গেল বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় চাষিদের মাঝে হতাশা রয়েছে। উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে চাষিরা।
তারা জানান, ধান উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। কিন্তু ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা। গেল বোরো মৌসুমে ধানের দর অনেক কম ছিল। তাদের খরচ উঠে আসেনি। এতে আর্থিকভাবে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা। এছাড়া এ সময়ে জমিতে অন্য কোনো ফসল হবে না তাই বাধ্য হয়ে ধানের আবাদ করছেন তারা।
এ অঞ্চলে আমন চাষ বর্ষাকালের বৃষ্টির পানির ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। এতে কৃষকদের সেচ খরচ বেঁচে যায়। তবে এবার বর্ষাকাল একটু দেরিতে শুরু হয়েছে।
সদর উপজেলার আতাহির এলাকার চাষি সাজেমুল হোসেন বলেন, আমরা আমন ধানের আবাদ বর্ষাকালে করি আকাশের পানিতে। এবারকার বর্ষাটা খুব একটা ভারি বর্ষা না। তবুও সেচ খরচটা কম আছে। বৃষ্টি ঠিকমত হলে আমাদের সেচ খরচটা বেঁচে যাবে।
নাচোল উপজেলার ঘিয়ন এলাকার আমন চাষি নিজাম উদ্দিন বলেন, গেল বোরো মৌসুমে বোরোর দাম পেয়েছি ৫০০-৭০০ টাকা প্রতি মণ। এভাবে যদি আমরা ধানের দাম পাই, তাহলে আমরা কৃষকদের কোনো লাভ থাকবে না। ধানের দাম না থাকায় অনেক কৃষক দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
আরেক চাষি রুহুল আমিন বলেন, ধারদেনা করে আমরা বোরো চাষ করে ন্যায্য দাম পায়নি। এখন আবার আমনের আবাদ শুরু। ধান আবাদে অনেক খরচ বেড়ে গেছে। ধানের যেন ন্যায্য দর পায় এজন্য সরকারের বিশেষ নজর দেয়া দরকার।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা জানান, সার বীজের কোনো সংকট নেই। গত বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাত ভালো। গত বছর জুন মাসে ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিলো, এবার অবশ্য কম হয়েছে ৪৭ মিলিমিটার। আর গতবার জুলাই মাসে বৃষ্টির পরিমাণ ছিলো ২৭৭ মিলিমিটার আর এবার ২৮ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৩৫১ মিলিমিটার। চাষিরা এখন আবাদে ব্যস্ত।
তিনি জানান, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১ হাজার ৮৬১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এবং এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৪ মেট্রেক টন চাল। তবে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবার আশা প্রকাশ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।