হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে কোম্পানিগুলোর পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান এ আদেশ দেন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার প্রাণ মিল্ক ও ফার্ম ফ্রেশ এবং সোমবার মিল্ক ভিটার ওপর থাকা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে।
কোম্পানিগুলোর পক্ষে শুনানি করা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, নতুন আদেশের ফলে ১১ কোম্পানি দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন করতে পারবে।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন প্রাপ্ত ১৪টি পাস্তুরিত দুধ কোম্পানিকে দুধ উৎপাদন, বিপণন ও সরবরাহ বন্ধে ২৮ জুলাই পাঁচ সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দেয় হাইকোর্ট।
কোম্পানিগুলো হলো- আফতাব মিল্ক অ্যান্ড মিল্ক প্রোডাক্ট লিমিটেড (আফতাব মিল্ক), আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড (ফার্ম ফ্রেশ মিল্ক), আমেরিকান ডেইরি লিমিটেড (মো), বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা), বারো আউলিয়া ডেইরি মিল্ক অ্যান্ড ফুডস লিমিটেড (ডেইরি ফ্রেশ), ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রজেক্ট (আড়ং মিল্ক), ডেনিশ ডেইরি ফার্ম লিমিটেড (আয়রান), ইছামতি ডেইরি ফার্ম অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস (পিওরা), ইগলু ডেইরি লিমিটেড (ইগলু), প্রাণ ডেইরি লিমিটেড (প্রাণ মিল্ক), উত্তরবঙ্গ ডেইরি লিমিটেড (মিল্ক ফ্রেশ), শিলাইদহ ডেইরি (আল্ট্রা মিল্ক), পূর্ববাংলা ডেইরি ফুড ইন্ড্রাস্ট্রিজ (আরওয়া) এবং তানিয়া ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস (সেইফ)।
দুধে ভেজাল নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে গত বছরের ২১ মে এক আদেশে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কমিটি গঠন করে বাজারে থাকা পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
বিএসটিআইয়ের আইনজীবী গত ২৫ জুন আদালতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। সেদিন তিনি বলেন, ১৪টি কোম্পানির পাস্তরিত দুধে আশঙ্কাজনক বা ক্ষতিকর কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তবে একই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক এক সংবাদ সম্মেলনে একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার সবগুলোতে মানব চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক লেভোফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন এবং ছয়টিতে এজিথ্রোমাইসিনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সবগুলোতে ফরমালিন এবং তিনটি নমুনায় ডিটারজেন্টের উপস্থিতি ছিল।
পরে গত ১৪ জুলাই শুনানিকালে বিএসটিআই স্বীকার করে যে অ্যান্টিবায়োটিক পরীক্ষার সক্ষমতা তাদের নেই। পরে হাইকোর্ট পৃথক চারটি ল্যাব- বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি), বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি থেকে দুধ পরীক্ষা করে এক সপ্তাহের মধ্যে বিএসটিআইকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলে।
২৩ জুলাই ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি বাদে বাকি তিন প্রতিষ্ঠান আদালতে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে বলা হয়, পরীক্ষা করা দুধে সিসা ও ডিটারজেন্টসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে।