুক্ত করে দিয়েছে বিস্তর পথ, যেখানে বিগত আসরের মুকুটধারীদের মতই মিস ইউনিভার্স প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে পাবেন ২১ বছর বয়সী হারনাজ। চলুন, জেনে নিই কী কী সুবিধা পেয়ে থাকেন মিস ইউনিভার্সরা।
নতুন মিস ইউনিভার্স কী কী সুবিধা পাচ্ছেন?
সবচেয়ে দামী মুকুট
এবারের বিশ্ব সুন্দরীর মুকুটের মূল্য ৫০ লাখ মার্কিন ডলার বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪২ কোটি ৯২ লাখেরও বেশি, যা এ পর্যন্ত মিস ইউনিভার্স ইভেন্টের সবচেয়ে দামি মুকুট। হারনাজের পূর্বে এই মুকুট পড়েছিলেন মিস ইউনিভার্স ২০১৯ দক্ষিণ আফ্রিকার জোজিবিনি তুঞ্জি ও মিস ইউনিভার্স ২০২০ মেক্সিকোর আন্দ্রেয়া মেজা।
আরও পড়ুন: ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
‘ঐক্যের শক্তি’ স্লোগানের বহুজাতিক অলঙ্কার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মৌওয়াদ ২০১৯ সালে মিস ইউনিভার্স ২০২১ এর জন্য তৈরি করে মুকুটটি। পাপড়ি, পাতা এবং লতার সজ্জায় ১৮-ক্যারেট সোনা এবং ১৭২৫ টি সাদা হীরার বিন্যাস সাতটি মহাদেশ জুড়ে নারীদের পারস্পরিক বন্ধন এবং নেতৃত্বের প্রতিফলক। কেন্দ্রের তিনটি সোনার ক্যানারি রঙের হীরা উচ্চাকাঙ্ক্ষী নারীর প্রতীক বহন করছে।
আকারের দিক থেকে সবচেয়ে ছোট হলেও হীরা ক্যারেট ওজনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় এবারের মুকুট। শুধুমাত্র কেন্দ্রের পাথরের ওজনই ৬২.৮৩ ক্যারেট।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দশটি প্রাচীন মসজিদ: দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
অর্থ পুরস্কার
২০২১ এর মিস ইউনিভার্স অর্থ পুরস্কার হিসেবে পাচ্ছেন আড়াই লাখ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দুই কোটি সাড়ে ১৪ লাখেরও বেশি।
আবাসন সুবিধা
মিস ইউনিভার্স নিউইয়র্ক সিটির অ্যাপার্টমেন্টে পুরো এক বছরের জন্য বসবাস করতে পারেন। তার সাথে মিস আমেরিকাও এই অ্যাপার্টমেন্টটি শেয়ার করেন। এ সময়ে নিউইয়র্কের সামগ্রিক জীবনযাত্রার ব্যয় ভার বহন করে মিস ইউনিভার্স প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: মিস ইউনিভার্স ২০২১: কে এই হারনাজ সান্ধু
লা গ্যালারিতে শুরু হলো ‘ক-সম্বন্ধীয়’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনী
আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হলো শিল্পী আজিজি ফাওমি খানের ‘ক—সম্বন্ধীয়’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনী। শুক্রবার এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান উনিয়নের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স জেরেমি ও প্রিতেসকো।
প্রদর্শনীতে একটি পেইন্টিং ইন্সটলেশন এবং কয়েকটি ড্রয়িং প্রজেক্ট ও ১৫টি এক্রিলিক চিত্রকর্ম চোখে পড়বে।প্রদর্শনী প্রসঙ্গে আজিজি ফাওমি খান জানান, বিগত পাঁচ বছরের পরিভ্রমণের পুরোটা পথ তার চিত্রে ফুটে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে তাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে শৈশব ও তার পূর্বজদের জীবন। এছাড়াও চিত্রকর্মগুলোতে দেখা যায় প্রতীয়মান লোকজ মোটিফ এবং দেশীয় প্রেক্ষাপট এর মিলন।
যার সঙ্গে রয়েছে ইম্প্রেশনিস্টিক ধারায় তার চর্চার ছাপ। প্রথাগত চর্চার পাশাপাশি, আজিজি আরও কাজ করেছেন পুরনো আলোকচিত্র ও ঐতিহাসিক ধারণা নিয়ে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ‘কনসার্ট ফর মাইগ্রেন্টস’ শনিবার
ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
স্বাধীনতা যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর কাল সাক্ষী হয়ে আছে অতি প্রাচীন এই নগরী ঢাকা। যুদ্ধের প্রেক্ষাপট পালটে দিতে যেমন অনেক কৃতি সন্তানের বিচরণ ঘটেছে এর পিচঢালা পথে, তেমনি বিস্ফোরণের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানীর বুক। সেই সব চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলোকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে এখানে তৈরি করা হয়েছে অনেক স্মৃতিস্তম্ভ যেগুলো আজও মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা। বিমূর্ত ভাস্করগুলো যেন এখনও প্রচার করে যায় মুক্তিযুদ্ধের বাণী। চলুন, এই বিজয়ের মাসে ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-স্মারকগুলোর ব্যাপারে কিছু জেনে নেয়া যাক।
ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
স্বাধীনতা স্তম্ভ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই জ্বালাময়ী ভাষণের জন্য বিখ্যাত এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এটি সেই ময়দান যেখানে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করেছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই তাৎপর্য চিহ্নিত করতে সেখানে স্বাধীনতা সৌধ নামে একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। স্তম্ভটির নকশা করেছেন কাশেফ মাহবুব চৌধুরী ও মেরিনা তাবাসসুম। ১৫০ ফুট লম্বা এবং ১৬ ফুট প্রশস্ত কাঠামোটি মূলত একটি কাচের টাওয়ার। পশ্চিম দিকে একটি ছোট্ট লেক এবং পূর্ব দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর বানানো একটি পোড়ামাটির ম্যুরাল রয়েছে। এই স্মৃতিস্তম্ভের নীচে স্বাধীনতা জাদুঘর।
আরও পড়ুন: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক: সুজেয় শ্যাম
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, রায়ের বাজার বধ্যভূমি
ঢাকার পশ্চিমে মিরপুর বেড়ি বাধেঁর পাশে অবস্থিত এই শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন যুদ্ধে আসন্ন পরাজয় টের পেল, তখন তারা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে হত্যা করে এখানকার পরিত্যক্ত ইটের ভাটার পেছনের জলাশয়ে ফেলে রেখেছিলো। এর মধ্যে ছিলেন শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, শিল্পী, এবং আইনজীবী, যারা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের রূপকার হতেন।
নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ‘কনসার্ট ফর মাইগ্রেন্টস’ শনিবার
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবস উপলক্ষে নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ১৮ ডিসেম্বর ‘কনসার্ট ফর মাইগ্রেন্টস’ নামে একটি ভার্চুয়াল কনসার্ট আয়োজন করবে।
দ্বিতীয়বারের মতো হতে যাওয়া কনসার্টের লক্ষ্য হলো অভিবাসী ও তাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা এবং তথ্য ও বিনোদনের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসনকে উৎসাহিত করা।
প্রথম ‘কনসার্ট ফর মাইগ্রেন্টস’ ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হয় যেখানে ২০ টিরও বেশি দেশের ৪০ লাখেরও বেশি দর্শক ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়।
সারাবিশ্বে কর্মরত প্রায় ৭৪ লাখের মতো বাংলাদেশি প্রবাসী এ কনসার্টের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবে এবং কনসার্টটি দেখতে পারবে।
আরও পড়ুন: চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বিজয় মেলা: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা
ভার্চুয়াল এ কনসার্টে গান পরিবেশন করবেন কুমার বিশ্বজিৎ, ফজলুর রহমান বাবু, শিরোনামহীন, লুইপা, আসিফ আকবর, কুদ্দুস বয়াতি, নন্দিতা, প্রীতম আহমেদ, মাশা ইসলামসহ জনপ্রিয় শিল্পীরা।
এ কনসার্টে বেশিরভাগ লোকসঙ্গীত ও সমসাময়িক সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে। মূলত যে গানগুলো সম্পর্কে অভিবাসী, তাদের পরিবার ও সাধারণ সম্প্রদায়ের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে।
বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকরা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ রেমিটেন্স অর্জনকারী দেশ এবং ১৯৭৬ সাল থেকে অভিবাসীরা ২৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন।
আইওএম বাংলাদেশের অফিসার ইনচার্জ ফাতিমা নুসরাথ গাজ্জালি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবসে, এই কনসার্টের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে অবদান রাখা বাংলাদেশি প্রবাসীদের আমরা সম্মান জানানোর সুযোগ পেয়েছি।’
তিনি বলেন, নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও বৈধ অভিবাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে এই কনসার্ট দর্শকদের অবহিত করবে এবং একইসঙ্গে বিনোদন দেবে।
আরও পড়ুন: ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক: সুজেয় শ্যাম
কনসার্টকে সামনে রেখে কুমার বিশ্বজিৎ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘অনুগ্রহ করে কোনো ফাঁদে পা দেবেন না এবং বিদেশে অভিবাসনের সময় মানব পাচারের শিকার হবেন না। একটি সচেতন সিদ্ধান্ত নেয়াই নিরাপদে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সর্বোত্তম উপায়।’
অভিনেতা ও গায়ক ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘অভিবাসন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। কিন্তু এরপরও অনেক অভিবাসী অবৈধভাবে বিদেশে যাচ্ছেন।’
চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বিজয় মেলা: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা
প্রতিবছরের মতো চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এবারও অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দিনব্যাপী বিজয় মেলা। ‘বিজয়ের ৫০’ শিরোনামে এই আয়োজন শুরু হয় বেলা ১১টা ৫ মিনিটে। অনুষ্ঠানে ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চ্যানেল আই পরিচালনা পর্ষদ সদস্য জহিরউদ্দিন মাহমুদ বাবু এবং চ্যানেল আই—এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ প্রমুখ।দেশাত্মবোধক গান গেয়ে অনুষ্ঠানে প্রাণ সঞ্চার করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর শিল্পীরা। এসময় স্মৃতিচারণ করেছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য ও অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্টজনরা।
শিল্পী মনিরুল ইসলামের নেতেৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চিত্রাংকন করেছেন একদল শিল্পী। ছোট পরিসরে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ও মুক্তিযুদ্ধের দলিল সম্বলিত স্টলও ছিল মেলায়।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রীবীর শহীদদের স্মরণে এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘৫০ বছরের অর্জন ও আনন্দের বিজয় দেখে যেতে পারবো ভাবিনি। আমাদের কাছে অভাবনীয় সাফল্যের দিন আজ। এদিনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানাতে পারবো চিন্তার বাইরে ছিল। জীবন বাজি রেখে যেসব মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাদের সালাম ও শ্রদ্ধা জানাই। এই শ্রদ্ধাঞ্জলি শুধু এখানকার ৫০ জন যোদ্ধাদের নয়, সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের। তারা এগিয়ে না এলে আমরা এদেশ পেতাম না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকের কমবেশি ক্ষমতা রয়েছে। এর সঙ্গে একটু মমতা মিশিয়ে প্রত্যেকে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে এলেই বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারবে। তাহলেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও আমাদের বাংলাদেশ ভালো থাকবে।অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে তাদের হাতে সম্মাননাসূচক ক্রেস্ট তুলে দেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম, চ্যানেল আই পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা।
বীর শহীদদের স্মরণ করে শাইখ সিরাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। পরবর্তী ৫০ বছরে দেশ যেখানে যাবে সেই স্বপ্ন আমরা এখনই দেখা শুরু করেছি। আমাদের সবার প্রচেষ্টা ও কল্যাণে দেশ যেভাবে অগ্রগামী হচ্ছে আগামীতে আরও এগুবে। সেদিন আমরা হয়তো থাকবো না, থাকবে নতুন প্রজন্ম।অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম, লায়লা হাসানসহ আরও অনেকে।
পড়ুন: স্বাধীনতার লক্ষ্য এখনো বাস্তবায়িত হয়নি: ফখরুল
ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
ওজন কমানোর জন্য সর্বোত্তম উপায় হলো নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। একদম শূন্য ক্যালোরির হওয়ায় অতি সাধারণ এই খাবার পানি কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই শরীরকে সরাসরি হাইড্রেটেড রাখতে পারে। যারা ইতোমধ্যে নিয়মিত পানি খাওয়ার অভ্যাসের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছেন তাদের সুষম খাবারের সঙ্গে আর কোন পানীয়র সংযোজনের প্রয়োজন পড়ে না। তবে একটু মুখরোচক ও শরীরের তাৎক্ষণিক চাঙ্গা ভাবের জন্য যারা পানির সঙ্গে যথাযথ পুষ্টিও পান করতে চাইছেন তাদের জন্যও রয়েছে উপযুক্ত উপায়। ১০ কার্যকরী পানীয়র ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ওজন কমানোর জন্য ১০ পানীয়
জাম্বুরা ও ডালিমের শরবত
ওজন কমাতে জাম্বুরা খুবই কার্যকরী। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং পোস্ট-গ্লুকোজ ইনসুলিনের মাত্রা উন্নত করে দেহের স্থুলতা কমায়। আর ডালিম প্রদাহ কমাতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে যা মূলত ওজন হ্রাসের দিকে ধাবিত করে।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
নারকেলের পানি
অল্পের মধ্যে পুরো একবেলা আহারের জন্য নারকেলের জুড়ি নেই। এর পানি ক্ষুধা দমন করে এবং অল্পতেই তৃপ্তি মিটিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি কিডনির সঠিক কার্যকারিতার জন্যও ভালো।
মধু দিয়ে লেবুর শরবত
লেবু এবং মধুর মিশ্রণ ওজন কমানোর জন্য সেরা পানীয়গুলোর মধ্যে একটি। কারণ মধু অন্ত্রের সমস্যা প্রতিরোধ, কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ফলশ্রুতিতে দেহ স্বাস্থ্যসম্মত ওজন হ্রাসের দিকে এগিয়ে যায়। অন্যদিকে, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, টক্সিন বের করে দেয়, শরীরে পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
আপেল সিডার ভিনেগার
এই বহুল জনপ্রিয় কম ক্যালোরির ভিনেগারটি মুখের রুচি বাড়ায়, রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে, উচ্চ রক্তচাপকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে, অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নতি করে। ফলে অন্যান্য মুখরোচক ফ্যাটযুক্ত খাবারের একটি সেরা বিকল্প হিসেবে এটি কাজ করে।
পেঁপের শরবত
পেঁপের সুস্বাদু শরবত অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
জেনে নিন ডালিমের খোসার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে ডালিম পৃথিবীর সব থেকে স্বাস্থ্যকর ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাইরের খোসাগুলোও সরাসরি খাওয়া না গেলেও মানবদেহে ব্যবহারের জন্য বেশ উপযোগী। এই খোসায় আছে পিউনিক্যালেগিন্স নামক অত্যন্ত শক্তিশালী এক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। খোসা থেকে তৈরি করা ডালিমের নির্যাস এবং পাউডারে এই উপাদানের আধিক্যের জন্য এগুলোর স্বাস্থ্যকর উপযোগিতা অনেক। আজকের এই ফিচারের মাধ্যমে ডালিমের খোসার সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার সম্পর্কে জানা যাবে।
ডালিমের খোসার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
ফেস মাস্ক এবং স্ক্রাব হিসেবে
এর জন্য ডালিমের ছাড়ানো খোসা শুঁকিয়ে গেলে সেগুলো গুঁড়া করা হয়। তারপর এতে মধু এবং লেবু যোগ করে দারুণ একটি ফেস মাস্ক তৈরি করা যায়। শুধুই মুখের জন্যই নয়; শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন কনুই ও হাটুতে এটি স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
হাড়ের স্বাস্থ্য বাড়াতে
এক গ্লাস গরম পানিতে দুই চামচ রোদে শুকানো ডালিমের খোসার গুঁড়া মিশিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নেয়া হয়। এতে এক চামচ লেবুর রস এবং এক ড্যাশ লবণ যোগ করলেই হয়ে যাচ্ছে মজাদার জুস। রাতে শোবার আগে এই পানীয় পান করা হাড়ের মজবুত করণে সহায়তা করে।
বলিরেখা দূর করতে
এক চা চামচ ডালিমের খোসার গুঁড়া নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা দুধ দিতে হবে। এরপর ভালো করে মিশিয়ে আলতো করে মুখে লাগাতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য দুধের পরিবর্তে গোলাপ জল যোগ করা যেতে পারে। মুখে লাগানোর পর তা শুকালে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। বলিরেখা দূরীকরণে ভালো ফল পেতে সপ্তাহে দুবার এই মাস্কটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
হজমের সুবিধায়
আধা কাপ রোদে শুকানো ডালিমের খোসা ৩০ মিনিটের জন্য জলে ভেজানো হয়। নরম হয়ে এলে একটি ব্লেন্ডারে রেখে এতে এক চা চামচ জিরা, তিন-চতুর্থাংশ কাপ বাটারমিল্ক, এক ড্যাশ রক সল্ট দিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে। হজমের সমস্যা মোকাবিলায় সপ্তাহে অন্তত তিনবার এই মিশ্রণটি পান করা বেশ কার্যকরী।
সূর্যালোক থেকে রক্ষায়
