শনিবার ঐতিহাসিক লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ২৪৪ রানের টার্গেটে মাত্র ১৫৭ রানেই অলআউট হয়ে যায় কেন উইলিয়ামসনের দল।
দিবারাত্রির ম্যাচে দারুণভাবে শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। শুরুর দিকে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে ম্যাচটা নিজের করে নিচ্ছিলেন ব্ল্যাক ক্যাপসরা। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে উসমান খাজা ও অ্যালেক্স কেরির শত রানের জুটি ও পরে মিচেল স্টার্কের গতিতে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ।
মার্টিন গাপ্টিল স্লিপে খাজার ক্যাচ ফেললেও লেগ গালিতে অলৌকিক ক্যাচ ধরে ফেরত পাঠান স্মিথকে। আর নিজের বলে প্রায় জিমন্যাস্টসুলভ ঝাঁপ দিয়ে ক্যাচ ধরে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান জিমি নীশম। ২১.৩ ওভারে মাত্র ৯২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা তখন রীতিমত সঙ্কটজনক।
কিন্তু ক্রিজে ততক্ষণে জমে গেছেন অ্যালেক্স কেরি। চাপ ঝেড়ে ফেলে ড্রাইভ আর পুলে অসাধারণ টাইমিংয়ে রানের গতি বাড়ান তিনি। শেষ পর্যন্ত এক্সট্রা কভারের সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কেরি।
অপরদিকে প্যাট কামিন্সকে পাশে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান খাজা। কিন্তু শেষ ওভারে তিনটে দুর্দান্ত ইয়র্কারে চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন ট্রেন্ট বোল্ট। শেষমেশ ৯ উইকেটে ২৪৩ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া।
রান তাড়ায় দ্রুত ফেরেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনারও। পরে মন্থর উইকেটে ধীরেসুস্থে রান তুলছিলেন কেন উইলিয়মসন (৪০) ও রস টেলর (৩০)। কিন্তু স্টার্কের বলে উইলিয়মসন খোঁচা দিয়ে আউট হওয়ার পরেই ধস নামে। টেলরের ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে অনেকটা উঁচুতে উঠে যাওয়া বল লোফেন কেরি।
কলিন দি’ গ্র্যান্ডহোম আসামাত্র স্মিথের হাতের বল তুলে দেন ফিঞ্চ। স্মিথের প্রথম বল লংঅফে খাজার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান গ্র্যান্ডহোম। পরে স্মিথ মিডউইকেটে উড়ে গিয়ে ক্যাচ ধরে ফেরান টম লেথামকে। আর বাকিটা শেষ করেন স্টার্ক। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে তিনবার পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি।
এ জয়ের মাধ্যমে ৮ ম্যাচে সাত জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্টের শীর্ষস্থানেই থাকল অস্ট্রেলিয়ার। অপরদিকে সমন সংখ্যক ম্যাচে ৫ জয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৪৩/৯ (ওয়ার্নার ১৬, ফিঞ্চ ৮, খাওয়াজা ৮৮, স্মিথ ৫, স্টয়নিস ২১, ম্যাক্সওয়েল ০, কেয়ারি ৭১, কামিন্স ২৩*, স্টার্ক ০, বেরেনডর্ফ ০, লায়ন ০*; বোল্ট ১০-১-৫১-৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ৮-১-২৯-০, ফার্গুসন ১০-০-৪৯-২, সোধি ৬-০-৩৫-০, নিশাম ৬-০-২৮-২, স্যান্টনার ৩-০-২২-০, উইলিয়ামসন ৭-০-২৫-১)।
নিউ জিল্যান্ড: ৪৩.৪ ওভারে ১৫৭ (গাপটিল ২০, নিকোলস ৮, উইলিয়ামসন ৪০, টেইলর ৩০, ল্যাথাম ১৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, নিশাম ৯, স্যান্টনার ১২, সোধি ৫, ফার্গুসন ০, বোল্ট ২*; বেরেনডর্ফ ৯-০-৩১-২, স্টার্ক ৯.৪-১-২৬-৫, কামিন্স ৬-১-১৪-১, লায়ন ১০-০-৩৬-১, স্মিথ ২-০-৬-১, ফিঞ্চ ১-০-৭-০, স্টয়নিস ২-০-১২-০, ম্যাক্সওয়েল ৪-০-১৮-০)।