কৃষি কর্মকর্তারা জানান, শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা এরই মধ্যে অর্ধেকের বেশি পূরণ। আশা করা হচ্ছে এবার দুই লাখ মেট্রিক টন শীতকালীন সবজি উৎপাদন হবে।
মানিকগঞ্জের বিভিন্ন সবজির ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপি-বাঁধাকপি, লাউ, টমেটো, গাজর, মুলা, শিম, বেগুনসহ শীতকালীন বিভিন্ন সবজি গাছের বেশ যত্ম নিচ্ছেন কৃষকরা। কোনো কোনো জমিতে আবার নতুন করে চাষ দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বিক্রির জন্য ক্ষেত থেকে আগাম সবজি তুলছেন।
জেলার সাত উপজেলার মধ্যে সিংগাইর, সদর ও সাটুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ হয়েছে। দোআঁশ মাটির কারণে এসব অঞ্চলে সবজির ফলনও ভালো হয়। কৃষকরা এই মৌসুমে অন্য ফসল না করে শুধু সবজির আবাদ করেছেন। মানিকগঞ্জের উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ গ্রামের কৃষক নুরুল হক জানান, এবছর ২৩ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির আবাদ করেছেন। এর মধ্যে আট বিঘা জমিতে আগাম চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে এই জমির বেশিরভাগ কপি বাজারে বিক্রি করেছেন। দামও ভালো পেয়েছেন। গত এক মাস ধরে তিনি কপি বিক্রি করছেন। এতে তার লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়েছে।
সিংগাইর উপজেলার কালিন্দি গ্রামের নাজিম উদ্দিন ও আফজাল হোসেন জানান, চার বিঘা জমিতে শসা ও লাউয়ের আবাদ করেছেন তিনি। কিছু বিক্রি করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় এবার বেশ লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্র জানায়, গত সেপ্টেম্বর থেকে এবছর কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজির আগাম চাষ শুরু করেন। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সবজির আবাদ করবেন। এপর্যন্ত জেলার সাত উপজেলায় তিন হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে শীত সবজির আবাদ হয়েছে। এছাড়া এবার নয় হাজার ৬৯১ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ মেট্রিকটন। যা গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার মেট্রিকটন বেশি।
এদিকে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা আগাম সবজি চাষে কৃষকদের নানা পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছেন বলে জানা যায়।
সাটুরিয়া উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন বলেন, মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যাতে করে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়ে ভালো ফলন ফলাতে পারেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী জানান, গতবার প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের শীতকালীন সবজিতে তেমন লাভ হয়নি। এবার আগে ভাগেই আবাদ শুরু করেছেন। বৃষ্টিপাত কম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজির আবাদ ভালো হচ্ছে। বাজারে আগাম সবজি বিক্রি করে বেশ লাভও পাচ্ছেন তারা। এবার সবজির চাষও বেশি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর দুই লাখ মেট্রিকটন সবজির উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।