রোদে শুকানো ডালিমের খোসা দিয়ে পাউডার বানিয়ে তা একটি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। লোশন বা ক্রিমের সাথে এই পাউডারটি মিশিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে ব্যবহার করলে তা সানস্ক্রিনের মতই কাজ দেবে। বিকল্পভাবে তেলের সাথে পাউডার মিশিয়ে মুখে লাগালেও তা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের কাজ দেবে।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
মুখের ব্রণ এবং ফুসকুড়ি দূরীকরণে
রোদে শুকানো এক মুঠো ডালিমের খোসা একটি গরম তাওয়ায় ভেজে ঠাণ্ডা করতে হবে। অতঃপর সেগুলো ভালমত পিষে তাতে লেবুর রস বা গোলাপ জল দিয়ে পাউডারের একটি পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্টটি মুখে বিশেষ করে ব্রণের জায়গাগুলোতে লাগাতে হবে। কিছুক্ষণ শুকানোর পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা যায়।
চুল পড়া এবং খুশকি প্রতিরোধে
চুলে ব্যবহার করা তেলের সাথে শুকনো ডালিমের খোসার গুঁড়া মেশাতে হবে। এরপরে এটি চুলের গোড়ায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ম্যাসাজ করার দুই ঘণ্টা পরে হালকা শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলা যায়। আবার সুবিধা অনুযায়ী সারারাত রেখেও দেয়া যায়। এতে কম সময়ের মধ্যেই চুল পড়া এবং খুশকি দূর হবে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা শীতের সবজি
গলা ব্যথার উপশমে
এক মুঠো রোদে শুকানো ডালিমের খোসা নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার মিশ্রণটি ছেঁকে কিছুক্ষণ ঠান্ডা করতে হবে। গলা ব্যথা এবং টনসিলের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত এই জল দিয়ে গার্গল করা যেতে পারে।
হৃদরোগ থেকে রক্ষায়
এক চা চামচ ডালিমের খোসার গুঁড়া এক গ্লাস গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করা হার্টের স্বাস্থ্য উন্নতি করতে পারে। এর সাথে সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়ামকে যোগ করলে তা অসুস্থ হার্টকে ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়
দাঁতের স্বাস্থ্য উন্নতিতে
এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ রোদে শুকানো ডালিমের খোসার গুঁড়া মিশিয়ে তা দিনে দুবার গার্গল করা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি দিতে যথেষ্ট। ডালিমের খোসার গুঁড়া দিয়ে মাড়ি ম্যাসাজ করা মাড়ি ফোলা, স্ফীত হওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া প্রতিরোধ করতে পারে। ডালিমের গুঁড়ার সাথে এক চিমটি কালো গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি আঙ্গুল দিয়ে দাঁতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে তা দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। প্রায় ১০ মিনিট পরে কুলি করে নেয়া যায়।
পরিশিষ্ট
ডালিমের খোসা-গুঁড়া বা এর মিশ্রণের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার উচিত নয়। বিশেষ করে যাদের এ ধরনের উদ্ভিদে অ্যালার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে ডালিমের খোসার অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক: সুজেয় শ্যাম
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। দেশ স্বাধীনের আগে থেকে সংগীত নিয়ে কাজ করে চলেছেন সুজেয় শ্যাম। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতারের জন্য তার সুরকরা গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’, ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বাংলাদেশের নাম’, ‘ওরে আয়রে তোরা শোন’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘রক্ত চাই, রক্ত চাই’।
গত বছর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকদিন ঘরবন্দি সময় কেটেছে তার। তবুও থেমে থাকেনি তার সৃষ্টি। চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে পাঁচটি গান প্রকাশ করেছেন তিনি। বর্তমানে তার ব্যস্ততা বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে। সেসব প্রসঙ্গের পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ইউএনবির সঙ্গে।
প্রতিবছর বিজয় দিবস এলে আপনার ব্যস্ততা অনেকটা বেড়ে যায়। এবার কোন কোন বিশেষ আয়োজনে আপনাকে পাওয়া যাবে?
