শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গতবছর এক হাজার ৫টি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৭৬ দশমিক ০১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে প্রতিমাসে গড়ে ৮৪ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
২০১৮ সালের তুলনায় গতবছর ধর্ষণের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩৩ জনের বয়স ছিল এক থেকে ছয় বছরের মধ্যে। ঢাকা জেলায় ধর্ষণের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে।
২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১৫টি জাতীয় দৈনিক থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
বিএসএএফের তথ্যানুযায়ী, ভুক্তভোগী শিশুদের মধ্যে ৭৫ জন তাদের শিক্ষক এবং ১৪১ জন প্রতিবেশির দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সবমিলিয়ে গত বছর যৌন নির্যাতনের ১৩৮৩ টি ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি।
বুধবার এক ব্রিফিংয়ে ইউএনডিপি বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মসূচির জেন্ডার বিশেষজ্ঞ বিথিকা হাসান বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনার ক্রমবর্ধমান সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই জাতীয় ঘটনাগুলো দেশের উন্নয়ন এবং অর্জনের ক্ষেত্রে একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মোট ৩ হাজার ১৩৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল, যা প্রতি মাসে গড়ে ৫২টি। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ১৬৪টি মামলার রায় হয়েছে, আর গতবছর রায় হয়েছে মাত্র ২৭টির।
বিএসএএফের পরিচালক আবদুস শহীদ মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা উচিৎ। তিনি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শিশু হত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা বিচারের চেষ্টা এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার সুপারিশ করেন।
অন্যদিকে প্রতিবেদনে দেখা যায়, গতবছর শিশু হত্যা ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি মাসে গড়ে কমপক্ষে ৩৭ জন শিশুকে খুন করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তুচ্ছ ঘটনা, পারিবারিক সহিংসতা, দাম্পত্য কলহ, যৌতুক, পরকিয়া, শত্রুতা এবং প্রতিহিংসার বলি হয়েছে নিরীহ শিশুরা।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৩৭ জনকে তাদের বাবা-মা হত্যা করে এবং ৪৭ জনকে ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছিল।
পাঁচ বছরের মধ্যে গত বছর সর্বাধিক ৪৪৮ জন শিশুকে হত্যা করা হয়।২০১৯ সালে ২৪ জন শিশু হত্যা মামলার রায় দিয়েছে আদালত।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন নাসিমা বেগম বলেন, ‘শিশুদের বিরুদ্ধে শুধু সহিংসতার ঘটনা হ্রাস করলেই হবে না। এগুলোকে আমাদের শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে হবে।’