তিনি বলেন, ‘বিশ্বের ৬০ দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। তাই প্রয়োজন ছাড়া দেশের বাইরে যাওয়া আসা বন্ধ রাখলে ভালো হয়।’
মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গু বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে এ বিষয়ে একটি আন্তমন্ত্রণালয় জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাইরে থেকে আসা কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তি পেলে বা বিদেশ থেকে এসে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হবে। বিদেশ থেকে আসলে আগে সিভিল সার্জনের সাথে দেখা করতে হবে এবং সব তথ্য দিতে হবে।’
এ ভাইরাসের চিকিৎসার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে ২০টি আইসিইউ শয্যার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিভিন্ন দূতাবাসেও জানানো হয়েছে, যারা ইতালি, ইরান, কোরিয়া থেকে আসবেন তাদের বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। তাদের মেডিকেল সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। করোনাভাইরাস চলে আসলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
‘আমরা নির্দেশ দিয়েছি যে দেশ থেকেই আসুক না কেন, তারা যেখানেই থাকবে নিজস্ব কোয়ারেন্টাইনে থাকবে। এ পরামর্শ তাদের দেয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় আইসোলেশন ওয়ার্ড করেছি। ভবনের সর্বোচ্চ ফ্লোরে সেই ওয়ার্ড করা হয়েছে। রোগী বেশি হয়ে গেলে কমিউনিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি জেলার হাসপাতালে দুটি করে আইসিইউ যাতে থাকে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনও সন্দেহজনক রোগীর খোঁজ পেলে কোয়ারেন্টাইনে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের ১ কোটি লোক বাইরের দেশে কাজ করেন। যে ৬০ দেশে করোনাভাইরাস দেখা দিয়েছে তার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশকিছু দেশ রয়েছে, যেখানে তারা কাজ করেন। বাংলাদেশি যারা বিদেশে চাকরি করেন তারা যেন জরুরি প্রয়োজন না হলে দেশে না আসেন বা বিদেশে না যান। তাদের যাতায়াতটা সীমিত করতে হবে। আমরা চাই না আমাদের দেশ আক্রান্ত হোক। যারা বিদেশে আছেন তারাও চান না আমাদের দেশ আক্রান্ত হোক।’
এ সময়ে হ্যান্ডশেক না করার আর বাড়িতে গিয়ে সবার আগে মুখ ও হাত ধুয়ে ফেলার পরামর্শ দেন তিনি।
সন্দেহজনক রোগীদের চিকিৎসা ও স্ক্রিনিং চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সব বন্দরে ২৪ ঘণ্টা স্ক্রিনিং চলছে। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ১৮ হাজার লোককে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। সেই সাথে আমরা প্রায় ১০০ রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। আশপাশের দেশে করোনাভাইরাস এসে পড়েছে। বাংলাদেশে যে আসবে না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আমরা তিনটি কমিটি করেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সেখানে আছেন।’
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ১৭ মার্চের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া বিদেশিদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা আসবেন তারা রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে থাকবেন। তারা অল্প সময় থাকবেন। আশা করি তারা ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। তাদের কোনও সমস্যা হলে তো ব্যবস্থা থাকবেই।’
করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বের অনেক দেশে নানা অনুষ্ঠান বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে। ১৭ মার্চের অনুষ্ঠান বিষয়ে এমন কোনও চিন্তা আছে কি না- প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এ অনুষ্ঠান বাতিলের এখতিয়ার আমাদের হাতে না। এ বিষয়ে এখনই সুনিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব না। আমাদের দেশে তো সেই ধরনের সংক্রমণ হয়নি যে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় তো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। যারা সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন তারা পরিস্থিতি বুঝেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’