হ্যাঁ, ব্যস্ততা তো খানিকটা বেড়ে যায়। গত বছর করোনার জন্য অনেক আয়োজন সম্ভব হয়নি। তবে এবারের চিত্রটা পাল্টেছে। বড় পরিসরে একাধিক অনুষ্ঠান হবে। আমিও বেশ কয়েকটিতে থাকবে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৬ ডিসেম্বর সংসদ ভবনের আয়োজনটি। এছাড়া টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের বেশ কয়েকটি শোতে থাকব।
আরও পড়ুন: ঢাকার দর্শকদের মুগ্ধ করেছে সুফি সঙ্গীত
মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার মতো কণ্ঠযোদ্ধাদের যেমন প্রতিবাদের মাধ্যম ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের গান দিয়ে জাগ্রত করেছেন আপনারা। সেই সময় আপনার ভূমিকার কথাগুলো জানাতে চাই।
গান সব সময় শক্তিশালী মাধ্যম। এর মধ্য দিয়ে মানুষকে যেমন বিনোদন দেয়া যায়, তেমনি এটি প্রতিবাদের হাতিয়ার। পৃথিবীর অনেক সংগ্রাম ও প্রতিবাদের গানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমাদের ক্ষেত্রেও তেমন। কণ্ঠ দিয়ে আমরা যেমন প্রতিবাদ করেছি তেমনি একটি স্বাধীন দেশের জন্য বিজয়ের স্বপ্ন বুনেছি। এজন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালকসহ সবাই দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর জন্য আমার প্রথম গান ছিল কবি দেলওয়ারের ‘আয়রে চাষি মজুর’। পরবর্তীতে আরও ৮টি গান করেছি। সুর ও সংগীতায়োজনের মধ্য দিয়ে আশার মশাল জ্বালানোর আহ্বান জানিয়েছি। একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে হয়।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানও যুক্ত। নতুন প্রজন্মের কাছে গানগুলো কতটা পৌঁছেছে মনে করেন?
দেশ গঠন সম্পর্কে জানতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার বিকল্প নেই। সেটি তরুণ প্রজন্মসহ সবার জন্যই। সেই সময়ের অবস্থা, দুঃখ বা আনন্দ সবকিছুই স্বাধীন বাংলার গানে প্রকাশ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছেও স্বাধীন বাংলা বেতারের গানের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তরুণ যারা গান করছেন তাদের কণ্ঠেও গানগুলো শোনা যায় মাঝে মাঝে। তবে সেই প্রসার আরও হওয়া প্রয়োজন মনে করি। এনটিভির জন্য একটি রিয়্যালিটি শোতে দুই দিনব্যাপী স্বাধীন বাংলার গান নিয়ে একটি আয়োজন ছিল। যেগুলো তখনকার প্রতিযোগিরা গেয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই গানগুলো নিয়ে অ্যালবাম বের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আর হয়নি। আমার একটা ইচ্ছার কথা বলি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক। যদিও মাঝে একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠান একটি উদ্যোগ নিয়ে দুটি অ্যালবাম রিলিজ করেছিল। কিন্তু সেখানে যারা গেয়েছেন এর মান নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রথম বাংলাদেশ কউচার উইক
‘পিস রানার অ্যাওয়ার্ড' পেলেন বিশ্বজয়ী বাংলাদেশি পর্যটক নাজমুন নাহার
এখন অন্যান কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
শরীরের জন্য তো আগের মতো নিয়মিত কাজ করতে পারি না। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর শেখ হাসিনাকে নিয়ে ৫টি গান করেছিলাম। সেটি বেশ বড় আয়োজন ছিল। এখন বাংলাদেশ টেলিভিশনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করছি। এরইমধ্যে চারটি পর্ব প্রচার হয়েছে।
অনেক সিনেমায় সংগীত পরিচালক হিসেবে আপনাকে পাওয়া গেছে। তবে এখন বিরতিতে আছেন। সামনে কাজ ও এখন প্লেব্যাকের অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন।
একবারে যে বিরতি নিয়েছি এমনটা নয়। গত বছর নার্গিস আক্তার পরিচালিত ‘যৈবতী কন্যা মন’ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছি। যদিও এখন পর্যন্ত তা মুক্তি পায়নি। আর এখন তো আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেককিছুতেই সংকট। সিনেমার গানের যেই জনপ্রিয়তা এক সময় ছিল, সেটিও কমেছে। প্রযুক্তর উন্নতি হয়েছে কিন্তু আবেগ হয়তো কমে যাচ্ছে। তবে এর মধ্যেও ভালো কাজ হচ্ছে। অনেক চেষ্টা প্রশংসা করার মতো।
গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
হলদি দুধ নামে বহুল পরিচিত গোল্ডেন মিল্ক মূলত একটি ভারতীয় পানীয় যা ভারত উপমহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতিতেও জনপ্রিয়তা লাভ করছে। হলুদ ফুলের নির্যাস থেকে পাওয়া এই উজ্জ্বল সোনালী বর্ণের পানীয়টি পশু বা উদ্ভিদ জাত সাদা দুধের সাথে মিশিয়ে তৈরি করা হয় হলদি দুধ। এর মূল উপকরণ হলুদ মশলা হিসেবে বিভিন্ন খাবারের সাথে স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ভেষজ উদ্ভিজ্জ উপাদানটির বিপুল পরিমাণে স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা আছে। আজকের এই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ফিচারে জানা যাবে গোল্ডেন মিল্কের সেই জাদুকরি উপকারিতা।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গোন্ডেন মিল্কের উপকারিতা
প্রদাহ ও জয়েন্টের ব্যথা উপশম
গোল্ডেন মিল্কের প্রধান উপাদান হলুদ, আদা এবং দারুচিনি প্রদাহ এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সক্ষম।
মানবদেহের কোষের সরক্ষণ
গোল্ডেন মিল্ক-এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে রোগ ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি সুক্ষ্ম রেখা অথবা বলিরেখার মত দ্রুত বয়স বৃদ্ধি জনিত লক্ষণ দেখা দেয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
হজমে সুবিধা
এই দুধের দুটি উপাদান আদা এবং হলুদ বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। আলসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপসর্গ উপশম করতে হলুদের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আছে।
দেহের হাড়ের প্রতিরক্ষা
পশুজাত সাদা তরল দুধ দিয়ে তৈরি হওয়ায় গোল্ডেন মিল্ক প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ হয়। এই পুষ্টি দুটি দেহের কাঠামো সুঠাম রাখে এবং হাড়ের রোগের ঝুঁকি কমায়।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত আবেগ হতে পারে শরীরের ক্ষতির কারণ
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি
হলদি দুধের উপকরণ আদা স্মৃতিশক্তি উন্নত করে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। আদা বয়সের সাথে সাথে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
হলুদের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যটি গ্লুকোমা এবং ছানি নিরাময়ে সাহায্য করে। নিয়মিত হলুদ সেবন দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ও গ্লুকোমার অগ্রগতির বিরুদ্ধে কার্যকরি ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন: হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়
ত্বকের সুরক্ষা
হলুদের প্রদাহ, ব্যাকটেরিয়া ও অক্সিডেন্ট বিরোধী বৈশিষ্ট্য ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনুকূল ভূমিকা পালন করে। যেমন- ক্ষত সাড়ানো, ব্রণ প্রতিরোধ করা, একজিমার বিরুদ্ধে লড়াই করা, দাগ দূর করা, ত্বকে প্রাকৃতিক আভা ফিরিয়ে আনা ইত্যাদি।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
লবণের একাধিক প্রকারভেদ থাকলেও সাধারণভাবে শব্দটির মানে হিসেবে সবাই খাবার লবণকেই বুঝে নেয়। সোডিয়াম ক্লোরাইড বৈজ্ঞানিক নামে এই খনিজ উপাদান মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীকূলের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি এবং খাবারের মৌলিক স্বাদগুলোর মধ্যে একটি।
বিভিন্ন রান্নায় অপরিহার্য সাদা রঙের এই খাদ্য উপাদানটি শুদ্ধতার নিরীক্ষায় হেরে যায় গোলাপি রঙের হিমালয় লবণের কাছে। পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণও বিভিন্ন রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া এর বিশ্বব্যাপী প্রসারের পেছনে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর অসামান্য উপকারিতা দায়ী। এই হিমালয় লবণ কড়চাই নিয়ে এবারে ফিচার।
পিংক সল্ট: পৃথিবীর সবচেয়ে শুদ্ধ লবণ
