মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে এ সমর্থন জানান।
রাষ্ট্রপতি আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে নেয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আমাদের শান্তিরক্ষী সদস্যরা আগামী দিনগুলোতেও বিশ্বশান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে- এ প্রত্যাশা করি।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি আশা করি, শান্তিরক্ষী সদস্যরা তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার দ্বারা সারাবিশ্বে শান্তিরক্ষায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবেন এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবেন।’
তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত সব বাংলাদেশি সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। ‘সেই সাথে গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী প্রেরণে বাংলাদেশ বর্তমানে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ।
শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশের সদস্যরা বিপদসংকুল এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকায় নিয়োজিত থাকেন। তাদের পেশাদারিত্ব, আন্তরিক সেবা, কঠোর পরিশ্রম, আত্মত্যাগ, নিঃস্বার্থ মনোভাব ও সাহসিকতা আজ সারাবিশ্বে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপতি হামিদও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের সব শান্তিরক্ষীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। ‘বিশ্বশান্তি রক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আত্মোৎসর্গকারী বীর শান্তিরক্ষী সদস্যদের আমি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।’
তিনি বলেন, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ আদর্শ অনুসরণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে শান্তি ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ১৯৮৮ সাল থেকে অংশগ্রহণ করে আজ পর্যন্ত সর্বোচ্চ পেশাদারি মনোভাব, আনুগত্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। ‘তাদের অনন্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে এবং আমাদের শান্তিরক্ষীরা শান্তিরক্ষা মিশনে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন।’
পেশাদারিত্বের পাশাপাশি অর্পিত দায়িত্বের প্রতি একনিষ্ঠতা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের এ সাফল্য অর্জনে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি।
বিশ্বশান্তি রক্ষায় সামরিক ও বেসামরিক কর্মীদের অমূল্য অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা এবং জীবন উৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীদের সম্মাননা জানানোর জন্য প্রতি বছরের ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করা হয়। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮০০ জনের অধিক শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন, যাদের মধ্যে গত বছর মারা গেছেন ৯৮ জন।