চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ২৯ নভেম্বর (ইউএনবি)- চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি আমন মৌসুমে ভালো ফলন পায়নি কৃষকরা। তার উপর বাজারে ধানের দর অনেক কম।
কৃষকরা জানায়, ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি মন ধান। তাই ঘরে নতুন ধান উঠলেও হতাশা আর দুশ্চিন্তায় ভুগছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চল জুড়ে এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন আমন চাষীরা। তবে ধানের ফলন ও দাম কম হওয়ায় হাঁসি নেই তাদের মুখে।
কৃষকরা জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে বৃষ্টির উপর নির্ভর করে আমন চাষাবাদ করেন তারা। এবার শুরুতেই ধানে পোকার আক্রমন ও ভরা মৌসুমে বৃষ্টির অভাব দেখা দেয়। ফলে জমিতে অতিরিক্ত সেচ ও বেশি কীটনাশক ব্যবহার করায় কৃষকের খরচও হয়েছে বেশি। কিন্তু আশানুরুপ ফলন হয়নি, ধামও কম।
বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি মন ধান। ফলন ও দর কম হওয়ায় ধারকর্য করে আবাদ করা প্রান্তিক চাষীরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার আমন চাষী আকবর আলী বলেন, আকাশে এবার পানি নাই, যারা ডিপ টিউবওয়েলের পানির সেচের সুবিধা পেয়েছে তাদের কিছু ফলন হয়েছে। আর যাদের সে সুযোগ ছিল না তাদের ফলন একেবারেই ভালো হয়নি।
তিনি বলেন, এবার দামও কম, প্রতি মন ধান ৬০০-৬৫০ টাকার বেশি না। তাই এবার কৃষকের অবস্থা ভালো না। ফলনও কম দামটাও কম, একদিক কম হলেও পোষিয়ে নেয়া যেতো।
উপজেলার দক্ষীণশহর এলাকার আরেক আমন চাষী রফিকুল ইসলাম বলেন, ধান করার থেকে না করাই ভলো। গত বছর ধান ভালো হয়েছিল, দামও ভালো ছিল। এবার ফলন কম, দামও কম। খরচ বেশি কিভাবে কি করব।
আরেক চাষী শামমুদ্দিন বলেন, আমাদের এই জমিগুলোতে ২০ মন ২২ মন করে ধান হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টির পানি নাই, তার উপর পোকার আক্রমন ছিল, ফলন কম হয়েছে। আমাদের এই এলাকায় ১৫-১৬ মন করে ধান পাওয়া গেছে। আবার অন্যান্য জায়গায় যেখানে পানি সেচের ব্যবস্থা ভালো ছিল না সে সব জমিতে বিঘাতে ৯ মন ১০ মন করে ধান হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা জানান, এবার খরার কারণে কৃষকের বাড়তি সেচ খরচ হয়েছে এবং যেসব জমিতে সেচ সুবিধা কম পেয়েছে সেখানে ফলন কিছুটা কম হয়েছে। আর মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম কম হলেও শিগগিরই তা বাড়বে বলে জানালেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
কৃষি বিভাগের হিসেবে চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৩ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। আর এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬১ মেট্রিকটন চাল।