তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন রাষ্ট্র ভেদে সামাজিক, আর্থিক ও সংস্কৃতির ভিন্নতার কারণে আপাত দৃষ্টিতে ভিন্ন মনে হলেও চূড়ান্ত বিচারে অপরাধের শাস্তি নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই। অপরাধীদের শাস্তির মাত্রা দেশ-কাল-পাত্র ভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে আইনের শাসন যেখানে রয়েছে সেখানে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।’
মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের স্ট্রেংথেনিং অফ ল’ প্রোগ্রামের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর রবার্ট লকারির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে সংস্থার চেয়ারম্যানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আমাদের তদন্তের মান যথাযথ মানসম্পন্ন নয়, কাঙ্ক্ষিত মানের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। এ কারণেই হয়তো কমিশনের মামলায় শতভাগ সাজা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।’
কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতার প্রশংসা করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা একসাথে প্রশিক্ষণসহ উত্তম চর্চার বিকাশে যেসব কাজ করছি তার কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে চাই। সম্পদের অপ্রতুলতা ও অপচয় রোধে এসব প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা শুধু যুক্তরাষ্ট্রে না করে বাংলাদেশেও করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দুদকের প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম, যেমন দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, সততা সংঘ ও সততা স্টোরসহ বিভিন্ন কর্মসূচির বিবরণ দিয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, এসব কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে মানুষ সততা চর্চাকে বিকশিত করছে। দুর্নীতিকে এদেশের সাধারণ মানুষ মন থেকে ঘৃণা করে।
অংশগ্রহণমূলক দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম, পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সেবায় হয়রানি-অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং সর্বোপরি অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দুদক বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানান তিনি।
এসময় রবার্ট লকারি দুদকের প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, এটা অনুকরণীয়। তিনি জানান, আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি আবার বাংলাদেশে আসবেন। সে সময় তিনি সততা সংঘ, সততা স্টোর ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রম সরেজমিনে দেখবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এর আগে দুদক কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে কমিশনের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সাথে আইনের শাসন জোরদার এবং পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন রবার্ট লকারি।
এসময় দুদক কমিশনার জানান, সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউটর এবং বিচারিক আদালতের বিচারকদের আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।