পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আসতে আমরা প্রস্তুত। চীন সরকারকেও আমরা এটি জানিয়েছি। তারা অনুমতি দিয়েছে...এখন আমাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে পারব।’
এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনে করোনাভাইরাসে নিশ্চিত আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৬৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২১৩ জনে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নতুন মারা গেছেন ৪৩ জন। বেশিরভাগ আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে হুবেই প্রবেশ ও তার রাজধানী উহানে। তবে চীনের বাইরে এখনও কেউ মারা যায়নি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ফেরত আসতে যাওয়া কোনো বাংলাদেশি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হননি বলে চীন সরকার নিশ্চিত করেছে।
‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট আজ বিকাল ৫টার দিকে উহান রওনা হবে। এ ফ্লাইটে করে ৩৬১ বাংলাদেশিকে নিয়ে আসা হবে। ফ্লাইটটি আজ রাত ২টার দিকে ঢাকা পৌঁছাবে,’ বলেন মন্ত্রী।
তিনি উল্লেখ করেন যে উহান থেকে ফেরত আসাদের পর্যবেক্ষণ করার জন্য আশকোনা হজ ক্যাম্পে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাখা হবে।
আবদুল মোমেন জানান, ফেরত আসতে যাওয়া ৩৬১ জনের মধ্যে ১৮ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্য, সেখানে দুটি শিশু রয়েছে। আর বাকিরা শিক্ষার্থী।
মন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মুখে দেশে ফিরে আসার আগ্রহ দেখিয়ে চীনের ২২টি প্রতিষ্ঠানের, বিশেষ করে উহান শহরের ৩৭০ বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছেন। তবে ১৫ বাংলাদেশি চীনেই থেকে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, দেশে এসে অসুখ হলে অসুবিধা হবে।
ড. মোমেন আরও বলেন, চীন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশকে জানিয়েছে যে কোনো বিদেশি নাগরিক এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দেশটি সব চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে।
বাংলাদেশিদের দেশে আনার পরের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা আসলে আমরা ওদের আলাদাভাবে রাখব এবং পর্যবেক্ষণ করব। আমাদের হাসপাতালে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে...এটা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন। আনার দায়িত্ব আমাদের আর তারপরের দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৪০০-৫০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী উহানে আছেন। হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মূল কেন্দ্র। চীন সরকার শহরটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং আরও কয়েকটি শহরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে।
বেইজিংয়ের বাংলাদেশ দূতাবাস বাংলাদেশিদের সাহায্যে একটি হটলাইন নম্বর +(৮৬)-১৭৮০১১১৬০০৫ খুলেছে।