জবানবন্দি কার্যক্রমের বৈধতা ও যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে করা আবেদনের (রিভিশন) ওপর শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালত আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের সশরীরে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি আদেশের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে তলবের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিমকে সব নথিপত্র (মামলার রেকর্ড) পাঠাতে বলা হয়েছে।’
শিশির মনির জানান, নারায়ণগঞ্জের ওই স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয় বলে তিনজন আসামির জবানবন্দী রেকর্ড করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আল মামুন। আবার ১৬৪ ধারার সেই জবানবন্দী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক রেকর্ড হয়েছে। অথচ ৪৯ দিন পর মেয়েটি এসে বলল সে তো মরেনি! সে তো একজনের সাথে প্রেম করে সংসার করছে।
ওই স্কুলছাত্রী ফিরে আসার ঘটনায় গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্টে এ রিভিশন আবেদন করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট শিশির মনির এ আবেদনটি করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকার এক স্কুলছাত্রী গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় ১৭ জুলাই সদর মডেল থানায় জিডি করেন স্কুলছাত্রীর বাবা। এক মাস পর ৬ আগস্ট একই থানায় তিনি অপহরণ মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২) ও তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিবকে (১৯)। ওই দিনই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সাথে দুদিন পর গ্রেপ্তার করা হয় বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬)।
গত ৯ আগস্ট পুলিশ জানায়, স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয় আসামিরা। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় এ ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। অথচ ২৩ আগস্ট দুপুরে বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকায় সুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায় নিখোঁজ স্কুলছাত্রীকে। সে নিজে তার মাকে একটি দোকান থেকে কল করে চার হাজার টাকা চায়। বাবা-মা এতে অবাক হয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। পরে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে তারা থানায় হাজির হন।