হিমালয় লবণ পাকিস্তান অংশের পাঞ্জাব থেকে উত্তোলন করা শিলা লবণ। প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর আগে হিমালয়ের স্ফটিক লবণের সমুদ্রতল লাভায় নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তা সহস্রাব্দ ধরে চাপা পড়ে ছিল বরফের নিচে, যা এটিকে ক্রমাগত বাড়তে থাকা দূষণ থেকে রক্ষা করেছিল। এখন এটি একমাত্র অপরিশোধিত, প্রক্রিয়াবিহীন ও প্রাকৃতিকভাবে হাতে উত্তোলন করা হয় লবণ। আর এভাবেই এটি পরিণত হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ লবণে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
সমুদ্রতলের বিশুদ্ধ অবস্থা হিমালয়ের লবণকে প্রক্রিয়াজাত টেবিল লবণের চেয়ে বেশি খনিজ সমৃদ্ধ করে তুলেছে। ফসফরাস, ব্রোমিন, বোরন ও জিঙ্কসহ এতে প্রায় ৮০ খনিজ উপাদান রয়েছে। এর স্ফটিক পাথরের হওয়ায় সূক্ষ্ম টেবিল লবণের চেয়েও বড় ও স্বল্প পরিমাণে সোডিয়াম সমৃদ্ধ।
স্থানীয়দের মতে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সেনাবাহিনী সর্বপ্রথম হিমালয় লবণের মজুত আবিষ্কার করে। ১২০০ দশকে পাঞ্জাব গোত্রের জানজুয়ার লোকেরা সর্বপ্রথম খনি থেকে লবণ উত্তোলন করে।
পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
অম্লতা হ্রাস
হিমালয় লবণ একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করে। এটি শুধু গ্যাস ও অ্যাসিডিটি দূর করে না, বদহজমও সারায়।
রক্তচাপ কমানো
হিমালয় লবণ প্রাকৃতিকভাবে আয়োডিনে সমৃদ্ধ, যা খাদ্য কোম্পানিগুলো কৃত্রিমভাবে টেবিল লবণে যোগ করে। হিমালয় লবণের প্রাকৃতিক আয়োডিন শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য তৈরি, অন্ত্রকে পুষ্টি শোষণ করতে ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে খুব কার্যকর।
হাড় গঠন
পিংক লবণ হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে কারণ এতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো বেশ কিছু খনিজ রয়েছে যা হাড়ের গঠন ও ঘনত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০ শহর
গলার সংক্রমণ
এর প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের কারণে, হিমালয় লবণ গলনালীতে যে কোনও ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। গরম পানিতে লবণটি দ্রবীভূত করে গার্গেল করলে ফোলাভাব সাড়তে পারে এবং যেকোনো জ্বালাপোড়া প্রশমিত হতে পারে।
ত্বককে নরম ও ময়শ্চারাইজ করে
গোলাপী লবণ দিয়ে গোসল করলে ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা বাড়তে পারে। এভাবে ত্বক নরম ও কোমনীয় হয়ে উঠবে। এতে কেবল মুখের ত্বকের মৃত কোষগুলোর বৃদ্ধি বন্ধ হবে না, ত্বক পূর্বাপেক্ষা আরও মসৃণতা পাবে।
বাংলাদেশে হিমালয় লবণ
চওড়া দাম থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব জুড়ে হিমালয় লবণের মার্কেট ক্রম বর্ধমান। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মত বাংলাদেশে হিমালয় লবণের বাজার খুব একটা প্রসার না পেলেও এখানকার অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের মতই বাড়ছে এর দাম। খুচরা মূল্যে প্রতি কেজির দাম ২১০ থেকে ২৯০ টাকায় বর্তমানে সরাসরি ভোক্তারা এই লবণ কিনতে পারছেন। তবে অনলাইন বাজারগুলোতে আকর্ষণীয়ভাবে প্যাকেজিং করা লবণের দাম তোলা হচ্ছে আরও ওপরে।
আরও পড়ুন:অতিরিক্ত আবেগ হতে পারে শরীরের ক্ষতির কারণ
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে পিংক সল্ট-এর ১০০ গ্রামের দামই ৫ থেকে ৮ ডলারে বিক্রি হয় যা সাধারণ খাবার লবণের চেয়ে বিশ গুণ বেশি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হিমালয় লবণের মূল্য পড়ছে প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ৬৫ রুপি। স্বনামধন্য ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন-এ হিমালয় লবণের মূল্য প্রতি ৪০০ গ্রামের জন্য পড়ছে ১৫০ রুপি।
পরিশেষে বলা যায়, পুষ্টিগুণ অনুযায়ী সর্ব সাকুল্যে পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণ একটি সুষম খাদ্য উপাদান হতে পারে। মূল্যের পার্থক্যে সাধারণ খাবার লবণের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম সহজলভ্য হলেও পর্যটন শিল্প কেন্দ্রীক শহরগুলোতে অভিনব খাবারের রেসিপিতে এটি একটি অভিজাত সংযোজন।